* কাষ্ঠহাসি মার্কা ঘোড়ার ডিম *
উত্তর পুরুষ
আরব দেশের মক্কা নগরীতে অবস্থিত কাবা ঘরটি হযরত ইব্রাহিম (আঃ) নামের একজন সৎ ব্যক্তির তৈরি। তিনি এই ঘরে বসে আল্লাহর ধ্যান করতেন। এবং সৃষ্টি রহস্যের গবেষণা করতেন। এটা মানুষের তৈরি একটা ঘর। এঘর আল্লাহ নিজের হাতে তৈরি করেননি। (অথচ তিনি পৃথিবীতে কতকিছু তৈরি বা সৃষ্টি করেছেন, যেমন নদী, পাহাড়, পর্বত, বৃক্ষ, মাটি, পানি, হৃদ, ঝরণা, গুহা, পশুদের জঙ্গল এভাবে কত অগণিত স্থান ও বস্তু) মানুষের তৈরি এই কাবা ঘরে প্রার্থণা করলে প্রার্থণা আদায় হয় এবং এর চারিধারে চক্কর দিলে হজ্জ্ব পালন হিসেবে পাপ মোচন হয়। এভাবে পৃথিবীর যত জায়গায় মসজিদ আছে সেখানে প্রার্থণা করলে প্রার্থণা আদায় হয়। এটাও পাক পবিত্র এবং আল্লাহর ঘর হিসেবে বিবেচিত। ঐগুলো যদি আল্লাহর ঘর হিসেবে বিবেচিত হয় এবং প্রার্থণা ও আদায় হয় তবে এর চারিদিকে চক্কর বা তওয়াফ করলে হজ্জ্ব আদায় হবেনা কেন ?
ধনীর জন্য কাবাঘর তওয়াফ করে সারা জীবনের পাপ মোচনের (সুযোগ বা) রাস্তা খোলাই আছে। ধনীর লেজুড় সবাই চাটে। কিন্তু যে গরিব তার পাপ মোচনের (সুযোগ বা) রাস্তা নেই, তাহাকে’ শিশুর মতো বুধাই মার্কা শান্তনা দেয়া হলো, যেমন ; বিভিন্ন চান্দ্র মাসের ঐ ঐ তারিখে নফল এবাদত করো, না হয় মা বাবার খেদমত করো তাহলেই হজ্জ্ব পালনের সমতুল্য পুণ্য হয়ে যাবে। (বাস্তবে পয়সা না থাকলে মা বাবার খেদমত কেমনে হয় ? ভালো খানাপিনা, পোশাক,ঔষাধপত্র, ভ্রমণ সবকিছুতেই পয়সা লাগে) ধনীদের পাপ মোচনের গ্যারান্টি হিসেবে বলা হলো কেউ যদি হজ্জ্ব পালন করে মনে দ্বিধা পোষন করে যে তার পাপ মোচন হলো কি হলো না তাহলে সে মু’মিন থেকে খারিজ হয়ে যাবে।
এতদ্ব্যতীত আরও বলা হলো পানিতে শরীর ধুয়ে নিলে যেমন সমস্তা ময়লা আবর্জনা পরিস্কার হয় তদ্রূপ হজ্জ্ব পালনকারির সমস্ত পাপ ধুয়ে মুছে পরিস্কার হয়ে যায়। অতএব এত বড় গ্যারান্টি পেয়ে ধনীরা হজ্জ্ব পালন না করে শান্তি পাবে কেমনে ? হ্যাঁ ধনীর পয়সা আছে তাই তার পাপ মোচনের গ্যারান্টি ও আছে। কিন্তু গরিবের পাপ মোচনের বাস্তব গ্যারান্টি কোথায় ? এতদ্ব্যতীত যারা মক্কা মদীনা তথা আরব দেশে জন্ম গ্রহণ করে তারা ইচ্ছে করলে জীবনে প্রতি বৎসর না হয় দু’তিন বৎসর অন্তে এক একবার হজ্জ্ব পালন করতে পারে। অতএব তারাই হজ্জ্বের মাধ্যমে পাপ মোচন করে “ দুধে ধোয়া শবরী কলার” মতো পবিত্র ভাবে স্বর্গে প্রবেশ করবে। আর যারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মুসলমান নাম নিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তাদের কি হবে ? তাদের ভাগ্য কি দোষ করেছে ? ধনীর হজ্জ্ব ফরজ হিসেবে পালন করার পেছনে অন্য একটি গুঢ় রহস্য আছে। রহস্যটি হলো মক্কায় গিয়ে পয়সা খরচ করা। হজ্জ্বের নামে মক্কা মদীনাকে মুসলমান মানুষের একটা রাজধানীতে পরিণত করা, এতে ঐ স্থান গুলো চিরকাল একটা জাতির সংযোগস্থল ও ব্যবসা কেন্দ্রে পরিণত করা। এই উদ্দেশ্য যদি না থাকতো তাহলে ধনীর জন্য হজ্জ্ব করা ফরজ অর্থাৎ অত্যাবশ্যক হতোনা। মক্কার মাটিতে ঐ পয়সা খরচা করার জন্যই তো পাপ মোচনের গ্যারান্টি আছে। নতুবা ঐ পয়সা খরচ করে মক্কার ঘর তওয়াফ এবং আরাফাতের মাঠে প্রার্থণা এবং সাফা মারওয়া পাহাড় দৌড়াদৌড়িতে আল্লাহর কি এমন স্বার্থ বা কাঙালীপনা নিহিত আছে ? যে কারণে তিনি আদমের এসব দৌড়াদৌড়ির জন্য ক্ষুধার্ত হয়ে থাকবেন ?
