বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত একটি যুগান্তকারী রায়ের মাধ্যমে আমাদের সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে স্বাধীনতা-উত্তর কালে রচিত সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ফিরিয়ে দিয়েছে। বহু বিলম্বে হলেও আমাদের উচ্চ আদালত একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। দু’যুগের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও নয় মাসের রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত যে সকল চেতনা বা মূল্যবোধ রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি হিসাবে সদ্য স্বাধীন দেশের সংবিধানে সন্নিবেশিত হয়েছিল, পঁচাত্তরের ১৫ ই আগস্টের অভূত্থানের পর ক্ষমতাসীন খন্দকার মোস্তাক এর উত্তরসুরী সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান সামরিক ফরমান বলে একে একে সে সকল মূলনীতি সংবিধান থেকে মুছে ফেলেছিলেন। সামরিক শাসকের এ সকল অবৈধ ও অসাংবিধানিক অপকর্মগুলোকে অক্টোবর, ১৯৭৯ ইং সালে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বৈধতা দেওয়া হয়েছিল। উচ্চ আদালতের রায়ের ফলে যেহেতু পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হয়ে গেছে, সেহেতু ঐ সমস্ত মূলনীতিগুলো আবার সংবিধানে সন্নিবেশিত হবে।
এ বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে বিতর্কের ধুম্রজাল সৃষ্টি করা হয়েছে স্বয়ং সরকারী দলের পক্ষ থেকেই- সংবিধান কি উপরোক্ত রায়ের ফলে স্বাভাবিকভাবেই আগের অবস্থায় ফিরে যাবে, নাকি বর্তমান সংবিধানকে পার্লামেন্টে সংশোধন করে আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিতে হবে। বিতর্কটা উদ্দেশ্যমূলক। তবে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে একটি বিষয় উপলদ্ধি করা যাচ্ছে, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলেন এবং যারা পঞ্চম সংশোধনীর বেনিফিসিয়ারী, তারা কেউই যেন উপরোক্ত রায়ে প্রসন্ন হতে পারেন নি। যারা পঞ্চম সংশোধনীর বেনিফিসিয়ারী বা সমর্থক-যাদের পূর্বসূরীরা এ সংশোধনী করে তাদের তাবৎ অপকর্মের সাংবিধানিক বৈধতা দিয়েছিল, তাদের প্রসন্ন না হওয়ার কারণ বোধগম্য। কিন্তু যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধ্ব্জা ধারী, তারা কেন প্রসন্ন হল না ?
কারণ সম্ভবত এই যে, প্রথমত: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যে সকল নীতিমালার মাধ্যমে প্রতিভাত হয়েছে, যেমন-সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ, ইত্যাদি, সে সকল নীতিমালা তারা এখন আর ধারণ করেন না। ফলত: আদালতের রায় তাদেরকে কেবল বিব্রত করে নি বরং এক অগ্নি পরীক্ষার মুখোমুখী করেছে। অগ্নিপরীক্ষা এ কারণে যে, হয় তাদের এ রায়ের বাস্তবায়নের মাধ্যমে তারা যে সত্যিকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক, তার প্রমাণ দিতে হবে, নতুবা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে তাদের প্রকৃত মুখোশ এবার উম্মোচিত হয়ে পড়বে।
এহেন পরীক্ষা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য মহাজোট সরকার পঞ্চম সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত আদালতের রায় বাস্তবায়নের জন্য একটি সংসদীয় কমিটি করে দিয়েছে। অথচ আদালতের কোন রায়, সে নীতিগত বা তথ্যগত, যে বিষয়ে হউক না কেন, তা বাস্তবায়নের জন্য নতুন করে আইন করার প্রশ্ন অবান্তর। আইনী দিক থেকে আদালতের রায় স্বত:স্ফূর্তভাবে কার্যকরীতা লাভ করে। বরং সংশ্লিষ্ট পক্ষ তদানুসারে কাজ না করলে আদালত অবমাননা হয়। এ ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা তাই। এখন সরকারকে যা করতে হবে, তাহল আদালতের রায় অনুসারে সংবিধানের সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করে দেওয়া। অবশ্য পঞ্চম সংশোধনী সংক্রান্ত মামলার রায়ের বহির্ভূত অপরাপর বিষয়ে সংবিধান সংশোধন করার এখতিয়ার সংসদের অবশ্যই রয়েছে। সেটা ভিন্ন বিষয়।
