* কাষ্ঠহাসি মার্কা ঘোড়ার ডিম *
উত্তর পুরুষ
আরব দেশের মক্কা নগরীতে অবস্থিত কাবা ঘরটি হযরত ইব্রাহিম (আঃ) নামের একজন সৎ ব্যক্তির তৈরি। তিনি এই ঘরে বসে আল্লাহর ধ্যান করতেন। এবং সৃষ্টি রহস্যের গবেষণা করতেন। এটা মানুষের তৈরি একটা ঘর। এঘর আল্লাহ নিজের হাতে তৈরি করেননি। (অথচ তিনি পৃথিবীতে কতকিছু তৈরি বা সৃষ্টি করেছেন, যেমন নদী, পাহাড়, পর্বত, বৃক্ষ, মাটি, পানি, হৃদ, ঝরণা, গুহা, পশুদের জঙ্গল এভাবে কত অগণিত স্থান ও বস্তু) মানুষের তৈরি এই কাবা ঘরে প্রার্থণা করলে প্রার্থণা আদায় হয় এবং এর চারিধারে চক্কর দিলে হজ্জ্ব পালন হিসেবে পাপ মোচন হয়। এভাবে পৃথিবীর যত জায়গায় মসজিদ আছে সেখানে প্রার্থণা করলে প্রার্থণা আদায় হয়। এটাও পাক পবিত্র এবং আল্লাহর ঘর হিসেবে বিবেচিত। ঐগুলো যদি আল্লাহর ঘর হিসেবে বিবেচিত হয় এবং প্রার্থণা ও আদায় হয় তবে এর চারিদিকে চক্কর বা তওয়াফ করলে হজ্জ্ব আদায় হবেনা কেন ?
ধনীর জন্য কাবাঘর তওয়াফ করে সারা জীবনের পাপ মোচনের (সুযোগ বা) রাস্তা খোলাই আছে। ধনীর লেজুড় সবাই চাটে। কিন্তু যে গরিব তার পাপ মোচনের (সুযোগ বা) রাস্তা নেই, তাহাকে’ শিশুর মতো বুধাই মার্কা শান্তনা দেয়া হলো, যেমন ; বিভিন্ন চান্দ্র মাসের ঐ ঐ তারিখে নফল এবাদত করো, না হয় মা বাবার খেদমত করো তাহলেই হজ্জ্ব পালনের সমতুল্য পুণ্য হয়ে যাবে। (বাস্তবে পয়সা না থাকলে মা বাবার খেদমত কেমনে হয় ? ভালো খানাপিনা, পোশাক,ঔষাধপত্র, ভ্রমণ সবকিছুতেই পয়সা লাগে) ধনীদের পাপ মোচনের গ্যারান্টি হিসেবে বলা হলো কেউ যদি হজ্জ্ব পালন করে মনে দ্বিধা পোষন করে যে তার পাপ মোচন হলো কি হলো না তাহলে সে মু’মিন থেকে খারিজ হয়ে যাবে।
এতদ্ব্যতীত আরও বলা হলো পানিতে শরীর ধুয়ে নিলে যেমন সমস্তা ময়লা আবর্জনা পরিস্কার হয় তদ্রূপ হজ্জ্ব পালনকারির সমস্ত পাপ ধুয়ে মুছে পরিস্কার হয়ে যায়। অতএব এত বড় গ্যারান্টি পেয়ে ধনীরা হজ্জ্ব পালন না করে শান্তি পাবে কেমনে ? হ্যাঁ ধনীর পয়সা আছে তাই তার পাপ মোচনের গ্যারান্টি ও আছে। কিন্তু গরিবের পাপ মোচনের বাস্তব গ্যারান্টি কোথায় ? এতদ্ব্যতীত যারা মক্কা মদীনা তথা আরব দেশে জন্ম গ্রহণ করে তারা ইচ্ছে করলে জীবনে প্রতি বৎসর না হয় দু’তিন বৎসর অন্তে এক একবার হজ্জ্ব পালন করতে পারে। অতএব তারাই হজ্জ্বের মাধ্যমে পাপ মোচন করে “ দুধে ধোয়া শবরী কলার” মতো পবিত্র ভাবে স্বর্গে প্রবেশ করবে। আর যারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মুসলমান নাম নিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তাদের কি হবে ? তাদের