কিন্তু এখানে ধর্মীয় তীর্থের নামে উপকার হচ্ছে শুধু মাত্র একটি বেদুইন জাতির এটাই তাদের স্বার্থ। (আল্লাহর নবী দুনিয়াদারি ও আখেরের অনেক আগাম খবর জানতেন, কিন্তু মাটির নিচ থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাহায্যে একদিন জাপান, আমেরিকা প্রভৃতি দেশ তেল উত্তোলন করে জাতিকে সম্পদে ও বিলাসিতায় পরিপূর্ণ করে দেবে, এখবর তিনি জানতেন না। জানলে হজ্জ্ব পালনের কালা কানুন নিশ্চয়ই অন্য ধারায় প্রবাহিত হতো) ধনীদের যাকাত আদায় পরেও হজ্জ্বের নামে টাকা খরচ হয়, সময় অতিবাহিত হয় এবং কষ্ট স্বীকার করতে হয়। এই পরিশ্রম এবং অর্থ যদি প্রত্যেক হজ্জ্ব করতে ইচ্ছুক ব্যক্তি হজ্জ্ব পালন না করে নিজ নিজ এলাকায় ক্ষুধার্ত, ভিখারী, অসহায়, রোগী ও বিপদগ্রস্থ মানুষের বাড়ী বাড়ী গিয়ে তার সেবা করতেন, তার পাশে দাড়াতেন কিংবা ঐ অর্থে কোন প্রতিষ্ঠান কায়েম করে তা থেকে বাস্তবমুখী জ্ঞানদান ও সাহায্যদান করা হতো, তাহলে বোধ করি সেটা শান্তি ও মানবতার ধর্মীয় অঙ্গ বলে বেশি বিবেচিত হতো। কিন্তু এজাতীয় সেবাশ্রম কাজে ধনীদের পাপ মোচনের গ্যারান্টি নেই, সেজন্য উৎসাহ ও নেই। তাই মানুষ ওটা ফরজ হিসেবে করেনা। এমন কি সুন্নত হিসেবে ও নয়, যা করে নফল ইবাদত মনে করেই করে। সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে হজ্জ্ব পালন হচ্ছে আল্লাহর বা মানুষের উপকারের জন্য নয়। স্রেফ নিজের বেদুইন জাতির একটা উপকার ও অর্থনৈতিক সচ্চলতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য একটি কৌশলমাত্র। এতদ্ব্যতীত যে দেশের মাটিতে হজ্জ্বের উদ্দেশ্যে বেড়াতে এলে পাপ মোচনের গ্যারান্টি আছে সে দেশের মানুষকেও ভিন দেশীরা সম্মান শ্রদ্ধা করবে, কারণ তারা হচ্ছে আল্লাহর খাস পছন্দ করা জায়গার লোক। এভাবে একটি কৌশলের ভেতর ইহুদী খৃষ্টান প্রভৃতি লোকদের দেখানো হচ্ছে যে, তারা যে জাতিকে অতীত কাল থেকে বর্বর, শিক্ষাহীন, লুটেরা ও অসভ্য জাতি হিসেবে ঘৃণা করে আসছিল আজকে তারা দুনিয়ার সকলের শ্রদ্ধা ও ইজ্জতের পাত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এখানে বাঙালির বা বাঙালি মুসলমানের কিংবা ভারতবাসির কোন স্বার্থ বা ইজ্জতের ব্যাপার নেই। অতএব বুঝাই যাচ্চে ধর্ম এমন একটি আফিম উহার অতিরিক্ত নেশায় পড়লে নিজের ঠেলায় নিজেই বেদুইনকে সালাম জানাবে, তার দেশের জন্য নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করবে এবং শ্রদ্ধা ও করবে। এসবের বিনিময়ে ধনীর জন্য আছে পাপ মোচনের নিশ্চয়তা আর গরিবের জন্য কি আছে ? কিছুই নেই, আছে কাষ্ঠ হাসিমার্কা ঘোড়ার ডিম।
