–তুমি কবিতা লেখ?
একজন আকাশ থেকে পড়ে জিজ্ঞেস করে। কাঁচুমাচু হয়ে জবাব দিতে গিয়ে তোতলাতে থাকলাম। বিরাট অপরাধির মত দাঁড়িয়ে দাঁত কেলিয়ে হাসছি। অপরজন আস্তে আমার কাছে ঝুঁকে এসে ঘন হয়ে বসে জিজ্ঞেস করে,
–আমাকে বলো কী হয়েছে? শুনেছি প্রেমে পড়লে আর ছ্যাঁকা খেলে নাকি কবিতা,টবিতা লেখে তা –তোমার তো এখন সে সব বালাই নেই,তবে কেইসটা কী?
আমি জানিনা আমি কি এমন ঘটনা ঘটালাম চারদিকে গুন গুন,ফিস-ফাস। কেউ কেউ বাসায় এলে স্বামীকে বলে
-দোস্ত তোর বউ আজকাল কবিতা লেখে তুই তো তবে কবির জামাই।
অতঃপর স্বামীর কটমটে চাউনি থেকে পালিয়ে বাঁচা। শুনেছি কবিদের নাকি ভাত নেই। আমি ভাত কাপড়ের অভাবে কবিতা লিখিনা,গল্প লিখিনা।
এমন বিরাট গোছের কেউকেটা হব,এমন স্বপ্ন ঘুনাক্ষরেও দেখিনা। মন চায় তাই কিছু লিখি।
মাঝে মধ্যে মনের মাঝে অদ্ভুত এক একটা অনূভুতি হয় তখন লিখি। ওটা কবিতা,গদ্য না পদ্য কিচ্ছু বুঝিনা।
কেন লিখি তাও জানিনা। তবে আজকাল মনে হচ্ছে লেখাটা বিরাট সমস্যা হয়ে গেলো। লিখতে হবে ভারি ভারি কিছু যা চিন্তার খোরাক যোগাবে। দেশ ও দশের উন্নতি হবে তা না করে কবিতার মত বিষয়। না না এক্কেবারেই অনূচিত ব্যাপার।
ছোট বেলা থেকেই ‘কবি’মানেই চোখের সামনে ভাসে লম্বা লম্বা চুল, নিদেন পক্ষে কাঁধে থাকবে ঝোলা। যেমন রবীন্দ্রনাথ হালে আরও অনেক কবি ,সেই সাথে ফাইন আর্টস নিয়ে পড়া ছাত্র। তারা তো তবু দেশ নিয়ে কিছু করছে কেননা স্বাধিনতার যুদ্ধে তাদের অংশ গ্রহনের অবদান অনেকেই ভুলে গেলেও আবার অনেকেরই মনে আছে। তবু কবিতা লেখা মানেই অকর্মার দল যেন।
আশ্চর্যের ব্যাপার সেই বিষয়টা আমার মাথায় এলো কি করে?
দিনে চিন্তা,রাতে ঘুম হয় না। সবার কানা-কানি ফিস-ফাসে টেকা দায়। যেন মহা অন্যায় করে ফেলেছি। আমি এক তস্কর। ধরা পড়ে গিয়েছি সবার কাছে।
আরে ঠারে অনেকেই এই সব কথা বোঝাতে বাকি রাখে না।
সেদিন একজন তো বলেই দিলো
– আপনি কি বাংলায় পাশ? সকৌতুকে চোখ নাচানাচি তার।
– কেন বলুন তো? নাহ আমি বাংলা নিয়ে পড়াশোনা করিনি।
মুখে চোখ যেন উদ্ভাসিত হয়ে গেল প্রশ্নকর্তার। নড়েচড়ে বসে আবার বলেন
– আপনার সাবজেক্ট আলাদা জানলাম। তাহলে কবিতা ফবিতা এই সব ছাইভস্ম লিখে কী হবে? আপনার বরং চিন্তা করা দরকার দেশ নিয়ে। দেশের কথা কিছু লিখুন।
ভাবতে বসি দেশের কথা। নেতা, নেত্রী, অনূগত, দল থেকে দলান্তর দেশ বাঁচাও এমন কতো ভালো ভালো রাঘব বোয়াল রয়েছেন। আমার মত হতদরিদ্র মনের মানুষ দেশের মতন এমন বিশাল ব্যাপক বিষয় নিয়ে কী বা লিখব। ভেবে ভেবে ঘুমাই,ঘুম থেকে উঠে আবার ভাবি।
ভাবনার লাটাইয়ের সূতো উড়তে থাকে। দেশ আর দশের চিন্তা করতে থাকি।
ওদিন নারী বিষয় নিয়ে কথা উঠেছিল। নারী মুক্তি, নারী আন্দোলন এই সবের সাথে জড়িত না হলে নারীদের জন্য কিছু করা আদৌ সম্ভব না।
আমি কিছু বলতে চাইলাম। তো ক’জন হো-হো করে হেসে বলে উঠল,
-আরে তুমি যে নারী নিয়ে লেখ,ভালো কথা। কিন্তু স্বামীর খাও পরো পুরুষের রোজগারে চলে যে মেয়েরা তাদের মুখে কী নারীদের কথা মানায়? তুমি বলো?