ভাগ্য কি দোষ করেছে ? ধনীর হজ্জ্ব ফরজ হিসেবে পালন করার পেছনে অন্য একটি গুঢ় রহস্য আছে। রহস্যটি হলো মক্কায় গিয়ে পয়সা খরচ করা। হজ্জ্বের নামে মক্কা মদীনাকে মুসলমান মানুষের একটা রাজধানীতে পরিণত করা, এতে ঐ স্থান গুলো চিরকাল একটা জাতির সংযোগস্থল ও ব্যবসা কেন্দ্রে পরিণত করা। এই উদ্দেশ্য যদি না থাকতো তাহলে ধনীর জন্য হজ্জ্ব করা ফরজ অর্থাৎ অত্যাবশ্যক হতোনা। মক্কার মাটিতে ঐ পয়সা খরচা করার জন্যই তো পাপ মোচনের গ্যারান্টি আছে। নতুবা ঐ পয়সা খরচ করে মক্কার ঘর তওয়াফ এবং আরাফাতের মাঠে প্রার্থণা এবং সাফা মারওয়া পাহাড় দৌড়াদৌড়িতে আল্লাহর কি এমন স্বার্থ বা কাঙালীপনা নিহিত আছে ? যে কারণে তিনি আদমের এসব দৌড়াদৌড়ির জন্য ক্ষুধার্ত হয়ে থাকবেন ?
কিন্তু এখানে ধর্মীয় তীর্থের নামে উপকার হচ্ছে শুধু মাত্র একটি বেদুইন জাতির এটাই তাদের স্বার্থ। (আল্লাহর নবী দুনিয়াদারি ও আখেরের অনেক আগাম খবর জানতেন, কিন্তু মাটির নিচ থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাহায্যে একদিন জাপান, আমেরিকা প্রভৃতি দেশ তেল উত্তোলন করে জাতিকে সম্পদে ও বিলাসিতায় পরিপূর্ণ করে দেবে, এখবর তিনি জানতেন না। জানলে হজ্জ্ব পালনের কালা কানুন নিশ্চয়ই অন্য ধারায় প্রবাহিত হতো) ধনীদের যাকাত আদায় পরেও হজ্জ্বের নামে টাকা খরচ হয়, সময় অতিবাহিত হয় এবং কষ্ট স্বীকার করতে হয়। এই পরিশ্রম এবং অর্থ যদি প্রত্যেক হজ্জ্ব করতে ইচ্ছুক ব্যক্তি হজ্জ্ব পালন না করে নিজ নিজ এলাকায় ক্ষুধার্ত, ভিখারী, অসহায়, রোগী ও বিপদগ্রস্থ মানুষের বাড়ী বাড়ী গিয়ে তার সেবা করতেন, তার পাশে দাড়াতেন কিংবা ঐ অর্থে কোন প্রতিষ্ঠান কায়েম করে তা থেকে বাস্তবমুখী জ্ঞানদান ও সাহায্যদান করা হতো, তাহলে বোধ করি সেটা শান্তি ও মানবতার ধর্মীয় অঙ্গ বলে বেশি বিবেচিত হতো। কিন্তু এজাতীয় সেবাশ্রম কাজে ধনীদের পাপ মোচনের গ্যারান্টি নেই, সেজন্য উৎসাহ ও নেই। তাই মানুষ ওটা ফরজ হিসেবে করেনা। এমন কি সুন্নত হিসেবে ও নয়, যা করে নফল ইবাদত মনে করেই করে। সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে হজ্জ্ব পালন হচ্ছে আল্লাহর বা মানুষের উপকারের জন্য নয়। স্রেফ নিজের বেদুইন জাতির একটা উপকার ও অর্থনৈতিক সচ্চলতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য একটি কৌশলমাত্র। এতদ্ব্যতীত যে দেশের মাটিতে হজ্জ্বের উদ্দেশ্যে বেড়াতে এলে পাপ মোচনের গ্যারান্টি আছে সে দেশের মানুষকেও ভিন দেশীরা সম্মান শ্রদ্ধা করবে, কারণ তারা হচ্ছে আল্লাহর খাস পছন্দ করা জায়গার লোক। এভাবে একটি