খালেদুর রহমান শাকিল, ঢাকা, বাংলাদেশ

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথা বাংলাদেশ ব্যাংক এখন চরম হুমকির মুখে। প্রায় ৫ হাজার কর্মীর এ অতীব গুরুত্বপূর্ন এ ব্যাংকটি এখন কয়েকজন নামধারী সন্ত্রাসীদের আদলে চলছে। খোদ ব্যাংক এর গর্ভনর ও জীম্মি এদের হাতে। প্রতিটি স্থানে চাদাঁবাজী, টেন্ডার বাজী, তদবীর সহ নানা অবৈধ কাজে লিপ্ত একদল কতিপয় ব্যক্তি যারা নিজেদের ব্যাংক কর্মকর্তার সজ্জায় গড়ে তুলেছে এমন একটি সক্রিয় মহল যা বিভিন্ন সরকারের আমলে জীবিত জোঁক এর মত রক্ত চুষে খাচ্ছে এদেশের অর্থনীতির থলি থেকে। কোন কিছুতে যেনো পরোয়া নেই। কোন সামাজিক নিরাপত্তা নেই ব্যাংক কর্মীদের। দেশের সবচেয়ে মেধাবী কর্মী বাছাই করে যে প্রতিষ্ঠানটিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশের অর্থ বাজার কে নিয়ন্ত্রন করে। অসহায় আজ প্রতিটি কর্মী। পেটের তাগিদে কর্ম করছে সকলেই। কিন্তু যদি তাদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না হয় তবে যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়তে পারে বাংলাদেশের অর্থ ব্যবস্থা। বিষয়টি তলবে নিবে কে? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রী না ব্যাংক গর্ভনর?

এমনি একটি অপ্রীতিকর ঘটনার আবির্ভাব ঘটে গত ১৮ই আগষ্ট বাংলাদেশ ব্যাংক এর বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের উপ-পরিচালক জনাব মো: সহিদার রহমানকে বেধরক মারপিট করে অজ্ঞান করে দিয়েছে সেই সকল সন্ত্রাসীরা। এতে সমগ্র অফিসে এক টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে এখনোও। উক্ত কর্মচারীকে সামাজিক ভাবে হেও করার পিছেনে মূল কারনটি হলো কিছু সন্ত্রাসী উগ্র সিবিএ নেতাদের চাদাঁবাজি ও দূর্নীতির তথ্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহতি করার দায়। ঘটনাটি ঘটে ৩০তলা ভবনের ১৪ তলায় বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপকের নিজস্ব কক্ষে। সিবিএ নেতা মঞ্জুরুল হকের নেতৃত্বে হাবিবুর রহমান সখা, সাদাত হোসেন সহ আরো ৬-৭ জন জনাব সহিদার রহমানকে মহাব্যবস্থাপকের নিজস্ব কক্ষে ডেকে নিয়ে তাকে দূর্নীতির তথ্য প্রদানের কারন জানাতে ধমকা দশকি করে। এক পর্যায়ে কথা কাটা কাটি শুরু করে সিবিএ নেতা মঞ্জুর জনাব মো: সহিদার রহমান এর শার্টের কলার ধরে ধাক্কা দিয়ে রূমের বাহিরে ফেলেন। এর পর ৬-৭ জন মিলে তাকে লাথি, ঘুসি সহ গজাড়ি লাঠি দিয়ে অমানবিক মারপিট করে। উপস্থিত সহকর্মীরা বহু চেষ্ঠা করেও তাদের এ অপ-কর্ম থামাতে ব্যর্থ হন। এক পযর্য়ে জনাব মো: সহিদার রহমান জ্ঞান হারিয়ে ফেললে উক্ত সিবিএ সন্ত্রাসী দল সেখান থেকে প্রষ্থান করে। পরবর্তীতে ডাক্তারের সহযোগীতায় র্দীঘক্ষন পর তার জ্ঞান ফিরে আসে।
উক্ত ঘটনায় খুব্ধ ব্যাংক কর্মকর্তাদের ভিতরে আগুন জলছে। এ বিষয়ে গর্ভনর মহোদয়কে লিখিত ভাবে অভিযোগ করলেও এখন পর্যন্ত তেমন কোন সক্রিয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ইতি মধ্যে সেই সব সিবিএ নেতারা বারংবার জনাব মো: সহিদার রহমানকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি প্রদান করে যাচ্ছে। এতে তিনি গত ২২/০৮/১০ ইং তারিখে মতিঝিল থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করেন।