মজার ব্যাপার হল, সংবিধান সংশোধনে গঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দও এতদবিষয়ে এমন সব কথা বলছেন কিংবা মন্তব্য করছেন, যাতে ইতোমধেই জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে, আদৌ তারা আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক সংবিধানের মৌলচেতনায় ফিরে যাবেন কিনা। বিশেষভাবে সরকারের আইন মন্ত্রী সহ বিভিন্ন মন্ত্রী-উপমন্ত্রীরা বলা শুরু করেছেন যে, সংবিধানে বিসমিল্লাহ থাকবে। সে এক অদ্ভূত স্ববিরোধী কথা! কারণ প্রথমত: পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হলে সংবিধানের মৌলচেতনায় যদি ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরে আসে, তাহলে সংবিধানে বিসমিল্লাহ থাকে কিভাবে ? এ যেন সোনার পাথর বাটি ! তাছাড়া সামরিক সরকার যে ফরমানের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করে বিসমিল্লাহ যোগ করেছিলেন তাও তো পঞ্চমসংশোধনী অবৈধ ঘোষণার মাধ্যমে অবৈধ হয়ে গেছে। দ্বিতীয়ত: আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল প্রেরণা ছিল ধর্মীয় ইসলামী জাতীয়তাবাদের বিপরীতে বাঙালি জাতীয়তাবাদ, যার চরিত্র হল ধর্মনিরপেক্ষ। তাহলে আদালতের সুস্পষ্ট রায় পাওয়ার পরও বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনতে কেন গড়িমসি বা কূটচালের আশ্রয় নিতে চাইছে? সরকারের কোন কোন কর্তা ব্যক্তি বলছেন, মানুষের ধর্মীয় অনভূতির কথা চিন্তা করতে হবে। এটা হল ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার কথা।
আমরা জানি সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান এক সামরিক ফরমান বলে আমাদের সংবিধানে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” সংযুক্ত করেছেন। আবার একই উদ্দেশ্যে আরেক স্বৈরশাসক এরশাদ তার বিরুদ্ধে যখন গণঅসন্তোষ তীব্র হচ্ছিল, তখন জনগণের দৃষ্টি অন্যত্র ফিরিয়ে নেওয়ার কূটকৌশল হিসাবে অস্টম সংশোধনীর মাধ্যমে ইসলামকে রাষ্ট্র ধর্ম করার ঘোষণা প্রদান করেছিল। এটা জনগণের কোন সমস্যা বা দাবী ছিল না। বরং জনগণ সে সময় এটা নিয়ে কোন ভাবনাও করে নি। বরং ইতিহাসের মহাভাড় এরশাদ এ ঘোষণা দিয়ে জনগণনে সারপ্রাইজ দিতে চেষ্টা করেছিল। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কিংবা ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর এরশাদের যে ব্যক্তিচরিত্র জনসম্মুখে উম্মোচিত হয়েছে, তার মুখে ধর্মের জিগীর ছিল চুড়ান্ত ভণ্ডামী।
তাছাড়া রাষ্ট্রধর্ম বিষয়টিকে ন্যূনতম যুক্তির নিরিখে দেখলে একটি অবাস্তব ও হাস্যকর প্রপঞ্চ মনে হবে। রাষ্ট্র একটি সামাজিক সংগঠন-একটি সামাজিক বস্তু। তার কেন (উপসনা) ধর্ম থাকবে ? কোন বস্তুর কি কোন ধর্ম হয়? স্মর্তব্য যে, এ ধর্ম মানে উপাসনা ধর্ম (worship religion), properities অর্থে ধর্ম নয়। তাহলে রাষ্ট্রতো একটি নৈর্ব্যক্তিক সংগঠন-যা স্বর্গ কিংবা নরকে যাবে না। তাহলে তাকে কেন ধর্মীয় অভিধায় অভিসিক্ত করতে হবে? একমাত্র মানুষেরই থাকতে পারে ধর্ম-যার যার বিশ্বাস মতে এবং সে ধর্মমত সে প্রার্থণা করে পরলৌকিক মুক্তির প্রত্যাশায়। মানুষ ছাড়া হাজারো যে জীব ও উদ্ভিদ জগৎ এবং এর বাইরে সুবিশাল বস্তুজগত, তাদের কোন ধর্ম নেই এবং তারা কোন প্রার্থনাও করে না। তাই একজন হিন্দু মালিক পরম যত্নে যে গরুকে লালন-পালন করে এবং আহ্নিক পুজা দেয়, সে গরুই যখন মুসলিম মালিকের কাছে যায় সে তাকে জবাই করে কুরবান করে। এ গরু হিন্দু না মুসলিম সে প্রশ্ন যেমন অবান্তর, ঠিক তদ্রুপ রাষ্ট্রধর্ম অভিধাটিও অবান্তর-দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মপ্রাণ আমজনগণকে ধোঁকা দেওয়ার প্রয়াস বৈ কিছু নয়।
এটা ঐতিহাসিক সত্য যে, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তবে প্রশ্ন করা যায়, গুণগতভাবে সে আওয়ামী লীগ কি আজকের আওয়ামী লীগ?
