[গ্রাউন্ড জিরো মসজিদ বনাম ক্ষয়ক্ষতির নিয়ন্ত্রনঃ ‘সিদ্ধান্তটা আমাদেরকেই নিতে হবে’
বাংলা ও ইংরেজীর সংমিশ্রনে প্রবন্ধের শিরোনাম দেয়ার জন্যে পাঠকদের কাছে বিশেষভাবে ক্ষমাপ্রার্থী]

কোনো একটা ইসলামী বইতে কিম্বা ওয়েবসাইটে একবার পড়েছিলাম, ১৯৩৪ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত পঞ্চাশ বছরে পৃথিবীতে আব্রাহামিক ধর্মগুলোর অনুসারীদের সংখ্যা বৃদ্ধির শতকরা অনুপাত ছিল নিম্নরূপঃ

ইহুদীঃ -৪% (হ্রাসপ্রাপ্ত)
খ্রীষ্টানঃ ৪৭% (বৃদ্ধিপ্রাপ্ত)
মুসলমানঃ ২৩৫% (বৃদ্ধিপ্রাপ্ত)

মুসলিম অধ্যুষিত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জন্ম নিয়ন্ত্রনের ব্যাপক অনুপস্থিতির পাশাপাশি অসংখ্য অমুসলমানের ইসলাম ধর্মে কনভার্ট হওয়াও মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারন। বর্তমান পৃথিবীর সমসাময়িক ধর্মগুলোর মধ্যে ইসলাম সম্ভবত সর্বকনিষ্ঠ ধর্ম। সর্বকনিষ্ঠ ধর্ম হিসেবে সমসাময়িক অন্যান্য ধর্মের অনেক দূর্বলতা স্বভাবতই ইসলামে অনুপস্থিত এবং সম্ভবত সেকারনেই একেশ্বরবাদীদের কাছে ইসলামের গ্রহনযোগ্যতা সবচেয়ে বেশী। এমনকি, আমেরিকার নাইন-ইলেভেনের মত যুগান্তকারী সন্ত্রাসী ঘটনার পেছনে একদল মুসলমান দায়ী হওয়া সত্বেও অমুসলমানদের ইসলামে কনভার্ট হওয়ার অনুপাত বা হার খুব একটা কমেনি।

ইসলাম সর্বাধূনিক ও সর্বশেষ ধর্ম, আব্রাহামিক ধর্মগুলোর নবীদের মধ্যে ইসলামের নবী সর্বশেষ নবী এবং বর্তমান পৃথিবীতে ইসলাম ধর্মানুসারীদের সংখ্যা এক্সপোনেনশিয়ালী (গাণিতিকহারে) বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনা এবং এর পাশাপাশি সাম্প্রতিককালের বহুল প্রচারিত “ইসলাম ইজ দ্য ফ্যাস্টেষ্ট গ্রোয়িং রিলিজিয়ন” কনসেপ্টটা একটা বিশেষ মনোভাবের জন্ম দিয়েছে অধিকাংশ ইসলাম ধর্মানুসারী তথা মুসলমানদের মনে, তা হলো- ‘গ্র্যান্টেড্‌’ অর্থাৎ ‘প্রাপ্য’।

আমরা নর্থ আমেরিকায় চার্চ কিনে কিনে তা মসজিদে রূপান্তরিত করবো, কেননা তা আমাদের প্রাপ্য। আমাদের মসজিদ বানানো শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আশপাশের চার্চের প্রার্থনা রুমে জুম’আর নামাজ পড়বো, কেননা তা আমাদের প্রাপ্য। মসজিদ সংলগ্ন চার্চের বা কমার্শিয়াল বিল্ডিং-এর পার্কিং লট জুম’আর নামাজের দিন আমরা অবলীলায় ব্যবহার করবো এবং চার্চের প্রিষ্ট কিম্বা উক্ত বিল্ডিং-এর অমুসলিম কর্তৃপক্ষ হাসিমুখে ও নির্দ্বিধায় তা আমাদেরকে ব্যবহার করতে দেবেন, কেননা তা আমাদের প্রাপ্য। আমাদের মুসলিম অধ্যূষিত কোনো দেশে প্রাকৃতিক দূর্যোগ হলে উন্নত অমুসলিম দেশগুলো সাহায্য নিয়ে দৌড়ে আসবে, কেননা তা আমাদের প্রাপ্য।

