সকল সময়ের গুরুত্বপূর্ণ যে সমস্যাটি এখন আবারো নতুন মাত্রা নিয়ে আলোচনায় এসেছে তা হল “ইভ টিজিং”। ইভ টীজিং এতদিন ভুক্তভোগী মেয়ের জীবনে ও পরিবারে নারকীয় পরিবেশ তৈরি করে এসেছে এবং অনেকক্ষেত্রে মেয়েটিকে অনাকাংখিত বিয়ে বা অকালমৃত্যুর পথ দেখিয়েছে। কিন্তু আমাদের অবহেলা, নিস্তব্ধতা ও চোখ-কান বন্ধ করে দেখেও না দেখার মানসিকতা একে এতটাই শক্তিশালী করে তুলেছে যে তা আজ এক মা ও এক শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে- যাদের অপরাধ ছিল এ ঘৃণ্য ব্যাপারটার প্রতিবাদ করা। আমি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার লোকমানপুর কলেজের রসায়নের প্রভাষক মিজানুর রহমান এবং ফরিদপুরের মধুখালীর চাঁপা রাণী ভৌমিকের কথা বলছি। ইভ টীজিংএর প্রতিবাদ করার কারণে শিক্ষক মিজানুর রহমানকে এবং নিজের মেয়ের উত্যক্তের শিকার হওয়ার প্রতিকার চাওয়ায় মা চাঁপা রাণী ভৌমিককে মোটর সাইকেল চাপা দিয়ে মেরে ফেলা হয়। এখন এ ব্যাপারটা নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে সারা দেশ। কিন্তু এ ব্যাপারটাকে আমরাই কিভাবে বাড়িয়ে তুলেছি তার দিকে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করব এই লেখায়।
প্রথমত, ইভ টীজিং শব্দটিই এর ভয়াবহতা ও ভুক্তভোগী নারীর উপর এর যে প্রভাব পড়ে সে তুলনায় একটি খুবই হালকা শব্দ।পুলিশ বা অনেক মানুষ এ ব্যাপারটাকে গুরুত্ব দেয়না কারণ নামটিই এই অপরাধের যথাযথ গুরুত্ব প্রকাশ করতে অক্ষম। তাই অনেক সচেতন মানুষই এক্ষেত্রে “যৌন উৎপীড়ন” বা “যৌন হয়রানি” বা “লিঙ্গভিত্তিক নির্যাতন” এ শব্দগুলো বলার পক্ষপাতী। কারণ বখাটেদের মন্তব্য বা পিছু নেয়া বা উত্যক্ত করা একটি মেয়ের মনোজগতে কি ভয়ানক প্রভাব ফেলে তা আমরা যৌন উৎপীড়নের কারণে ক্রমবর্ধমান আত্মহত্যার হার দেখেই বুঝতে পারি। আমি নিজের ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা দিয়েই বুঝতে পারি এটা কতটা কষ্ট দেয় মনে।একবার আমি জ্যামে রিক্সায় বসে ছিলাম তখন এক লোক রাস্তায় রিক্সার পেছন থেকে কুৎসিতভাবে আমার শরীরে স্পর্শ করার চেষ্টা করেছিল তখন আমার একই সাথে প্রচন্ড রাগ ও ঘৃণার অনুভূতি হচ্ছিল।আমার চিন্তা করছিলাম আমি এখন রিক্সা থেকে নেমে তার পেছনে স্যান্ডেল নিয়ে ধাওয়া করব কিনা। কিন্তু আমি এতটাই হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছিলাম যে তার দিকে কঠিন দৃষ্টিতে তাকিয়েই থাকতে পেরেছিলাম শুধু, নড়তে পারিনি। সবচেয়ে আশ্চর্য হলাম যখন লোকটি এমন একটি অন্যায় করার পরও আমার কঠিন চোখের দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে ছিল যেন কিছুই হয়নি। আমি এখনো ব্যাপারটা ভুলতে পারিনি। এই ঘটনায়ই যদি আমার এই অবস্থা হয় তাহলে আমি বুঝতেই পারছি সে মেয়ের অবস্থা যাকে প্রতিদিন স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার পথে উত্যক্ত করা হয়, তার পিছু নেয়া হয়। অবস্থা সবচেয়ে খারাপ হয় যখন এ ঘটনার পর মন শক্ত করে প্রতিবাদ করতে শেখাতে তার পরিবারের কেউ এগিয়ে আসেনা বরং তাদের তথাকথিত মান-সম্মান রক্ষার নামে বা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে তার পড়ালেখা বন্ধ করে দেয়া হয় বা তাকে নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়।মেয়েটির সামনে থাকে একটি অনিচ্ছার জীবন অথবা আত্মহত্যার পথ।
একে আমি “লিঙ্গভিত্তিক নির্যাতন” বলব কারণ এটা হয় এক ধরণের বিকৃত রুচির মানুষের কাজ যারা মেয়েদের প্রতি কোন সম্মান ধারণ করেনা মনে। এরা মেয়েদেরকে নানাভাবে নির্যাতন করাকে নিজেদের পৌরুষ দেখানোর খুব ভাল উপায় বলে মনে করে। এর মূলে রয়েছে তাদের পরিবারে, সমাজে এমনকি গণমাধ্যমগুলোতেও নানাভাবে নারীর অবমূল্যায়ন।
শুধু আইন করে যে এ ব্যাপারটা ঠেকানো যাবেনা তা বলাই বাহুল্য। কারণ আইনের যথাযথ প্রয়োগও তো দরকার। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় পুলিশ এধরণের মামলা নেয়না, মামলা নিলেও অপরাধীদের ধরার উদ্যোগ নেয়না আবার অপরাধীরা ধরা পড়লেও তারা সামান্য মুচলেকা দিয়ে বা নিজেদের প্রভাবের জোরে সহজেই বেরিয়ে যেতে পারে।আর বেরিয়ে গিয়েই তারা মেয়েটির জীবন অতিষ্ট করে তোলে। মেয়ের মুখে এসিড নিক্ষেপ, মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়া, মেয়ে ও তার আত্মীয়-স্বজনকে হুমকি দেয়া, তাদেরকে প্রহার বা খুন করার ঘটনাও ঘটে অনেক সময়। এবং এসব অপরাধ করেও তারা আগের মতই গায়ে হাওয়া লাগিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে পারে। মেয়ের অভিভাবকেরা যে তাদের মেয়েদের পড়া বন্ধ করে তড়িঘড়ি করে বিয়ে দিয়ে দেন তার একটি প্রধান কারণ কিন্তু আইন-শৃংখলা বাহিনীর এহেন নিষ্ক্রিয়তা।এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারেন এখান থেকে এবং এখান থেকে।
তবে আশার বিষয় হল ভ্রাম্যমান আদালতকে ইভ টিজিং বা উত্ত্যক্ত করা বন্ধ করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এই ধারা প্রয়োগ করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অপরাধীকে ঘটনাস্থলে বিচার করে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারবেন। তবে অর্থদণ্ডের পরিমাণ উল্লেখ থাকছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সম্প্রতি দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারা ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনে অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনা সম্পর্কে আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে মতামতের জন্য পাঠানো হয়। আইন মন্ত্রণালয় তাদের মতামতে বলেছে, সরকার ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন, ২০০৯-এ দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারা অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। সে ক্ষেত্রে ইভ টিজিং বন্ধের জন্য পৃথক কোনো আইন করার প্রয়োজন হবে না। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনে দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারা অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বর্তমানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ফৌজদারি কার্যবিধি ও দণ্ডবিধির অধীনে ৯২টি আইনের প্রয়োগ করতে পারেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের মাধ্যমে তাঁরা এসব ক্ষমতা প্রয়োগ করে থাকেন। তবে কোনো মামলা নিতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছে মামলা পাঠাতে হয়।
দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারায় ইভ টিজিং অর্থে বলা হয়েছে, ‘কোনো নারীর শালীনতার অমর্যাদার অভিপ্রায়ে কোনো মন্তব্য, অঙ্গভঙ্গি বা কোনো কাজকে বোঝাবে। কাজ অর্থ স্কুল-কলেজগামী মেয়েদের রাস্তাঘাটে দেখে শিস দেওয়া, গান গাওয়া, চোখ বাঁকা করে তাকানো, নারীর শালীনতা অমর্যাদা করার অভিপ্রায়ে কোনো মন্তব্য, কোনো শব্দ, অঙ্গভঙ্গি বা বস্তু প্রদর্শন করা এবং অনুরূপ মন্তব্য, শব্দ নারী শুনতে পায় বা বস্তু দেখতে পায় কিংবা কোনো নারীর নির্জনবাসে অনধিকার প্রবেশকেও ৫০৯ ধারায় অভিযোগ হিসেবে গণ্য হবে।’
বিচারিক কার্যক্রম সম্পর্কে আইনে বলা হয়েছে, কাউকে এই ধারায় অভিযুক্ত করতে হলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে—কী মন্তব্য করা হয়েছে, কোন শব্দ করা হয়েছে, কী ধরনের অঙ্গভঙ্গি করা হয়েছে, কী বস্তু প্রদর্শন করা হয়েছে এবং কোনো নারীর নিভৃতবাসে অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রবেশ করেছেন কি না অথবা অভিযুক্ত ব্যক্তি কোনো নারীর শালীনতায় অমর্যাদা করতে প্রবৃত্ত হয়েছিলেন কি না।
জানা যায়, ৫০৯ ধারায় প্রকাশ্য মাতাল ব্যক্তির অশোভন আচরণের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে পারবেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এব্যাপারে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক এ.এস.এম শাহজাহান বেশ গুরুত্বপূর্ণ মত দিয়েছেন। তিনি ‘প্রথম আলো’কে বলেছেন,
ইভ টিজিং রোধে পুরোনো ধ্যানধারণা থেকে সরকারকে বেরিয়ে আসতে হবে। উত্ত্যক্তকারীরা যৌন উৎপীড়ক, তারা হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। তবু এখনো পুলিশের খাতায় দাগি আসামি বলতে বোঝায় সিঁধেল চোর-পকেটমারদের। কেন এখনো উত্ত্যক্তকারীদের নামে থানায় খাতা খোলা হচ্ছে না?
ইভ টিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় শিক্ষক মিজানুর রহমানকে হত্যা করা হয়। এর কয়েক দিনের মধ্যে বখাটেদের হামলায় চাঁপা রানী ভৌমিক নামের একজন মা নিহত হন। এখন প্রয়োজন আইন অনুযায়ী উত্ত্যক্তকারী পলাতক সন্ত্রাসীদের ধরতে ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করা।
আইন যথেষ্ট আছে, কিন্তু প্রয়োগ হচ্ছে না। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা ইত্যাদির আওতায় উত্ত্যক্তকারীদের সাজা দেওয়া যায়। কিন্তু উত্ত্যক্তের শিকার হচ্ছে যে মেয়েরা, তাদের পরিবারগুলো নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে থানা বা আদালতে যাচ্ছে না। বাংলাদেশে প্রত্যক্ষদর্শী কিংবা নির্যাতিতদের সুরক্ষার জন্য কোনো আইন নেই। যাঁরা আইনের আশ্রয় নেন, তাঁরা আরও বেশি হেনস্তা হন।
তবে ইভ টিজিং রোধে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা স্থানীয় সরকারগুলো নিতে পারে। পাড়ায় পাড়ায় কারা মেয়েদের উত্ত্যক্ত করছে, সে সম্পর্কে স্থানীয় সরকার পুরোপুরি ওয়াকিবহাল থাকে। তাদের হাতে ক্ষমতা দেওয়া হলে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় কার্যকরভাবে এদের প্রতিরোধ করা যাবে। প্রয়োজনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্ল্যাক রেজিস্ট্রার খুলতে হবে। উত্ত্যক্তকারীদের নাম এ তালিকায় থাকলে সে সরকারি চাকরি পাবে না, এমন বিধান রাখা উচিত।(১)
ইভ টীজিং এর কারণে মৃত্যুকে হত্যা ধরতে হবে কারণ বখাটেদের অত্যাচারের কারণে আত্মহত্যাকেও আমি এক ধরণের খুনই বলব। যদি সকল মহলের চাপ উপেক্ষা করে মিজানুর রহমান ও চাঁপা রাণী ভৌমিকের হত্যাকারীদের শাস্তি হয় এবং তা দ্রুত হয় তাহলে এ দৃষ্টান্ত এ অপরাধ রোধে অনেক সহায়তা করবে।
“যৌন হয়রানি” বন্ধ করার জন্য আসলে আক্ষরিক অর্থেই সমাজের প্রতিটি মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রথমেই এগিয়ে আসতে হবে পারিবারিকভাবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ভুক্তভোগী মেয়েটির পরিবারই পরোক্ষভাবে মেয়েটির হাতে বিষের পাত্র বা ফাঁসির দড়ি এগিয়ে দেন। তাকে বোঝাতে হবে, তার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে যাতে তার মন দুর্বল হয়ে না পড়ে। খোঁজ নিতে হবে বাড়ির ছেলেটি কি করছে, কার সাথে মিশছে। বাড়িতে নারীদের প্রতি স্বাভাবিক আচরণ করতে হবে। সবাইকে বুঝতে হবে যে নারী আর পুরুষ কারোরই কারো উপর এমন শ্রেষ্ঠত্ব নেই যার বলে একে অন্যকে নিপীড়ন করতে পারে।
নারী নেত্রী ও জাতিসংঘ সিডও কমিটির সাবেক চেয়ারপারসন সালমা খান “প্রথম আলো” কে বলেন
ইভ টিজিং রোধে নতুন করে আর কোনো আইনের প্রয়োজন নেই। কারণ সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির কাজটাও এগিয়ে নিতে হবে। সাধারণত যারা সমাজের মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন, তারা নারী-পুরুষের সহজ সুন্দর সম্পর্কে আগ্রহী হয় না। তারা মেয়েদের নির্যাতন করে পৌরুষ দেখাতে পছন্দ করে।
সমাজের সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মেয়েদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে। পশ্চিমবঙ্গে মেয়েরা স্কুলে কারাতে শিখছে, সাইকেল চালাচ্ছে। বাংলাদেশের মেয়েদের আরও বেশি করে গুটিয়ে থাকার শিক্ষা না দিয়ে আত্মবিশ্বাস কী করে বাড়ানো যায়, সে ব্যাপারে বিশেষ নজর দেওয়া দরকার।(২)
আইনের অধীনে শাস্তি হোক আর না হোক সমাজের সবাই মিলে উত্যক্তকারীকে বয়কট করতে হবে। নিজের বন্ধুটি এ ধরণের কাজে জড়িত থাকলে তাকে বোঝাতে হবে। এ ব্যাপারটি নিয়ে বেশি বেশি আলোচনা করতে হবে। শুধু নিজে বিরত থাকলেই হবেনা, অন্যকে বিরত রাখতে হবে এবং সম্মিলিত প্রতিবাদ করতে হবে। আর যৌন হয়রানির শিকার বোন বা বান্ধবীটিকে আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করতে হবে। আর এ ধরণের চিন্তা ভাবনা ছাড়তে হবে যে মেয়েরা বোরকাবন্দি হয়ে থাকলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। কারণ আরব দেশগুলোতে কিন্তু বোরকা পরা মেয়েরা এ জঘন্য ব্যাপারের শিকার হচ্ছে।এটা উত্যক্তের শিকার মেয়েদের পোষাকের ব্যাপার নয় বরং উত্যক্তকারীদের অসুস্থি রুচির এবং ভয়াবহ সামাজিক ও মানসিক অবক্ষয়ের পরিচয়। আর একটি গণতান্ত্রিক দেশে যদি একটি মেয়েকে উত্যক্তকারীদের ভয়ে ইচ্ছের বিরুদ্ধে বস্তাবন্দি বা গৃহবন্দি হয়ে থাকতে হয় তাহলে আমার কাছে সে গণতন্ত্র মূল্যহীন।
যৌন হয়রানির বিপক্ষে পড়া কথাগুলো সকালের চা শেষ হওয়ার সাথে সাথে সদ্য পঠিত পত্রিকাটির সাথে ট্রাশ বিনে ফেলে না দিয়ে তা নিয়ে মনে প্রাণে সচেতন হতে হবে, এ সম্পর্কে শোনা কথাগুলো যেন এক কান দিয়ে ঢুকে আরেক কান দিয়ে বেরিয়ে না যায় সেজন্য এখনি কান ঠেসে ধরে কথাগুলো মাথায় ও বুকে অনুরণিত হতে দেয়া প্রয়োজন। এর শুরু হিসেবে আমি প্রতিজ্ঞা করছি আমি এ ব্যাপারে আমার পরিবারে ও বন্ধুমহলে সচেতনতা তৈরি করতে চেষ্টা করব এবং যথাসাধ্য প্রতিবাদ করার চেষ্টা করব। কিন্তু এ পথে আক্ষরিক অর্থেই বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে দরকার। প্রতিটি মানুষকে কন্ঠ মিলিয়ে বলতে হবে “যৌন হয়রানিকে ‘না’ বলব। বিরত থাকব, বিরত রাখব, সচেতন হব, সচেতনতা তৈরী করব এবং সম্মিলিত প্রতিবাদ করব।”
তথ্যসূত্রঃ
১। http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-10-29/news/105057
২। http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-10-29/news/105058
আপনার এই লেখাটি সাপ্তাহিক বিচিন্তা নামক একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। আমি জানি না আপনার অনুমতি নিয়েছে কিনা তারা। আমার ধারনা নেয়নি। কারণ সচলায়তনের অনেকের লেখা এভাবে বিনা অনুমতিতে তারা ছেপেছে। এটি নিয়ে সচলে আলোচনা চলছে। আমার ধারনা অনেকের লেখাই তারা এভাবে ছাপাচ্ছে, বিশেষ করে মুক্তমনা এবং সচলায়তনের।
মুক্তমনা কর্তৃপক্ষেরও উচিত হবে এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো। মুক্তমনার সবাই দেখুন আপনাদের কোন লেখা বিনা অনুমতিতে প্রকাশিত হয়েছে কিনা।
হুম … মিডিয়া থেকে আমি যা বুঝলাম সেটা হল নারীর বিরুদ্ধে যাই হোক সেটাই যৌন নিপীড়ন। অর্থ্যাৎ নারী মানেই যৌন। :hahahee:
আমাদের সমাজে শিশু অবস্থা থেকে ছেলে-মেয়েরা পরস্পরের সম্পর্কে অজ্ঞাত থেকে বড় হয়। প্রাইমারী স্কুল থেকে ছেলে মেয়ের সিটিং অ্যারেঞ্জম্যান্ট আলাদা রাখা হয়। এছাড়া অন্যান্য অনেক অনুরূপ বিষয় দিয়ে নারী পুরুষের পার্থক্যকে উৎসাহিত করা হয়। আবার নারীকে নীচু দৃষ্টিতে দেখতে শেখার জন্য পবিত্র(!) সব ধর্ম তো আছেই।
যৌন বিষয়ে সাধারণ শিক্ষাও পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়ভাবে নিশ্চিত করা হয় না, বরং এটা লজ্জাজনক বলে বিবেচিত হয়। কিন্তু যৌনতার চাহিদা ঠিকই মানুষের মধ্যে জাগ্রত হয়। তখন যৌনশিক্ষা বঞ্চিত, নারীর সাধারণ বিষয়েও অজ্ঞাত, ধর্মীয়ভাবে দীক্ষিত পুরুষেরা এধরণের কার্যকলাপে লিপ্ত হয়।
শৈশব থেকে ছেলে মেয়েদের পরস্পরের সাথে মিশতে দেয়া উচিত এবং যৌনশিক্ষা নিশ্চিত করা উচিত।
নারী পুরুষের যৌন সম্পর্কের বিষয়টিতে সামাজিক হস্তক্ষেপের চেয়ে বরং ব্যাক্তিস্বাধীনতা নিশ্চিত করা উচিত। ধর্মীয়ভাবে এ বিষয়টিকে এতটা ঘোলা করা হয় যে, মানুষের মধ্যে সুস্থ যৌন মানসিকতা গড়ে উঠতে পারে না।
@তুহিন তালুকদার, একমত আপনার সব কথার সাথে।
আমাদের সমাজে ছেলে-মেয়েদের মধ্যকার দূরত্ব অনেক বেশি। হোক সে সামাজিক বা ধর্মীয় কারনে। ছেলে-মেয়েদের মধ্যকার এই দূরত্ব দূর করে বন্ধুত্বে পরিনত করতে পারলে, আমি মনে করি ইভ টিজিং অনেকাংশে কমে যাবে।
আরও একটি কারন বয়সন্ধি কালে কাউন্সিলিং। এই ব্যাপারে আমাদের অভিভাবকরা উদাসীন + তারা এতটাই শাসন করে যে অনেক ছেলেরা বাজে অভ্যাস ও অসত্ সঙ্গে গিয়ে নিজেদের মানবিক ও নৈতিকতার বিসর্জন দেয়।
@Anik, একমত। তবে মূল আবারো পরিবারেই রয়ে যাচ্ছে। যাদেরকে আমরা আসৎ সংগ বলছি তারা কিভাবে খারাপ হল? পরিবারের ভাল শিক্ষা দিতে ব্যার্থ হবার কারণে
আকাশ মালিক,
আপনার কথাগুলো আসলেই গভীর ভাবে ভাবার মত আমাদের সকলেরই।
লীনা লেখাটা ভাল লাগল!