দীর্ঘ দু’যুগ ধরে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি জনগোষ্ঠীর মানসে যে চেতনার অঙ্কুরোদগম ও বিকাশ ঘটে, যা সদ্যস্বাধীন দেশের সংবিধানে রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতিমালা হিসাবে সন্নিবেশিত হয়েছিল, তা হল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। কী সে চেতনা এবং কিভাবে তার উদ্ভব তার জন্ম ও বিকাশ তা একটু খোলাসা করা দরকার।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা : জন্ম ও বিকাশ
স্বাধিকার থেকে স্বায়াত্বশাসনের আন্দোলন-সে আন্দোলনের রক্তপিচ্ছিল সোপান বেয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উদ্ভব ও বিকাশ-চুড়ান্ত পর্যায়ে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ-মুক্তিযুদ্ধের সফল সমাপ্তির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যূদয়-এ হলো বাঙালীর স্বাধীনতা ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত পরিক্রমা-menifestaion of the history or Facts of the history.
কিন্তু সে রক্তাক্ত ইতিহাসের মর্মবস্তু ( Essence of the History) কি ?
এ প্রশ্নের উত্তরের মধ্যেই আমরা খুঁজে পাবো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
ধর্মীয় দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তানের জন্মের অব্যবহিত পরই বাঙালীরা বুঝতে পারল পশ্চিমা বেরাদারানে মুসলমানেরা বস্তুতঃ রাজনৈতিক ভাবে শাসন ও অর্থনৈতিকভাবে শোষণ করার জন্যই ধর্মকে নিছক বর্ম হিসাবে ব্যবহার করছে। তারা এতদাঞ্চলের মানুষকে কখনো স্বধর্মীয়, এমনকি স্ব-রাষ্ট্রীয় বলেও মেনে নিতে পারে নি। বাঙালীদের প্রতি তাচ্ছিল্যভরা উন্নাসিকতা পশ্চিমাদের আচার-আচরণে ও কথা-বার্তায় নগ্নভাবে ফুটে ওঠত। তারা পূর্ববাংলাকে তাদের একটি স্থায়ী উপনিবেশ ও এতদাঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে তাদের সেবাদাসে পরিণত করতে চেয়েছিল। ধর্মীয় ভাবাদর্শের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা রাষ্ট্র পাকিস্তানের পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী যখন ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বাঙালি মুসলমানদের উপর শোষণ চালাল, তখন এতদাঞ্চলের বাঙালী জনগোষ্ঠীর বোধোদয় হল যে, কেবল ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে একটি একক জাতি হয় না, জাতি গড়ে ওঠে তার নৃ-তাত্ত্বিক ইতিহাস, ভাষা ও সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে। এ বোধ থেকেই বস্তুত: নৃতাত্ত্বিক বাঙালী জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ঘটে। বস্তুতঃ ধর্মীয় জাতীয়তার ব্যাপারে তখনই তাদের মোহভঙ্গ হতে শুরু করে। যেদিন শ্চিমা শাসক গোষ্ঠী বাঙালী সংস্কৃতির উপর আঘাত হানার চেষ্টা করল, সেদিন থেকেই বাঙালী-হৃদয়ে জাতীয়তাবাদী চেতনার উম্মেষ ঘটতে থাকে। বাঙালীরা বুঝতে পারল-ধর্মভিত্তিক জাতি নয়, বাঙালী জাতি হিসাবে স্বকীয় পরিচয়ে তাদের আপ্রকাশ করতে হবে। বাংলা সংস্কৃতির বিরুদ্ধে পরিচালিত ষড়যন্ত্রের প্রেক্ষিতে নতুন করে বিতর্ক উঠল আমরা বাঙ্গালী না মুসলমান। ইসলামী তাহজীব তমুদ্দুন কি আমাদের সংস্কৃতি হবে, নাকি আবহমান কালের বিবর্তনশীল আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার সাথে গড়ে ওঠা লোকজ দেশাচার হবে আমাদের সংস্কৃতি। তখন পশ্চিমা মুসলমান ভাইদের রাজনৈতিক শাসন ও অর্থনৈতিক শোষনের বিরুদ্ধে বাঙালীরা ঐক্যবদ্ধ হলো-জাগো জাগো, বাঙ্গালী জাগো, তোমার আমার ঠিকানা- পদ্মা মেঘনা যমুনা প্রভৃতি শ্লোগান তুলে। তুমি কে, আমি কে, বাঙালী, বাঙালী স্বত:স্ফূর্ত এ শ্লোগানে প্রচণ্ডভাবে নাড়া দিল বাঙালীর জাতীয়তাবাদী চেতনায়। বলা বাহুল্য, মুষ্ঠিমেয় বাঙালী ছাড়া সমগ্র বাঙালী জাতি এ চেতনায় শুধু উজ্জীবিত ছিলনা, বিক্ষোভে বিদ্রোহে ছিল উদ্বেলিত। এ চেতনায় উদ্দীপ্ত হয়েই বাঙালী নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধে পাকিস্তানীদের পরাস্ত করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল।
অতএব বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদই হলো আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধের মূল প্রেরণা।