***********************************************************
সমস্যা যদি বাড়ে
উত্তর পুরুষ
দেশের ধর্ম যাজক তথা আলেম সমপ্রদায়ের ব্যাপারে অনেকের যে দৃষ্টি বা মনোভাব তা হচ্ছে এই ; তাঁরা আসলে সহজ সরল কিন্তু ধর্মের প্রতি রক্ষণশীল মনোভাবের কারণে তাঁরা অনেক ব্যাপারে শক্ত মনোভাব পোষণ করেন। এটা অতীতকাল থেকে প্রচলিত একধারা। যার গণ্ডি থেকে সহজে কেউ বেরিয়ে আসতে পারেনা। আমরা আমাদের সমাজে, জীবনের বাস্তবমুখী শিক্ষার প্রয়োগ ও সমপ্রসারন করতে পারিনি বলে আজকে আমাদের চারিপাশে এত সমস্যা। আলেম সমপ্রদায়গণ কোরআনের বাক্য দিয়ে পৃথিবীর পর্বত সমান সমস্যা সমূহের সমাধান করতে চান। কিন্তু পৃথিবীতে সমস্যা যে কত বিশাল ও কত বিস্তারিত তা তাঁদের অধিকাংশ বোধগম্যের বাইরে । একই কারণে তাঁরা কোরআনকে সর্ব রোগের মহৌষধ মনে করে ঐ কিতাবকে এবং নবী হযরত মোহাম্মদের শোনা কথার উক্তিকে যত্র তত্র প্রয়োগ করেন। তাঁরা মনে করেন সব কথার জবাব যদি (যেমন করেই হোক) দেওয়া না যায় তাহলে ধর্ম ও কোরআনের ইজ্জত থাকেনা। তাই সব দিক থেকে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে সম্মুখে যে খড়কুটা পাওয়া যায় তাই দিয়ে মানুষকে শান্তনা দেবার চেষ্টা নেন। কোন প্রশ্নের জবাব সঠিক কিংবা শুদ্ধ না হলেও তাঁরা এর পেছনে একটা গল্পের যুক্তি খাড়া করেন, যাতে তাঁদের ধর্মীয় কথার কোন অবমাননা না হয়। সেজন্য তাঁরা অতীতের পীর দরবেশ, আউলিয়াদের কথাগুলো ধার করে এনে মানুষদেরকে অযৌক্তিক হালকা শান্তনা দেন। অথচ পৃথিবীতে কত হাজার হাজার সমস্যার সমাধান হচ্ছে কেবল মাত্র জ্ঞান চর্চা, মুক্ত চিন্তা ও মুক্ত বিবেকের আইন থেকে। কেয়ামত আসার আগ অবধি পৃথিবীর লোক সংখ্যা কত হবে এবং এত অধিক জনসংখ্যার সমাগমে পৃথিবীতে যে খাদ্য,বাসস্থান, চিকিৎসা ও অন্যান্য ব্যাপারে যা ঘাটতি দেখা দেবে তার সামাধানের জন্য আশু ব্যবস্থা পত্র কি ? আল্লাহ নিশ্চই জানেন যে, পৃথিবীর শেষ লোকসংখ্যা ও প্রাণীর সংখ্যা কত হবে। তিনি হিসেবে অত্যন্ত তড়িৎ ও তৎপর। কোরানে, বাইবেল, তাওরাতে, বেদে বা ত্রিপিটকে এসব সমস্যা সমাধানের কথাবার্তা বড়ই বিরল । মানুষ এখন ভালই বুঝতে পারে, পৃথিবীর বিশাল সমস্যা ও মানুষের জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বহুমুখি সমস্যার যাবতীয় সমাধান কোন ধর্মগ্রন্থে নেই। যদিও আইনের বহু সূত্র ধর্ম থেকে উৎসারিত হয়েছে এবং তা যুগ উপযোগী করার জন্য পরিবর্তনের ব্যবচ্ছেদে অন্য চেহারায় রুপান্তরিত হয়েছে। তাই বর্তমানে সব সমস্যার সমাধান নিজ বিবেক বুদ্ধি থেকে রাষ্ট্রীয় আজ্ঞায় সমাধান হয়। একই মানুষ জাতির জন্য বার বার ধর্মগ্রন্থ বদল করার পেছনে