(এই গল্পের সকল চরিত্র কাল্পনিক)
কুদ্দুসমিয়া একজন ধর্মপরায়ণ ভালোমানুষ বলে পরিচিত। সমাজে তাঁর নাম ডাক আছে। ফি-বছর ইলেকশনে জিতেন তিনি। এইবারো জিতে গেলেন। এই নিয়ে আল্লাহপাকের কাছে শুকুর গুজরান করেন।
মনে মনে সারাক্ষণ বেঈমান মুসলমানদের অভিশাপ দেন।আর কাফিরদের পাইলে মুণ্ডু কেটে ফুটবল খেলার প্রবল ইচ্ছে। (আহা! মাইয়া গুলান সোন্দর কি মাশআল্লাহ)
আল্লাহপাকের অশেষ রহমত শেষ বিবির একটা পুত্রসন্তান হয়েছে। চার-চারটি বিবাহ করলেন কিন্তু আল্লাহপাক তাঁকে কোন কারনে কঠিন শাস্তি দিলেন।
শেষ বিবিকে নিয়ে হজ্জ করে আসবার পর কয়েক মাস পরেই ছেলেটা জন্মায়।মাশাল্লাহ উপরয়ালার মেহেরবানীতে তিনি খুশি হলেন।
জায়নামাজে বসে কাঁদেন প্রায়ই — “ইয়া আল্লাহ আমারে শক্তি দাও যেনো তোমার সেবা করতে পারি, আর কাফের আর না ফরমান মুসলমানদের শায়েশ্তা করতে পারি “।
আনন্দে ছেলের নাম রাখলেন “মউদুদি। বড়ো হলে মাদ্রাসায় হাফেজ হবে, সবাই ডাকবে – মওলানা মউদুদি। তিনি খুশিতে আটখানা হতে থাকেন আর কল্পনায় ছেলের মেহদি রঞ্জিত দাড়ি দেখেন। আবার দেখেন ছেলেকে আরবী পোশাক পরা অবস্থায় লম্বা আলখেল্লা।পুলকিত হতে থাকেন।
কুদ্দুস মিয়ার ধারণা আল্লাহ পাকের কাছে অদৃশ্য দূরবীণ আছে। যার কারনে তিনি সব কিছুই দেখতে পান।
“ ইয়া আল্লাহ আমার যদি গুনাহ হয়ে থাকে মাফ করে দিও।“ আবার উচ্চারণ করেন তিনি।
ওদিন সকাল থেকে তিনি বড্ডো অস্থির আছেন। দেশের বাড়ি গিয়েছিলেন। নানা কাজ তাঁর।তিনি হলেন হর্তাকর্তা। হিন্দু পাড়ায় গিয়েছিলেন ভাবেন, বউ ঝি বেবাক এমন সোন্দর কেমনে হয় তিনি বুঝেন না।
যতোবার ভাবেন ভুলে যাবেন ওমনেই তাঁর শরীর আনচান করে।অস্থির হয়ে, ঘামতে থাকেন।
— কই গেলি? ছোট বউকে উদ্দেশ্যে হাঁক পাড়েন। পড়িমরি করে দৌড়ে আসে কুলসুম। দরজা বন্ধ করতে বলেন।
কুলসুম কাঁপতে কাঁপতে বলে –
–বাচ্চাডারে দুধ খাওয়াইতাসি –
–কি কইলি মাগী? তুই এক্ষুন দরজা লাগা –
পাশের ঘর থেকে ট্যাঁ ট্যাঁ কান্নার আওয়াজ আসে আওয়াজ তো নয় ক্ষুধার চিৎকার।আধা ঘন্টার পর মুক্তি পেলো কুলসুম। দৌড়ে গেলো বাচ্চাটার কাছে। বাচ্চা তখন ক্ষুধায় হেঁচকি তুলছে। কুদ্দুস মিয়ার মাথা ঠান্ডা হয় না। তিনি তখনো ঠান্ডা আগুনে পুড়তে থাকেন। আর ভাবেন –
আরে! এই মাইয়াগুলান কি সোন্দর!
এক একটা য্যান হুরপরি। সাক্ষাত বেহেশ্তের পরী। এবং মনে মনে মালাউন মেয়ের সাথে
আপোষে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি নিতে থাকেন।তবে আজ যদি কুলসুম অন্যদিনের মতো গাঁই-গুঁই করতো তবে -আল্লাহর কসম – তার হাড্ডি পাছলি এক কইরা দিতাম।
আল্লাহপাক বলেছেন মনে মনে আউড়ান।যখন বলিব তোদের আসিতেই হবে। স্বামীর আগুন ঠান্ডা না কইরা আবার কিসের কাম? অতঃপর পয়পরিস্কার হয়ে নামাজে দাঁড়ান।
নামাজেও মুনাজাতের সময় দোয়া ভুল হতে থাকে। তিনি বলেন ,–
–ইয়া আল্লাহ এই মালাউন মাইয়া গুলান আমার সামনে আসিতেছে। তুনি আমারে পথ দেখাও, আমি কি করিবো।
অনেক্ষণ ধরে মুনাজাত করলেন। গভীর রাতে স্বপ্ন দেখলেন,তিনি বেহেশ্ত এবং দোজখের মাঝখানে দন্ডায়মান। বেহেশ্তের সামনে থোকাথোকা আঙ্গুর ঝুলে আছে। কুদ্দুস মিয়া
স্বপ্নে ভাবলেন তাঁর জন্য নিশচয় বেহেশ্তে জায়গা রক্ষিত আছে। কিন্তু, একী ?
তাঁর পা অচল! অসাড় তাঁর পা। মনে হচ্ছে কেউ পেরেক দিয়ে গেঁথে দিয়েছে।
“ ইয়া আল্লাহ ইয়া মাবুদ তাহলে আমি কি গুনাহ করেছি যে আমি বেহেশ্তে যেতে পারতেছিনা“?মনেমনে আউড়ালেন। এবং সাথে দেখলেন তাঁর কনিষ্ঠ স্ত্রীকে। মনে চঞ্চল হয়ে গেল। বদজেনানা হয়ে গেছে তাহলে? কুলসুমবিবি খারাপ হয়ে গিয়েছে তাহলে?