আসলে সত্যি তো নিজকে একটা অপদার্থ ছাড়া আর কিছু মনে হলনা। অন্যের অন্ন খেয়ে আবার নারীদের নিয়ে কথা বলা ?
শত অপরাধেও চুপচাপ লক্ষী বধু হয়ে থাকতে হবে। কেননা আমি যে আর এক পুরুষের খাই। তার দায় দায়িত্ত্ব আমাকে আমার বাচ্চাকে ভরন পোষণ করার।তবু এমন মহান কাজ যিনি করছেন তার শত অপরাধেও নতমুখি নীতি নিয়ে থাকা দরকার।
নিজে কতভাবে এই সংসারে খাটলাম। সকাল থেকে রাত অবদি। হাড় ভাঙ্গা খাটুনি। অন্য জাগায় চাকরি করলে ভালো বেতন পাওয়া যেত। লেখা পড়া না জানলে যদি ঝিগিরি করা হত তাও কিছু টাকা পাওয়া যেত। আর রোজগেরে মানুষ মাত্রই তার মূল্য আছে। ঘরের গৃহিণীর যেন অনেকটা গৃহপালিত পশুর মতন অবস্থান।
লোকে বলে
-আরে দুধ দেয়া গরু লাথি খাওয়া ভালো।
হায় হায় আমি তো তাও নই। আমাদের মতন যারা এমন পরগাছা তাদের কী উপায় তবে? না ঘরকা না ঘাটকা।
অতঃপর নারী নিয়ে লেখা লেখি বন্ধ। যারা পুরুষের রোজগারে চলে তাদের কি অধিকার নারী নিয়ে লেখার? ভাবতে বসি আবার। চুল ছিঁড়ি। আবার কবিতার লাইন মাথায় আসে। নিজকে শাসন করি।
হায় কী বিড়ম্বনা! এমন অবস্থায় কেউ যেন না পড়ে।
আপনার লেখাখানি পড়লাম ভাল লাগল। একটা কথা দেখুন আমরা এখন দুইটা যুগের মধ্যস্থলে আছি, এক পুরাণ রক্ষণশীল মনভাবের বাতাবরণ আর আরেকটা পুরাণকে ভেঙ্গে নতুনের সুচনা নবজাগরণ। যতদিন পন্ত একটা স্থিতিশীল অবস্থা সমাজে আসছে না। ততদিন মানসিক টানা পোড়েন চলতে থাকবে।কেউ আজ সমাজে মানসিক শান্তিতে নেই।
@সুমিত দেবনাথ,
আপনার কথা শুনে ভালো লাগল। তবে পূরনো হলেই যে সে রক্ষণশীল হবে এমন কারণ নেই। নতুনের সূচনা মানেই পুরোনোকে ভেঙ্গে ফেলতে হবে তারও মানে নেই। পুরোনো তখনই ভাঙ্গা হবে যা অযৌক্তিক,
যা মানুষের কল্যানকর নয়।
তবে আমরা যে এক মধ্যস্থলে আছি তা ঠিক কথা।তাই টানা পোড়েনের শেষ নেই।
আপনার সুন্দর আর সু-চিন্তিত বক্তব্য মন ছুঁয়ে গেল।
@আফরোজা আলম,
আপনি যা পেয়েছেন এবং পাচ্ছেন, তার থেকে অনেক বেশী পরিবার এবং সমাজকে দিয়েছেন এবং দিয়ে যাচ্ছেন এটা নিশ্চিত জানবেন। অতএব কোন দ্বিধা নয়, যা করলে মন খুশী থাকে তাই করে যাবেন, হউক সেটা কবিতা, গল্প, নারী বা দেশ নিয়ে লেখা। অনেক করেছেন, দিন এখন আপনার। ভালো লাগার, পছন্দের কাজ করার অধিকার আপনি রাখেন।
@ব্রাইট স্মাইল্,