@লাইজু নাহার, আসলেই আবেগের বশে যে কথাটা এড়িয়ে গিয়েছিলতা আকাশ মালিক ধরিয়ে দিলেন। আমিও একমত। তবে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবহেলা এবং আইন ও বিচার ব্যাবস্থার বেহাল দশাকে কিছুটা আনতে চেষ্টা করেছি লেখায়।
তথাকথিত ইভ টিজিং এর ঘটনায় অল্প কিছুদিনের ব্যবধানে বেশ নৃশংস কয়েকটা ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে। অবক্ষয়ের চূড়ান্তে পৌঁছে গেছে মনে হয় বাংলাদেশের যুব সমাজ।
মেয়েদের উত্যক্ত করাটাকে কেন ইভ টিজিং-এর মতো একটা নিরীহ ভাষায় বর্ণনা করা হয় আমি বুঝতে অক্ষম। ইংরেজিতেই যদি বলতে হয় তো সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্ট-ই বলা যায়।
লীনা রহমান বাংলায় ‘লিঙ্গভিত্তিক নির্যাতন’ লিখেছেন, আক্ষরিক অর্থে ঠিকই আছে, কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একে সরাসরি নারী-নিপীড়ণ বলাটাই বোধহয় সঙ্গত।
লীনা রহমানকে ধন্যবাদ তথ্যসমৃদ্ধ সময়োপযোগী লেখাটার জন্য।
@ইরতিশাদ,
ভাল একটি শব্দ প্রস্তাব করেছেন। :yes:
@ইরতিশাদ, এইসব আগেও সমান মাত্রায় ছিল।কিন্তু গনমাধ্যম বর্তমান মাত্রায় সরব ছিল না।হত্যা গুল ছিল দূর্ঘটনা আর নিপীড়িতের আত্মহত্যা ছিল সাধারন আত্মহত্যা।পুলিশের রেকর্ডে যেই পরিমান কেস ছিল,তাই আছে। সংবাদমাধ্যম আগের তুলনা বেশি তৎপর হয়েছে যার কারনে দেশব্যাপী সচেতনতা বাড়বে আর অবক্ষয়ের চূড়ান্তে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশের যুব সমাজ এই ব্যাপারে জনগনের টনক নড়বে।
মডুগণ,
শীর্ষ আলোচনার তালিকাটি কিভাবে তৈরি হয়? এ লেখাটিতে প্রচুর মন্তব্য পড়ছে গত দুদিনে, কিন্তু তারপরও এটিকে শীর্ষ আলোচনার তালিকায় দেখা যাচ্ছে না।
@রৌরব,
ওখানে লিংক ম্যানুয়ালি বসানো হয়। তো বুঝতেই পারছেন……….. সবাই আজকাল অলস হয়ে গিয়েছে :-D।
@রামগড়ুড়ের ছানা, আমি ভাবসিলাম এই লেখা দেয়ার পর লেখক হিসাবে আমার টি,আর,পি একটু বাড়বে যখন এটা শীর্ষ আলোচনার তালিকায় আসবে।কিন্তু তোমার এই আইলসামিটার জ্বালায় এই পরিকল্পনা মাঠে মারা গেল 😛
সময়োপযোগী এবং গুরুত্বপূর্ণ লেখাটির জন্য অনেক ধন্যবাদ, লীনা!
সময়োপযোগী, গুরুত্বপূর্ণ এবং সুলিখিত পোস্ট। :yes:
আসলে আমাদের দেশে সবাই এ ব্যাপারে কম বেশী সচেতন যে না তাতো না। আমাদের অস্হিমজ্জায় অনিয়ম করার প্রবণতা মিশে আছে। নাইলে আমলা, পুলিশ কিংবা সেবা প্রদানকারীরা ঘুষ খাওয়া যে অন্যায়/অপরাধ সেটা কি জানে না? জানে। ডাক্তাররা জানে একসাথে সরকারী চাকরী আর প্রাইভেট প্রাক্টিস করা অন্যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে অন্যত্র কন্সালটেন্সী করা অন্যায়… তারপরেও করে। রাজনীতিবিদদের কথা বাদই দিলাম।
বাংলাদশের পুরো সমাজের আমুল বদল না হলে এ থেকে পরিত্রাণের খুব সোজা রাস্তা আছে বলে মনে হয় না। তবে চেষ্টা আমাদের অবশ্যই চালিয়ে যেতে হবে।
লীনা রহমানকে ধন্যবাদটা দেয়া হয় নি অতি গুরুত্বপূর্ণ লেখাটির জন্য।
ইভ টিজিং বিষয়টি নিয়ে কিছু দিন থেকে ভাবছি ও আরো জানার চেষ্টা করছি।
আমি মনে করি ইভ টিজিং এর জন্য দায়ী মূলত
১। ব্যক্তিত্ব ঠিকমত গড়ে না উঠা। অনেকে বলবেন কিশোরদের আবার ব্যক্তিত্ব কি। আসলে শুধু কিশোর না শিশুরও ব্যক্তিত্ব নামক ব্যাপারটি থাকে। একজন ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন কিশোর/যুবক কেন ইভ টিজিং করবে?
২। কিশোর/যুবকদের মধ্যে মেয়েদের সম্পর্কে অস্বাভাবিক ধারণা। মেয়েরা যে তাদের মত মানুষ বৈ কিছু না সেই ভাবনার অনুপস্থিতি। পাঠ্য পুস্তকে লিঙ্গ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান দেয়া হয় না যার কারণে শিশু কিশোরেরা নানা আজেবাজে জায়গা থেকে ভুল উপায়ে ভুলটাই শিখে থাকে। সঠিক উপায়ে সঠিক বিষয় শেখার ব্যবস্থা না থাকায় শিশু কিশোররা বিকল্প জায়গা যেমন পর্নগ্রাফি, বিভিন্ন আজেবাজে ছবি ইত্যাদির আশ্রয় নেয় এবং এগুলোই শিশুদের ব্যক্তিত্ব গঠনে, চিন্তার এঙ্গেল নির্ধারণে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
৩। হতাশা। কিশোর/যুবকদের মধ্যে দিন দিন নানা কারণে হতাশা বেড়েই চলছে।আরেকটি কারণ হলো প্রেম-ভালবাসা, যৌনতা ইত্যাদি নিয়ে একধরণের ফ্যান্টাসিতে মেতে থাকা। এক দিকে রক্ষণশীল সমাজ অন্য দিকে বিশেষ কিছু হিন্দি/বাংলা ছবি ও পর্নগ্রাফি । ঠিক কোন কারণে জানিনা অনেক কিশোরের মধ্যে এমন একটা ধারণা গড়ে ওটে যে আমাকে প্রেম করতেই হবে। আমি কোনো ধরণের ছবি এমনকি পর্নগ্রাফির বিপক্ষেও বলছি না। আমি বলছি কোনো ছবি দেখে, পর্নগ্রাফি দেখে শিশুমনে/কিশোরমনে কি প্রতিক্রিয়া হয় তা সম্পর্কে ভাল গবেষণা হওয়া প্রয়োজন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। আমরা সাধারণত উন্নত দেশের গবেষণাগুলোর উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেই। আমাদের মনে রাখা উচিত যে আমাদের দেশ ও উন্নত দেশের মধ্যে এমন অনেক ব্যবধান রয়েছে যে অন্তত শিশুদের ক্ষেত্রে আমরা উন্নত দেশের ব্যাপারগুলো নির্দ্বিধায় চালিয়ে দিতে পারি না।
৪। ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে স্বাধীন ভাবে মেলামেশার সুযোগের অভাব। এর ফলে মেয়ে ও ছেলে উভয়ের মধ্যেই পরস্পর সম্পর্কে একটা ভীতি ও অস্বাভাবিক ধারণা পোষণের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। ছেলেরা সামাজিক ও ধর্মীয় কারণে মেয়েদেরকে তাদের চেয়ে নিম্ন স্তরের বলে মনে করে তাই মেয়ের কাছ থেকে প্রেম প্রত্যাখ্যান সহ অন্য কোনো বিরুপ ব্যবহার পেলেই ব্যাপারটাকে নিজের জন্য প্রেস্টিজ ইস্যু বলে মনে করে।
মেয়েদের অনেকেই ছেলেদের সম্পর্কে অস্বাভাবিক ধারণা পোষণ করে, সহজ ভাবে মেশতে পারে না। যার ফলে অনেক মেয়েই ছেলেদের সাথে অহেতুক খারাপ বা অস্বাভাবিক আচরণ করে ফেলে যার ফলে তারা ইভ টিজিং সহ ছেলেদের দ্বারা বিভিন্ন ধরণের নিপীড়নের স্বীকার হয়।
৫। রক্ষণশীলতা- আমাদের দেশের রক্ষণশীল পরিবার গুলোর রক্ষণশীলতা যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে। মেয়েকে স্কুল/কলেজ/ ভার্সিটিতে না পড়ালে হবে না আবার পড়ালেও বেপর্দা হওয়ার বিপদ- তাই তারা বোরকা-হিজাব এসব লাগিয়ে একেবারে যাচ্ছেতাই অবস্থা। এছাড়া তাদের পরিবারের কোনো মেয়েকে টিজিং করা হলে মেয়েকেই দোষারোপ করেন।
৬।কোর্টশিপ ডিসঅর্ডার ও ছেলে-মেয়েদের মধ্যে যোগাযোগের অভাব। ছেলেরা মুক্ত ভাবে মেয়েদের সাথে কথা বলতে না পেরে নানা ভাবে মেয়েদের উত্যক্ত করে। যেমন, একটি ছেলে হয়ত একটি মেয়েকে প্রেম নিবেদন করবে কিন্তু কিভাবে করবে তার কোনো ব্যবস্থা নেই তাই সে হয়ত দেয়ালে আজেবাজে লিখে রাখল যাকে আমরা ইভ টিজিং ই বলব।
৭। সমাজ মেয়েদের শারিরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল করে গড়ে তোলে যার ফল হিসাবে তারা ঠিক ভাবে প্রতিবাদ করতে শিখে না। এ কারণেই দেখি ইভ টিজিং এর শিকার হয়ে আত্ম হত্যা করতে। আমি দেখেছি যেসব মেয়েরা ক্ষেতে-খামারে কাজ করে তাদেরকে সাধারণত টিজিং করা হয় না কারণ এসব মেয়ে সরাসরি একশনে চলে যাবে।
৮। বেকার সমস্যা, লেখা পড়া থেকে ঝরে পড়া। ইভ টিজাররা অনেকেই হয় বেকার নয়ত লেখা পড়া থেকে ঝরে পড়া ।
ইভ টিজিং নিয়ে এই হতাশা জনক অবস্থার মধ্যে একদল লেগেছেন ধর্ম প্রচারে। তাদের কথা হল ধর্মীয় মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারনে ইভ টিজিং বাড়ছে। তাদের বলব- ধর্ম বা ধর্মীয় মূল্যবোধ আমাদের দেশে/সমাজে আগের যে কোনো সময়ের চাইতে বেশি আছে। এখন যত মানুষ হিজাব পরে, নিয়মিত নামাজ পড়ে, হজে যায়(এবার গত বছরের দ্বিগুণ শুনেছি), ধর্মের সমালোচনা করলে হুমকি দেয় এতটা আর কোন কালে ছিল? আর ধর্মই তো শিখিয়েছে নারী পুরুষের চেয়ে নিম্ন স্তরের( কোরান মতে ,সুরা নিসা, ৪:৩৪) যে ধরণের ধারণা ইভ টিজিং এর একটি প্রধান কারণ। আসলে এক সময় খুব কম সংখ্যক মেয়েরা লেখা পড়া করত। এছাড়া তখন অপেক্ষাকৃত ক্ষমতা ও অবস্থা সম্পন্ন পরিবারের মেয়েরাই লেখা পড়া করত যাদেরকে টিজিং করার সাহস কেউ করত না। বর্তমানে যেহেতু অনেক বেশি সংখ্যক মেয়েরা লেখাপড়া করছে, বাইরে কাজ করছে তাই ছেলেদের সাথে মেয়েদের ইন্টারেকশন অধিক পরিমাণে হচ্ছে। এছাড়া সমাজে টেনশন বিষয়টা নানা কারণে বেড়েই চলেছে। আমাদের সমাজ একটা যুগ বদলের মধ্যবর্তী পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছে যখন সমাজে নানাবিধ বিশৃংখলাটা অধিক হওয়া অস্বাভাবিক নয়। ইত্যাদি কারণেই বোধ হয় আমাদের সমাজে ইভ টিজিং ব্যাপারটা প্রকট ও মারাত্মক হতাশা জনক আকার ধারণ করেছে।
@সৈকত চৌধুরী, আপনার এই বিশাল মন্তব্যটা আরেকটু বিস্তারিত করে আমি মনে করি পোস্ট হিসেবে দেওয়া উচিত। এতে আলোচনার এতোকিছুই রয়েছে যে একটি পোস্টের পেটের ভিতর এটা সম্ভব না। অনেকের চোখও এড়িয়ে যেতে পারে। ৭ নম্বর পয়েন্টটা যে কি ভালো লাগলো!