সিবিএ নেতা ও তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী মঞ্জুর আতঙ্কে পুরো ব্যাংক এখন থম থমে অবস্থা বিরাজ করছে। কেউ তাদের বিরূদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। অফসার্স এ্যাসোসিয়েসনের একাধিক সুত্রে জানা গেছে, সিবিএ মঞ্জুরের ভয়ে কেহ মুখ খুলছেন না। এরি মধ্যে জানা গেছে এই সিবিএ নেতা যখন যে সরকার আসে তখন সে সরকার কে ম্যানেজ করে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে। যা এর পূর্বে তিনি জাতীয় পার্টির পরে বি এনপির আর এখন ঘোল পাল্টে আওয়ামীলীগ এর হয়ে কাজ করছে।

এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক এর কয়েকজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে জানিয়েছেন, এই সিবিএ নেতা নিয়ম বর্হিভূত বিভিন্ন অবৈধ কাজে লিপ্ত থাকে যেমন ব্যাংক লোন গ্রহনের সময় চাদাবাজি, ক্যান্টিনে চাদাবাজি, বিভিন্ন তদবির সহ আরো অনেক কিছু এমন কি তিনি খোঁদ গর্ভনর কে মোটেও পাত্তা দেন না শুধু তাই না সিবিএ নেতা হিসাবে তিনি গর্ভর্নর এর কাছ থেকে একটি গাড়ি তার ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য গ্রহন করেছিলেন। তবে তার বিরূদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ট্রেড ইউনিয়নের কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এর একজন সাবেক গর্ভনর বলেন এর আগে ব্যাংক সংস্কার কমিটি এবং অর্থ মন্ত্রনালয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ট্রেড ইউনিয়নের কার্যক্রম বন্ধের সুপারিশ করেছিল যা বেশিদূর গড়াতে পারেনি। আর এখানে বিশেষ ভাবে উল্লেথ যোগ্য যে, পৃথিবীর কোন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ট্রেড ইউনিয়ন এর উপস্থিতি নেই। আর এর সুযোগে কিছু অসাধু কতিপয় ব্যক্তি অবৈধ সুবিধা ভোগ করে ব্যাংক কার্যক্রমের স্বাভাবিক চাকা কে ব্যহত করছে। সরকারের এ বিষয়টির প্রতি বিশেষ গুরূত্ব দেওয়া উচিত।

ইতিপূর্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর গর্ভনর পদ থেকে বিদায় নেবার সময় ট্রেড ইউনিয়ন (সিবিএ) নেতাদের হাতে সাবেক গর্ভনর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, ড. ফকরুদ্দিন আহমেদ, ড.মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, লুৎফর রহমান সরকারকে অপ্রীতিকর অবস্থার মুখে পড়তে হয়। একই সঙ্গে সিবিএ নেতা মঞ্জুর এর নেতৃত্বে একদল নেতা কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর সাবেক মহাব্যবস্থাপক শামসুদ্দিনকে গর্ভনর এর রূমে বসে মারধর করে। ঘটনায় তিনজন সহ কয়েকজনকে সাময়ীকভাবে বরখাস্থ করা হয়। পরবর্তীতে তারা পুনরায় চাকরী ফিরে পেয়ে আরো আক্রনামত্নক হয়ে হঠেছে। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক এর প্রশাসন বিভাগের সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক জনাব রুহুল আমিন এর সঙ্গেও অশুভন আচারন করে তারা। কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করায় সাবেক ডেপুটি গভর্নর ড. সোহরাব উদ্দিনকেও নাজেহাল করেছিল তারা।

এতে যেকোন মুহূর্তে নিজের উপর নির্যাতনের সার্বক্ষনিক ভয়ে ভয়ে অফিস করছেন গোটা ব্যাংক কর্মচারী বৃন্দ। এমনি অবস্থায় সকল কর্মকর্তাবৃন্দের একটাই দাবি তাদের সামাজিক নিরাপত্তা ও অধিকার বাস্তাবয়ন করা এবং উক্ত সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর করা।

[email protected]