তখনি শুনতে পেলেন কোথায় যেন বলছে,
“ জিহাদ সমস্ত মুসলমানদের জন্য ফরজ , ইছলাম ভালোভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হলে যুদ্ধ করতে হবে।যারা এর বিরুদ্ধে কথা বলে তারা ভন্ড,হারামখোর,না ফরমান।
ধড়মড়িয়ে ঘুম থেকে উঠে পড়লেন।আসলে মাইকের এই কথাগুলো আলোচনা হচ্ছিল। পরে বুঝতে পারলেন তিনি।
-পানি –পানি করে চিল্লাচিল্লি শুরু করলেন। স্ত্রী কুলসুম দৌড়ে জগ থেকে পানি ঢেলে দিল।
–আপনি কুনো স্বপন দেখেছেন ?
কুদ্দুস মিয়া অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করলেন।মনে মনে ভাবেন আল্লাই জানে –এই বদমাইশ মহিলা কারো
সাথে ছহবত করে কী না। কুদ্দুস মিয়াকে যে মাঝে মধ্যে অবজ্ঞা করে তা তিনি টের পান।কচি বয়স তো মেরামত করন লাগব। সেইদিন তাঁর ছোটো ভাইয়ের সাথে গুজুর-গুজুর করতে দেখেছেন।নাহ! মাইয়া মানুষকে বাড়তে দেয়া যাবে না। পুরাপুরি আমার কন্ট্রোলে আনতে হইব। ইনশাল্লাহ তাই করুম।
মনে মনে স্থির করলেন।
আবার মাইকের আওয়াজ শুনতে পেলেন। এবং কী আশ্চর্য ব্যাপার! স্বপ্নে যা তিনি দেখেছেন হুবহু তাই মাইকে বলে যাচ্ছে। ভালভাবে মনে করার জন্য তিনি কান পরিষ্কার করেন,বদনা নিয়ে কুলকুচি করার সময় চোখে পানির ঝাপ্টা দেন। আবার কান পরিষ্কার করতে গিয়ে তাঁর মনে পড়লো, এই ওয়াজ মহফিলে তিনি প্রধান অতিথি।অথচ দেরী হয়ে গেল যেতে। তাড়াতাড়ি আচকান পরলেন, চোখে সুরমা টানলেন এবং সারা শরীরে ভুরভুরে আতরের গন্ধ ছড়িয়ে দিয়ে দাড়িটা পরিপাটি করে আঁচড়ালেন।অতঃপর বৈঠকখানায় এসে দেখেন সব অনুগতরা তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে।
বললেন -চলো
কুদ্দুস মিয়া মঞ্চের একটা বিশেষ চেয়ারে বসলেন তখন সবাই হাতে তালি দিল।
একজন বক্তা তাঁর আগমনে থেমে গেছিল।তারপর আবার শুরু করল বক্তৃতা।
— কি বলতেসিলাম যেন ?-হ্যাঁ মনে পড়তাসে –
তিনি অনেক বক্তৃতা দিয়ে হয়রান হয়ে গেলেন,
—আলহামদুলিল্লাহ – টেবিলে রাখা পানির গ্লাস হতে ঢকঢক করে পানি খেলেন।
–তাইলে কি বুজলেন ভাই সকলেরা ?
সবাই হাত উঠালো। আবার শুরু করলেন –বন্ধুগন আমি যা-যা বলতেসি মন দিয়া শুনবেন আর সেই মোতাবেক কাজ কাম করবেন,ইনশাল্লা আমরা কামিয়াব হবই।
এরপর এলো প্রধান অতিথির পালা। কুদ্দুস মিয়া ঘনঘন রুমাল দিয়ে
মুখের ঘাম মুছতে লাগলেন।গ্লাস থেকে ঠান্ডা পানি খেয়ে উঠে দাঁড়ালেন।
—-বন্ধুগন ,ভাইয়েরা আমার –এখন মুছলমানেরা অনেক সজাগ হইতেছে।রোজার মাসে
খাবারের দোকান বন্ধ থাকে ,আগে মাইয়ালোকেরা বুক উঁচু কইরা চলত, এখন ভদ্র হইতাছে, বেশীর ভাগ গেরাম গঞ্জ,শহরের মাইয়ালোক বোরকা পরে। হিসাব কইরা দেখেন আগে যারা সারা বছর নামাজ পড়তনা তারা অহন রোমজান মাসে রোজা রাইখা নামাজের জন্যি ছুটাছুটি করে।এইডা কি ভাল লক্ষণ না? বলেন আপনারাই মুমিন মুসলমানেরা।
সবাই হাতে তালি দিল।তিনি আবার শুরু করলেন –রাজশাহী ইনভারছিটি ,চট্টগ্রাম ইনভারছিটি
ইনশাল্লাহ আমাদের জিহাদী ভাইদের দখলে।তবে কিসু লোক আসে যারা মুনাফিক। অগোর মইদ্দে শিক্ষিত কিসু তাগরে বশে আনা কুনো ব্যাপার না। কি কন জিহাদী ভাইয়েরা? আর আছে কিসু বেয়াদব সাংবাদিক,আমাগো পিছে টিকটিকির মত লাইগা থাকে। তাগো ঠান্ডা করোনের ব্যবস্থা হইতাসে –ইনশাল্লাহ না-লায়েক মুরতাদ,কাফির যতদিন থাকব ইছলাম ততদিন ঠিক মত কায়েম হইবোনা। তাই বলতাসি –জেহাদি ভাইগন এই সকল না-লায়েক ,মুরতাদ,কাফির সকলরে শায়েস্তা করতে হইলে জিহাদের বিকল্প নাই।
কী বুজতাছেন মমিন মূছলমানেরা?
সবাই মাথা নাড়াল । তিনি বলেন –আলহামদুলিল্লাহ –!
সবাই একসাথে জোরে আওয়াজ তুলল –
“নারায়ে তাকবির জিন্দাবাদ”
রাত তখন গভীর। একটা ছোট ঘরে চুপ-চাপ নিম্ন স্বরে আলোচনা চলছে। কে কী করবে সম্ভবত সেই আলোচনা। কুদুসমিয়া সবাইকে ভাগে ভাগে কাজ বুঝিয়ে দিলেন।
যার যার মত চলে গেল। তাঁর মুখে একটা আত্মতৃপ্তি ফুটে উঠল।তিনি রঙ্গিন স্বপ্ন দেখলেন,এটা অন্যরকম রাস্ট্র কায়েম হয়েছে। বাহ কী চমৎকার!