@আল্লাচালাইনা, আমিও আপনার সাথে একমত। আর ঠিক বলেছেন সৈকত চৌধুরীর ৭ নম্বর পয়েন্টটা সবচেয়ে জোরালো। ওটাই অনেক আলোচনার দাবী রাখে।
@সৈকত চৌধুরী, আপনার প্রতিটা কথের সাথে আমি একমত। আপনি এ ব্যাপারে পোস্ট দিয়ে দিন না।তাহলে ভালভাবে আলোচনা করা যাবে। আসিফ মহিউদ্দিনের একটি পোস্টের লিঙ্ক দিচ্ছি এ ব্যাপারে
http://www.somewhereinblog.net/blog/realAsifM/29265476
আপনি এর আগে একটি মন্তব্যে প্রশ্ন করেছেন যে হিন্দি ছবি বা পর্ণ কিভাবে একজনকে নষ্ট করে।এগুলো কার উপর কেমন প্রভাব ফেলবে তা নির্ভর করে কার চিন্তা কেমন তার উপর। এক্ষেত্রে আমার মত হচ্ছে মানুষের চিন্তার মূল রয়ে যায় তার পারিবারিক শিক্ষা ও মূল্যবোধের মাঝে। উপরোক্ত লিঙ্কের পোস্টের রহিম বাদশা নারীকে ভোগ্যবস্তু বলে ভাবতে শিখেছে, সে নারীকে জোর করে জয় করে নায়ক হওয়াকেই জীবনের চরম সার্থকতা মনে করে। তাই সে পর্ণ দেখেও মনে করে যে নারী সবসময়েই কামার্ত আর ভোগের বস্তু। আপনি বা আমি কিন্তু পর্ণ দেখলে এটা মনে করবনা। আপনার আমার কাছে হিন্দি ছবির নায়কের উত্যক্তকারী বৈশিষ্টকে মেয়ের প্রেমে পড়ার মোক্ষম কারণ বলে মনে করবনা বরং এসবকে রাবিশ মনে করব। আমাকে কেউ উত্যক্ত করলে আমি আত্মহত্যা করবনা কারণ আমি ছোটবেলা থেকে পুরুষের খেদমতগার হিসেবে বড় হইনি বা আমার মাও আমাকে অযৌক্তিক কোন কাজ জোর করে করাতে পারবেনা। যেমন বখাটেদের অত্যাচার এড়াতে নিজেকে বস্তাবন্দী করা। আমি নিজেকে মানুষ ভাবতে শিখেছি। কিন্তু যে মেয়ের পরিবার তাকে পুরুষের অর্ধেক, সহধর্মিনী, শয্যাসঙ্গী হতে শিখিয়েছে কেবল এবং তার মনকে নিজেদের জড় প্রথা ও মূল্যবোধের চাপে পিষ্ট করে দিচ্ছে সে মেয়েই আত্মহত্যা করবে। আমি ছেলেকে ছেলে বন্ধু নয় বন্ধু ভাবতে পারি। কিন্তু রক্ষনশীল পরিবারের আমার কোন বান্ধবী আবার একই ছেলেকে দেখে ভাবতে পারে যে ছেলেটি তার দিকে তাকালেই তার বাচ্চা হয়ে যাবে। হয়ত দেখা যাবে সে আর আমি একই স্কুল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি কিন্তু আমার পারিবারিক পরিবেশ থেকে তার পরিবেশ ভিন্ন ছিল। আমি সেক্সকে জীবনের অঙ্গ মনে করি এবং মনে করি এ ব্যাপারটি নিয়ে লজ্জা পাওয়ার যেমন কিছু নেই তেমনি লাফালাফি করারও কিছু নেই। এটি আমাদের খাবার খাওয়ার প্রয়োজনীয়তার মতই স্বাভাবিক একটি প্রয়োজনীয়তা। অথচ একটি রক্ষণশীল পরিবারের ছেলে একে নিষিদ্ধ ভেবে ধর্ষণ করে বিকৃত আনন্দ পেতে পারে। সুতরাং মানুষের ভাবনার মূলটা রয়ে যায় পরিবারেই। তবে বাইরের শিক্ষাও সাহায্য করে অনেক। যেমন আমার অনেক চিন্তাই আমার পরিবার থেকে আসেনি।আমি নিজে জেনেছি এবং তাদের বাজে ধারণার প্রতিবাদ করছি। তাই বন্ধুদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বললে এবং অনেক বেশি প্রচার করলেও এ ব্যাপারটি বেশ কমে আসবে। যাদের মন একেবারে বদ্ধ নয় তারা হয়ত এ ব্যাপারটির গুরুত্ব বুঝে সচেতনতা তৈরীতে এগিয়ে আসবে।
@সৈকত চৌধুরী,
১০০% সহমত।
ইভটিজিং এর শিকার হয়ে যারা আত্নহত্যা করতে চায় তাদের মরতে দেয়াই ভালো মনে করি। এরা না পারে একটা ছেলের সাথে ঠিকভাবে কথা বলতে না পারে ঠিকভাবে চিন্তা করতে।
লীনা যেরকম সাহসী কথা বলছে আরেকটা মেয়ে সেরকম পারছে না কেন? আমি লীনার ফেসবুক প্রোফাইলে তার বস্তা পরিহিত ফটো দেখেছি। নিঃসন্দেহে বলা যায় তেমন লিবারেল পরিবার না, তাহলে লীনা কিভাবে সেই পরিবেশ থেকে এত সাহসী কথা বার্তা বলছে? ইভটিজিং এর বিরুদ্ধে কথা বলতে হলে আগে উচিত পরিবারের অভিভাবকদের সঠিক শিক্ষা দেয়া। এরা নিজেদের জীবনে ঠিকই প্রেম ট্রেম করে দুনিয়া উদ্ধার করে আর সন্তানদের দেখলেই মাথা নষ্ট হয়ে যায়। এরা প্রত্যেকে একেকটা হিপোক্রেট। সন্তানদের কম্বাইন্ড স্কুল কলেজে পড়াবেনা আর যখন ছেলেরা একটু উগ্র হবে তখন নাম হবে ইভটিজিং, আর কিছু ত্যানার মত মেয়েরা আবেগীয় স্রোতে গা ভাসিয়ে করবে আত্নহত্যা। স্রেফ বিরক্ত লাগে আমার এই আত্নহত্যার কথাগুলো শুনলে।
@সাইফুল ইসলাম,
-এটা একটু বেশী হৃদয়হীনের মত কথা হয়ে গেল না? একটা মানুষে সাধ করে আত্মহত্যা করে? অনেক মানসিক কষ্টের পরেই এই মেয়েরা আত্মহত্যা করে।
সব মানুষ সমান নয়, ড্যাম কেয়ার ভাব বা প্রতিবাদী মনোভাব সবার মাঝে সমান ভাবে গড়ে ওঠে না। ব্যাতিক্রম দিয়ে সবাইকে বিচার করা যায় না। প্রতিবাদী মনোভাব গড়ে তুলতে আশে পাশের সামগ্রিক পরিবেশের প্রভাব থাকে প্রকট। আমাদের মত কনজারভেটিভ পরিবেশে প্রতিবাদী নারী হওয়াটা এখনও ব্যাতিক্রম বলেই মনে হয়, এর জন্য শুধু শুধু মেয়েগুলিকে দায়ী করা যায় না। বিশেষ করে তারা আশে পাশের মানূষের থেকে সহানুভূতি বা শক্তি না পেলে কি করে প্রতিবাদী হবে?
আমি ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি যে রাস্তাঘাটে বাজে পরিস্থিতিতে পড়ে দুয়েকটা মেয়ে প্রতিবাদী হলে আরো উলটা আশে পাশের কিছু লোকে টিটকারী দিচ্ছে, আর যারা নীরব তারা হাসছে।
বিদেশে আত্মহত্যার ব্যাপার না থাকলেও অনেক সময়ই মেয়েরা এসব অত্যাচার নীরবে হজম করে যায়। রেপ কেস বিশেষ করে অধিকাংশ মেয়েই এড়াতে চায়।
@আদিল মাহমুদ,
সহমত।
জটিল যন্ত্র ‘সমাজ’ কে যদি আমরা একটি “শরীরের” সাথে তুলনা করি, তাহলে ‘ইভ টিজিং’ বিষয়টাকে আমি আমদের বহুবিধ সামাজিক অবক্ষয়ের একটি মাত্র উপসর্গ (symptom) বলেই মনে করি। বহুবিধ সামাজিক অবক্ষয়ের “কারন সনাক্ত করে তার প্রতিকারের ব্যবস্থা” না করা গেলে এর সমাধান সম্ভব নয়। প্রতিটি মানুষ তার নিজস্ব মূল্যবোধ নিয়ে গড়ে উঠে – যার প্রায় সবটুকুই (ব্যতিক্রম খুবই সামান্য) সে পায় তার নিজস্ব পরিবার, বেড়ে উঠার পরিবেশ, শিক্ষা (সাধারন ও ধর্মীয়) ও সমাজ থেকে। ঢাকার গুলশান /বনানীতে বেড়ে উঠা লিবারেল শিক্ষিত পরিবারের কোন ছেলে-মেয়ের মানসিকতার সাথে রংপুরের ভুরুংগামারীর আশিক্ষিত/অল্পশিক্ষিত রক্ষনশীল পরিবারের ছেলে-মেয়ের মানসিকতাকে একই ‘ধারায়’ চিন্তা করার কোনই অবকাশ নাই। সবচেয়ে যেটা জরুরী “Victim” কে কোন অবস্থাতেই দায়ী করা ঠিক নয়, তাকে সর্বাবস্থায় সাপোর্ট ও সহানুভূতি দেয়া দরকার।
@সাইফুল ইসলাম,
ভাইয়া আপনি কল্পনাও করতে পারবেননা একটা মেয়ে কতটা কষ্টে আত্মহত্যা করে। আর আপনি যে বলছেন আমার কথা আমি যে কতটা কষ্টের মাঝে দিয়ে গেছি আমার আজকের এই অবস্থায় আসতে আর এখনো কতটা কষ্ট পেতে হয় পরিবার থেকে তা হয়তো আস্তে আস্তে জানবেন পরে। আপনি মেয়ে না হয়ে এ ব্যাপারগুলো সত্যি কল্পনা করতে পারবেননা।সবার মানসিক শক্তি একরকম হয়না। আমার আপন বোনকে দেখলে বা তার সাথে কথা বললেই আপনি বুঝতেন। আমি যদি অর বোন না হতাম তাহলে তার নিজের এরকম একটা ক্ষতি করে বসার সমূহ সম্ভাবনা থাকত উত্যক্তের স্বীকার হয়ে। আমি বেশ গর্ব করেই বলি আমি অনেক স্ট্রং। কিভাবে এ শক্তি আমার মাঝে আসল আমি জানিনা।কিন্তু আমার বোনই তো একই পরিবেশে থেকে এমন মানসিক শক্তি পায়নি। আর আমার চেয়ে খারাপ অবস্থায় থেকে পরিবারের কাছ থেকে সহায়তা মা পেয়ে একটা মেয়ের মন ভেংগে যেতেই পারে।
:yes:
যতদিন ধর্মের বাজে দর্শন(নারীর মূল্য ও নারী-পুরুষের সম্পর্ক নিয়ে)থেকে গড়ে ওঠা বিধ্বংসী মূল্যবোধ ধ্বংস না করা যাবে অবস্থার উন্নতি হবেনা। তাই পুরোনোদের নিয়ে আমার কোন আশা নেই, আমার যত আশা আমাদের বয়সের মানুষ এবং আমাদের অনুজদের নিয়ে।
@লীনা রহমান,
ব্লগে ব্লগে ইভ টিজিং সমস্যার সমাধানের পরামর্শ গুলো পড়ে সত্যিই হতাশ হয়েছি। বলা হয়েছে- বখাটে ছেলেদেরকে ধরে ধরে গণ পিটুনি দেয়া হউক, মাথা মুন্ডায়ে দেয়া হউক, মুখে আলকাতরা লাগিয়ে রাস্থায় ছেড়ে দেয়া হউক, মেয়েদেরকে কনফ্যু-ক্যারাটি শেখানো হউক। আত্মহত্যার বদলে ছেলেকে খুন করা হউক, ছেলেদের হাত-পায়ের দু একটা হাড় ভেঙ্গে দেয়া হউক।
একটি ব্লগে দেখলাম একজন লেখক তার লেখার মন্তব্যে পরামর্শ দিয়েছেন- ইম্যিডিয়েট এফেক্টিভ সল্যুশন হল, কয়েকটি ছেলেকে ধরে তাদের শরীরের বিশেষ একটি অঙ্গ কেটে ফেলা হউক।
মেয়েরা ক্যারাটি শিখতে পারলে, ছেলেরা পারবে না? বিশেষ অঙ্গ লিঙ্গ কর্তন করে ফেললে ছেলেটি যে কারো মাথা কর্তন করতে পারবেনা, এর কি নিশ্চয়তা আছে?