এ জাতীয়তাবাদী চেতনার মধ্যেই নিহিত আছে ধর্মনিরপেক্ষতার বীজ। ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদের বিপরীতে বিকশিত নৃতাত্ত্বিক জাতীয়তাবাদ বস্তুনিষ্টভাবেই ধর্মনিরপেক্ষ। কারণ এ পরিচয়ের ক্ষেত্রে ধর্ম কোন ভূমিকা রাখেনা-হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খৃষ্টান সব ধর্মের লোক মিলিয়েই বাঙালি নৃ-গোষ্ঠী। ধর্ম পরে এ নৃগোষ্ঠীর মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে। তাই ধর্ম আরোপিত-পরিবর্তনশীল। কিন্তু নৃতাত্ত্বিক জাতীয়তা জন্মগত এবং ফলত: অনপনেয়; অর্থাৎ যা কখনো মুছে ফেলা যায় না।
ধর্মভিত্তিক দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে অর্জিত স্বাধীনতার পর পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর জাতিগত শোষনের বিরুদ্ধে বাঙ্গালীর জাতীয়ভাবে প্রতিরোধের স্পৃহাই জাতীয়তাবাদী চেতনার উম্মেষ ঘটায়।
অতএব, শোষন থেকে মুক্তি তথা শোষনহীন সমাজ বিনির্মাণই মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম মৌল অনুপ্রেরণা। তাই স্বাধীনতার অব্যবহিত পর সমাজতন্ত্র আমাদের রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসাবে গৃহীত হয়েছিল।
বৃহত্তর পাকিস্তানী কাঠামোর মধ্যে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ। সুতরাং বাঙালীর স্বায়াত্বশাসন থেকে স্বাধিকার আন্দোলন ছিল মর্মগতভাবে সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠির শোষণ-শাসনের নাগপাশ থেকে সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠির অধিকার আদায়ের সংগ্রাম। ফলতঃ মর্মগতভাবেই এ আন্দোলন ছিল গণতান্ত্রিক।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি-আমাদের স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্যদিয়ে গড়ে ওঠা চেতনা ও মূল্যবোধগুলোই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হিসাবে বিকশিত হয়ে গণতন্ত্র,সমাজতন্ত্র,ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ প্রভৃতি চার মূলনীতি হিসাবে সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রের সংবিধানে গৃহীত হয়েছিল। স্বাধীনতার অব্যবহিত পর বস্তুত: মুক্তিযুদ্ধের ঐ সমুদয় চেতনা আমাদের রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি হিসাবে গৃহীত হলেও রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনে তখনো তার প্রভাব বা প্রতিফলন তেমনভাবে পরিলক্ষিত হয় নি। বরং যুদ্ধবিধ্বস্থ সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা একটি চুড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়েছিল। তারপরও যে কথাটি স্বীকার করতে হবে, তা হল, নীতিগত ভাবে আমাদের সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে রেখেছিল।
কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্টের সামরিক অভ্যূত্থানের পর ক্ষমতাসীন চক্র বিশেষ ভাবে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান তার সামরিক ফরমান বলে সংবিধানের মৌল নীতিমালা থেকে সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ প্রভৃতি নীতিমালাগুলো মুছে ফেলে এবং সংবিধানের এ সকল সংশোধনী সহ যাবতীয় সামরিক ফরমানকে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমেই চুড়ান্ত বৈধতা প্রদান করা হয়েছিল। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এবং পরবর্তী পর্যায়ে আপীল বিভাগ উক্ত পঞ্চম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে বাতিল করে দিয়েছে। ফলত: আমাদের সংবিধানে আদালতের রায়ের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সে মৌল নীতিমালাগুলো আবারো সংযোজিত হল। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান মহাজোট সরকার তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে ইচ্ছা করলে সংবিধানের এ মৌল চেতনাগুলো সংবিধান সংশোধন করেই ফিরিয়ে আনতে পারত।
কিন্তু স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ ও স্বাধীনতার সুদীর্ঘ প্রায় চার দশক পরের আওয়ামী লীগ কি আদর্শগতভাবে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে? তারা কি সত্যিকার অর্থে এখনো ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করে ? সংশয়-সংকটটি কিন্তু এখানেই।