কেউ আমাদের মসজিদ ভাঙ্গার হুমকি দিলে অমুসলিমরা তাতে তীব্র নিন্দা জানাবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কোনো উগ্র-মস্তিষ্ক খ্রীষ্টান প্রিষ্ট আমাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ, কোরান পোড়ানোর হুমকি দিলে আশপাশের ডজন ডজন খ্রীষ্টান চার্চের প্রিষ্ট, জুয়িশ সিনাগগের র্যাআবাই ও হিন্দু মন্দীরের পুরোহিত দৌড়ে এসে এহেন নিন্দিত কাজের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাবেন ও আমাদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশের জন্যে আমাদের সাথে বসে কোরান পড়বেন, সেটাই স্বাভাবিক। বিশ্বব্যাপী অমুসলিম দেশগুলোর রাজনৈতিক নেতাগণ ও সেসব দেশের জনগণ কোরান পোড়ানোর বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন, সেটাই স্বাভাবিক। এমনকি, আমরা কারো মর্মবেদনা বা মনকষ্টের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে স্পর্শকাতর কোনো জায়গায় মসজিদ বানানোর ইচ্ছে পোষন করলেও অমুসলিম রাজনৈতিক নেতাগণ কিম্বা অমুসলিম জনসাধারন আমাদের ধর্ম পালনের সমঅধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আমাদের পক্ষাবলম্বন করবেন, সেটা পর্যন্তও স্বাভাবিক।

তবে হ্যাঁ, আমরা কিন্তু কৃতজ্ঞতাস্বরূপ, সৌজন্যতাস্বরূপ কিম্বা ধর্মীয় উদারতার পরিচয় দিয়ে ওসবের কোনোকিছুই করবোনা। নাইন-ইলেভেনের মত নিদারুন সন্ত্রাসী ঘটনার পর প্রো-এ্যাক্টিভ্‌লি, স্বেচ্ছা-প্রণোদিত হয়ে সমবেদনামূলক কোনো ষ্টেটমেন্ট দেবোনা; বরং ভাঁড়ের মত আমরা কেউ কেউ এটা প্রমান করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো যে, এটা মুসলমানরা করেনি। নবীর দেশসহ আরববিশ্বের বেশীরভাগ দেশে কোনো চার্চ-ফার্চ বানাতে দেবোনা। চার্চের বা মন্দীরের কোনো প্রোগ্রাম মসজিদের মধ্যে হতে দেয়া কল্পনাও করতে পারবোনা। পাকিস্থানে চার্চ ধ্বংসের পর আমাদের মসজিদের ইমামরা সেখানে গিয়ে সহমর্মিতা প্রকাশের জন্যে চার্চের প্রিষ্টদের সাথে বসে কখনও উর্দু বাইবেল পড়বেন না। ঠিক যেমনি করে তাঁতীবাজারে হিন্দু মন্দির ধ্বংসের পর যেমনটা ওনারা করবেননা পুরোহিতদের সাথে বসে। অমুসলমান কোনো দেশে প্রাকৃতিক দূর্যোগ হলে আমরা তাদের সাহায্যে দৌড়ে যাবোনা। কিম্বা সুদানের ডারফার-এ গ্রামের পর গ্রাম খ্রীষ্টান বসতি সেদেশের মুসলমানরা সরকারের সহযোগিতায় নিশ্চিন্ন করে দিলেও সুদানীজ মুসলিম সরকারের বিরুদ্ধে আমরা কেউ নিন্দা জানিয়ে একটা ষ্টেটমেন্টও দেবোনা। কেননা এ সবকিছুই স্বাভাবিক। বাই-ডিফল্ট আমাদের ধর্ম উত্তম ও আমরা শান্তিপ্রিয় জাতি বা ধর্মানুসারী দল। কাজেই আমরা স্বধর্মীয়, স্বগোত্রীয় কারো অকাজ, কুকাজের কোনো ব্যাখ্যা দেয়ার প্রয়োজন মনে করিনে। অমুসলিমদের দুঃখ-কষ্টে সমবেদনা প্রকাশ করিনে কিম্বা তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিইনে। বরং অমুসলিমদের দায়ীত্বই হলো, এতদসত্বেও নিজেরা নিজেরাই ফিগার আউট করে নেয়া- ইসলাম কেন শান্তির ধর্ম এবং মুসলমানরা কেন শান্তিপ্রিয় জাতি বা ধর্মীয় দল।

ইমাম রউফ গ্রাউন্ড জিরোর কাছে মসজিদ বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি কি সরে আসবেন তার সিদ্ধান্ত থেকে? মনে হয়না। কেননা ওটাও আমাদের প্রাপ্য। যদিও ঠিক এই মসজিদটাই তিনি বাংলাদেশে বানাতে চায়লে সম্ভবত আমরা তা প্রতিহত করার প্রচেষ্টা করতাম এবং তাকে অমুসলিম ঘোষনার দাবী জানাতাম যেহেতু তিনি সুফীজ্যম-এ বিশ্বাসী, কোনো সুন্নী মুসলমান নয়।