যুক্তি সঙ্গত কোন কারণ নেই। যদি বার বার বদল করা আল্লাহর কাছে রেওয়াজ হত, তবে শেষ নবী, শেষ ধর্মগ্রন্থ বলে কোন কিছু নাজিল হতনা। পৃথিবীতে মানুষ বাড়বে সমস্যাও বাড়বে এবং সেই সমস্যার জন্য ধর্মগ্রন্থ ও বাড়বে ইহাই স্বাভাবিক। আল্লাহতো এমন নন যে তিনি মানুষকে হেদায়েত দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে পড়েন কিংবা হিসেব ও বুদ্ধি বাৎলাতে দুর্বল হয়ে পড়েন। তিনি ক্লান্তি ও দুর্বলতার উর্ধ্বে, সেজন্য মানুষকে প্রয়োজন বোধে আবারও অধিক সংখ্যক কিতাব কিংবা নবী পাঠাতে কার্পণ্য করার কথা নয়। তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন আর কেউ নয়। ধর্মগ্রন্থ ঐশ্বরিক হলে সেগুলো মুখে মুখে, পাহাড়ের গুহায় কিংবা স্বপ্ন যুগে মানুষের কাছে চুপি চুপি আসার কথা নয়। মিথ্যে আসে চুপি চুপি, গোপনে, কিন্তু সত্য আসে প্রকাশ্যে ঢাকঢোল পিটিয়ে। ঐশীবাণী চুপিসারে এসেছিল বলে সেই সূত্র ধরে আজও দরিদ্র বিশ্বের জনগোষ্ঠীতে কত লোক স্বপ্নযুগে পীর-ফকিরি ও সন্যাসীগিরি পায়। পায় জীবনে “ভূতে ধরার” বা “ভুতের আছর” নামের সাইকিয়েট্রিক উদভ্রান্ততা। ক্ষুধা অভাব, হতাশা, ব্যর্থতা, অসুখ, পুষ্টিহীনতা ও শিক্ষাহীনতা এসবের জন্য দায়ী। ধর্মবাণী ঐ ভাবে চুপিসারে আসতে গিয়ে কত ছত্র ভঙ্গ হয়েছে। কত কথার তিলকে তাল করা হয়েছে। কত কথার কোন তাৎপর্য মিলেনি, কত মূল্যবান কথা হারিয়ে ও গেছে। আল্লাহর আরশে কালি কলম কিংবা কাগজের অভাব নেই, ভাষার ও অভাব নেই। তিনি তা প্রেরণ করলে ছাপার অক্ষরে স্বর্গীয় সম্পদের মতো প্রেরণ করতেন। যাতে করে তাঁর কথারও তাঁর সত্যের কোন অপলাপ না হয়, এবং তাঁর সৃষ্ট মানুষের মধ্যে নানান সন্দেহ ও যুক্তিতর্ক না হয়। হানাহানি ও রক্তপাত নিশ্চয়ই আল্লাহ ও মানুষের কাম্য নহে।
আল্লাহ কত জীবন উপকরণ, কত বস্তু ও প্রাকৃতিক সম্পদ আমাদের দান করেছেন চোখের সামনে। এগুলো দান করতে কোন নবী বা ফেরেশতার মাধ্যম প্রয়োজন হয়নি। অথচ ধর্মগ্রন্থ জীবনের জন্য অতীব প্রয়োজনীয় একটি সম্পদ হওয়া সত্বেও তা আসে গোপনে মানুষের মাধ্যমে। এ কেমন ব্যাপার ? কয়েক শতাব্দি থেকে পৃথিবীতে ধর্মগ্রন্থের দাবীদার জাতিগুলো যা করে যাচ্ছে তাতে ধর্মগ্রন্থ গুলো লজ্জায় মাথানত করে নিজ ইজ্জত নিয়ে চুপিসারে গায়েব হয়ে আল্লাহর আরশে আশ্রয় গ্রহণ করা উচিৎ। আর সেখানে আল্লাহর দরবারে এর (ধর্ম গ্রন্থের) প্রার্থণা করা উচিৎ যে,“হে আল্লাহ আমাকে তুমি হেদায়েত হিসেবে পাঠিয়ে ছিলে, কিন্তু পৃথিবীতে আদম জাতির পাপ আমি আর সহ্য করতে পারছিনা, আমাকে ক্ষমা করে মুক্তি দাও”। কিন্তু দুঃখের বিষয় ধর্মগ্রন্থগুলো ঐশ্বরিক নয় বলে গায়েব হচ্ছেনা দেখে আমার বিশ্বাস চুরমার হয়ে গেছে।