পরের দিন পহেলা বৈশাখ।
রমনা বটমূলে চলছে এক মনোরম সঙ্গীত অনুষ্ঠান, হঠাৎ দুম,দাম করে অনেকগুলো বিস্ফোরণের আওয়াজ পেয়ে সবাই ছিটকে গেল। কেউ দিক-বিদিক জ্ঞানশুন্য হয়ে ছুটতে লাগল।অনেকগুলো লাশ পড়ে গেল মাটিতে। গানের মঞ্চে সবাই ভয় পেয়ে ছুটা-ছুটি শুরু করল। রক্তের স্রোত বয়ে গেল।
চারিদিকে একটা কোলাহল,কান্নার রোল। ভয়ার্থ মানুষজন কে কোথায় যাবে বুঝে উঠতে পারল না।
পুলিশের গাড়ির প্যাঁ পোঁ আওয়াজ। এয়্যম্বুলেন্স এর শব্দে মূখরিত চারদিক।
দূর থেকে কয়েকজন কুদ্দুস মিয়ার অনূসারিরা দেখে আত্মতৃপ্তি হাঁসি হাসলো।
-চল হুজুররে ফাইনাল খবর দিয়া আসি।
মনে মনে ওরা আবার বলে উঠল
-“নারায়ে তাকবীর-
জিন্দাবাদ-“
[শেষ ]
———-
আফরোজা আলমকে অসংখ্য ধন্যবাদ একটা বাস্তব চিত্রকে তুলে ধরার জন্য। আর ফুরাদের মতো চোখ থাকিতে কানারা সত্যকে কোনদিনই দেখতে পাবে না। ওরা কানা কানাই থেকে যাবে।
@সুমিত দেবনাথ,
না না আমি জনাব ফুয়াদের কথায় কিছুই মনে নেইনি। তিনি তাঁর মত বলেছেন। আমার আসল বক্তব্য হয়তো বুঝতে পারেননি। খেয়াল করলে বুঝবেন।
আর আমি বাস্তব চিত্রকে তুলে ধরতে চেয়েছি মাত্র।কিন্তু মনে হছে আরো ভালো করে লেখার দরকার ছিল।যাক ভবিষ্যতে চেষ্টা করব। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
অসম্ভব ভাল ও শক্তিশালী একটি লেখা।
“মনে মনে সারাক্ষণ বেঈমান মুসলমানদের অভিশাপ দেন।আর কাফিরদের পাইলে মুণ্ডু কেটে ফুটবল খেলার প্রবল ইচ্ছে। (আহা! মাইয়া গুলান সোন্দর কি মাশআল্লাহ)”
এখানে, ‘(আহা! মাইয়া গুলান সোন্দর কি মাশআল্লাহ)’ এই অংশটি না দিলেই বোধহয় গল্পের বুনন আরো মজবুত হত।
গল্পটি নিয়ে এত বেশি আলোচনা হয়ে গেছে যে বেশি কিছু লিখতে আমার লজ্জা লাগছে। ধন্যবাদ গল্পকারকে।
@মোজাফফর হোসেন,
ধন্যবাদ! মনে থাকবে আপনার পরামর্শ।
@আফরোজা আলম,
আপনার লেখাটি ভালো লাগলো। দেখাই যাচ্ছে, কুপমণ্ডুকদের বিরুদ্ধে এটি একটি মোক্ষম অস্ত্র। তবে এর সাহিত্য মান আরেকটু উঁচু দরের হবে বলে আশা করেছিলাম। চলুক। :rose:
ম্লোগানটি কিন্তু এ রকম:
অনেক ধন্যবাদ।
@বিপ্লব রহমান,
আপনি যথার্থ বলেছেন।যখন লিখি এমন ভাবনা ছিলনা যে কোথাও দেব।খেয়ালের বশে লেখা,আর এই লেখা নিয়ে আমি নিজেও মোটেই সন্তুষ্ট নই।আরো অনেক কিছু লেখা যেতো।পরিমার্জিত,পরিবর্ধিত করা যেত। আসলে কথায় আছে না,একটা ভালো লেখার জন্য অনেকদিন সাধনা করতে হয়।তবে এই লেখাটা চটজলদি লেখা,আর চটজলদি লেখা যা হয়।তবু,আমি চেষ্টা করব আরো কিছু পরিবর্তন আনা যায় কীনা। আপনার মন্তব্যকে আমার একটা পুরষ্কার হিসেবে নিলাম। আলোচনা সমালোচনা না হলে লেখায় কোনদিন সমৃদ্ধি আসেনা। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
বিপ্লব রহমান -আর হাঁ আপনি যা বলেছেন নারায়ে তাকবির নিয়ে ওটা জানি,তবু বিশেষ ব্যবহার করিনি।
@আফরোজা আলম,
শবাশ! :yes:
এই আগুন ছড়িয়ে যাক সবখানে, সবখানে সবখানে।
চরিত্র কাল্পলিক হলে হবে কি, ঘটনা তো বাস্তব। বরং বাস্তবে এর চেয়ে বেশি ঘটেছে।
ড. হুমায়ুন আজাদের ‘পাক সার জমীন সার বাদ’ এর সাথে কিছুটা মিল পাই। তসলিমা নাসরিনের ‘লজ্জা’র কথা মনে পড়ে গেলা ‘আগুন’ পড়ার সময়।
অপূর্ব লেখা। অসাধারণ লেখা। স্রেফ গল্প নয়, ইতিহাসের ঘটনাই আপনার লেখনী দিয়ে গল্পে রুপায়ন করেছেন মাত্র। এভাবে লিখেছেন ড. আজাদ। এভাবে লিখেছেন তসলিমা। কিন্তু মৌলবাদীদের রোষানলে পড়তে হয়েছে তাদের। সময় এসেছে ওদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার। আর কতদিন এমন কুদ্দুসদের হাতে দেশ জাতি নির্যাতিত হবে?