আসুন, মনে মনে আমরা কিছু কল্পিত দৃশ্যের বা ঘটনার কথা কল্পনা করি।

ধরুন, ইমাম রউফ গ্রাউন্ড জিরোর কাছে মসজিদ বানানোর ঘোষনা দেয়ার পর নর্থ আমেরিকার বড় বড় ইসলামী সংগঠনগুলো (যেমনঃ ইসলামিক সোসাইটি অব নর্থ আমেরিকা, ইসলামিক সার্কল অব নর্থ আমেরিকা, কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস্‌, ইত্যাদি) এই মর্মে আমেরিকার বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও টিভিতে ঘোষনা দিলো যে, “Although Imam Rauf has the right to build a Mosque near Ground Zero according to the first amendment of the U.S. constitution, we would request him to refrain from doing so to honor the emotion of thousands of families who lost their loved ones near this site during a terror attack carried out by a group of fanatics who happened to be a group of Muslims. In case Mr. Rauf plans to go forward with his Mosque project, we hereby declare that he does not speak for the Muslims in this country, but for himself.”

কিম্বা ধরুন, প্রেসিডেন্ট ওবামা হোয়াইট হাউসে আয়োজিত মুসলমানদের ইফতার অনুষ্ঠানে আমেরিকার সংবিধান অনুযায়ী গ্রাউন্ড জিরোর কাছে মুসলমানদের মসজিদ বানানোর সমঅধিকার থাকার বিষয়ে সুদৃঢ় ঘোষনা দেয়ার পরদিনই ইমাম রউফ স্বেচ্ছা-প্রণোদিত হয়ে আমেরিকার বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও টিভিতে এই মর্মে ঘোষনা করলেন যে, “As a Muslim, I personally feel highly honored by the assurance given by the President that as Muslims we have the equal right to build a Mosque near Ground Zero like a Christian Church or a Jewish Synagogue according to the first amendment of the U.S. constitution. However, to honor the emotion of thousands of families who lost their loved ones near this site during a terror attack carried out by a group of fanatics who happened to be a group of Muslims, I have decided to move the Mosque project site from Ground Zero to another place.”

একজন মানুষের জীবনে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করার ও নিজের মুখ উজ্জ্বল করার সুযোগ খুব বেশীবার আসেনা। সেই একই কথা প্রযোজ্য একটা দলের বা জাতির বেলায়ও। একদল চরমপন্থী, সন্ত্রাসী মুসলমানদের থেকে শান্তিপ্রিয় কোটি-কোটি মুসলমানকে আলাদা করার নিদারুন একটা সুযোগ গেল মুসলমানদের জন্যে। এবং একইসাথে এটা ছিল নাইন-ইলেভেনের দূর্নামের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে পুষিয়ে নিয়ে আমেরিকাসহ পশ্চিমাবিশ্বের কাছে ইসলাম ধর্মের ও মুসলমানদের মুখ উজ্জ্বল করার অন্যতম একটা সুযোগ। পরবর্তী সুযোগ আসতে হয়ত যুগ যুগও লেগে যেতে পারে। কিন্তু আমরা কি কখনও শিখবো আমাদের ভুলগুলোকে শোধরাতে? মনে হয়না। “Losers rarely learn”।

তবে হ্যাঁ, সম্প্রতি প্যাষ্টর টেরী জোন্স-এর কোরান পোড়ানোর ঘোষনায় মুসলমানরা মনেহয় খানিকটা ভড়কে গেছে। ইসলামিক সোসাইটি অব সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার প্রেসিডেন্ট, ইমাম মুহাম্মদ মুসরি টেরী জোন্স-এর সহযাত্রী হয়ে নিউ ইয়র্ক অবধী গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে রউফ সাহেবকে গ্রাউন্ড জিরোর কাছে মসজিদ না বানানোর অনুরোধ জানানোর বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইমাম মুসরির সাথে আরো গোটা কয়েক মুসলিম কমিউনিটির ইমাম যোগ হয়ে পাল্লা ভারী করলে রউফ সাহেব তার পরিকল্পনা থেকে হয়ত পিছু হটতেও পারেন। তবে তা হবে নেহায়েত চাপে পড়ে এবং কোরান পোড়ানোর ভয়ে। নিঃসন্দেহে তা সন্মানজনকভাবে নয়।

লেখাটা শেষ করবো গেল রোজাকালীন সময়ে আমার একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার গল্প বলে।