কৌশলের ভেতর ইহুদী খৃষ্টান প্রভৃতি লোকদের দেখানো হচ্ছে যে, তারা যে জাতিকে অতীত কাল থেকে বর্বর, শিক্ষাহীন, লুটেরা ও অসভ্য জাতি হিসেবে ঘৃণা করে আসছিল আজকে তারা দুনিয়ার সকলের শ্রদ্ধা ও ইজ্জতের পাত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এখানে বাঙালির বা বাঙালি মুসলমানের কিংবা ভারতবাসির কোন স্বার্থ বা ইজ্জতের ব্যাপার নেই। অতএব বুঝাই যাচ্চে ধর্ম এমন একটি আফিম উহার অতিরিক্ত নেশায় পড়লে নিজের ঠেলায় নিজেই বেদুইনকে সালাম জানাবে, তার দেশের জন্য নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করবে এবং শ্রদ্ধা ও করবে। এসবের বিনিময়ে ধনীর জন্য আছে পাপ মোচনের নিশ্চয়তা আর গরিবের জন্য কি আছে ? কিছুই নেই, আছে কাষ্ঠ হাসিমার্কা ঘোড়ার ডিম।
***********************************************************
সমস্যা যদি বাড়ে
উত্তর পুরুষ
দেশের ধর্ম যাজক তথা আলেম সমপ্রদায়ের ব্যাপারে অনেকের যে দৃষ্টি বা মনোভাব তা হচ্ছে এই ; তাঁরা আসলে সহজ সরল কিন্তু ধর্মের প্রতি রক্ষণশীল মনোভাবের কারণে তাঁরা অনেক ব্যাপারে শক্ত মনোভাব পোষণ করেন। এটা অতীতকাল থেকে প্রচলিত একধারা। যার গণ্ডি থেকে সহজে কেউ বেরিয়ে আসতে পারেনা। আমরা আমাদের সমাজে, জীবনের বাস্তবমুখী শিক্ষার প্রয়োগ ও সমপ্রসারন করতে পারিনি বলে আজকে আমাদের চারিপাশে এত সমস্যা। আলেম সমপ্রদায়গণ কোরআনের বাক্য দিয়ে পৃথিবীর পর্বত সমান সমস্যা সমূহের সমাধান করতে চান। কিন্তু পৃথিবীতে সমস্যা যে কত বিশাল ও কত বিস্তারিত তা তাঁদের অধিকাংশ বোধগম্যের বাইরে । একই কারণে তাঁরা কোরআনকে সর্ব রোগের মহৌষধ মনে করে ঐ কিতাবকে এবং নবী হযরত মোহাম্মদের শোনা কথার উক্তিকে যত্র তত্র প্রয়োগ করেন। তাঁরা মনে করেন সব কথার জবাব যদি (যেমন করেই হোক) দেওয়া না যায় তাহলে ধর্ম ও কোরআনের ইজ্জত থাকেনা। তাই সব দিক থেকে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে সম্মুখে যে খড়কুটা পাওয়া যায় তাই দিয়ে মানুষকে শান্তনা দেবার চেষ্টা নেন। কোন প্রশ্নের জবাব সঠিক কিংবা শুদ্ধ না হলেও তাঁরা এর পেছনে একটা গল্পের যুক্তি খাড়া করেন, যাতে তাঁদের ধর্মীয় কথার কোন অবমাননা না হয়। সেজন্য তাঁরা অতীতের পীর দরবেশ, আউলিয়াদের কথাগুলো ধার করে এনে মানুষদেরকে অযৌক্তিক হালকা শান্তনা দেন। অথচ পৃথিবীতে কত হাজার হাজার সমস্যার সমাধান হচ্ছে কেবল মাত্র জ্ঞান চর্চা, মুক্ত চিন্তা ও মুক্ত বিবেকের আইন থেকে। কেয়ামত আসার আগ অবধি পৃথিবীর লোক সংখ্যা কত হবে এবং এত অধিক জনসংখ্যার সমাগমে পৃথিবীতে যে খাদ্য,বাসস্থান, চিকিৎসা