পাপ ও মহাপাপের যত রকম সংজ্ঞা বা ডেফিনেশন পৃথিবীতে রয়েছে,আদমজাত তা করেনি এমন কোনটি-ই আর বাকী নেই। পৃথিবীতে নানা রসহ্য ও বৈজ্ঞানিক সূত্রের বহু আবিষ্কার যেমন মানুষের চেষ্টার ফল, ধর্মগ্রন্থ তেমনি অতীত কালীন কিছু বুদ্ধিমান মানুষের চিন্তা শ্রম ও সাধনার ফল। যারা এযুগে পত্র পত্রিকায় খোদার দেওয়া ৩৬৫ দিন’ই বিভিন্ন বিষয়ে নিবন্ধ লিখে যাচ্ছেন বৎসরের পর বৎসর, তা তাঁদের দ্বারা কেমন করে সম্ভব ? মানুষ যখন কোন বিশেষ ব্যাপারে একাগ্রতা নিয়ে ধাবিত হয় তখন তাঁর দ্বারা তা সম্ভব। ঐ মানুষেরা রাস্তা দিয়ে দু’ঘন্টা হাটলে লেখার উপযোগী যত উপকরণ বা বিষয় বস্তু জোগাড় করতে পারবেন। কিন্তু আমাদের মত সাধারণ মানুষ তা এক বৎসরেও পারবেন না। সুতরাং অতীতে আধ্যাত্মিকতায় অতি আগ্রহী পীর পয়গম্ভরের এভাবে আধ্যাত্মিকতায় নিমগ্ন হয়ে একাগ্রচিত্তে মানুষের জন্য তৈরি করেছেন ঐশ্বরিক বাণী, তাতে মহা আশ্চর্য্য হওয়ার কিছু নেই। আজকের সামগ্রিক বিশ্বে আমরা যে মানব সভ্যতার চরম বিকাশ দেখতে পাই, তা’তে রয়েছে পৃথিবীর বহু জ্ঞানী গুণী মানুষের চিন্তা ও কার্যকলাপের সম্মিলিত ফসল। কোন কোন মানুষ কোন একটি ব্যাপারে সাধনা ও গবেষণা করতে গিয়ে তিলে তিলে জীবনকে করেছেন ক্ষয়। কারও কারও হয়েছে অপমৃত্যু, ক্ষুধা আর পথ্যের অভাবে তাঁরা ঝরেছেন ফুলের মত। অনেকের জীবন বলতে গেলে ল্যাবরেটরীর চার দেয়ালেই ছিল সীমাবদ্ধ। তেমনি বহু মানুষকে আমরা সাধারণ চাকুরিজীবী কিংবা সংসারী হিসেবে দেখেছি। কল্যাণ ও সমাজ পরিবর্তনের চিন্তায় এরা অনেক কষ্ট পেয়েছেন, আমরা কি কেউ এসব খবর জানি ?
সকলের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে যে মন্তব্য বা মতামত
তার জন্য সকলকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ
উত্তর পুরুষ
বাংলাদেশই তার উদাহরণ না? আমরা আদিবাসী/উপজাতি কাদের বলি?
আমাদের দেশে সংখ্যা লঘু সম্প্রদায় কারা? তাদের কি জন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসাবে গন্য করা হয়?
🙂
১০০% সত্যি!
বাংলাদেশে ৯০% হাজীই মনে হয় সারাজীবনের অবৈধ অর্থের(ঘুষ,চুরি,সুদ এসব)বৈধতার জন্যও হজ করে!
লেখাটাকি বাংলাদেশের হাজীদের নজরে পরবে!
একটা দেশ যখন ধর্ম ভিত্তিক হয় তখন অন্য ধর্মের লোক দিতীয় শ্রেনীর হয় । যা মানবতা বিরোধী । অনেক ভাল লাগছে দেখে । তবে বলার চেয়ে মাঠে নেমে পড়লে ভাল হয় না ? তর্কে বহুদূর ।
আসুন সবাই এক হয়ে দেশ গড়ি ।
@ASM KAWSAR,
একটা দেশ যখন জাতি বা ভাষাভিত্তিক হয় তখন কি অন্য জাতি বা ভাষার লোক দিতীয় শ্রেনীর হয়??