রোজার শুরু বা মাঝামাঝি। উইক্‌ডে গুলোতে প্রায় প্রতিদিনই তখন স্থানীয় মসজিদ, ‘ওমর-ইবনে-আলখাত্তাব’-এ দুই ছেলেকে নিয়ে ইফতার করতে যাই আমি। ফিনিক্স ভ্যালীর বেশীরভাগ মসজিদে ‘ডিফতার’-এর (ইফতারশেষে ডিনার) ব্যবস্থা থাকলেও মসজিদ ওমরে তা নেই। এখানে শুধু ইফতার-এরই ব্যবস্থা। রোজাদারের সমাগমও সম্ভবত সেকারনেই অনেক কম। হয়ত সেকারনেই এখানে মেয়েদের ইফতার-এর কোনো ব্যবস্থা করেননি মসজিদ কর্তৃপক্ষ। মসজিদ ওমর আমার বাসা থেকে মাত্র এক মাইল দূরে। ইচ্ছে করেই মসজিদের কাছাকাছি বাসা ভাড়া নেয়া; নামাজ-কালামের সুবিধার জন্যে। কাজেই উইক্‌ডে তে মসজিদ ওমরে ইফতার করাটাই সবদিক দিয়ে সুবিধা। তবে উইক্‌এন্ডে (শুক্র, শনি ও রবি) অবশ্য ভ্যালীর অন্যান্য মসজিদগুলোতে ঘুরে ঘুরে ‘ডিফতার’ করতে যাই আমরা সপরিবারে। মসজিদে অন্যান্য রোজাদারদের সাথে ইফতার করার আনন্দ উপভোগ করার সাথে সাথে পরিবারের কত্রীর ওপর কাজের বাড়তি চাপ কমানোটাও আমার প্রতিদিন মসজিদে ইফতার করতে যাওয়ার আরেকটা উদ্দেশ্য।

শেখ হানিফ মসজিদ ওমরের বেতনভোগী ইমাম। তিনি সাউথ আফ্রিকান হলেও ইন্ডিয়ান অরিজিন। এক সন্ধ্যায় আমরা প্রায় পনের-ষোলজন বসে ইফতার করছি। এর মধ্যে আমরা বাংলাদেশী প্রায় পাঁচ, ছয়জন। শেখ হানিফ বসেছেন আমাদের পাশেই। খেতে খেতে তিনি বাংলাদেশে মুসলমানদের সাথে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যানুপাত সম্পর্কে জানতে চাইলেন আমাদের কাছে। হয়তবা স্রেফ কৌতুহলবশত কিম্বা গল্পচ্ছলেই। আমি উত্তরে বললাম, “নব্বই আর দশ। আগে ছিল আশি আর বিশ। তবে ক্রমশঃ তা কমে গিয়ে এখন নব্বই আর দশে গিয়ে ঠেকেছে”। এম.এস. ভাই আমার পাশে বসেই ইফতারি খাচ্ছিলেন। ভদ্রলোকের ঠান্ডা লাগার বাতিক আছে। তিনি স্লেশ্মাজড়ানো কন্ঠে যথেষ্ট ক্ষোভের সাথে তৎক্ষনাৎ বলে উঠলেন, “অমুসলমানরা মাত্র দশ ভাগ হলে কি হবে, সেদিনের এক পত্রিকায় দেখলাম দেশের সরকারি শূন্য পদগুলোর অর্ধেকেরও বেশীতে অমুসলমানদেরকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার সংখ্যালঘুদের প্রতি খুবই পক্ষপাতপূর্ণ, যা খুবই দুঃখজনক”। উত্তরে শেখ হানিফ বললেন, “ও!”। ঠিক বুঝা গেলনা তিনি এম.এস. ভাইয়ের কথায় সাঁয় দিলেন নাকি স্রেফ সগোক্তি করলেন আনমনে।

দেশে যারা সরকারি চাকরিতে সম্প্রতি পদোন্নতি পেয়েছেন তারা সবাই সম্ভবত জন্মসূত্রেই বাংলাদেশী। এবং আমি নিশ্চিত পদোন্নতিপ্রাপ্ত কাউকেই এম.এস. ভাই ব্যক্তিগতভাবে চেনেননা- না মুসলিম, না অমুসলিম- কাউকেই নয়। তবুও তিনি নিদারুন দুঃখিত হচ্ছেন শুধু এই কারনে যে, সবগুলো পদে কেন কেবলমাত্র মুসলমানরা পদোন্নতি পেলনা; কেন সংখ্যালঘুরা পদোন্নতি পেল। মজার ব্যাপার হলো, এম.এস. ভাই নিজে খুব বড় একটা পদে চাকরি করেন এদেশে। আই.টি. রিলেটেড কাজ। বছরে বেতন পান সম্ভবত সিক্স ডিজিটে অর্থাৎ ছয় অংকের ঘরের মার্কিন ডলারে। এই অর্থনৈতিক দূর্মূল্যের বাজারে তিনি সম্প্রতি নাকি একটা প্রমোশনও পেয়েছেন। বলাবাহুল্য, এদেশে তিনি একজন ইমিগ্র্যান্ট ও সংখ্যালঘু।

আমি সব শুনে মনে মনে শুধু এটুকুই বললাম, “হায়রে মুসলমান; long way to go”।

আব্দুর রহমান আবিদ
রচনাকালঃ সেপ্টেম্বর, ২০১০