আপনার কথা পড়ে মন অনেক ভালো হয়ে গেলো। নিশ্চয় লিখব। আপনাদের জন্য আর নিজের মন ভাল লাগে যা তাই লিখে যাব। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনার লেখায় একটি সমাজের একেবারে ক্ষয়ে যাওয়া হাড্ডিসার জীবনের চিত্র দেখতে পেলাম।যে জীবনের মালিক হচ্ছে পুরুষতান্ত্রিকতা মনোভাব।এই পুরুষতন্ত্রকে ভেংগে চুরমার করে দিয়ে নারীকে সামনে যেতে হবে এবং নিজেদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে ।
যেহেতু কেউ সেধে আদর করে অধিকার কাউকে দেয় না তাই সেসব শিকল ভাংগার দায়িত্ব ব্যক্তি থেকে শুরু করে সামষ্টিকভাবে ঐসব অমানবিক অন্ধকার ডাইনেষ্টির বিরুদ্ধে অথর্নৈতিক,সামাজিক ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক যুদ্ধ করা ছাড়া কোনো বিকল্প নাই।তখনই মনে হয় আমাদের মুক্তি সম্ভব জীবন থেকে জীবনের তরে।যেখানে শুধু সবার ঠিকানা হবে আমরা সবাই মানুষ,লিংগভেদে নয়।মনে হয় তখনই কবিতা,সাহিত্য,নারীমুক্তি,পুরুষ মুক্তিসহ মানব জীবনের সকল মুক্তি-ই সম্ভব।
সব কিছুর পরে ব্যক্তি নিজের সাথে নিজের মানসঅন্তর্গত যদ্ধু করে যখন মানুষ নামের প্রজাতিতে রুপান্তরিত হয় বা হবে তখনই মনে হয় মানব জীবনের প্রকৃত মুক্তি সম্ভব।
আপনার লেখা কবিতা ও গল্প পড়তে সব সময় ভালোই লাগে।এ লেখাটিও তার থেকে ব্যতিক্রম নয়।আপনার শাররিক অবস্থার কথা জেনে দারুন কষ্ট পাই কারন আমিও ঐ রকম অনেকগুলি অসুখ নিয়ে বেচে আছি।
ভালো থাকবেন।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
আপনার কথাগুলো শুনে বা পড়ে খুবই ভালো লাগল। আসলে মেয়েরা যতই স্বাধীনতার কথা বলুক না কেন, আমাদের সমাজে এখন সব মেয়ের ঠিকানাই হচ্ছে বাপের বাড়ি,বিয়ের পরে স্বামীর বাড়ি।
আর একজন পুরুষের কাঁধে ভর দিয়ে চলা। এই জন্য আমরা নিজেরাও কম দায়ী নই।
কবে সে দিন আসবে জানিনা,যে দিন লিঙ্গ ভেদ ভুলে সবাই অন্ততঃমানুষ বলে নিজকে পরিচয় দিতে পারবে।
আপনাকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ। এখন আমি কিছুটা সুস্থ্য।যদিও জানি এই অসুখ কোনদিন সারবার নয়।
@আফরোজা আলম,
আসলে “স্বাধীনতা” শব্দটির বিশালতা খুবই বড়।”স্বাধীনতা” মানে,ব্যক্তির নিজেরসহ একটি সমাজের সকল নাগরিকের মানসিকতার আমূল সাংস্কৃতিক মুক্তিসহ অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করা যার প্রভাব সমাজ ও সামাজিকতায় থেকে শুরু করে পুরো রাষ্ট্রিয় কাঠামোয় পড়বে।যদি না পড়ে অথবা আমরা তা অর্জন করতে না পারি তাহলে মেয়েদের ঠিকানা বাপের বাড়ি কেন ছেলেদেরসহ কারো কোথাও কোন কিছুতেই ঠিকানা নেই।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