এই সমস্ত ত্যাজ্যপুত্র, গৃহত্যাগী, বেকার, সমাজ বঞ্চিত, স্কুল থেকে বহিষ্কৃত, জীবন নিয়ে হতাশাগ্রস্থ বখাটে যুবক-কিশোরদেরকে সমাজে পূনর্বাসনের লক্ষ্যে আমার কর্ম জীবনে বেশ কিছু বছর তাদেরকে নিয়ে কাটিয়েছি। এদের অনেকেই শেষ পর্যন্ত স্কুল জীবনে, কর্ম জীবনে, পারিবারিক জীবনে ফিরে গিয়ে সপ্নীল সুন্দর জীবন গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। জানি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট সমান নয়, রাস্ট্রীয় রিজোর্স পর্যাপ্ত নয়, তবু এমন অভিনব, অদ্ভুত পরামর্শ কোনমতেই মেনে নিতে পারছিনা। এমন সমাধান কোন মানুষের কাছ থেকে শুনিনি, কোন বই কিতাবেও পড়িনি। আমার তো মনে হয় বাংলাদেশে যা হচ্ছে এর নাম ইভ টিজিং নয়, বরং সেক্স্যুয়েল হ্যারাসমেন্ট বা যৌন নিপীড়ন, লিঙ্গ-ভিত্তিক নির্যাতন, যা রাস্ট্রীয় আইনে দন্ডনীয় অপরাধ।
আগের মন্তব্য থেকে কিছুটা দূরে সরে এসেছেন বোধ হয়। যেমন- @ভবঘুরে, আপনার বুদ্ধি আমার ভাল লেগেছে। এমন করতে পারলে হারামীগুলোর শিক্ষা হত।
আমার সত্যি ইচ্ছে করে এইসব বখাটেদের এবং বিশেষ করে রিটার্ড বাবা-মাদের ধরে খুন করে ফেলতে
মা বাবাদের খুন করতে পারলে করুন, কিন্তু বখাটে ছেলেটিকে খুন করার আগে আরেক বার ভাবতে অনুরোধ করবো। ভেবে দেখবেন তার ভাল মানুষ হয়ে গড়ে উঠার জন্যে আসলেই কি কোন সুযোগ ছিল? ছেলেটিকে ভাল মানুষের রূপে ফিরিয়ে আনার সকল দরজাই কি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল? বখাটে ছেলেটিকে যে মা বাবা জন্ম দিলেন, যেখান থেকে তার বিশ্ববিদ্যালয় শুরু হওয়ার কথা, যে সমাজে ছেলেটি বড় হলো সেই সমাজপতিরা, সে যে রাস্ট্রের নাগরিক সেই রাস্ট্রের মাথায় বসে যারা নীতিনির্ধারণ করেন, যাদের হাতে আইন-সৃংখলা রক্ষার দায়ীত্ব, সন্মানিত স্বরাস্ট্র মন্ত্রী, স্থানীয় সরকার বাহাদুর, যারা নাগরিক নিরাপত্তার পাহারাদার, জাতীয় এই অবক্ষয়ের জন্যে এদের কি কোন দোষ নেই, কোন দায়ভার নেই? আলোচনায় তাদের নাম প্রায় অনুল্লেখিতই রয়ে গেল।
@আকাশ মালিক, আমার আসলেই এভাবে নিজের আবেগের উপর নিঅন্ত্র হারানো উচিত হয়নি বুঝতে পারছি। আমি কিন্তু সবসময়েই বলে এসেছি ছেলেদের বখাটে হয়ে ওঠা আর মেয়েদের আত্মহত্যা এসবের পেছনে পরিবারের মূখ্য ভূইকা রয়েছে। আর নানা ব্লগে যেসব সমাধান বলা হয়েছে তার সাথেও এমনকি আপনার উক্ত আমার মন্তব্যের সাথেও আমি একমত নই। আসলে বেশি আবেগ দেখাতে গিয়ে ছেলেমানুষী করে ফেলেছি।আমি আগেই বলেছি
আর আমি কিন্তু এই নতুন প্রজন্মের মাঝে সে বখাটেটিকেও অন্তর্ভুক্ত করি যে হয়ত ভাল বন্ধুত্ব বা ভাল অভিভাবকের ছায়া পেয়ে ভাল পথে আসতে পারে। ধন্যবাদ আমাদের সবার গরম মাথার ভুল ধরিয়ে দেবার জন্য। 🙂
@সাইফুল ইসলাম,
এখানে একটু ভুল আছে। আপনার এই মন্তব্যে মনে হচ্ছে ইভটিজিং বলতে শুধু আপনি বুঝছেন যে রাস্তার পাশে উত্তক্ত করাকে। ইভটিজিং বলতে যদিও সেটাই বুঝায়। কিন্তু শুধুমাত্র ইভটিজিং এর কারণে কেউ আত্মহত্যা করে না। আমাদের দেশের মেয়েরা এখন এতোটা দুর্বল নেই। সকল স্কুলে, মহল্লায়, গ্রামে এইসবের মাঝেই হাজার হাজার মেয়েরা তাঁদের পড়াশুনা চালিয়ে আসছে।
ভুলটা আসলে করছে পত্রিকাগুলো। উপরে যে খবরটি দিলাম ঃ সিরাজগঞ্জে ইভ টিজিংয়ের শিকার ছাত্রীর আত্মহত্যা, বখাটে আটক সেটা আবার দেখুন। এটিকে ইভটিজিং বলে না। এটাকে বলে কিডন্যাপিং বা অপহরণ। আপনি একজনকে জোরপুর্বক অপহরণের পর তাকে আটকে রেখেছেন, মতের বিপরীতে সিদূর লাগিয়ে প্রতিকী বিয়ে করেছেন, সমাজের চোখে তাকে হেয় করেছেন। এটা পাশ্চাত্যের যে কোন দেশেই ফৌজদারী মামলাযোগ্য অপরাধ, এবং আপনি হত্যা মামলাতেও ফেসে যেতে পারেন। প্রথম আলোর মত পত্রিকা যখন সেটা পার্থক্য করতে পারে না তখন বেশ হতাশ হতেই হয়। পাশ্চাত্যে অন্য মেয়েকে তুলে নেওয়ার দরকার পরে না, নিজের সন্তানকেই যদি মতের বিপরীতে কিছু করাতে চেষ্টা করেন, সোজা ফেঁসে যাবেন।
কানাডার একটি খবর দেই এখানে। পড়ে দেখতে পারেন সবাই। কানাডার ইতিহাসে এটি এক জটিল কেইস। এয়ারফোর্সের একজন কর্নেল যিনি কিনা রাতে বিভিন্ন বাসায় মেয়েদেরকে উত্তক্ত করতো এবং এই করতে গিয়ে দু’জনকে গূম করেছেন তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। চিন্তা করে দেখুন যে আমাদের দেশে একজন সাধারণ বখাটেকেই কিছু করতে পারেন না, আর এ রকম কাউকে আপনি কিছু করতে পারতেন কিনা। এটাই হচ্ছে বিচার ব্যবস্থা।
তাই অনুরোধ রইল যারা আত্নহত্যায় বাধ্য হয়েছে তাঁদেরকে অন্তত মিথ্যে আপবাদ না দেই।
দুঃখ প্রকাশ করছি। কথাগুলো মনে হয় বেশি রূঢ় শোনাচ্ছে। হয়তবা ভুলও।
তবে লীনার মত সাহসী মেয়েদের দেখলে মনে হয় এই ভুলগুলো একটু বেশিই হয়। 🙂
@সাইফুল ইসলাম,
কর্নেল উইলিয়ামস এর লিঙ্কটা দিতে ভুলে গিয়েছিলাম। লিঙ্কটা এখানে
@সাইফুল ইসলাম,
ভাইয়া এবার কিন্তু শরম পাচ্ছি। নিজের ব্যক্তিত্ব ও স্বাতন্ত্র বজায় রাখতে প্রাণপন চেষ্টা করি এই আর কি।
@স্বাধীন,
:yes:
:-Y
ওমা! ২৪ঘন্টারও কম সময়ে এত্তো বড় একটি পোস্ট নামিয়ে ফেলেছেন? এইবার আপনিতো তবে দেখা যাচ্ছে, প্যালিওলিথিক যুগে যেইসব দোপেয়ে বানরেরা দলবদ্ধ হয়ে পাথরের অস্ত্র-সস্ত্র আর বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে বিশাল বিশাল ম্যামথ, জলহস্তী আর হ্যা গন্ডার (most impotantly) শিকার হিসেবে নামাতো তাদের থেকে বিবর্তিত!!! পোস্টে ঝাঁঝা।
আমি মনে করি আমাদের এই ইভটিজিং সমস্যাটার সবচেয়ে বড় অনুঘটক হচ্ছে আমাদের পশ্চাতপদ উপমহাদেশীয় মূল্যবোধ ব্যাবস্থা। এটা মেয়েদের উপস্থাপনই করে একটি নিস্প্রাণ, জড় ‘ময়দা ঠাঁসা নাদুস সোনা’ হিসেবে এবং আতিক রাঢ়ী যেটা বললেন হিন্দি ছবি, গান ইত্যাদি দিয়ে এই দৃষ্টিভঙ্গীটাকেই পাকাপোক্ত করে ফেলা হয়। এটা দেখে নারী শেখে যে নিস্প্রাণ, নির্জীব হয়ে পড়ে থাকাটাই তাকে করে তোলে সবচেয়ে আকর্ষণীয় আর পুরুষ শেখে যে লম্ফঝম্ফ আস্ফালন করেই একটা মেইট পেয়ে যাওয়া সম্ভব। ফলে রসায়নের নিয়মানুসারেই যেই জীবের ফাইট অর ফ্লাইট প্রতিক্রিয়া সবসময় খালি ফ্লাইটই দেয় তার উপর শুরু হয় নানারকমের নিষ্পেষণ। সময় বয়ে চলার সাথে সাথে ফলে একটি পক্ষ বিবর্তিত হয় নির্ভেজাল নিরামিশাষী রূপে যার কাজ শুধুই শিকার হওয়া অথবা পালিয়ে যেতে সমর্থ হওয়া, আর অপর পক্ষটি একটি ছোটখাটো ব্যাঘ্রের রূপ ধারণ করে শিকার তাড়া করে ফেরে। আর সেই সাথে ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের মতো সুপার্ব রিটার্ডেন্ট দুটি ধর্মের কুপ্রভাবতো রয়েছেই। তাও ভালো এখন শুধু ইভটিজিং করে, আগেতো জ্যান্ত চিতায় তুলে দিয়ে পুড়িয়ে মারতো!
আমি মনে করি আমাদের রিটার্ডেন্ট উপমহাদেশীয় মূ্ল্যবোধ ব্যাবস্থা সম্পুর্ণ ১০০% পাশ্চাত্য মূ্ল্যবোধ ব্যাবস্থা দ্বারা প্রতিস্থাপিত হওয়ার মধ্য দিয়েই সিস্টেমেটিক নারীবৈষম্য দূর হবে। আর অপার্চুনিস্টিক নারীবৈষম্য বা সুযোগ পেলে মাঝেমধ্যে নারীর মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খেয়ে কিছু সুবিধা আদায় করে নেওয়া, এটা মনে হয়না অদূরেই দূ্রীভুত হতে যাচ্ছে যতক্ষণ কিনা যৌনগতভাবে ডাইমর্ফিক প্রজাতি মানুষে ডমিনেন্ট লিঙ্গটি পুরুষ। তাই, একটু পুরুষালী কথা বলেই শেষ করি। রিটার্ডেন্ট মুসলমান-হিন্দুরা একটু ইভটিজিং টিভটিজিং করবেই, you better get on with this. :-Y
@আল্লাচালাইনা,
😎
আমার সত্যি ইচ্ছে করে এইসব বখাটেদের এবং বিশেষ করে রিটার্ড বাবা-মাদের ধরে খুন করে ফেলতে যারা নিজের মেয়েদের খুন করছে নিজেদের বাজে মূল্যবোধের চাপে ফেলে
@আল্লাচালাইনা,
বাহ! চমৎকার। আপনার নির্ভেজাল জগাখিচুরি প্রনালীর ভাষার ব্যাবহারে উপমহাদেশীয় মুল্যবোধ প্রতিস্থাপনের ডাকে চরম ক্ষুদ্ধ হলাম এবং সেইসাথে লজ্জা পেলাম।
পাশ্চাত্য সমাজ উল্লেখ্য সফলতা অর্জনের পরেও নানাবিধ সমসাময়ীক সমস্যা মোকাবেলা করে চলেছে,কিন্তু উত্তর-দক্ষিনের বা পশ্চিম-পূর্বের মূ্ল্যবোধ ব্যাবস্থা সম্পুর্ণ ১০০% প্রতিস্থাপিত করেনি।
“সিস্টেমেটিক নারীবৈষম্য” দূর করতে হবে:, ভোগবাদের বিরোধিতা করে, তরুন সমাজ আদর্শ স্থাপন করে, শিক্ষাব্যাবস্থায় মূ্ল্যবোধ শিক্ষা, আদর্শবান অগ্রজ প্রজন্ম গঠন করে, গনমাধ্যমের ব্যাপক অপসংস্কৃতি রোধ করে, সমাজ সংস্কারকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করে এবং দুর্নীতিমুক্ত পরিবার গঠন করে।সরকারি কর্মসূচী দ্বারা এইসব প্রয়োগ করা সম্ভব তবে সফল হবার জন্য দরকার আমাদের সদ্বিচ্ছা যার মুলে দেশ ও জাতির প্রতি সন্মান ও ভালবাসা যার শিক্ষা পাই আমাদের উপমহাদেশীয় মূ্ল্যবোধে ।
পশ্চিমা আইন এবং প্রশাসনিক কাঠামো উন্নত বিধায় আমরা সেটি প্রতিস্থাপন করেছি (ফলাফল আজ পরিস্কার),কিন্তু পাশ্চাত্য মূ্ল্যবোধ আমাদের সমাজে প্রতিস্থাপিত করতে পারিনা। কেন পারিনা? সমাজবিজ্ঞানে এর কারনসমূহ পাবেন।
আর বলছেন সেই তাদের কথা, যারা আমাদের ভাষার যৌননিপীরণকে বলে ইভ টিজিং!!!
আপনার বাসায় হয়তো কিছু গাছ আছে যেখানে পাখিরা এসে গান গায় আবার কখনো কাক এসে উচ্ছিষ্ট ফেলে। তাই দেখে আপনি গাছটি কাটতে যাবেন না দয়া করে,তাতে পরিবেশের সৌন্দর্য থেকে শুরু করে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটে।
আপনি সূখী হোন।
@oshamajik,
একথা আমি পুরোপুরি বিশ্বাস করিনা। কিন্তু আপনার কিছু কথায় একমত হতে পারলামনা
পশ্চিমা আইন তাদের দেশে যেভাবে আছে আমাদের দেশেও কি ঠিক সেভাবেই প্রতিস্থাপিত হয়েছে? আমার তো মনে হয় পশ্চিমা আইনের ঘোড়া আর আমাদের দেশের ঔপনিবেশিক ও পাকিস্তানি আমলের আইনের গাধা একসাথে মিলে আমাদের আইন খচ্চরের মত একটি প্রাণীতে পরিণত হয়েছে(আমি জানি খচ্চর খুবই উপকারী ও ভারবাহী পশু কিন্তু এটা বিকৃত অর্থে কথায় কথায় খচ্চর কথাটা আমরা যেভাবে ব্যবহার করি সেভাবেই এখানে ব্যবহার করলাম।)
সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের একটি বইতে পড়েছিলাম কোন দেশ বা সমাজ কোন জিনিসে জন্য প্রস্তুত না থাকলে সে জিনিসটি কোন ভাল ফল না এনে বরং হিতে বিপরীত হয়, তা সে জিনিসটি অন্য দেশে বা অন্য সমাজে যত ভাল ফলই দিক না কেন।
পশ্চিমা আইন প্রতিস্থাপন করাই শেষ কথা নয় তাকে আমাদের দেশের উপযোগী করে মডিফাই করাই মনে হয় বেশি যুক্তিপূর্ণ হবে।
কথাটা মনে হয় উলটে গেল। আমরা পাশ্চাত্য থেকে ইভ টীজিং কথাটা নিয়েছি এবং না বুঝেই একে নারী নীপীড়ন এর স্থলে ব্যবহার করছি। এ প্রসংএ স্বাধীনের একটি উক্তি উদ্ধৃত করলাম
আশা করি বুঝতে পারছেন যে তারা আমাদেরকে কিডন্যাপিং বা ফৌজদারি মামলাযোগ্য অপরাধগুলোকে “এভ টীজিং” নামকরণ করতে বলেনি। আমরাই চোখ কান মন মগজ বন্ধ করে রেখেছি বলে বুঝতে পারছিনা যে ইভ টীজং এর সীমানা পেরিয়ে কখন একটি ব্যাপার কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ হয়ে দাঁড়ায়।দোষটা তাহলে কার???