ও অন্যান্য ব্যাপারে যা ঘাটতি দেখা দেবে তার সামাধানের জন্য আশু ব্যবস্থা পত্র কি ? আল্লাহ নিশ্চই জানেন যে, পৃথিবীর শেষ লোকসংখ্যা ও প্রাণীর সংখ্যা কত হবে। তিনি হিসেবে অত্যন্ত তড়িৎ ও তৎপর। কোরানে, বাইবেল, তাওরাতে, বেদে বা ত্রিপিটকে এসব সমস্যা সমাধানের কথাবার্তা বড়ই বিরল । মানুষ এখন ভালই বুঝতে পারে, পৃথিবীর বিশাল সমস্যা ও মানুষের জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বহুমুখি সমস্যার যাবতীয় সমাধান কোন ধর্মগ্রন্থে নেই। যদিও আইনের বহু সূত্র ধর্ম থেকে উৎসারিত হয়েছে এবং তা যুগ উপযোগী করার জন্য পরিবর্তনের ব্যবচ্ছেদে অন্য চেহারায় রুপান্তরিত হয়েছে। তাই বর্তমানে সব সমস্যার সমাধান নিজ বিবেক বুদ্ধি থেকে রাষ্ট্রীয় আজ্ঞায় সমাধান হয়। একই মানুষ জাতির জন্য বার বার ধর্মগ্রন্থ বদল করার পেছনে যুক্তি সঙ্গত কোন কারণ নেই। যদি বার বার বদল করা আল্লাহর কাছে রেওয়াজ হত, তবে শেষ নবী, শেষ ধর্মগ্রন্থ বলে কোন কিছু নাজিল হতনা। পৃথিবীতে মানুষ বাড়বে সমস্যাও বাড়বে এবং সেই সমস্যার জন্য ধর্মগ্রন্থ ও বাড়বে ইহাই স্বাভাবিক। আল্লাহতো এমন নন যে তিনি মানুষকে হেদায়েত দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে পড়েন কিংবা হিসেব ও বুদ্ধি বাৎলাতে দুর্বল হয়ে পড়েন। তিনি ক্লান্তি ও দুর্বলতার উর্ধ্বে, সেজন্য মানুষকে প্রয়োজন বোধে আবারও অধিক সংখ্যক কিতাব কিংবা নবী পাঠাতে কার্পণ্য করার কথা নয়। তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন আর কেউ নয়। ধর্মগ্রন্থ ঐশ্বরিক হলে সেগুলো মুখে মুখে, পাহাড়ের গুহায় কিংবা স্বপ্ন যুগে মানুষের কাছে চুপি চুপি আসার কথা নয়। মিথ্যে আসে চুপি চুপি, গোপনে, কিন্তু সত্য আসে প্রকাশ্যে ঢাকঢোল পিটিয়ে। ঐশীবাণী চুপিসারে এসেছিল বলে সেই সূত্র ধরে আজও দরিদ্র বিশ্বের জনগোষ্ঠীতে কত লোক স্বপ্নযুগে পীর-ফকিরি ও সন্যাসীগিরি পায়। পায় জীবনে “ভূতে ধরার” বা “ভুতের আছর” নামের সাইকিয়েট্রিক উদভ্রান্ততা। ক্ষুধা অভাব, হতাশা, ব্যর্থতা, অসুখ, পুষ্টিহীনতা ও শিক্ষাহীনতা এসবের জন্য দায়ী। ধর্মবাণী ঐ ভাবে চুপিসারে আসতে গিয়ে কত ছত্র ভঙ্গ হয়েছে। কত কথার তিলকে তাল করা হয়েছে। কত কথার কোন তাৎপর্য মিলেনি, কত মূল্যবান কথা হারিয়ে ও গেছে। আল্লাহর আরশে কালি কলম কিংবা কাগজের অভাব নেই, ভাষার ও অভাব নেই। তিনি তা প্রেরণ করলে ছাপার অক্ষরে স্বর্গীয় সম্পদের মতো প্রেরণ করতেন। যাতে করে তাঁর কথারও তাঁর সত্যের কোন অপলাপ না হয়, এবং তাঁর সৃষ্ট মানুষের মধ্যে নানান সন্দেহ ও যুক্তিতর্ক না হয়। হানাহানি ও রক্তপাত নিশ্চয়ই আল্লাহ ও মানুষের কাম্য নহে।