লাইভ টেলিকাষ্ট হচ্ছিল। আমি তখন টিভির সামনে। কী ভয়াবহ অবস্থা। কল্পনা করতেই গা হাত পা হিম হয়ে যায়।
মাহবুব সাঈদ মামুনের ‘আলো চাই আলো’ কবিতাটি মনে পড়ে গেলো-
ওরা কারা – মুক্তিযোদ্ধা না-কি হরকাতুল জিহাদী জংগীবাদী
এক হাতে কোরানের বানী অন্য হাতে বোমা-রাইফেল
মাঁথায় টুপি,মুখে দাঁড়ি যার নাম তালেবানী।
ওরা যে লেপ্ট-রাইট,হাটি হাটি পা পা করে
তড়িৎ গতিতে ধেঁয়ে আসছে
আবারো পাকি-শুকুনের প্রান।
মাংস চাই,তাজা রক্ত চাই
চাই লক্ষ কোটি চোখের মনি ও মাথার খোলী
যেমনি ৩৮ বছর আগে চেয়েছে ও খেঁয়েছে
করেছে ধর্ষন কোটি মা-বোনদের,
হত্যা করেছে লাখো শহীদের
আর নাম জানা না জানা আলোকিত
দেশের বুদ্ধিজীবির প্রান।
আর কত ? সাধু সাবধান,
এবার সময় হয়েছে,জাগো বায়ে জাগো
ভোর হয়েছে নতুন দিনের
নরম, কোমল মায়াবী সকাল বেলার আলোয়।
@মাহফুজ,
আপনার অসাধারণ মন্তব্যের জবাব নাই আমার কাছে। আমাকে এতো উঁচুমাপের লেখকের সাথে তুলনা করে লজ্জা দেবেন না। আমান্য চেষ্টা করেছি মাত্র।
ভুল বানানের জন্য লজ্জিত।সামান্য হবে ঐ খানে।
আফরোজা আলম লিখেছেন যে এটা একটা কাল্পনিক গল্প।
কিন্তু আমার মনে হচ্ছে এই কাহিনী মোটেই কাল্পনিক নয়—কুদ্দুস মিয়া যা করেছেন এবং তাঁর মনের সব বাসনা পূরোপূরি ইসলাম সম্মত।
রমনা বটমূলে জিহাদীরা যা করেছে তা ১০০% ইসলাম সম্মত। নবীজি যদি আরবদের উপাসনালয়ে জোরপূর্বক ঢুকে নিজের হাতে সমস্ত দেব ্দেবীর মুর্তিগুলোকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিতে পারেন—তবে জিহাদীরা কেন পারবেন না বাংলা নববর্ষের মত পৌত্তলিক প্রথাকে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিতে। এই সব জিহাদীরা ত নবীজির আদর্শে অনূপ্রানীত।
আফরোজার এই লেখাটি খুব শক্তিশালী হয়েছে। এই লেখা অনেক ইসলামীপন্থীদের যে বিক্ষুব্ধ করবে—তার প্রমাণ দেখতে পাচ্ছি।
@আবুল কাশেম,
ঠিক কাল্পনিক বলতে চাইনি।লিখেছি সকল চরিত্র কাল্পনিক।
অনেক ধন্যবাদ।
চমৎকার গল্প। সুন্দর চরিত্রগুলো ফুঁটে উঠেছে।
@স্বাধীন,
আপনার প্রতি রইলো আমার অনেক কৃ্তজ্ঞতা।
সমাজের ভ্রষ্টাচার, ধর্মের এবং স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গল্প এবং উপন্যাস ই রুখে দাঁড়াবার শ্রেষ্ট্র মাধ্যম-আরো একবার প্রমাণিত হল।
ভবঘুরে, আল্লাচালাইনা ইত্যাদি নব্য নাস্তিকদের কাছে অনুরোধ-এই গ ল্পটা থেকে শিখুন কিভাবে একটি সাহিত্য আরো জোরে ধাক্কা দিতে পারে, যা প্রবন্ধ লিখে সম্ভব না। আপনারা একটা উপন্যাস লিখুন-ধর্মের অত্যাচার নিজের চোখে যা দেখেছেন, সেই নিয়ে লিখুন। আরো তেজ নিয়ে উঠুক বাঙালী মুক্তিসূর্য্য-সেই দিন আর নেই দেরী —
@বিপ্লব পাল,
বুঝছি, আরো একটা বিপ্লবী ক্যাচাল! :-Y :-X
@আকাশ মালিক,
হাচা কতা কইছইন বাই । :laugh:
@বিপ্লব পাল,
আপনার কথা আমার শিরোধার্য।কিন্তু গুরুজনেরা বলেন একটা ভালো লেখা লিখতে হলে নাকী বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। দেখি কোনদিন তেমন লেখা কলম দিয়ে আসে কীনা। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ যে ভালো লাগাতে সক্ষম হয়েছি। আর সমালোচনা একটা লেখাকে অনেক সমৃদ্ধ করে। তাই মন্দ,ভালো দুই সমালোচনা পেতে চাই আমি।
@বিপ্লব পাল,
ভাই সবাই কে সব কাজ হয় না। যেমন আমি কবিতা বুঝি না , গল্পও লিখতে জানিনা। তাহলে কি আর করা ? অবশ্যই কবিতা গল্প উপন্যাস সব কিছু্ই সমাজ পরিবর্তনে চলকের ভূমিকা পালন করে। আর যে যেটা পারে সে সেটা লিখবে।
@বিপ্লব পাল,
কবিতার কথা ভুলে গেলেন!
বাস্তবধর্মী দারুন একটা লেখা । তবে উগ্র ধার্মিকদের গা জ্বলে যেতে পারে এটা পড়ে।
@ভবঘুরে,
কাউকে আঘাত দেওয়াটা আমার অভিপ্রায় নয়।যা সত্য তাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আরো এমন নির্মম সত্য আছে। রমনা বটমূল নয় আরো আরো কত কী ঘটে গেলো দেশটায় তার কতটুকু কাগজে আসে। ধন্যবাদ আপনাকে।
@আফরোজা আলম,
কাউকে আঘাত দেয়ার ইচ্ছা না থাকলেও অনেক সময় সেটা ছাড়া সমাজ পরিবর্তনের অন্য কোন উপায়ও থাকে না। সব সময় মিষ্টি কথায় কাজ হয় না। আর সেকারনেই পৃথিবীর কোন দেশে মিষ্টি কথায় গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি, স্বৈরাচার নিপাত হয়নি। মিষ্টি কথার চল মূলত: সভ্য গনতান্ত্রিক সমাজের। কিন্তু সে সমাজেও যদি কাল পরিক্রমায় শেওলা জমে যায় তা দুর করতে ভালমতো ঘষা মাজা করা লাগে। ময়লাকে মিষ্টি কথায় চলে যেতে বললে সে যায় না।
আফরোজা,
আপনি কুদ্দুসমিয়ার একান্ত মনের খবর জানলেন কিভাবে!
আসলে এমন চরিত্র বাংলাদেশে সবখানেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
লেখাটা বাস্তব!
ফুয়াদ,
ভাল মানুষ যদি ভাল কাজ করে তাহলে তা নিয়ে কেউ
মাথা ঘামায়না!
বাহ্যিক ভাল মানুষ যদি বির্তকিত কাজ করে তখনই লেখকের কলম
তাকে দানব সাজায়!
এতে লেখকের কোন দোষ নেই!