@লীনা রহমান,
ফলাফল পরিস্কার বলে আমি আজকের অরাজক পরিস্থিতিই বুঝিয়েছি যা আপনিও বলেছেন এভাবে,
আর,
ইভ টিজিং শব্দটির উৎপত্তি উপমহাদেশে, এটি পশ্চিমের নয়।
আমার লেখার মূল বক্তব্য ছিল, আমাদের সমাজে ও মুল্যবোধে সংস্কার প্রয়জন এসবের প্রতিস্থাপন নয়। প্রতিস্থাপন করতে গেলে আমরা সাংস্কৃতিক উদ্বাস্তু হয়ে যাব।
আমাদের উন্নতি আমরাই করবো, আমাদের ” চির উন্নত মম শির”
@oshamajik,
যাকে পশ্চিমের মূল্যবোধ হচ্ছে সেটা পশ্চিমেও বিরাট বিপ্লবের মাধ্যমে আগের মূল্যবোধ “প্রতিস্থাপন” করেই এসেছে। এখানে মূল্যবোধটা কোথা থেকে এল সেটা অপ্রাসঙ্গিক, মূল কথা এই সময়ে সেটার প্রয়োগ-উপযোগিতা। আর আমাদের মূল্য চিরকাল এক থেকে গেছে এই ধারণা আমার কাছে অগ্রহণযোগ্য ঠেকে। একশ বছর আগের বাঙালী মূল্যবোধের তুলনায় এখনকার মূল্যবোধের পার্থক্য বিরাট, এবং ভবিষ্যতে আরো পরিবর্তন বাঞ্ছনীয়। অনেক সময় পুরোন সংস্কারের মধ্যে নতুন সমস্যার সমাধান আসলেই থাকেনা।
@রৌরব, :yes:
@রৌরব,পশ্চিমের বর্তমানের প্রচলিত সামাজিক মুল্যবোধ গড়ে উঠেছে তাদের সমাজ বিবর্তনের ধারায়। রেনেসাঁ পূর্ব সেই সমাজ ছিল “ধর্ম বর্ম” দিয়ে ঢাকা। সামাজিক মুল্যবোধের মূল ভিত্তিই ছিল ধর্মকাহীনি। সমাজ ছিল অরাজক। বিজ্ঞানহীন সমাজে যেমন হয়ে থাকে,অজানার ভয় দেখিয়ে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর শোষন।বিজ্ঞান যুগ আরম্ভ হবার পর পর সমাজবিজ্ঞানীরা ( যারা ছিল তখন সংস্কারক) বুঝতে পারলো মানুষের স্বাধীনতা হরন করা হচ্ছে এবং সমাজে সংস্কার প্রয়োজন। রেনেসাঁর পর তারা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জায়গায় স্থাপন করলো সামাজিক প্রতিষ্ঠান। যা ধর্মকাহীনির জায়গায় এনে দিল সমাজবিজ্ঞান।ধর্মকাহীনি থেকে সামাজিক মুল্যবোধের মূল ভিত্তি হল সমাজবিজ্ঞান। এটি করতে করতে কিছু শতাব্দী পেরিয়েছে, নিয়মিত সংস্কার ও বিদ্রোহের মাধ্যমে এটি করেছে। যেই সমাজ তারা পেল সবাই যে একমত ছিল তা ও নয়, কিভাবে সমাজ কাজ করবে তা নিয়েও অনেক মতামত ও অনেক যুদ্ধ হল।কিন্তু এরি মাঝে সেখানে যা হয়েছে তা হল,সমাজবিজ্ঞান চর্চা।
আপনারা অবশ্যই জানেন যে এখনো সেখানে নিয়মিত সংস্কার ও বিতর্ক বিদ্যমান। সূতরাং, আপনি যেভাবে বললেন,
আমি একমত নই, আমি বলি, পশ্চিমের মূল্যবোধ “প্রতিস্থাপন” নয়, এসেছে সংস্কার করে।
তবে আমি একমত আপনার এই কথায় যে,
এখন দেখুন, আমরা যেই সময় আমাদের সমাজে পশ্চিমের আবিস্কৃত বিজ্ঞান ব্যবহার শুরু করি, আমরাও দেখি আমাদের সমাজেও অগ্রতির জন্য দরকার সামাজিক প্রতিষ্ঠান, তাই আমরা নিজেদের সমাজ বিশ্লেষন না করে, নিজেদের উপযোগ্যতা না যাচাই করে সামাজিক প্রতিষ্ঠান গুলোও তাদের কাছ থেকে এনে “প্রতিস্থাপন” করলাম। এখানে অবশ্যই বিদেশি প্রভুদের ইচ্ছা এবং আমাদের উপর পশ্চিমের আগ্রাসী মনোভাব ও ছিল তবে আমাদের সমাজের দুর্বলতা ও সংস্কর বিমুখতা ও তাদের মানের ওপর নির্ভরশীলতাই মূখ্য। “প্রতিস্থাপন”র ফলে আমরা পেলাম শুধু প্রতিষ্ঠান, পেলাম না একে চর্চার অভিজ্ঞতা,ফলে পারলাম না একে ব্যবহার করে সেরা ফলাফল আনতে। আমরা মুলত ব্যবহার করতে যেয়েও হোচটের মাঝেই আছি। তবে,ধীরে ধীরে অভিজ্ঞতা অর্জন করছি,যা ছিল না আমাদের এবং আমরা স্বীকার করবো আগের চেয়ে এখন ভাল চলছে এবং সামনে আরো ভাল হবে।
যেহেতু সামাজিক মুল্যবোধ নির্ভর করে সমাজে সুতরাং আমাদের মুল্যবোধের বিকাশ ও একই মাত্রায় চলছে।
আপনি অবশ্যই স্বীকার করবেন আমাদের সমাজ বিজ্ঞান ভিত্তিক নয় এখনো সুতরাং আমাদের সামাজিক মুল্যবোধ এর ভিত্তি সমাজবিজ্ঞান নয়, আমরা যদি বিজ্ঞান কে ভিত্তি করতে চাই তাহলে আমাদের সমাজকে সংস্কার করে করতে হবে , “প্রতিস্থাপন” করে নয়। আমাদের বর্তমান সমাজ থেকে এটুকু বুঝতে পেরেছি আমাদের দরকার অভিজ্ঞতা, এবং সমাজবিজ্ঞান চর্চা করতে হবে এবং বুঝে শুনে সংস্কারমুলক কাজ করতে হবে। হতাশ হয়ে বা রাগ করে বাজার থেকে “ফর্মুলা” কিনে এনে নয়। এইটুকু আমরা সবাই জানি সব জায়গায় একই “ফর্মুলা” কাজ করেনি এবং করবেও না।
বাংলাদেশ নবীন দেশ, আমাদের আরো কিছু সময় লাগবে তবে আমরা কাজ করে গেলে সময় কমবে আর আইডিয়া ধার করলে সময় বাড়বে এবং অভিজ্ঞতাহীনতায় মুশকিল ও বাড়বে।
দেখুন, আপনাদের সাথে আমার অমত কিন্তু পশ্চিম অনুসরন(ফলো) নয়, যা ভাল তা অনুসরন করাই দরকার। তবে আমরা কথা বলছি “সমাজ” ও এর মুল্যবোধ নিয়ে যা কোন “পেটেন্ট” নয় সুতরাং আমার অমত “প্রতিস্থাপন”এ / অনুকরনে। আমার মত, আমাদের দরকার “সংস্কার” ও যথাযত অনুসরন।
ভাল থাকবেন, এই কামনায়,
অসামাজিক।
@oshamajik,
ঠিক আছে। সবই শেষ অব্দি নির্ভর করছে কি মাপের পরিবর্তনকে সংস্কার বলা যাচ্ছে, আর কি মাপের পরিবর্তনকে বলা দরকার বিপ্লব বা প্রতিস্থাপন — তার উপর। হয়ত এই পরিমাপের ধারণা আমার ও আপনার ভিন্ন। এটুকু আমি বলব যে পশ্চিমের মহাপরিবর্তনের কোন কোন অংশ “সংস্কার” তালিকার নিচে অংকিত হতে পারে তাতে সন্দেহ নেই। Reformation মানেই তো তাই। কিন্তু যখন একটি সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের নাম হয় enlightenment, তখন পূর্ববর্তী অবস্থা থেকে তার বিচ্যুতি কি “সংস্কার”-এর অতি কোমল শিরোনামকে সহ্য করে? টমাস পেইনকে “সংস্কারক” বললে গভীর মনোদুঃখে গ্যালন গ্যালন হুইস্কি পান করতেন, সন্দেহ করি।
আমাদের দেশে উপনিবেশবাদের বিশেষ legacy সম্বন্ধে আমি সচেতন। অন্ধ অনুকরণকেও আমি সমর্থন করিনা। কিন্তু সামনে এগোনোর পথ “অন্ধ অনুকরণ” আর “সংস্কার” — এই দুই ভাগে বিভক্ত নয়। “সংস্কার” শব্দের সমস্যা হচ্ছে, ধরেই নেয়া হচ্ছে যে আধুনিক জীবনের চ্যালেঞ্জ সব পূর্ববর্তী কোন সত্য যুগেই সমাধান হয়ে বসে আছে, তাকে ঘষে মেজে নিলেই হল। দ্বিমত পোষণ করি এখানেই। আমি বলছি না থাকতে পারেনা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে কোন লুকানো উপাদান — যা সজীব, আধুনিক; কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সে আশা দুরাশা।
আমি মনে হয় এখানে আপনার কথা বুঝতে পারছি। সংস্কার শব্দে আমার অ্যালার্জির কথা তো বললাম, কিন্তু আপনার বক্তব্যে বড় ধরণের দ্বিমত নেই হয়ত। আপনি বলতে চাইছেন, পরিবর্তনটা bottom-up হতে হবে, চাপিয়ে দেয়া নয়। ঠিক আছে, কিন্তু প্রয়োজনীয় ও মৌলিক bottom-up পরিবর্তনটাকে সংস্কার বলছেন কেন বুঝতে পারছি না।
@রৌরব, ধন্যবাদ।
দেখুন, বাংলাদেশের আইন ও প্রশাসন ব্যাবস্থায় কিছু খুটিনাটি ছাড়া মুল ব্যাবস্থাটি আধুনিক ও সময়োপযোগী। সমস্যা হল এর প্রয়োগ ,যা নির্ভর করে কর্তাব্যাক্তিটির উপর। এখন সিভিল প্রশাসনে যারা আছে তাদের ঠিক করতে পারে একমাত্র রাজনৈতিক সরকারে যারা আসবে।গনতন্ত্রে বাস আমাদের,জনগন ই পারে রাজনীতির নীতি বদলাতে, কিন্তু তার জন্য জনগনকে তো সচেতন করতে হবে। জনসচেতনতা তৈরীতে সামাজিক বিদ্রোহ কাজ করবে না ২০১০ এ, তো সচেতন হবে কিভাবে?? তা হবে আমাদের সমাজে কি দরকার,আমাদের জাতিগত মুল্যবোধ কি, আজ আমরা কেন এবং কিভাবে পিছিয়ে পড়েছি, আমরা কি করে এগিয়ে যাব, এসবের প্রচারে, কিছু নিবেদিত মানুষের কাজে উৎসাহ সৃষ্ঠি করে সমাজকে পরিবর্তন করতে হবে আর যেহেতু পুরোটাই আমাদের সমাজের অভ্যন্তরে হবে তাই আমি একে বলছি সংস্কার। আমাদের যদি স্বৈরাচারের পরিবর্তন করতে হত অথবা একদম নতুন কোন আদর্শ গ্রহন করতে হত, বা, একদল চিন্হিত মানুষের সাথে লড়াই করে কিছু অর্জন করতে হত তাহলে বলতাম পরিবর্তন।কিন্তু আমরা তো এই কাঠামো তে থেকেই করতে পারছি তাই বলছি সংস্কার।
সূখী হবেন।
@oshamajik, আপনি প্রথমে বলেছিলেন
এখানে তাদের বলতে পশ্চিমাদের বোঝাননি?হয়ত আমি ভুল বুঝেছিলাম।
আসলে আমাদের সমাজে আমি সবসময় সংস্কারের সুযোগ দেখিনা। আনেক প্রাচীন বাজে মূল্যবোধ ভেংগে দেয়া ছাড়া পথ নেই।আমাদের পুরো সমাজব্যাবস্থাটাই মনে ভেংগে গড়ার দরকার আছে
@oshamajik,
বাস্তবতাতো এইভাবে চলে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে না। সিঙ্গাপোর পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনৈতিক কেন্দ্র, তারা তো প্রতিস্থাপন করে ফেলে বেশ ভালোই আছে। হংকং, তাইওয়ান, কোরিয়া, জাপান, চীনের পূর্ব উপকুলের সাঙ্ঘাইয়ের মতো মেগাসিটিগুলো এরা সবাই তো দেখা যাচ্ছে উদবাস্তু হয়ে যায় নাই। উন্নত শির নিয়ে আমরা কি কি অর্জন করেছি এই পর্যন্ত? যারাই কিছু করতে পেরেছে তারা সকলেই সমুন্নত করতো পাশ্চাত্য মূ্ল্যবোধ, তারা সকলেই ছিলো অ্যাংলোফাইল যেমন রবীন্দ্রনাথ, মধূসুদন,জীবনানন্দ, স্যার জগদীশ, ডঃ ইউনুস, ২০০৯ এ কেনিস্ট্রিতে নোবেলপ্রাপ্ত ভেঙ্কি রামাকৃষ্ণণ, তারও আগে ফিজিক্সের নোবেল লরেট চন্দ্রশেখর, গান্ধী, নেহেরু এবন কে নয়?
@আল্লাচালাইনা,
কঠিন সত্য কথা। আমরা ভাববাদি আদর্শ নিয়ে বেঁচে থাকি, কিন্তু বাস্তব থেকে মনে হয় অনেক দূরে বসবাস করি।
@ব্রাইট স্মাইল্,আমার ধারনা
কথাটিকে একধরনের আশাভঙ্গের বেদনা নিয়ে সমর্থন করলেন। নয়তো কিছু কিছু জাতীয় এবং ব্যাক্তিগত অর্জন চোখ এড়িয়ে যেত না। মানি যে আরো আগে এবং আরো বেশি পরিমানে অর্জন করার কথা ছিল তবে আশার কথা “রেলগাড়ি লাইনেই আছে”, কিন্তু গতি কম। লাইনে থাকলে স্টেষনে পৌছুবে ঠিক।
@oshamajik,
আপনার আশার কথা শুনে inspired হলাম। তবে গতি যে হারে কম তাতে রেলগাড়িটি স্টেষনে পৌছুতে পৌছুতে রেললাইনটি obsolete না হয়ে গেলেই হয়।
@আল্লাচালাইনা, দেখুন,সাংস্কৃতিক উদ্বাস্তু মানে কিন্তু নিজ সাংস্কৃতি হারিয়ে ফেলা। বাঙালী তথা উপমহাদেশীয় সংস্কৃতি বলে আমাদের Distinguish একটি সংস্কৃতি রয়েছে, আশা করি আপনি এটি হারাতে রাজী নন। আমাদের সংস্কৃতি ও সমাজ গড়েছে আমাদের মুল্যবোধ। বর্তমান ঘটনাবলির কারনে আমরা মুল্যবোধ নিয়ে আলোচনা করছি। অনেকেই একমত যে অপসংস্কৃতির বিরাট ভূমিকা আজকের অপরাধগুলোর পেছনে। যদি আমরা মুল্যবোধ আমদানি করি তবে সংস্কৃতি বদলাবে, তাই নয় কি? যদি বাজে সংস্কৃতি আনি তাহলে মুল্যবোধ তো বাজেই হবে,নয় কি? আজ কেন মুল্যবোধে এই ধস? বাজে যা কিছু আসছে তার প্রভাব কি? আমাদের সংস্কৃতির যা কিছু ভাল আমরা তার প্রচার না করলে আকাশ সংস্কৃতির যুগে কি দিয়ে আমাদের তরুনদের বিনোদোন হবে? আর এই সংস্কৃতিতে এই পরনির্ভরতাই হল সাংস্কৃতিক উদ্বাস্তু।
আপনি যেই সকল দেশের কথা বললেন, আপনি শুধু তাদের অর্থনীতির উন্নয়ের কারনে বলেছেন।জাপান আধুনিক বিজ্ঞানে যুগপৎ,কোরিয়া ইদানিং বিজ্ঞানে প্রথীতযষা তবুও শিল্পনির্ভর,সিংগাপোর মালামাল পরিবহনকারী দেশ,তাইওয়ান ও হংকং Far-East এ West এর ব্যাবসা কেন্দ্র,সাংহাই চীনের বানিজ্যকেন্দ্র। জাপানি সমাজের কুস্তিখেলা “সুমো” যত বিখ্যাত তার কাছের কোন বিখ্যাত সংস্কৃতির কথা জানা নেই, কিন্তু একসময় চিত্রকলা ছিল জাপানের বিখ্যাত, আজ আর নেই। সরকারি সাংস্কৃতিক দল না এলে কোরিয়ার বিয়ের আয়োজন,আর খাদ্যাভ্যাস ই শুধু মনে থাকতো। আর বাকি গুলোর কথা বলার দরকার আছে?
এখন বলুন যে, সংস্কৃতি আর অর্থনীতি কি একই জিনিষ?
যদি তাই বলেন তবে, জাপান বাদে বাকি কোন দেশ কতদিন হল এই অবস্থায়? আমাদের পাশের দেশ ভারত ও তো এগিয়ে চলছে এবং তা নিজ সংস্কৃতি বজায় রেখেই। আমরা তাদের না দেখে Far-East/ দুর-প্রাচ্যে যাই কেন? ভারত কে দেখে শিখি!