আপনার সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত।
কিন্তু আজকাল দেখা যাচ্ছে কর্মজীবি মহিলাদের অবস্থান ও যে সব ক্ষেত্রে ভালো কিছু হচ্ছে তা নয় (সবার ক্ষেত্রে না) উপার্জনের টাকা স্বামীর হাতে তুলে দিতে হয় নয়তো শ্বাশুড়ির হাতে। অথবা দেখা যাচ্ছে উপার্জন সক্ষম স্ত্রীর উপরে স্বামী অনেক ক্ষেত্রে দায়িত্ত্বজ্ঞানহীণ হয়ে পড়ছে। যার জন্য দরকার সবার ভেতরে এমন এক চেতনা যাতে করে “আমি পুরুষ,আমি সর্বময় কর্তা” এই ধরনের মানসিকতা যেন আস্তে আস্তে দূর হয়ে যায়। একদিন হতেই হবে। জানিনা সে দিন কবে।
ইন্টারেস্টিং লেখা, ভাল লাগলো। অন্যান্য পাঠকের সঙ্গে একমত হয়ে বলি কবি কবিই। কবির কাজ কবি করে যাবে। মানুষের অন্য গুণ যতই থাকে সহজাত কাব্য না থাকলে একাধিক কবিতা লেখা সম্ভব নয়। আশা করি আপনার অসুস্থতা সাময়িক।
@দীপেন ভট্টাচার্য,
আপনি বিজ্ঞানমনস্ক লেখক।আপনার মতামতকেও শ্রদ্ধার সাথে গ্রহণ করলাম।
ভাত কাপড়ের অভাবে মানুষ চুরি করে, কবিতা লেখে না। পৃথিবীর কোন কবিই ভাত কাপড়ের অভাবে কবিতা লেখি নি। কবিতা এত সস্তা জিনিসি নয়। চায়লেই কবিতা লেখা যায় না, যা যায় তা হল অকবিতা। মানুষের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার হল কবিতা, বোধহয় সবচেয়ে প্রাচীন আবিষ্কারও এটা। এবং শিল্পের সবচেয়ে উঁচু শাখাও বটে। সুতরাং কবিতা লেখেন বলে আপনার যে হতাশা (ক্ষোভও হতে পারে) তার কোন কারণ দেখি না। রবীন্দ্রনাথ, গ্যেটে, জীবনানন্দসহ পৃথিবীর হাজার হাজার কবিরা যদি কবিতা না লিখতেন তাহলে তাঁদেরকে কেই বা চিনতো!! পৃথিবীর মানুষেরও যে বড় ক্ষতি হয়ে যেত তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কবিতা তো দেশ-কাল বহির্ভূত নয়। বর্তমানের এই অস্থির সময়ে কবিতার বড় দরকার! কবিতাই পারে আমাদের নিজেদের পৃথিবীটাকে তুলে ধরতে, সভ্যতা যতই এগিয়ে যাক—মানুষ যন্ত্র হোক এটা কারো কাম্য নয়। এটা ঠিক যতদিন না একজন কবি কবিতা লিখে দেশ ব্যাপি খেতাব পাচ্ছে ততদিন আশেপাশের মানুষেরা টিটকিরি মারে। তবে যারা সত্যিকারের কবিতাকে ভালোবাসে বা বাসবে তাদের উচিত খুব বেশি আত্মকেদ্রিক হওয়া। দশে যা বলে তা বেশির ভাগ সময় ঠিক হয় না বলেই আমার বিশ্বাস। কারণ দশ মানেই তথাকথিত একটা ব্যপার চলে আসে। কবি কিম্বা শিল্পীরা তো সমাজের প্রচলিত বিশ্বাস ভাঙ্গতেই আসে, এজন্য তো তারা (ই)স্পেশাল। দশের সাথে নিজেকে মেলালে ক্রিয়েটিভির কি থাকলো?