সমাজের চিত্র আঁকাই তার ধর্ম!
@লাইজু নাহার,
ধর্মকে হাতিয়ার বানিয়ে যারা মানুষ হত্যা করে তারা ভালোমানুষের মুখোশ পরেই আমাদের আশে পাশে ঘোরাফেরা করে। আপনার ভালো লাগলো যেনে আমি আনন্দিত।
@আফরোজা আলম,
আমি ভাবছিলাম পরে বোধ হয় কুদ্দুস মিয়া দোজখের দরজার ফাঁক দিয়ে দেখবেন দোজখের ভিতরে সব পরীর মত মালাউন নারীর দল। আর তখনই কুদুছস মিয়া দ্যোদুল্যমান অবস্থায় পড়ে যাবে। কোন দিকে যাবে? :lotpot: গল্পটি এভাবে শেষ করলেও মন্দ ছিল না।
তাছাড়া একটা হাদিস আছে যে মুসলমান ছাড়া সবাই দোজখে যাবে। কাজেই দোজখে তো সব অমুসলিম।
যাহোক, ভাল লেগেছে। লেখালেখি অব্যহত থাকুক।
@গীতা দাস,
হা হা- যা বলেছেন। মানুষ তো মানুষ তাতে হিন্দু মুসমান কেন?
ছোট বেলায় পড়েছিলাম,কিন্তু এইটাই চরম সত্যি। যে শব্দটা আমি অন্য ধর্মালম্বীদের জন্য ব্যবহার করেছি তার জন্য মাফি 🙁
কিন্তু,চরম সত্য এমন শব্দই ব্যাবহার হয়ে আসছে অনেকের মুখেমুখে।ব্যাপারটা আপত্তিকর। এইরকম ভাবে নিশ্চয় অন্যধর্মেও ব্যবহার হয় যেমন ম্লেচ্ছ ইত্যাদি। যা সত্যি দুঃখজনক।
আপনার ভালোলাগা আমার লেখার সার্থকতা। 🙂
@লাইজু নাহার,
আপা, নিজের মন কে প্রশ্ন করেন, আর হৃদয় থেকে উত্তর খোজেন, প্রকৃত ভাল মানুষের কি শত্রের অভাব হয় ? প্রতিটি অন্যায় ই তো তার শত্রু, তাই কি নয় ?
এ ধরনের কাল্পনিক চরিত্র একে ইসলামকে ছোট করার কাজ আপনার মত বহু লেখকই করে থাকেন। এতে ইসলামের লাভ ক্ষতি কিছুই হয় না। আপনারা সম্ভবত ভয়ানক ইসলাম বিদ্দেষের জ্বরে ভোগেন, যার আরগ্য আছে কি না জানি না। যে বিষয় গুলি নিয়ে লিখেন, তা লেখার আগে এ ও জেনে নিতে পারেন, মানুষের কলম আছে আর এ কলমের ছোয়ায়, ভাল মানুষকে দানব, আর দানব কে ভাল মানুষ সাজিয়ে দিবার চেষ্টা করতে পারে। আসলে, মানুষ একটার পর একটা অভিলাশ করেই যায়, আর তার এই অভিলাশের বিরুদ্ধে যে দাড়ায় তাকেই যে কোন মূল্যেই শেষ করে দিতে চায়। আর এ জন্যই মনে হয়, সত্যের বাহক রাসূল হযরত মুহাম্মদ সঃ এর এতো সমালোচনা, এতো অভিযোগ। আমার এক শিক্ষক বলতেন, যার জীবনে কোন সমালোচনা নেই, তার জীবনে কোন সফলতাই নেই। এখন মনে মনে ভেবে অবাক হই, এ জন্যই কি রাসূল সঃ এর এতো সমালোচনা, এতো ঘৃনা। বিষ্ময়কর অথচ বাস্তব, পৃথিবীতে যোগ্য সফল ব্যাক্তিদের সম্মান সময়ের গতিশীল পক্রিয়ায় ঠিকই এসে যায়।
উপরের লেখার মূল চরিত্রের নামের আগে আব্দুল যোগ করে দিলে হয়ত ভাল হত, কারন যে নাম ব্যাবহার করা হয়েছে, এটি সয়ং আল্লাহ পাকের নাম, তবে এ বিষয় নিয়ে নাস্তিক সম্প্রদায়ের কাছে, আমার কোন অভিযোগ থাকতে পারে না। কারন আমার মুসলিম ভাই কেই দেখি, এই একই নাম নিয়ে কৌতুক করতে। তবুও কি বলতে নেই, আমার যা বলার। তাই বলে ফেললাম।
আজকে আপনাদের জন লেননের জন্মদিন। তার ইমাজিন গানটা একটি বাচ্চা মেয়ের মুখে মুক্তমনার সবাই শোনেন। আর ভাল থাকেন। সবাইকে ধন্যবাদ।
@ফুয়াদ,
আগে জানতাম বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি, ইসলামী জঙ্গীবাদ বলে কিছু নাই। আজকে জানলাম নিজামী-মুজাহিদরাও ইসলামবিদ্বেষীদের কল্পনা। আছিলাম বোকা, হয়া গেলাম চালাক।
আপনি তো আবার কথা একটু বেশি বুঝেন, তাই আরেকটু ভেঙ্গে বলি। পরের বউরে ভালা পায় এমন ঈমানদার লোকের অভাব নাই(স্বয়ং নবীজি যেখানে জয়নবের উপর দৃষ্টি দিছিলেন[৩৩:৩৭] সেখানে কুদ্দুস মিয়ার দোষ কি)। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রত্যেকটি ধর্ষণের ঘটনা তার জ্বলন্ত প্রমাণ। জামায়াত-শিবিরের নেতারা সব মাদ্রাসা পাস লোক(নিজামী আবার ব্যাপক ভাল ছাত্র ছিলেন), আপনাদের মত উত্তরাধুনিকদের চেয়ে উনারা অধিক পরিমাণে কোরানের উদ্ধৃতি দিয়ে নিজেদের বক্তব্যকে জাস্টিফাই করেন, পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ছাগলও অস্বীকার করবে না যে তারা নাস্তিক না। এখন কোনটা কল্পনা আর কোনটা বাস্তবতা সেটা বিচার করার ভার আপনাদের উপর ছেড়ে দিলাম।
ডারউইন তো শুধু মুসলমান না, ডান-বাম দু’টার কাছেই সমালোচিত হয়েছেন। ডারউইনের তুলনায় মোহাম্মদ তো বলতে গেলে বেশ আরামেই আছেন।
“ইমাজিন” গানটা নিয়ে দেখি অনেক ধার্মিকই খুব উৎসাহ দেখায়। গীটারের টুংটাংয়ের মাঝে পাবলিক মনে হয় গানটির চরম ব্লাসফেমাস কথাগুলো ভুলে যায়।