বলাবাহুল্য সময়ের প্রবাহে আওয়ামী লীগ যেমন শোষণহীন সমাজের অঙ্গীকার থেকে সরে এসেছে, ঠিক তেমনি ক্রমান্বয়ে আপোষ করেছে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির সাথে। সস্তা ভোটের রাজনীতির জন্য মুক্তিযুদ্ধকালীন ধর্মনিরপেক্ষ আওয়ামী লীগ লা ইলাহা ইল্লালাহ-নৌকার মালিক তুই আল্লা- কেবল এ শ্লোগান মুখে তুলে নেয়নি, সদা সাদা টুপি পরিহিত আওয়ামী সাংসদরা যখন সংসদে বসেন, তখন জামায়াতে ইসলামীর সাংসদদের সাথে তাদের কোন পার্থক্য চোখে পড়ে না। ওয়ান-ইলেভেন এর পূর্বে খেলাফত মজলিশ এর সাথে ফতোয়া জায়েজ করা এবং ব্লাসফেমী আইন পাশ করা সংক্রান্ত আওয়ামী লীগের চুক্তির কথা আমরা এখানে স্মরণ করতে পারি।
তাই আজ আবার ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র প্রভৃতিকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীত হিসাবে গ্রহণে তাদের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব বা গড়িমসি কোন কৌশলগত কারণে নয়, আদর্শগত কারণেই।
কিন্তু এতদিন তাদের এ স্ববিরোধীতা তারা লুকিয়ে রাখতে সক্ষম হলেও আদালতের রায় এবার তাদেরকে এমন এক অগ্নি পরীক্ষায় নিক্ষেপ করেছে, যেখানে তাদের যে কোন এক দিকে পরিস্কার অবস্থানকে গ্রহণ করতে হবে-হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রত্যাবর্তন নয়তো মু্ক্তযুদ্ধের চেতনার মোড়কে মোড়া ধর্মনিয়ে রাজনীতি করার কূটকৌশল। এর কোন তৃত্বীয় অপশন আছে বলে মনে হয় না।
জানে আলম যথার্থই বলেছেন আওয়ামী লীগের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরে যাওয়া হবে বিষ পানসম । আঃলীঃ এর অবস্থা হয়েছে শ্যাম রাখি না কুল রাখি । বিগত পয়ত্রিশ বছরের লুটপাটে এবং মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামিক অর্থে এক বিরাট পুজির সৃষ্টি হয়েছে । উক্ত পুজি তার নিরাপত্তা চায় । পুজির নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন আইনের শাসন ও নির্ভেজাল গণতন্ত্র । তাছাড়া বাংলাদেশের পুজির আন্তর্জাতিক বিশ্বাসযোগ্যতা না থাকায় ব্যবসার আন্তর্জাতিক কোটা পেতে তাকে বেগ পেতে হচ্ছে । তাই ভারতের সহযোগীতা নিয়ে সাব-কন্ট্রাক্ট পেতে দেশী পুজি আগ্রহী । ভারতের অনাগ্রসর সেভেন সিসটারে নিজ পণ্য প্রেরনে পরিবহন ব্যয় অধিক । বাংলাদেশী পুজি উক্ত অঞ্চলে নিজ পণ্যের বাজার করতে আগ্রহী এবং দেশীয় অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বৃদ্ধি কল্পে ট্রানজিট দিতে প্রস্তুত ।
বিএনপি, লুটেরা শ্রেনীর দল, যার রাজনীতির দর্শন হলো ইসলাম ও ভারত বিরোধীতা এবং যে কোন উপায় ক্ষমতায় থাকা । তাই বিএনপির পক্ষে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং ভারতের সাথে বন্ধুত্ব করা সম্ভব নয় । ফলে পুজি আঃলীঃ এর উপর ভর করেছে । তাই পুজিকে অসন্তেষ্ট করে আঃলীঃ এর পক্ষে সমাজতান্ত্রিক আদর্শে ফিরে যাওয়া সম্ভব হবে না বলে মনে হচ্ছে ।
সংবিধান সংস্কার করে কি হবে যদি আওয়ামিলীগ তার কাজ কর্মে সেকুলার হতে না পারে আওয়ামিলীগের ধর্ম নিরপেক্ষতা অসাম্প্রদায়িকতার বুলি যে ফাঁকা কথা মালা তার আরেকবার প্রমাণিত হবে ঘটনা সত্য হলে
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব ও পুলিশের শীর্ষ পদে রদবদল করা হয়েছে। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন র্যাবের ডিজি হাসান মাহমুদ খন্দকার। র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে (চলতি দায়িত্ব) রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোখলেছুর রহমানকে। এছাড়া আইজিপি নূর মোহাম্মদকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগের জন্য তার চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়েছে। সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ অধিশাখা-১ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়। তবে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউই নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। তাদের সবাই পুরনো কর্মস্থলে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানিয়েছে, আজ দায়িত্ব