আপনি লিখে যান, কারো স্তুতির জন্য নয়, নিজের জন্যই। দেখবেন, একসময় ওগুলো সমস্তদের হয়ে গেছে।
@মোজাফফর হোসেন,
তুমি করেই বলছি,আশা করি কিছু মনে নিবে না। তোমার সুচিন্তিত মত পড়ে আমি অভিভূত!
কবিতা লেখায় আমার কোনো ক্ষোভ নেই। আছে অনেক বিচিত্র অভিজ্ঞতা। নানা জনের নানা মত।তা তুমি যে বলেছ,
এই সুন্দর মূল্যবান কথার পরে কথা থাকেনা। আমার লেখার নাম হচ্ছে “বিড়ম্বনা” কতো ধরণের বিড়ম্বনা মানুষের জীবনে আসে পথ চলতে গিয়ে,এবং তা থেকে অভিজ্ঞতা লাভ হয় এই লেখার মূল উদ্যেশ্য অনেকটা তাই। আমি মনে করি আমি একাই যে এমন বিড়ম্বনায় পড়ি না নয়।এমন অভিজ্ঞতা অনেকেরই আছে। তারপরেও লেখা তো থেমে থাকে না।লেখা চলে এবং চলবে তার আপন গতিতে। কবি শুকান্ত কিন্তু মৃত্যুর পরে স্বীকৃ্তি পেয়েছিলেন। এমন অনেক কবির ইতিহাস ঘাটলে তাই দেখা যায়। আর এটাও জানি ‘নানা মূনি নানা মত”।
তোমার মতামতকে অনেক শ্রদ্ধার সাথে নিলাম। ধন্যবাদ।
আফরোজা আলম,
এতদিন কোথায় ছিলেন!
লেখাটা ভাল লাগল!
@লাইজু নাহার,
হারিয়ে যাইনি।আমি তো অনেকদিন যাবত অসুস্থ্য।শরীর অনেক খারাপ ছিল। ফিজিও দিয়ে এখন একটু মোটামুটি আছি। আপনাকে ভুলে যাব এমন পাগল কি আমি হব? মুক্তমনায় না পেলে মেইল দিয়ে দেখবেন বেঁচে আছি কীনা। আমাকে এভাবে উৎসাহিত করার জন্য আপনাকে :rose2:
অবিকল আমার মায়ের মুখের কথাটাই বললেন আপনি। এজন্যই তিনি আমাদের দুবোনের পড়াশোনায় কোন বাঁধা আসতে দেননি বাবা না থাকার পরও। সবসময়েই চেয়েছেন যেন আমাদের নিজস্ব একটি পরিচয় থাকে। শুধু কারো বউ হয়ে থাকাটাই যেন একমাত্র পরিচয় না হয়
@লীনা রহমান,
আপনার প্রতিটা লেখা আমি মনোযোগ সহকারে পড়ি,কিন্তু মন্তব্য করার ভাষা পাইনা। আপনি বলেছেন,
একদম ঠিক কথা। :yes: এই কথা আর কাজের কোনো বিকল্প নাই। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
@আফরোজা আলম, যে কথা মাথায় আসে তাই লিখবেন। আপনাদের মন্তব্যই তো অনুপ্রেরণার উৎস।
কাজেই গৃহিণী মাত্রই পুরুষের রোজগারে খায় তা ঠিক নয়। কাজেই হীনমন্যতা, বিড়ম্বনা এ এসব ঝেড়ে ফেলুক সব নারী — এ প্রত্যাশায়।
@গীতা দাস,
নাহ নাহ হীনমন্যতায় ভোগার কোনো কারন নেই। আপনার মন্তব্য কে স্বাগতম।
@কবি আপনার লেখা পড়ে ভালো লাগলো………।।
কবি’মানেই চোখের সামনে ভাসে লম্বা লম্বা চুল, নিদেন পক্ষে কাঁধে থাকবে ঝোলা,ভালো বলেছেন।
নিচে আমার লেখা অকবির একটি কবিতা দিলাম
তবুও আমি কবি
কবিরা কেমন যেন অদ্ভুত হয়,
ভীড়ের মাঝেও ঠিক পথ খোজে পায়,
জ্বলন্ত সূর্যটাকে বুক পকেটে রেখে দিনের পর দিন ঘোরে বেড়ায় ,
সবাইকে করে দেয় অভিভুত
ইচ্ছে হলেই সমাজটাকে নিজের মত দেখে
চোখের মাঝে হাজার রকম রংকে নিয়ে ঘোরে।
আমি এসবের কিছুই পারিনা,তবে কি আমি কবি নই?