@পৃথিবী,
আপনি যে অন্য গ্রহের বাসিন্দা, আপনার এই বক্তব্যেই তা প্রমান করে। প্রায় প্রতিদিন ই সাইটে সাইটে, বাংলা থেকে ইংলিশ ভিন্ন ভিন্ন ভাষায়, প্রত্রিকা থেকে মাসিক ম্যাগাজিন সব জায়গায় রাসূল সঃ এর সমালোচনায় ভর পুর থাকে, সেখানে মাঝে মধ্যে হঠাত করে হয়ত ভাগ্য গুনে ডারয়োন সাহেবের সমালোচনা পাওয়া যায়। তাও খুব ই কম। প্রশ্চাত্যের পত্রিকাগুলি তে ত প্রায় নেই ই। আর বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই ডারয়িন সাহেবের চেয়ে উনার মতবাদের সমালোচয়াই হয়। কিভাবে এই কথা বললেন কে জানে, যেখানে আপনার অতী-সাধারন কমেন্টের মধ্যেই রাসূল সঃ এর এখানা সমালোচনা ঢুকানো আছে।
আপনার সাথে তর্কের প্রতিযোগিতা করার ইচ্ছা আমার নেই। কারন তর্ক থেকে অনেক সময় আক্রশ সৃষ্টি হয়, আর তা মানুষের চিন্তা শক্তিকে দুর্বল করে কথা বুঝার চেয়ে তর্কে জিতাকে প্রধান্য দেওয়া শুরু করে। তাই, বুঝি আপনি আমার কথা বুঝবেন না। তাই আপনাকে পুশ করতে চাই না। যখন আল্লাহ পাক চাইবেন তখন সবই জানবেন।
কিছু প্রশ্ন ছিল আপনার প্রতি যদি অনুগ্রহ করে জবাব দিতেন।
এই উত্তরাধুনিক বলতে আপনি কি বুঝাতে চেয়েছেন ?
গানটা আপনাদের কে দিয়েছি। ধার্মিকেদের না। আর উনার গানটাকে একটু উল্টিয়ে বদলে নিলে, ইসলামের এক আল্লাহ পাক, এক দেশ, এক জাতি চলে আসে, যেখানে ন্যাশনালিজমের অপছায়া নেই, যেখানে লোভ লালসার গডের কোন ক্ষমতা নেই, যেখানে সারভাইবাল অব ফিটেস্টের কোন মারা মারি নেই।
একটি অনুরোধ, আপনার কমেন্টটি আরেক বার পড়ুন, আরেক টু ভেবে দেখুন এরূপ কমেন্টের কোন জবাব আসলেই কি দিতে হয় ?
@ফুয়াদ,
বাংলাদেশে থাকি ভাই, আরবী হাওয়া এখনও গায়ে লাগে নাই।
ইসলামের সমালোচনা করে নাস্তিক আর খ্রীষ্টান। ডারউইনের সমালোচনা করে মুসলমান আর খ্রীষ্টান(এবং অন্যসব ধর্মের অনুসারীরা, যদিও তারা এ দু’টো ধর্মের তুলনায় নগন্য), আর এই দু’টা প্রজাতিই দুনিয়াতে সংখ্যাগরিষ্ঠ। এখন অংক কষে বের করুন কে বেশি সমালোচিত হয়।
নিজেকে সত্যের একমাত্র ধারক দাবি করলে কোন সমালোচনা করা যাবে না, সত্যের বাহক হওয়া কি মজা! এখন থেকে মনে হচ্ছে যাবতীয় আকাম-কুকাম করার আগে নিজেকে “সত্যের বাহক” দাবি করে নিতে হবে।
সত্যবাদীরা দুনিয়াতে কাউকেই ভয় পায় না, মিথ্যুকরাই মানুষের অনুভূতির আড়ালে লুকিয়ে থাকে। আপনাদের নবী যখন এতই সত্যবাদী, “সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ”, দয়া করে উনাকে বোরকার তল থেকে বের কইরা সমালোচনার মুখামুখি করেন, দেখা যাক উনি কতটা সত্যবাদী।
যারা দুই নৌকায় পা দিতে চায়, যারা পানি না ছুইয়া মাছ ধরতে চায়, তারাই উত্তরাধুনিক। প্রকৃত মুসলমানরা পিয়ার প্রেসারের কাছে নিজেদের ইসলামী আদর্শকে কমপ্রোমাইজ করে না। এক্ষেত্রে জামায়াত আর হিযবুত তাহরীরের কাছে আপনাদের অনেক কিছু শেখার আছে, সভ্য দুনিয়ার সমালোচনার মুখেও এসব দল নিজেদের আদর্শে অটল থাকে। জামায়াত অবশ্য ইসলামী গণতন্ত্রের ধোঁয়া তুলে বেশ ভণ্ডামো করে, হিযবুত তাহরীরই দেখলাম একমাত্র দল যারা তত্ত্বে ও বাস্তবে মোহাম্মদের যুগের শাসন কায়েম করতে চায়।
গানের “নো রিলিজিয়ন” অংশটা মনে হয় ইচ্ছে করেই ভুলে গেলেন? এই অংশটা বাদ দিয়া সেখানে ইসলামী তাকওয়া ঢুকায়া দিলে সেটা তো আর জন লেননের “ইমাজিন” থাকল না।
আপনারা যখন “সারভাইভাল অব দ্যা ফিটেস্ট” এর প্রতিবাদ করেন, তখন হাসতে হাসতে জান বের হয়ে যায়। বলাই বাহুল্য এই উক্তিটা ডারউইনের নিজের না এবং জৈববিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এর তাৎপর্য ভিন্ন, কিন্তু জিহাদ করে পৃথিবীতে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায় যারা, যারা গোটা বিশ্ববাসীকে ঢিম্মী বানিয়ে রাখতে চায়, তাদের মুখে “সারভাইভাল অব দ্যা ফিটেস্ট” নিয়ে নাঁকি কান্না একদমই মানায় না। প্রত্যেক ধর্মই বেঁচে থাকার সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য মরিয়া হয়ে থাকে। একারণেই তো স্কুল-কলেজগুলাতে ধর্মশিক্ষার নামে সিস্টেমেটিকভাবে কচি বয়সে পোলাপানের মগজ ধর্ষণ করা হয়। আপনার ধর্ম যখন এতই সাধু, আপনার ধর্ম যেহে্তু বেঁচে থাকার সংগ্রামে টিকে থাকতে চায় না, তাহলে স্কুল-কলেজে জোড় কইরা আপনার ধর্ম শেখানোর দরকার কি! ধর্মশিক্ষা বাদ দিয়ে দিন, পোলাপানকে নিজের ধর্ম নিজে নির্বাচন করার সুযোগ দিন। দেখা যাক আপনার ধর্ম কতটা সাধু, কতটা সত্য।