কিছু নাস্তিকও দেখি অনেক বেশি কট্টর।
@ASM KAWSAR, একটা দেশ যখন জাতি বা ভাষাভিত্তিক হয় তখন অন্য জাতি বা ভাষার লোক কি দিতীয় শ্রেনীর হয়?? বলার চেয়ে মাঠে নেমে পড়লে ভাল হয় ? কিছু নাস্তিকও অনেক বেশি কট্টর
যে যেভাবে খুশি, যেই ধর্মে খুশি বিশ্বাস স্থাপন করতে পারেন।যুক্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করতে গেলে ধর্ম-বনাম-আরেকধর্ম যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এতে কোনো ধর্মই জেতে না, বরং স্ব-স্বীকৃত আউলিয়ার প্রতাপে বহু মানুষের প্রাণ যায়।নাস্তিকতাকেও একটি স্বতন্ত্র ধর্ম বলা চলে; যে বিশ্বাস আপনার জীবনায়ন নির্ধারণ করে, বিশেষ ভাবে বলতে গেলে “যা” আপনাকে ধারণ করে, সেটাই আপনার ধর্ম। এই যুক্তিদ্বারা নাস্তিকের বিশ্বাস-ই তার ধর্ম।
নাস্তিক ব্যক্তিও উগ্রবাদী/মৌলবাদী হতে পারে উগ্র আস্তিক ব্যক্তির মত। ধার্মিকরা যেমন বলেন, ঈশ্বর আছেন, তেমনি নাস্তিকরা বলেন ঈশ্বর নেই। দুই পক্ষই তাদের অবস্থানে নিশ্চিত।
@shaibal,
নাস্তিকতা কোন বিশ্বাস নয়। নাস্তিকতাকে তাই ধর্মের মত করে বিশ্বাসের শ্রেনীবিভাগ বলে মানতে পারলাম না। নাস্তিক মানে হল অবিশ্বাসী। অর্থাৎ বিশ্বাস থেকে মুক্ত। আপনি বিশ্বাস করেন ঈশ্বরে। নাস্তিকরা আপনার বিশ্বাসকে ধারন করতে যাবে কেন? নাস্তিকরা এধরনের বিশ্বাস থেকে মুক্ত। ঈশ্বর ধারনাটি আস্তিকদের আমদানী। ঈশ্বর আছেন এই দাবী আস্তিকরা করার আগে নাস্তিকদের তো ঈশ্বর শব্দটি সম্পর্কে কোন কিছু জানবারই প্রশ্ন আসেনা।আসলে মোদ্দা কথায় বলতে হয় নাস্তিকরা সকল ধরনের যুক্তি প্রমান বিহীন বিশ্বাস থেকে মুক্ত। নাস্তিকতাকে তাই ধর্মের মত করে বিশ্বাস মনে করে ঐ শ্রেনীভুক্ত করা বিভ্রান্তিকর।
@মিঠুন, নাস্তিক ব্যক্তিদের “বিশ্বাস” অনুযায়ী, স্রষ্টা বলে কিছু নেই | একই সঙ্গে সর্বব্যাপী ও সর্বক্ষমতাময় কোনো স্বত্তার অস্তিত্তেও তাদের “বিশ্বাস” নেই | এক কোথায়, GOD এর অস্তিত্ব তারা স্বীকার করেনা|
:guru: যুক্তি দিয়ে ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা যতটা অগ্রহণযোগ্য, যুক্তি দিয়ে ধর্মকে আক্রমণ করার চেষ্টাও ততটাই অগ্রহণযোগ্য।
@shaibal,
তাহলে কোনটা গ্রহনযোগ্য????