হ্যা,আমিও কবি,
কিন্তু,
ঘার ছাড়িয়ে কাধে চুল পড়া কবি নই ,
নারী দেহের ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে সুখ চাওয়া কবি নই ,
ব্ল্যাক লেভেলের গায়ে পংতি খোজ়া কবি নই ,
ধোয়ায় মাখা শব্দের জাল বোনা কবি নই ,
জগতের সব কিছুতে আদিম উন্মদনা খোজা কবি নই ,
অপরের ছন্দে কাতর হওয়া কবি নই ,
অমরত্ব লাভে উন্মুখ কবি নই ,
স্রষ্টার সৃষ্টিতে মুগ্ধ কবি নই ,
রাজ মনিবের কৃপাধন্য কবি নই ,
মুখে রঙ মাখা পালিশ করা কবি আমি নই।
এমনকি হামদ-নাথ লেখা কবিও আমি নই ।
হয়তো আমি কোণ কবিই নই
তবুও কবি,এক বিজাতীয় কবি ।
চাদের আলোয় জীবনান্দ পড়া কবি ,
তোমায় ভেবে ভেবে রাত জাগা কবি ,
কংক্রিটের দেয়ালে ভাষা খোজ়া কবি ,
ডাস্টবিনের নোংরায় জোনাক পাওয়া কবি ,
হেমিং ওয়ের গদ্য থেকে উঠে আসা কবি ,
ক্ষুধা তাড়িত শব্দের অসুন্দর এক কবি ।
ধমনীতে লাভা বয়ে চলা কবি ,
ভয়ঙ্কর সব স্বপ্নের ধারক এক কবি ।
অন্ধকারের ভাষা বুঝা কবি ,
উইলসন টাওয়ারকেও গোলাপ বানিয়ে দেয়া কবি ,
রবি ঠাকুর , জন কীটস আর আজাদের কবিতায় ডুবে থাকা কবি ।
আমি কবিতার ভেতর থেকে জন্ম নেয়া কবি।
আমি কবিতা খাই,কবিতা উড়াই
কবিতা দেখি আর হয়ে উঠি কবি।
আমি চোখ বুজেই তোমাকে পাওয়া এক কবি ।
হয়ত আমি কবি নই কিংবা অপুরুষ এক কবি
যার মৃত্যু হয়েছে জন্মাবার আগেই।
তবুও আমি কবি, এক বিশেষ ধরনের কবি
যার অধিকাংশ কবিতাই অলিখিত
কিংবা ,লিখিত হলেও তা কবিতা নয়।
@রনি,
হায় রে আমি তেমন কবি হলে তো কথাই ছিল,আমি কবি নই 😕 । আপনার লেখাটাও সুন্দর,কিছু বানান ভুল আছে ঠিক করে নিলেই দারুণ হবে।
:laugh: :yes:
@রৌরব,
আপনার মন্তব্যের জবাব :rose:
কতবার তো বললাম, নিজের চুল নিজে ছিড়াছিড়ি বাদ দেন, একদিন মাথায় টাক পড়ে যাবে। দুঃখ-বিষাদ আর কতদিন, একবার লিখেন না হেসে খেলে জীবনটা যদি চলে যায়–
‘তারা পুরুষের রোজগারে চলে’ নারী নিয়ে এই কথাটা যিনি বলেছিলেন, তিনি নিজেই ছিলেন নারীর কাছে ঋণী।
@আকাশ মালিক,
ভালো বলেছেন। 🙂
মাথায় আমার এমনেই চুল উঠে শেষ। :-X চুল দিয়ে কি হবে মাথার ভেতরে কী আছে সেটাই বড়।
আজকাল মনে হছে তাও নাই। :-Y