প্রশ্নের জবাব না দিয়ে দুই রাকাত নফল নামায পড়ে আসতে পারেন। বিশ্বাসী হোন আর অবিশ্বাসী হোন, মুক্তমনা ব্লগে আসলে মনে কিছু প্রশ্ন জাগতে বাধ্য। নিশ্চয়ই আল্লাহ আর তাঁর রসূল প্রশ্নকারীদের অপছন্দ করেন।
@পৃথিবী,
আপনার এই কথাটি বেশ অদ্ভুত লাগল। এত দূর না যেয়ে, এখানেই দেখুন, এই পোষ্টে ডারোয়িন সাহেবের কোন সমলোচনা নেই। কিন্তু আপনার কমেন্টেই একটি সমালোচনা আছে( এই কথা আগে উল্লেখ করেছিল, যেন আপনি রেশিও ক্যাল্কুলেশন করেন) নিচেই দেখুন, আবুল কাশেম সাহেবেও করছেন। ০ অনুপাত ২ । আপনি সদালাপ Vs মুক্তমনা তে ডারোয়িন সাহেব আর রাসূল হযরত মুহাম্মদ সঃ এর সমালোচনার তুলোনা করুন(রাসূল সঃ কে উদ্দোশ্য করে মুক্তমনাতে একটি বই ই আছে)। দেখুন আর রেশিও এনালাইসিস করুন। তারপর, হিসাবে নেন, সদালাপ, মুক্তমনা, সচলায়তন, আমার ব্লগ, সামহোয়ার ইন ব্লগ। দেখুন, কয়টি পোষ্ট আছে সয়ং ডারোয়িন সাহেব কে নিয়ে, যেখানে রাসূল সঃ এর সমালোচনায়, পাতার পর পাতা ভরে থাকে। রাসূল সঃ সামন্য একটি কথা নিয়েও কত কথা হয়। ভারতীয় হিন্দু জনসাধারনের সাথে ডারোয়িন সাহেবের তেমন কোন মারাত্বক বিরুধ সম্ভবত নেই। তাই এদিক দিয়ে তিনি সেইফ, বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে কলমী-কিবোর্ড শক্তিশালী জাতির সমালোচনা থেকে তিনি নিরাপদ। তিনি বিশাল চাইনিজ, জাপানীজ, কোরিয়ান থেকে নিরাপদ। তাহলে বাকি থাকল কি ? প্রশ্চাত্য সমাজের অনেকেই ক্লাসে ডারোয়িন সাহেবের নাম পড়েছে, এখন নাম-ই মনে করতে পারে না। স্পেনিশ আর ল্যাটিনরা, ডারোয়িন সাহেবের নামই মনে করতে পারে না, শুধু মাত্র উচ্চ শিক্ষিত গন ছাড়া। আবার এই উচ্চ শিক্ষত ব্যাক্তির অধিকাংশের আলোচনা সমালোচনা করার টাইম নাই, তবে মুহাম্মদ সঃ কে নিয়ে বা মুসলিমকে নিয়ে দুই এক কথা বলার টাইম আছে। তবে এই পর্যন্তই। ডারোয়িন সাহেব কে নিয়ে খুব কম সম্ভাবনা। একদিন আমার এক রাশিয়ান বন্দুর সাহিত ডারোয়িন সাহেব কে নিয়ে কথা উঠেছিল, তাও এই বিষয়ে দুই তিন লাইন কথা হয়েছে।
ডারোয়িন সাহেব শুধু মাত্র মুসলিম আর খ্রিস্টান প্রদ্রীর কাছা কাছি ব্যাক্তির দ্বারা সমালিচিত হন, তাও বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে তার তত্ব-ই টার্গেট থাকে, তিনি নিজে নন। তার নিজের সমালোচনা খুবই কম। সে যাই হোক, সত্যের সাক্ষি আপনি দেবেন না। তাই আপনাকে এত কথা বলে লাভ নেই। আপনি আপনার বিশ্বাস নিয়ে ভাল থাকুন।
আপনি আগে বলেছিলেনঃ
তাহলে আপনি বলতেছেন, আমি দুই নৌকায় পা দিয়েছি, পানি না ছুয়ে মাছ ধরতে চেয়েছি। ভাল অসাধারন। আসলে হয়েছে কি, আমরা তো মাঝে মধ্যে মুক্তমনাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করি, এ জন্য আপনারা আমাদের দেখতে পারেন না। এতে আমাদের কোন যায় আসে না।
এটলিস্ট একটা জিনিস বুঝতে পারার জন্য ধন্যবাদ। হ্যা এ জন্য-ই আমি ইমাজিন গানটাই আপনাদের লিংক হিসাবে দিয়েছিলাম (লিংকটা আসে নি) । গানের ঐ অর্থ তো আমি দেইনি। সেটা আপনি উপরে গান সম্পর্কে প্রশ্ন করায় জবাব হিসাবে এসেছে।
আপনারা সে সুযোগে কচি বয়সে গান, ছিনেমা, সাহিত্যের নাম করে তাদের মনে রাজ্য দখল করে নিবেন, মগজ ট্যাকনিক্যালী ধর্ষণ করে নিবেন, আর আমরা সে সুযোগ দিব, তা কি করে হয়, জনাব।(মনে করিয়েন না যে আমি শিল্প সাহিত্যের বিরুধীতা করতেছি) যেমন ধরুন, “পদ্মা নদীর মাঝি” উপন্যাসটি । সেখানে ধর্মের বিরুদ্ধে কিভাবে কৌশল নেওয়া হয়েছে তা কি দেখেন নাই। আসলে আপনারা কচি, বৃদ্, কিংবা যুবক, সকলের মগজ ধোলাই থেকে ধর্ষন করে যান, এবং প্রতিনিয়ত যাচ্ছেন। আপনারা যে এ ব্যাপারে সফলতা পাচ্ছেন না, তা বলা যায় না। এতে আমার কিছু বলার নেই কারন ইসলাম আল্লাহ পাকের, আর তিনি যা ইচ্ছা তাই করবেন। কিন্তু কাহিনী হচ্ছে, আমরা বোকা হলেও এত বোকা নই যে খোলা মাঠে আপনাদের মত নাস্তিক ধান্দাবাজদের গোল দিতে দিব।
@ফুয়াদ,
ভালো বলেছেন। তা এভাবে আর কি কি “”উল্টিয়ে বদলে”” নেন?