হস্তান্তর ও গ্রহণপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। নতুন আইজিপি নিয়োগকে কেন্দ্র করে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। তিনজন অতিরিক্ত আইজিপিকে ডিঙিয়ে র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকারকে আইজিপির দায়িত্ব দেয়ায় এ অসন্তোষ। একটি অসমর্থিত সূত্র বলেছে, নতুন গ্রেডেশন তালিকার প্রথমে থাকার পরও অতিরিক্ত আইজিপি নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরাকে আইজপি না করায় তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে পারেন। নতুন আইজিপি নিয়োগের সংবাদ পাওয়ার পর তিনি সোমবার দুপুরে তার স্টাফ অফিসারকে নিজ কক্ষে ডেকে এনে ইস্তফাপত্র তৈরি করার জন্য নির্দেশও দিয়েছেন। এ ব্যাপারে গত রাতে যুগান্তরের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত আইজিপি নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ মুহূর্তে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরে সাংবাদিকদের ডেকে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলবেন বলে জানান।
এর আগে সোমবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র সচিব আবদুস সোবহান সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, খুব শিগগিরই নূর মোহাম্মদকে রাষ্ট্রদূত করে দেশের বাইরে পাঠানো হবে। ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নূর মোহাম্মদ আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। টানা তিন বছর সাত মাস তিনি পুলিশের এ শীর্ষপদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তার অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা ও দক্ষতায় এ সময়ে পুলিশ প্রশাসনে ব্যাপক গতি সঞ্চার হয়।
নূর মোহাম্মদ আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে ‘পুলিশ রি-ফর্ম প্রোগাম’ দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। পুলিশকে জনমুখী ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করাসহ সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন। পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করার এ উদ্যোগ আওয়ামী লীগ সরকারের একটি অংশ ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ না করায় সে সময় শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নূর মোহাম্মদ কিছুটা বিরাগভাজন হয়ে পড়েন। এ সময় সরকারের শীর্ষ প্রশাসন তাকে আইজিপির পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে আলোচনা শুরু করে। তবে পুলিশের সর্বস্তরে অসাধারণ ইমেজ নিয়ে সুদৃঢ় অবস্থানে থাকায় নূর মোহাম্মদকে আইজিপির পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে আসে।
সোমবার সকালে নূর মোহাম্মদকে আইজিপির পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার খবর প্রকাশ হওয়ার পর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের অনেকেই তার সঙ্গে দেখা করেন। স্বভাবসুলভ হাসিমুখে নূর মোহাম্মদ তার এ বদলির আদেশ মেনে নিয়ে বলেন, ‘আমরা সরকারের কর্মচারী। সরকার দেশের স্বার্থে যাকে যখন যেখানে উপযুক্ত মনে করবে তাকে সেখানেই পদায়ন করবে।’ অন্যদিকে নতুন আইজিপি হিসেবে র্যাবের ডিজি হাসান মাহমুদ খন্দকারকে নিয়োগ দেয়া হলেও সোমবার রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনি নতুন পদে যোগদান করেননি।
নয়া আইজিপির জীবনবৃত্তান্ত : হাসান মাহমুদ খন্দকার বিপিএম, পিপিএম, এনডিসি ১৯৮৪ সালে বিসিএস (পুলিশ) ১৯৮২ ব্যাচের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স শেষ করে তিনি ১৯৮৬ সালে এএসপি (সার্কেল) হিসেবে টাঙ্গাইলে তার পুলিশ জীবনের সূচনা করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (অতিরিক্ত), অতিরিক্ত এসপি সিলেট, এসপি (টাঙ্গাইল), ডিএমপির ডিসি (সাউথ/ওয়েস্ট), কেএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, প্রিন্সিপাল পুলিশ একাডেমী, পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (প্রশাসন), অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (ট্রেনিং), অতিরিক্ত আইজি স্পেশাল ব্রাঞ্চসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৭ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি বসনিয়া ও হারজেগোভিনায় তিন বছর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে এবং সারাজেভো জাতিসংঘ সদর দফতরে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়া তিনি যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ দেশে-বিদেশে বিভিন্ন পেশাগত কোর্সে অংশগ্রহণ করেন। তিনি মিরপুর ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এনডিসি কোর্স সম্পন্ন করেন। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, সুইজারল্যান্ড, হংকং, ওমান, নেপাল, মরক্কো, অস্ট্রেলিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান প্রভৃতি দেশে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সভা-সেমিনারে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন। পেশাগত জীবনে অসাধারণ ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তাকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সম্মাননা পদক বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) এবং প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেলে (পিপিএম) ভূষিত করা হয়। তিনি তার ব্যাচের একমাত্র কর্মকর্তা, যিনি একাধারে বিপিএম, পিপিএম পদকে ভূষিত হন এবং এনডিসির মতো সম্মানজনক কোর্স কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করেন। রংপুরের পীরগাছায় এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তিনি জš§গ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মরহুম খন্দকার আবুল হাসেমও একজন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। হাসান মাহমুদ খন্দকার দুই সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রী রুমাইসা সামাদ সমাজসেবী হিসেবে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন।
এ নিয়োগের পর গ্রেডেশন তালিকার প্রথমে থাকা অতিরিক্ত আইজিপি নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে পারেন বলে অসমর্থিত একটি সূত্র জানিয়েছে। দুপুর পৌনে ২টায় পুলিশের নতুন আইজি নিয়োগ ও বর্তমান আইজিপি নূর মোহাম্মদকে রাষ্ট্রদূত করার প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পরই জ্যেষ্ঠতার তালিকায় শীর্ষে থাকা অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা দ্রুত তার স্টাফ অফিসারকে নিজ কক্ষে ডেকে পাঠান এবং তাকে একটি ইস্তফাপত্র তৈরি করতে বলেন। এরপরই তিনি আইজিপি নূর মোহাম্মদের কক্ষে গিয়ে কুশল বিনিময় করে পুলিশ সদর দফতর ত্যাগ করেন। এরপর তিনি নিজ অফিসে আর ফিরে আসেননি।
জানা গেছে, পুলিশের সর্বশেষ গ্রেডেশন তালিকায় নূর মোহাম্মদের পরেই অতিরিক্ত আইজিপি বজলুর রহমান (বর্তমানে ওএসডি), অতিরিক্ত আইজিপি নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, অতিরিক্ত আইজিপি ফণীভূষণ চৌধুরী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত) ও অতিরিক্ত আইজিপি নাইম আহমেদের নাম রয়েছে। তাদের পর রয়েছে নতুন নিয়োগ পাওয়া আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকারের নাম।
পুলিশ সদর দফতরের একটি সূত্র বলেছে, যেহেতু আইজিপি পদটি একটি রাজনৈতিক পদ, সেহেতু এই নিয়োগ হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। অতীতেও এ ধরনের নিয়োগ দেয়ার নজির রয়েছে। সূত্র মতে, গ্রেডেশন লিস্ট অনুযায়ী নিয়োগ দিলে অনেকে ক্রমিক নম্বর অনুযায়ী আইজিপি হওয়ার কথা নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরার। কিন্তু বাংলাদেশে পুলিশের শীর্ষ পদটিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কখনোই গ্রেডেশন লিস্ট মেনে চলা হয়নি বলে ক্ষোভও রয়েছে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে।
@কালো ওঝা, সংবাদ আপডেটের জন্য ধন্যবাদ।
:yes:
এখন মনে হয় আওয়ামী লীগ আর আগের আদর্শ নিয়ে চলেনা।
আর বাংলাদেশের মানুষের মনোজগতে অনেক পরিবর্তন!
আগের আদর্শে চলেনা।
সংখ্যাগরিষ্ঠেরই এখন আর মুক্তিযুদ্ধকালীন আবেগ ও আদর্শ নেই!
আর রাজনীতিবিদরা ৯৫%ভাগই দূর্নীতিবাজ!
সবাইকে এগিয়ে নিয়ে যাবার মত নেতা বাংলাদেশে আদৌ কি জন্মাবে!