আল্লাহ কত জীবন উপকরণ, কত বস্তু ও প্রাকৃতিক সম্পদ আমাদের দান করেছেন চোখের সামনে। এগুলো দান করতে কোন নবী বা ফেরেশতার মাধ্যম প্রয়োজন হয়নি। অথচ ধর্মগ্রন্থ জীবনের জন্য অতীব প্রয়োজনীয় একটি সম্পদ হওয়া সত্বেও তা আসে গোপনে মানুষের মাধ্যমে। এ কেমন ব্যাপার ? কয়েক শতাব্দি থেকে পৃথিবীতে ধর্মগ্রন্থের দাবীদার জাতিগুলো যা করে যাচ্ছে তাতে ধর্মগ্রন্থ গুলো লজ্জায় মাথানত করে নিজ ইজ্জত নিয়ে চুপিসারে গায়েব হয়ে আল্লাহর আরশে আশ্রয় গ্রহণ করা উচিৎ। আর সেখানে আল্লাহর দরবারে এর (ধর্ম গ্রন্থের) প্রার্থণা করা উচিৎ যে,“হে আল্লাহ আমাকে তুমি হেদায়েত হিসেবে পাঠিয়ে ছিলে, কিন্তু পৃথিবীতে আদম জাতির পাপ আমি আর সহ্য করতে পারছিনা, আমাকে ক্ষমা করে মুক্তি দাও”। কিন্তু দুঃখের বিষয় ধর্মগ্রন্থগুলো ঐশ্বরিক নয় বলে গায়েব হচ্ছেনা দেখে আমার বিশ্বাস চুরমার হয়ে গেছে।
পাপ ও মহাপাপের যত রকম সংজ্ঞা বা ডেফিনেশন পৃথিবীতে রয়েছে,আদমজাত তা করেনি এমন কোনটি-ই আর বাকী নেই। পৃথিবীতে নানা রসহ্য ও বৈজ্ঞানিক সূত্রের বহু আবিষ্কার যেমন মানুষের চেষ্টার ফল, ধর্মগ্রন্থ তেমনি অতীত কালীন কিছু বুদ্ধিমান মানুষের চিন্তা শ্রম ও সাধনার ফল। যারা এযুগে পত্র পত্রিকায় খোদার দেওয়া ৩৬৫ দিন’ই বিভিন্ন বিষয়ে নিবন্ধ লিখে যাচ্ছেন বৎসরের পর বৎসর, তা তাঁদের দ্বারা কেমন করে সম্ভব ? মানুষ যখন কোন বিশেষ ব্যাপারে একাগ্রতা নিয়ে ধাবিত হয় তখন তাঁর দ্বারা তা সম্ভব। ঐ মানুষেরা রাস্তা দিয়ে দু’ঘন্টা হাটলে লেখার উপযোগী যত উপকরণ বা বিষয় বস্তু জোগাড় করতে পারবেন। কিন্তু আমাদের মত সাধারণ মানুষ তা এক বৎসরেও পারবেন না। সুতরাং অতীতে আধ্যাত্মিকতায় অতি আগ্রহী পীর পয়গম্ভরের এভাবে আধ্যাত্মিকতায় নিমগ্ন হয়ে একাগ্রচিত্তে মানুষের জন্য তৈরি করেছেন ঐশ্বরিক বাণী, তাতে মহা আশ্চর্য্য হওয়ার কিছু নেই। আজকের সামগ্রিক বিশ্বে আমরা যে মানব সভ্যতার চরম বিকাশ দেখতে পাই, তা’তে রয়েছে পৃথিবীর বহু জ্ঞানী গুণী মানুষের চিন্তা ও কার্যকলাপের সম্মিলিত ফসল। কোন কোন মানুষ কোন একটি ব্যাপারে সাধনা ও গবেষণা করতে গিয়ে তিলে তিলে জীবনকে করেছেন ক্ষয়। কারও কারও হয়েছে অপমৃত্যু, ক্ষুধা আর পথ্যের অভাবে তাঁরা ঝরেছেন ফুলের মত। অনেকের জীবন বলতে গেলে ল্যাবরেটরীর চার দেয়ালেই ছিল সীমাবদ্ধ। তেমনি বহু মানুষকে আমরা সাধারণ চাকুরিজীবী কিংবা সংসারী হিসেবে দেখেছি। কল্যাণ ও সমাজ পরিবর্তনের চিন্তায় এরা অনেক কষ্ট পেয়েছেন, আমরা কি কেউ এসব খবর জানি ?