আপনি যাদের নাম লিখলেন, জ্বী, তারা Anglophile, তবে কোন সমাজ দর্শন ভাল লাগা আর নিজেকে সেই সমাজে প্রতিস্থাপন করা সমান নয়। আবার ও, রবী ঠাকুর, মধুসূদন ও জীবনান্দ ছাড়া বাকী সবার নাম করলেন যারা সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব নয়। আর ,আপনি যাদের নাম লিখলেন তারা সবাই বাংলা এবং উপমহাদেশীয় মুল্যবোধ তথা এর শ্রেষ্ঠত্বর জয়গান গেয়েছে।
এখানে আপনার দেয়া মন্তব্য মুলত সংস্কৃতি ও অর্থনীতির পার্থক্য নির্নয় করতে সফল হয়নি।
আপনার দিনটা সুন্দর হোক
@oshamajik,
ভোগবাদ বা কনজুমারিজম তো হচ্ছে ‘সর্বোচ্চ ক্রয়ক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে ব্যক্তির কিংবা রাষ্ট্রের কর্মান্ড পরিচালনা করা ও পরিকল্পনা গ্রহন করার দর্শন’ নাকি? তো কোন সমাজটা ভোগবাদী না বা ইতিহাসের কবে কোন একটি অভোগবাদী সমাজ গঠিত হয়েছে যেখানে মানুষ আরও ভালো থাকার লক্ষ্যে (বা আরও বেশী ক্রয়ক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে) নিজের জীবন পরিচালিত করেনি? আর ভোগবাদকে আপনি কি দিয়ে প্রতিস্থাপিত করতে চান সেটাও শুনি। আপনি কোন ‘-বাদ’ প্রস্তাব করতে চাচ্ছেন যেটা কিনা ভোগবাদকে প্রতিস্থাপিত করবে? মানুষকে ভোগবাদী হবে একই কারণে যেই কারণে একটি প্রাণী পোষ মেনে গেলে ছেড়ে দেওয়া সত্বেও মনিবের কাছে ফেরত আসে। জীবন সহজ হলে আমাদের শক্তিই নেই সোকে গ্রহ না করার। যতোই ভোগবাদী হোক, একটা মানুষ এই স্বপ্নই দেখবে যে আমি আরও একটু ভাল থাকতে চাই, মোবাইলটা কিনতে চাই, মোবাইলের পর গাড়িটাও চাই। ভোগবাদের আর যেই বিকল্পই আপনি প্রস্তাব করুন না কেনো সেটা মানুষের এই আকাঙ্খাকে দমিত করবে না, করেনি এই পর্যন্ত। এবং এই কারণেই মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ যেমন কমিউনিজম, সোসালিজম, মার্ক্সিজম বেঙ্গে পড়েছে।
আর গনমাধ্যমে অপসংস্কৃতি কি কি হচ্ছে এবং এগুলো কিভাবে রোধ করা সম্ভব বলে আপনি মনে করেন? মানুষের হিন্দী গান দেখতে যদি ভালো লাগে আর হিন্দী গান দেখার জন্যযেই টাকা লাগে সেটা মানুষের থাকলে মানুষতো হিন্দী গান দেখবেই। মানুষের এই হিন্দীগান দেখার ইচ্ছা বা ইংরেজি ড্রামা দেখার ইচ্ছা আপনি কিভাবে রোধ করতে চান জানতে চাইলে কথা বলা যেতো।
এবং সেই মূলবোধ আমাদেরক কি দিয়েছে? ৮০% এরও নীচে মানুষের দারিদ্রসীমার নীচে জীবনযাপন, ভয়াবহ বেকারত্ব, ভয়ে শঙ্কায় একটা রিক্সাওয়ালার জীবনযাপন যে তার চেয়ে একটু শ্রেণীতে বড় যে কেউই যেকোন সময় তাকে একটা চড় মারতে পারে কেননা all men are not born equal over here indeed, একটি রাজনীতিবিদের এই ভাবধারা যে একটু চুরি করলে কিছু হয়না, বখে যাওয়া তরুনের এই ভাবধারা যে মেয়েদের জন্মই তার হ্যারাসমেন্টের শিকার হবার জন্য? তো এইটাই কি আপনার বর্ণিত দেশপ্রেমের প্রতিফলন?
আমার ধারণা মূ্ল্যবোধের প্রতিস্থাপন বলতে আমি যা বুঝয়ছি সেটাকে আপনি সর্বাঙ্গেই ভুল বুঝেছন। বাংলাদেশে মানুষ মনে করে এই কাজ করা যাবেনা এটা ছোট কাজ, ইউনিভার্সিটির ছাত্র কাপড় বেঁচতে পারবে না এটা ছোট কাজ, মেয়েরা রাতে বাইরে থাকতে পারবে না এটা করলে বখে যাওয়া হয়, একটা ছেলে চাইলেই সেটা পারবে যদিও। ওয়েল আমি মূ্ল্যবোধের প্রতিস্থাপন বলতে বুঝিয়েছি গনতান্ত্রিক কিংবা ওয়েস্টার্ন গনতান্ত্রিক মূ্ল্যবোধ দ্বারা আমাদের দেশীয় মধ্যযুগীয় সামন্ততান্ত্রিক অরাজকতার মূ্ল্যবোধের প্রতিস্থাপন। আমাদের মূ্ল্যবোধের সাথে এমবেডেড এই নোংড়া ধারনাগুলো যে মেয়েদের পড়ালেখার দরকার নাই, ঘাড়ে ধরে বিয়ে দিয়ে দিবো, এক সংসারের কর্তা কামাবে আর বাকী সাই বসে বসে খাবে কাজকর্ম করার দরকার নাই, পোয়াতী হওয়া ছাড়া অন্য কছু করার দরকার নাই ইত্যাদি। এগুলো ইউরোপেও ছিলো তারা প্রতিস্থাপন করেছে। এইগুলো টিকিয়ে রেখে আপনি ঠিক কি ধরণর উন্নতি করে চান শুনি?
আর আদালতভিত্তিক ওয়েস্টার্ন বিচারব্যাবস্থার পিবররে আপনি কি বিচার ব্যাবস্থার প্র্তাব করছেন সেটাও শুনি। সর্বপরি শুনতে চাই এমন একটি উন্নত দেশের কথা যেই দেশে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা রয়েছে, বেশীরভাগ মানুষ দারিদ্রসমার উপরে বা করে, যেই দেশ শিক্ষা হার >৮০%, গড় আয়ু >৭০, জনসংখ্যাবৃদ্ধির হার গরীব দেশগুলোর মতো নয়, অথচ এতোকিছু যা কিনা লাভ করেছে ওয়েস্টার্ণ মূ্ল্যবোধ, বিচারব্যাবস্থা, শিক্ষাব্যাবস্থা, অর্থনৈতিক ব্যাবস্থাকে আলিঙ্গন না করে।
@আল্লাচালাইনা, আগে লক্ষ্য করুন যে, আমাকে যেখানে “কোট” করেছেন সেখান কি লেখা ছিল,
আপনি জবাব দিয়েছেন ভোগবাদ প্রতিস্থান করা নিয়ে! অদ্ভুদ।
ভোগবাদ একটি অর্থনীতি কাঠামো, সব বিজ্ঞানের মত এর ফলাফল নির্ভর করে ব্যাবহারের উপর। ভোগবাদি সমাজের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াগুল আপনি নিশ্চই জানেন। পন্যের চাহিদা বাড়ানোর জন্য এরা বিজ্ঞাপন দেয় এবং মুল অভিযোগ হল, অনৈতিক প্রচার চালিয়ে ভোগের চাহিদা বাড়ায় মাত্রাতিরিক্ত,মানুষকে প্রলুব্ধ করে সারাক্ষন। গড়পরতা বা খেটে খাওয়া মানুষদের উদাহরন হিসেবে নিন যারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। ফোন কম্পানিগুলোর কনজ্যূমার মার্কেটিং এর ধরন দেখুন, “কথা বল লাখ লাখ বন্ধুর সাথে,২ পয়সা মিনিট” ( উদাহরন),সারারাত কথা বল,বন্ধু বন্ধ কেন?, নিশিতে কল কইরো আমার ফোনে ইত্যাদি আর ২১ শে ফেব্রুয়ারি,১৬ ই ডিসেম্বর এইসব জাতীয় দিবস গুলোও এখন মার্কেটিং হচ্ছে। এবং ফলাফল,বাংলাদেশে ৬ কোটি গ্রাহক!!! যেই দেশে ৪০% জনগন দারিদ্রসীমার নিচে,সেখানে অর্ধেক মানুষ মুঠোফোন গ্রাহক?? যদিও, আমার ধারনা প্রকৃত ব্যাবহারকারী আরো কম,কারন সবার আছে একাধিক সিম, তারপর ও কি পরিমান টাকা আমরা ঢালছি এই সেবা ভোগ করার জন্য? বাংলাদেশে কল রেট অনেক বেশি। এর মুল ভোক্তা হল, তরুন/ তরুনী ও যুব-যুবতী সমাজ,সকল পেশার ও স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। তারা তাদের আয়ের কতটুকু ব্যায় করে ফোন বিলে? ছাত্র-ছাত্রীদের আয় কত? এবং এই ভোগ কতটা চাহিদা পুরনে ও কতটা ভোগবিলাস? এটাতো আয়-ব্যায়।আর সারারাত কথা বলতে ও লাখ লাখ বন্ধু থেকে তারা কি বন্ধু খুজে বের করতে কারা কি উপায় ব্যাবহার করে তা বলতে ভাল লাগছে না, আমাদের ধারনা আছে।নাটক,সিনেমা,গান আজ সবই তো বাজারের চাহিদায় তৈরি হচ্ছে পন্যের মত। আর লাভ বেশি তো সস্তা পন্যে।
ভোগবাদি বাজারের অওতায় সকল পন্য,বই থেকে বন্দুক, এ সবই আছে তবে কেন মুক্তধারার বইয়ের জন্য বাজার আমাদের প্রভাবিত করে চাহিদা গঠন করে না? কেন শুধু বিলাসিতার আহবান?
মানূষ সমাজের মুল উপাদান,বাজারের ও মুল উপাদান।মানুষ বাজার থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী চাহিদা ভোগ করবে,কিন্ত আজ পন্য বিক্রেতারা আমাদের চাহিদার নিয়ন্ত্রন তাদের হাতে নিয়ে যাচ্ছে যারা যোগ্যতা ও সামর্থ্য বিবেচনা না করে বেশির ভাগ ভুল পন্যের ভোক্তা তৈরী করে ,যেই ভোক্তা একজন মানুষ। ভোক্তার স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত করে যা মানুষ হিসেবে সমাজেও প্রভাব ফেলে। ভোগবাদের এই যে নেতিবাচক রুপ এর দৃষ্টভংগি হল সমাজকে বাজার হিসেবে দেখা এবং আমরা এর প্রতিবাদ না করলে পুরো সমাজটাই বাজার হয়ে যাবে। আর বাজারে মুল্যবোধ কিভাবে জায়গা করবে?
আমি যেকোন সংস্কৃতি যে দেশেরই হোক তা রোধ করার পক্ষে নই, আমাদের অধিকার আছে দেখার।কোন সংস্কৃতি বা বাজারনীতি ১০০% দুষিত নয়, যা কিছু ভাল যা সমাজের অন্যদের জন্য ক্ষতিকারক নয় তাকে জানাই বরাবর স্বাগতম। তাই আমি রোধ করতে চাই না। কিন্ত ভাল ও খারাপে পার্থক্য করার জন্য প্রস্তুতি আমাদেরই নিতে হবে সচেতন হতে হবে।কথা বলতে হবে নতুন প্রজন্মর সাথে,খারাপ কেন ও কিভাবে খারাপ তার ধারনা দিতে হবে, খারাপ বর্জন গ্রহনযোগ্য কি আছে তা বের করে এনে দেখাতে হবে। আমাদের নিজেদের না থাকলে কোথায় আছে তা দেখাতে হবে এবং এসব করবে সমাজ সংস্কারকগণ। আগেও করেছে আবার করতে হবে। আমার ও আমাদের জন্য যাই কল্যানময় সেটা যে দেশেরই হোক না গ্রহন করতে হবে।
আপনি হয়তো মনের ভুলে দারিদ্রসীমার নিচের জনসংখ্যার পরিমান দ্বিগুন বলছে,সঠিক হল,৪০%। ১,৫৬,০০০ বর্গকিলোমিটারে আমরা মানুষ ১৬ কোটি, প্রাকৃতিক সম্পদ বলতে গ্যাস,কয়লা উঠালে মানুষ বাড়িঘর হারায়, স্থায়ী মঙ্গায় পড়ে না থাকাটাই কি সফলতা নয়? আর বাকি যা বললেন সে তো দেশপ্রেম অভাবের ই প্রতিফলন, তাই তো বলি দেশকে ঘৃণা না করে ভালবাসা দরকার।তাহলেই বদলে যাবে দিন।
একমত। তবে রৌরবের যেমন “সংস্কার” শব্দে এলার্জি আমার তেমন “প্রতিস্থাপন” এ। নিজ হাতে,ধরন বুঝে পরিবর্তন করতে হবে, কোন পেটেন্ট কপি করে নয়।
আপনি আমার লেখাটির জবাব দিয়েছেন একদম অন্য অর্থে।হয়তো আমার লেখার অক্ষমতা দায়ী। আদালত ব্যাবস্থা ও প্রশাষন বদলে দিতে হলে তো উল্টোযাত্রা করতে হবে,তা এখন কেন করবো? শতাব্দী পেরিয়ে আজ আমরা এসবেই সাবলীল তাই এর মাঝে থেকেই ভাল ফলাফল বের করে আনতে হবে।
যেই দেশের কথা আপনি শুনতে চেয়েছেন সেটি আমাদের বাংলাদেশ ই হতে চলছে তবে বলেছেন যে “যা কিনা লাভ করেছে ওয়েস্টার্ণ মূ্ল্যবোধ, বিচারব্যাবস্থা, শিক্ষাব্যাবস্থা, অর্থনৈতিক ব্যাবস্থাকে আলিঙ্গন না করে”। এটাতো ধাঁধার জবাবের মত! যেমন, “গান করুন তবে আওয়াজ না করে”।যা কিছু ভাল তা আমি কেন আলিঙ্গন করবো না,কে দেয় এই শর্ত,কেনই বা দেয়?
জ্ঞান-বিজ্ঞান সার্বজনিন, তবে তা চর্চা করতে গেলে নিজস্ব সব বর্জন করতে হয় তা নয়। নিজেদের আদর্শ বজায় রেখে পরিবর্তন করলে তা হয় টেকসই। এই দিকটা আমরা আগে থেকে দেখলে দেশ আজকের মত “মৌলবাদী” ও অরাজক হত না। আমার আশা আগামীতেও যেন না হয়।
আপনার প্রতি সন্মান জানিয়ে,
অসামাজিক।
বাংলাদেশের মানুষ ধন-সম্পদ জমি-জমা সংক্রান্ত ব্যপারে লাঠি সরকী নিয়ে বেড়িয়ে পরে, খুনোখুনি করে, সেনা ছাউনি জালিয়ে দেয় ,এমনকি সরকার পতনের আন্দোলন করে। অথচ তাদের কন্যা-জায়া-জননীদের জীবনের কোন কানাকড়ি মূল্য তারা না দিয়ে নির্বিকার দর্শকের ভুমিকা পালন করে ঠিক মধ্যযুগে যেমন ছিল- নারীরা ভোগের পন্য কিংবা বোঝাস্বরূপ। এক কাঠা জমির মূল্য এসব মধ্যযুগীয় বর্বরদের কাছে একজন নারীর জীবনের চেয়ে অনেক বেশী। তাই জমির ব্যপার হলে রাজাকে পর্যন্ত শুলে ছড়ানো যায় আর নারীর জীবনহানি কিংবা সম্ভ্রমহানি কিছু পথভ্রষ্ট বালকের চপলতার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হিসেবে নিয়ে চোখ বুজে নিদ্রা যাপন করা যায়। মধ্যয়ুগে স্বাগতম !
ব্লগিং শেষ করে ভাবলাম প্রথম আলোটা একটু দেখি। খুলেই দেখি আরেকটি মৃত্যুর খবর। সিরাজগঞ্জে ইভ টিজিংয়ের শিকার ছাত্রীর আত্মহত্যা, বখাটে আটক । সমস্যা এখন প্রকট আকার ধারণ করছে বলে মনে হচ্ছে। এই কয়েকদিনের মধ্যেই কতগুলো খবর হলো শুধু ইভটিজিং এর কারণে হত্যা/আত্মহত্যা নিয়ে।
@স্বাধীন,
খুবই আসহায় লাগছে। মেয়ে গুলোর মনে বহু দিনের জমে থাকা ক্ষোভ গলে বের হবার একটা পথ পেয়েছে যেন।
ওরা এটা না করে—–খুন করছে না কেন ?
গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ জানাই। এই বিষয়ে বারংবারই লেখা আসা উচিত কিছুদিন বিরতি দিয়ে। এই ক্ষেত্রে অভিভাবকদের দায়িত্ব রয়েছে অনেক। সেই সাথে আইনের সুষ্ঠ প্রয়োগের দরকার। দেখা যাচ্ছে কোন ক্ষেত্রেই কোন বিচার হয়েছে তেমন শুনছি না। কিন্তু আত্মহত্যার খবর কিছুদিন পর পরই হচ্ছে। এগুলো তো আত্মহত্যা নয়, আসলে হত্যাই।
@স্বাধীন,
:yes:
@স্বাধীন,
এসব আত্মহত্যা কাম হত্যায় কিন্তু ভিক্টিমের কাছের মানষেরাও ভুমিকা রাখছে, জ্ঞাতে বা অজ্ঞাতে।
@আদিল মাহমুদ, কাছের মানুষের হাতেই থাকে মেয়েগুলোর আত্মহত্যা রোখার পথ। কিন্তু তারাই মেয়েটিকে প্রচন্ড মানসিক চাপ দিয়ে পরোক্ষভাবে তার হাতে একরকম ফাসির দড়ি বা বিষের পাত্র তুলে দেয়। এটাই সবচেয়ে দুঃখজনক। মেয়েটির যখন পরিবারের সাহায্য সবচেয়ে দরকার তখনি সে থাকে সবচেয়ে অসহায়। :-X
@লীনা রহমান,
এটাই সবচেয়ে স্যাড পার্ট।
রাস্তায় বখাটে ছেলেরা উতপাত করছে শুধু এইজন্য একটা মানুষের জীবন যাবে সভ্য সমাজে এটা দেখতে হলে খুবই দূঃখজনক। পরিবারের লোকেরা যদি সামান্য সহানুভূতিশীল না হয় তবে আর আইন আদালত করেই বা কি হবে।
শুনতে খারাপ লাগলেও আমি একটা নিদান দিতে চাই ইভ টিজিং এর ব্যপারে।
সেটা হলো – অপরাধীকে ধরে প্রথমে গনধোলাই দিয়ে , অত:পর তার মাথা মুড়িয়ে মাথায় চুন মেখে কান ধরিয়ে রাস্তায় ঘন্টাখানেক ঘুরিয়ে ছেড়ে দিলে, তার এহেন কাহিল অবস্থা দেখে আশে পাশের বাকি কেউ আর ইভ টিজিং করতে সাহস পাবে না। হতে পারে পদ্ধতিটা বর্বর কিন্তু যে দেশে আইন শৃংখলা বাহিনী ঠিকমতো কাজ করে না বা করতে পারে না , যেখানে কোর্টে নিরপেক্ষ বিচার হয় না , সেখানে এ ধরনের নিদান দেয়া ছাড়া আর কি ধরনের নিদান দেয়া যেতে পারে ?
