সমকামিতা নামে একটা বই লিখেছিলাম এবছরের বইমেলায় (২০১০)। প্রকাশক শুদ্ধস্বর। মোটেও মেইনস্ট্রিম বই নয়। আমি ভাবিনি বইটা কারো চোখে পড়বে। খুব যে পড়েছে তা নয়। পথিকের মতে তো বইটা নাকি ইচ্ছে করেই ‘ব্ল্যাক আউট’ করা হয়েছে! কারণ, বইটা এমন একটা স্পর্শকাতর বিষয়ে যে কোন মেইনস্ট্রিম পত্রিকাই এটি নিয়ে লেখালিখি করতে সাহস করবে না । তবে, আমার অবশ্য কখনোই মনে হয় নাই যে সে কারণে কোন লেখা আটকে দেয়া হয়েছে। যদিও পথিকের সন্দেহ করার পেছনে যুক্তিসঙ্গত কিছু কারণ আছে। সমকালের বিজ্ঞান বিভাগ কালস্রোতের দায়িত্বে নিয়োজিত আসিফ সাহেব একবার আমার একটা লেখা নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন শুনেছিলাম। লেখাটার শিরোনাম ছিলো – ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব কি সমকামিতাকে ব্যাখ্যা করতে পারে? তো ‘সমকামিতা’ নামটি দেখেই নাকি পত্রিকার প্রকাশক তা ছাপতে চাননি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য শিরোনাম পালটে লেখাটা ছাপা হয়েছিলো (দেখুন এখানে)। এমনকি বইটি প্রকাশের সময় সেটার খবরও ছেপেছিলো ভিন্ন একটি নামে (দেখুন এখানে)। তারপরেও আমার কখনো মনে হয়নি পত্রিকার সম্পাদকেরা সবাই এ ধরণের লেখা আটকানোর জন্য হন্যে হয়ে বসে আছে। আটকানো যদি হয়েই থাকে তবে সেটা বিষয়ের কারণে নয়, বরং লেখকের ছাই পাশ লেখার কারণে। আসলে আমার বই আর কে পড়বে, বলুন! আর পড়লেও সেটা নিয়ে আবার শক্তি আর সময়ের অপব্যবহার করে রিভিউ লিখবেই বা কে! আর লিখলেও সেটা যে ছাপা হবেই তারই বা কি গ্যারান্টি? আর আমি নিজেও খুব আইলস্যা প্রজাতির জীব। বই একবার বাজারে চলে আসার পরে আমি খুব একটা খোঁজ খবর আর রাখি না, কোথায় কি ছাপা নাপা হয়েছে, কে জানে? এবারো রাখতাম না যদি না আমার বইয়ের প্রকাশক শুদ্ধস্বরের আহমেদুর রশীদ (টুটুল ভাই) আমাকে ইমেইল করে খবরটা না জানাতেন। তার ইমেইল থেকেই জানলাম, প্রথম আলো পত্রিকায় নাকি বইটা নিয়ে কিছু একটা ছাপা হয়েছে। এটা অবশ্য আমার জন্য অবাক করা খবর। কারণ পত্রিকা জগতে প্রথম আলো একটু কুলীন বলে পরিচিত। তাদের নাক উঁচা। তারা নাকি যে সে বইয়ের রিভিউ প্রকাশ করে না। আমি প্রথম আলো একেবারে পড়িই না বলা যায়। আমার ধারণা তারা খুব ব্যবসায়ী গোছের পত্রিকা। শুনেছি তারা কাউকে চটিয়ে কোন ‘বিতর্কিত’ ধরনের জিনিস প্রকাশ করতে চায় না। কিন্তু আমার ভুল ভাঙ্গল। আজকে ইন্টারনেট সার্চ করে দেখলাম সত্যি প্রথম আলো গত শুক্রবার দিন (০৬-০৮-২০১০) আমার সমকামিতা বইয়ের রিভিউ করেছে,টুটুল ভাই খবরটা না জানালে লেখাটা আমার অজ্ঞাতই থেকে যেত বহুদিন-