পড়ে খুব মজা পেলাম।
ধন্যবাদ আপনাকে।
যাক সুন্দর একটি লেখা পড়লাম অনেকদিন পর।
আমার যা মনে হয় সামনা সামনি এই বিষয়ে আলোচনায় যত ভিটামিন সরাসরি পাওয়া যায়, লেখা পড়ে সেই টনিক পাওয়া যায়না।
কি সুন্দর একটি দৃশ্য, ধনীরা হজ্বের সময় গাড়িতে, প্লেনে চড়ে আতর সুগন্ধি লাগিয়ে যাচ্ছে, এদিকে মুজুর, শ্রমিক রাস্তার পাশে একটি ঝুড়ি কুদাল নিয়ে বসে মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, একটা কাজ, একটা কা… যদি আজ জুটে তাহলেই আজকের পেটের হিসাব চুকে যাবে। ঢাকার পান্থপথে একদিন ভোরে এই দৃশ্য দেখেছিলাম, যারা কাজ দিবে তারা এসে এসে বাছাই করে নিয়ে যায়, সবার কপালে কাজ জুটে না, তাই পেটে চাল ঢুকেনা, মুখ কুচকে যাওয়া, চোখ ঝুলে পড়া বৃদ্ধও লাইনে বসে ছিলেন, আর তার আগের দিন এক ব্যক্তি প্রতি বাড়িতে বাড়িতে ঘুরে ঘুরে দোয়া নিচ্ছে, সারাজীবনের পাপ মোচনের জন্য সে হজ্বে যাবে। অথচ ঐ দরি্দ্র পাপ পূন্যি বিচার করারও সময় পায়না, মাথায় ঘুরে শুধু পেটে দুনেলা ভাত…সন্তান। কত ঝামেলা…কত কষ্ট!!
আমার জানা মতে ইব্রাহীম (আঃ) যখন তাঁর স্ত্রীকে রেখে চলে যান তখন তাদের জন্য ঐ কাবা ঘর প্রাথমিক স্থাপত্য করেন, তার সন্তান আর স্ত্রীর জন্য। আবার ভাগ্য ক্রমে সেখানে পানির উতস থাকার দরুন ইব্রাহীম এক কাজ করলেন- যে সকল মানুষ ঐ মরু দেশ দিয়ে যেত পানি খাওয়ার জন্য ঐ স্থানে আসত, তখন ইব্রাহীম সবাইকে বললেন তোমরা এই ঘরের চার পাশে সাতপাক ঘুরো, আর মনের ইচ্ছা প্রকাশ করে যাও, তোমাদের মনের ইচ্ছা পুরোন হবে, এবং যাওয়ার আগে কিছু দান করে যেতে হবে। লোকেরা তাই করত। এইভাবে এই হজ্বের উতপত্তি। পানি খেতে আসত, সাথে কয়েক পাক মেরে কিছু দিয়ে যেত ইব্ব্রাহীম, তার সন্তান, স্ত্রীর জন্য। নয়ত ঐ মরু অঞ্চলে তাদের থাকা দুরুহ হয়ে যেত। আর ঐ পানিকে কেন্দ্র করেই মূলত বসতবাড়ি গড়ে উঠে ঐ স্থানে।
তবে ইব্রাহীম সত্যই জ্ঞানী ছিলেন। আর নবী (সাঃ) -ও কম ছিলেন না, তিনি তার ভূমিকে, দেশকে অর্থিক সচ্ছলতার দেয়ার জন্য রুপক এক গল্প করে মানুষকে আকৃষ্ট করলেন। এমন এক রুপক গল্প দিলেন সবাই পাগল হইয়ে দৌড় দিয়ে কাবা…।এই হজ্বের সময় তাদের পোয়া বারো।
যাইহোক ভাল লাগল।
ধন্যবাদ।
@Russell, বাহ্, বেশ বলেছেন তো। যাক একটা সুন্দর মন্তব্য পাওয়া গেল। :rose2:
হজে বা কাশি বানরসী গিয়ে পুণ্য হওয়ার চেয়ে কাশ্মীর, সুজারল্যান্ড ঘুরে আসুন মন পুণ্য হবে বেশী। মৃত্যুর পর তো স্বর্গ বা নরক দেখার সুযোগ নাই তাই জীবিত থাকতেই দেখে নেন। অবশ্য কাশ্মীর যেতে সাবধান একবারে স্বর্গ বাস হয়ে যেতে পারে। :guru:
@সুমিত দেবনাথ,
হুমম…
ভাই দুইটাইত স্বর্গের দেশের নাম কইলেন, নরক এর দেখার জন্য কই যাইব? সৌদি নিশ্চয়ই? 😀
@Russell,
ভাই আপনার নরকের দেশের নাম জাইনা কি হইব, আপনি তো আর নরকে যাইবেন না কারন আপনিতো জ্ঞানের উচ্চতম শীর্ষে আরোহন করে বসে আছেন। তবে হ্যা, আমাদের জানার দরকার আছে। নরক হইলো আমাদের জন্য যারা উচ্চতর জ্ঞানের সন্ধান এখনও পাই নাই। :-X