@ভবঘুরে,
না ভাই এটা ভুল, এ কোন উত্তম সমাধান হতে পারেনা। এই পথে, অর্থাৎ মানুষ আইন হাতে তুলে নিলে রাস্ট্রকাঠামো ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে। বিকল্প পথ খুঁজেন, পৃথিবীর গনতান্ত্রীক দেশগুলোর দিকে তাকান। সমস্যার উৎস খোঁজে বের না করতে পারলে সমাধান সম্ভব নয়। আলোচনা চলুক- পরে আরো কথা হবে।
@ভবঘুরে, আপনার বুদ্ধি আমার ভাল লেগেছে। এমন করতে পারলে হারামীগুলোর শিক্ষা হত।
@ লীনা রহমান, ধন্যবাদ আপনাকে বিষয়টা নিয়ে লেখার জন্য। এখন তো দেশের অনলাইন পত্রিকাগুলো খুললেই খালি এই খবর দেখি। কি যে ভীতিকর একটা অবস্থা…
অনেক সময় তো প্রভাবশালী স্থানীয় সরকারের নেতাদের ছেলে বা তরুন কর্মীরাই মেয়েদের উত্যক্ত করে, সেখানে ব্যবস্থা নেবে কে?
আমার মতে পারিবারিক এবং সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর সাথে সাথে কিছু দৃষ্টান্তমূলক আইনের শাস্তিও হওয়া উচিত, তাহলে হয়তো এক ধরণের ভীতি কাজ করবে ইভ টিজারদের মধ্যে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত ঠিক কিভাবে কাজ করে?
@বন্যা আহমেদ, আপনার প্রথম প্রশ্নের জবাব নেই। কারণ এরকম অহরহই হচ্ছে। তারপরেও যদি স্থানীয় সরকারের কিছু প্রতিনিধিও এটা বন্ধে এগিয়ে আসে তাহলে নিজের মান-সম্মানের ভয়েই নিজের ছেলেদেরকে শাসন করবে। যদিও আপনার আশংকাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে সত্যি হয়ে দেখা দেয়।
আর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি তো হওয়া উচিতই কিন্তু হচ্ছে কই?
ভ্রাম্যমান আদালত বলতে একাধিক গাড়িতে করে ম্যাজিস্ট্রেটগণ ঘুরে বেড়ান আর যে অনিয়ম রোধে তাদেরকে নিয়োগ করা হয়েছে সেসব স্থানে হঠাৎ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে জরিমানা করে থাকেন। যেমনঃখাদ্যে ভেজাল বন্ধে অনেক রেস্তোরায় এমন অভিযান চালিয়ে ভেজাল ও অস্বাস্থকর পরিবেশের কারণে জরিমানা করা হয়ে থাকে। এতে অপরাধ যে বন্ধ হয়ে যায় তা নয় তবে পুলিস সাধারণত উত্যক্তকরণের মামলা নেয়না, আবার নিলেও অপরাধী বিনা জরিমানায় বা সামান্য জরিমানায় ছাড়া পেয়ে যায়। আজই পত্রিকায় দেখলাম এক বখাটেকে ১০০ টাকা জরিমানা করে আদালত থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। পুলিসের চেয়ে ভ্রাম্যমান আদালত একটু বেশি কাজের।
লেখাটিতে ফন্ট সংক্রান্ত কিছু সমস্যা ছিলো। ঠিক করে দেয়া হয়েছে। লেখককে অনুরোধ করা হচ্ছে, যখন ওয়ার্ড ফাইল থেকে লেখা কপি করবেন, তখন যেন তিনি লক্ষ্য রাখেন যে, তার প্রোফাইলে লেখার সময় ভিজুয়াল এডিটর বন্ধ রাখুন এই অপশনটিতে যেন টিক মার্ক দেয়া থাকে। (মডারেটরের পক্ষ থেকে অপশনটিতে টিক মার্ক দিয়ে দেয়া হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে ঝামেলা এড়ানো যায়)।
@মুক্তমনা এডমিন, বন্ধই তো রাখি কিন্তু সমস্যাটা কি হয় বুঝতে পারিনা। গতকাল লেখা পোস্ট করার পর প্রোফাইলে গিয়ে দেখলাম অখানে টিক নেই। আমি টিক দিয়েছিলাম তখনও। পরের বার লেখা পোস্ট করার আগেই খেয়াল করব। ধন্যবাদ।
আমার কাছে মনে হচ্ছে, ইদানিং ক্যাবল টিভির সম্প্রচার গ্রামেও বিস্তৃত হতে শুরু করেছে। হিন্দি চ্যানেল গুলিতে দেখা যায় নায়ক-নাইকার পিছনে ছুটে ছুটে, নেচে-গেয়ে একাকার। এক সময় অবধারিত ভাবে নাইকা -নায়কের প্রেমে পড়ে যায়। কিন্তু বাস্তবে ব্যাপার গুলি যখন সিনেমার মত ঘটে না, তখনই যত বিপত্তি ঘটছে। ইভ টিজিং এর ব্যাপারটা আগেও ছিল, তবে ইদানিং বেড়ে যাওয়ার পিছনে এটাও একটা কারণ বলে আমার মনে হয়।
আর মূল্যবোধের সামগ্রিক অবক্ষয়তো আছেই।
এ অবস্থা থেকে মুক্তির কোন সর্ট-কাট নাই। সমাজটা মুক্ত হলে পরিস্থিতীর উন্নতি হতো। তবে সেদিন আসতে এখনো অনেক দেরি।
@আতিক রাঢ়ী, একমত।
@আতিক রাঢ়ী,
এটা খুব গুরুত্বপূর্ন পয়েন্ট, যদিও আমি পুরো নিশ্চিত নই কতটা ভ্যালিড; যেহেতু দেশে থাকি না।
সমাজ বিজ্ঞানীদের গবেষনার বেশ ভাল বিষয়, জানি না তারা কতটা মাথা ঘামাচ্ছেন।
আমাদের ছোটবেলায় যখন ভিসিআর প্রথম আসে তখনও এমন থিয়োরী বেশ কড়াভাবে শোনা যেত; ভিসিআর এর নীল দংশনে উঠতি বয়সের ছেলেপিলে নষ্ট হবে। আমার ব্যাক্তিগত ধারনা যতটা ধারনা করা হয়েছিল ততটা খারাপ ফল হয়নি।
@আদিল মাহমুদ,
এটা পরিমাপ করা হয়নি। আর সহজলভ্যতা একটা ব্যাপার। পর্নোগ্রাফির জন্য এখন মোবাইল ফোনই যথেষ্ট। গ্রমে বসে ভিসিয়ারে নীল ছবি দেখা সবার জন্য সহজ ছিল না। ব্যাটারি, টিভি, ভিসিয়ার ভারা করে নিয়ে যাওয়ার পরে যে অলোড়ন পুরো এলাকায় তৈরী হতো, তাতে করে ঐসব দেখা বেশ কঠিণ কাজ ছিল এক সময়ে।
@আতিক রাঢ়ী,
আমি ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে বলেছি। আসলেই এ ধরনের বিষয় নিয়ে আমাদের দেশে তেমন প্রতিষ্ঠিত গবেষনা হয় বলে মনে হয় না। গবেষনার অবস্থা আমাদের দেশে খুবই বেহাল।
আমাদের সাথের কিছু ছেলেপিলে ছিল স্কুলের নীচের ক্লাস থেকে জেলখানার পাশের গলিতে গিয়ে নীল ছবি দেখার দলে। তাদের এক দুজন বাদে কাউকেই যাকে নষ্ট হওয়া বলে হতে দেখিনি। দিব্ব্যী পড়াশুনাও করেছে, আর দশজন লোকের মতই স্ত্রী পুত্র্ কন্যা নিয়ে সংসার করছে।
আমাদের সময় স্কুলে হাতে মাসুদ রানা দেখাও ছিল বখে যাওয়ার নিশ্চিত চিহ্ন 🙂 , আমি সে হিসেবে ক্লাস ফাইভ থেকেই বখা ছেলে।
@আদিল মাহমুদ,
আসলে একজন মানুষের নষ্ট হতে অনেক কিছুই লাগে। যে দু-এক জন নষ্ট হয়েছে বলছেন তারাও যে কেবল এ কারনেই নষ্ট হয়েছে তাও পরিস্কার ভাবে বলা মুসলিক। তবে এটা একটা সম্ভবনা।
আগে পরিবারে বা সমাজে এমন মানুষ ছিল যাদেরকে প্রায় সবাই ভয় বা শ্রদ্ধা করতো। সেই মানুষেরা এখন অনেকটাই উধাউ হতে চলেছে। সব হালকা মানুষে সমাজ ভরে যাচ্ছে। ফলে টিন এজারদের মধ্যে থেকে ভয় জিনিসটা কমে গেছে।
@আতিক রাঢ়ী,
এটা ভাল কথা বলেছে, এতে কোনই সন্দেহ নেই। বখাটে হতে শুধু একটি নয়, বেশ কিছু ফ্যাক্টরই একসাথে কাজ করে।
@আতিক রাঢ়ী,
[ আপনার মন্তব্যের উপর নির্ভর করে কিছু প্রশ্ন করলাম। প্রশ্নগুলো কিছুটা খটমট ভঙ্গিতে হয়ে গেল কিনা 🙂 যাই হোক, শুধু আপনার ভাবনাটা শেয়ার করবেন]
নষ্ট হওয়া বলতে আপনি এখানে কি বুঝিয়েছেন? ঠিক কিভাবে একজন মানুষ/কিশোর নষ্ট হয়? এর সাথে পর্ন ছবি দেখার সম্পর্কটা ঠিক কি এবং ঠিক কিভাবে উহা একটা ছেলেকে নষ্ট করে বা করতে সাহায্য করে? টিন এজারদের মধ্যে ভয় জিনিসটা থাকলে কি লাভ হত? হিন্দি চ্যানেল দেখার সাথে ইভ টিজিং বা নষ্ট হওয়ার সম্পর্কটা কি?
@সৈকত চৌধুরী,
দেখি এসব প্রশ্নে কে কি জবাব দেন।
আমি নিজেও এই প্রশ্নের পরিষ্কার জবাব জানি না।
@সৈকত চৌধুরী,
এই গুলিতো অল্প কথায় বলা বেশ মুসকিল। দেখি বড় করে লিখে আপনাকে জানাতে পারি কিনা।
ওয়াটার ওয়ার্ল্ড জাতীয় জায়গা থেকে ঘুরে এসে ছেলেদের আলোচনার বিষয় হয় পানিতে কে কয়টা মেয়ের সাথে ফাজলামি,শয়তানি করেছে,কে মেয়েদের গায়ে হাত দিতে পেরেছে ইত্যাদি। স্বীকার করছি আমিও একসময় এরকম আলোচনায় মজা পেয়েছি। কিন্তু এখন এসব শুনলে নিজেরই লজ্জা লাগে। কোন মেয়ে দেখতে সুন্দর সেটা নিয়ে আলোচনা করা যায় কিন্তু মেয়েদের বিরক্ত করা মজা নেয়াটা কোন ধরণের সভ্যতা? লজ্জা লাগে যখন দেখি আমার বন্ধুরাই এসব করছে। প্রতিবাদ করে কিছু বলতে গেলে উল্টা “আবাল” ট্যাগ লেগে যায় গায়ে।
নিঃসন্দেহে পারিবারিক শিক্ষা, আইন শৃংখলা এসব বড় ফ্যাক্টর। ব্যাক্তি অভিজ্ঞতা থেকে জানি যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বখাটেদের বাড়িতে নালিশ করা হলে ফল হয় উলটো, বখাটেদের বাবা মা ছেলের পক্ষ নিয়ে অভিযোগকারীদেরই শাসায়, ছেলে হয় আরো বেপরোয়া। হয়ত এসব বাবা মাই একসময় ছেলেকে শিখিয়েছে এসব করতে নেই। শুধু নিজের পুত্রের বেলাতেই অন্ধ। এসব বখাটে বাবা মার জন্যও শাস্তির ব্যাবস্থা করা গেলে ভাল হত। ভিক্টিমের পরিবার ও আশে পাশের মানুষেররা অন্তত তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারেন, প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে পারেন।
তবে আমাদের গোড়াতেই ভাবতে হবে যে কেন ছেলেপিলে এই জাতীয় রুচি বিকৃতির দিকে যায়। এই সমস্যা কেন বাংলাদেশে বা ভারতে এত প্রকট, পশ্চীমা বিশ্বে কেন প্রকট নয়?