@লাইজু নাহার,
আপনি যদি যুক্তিবাদী হন তাহলে বস্তুর বিকাশ আপনার মানতে হবে। সে ধারায় সমাজের বিকাশ অনিবার্য। কোন ব্যক্তি নেতার অভাবে তা থেমে থাকবেনা।
@মোঃ জানে আলম,
কিন্তু সামাজিক বিকাশ নেতৃত্বের ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে ঘটতে পারে, যদি সমাজটি সেই স্তরের হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে নেতার অভাব সামাজিক প্রতিবন্ধার কারণ না হলেও লক্ষণ। লাইজু নাহার সম্ভবত সেটিই বোঝাতে চেয়েছেন।
আসল কথা হলো আওয়ামী লীগ হুজুরদের ধরে বিপদে পড়ে গেছে। চাপের মুখে আছে, বালির তলের তেলের অনেক জোর। তেলের কথা আমেরিকাও শোনে। অন্যদিকে বাংলাদেশের কি আছে? নারকেলের ছোবড়া? না, নারকেলের ছোবড়া তেলকে হারাতে পারবেনা।
তাছাড়া চোর ছাড়া এই দলটা দেশকে কবে কি দিয়েছে? অন্য দলগুলো তো আমি গোনার মধ্যেই আমি আনিনা। দেশ আওয়ামী লীগের কাছেই সবচেয়ে বেশী চেয়েছিলো, তবে জুতোর বাড়ি ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি। বাপের মতো হাসিনাও আজে বাজে কথা বলে চলেছে, আর আমাদের জ্ঞানীরা তাই শুনে লাফাচ্ছে। আপনি যদি এই জ্ঞানীদের একজন হয়ে থাকেন, তবে লাফাতে থাকুন, আপনার লাফানো এই দলটিই থামিয়ে দেবে।
দেশ শেষ। বাংলাদেশ আর কখনো উঠে আসবেনা। ইচ্ছে হয় স্বপ্ন দেখতে থাকুন, তবে সব স্বপ্নই এই দেশে দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দেয়। যারা আওয়ামী লীগকে এখনো সমর্থন করে, বা তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে, তারা অনেক আগেই অন্ধ হয়ে গেছে। তারা হয় ভন্ড মুজিবের অন্ধ ভক্ত, আর না হয় মুজিবকে চেটে আর মধু তোলার তালে আছে।
@আদনান,
না,আপনার মন্তব্য ব্যক্তিবিদ্বেষ প্রসূত। আপনি একজন নৈরাশ্যবাদী।আমি একাত্তুরের একজন মুক্তিযোদ্ধা।দেশ সম্পর্কে এখনো আশা ছাড়ি নি।
@আদনান,
আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু, হাসিনা এবং বাংলাদেশ নিয়ে যে কটু মন্তব্য করেছেন তা ভুল যায়গায় করেছেন। আপনার এটিচিউড ধরে আপনার সুরে এই ব্লগে পালটা জবাব পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। মন্তব্যটা অন্য কোন ব্লগে ছাড়ুন, উপযুক্ত জবাব পেয়ে যাবেন ইনশাল্লাহ।
তবে একটা কথা বলে রাখি। আপনি বলেছেন- দেশ শেষ। বাংলাদেশ আর কখনো উঠে আসবেনা।
মনে রাখবেন যতদিন একজন মুক্তিযোদ্ধা বেঁচে আছে, যতদিন একজন বাঙ্গালি বেঁচে আছে, ততদিন এই দেশ বাংলাদেশ হয়েই থাকবে।
আর হ্যাঁ, বিশ্বের সেরা ১০ নারীনেত্রীর তালিকায় শেখ হাসিনা ষষ্ঠ হয়েছেন দেখে মনে কোন দুঃখ নিবেন না।
@মোঃ জানে আলম,
লেখাটি খুবই সময়োপযোগী এবং পড়ে ভালো লাগলো।
এই ইচ্ছাটা আওয়ামী লীগ না করে পঞ্চম সংশোধনীকে সুপ্রীম কোর্টের দ্বারা অবৈধ ঘোষণার মাধ্যমে বাতিল করে দিয়ে মূল নীতিগুলোকে সংবিধানে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারটায় আওয়ামী লীগের উদ্যোগী হওয়ার কারন কি? এই দুটো পন্থার মধ্যে সুবিধা অসুবিধাগুলো কোথায় তা একটু আলোচনা করলে ভালো হয়।
@ব্রাইট স্মাইল্,
পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের ব্যাপারে বস্তুতঃ আওয়ামী লীগের কোন ভূমিকা ছিল না। মুন সিনেমা হলের মালিকের মামলার ফলশ্রুতিতে এ সংশোধনী বাতিল হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগ বেকায়দায় পড়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে।
@মোঃ জানে আলম,
তা হলে মূল নীতিগুলোকে সংবিধানে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারটায় আওয়ামী লীগের সদিচ্ছার অভাব আছে বলতে হবে। এটাই যদি হয় বর্তমানকার চিত্র তা হলে বাংলাদেশে আর কার কাছ থেকে বা কোন দল থেকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়িত করার আশা করতে পারি সেটাই হচ্ছে চিন্তার বিষয়।
সাবলীল, গতিময় লেখা — লেখার মানের কারণেই কয়েকবার পড়া যায়। লেখাটির বক্তব্যও একেবারে অব্যর্থ।
ইশশ! এমন ঠাস বুনুনি লেখা একতু গ্যাপ দিন পড়তে কষ্ট হচ্ছে।
@ মোঃ জানে আলম
অতন্ত্য সময় উপযোগী লেখা। আপনার সংগে আমি পুরোপুরি একমত। :clap2:
ভাল থাকবেন।
@এমরান,
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।