@রামগড়ুড়ের ছানা,
মনে হয় মুক্তমনায় সার্ভারের সমস্যা হয়েছিল তাই না? সকাল থেকে ঢুকতে পারিনি। এই মাত্র পারলাম। ধন্যবাদ আবার যেন মুক্তমনা না হারায়। 🙂
@আফরোজা আলম,
মুক্তমনা হারাবে কেন? সার্ভার কিছু অদ্ভুত ঝামেলা করছে,এখনো কিছু পোস্টে ঢোকা যাচ্ছেনা। অভিজিতদা এটা নিয়ে কাজ করছেন,ঠিক হয়ে যাবে।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
সেটা আপনি ই হিসাব করুন, আমি কেন বলব?
@ফুয়াদ,
মোহাম্মদ সত্যিই যদি সত্যের বাহক হন, তাহলে তাকে সমালোচনা করলে তার কিছুই যাবে আসবে না। সমালোচনাকে এত ভয় কেন আপনাদের ? সমালোচনা ছাড়া কোন সত্যকে চুড়ান্তভাবে সত্য বলে সিদ্ধান্ত করা গেছে ? তাই আজগুবি কথা বার্তা না বলে যুক্তিপূর্ন কথা বলে সমালোচনার জবাব দেয়াই শ্রেয়। খেয়াল করুন, আপনি একটা পয়েন্টও কোন তথ্য বা রেফারেন্স দিয়ে না খন্ডিয়ে নিজের মনগড়া খেয়াল খুশীমতো মন্তব্য করেছেন। কিন্তু কেউ যখন সমালোচনা মূলক কিছু লেখে তখন সে পর্যাপ্ত তথ্য প্রমান দলিল দিয়েই সেটা করে। অথচ আপনি বা আপনার মতো লোকেরা কি করেন ? স্রেফ নিজের অজ্ঞতা প্রসূত কিছু মনগড়া মন্তব্য পেশ করেন , তাতে থাকে না কোন তথ্য, কোন রেফারেন্স বা কোন দালিলিক প্রমান। তাহলে মানুষ কাদের বক্তব্য গ্রহন করবে ? আপনি পারলে লেখিকার বক্তব্য উপযুক্ত তথ্য প্রমান দিয়ে খন্ডন করুন। যুক্তি যুক্ত হলে আমরা আপনার কথা মেনে নেব। রঙিন চশমা চোখে দিয়ে সব দেখেন তো তাই সাদা জিনিসকেও আপনার বা আপনাদের কাছে রঙিন মনে হয়। রঙিন চশমাটা খুলে পরিস্কার চশমা লাগান , দেখবেন আপনি নিজেই সব কিছু বুঝতে পারবেন।
@ভবঘুরে,
আপনি নাস্তিকনন, কিন্তু প্রচলিত ধর্মে অবিশ্বাসী। যখন এই বিষয় মুক্তমনাতে আপনার ই কোন লেখা কিংবা কমেন্টে পড়েছিলাম, তখনই আপনার মন মানষিকতা বুঝতে পেরেছি। তাই, আপনার মত ব্যাক্তির সাহিত, আমার কথা বলার কোন ইচ্ছাই ছিল না।
এখন, শুধু দুইটি বিষয় আলোকপাত করি।
১ আপনি হয়ত আমার এই লেখটি দেখেন নি, কিংবা বুঝতে পারেন নি
২ আপনি বলেছেনঃ
লেখিকা যেখানে নিজেই বলেছেন কাল্পনিক, সেখানে আপনার এরকম “উপযুক্ত তথ্য প্রমান” দ্বাবী করা নিতান্তই হাস্যকর। যাইহোক, আপনি আপনার রিসার্চ চালিয়ে যান। পড়তে পড়তে ঘৃনা করতে করতে, মানুষ অনেক সময় ভালবাসাও শুরু করে, সত্য বুঝতেও শুরু করে, হয়ত আল্লাহ পাক যদি চান, তাহলে আপনার ক্ষেত্রেও এরূপ হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। যে জানে। ভাল থাকুন।
@ফুয়াদ,
কথাটি ঠিক। আমি নাস্তিক নই। তবে প্রচলিত ধর্মগুলির তথাকথিত আসমানী কিতাবসমূহ যখন পড়া শুরু করি তখন তাদের মধ্যে এত বেশী আজগুবি কথা বার্তা আর স্ববিরোধি বক্তব্য পাই যে তাদেরকে আর আসমানী কিতাব বলে মনে হওয়া তো দুরের কথা, নিতান্ত নিম্ন শ্রেনীর কিতাব হিসেবে মনে হয় আর যা আমাকে প্রচলিত ধর্মবিশ্বাসের প্রতি অবিশ্বাস এনে দেয়।
কথাটা ঠিক। কিন্তু দেখুন উনি ওনার গল্পে যে মূল বিষয়টি এনেছেন তা হলো জিহাদ আর জিহাদের নামে নিরীহ মানুষ হত্যা। তো এ বিষয়টি নিয়ে এ মুক্তমনাতে বহু লেখা আছে। আপনি নিজেও পড়েছেন। আপনি সে বিষয়টিকেই যুক্তি দিয়ে খন্ডাতে পারতেন। যেহেতু এটা গল্প আর তাই এখানে রেফারেন্স দেয়ার কোন দরকার নেই। বিষয়টি তো জলবৎ তরলং। আপনার মত মানুষের যদি এটা বুঝতে সমস্যা হয় , তাহলে আর কোথায় যাই ।
@আফরোজা আলম,
যে কুদ্দুসমিয়া জিহাদের নামে মানুষ মারার আয়োজন করেন সেই কুদ্দুসমিয়া
এটাই হলো ট্রাজেডি। চমৎকার হয়েছে গল্পটি। ধন্যবাদ।
@ব্রাইট স্মাইল্,
আপনার ভালোলেগেছে এইটাই আমার আনন্দ।
এরকম আশা করেন , কিন্তু হয় না । :rotfl:
@Tutu,
ধন্যবাদ।