উত্তর পুরুষ
দারুন লিখেছেন :rose2:
কাষ্টহাসি নয়, সঠিক বানানটি হচ্ছে কাষ্ঠহাসি।
:yes:
ধর্ম এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মহামারী। প্রচলিত ধর্মগুলো যদি না থাকত তাহলে পৃথিবীর কতটুকু লাভ হত তা জানিনা, তবে ক্ষতির পরিমাণ যে অনেক কমে যেত তা জানি। যে ক্ষতি কমত তার নাম মানবতার ক্ষতি, মনুষ্যত্বের ক্ষতি। ধর্মের ধর্মই হল কিছু গৎবাধা বাণীর প্রচার যেগুলো যেকোন মানবিক মানুষ ধর্মগ্রন্থের সাহায্য ছাড়াই উপলব্ধি করতে পারে, এবং হাজারো বৈষম্য ও নানাবিধ অনাচারকে বৈধতা দেয়া। একমাত্র ধর্মের নামেই মানুষ বিন্দুমাত্র অনুশোচনায় না ভুগে অন্যায় করতে পারে এবং বাহবা পেতে পারে ঐ কাজের জন্য।
@লীনা রহমান,
:yes: :guru:
@লীনা রহমান,
ঠিক বলেছেন । আমরা কি পারবো না এই ব্যধি থেকে মুক্ত হতে? কারা পারবে জানিনা তবে আমরা পেরেছি। সবাই পারবে কিন্তু ততো দিনে কি আমরা পারবো আমদের মিথ্যাচারের জন্য যে ক্ষতি হবে তা পুষিয়ে নিতে?? :guru:
হজ্জের মত মহা আয়োজন না হলেও আমাদের টঙ্গীর বিশ্ব এস্তেমা অনেকটা একই ভুমিকা পালন করে। আচ্ছা কোনভাবে এমন ব্যবস্থা করা যায় না যে এস্তেমায় যোগ না দিলে কোন মুসল্লী বেহেস্তে যেতে পারবে না এমন ফতোয়া দেয়া ?
@ভবঘুরে, অসাধারণ বলেছেন।আমার মনে হয় সৌদি বাদশাদের সাথে যোগসাজশ করে এমন একটা ব্যবস্থা করা উচিত।আর সরকার পর্যটন শিল্প নিয়া বেহুদা মাথা গরম করতাছে।এর চেয়ে ভালো হইত যদি ধর্ম শিল্প নিয়া একটু মাথা গরম করত।আর দেশের সব পীর বাবাদের দরগা গুলোকে কোন না কোন ভাবে প্রমাণ কইরা দিতে হইব যে, নবী মোহাম্মাদ এই প্রসংগে ভবিষ্যত বাণী করেছিলেন।তাইলে দেখবেন দেশ টেকার উপরে কেমনে ভাসে!আর একটা কথা, শিবির কিন্তু এই রকম গল্প বানাইয়া সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী গো ব্রেন ওয়াশ করতাছে ইদানীং – নবী নাকি এই অঞ্চলে এই রকম একটা মুমিনদের দল গড়ে উঠবে বলে ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন!
@ইমরান মাহমুদ ডালিম,
:hahahee: :hahahee: :hahahee:
এই কথা কই বলছে শিবির? সেই পুরান নিয়মে ব্রেন ওয়াশের নয়া কাহিনী।
@লীনা রহমান, আমি যখন প্রথম প্রথম ভার্সিটিতে যাই শিবির আমাদের ব্রেন ওয়াশ করতো এগুলো বলে।আমার অনেক বন্ধুর ব্রেন ওয়াশ হয়ে গেছিল ওই সময়।আমার ব্রেন আগে থেকে ওয়াশ ছিল বলে ওদের ওয়াশে কোন কাজ হয় নাই।ওরাও বুঝতে পারছে আমার মত নাস্তিকের পিছে সময় নষ্ট করে লাভ নেই।মাঝে মাঝে থ্রেট দিত-এই করবে,সেই করবে।যাই হোক এখন শুনি যারা নতুন এসেছে তাদেরও নাকি এইভাবেই ওয়াশ করছে।
@ভবঘুরে,ভাল আইডিয়া। আমার তো মনে হয় ১০/২০ বছর পরে শুধু ফতোয়াই নয় , এমন হাদীস ও হয়তো বা পাওয়া যাবে।
@ভবঘুরে,
ভালো বলছেন ভাই। এই রকম করলে আমাদের আর চিন্তা করা লাগতো না।