তবে আমার ধারনা এই সমস্যার একটি মূল বিষয়ে কেউই তেমন আলোকপাত করছেন না। বিষয়টা একটু অপ্রীতিকর, তবে চোখ বন্ধ করে রাখলেই ঘটনা এড়ানো যায় না।
প্রাপ্ত বয়ষ্ক বা টিন এজার ছেলে মেয়ে পরস্পরের প্রতি আকর্ষিত হবেই। এটা ঠেকানোর কোন উপায় নেই। যেসব ছেলের কোন মেয়ে সংগ পাবার সোজা উপায় নেই তারাই এসব করে এবং করবে। শুধু আইন কানুন বা কড়া পারিবারিক মূল্যবোধের শিক্ষা দিয়ে খুব বেশী ফল হবে না। যেই ছেলে বিবাহিত বা গার্ল ফ্রেন্ড আছে সে কোনদিন স্কুল কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে শীষ দেবে? দিলে বলতে হবে যে তার আসলেই বিকৃতি আছে।
আমাদের দেশে নানান কারনেই ছেলেমেয়ে সহজ স্বাভাবিক সম্পর্ক নেই। যে কারনে বিশেষ করে ছেলেদের মনে থাকে মেয়েদের প্রতি তীব্র এক আকাংখা। এরপর দীর্ঘ শিক্ষাগত জীবন শেষ করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে শাদী করতে লেগে যায় অস্বাভাবিক লম্বা সময়। পশ্চীমের, এমনকি ভারতেও ছেলেপিলে অনেক আগে চাকরি শুরু করে দেয়, বিয়ে শাদীও করে ফেলে। আমাদের কপালে তা জুটতে জুটতে আধা বুড়া। ফলে হতাশা মনে থাকেই, থাকে বিপরতী সেক্সের প্রতি তীব্র আকাংখা। সাথে বেকার জীবন যাপন করলে এসব অসূস্থ চিন্তা মাথায় আসবেই। পশ্চীমে ছেলে মেয়ের তেমন কোন আলাদা বিধি নিষেধ নেই, ছোট বয়স থেকেই ফ্রী মিক্সিং। তারা ওপেন সেক্সে বিশ্বাসী হলেও তাই এ ধরনের টিজিং সমস্যা অনেক অনেক কম।
প্রশ্ন হতে পারে যে তাহলে সাম্প্রতিক সময়েই এ সমস্যা এভাবে বাড়ছে কেন? এখানে নিঃসন্দেহে দেশের সামগ্রিক আইন শৃংখলা ও মূল্যবোধের পতন কাজ করছে। প্রভাবশালী হলে যা খুশী করা যায় এই বোধ দিনে দিনে বাড়ছে। মূল্যবোধের পরিবর্তন রাতারাতি করা যায় না, তাই আপাততঃ আইন শৃংখলা কঠোরভাবে প্রয়োগ ছাড়া মনে হয় না তেমন পথ আছে।
@আদিল মাহমুদ,
আপনার মন্তব্যের সাথে একমত, কিন্তু ইদানিং জিনিসটা খুন-খারাবির দিকে চলে যাওয়াটাকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখা দরকার। সামাজিক স্যাডিজমের পর্যায়ে চলে গেছে ব্যাপারটা।
@রৌরব,
খুন খারাপির দিকে যাওয়াটা আমার মনে হয় দেশের সামগ্রিক আইন শৃংখলা ও অস্থিরতার সাথে জড়িত। যে দেশে হিংস্র উল্লাসে রাজপথে প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে সাপ মারার মত মানুষ মারা হয়, আইনী উপায়ে ঠান্ডা মাথায় মানুষ হত্যা করা হয় সে দেশের ছেলেপিলে মানুষের জীবন যে কত মূল্যবান তা কিভাবে বুঝবে বলেন? কেবল বইতে ঈশপের গল্প পড়ে? স্যাডিজম আসবে না আর কি আসবে? আর গনমানূষের মনে যদি এই বিশ্বাস দানা বাধে যে প্রভাবশালী হলেই আইনকে অনায়াসে কলা দেখানো যায় তবে কঠোর আইন কানুন করেও এমন কিছু হবে না। এই বোধ মানুষের মাঝে দিনে দিনেই বাড়ছে মনে হয়।
ইভ টিজিং কি আগে হত না? নিঃসন্দেহে হত। ৮৪/৮৫ সালের দিকে গাউছিয়া মার্কেটে কিছু লোক লুংগি পরে ঘোরাঘুরি করত, তাদের একমাত্র কাজ ছিল মেয়েদের দেখলেই লুংগি উচিয়ে ধরা। এ জাতীয় কত উদাহরন চোখের সামনে বাল্যকাল থেকেই দেখেছি। বখাটের অত্যাচারে বাড়ি বদলের ঘটনা নিজের আত্মীয় মহলেও সেই আমলেই দেখেছি। আগেকার দিনে খুনাখুনি না হলেও এসিড মারামারি নিত্যই হত। আমার মনে হয় মিডিয়া ফোকাসেরও কিছু ব্যাপার থাকতে পারে। আগেকার দিনে মনে হয় মিডিয়া এটাকে সেভাবে মনে হয় ফোকাস করত না। সমস্যার গুরুত্ব হয়ত বুঝতে পারেনি, তাই আহ এই সমস্যা মহীরূহে দাঁড়িয়েছে।
@রৌরব, আসলেই স্যাডিস্ট না হলে এভাবে ঝোঁকের মাথায় খুন করার মহামারী লাগতনা। তারা টিভি দেখে দেখে এমন নায়ক হতে চায় যার প্রতি নায়িকা ভালবাসায় পড়তে বাধ্য। কিন্তু যখন প্রতিনিয়ত সে প্রত্যাখ্যাত হতে থাকে তখন সে অপমানিত বোধ করে।এছাড়া সমাজেও তাকে অনেকেই খারাপ চোখে দেখে। তখন একসময় হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে তারা কন্যার আত্মীয়দের বা প্রতিবাদকারীদের ক্ষতি করার চেষ্টা করে। আমার ধারণা এভাবেই রাগের মাথায় তারা শিক্ষক মিজানুর রহমান ও চাঁপা রাণী ভৌমিককে মোটর সাইকেল চাপা দিতে যায় এবং দুর্ঘটনাক্রমে তারা মারা যায়।তরুন সমাজের একাংশের কি বিশ্রি অবস্থা ভাবতেই ভয় হয়।
@আদিল মাহমুদ, খুব ভাল বলেছেন। সমস্যার মূলটা রয়েছে পারিবারিক শিক্ষা ও নারী-পুরুষ সম্পর্কের প্রতি অধিকাংশ মানুষের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাঝে। আমি সকল সময়েই ফ্রী মিক্সিং এর পক্ষে। কিন্তু এ কাজে আশানুরূপ ফল পেতে অনেক সময় লাগবে। কারণ পুরো সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করা খুবই দুরূহ। তাই এক্ষেত্রে আসলেই প্রতিটি মানুষের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। every single person of our society. আর আইন প্রণয়ন আর প্রয়োগে আমার আস্থা নেই। ভুক্তভোগী নারীর প্রতিবাদী আত্মীয়দের আগেও যে অত্যাচার হয়েছে তা কিন্তু আমার দেয়া লিঙ্কের একটি প্রতিবেদনে দেখানো আছে। আর পুলিস যে এক্ষেত্রে কতটা কি করে তাও অখানেই বলা আছে। সামাজিক ও পারিবারিক সচেতনতা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।
@লীনা রহমান,
আসলেই তাই, রাষ্ট্র বা আইন কতটা সাহায্য করতে পারে তা খুবই প্রশ্নবোধক।
তাই সামাজিক সচেতনা সৃষ্টি করা হতে পারে বিকল্প পথ, সমাজের সুশীলেরা এগিয়ে আসতে পারেন। পাড়া প্রতিবেশী বা মহল্লার লোকজনেরাও একটু সাহসী ও দায়িত্বশীল হলে মনে হয় পরিস্থিতির উন্নয়ন কিছুটা হলেও সম্ভব।
মেয়েদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে- এ কথা আমরা সবাই শিখি। তবে বাস্তব ক্ষেত্রে মেয়েদের সাথে মেলামেশার দ্বার রুদ্ধ করে দিলে এই শিক্ষা কাগজে কলমেই থাকবে, এবং সেটাই হয়। নৈতিকতার এত পাঠ, ঈশপের গল্প থেকে শুরু করে ধর্মীয় শিক্ষাই তাই কিছুই আসলে কাজে আসে না।
@আদিল মাহমুদ, আমি এদেশের আইন কানুন পুলিস কিছুই বিশ্বাস করিনা। আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা আমাদেরই করতে হবে। আমাদের সমাজটাকে আমাদের সবার সাধ্যমত সুশীল করে তুলতে হবে।
@লীনা রহমান,
একজন স্বাধীন সভ্য দেশের নাগরিকের কাছ থেকে এর চেয়ে চরম হতাশামূলক কথা আর কিছু হতে পারে না।
তবে কথা সত্য, এটা আমি নিজেওজ্ঞান হবার পর থেকেই পদে পদে উপলব্ধি করেছি। দেশের জীবনের শেষ দিকে সম্পত্তি ঘটিত ব্যাপারে ফৌজদারী মামলায় জড়াতে হয়েছিল তখন থানা পুলিশ আইন আদালত খুব কাছ থেকে দেখার দূর্ভাগ্য হয়েছিল। থানা পুলিশ নিয়ে নুতন করে বলার কিছু ছিল না। তবে সেবার নুতন শিক্ষা পেয়েছিলাম যে আমাদের দেশে সত্য মামলা সাজাতেও এক গাদা মিথ্যা কথা বলতে হয়।
@আদিল মাহমুদ,
:-Y :-Y :-Y :-Y
@লীনা রহমান,
কিন্তু আইন কানুন পুলিস ছাড়া আপাতত কোন উপায় নাই। দেখুন, পারিবারিক শিক্ষা, নারী-পুরুষ সম্পর্ক ইত্যাদির উপর অবশ্যই জোর দিতে হবে কিন্তু সেগুলো ইমপ্লিমেন্ট করে তার প্রভাব আসা পর্য্যন্ত উপায় কি? bdnews24 -এ আজকের খবর দেখুন “অনিচ্ছার সিঁদুর ‘মুছলো’ আত্মহত্যায়”। এটা মনে হয় মহামারী আকার ধারন করেছে। তাই উত্ত্যক্তকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য আমাদের সবাইকে এই মুহুর্তে ভীষন রকম সোচ্চার হওয়ার দরকার হয়ে পড়ছে বলে আমি মনে করছি।
@ব্রাইট স্মাইল্, আইন কানুন তো তার কাজ কিছুই করছেনা।এ ব্যাপারে আইন কানুনের অবস্থা হল এই
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-10-28/news/104857
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-10-28/news/104804
@লীনা রহমান,
এই ফ্রি মিক্সিংটা দরকার ছোটবেলা থেকেই। ছেলে-মেয়েদের স্কুল আলাদা করা খুব ভূল। এসএসসি পর্যন্ত ছেলেদের স্কুলে পড়েছি,প্রথম যখন মেয়েদের সাথে ক্লাশ করেছি মেয়েদের সহজে স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারিনি,অনেক বাজে চিন্তা মাথায় এসেছে। ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক হয়ে এসেছে,এখন মেয়ে বন্ধু না ভেবে মেয়েদের শুধুই বন্ধু ভাবতে পারি। ছোটবেলা থেকে যারা কো-এডুকেশনে পরেছে তাদের বেশিভাগ ছেলে-মেয়ে সম্পর্ক খুব স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারে। বাকিরা যখন কলেজ-ভার্সিটিতে অবাধ মেলামেশার সুযোগ পায় তখন হঠাত নিজেকে সামলাতে না পেরে নানা রকম আকাম করে বসে,এটা ছেলে-মেয়ে সবার জন্য প্রযোজ্য।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
আমিও মেয়েদের স্কুল ও কলেজে পড়েছি কিন্তু আমার পরিবারও মোটামুটি রক্ষনশীল। কিন্তু কিভাবে কিভাবে যেন আমি ছেলেদেরকে বন্ধু বলেই ভাবতে পারতাম সবসময়। এর কারণ হয়ত আমার কাজিনদের সাথে ভাল সম্পর্ক থাকা।
তারপরও চেষ্টা কর। আমি ফেসবুকে একটা গ্রুপ খুলেছি এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টায়।কিন্তু অলরেডি আমার কিছু বন্ধু আমাকে নিয়ে মজা করা শুরু করেছে। BUT I DON’T CARE. I CARE MORE ABOUT THIS THING.
সবাই যদি এ ব্যাপার প্রচার ও প্রসারে এগিয়ে আসে তাহলেই এ ঘৃণ্য ব্যাপারগুলো কমানো সম্ভব।
@লীনা রহমান,
লিখাটি খুব ভাল লেগেছে। প্রবাসে বাংলাদেশী টিভি চ্যনেল গুলোতে যখন আইন শৃংখলা পরিস্থিতি এবং বখাটেদের উপদ্রপের খবর অহরহ শুনি ও দেখি তখন খুব হতাশা লাগে। আপনার এ লেখা সময়োপযোগী।
ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সচেতনতা, সামাজিক প্রতিরোধ, প্রশাসনিক সহযোগিতা ইত্যাদি multidisciplinary approach ছাড়া এর বিহিত সম্ভব নয়। ‘ইভ টিজিং’ আমাদের সমাজের কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, পুরো সামাজিক মূল্যবোধ অবক্ষয়ের একটি মাত্র চিত্র।
এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না।যখন ভুক্তভোগীর প্রয়োজন utmost support, তখন তার পরিবারের লোকেরাই যদি তাকে ভৎসনা দেয় তখন সে যাবে কোথায়?
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এমন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর লিখার জন্য।
আইন প্রনয়ণের আগে চিন্তা করার সময় এসেছে। ইভটিজিংএর কারণ কি? আর আমাদের দক্ষিণ এশিয় দেশে তা বেশী কেন? বিশেষ করে ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্থান। মানুষের দুটা দিক থাকে একটা পাশবিক মানে আদিম প্রবৃত্তি আর আরেকটা হল উন্নত মানবিক দিক যাতে আছে বিচার, বিবেচনা, দয়া, মায়া, প্রেম, ভালবাসা। যারা ইভটিজিং করে তারা নিজেরাই বোঝে না তারা কি করছে? আর তাদের আচরণের ফলে একটি মেয়ের জীবনে কতটুকু বিপর্যয় আসছে। প্রথমত স্কুল কলেজে শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই ব্যাপারে ছাত্রদের কাছে আলোচনা করতে হবে।তাদের মানবিকতা জাগ্রত করতে হবে। ইভটিজিং কতটা অমানবিক খারাপ কাজ তা বোঝাতে হবে। দ্বিতীয়ত পারিবারিক শিক্ষার প্রয়োজন ছোট থেকে শিখাতে হবে একজন নারীকে সন্মান করা। এই ক্ষেত্রে একজন মায়ের বড় ভূমিকা পালন করা উচিৎ(যদিও তা দূর হস্ত)। আর তৃতীয়ত্ বিভিন্ন গন মাধ্যমের ভূমিকা রয়ে গেছে।চিন্তাধারাকে একটা শ্রেণীর মধ্যে না রেখে ছড়িয়ে দিতে হবে সবখানে। আমার মনে হয় এইসব কাজ সুষ্ঠভাবে করলে কোন আইন প্রনয়নের প্রয়োজন হবে না।
@সুমিত দেবনাথ, এ ব্যাপারটায় বেশি বেশি আলোচনা জরুরি। কারণ বুড়োদের মন পরিবর্তন করা অনেক কষ্ট। তাই স্কুল কলেজে শিক্ষকেরা ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে এবং আমরা বিশেষ করে তরুন সমাজের কাছে বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরতে পারলে এটা অনেক কমে যাবে। অনেক বেশি আলোচনা আর প্রচার হওয়া উচিত এ ব্যাপারে।পরিবারে মা-বাবা এ ব্যাপারে কাজ করলে তা অনেক কার্যকর হবে। তবে তারা করুন আর নাই করুন। আমি তো আমার ভাই-বোনএর সাথে এব্যাপারে আলোচনা করতে পারি, আমার বন্ধুদেরকে বলতে পারি।শুধু দরকার সবার সহায়তা।
খুবই সময়পযোগী একটি গুরুত্বপুর্ণ লেখা ।
এই মহুর্তে কঠিন আইন প্রনয়ন এবং তার প্রয়োগ করে এই ভয়াবহ সমস্যাটিকে মোকাবিলা করার দরকার। রাতারাতি এই সমস্যার সমাধানের আপাতত খুব উপায় আছে বলে মনে হয়না কারন আমদের সমাজে এখনও সাধারন লোকজনের মন মানসিকতা মেয়েদের সন্মানজনক অবস্থানটির পক্ষে খুব সহায়ক নয়। তার উপর রয়েছে ইদানিংকার ধর্মীয় মনোভাবের প্রাদুর্ভাব। এ ছাড়া মেয়েদেরকে উত্যক্ত করাটা কতটা ঘৃন্যতম কাজ সেটা ফোকাস করে বিভিন্ন ধরনের গনমাধ্যম ও প্রচার মাধ্যমগুলোকে প্রচার চালিয়ে মানুষকে সচেতন করার খুবই দরকার।
@ব্রাইট স্মাইল্, একমত। অনেক প্রচার দরকার এক্ষেত্রে।
@লীনা রহমান, একদম ঠিক।তবে আমাদের সর্বস্তরের লোকজনকে এ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
লীনা রহমান,
বিষয়টি নিয়ে পুনঃপৌনিক আলোচনার প্রয়োজন এবং আপনার লেখাটি এরই অংশ।
এনিয়ে দৈনিক পত্রিকাগুলো বেশ সরব ও ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে।
ধন্যবাদ বিষয়টির দিকে মনোযোগ আকর্ষনের জন্য।
@গীতা দাস, পত্রিকা থেকেই এ ধরণের নামকরণের ধারণা পেয়েছি এবং এটা আমার কাছে সঠিক মনে হয়েছে। এ ব্যাপারটির সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করার আগে সমস্যার গুরুত্বটাতো বুঝতে হবে।আর একটি উপযুক্ত নাম এক্ষেত্রে অনেক দরকার।
@গীতা দাস,
এ ক ম ত। লেখায় এদিকটি আরো ফোকাস করা দরকার ছিল।
যৌন হয়রানির উৎসে রয়েছে দেশের বর্তমান ভোগবাদী তরুন সমাজ।মূল্যবোধহীন শিক্ষাব্যাবস্থা, আদর্শচ্যুত অগ্রজ প্রজন্ম, গনমাধ্যমের ব্যাপক অপসংস্কৃতি, সমাজ সংস্কারকদের অনুপস্থিতি এবং দুর্নীতিপরায়ন পরিবার সদস্যগণ। এইসবের মিলিত যৌগ আজকের প্রজন্ম। সমসাময়ীক অঘটনগুলো পরিস্থিতির প্রকাশমাত্র, এর ভয়াবহ পরিনাম আগামী প্রজন্ম পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।সরকারি আইন যেখানে মৌলিক চাহিদা পূরনে ব্যার্থ তখন উৎসে প্রবেশ ব্যাতিরেক আইনের মাধ্যমে সমাধান খোজ করা কোন সমাধান নয়। ব্যাবসায়িক অথবা রাজনৈতিক কারনে হত্যা দেশের আইনব্যাবস্থার দুর্বলতা কিন্তু যৌন হয়রানি যা কিনা “প্রেম” নিবেদন প্রসূত সে যে আমাদের সমাজে ভয়ংকর মহামারীর প্রকাশ।
আপনার লেখা এবং আপনার প্রতিজ্ঞার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
@oshamajik, প্রধান সমস্যা আছে আমাদের পারিবারিক শিক্ষা আর মূল্যবোধে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এখান থেকেই একটি ছেলে নারীর অবমূল্যায়ন শেখে।আর নাচুনে বুড়িকে ঢোলের বাড়ি দিতে মিডিয়া তো রয়েছেই।