অবগুণ্ঠন সরে গেল
আলতাফ শাহনেওয়াজ | তারিখ: ০৬-০৮-২০১০আলফ্রেড কিন্সে নামের আমেরিকার ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের এক অধ্যাপক একদিন ক্লাসে লেকচার দিচ্ছিলেন। সেদিন ধান ভানতে শিবের গীতের মতো ওই ক্লাস-লেকচারার আলোচনায় চলে গিয়েছিলেন বোলতার যৌনপ্রবৃত্তির দিকে। এবার শিক্ষার্থীদের আর উত্সাহের শেষ নেই। সেই সময়ের তরুণ শিক্ষকের দিকে তাঁরা ছুড়ে দিতে থাকলেন একটির পর একটি প্রশ্নবাণ। ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ে সে দিনের এই ঘটনা পরবর্তী সময়ে আলফ্রেড কিন্সেকে অনুপ্রাণিত করেছিল মানুষের যৌনবৃত্তি ও সমকামিতার কার্যকারণ উদ্ঘাটনের গবেষণায়। যেখানে বিজ্ঞানের আলোয় মানুষের শরীর বৃত্তির অনুভূতি, যৌনতা এবং সমকামিতার মনস্তাত্ত্বিকভাবে ব্যাখ্যা করলেন তিনি। শুরু হলো এ বিষয়ে সূত্রাবদ্ধ আলোচনা। জানার জন্য এই তথ্যগুলো কারও কাছে হয়তো দরকারি হতে পারে। আবার না জানা থাকলেও তেমন ক্ষতি হবে না অনেকেরই। তবে কথা হলো, যে বিষয়ে মাথা খোঁজার জন্য এত কান টানাটানি, এত ভণিতা এবং যে পুস্তকের মাধ্যমে আলফ্রেড কিন্সের ইতিবৃত্ত জানা গেল, তার নাম ‘সমকামিতা’, লেখক অভিজিত্ রায়। বইয়ের মলাটে লাল কালিতে লেখা ‘সমকামিতা’ শব্দের পাশে উত্কীর্ণ হয়েছে ‘একটি বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান’—এই শব্দাবলি। ফলে বইয়ের শিরোনাম থেকে স্পষ্ট হয়, সমকামিতাকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির নিরিখে বোঝাপড়া করাই পুস্তকটির অভিপ্রায়। ভূমিকা অংশে লেখক আগে ভাগে জানিয়েও দিয়েছেন সেই কথা। মোট ১০টি অধ্যায়ে শেষ হয়েছে লেখকের অনুসন্ধান—‘প্রকৃতি ও সমকামিতা’, ‘রূপান্তরকামিতা আর সমকামিতার জগত্ ‘উভলিঙ্গত্ব’, ‘গবেষণার রুদ্ধ দুয়ার খুললেন যাঁরা’, ‘সমকামিতা কি কোনো জেনেটিক রোগ’-এর এ রকম নানা শিরোনামের অধ্যায়ে সমকামিতা নামের প্রপঞ্চটিকে ওপর-নিচ থেকে ভেঙেচুরে দেখার চেষ্টা আছে বইটিতে।
এ ক্ষেত্রে বলা ভালো, আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে সমকামিতা প্রপঞ্চটি গুণবাচক কিছু নয়। কিন্তু মানুষের যৌনবৃত্তি এবং আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে এর যোগসাজসের তল খোঁজার চেষ্টাও নিশ্চয় দুষ্কর্ম নয়। আলোচ্য বইয়ের ছত্রে ছত্রে তারই নজির বিদ্যমান। যেমন সমকামিতার পূর্বাপর তালাশের সঙ্গে সঙ্গে এখানে অভিজিত্ রায় দেখিয়েছেন ছেলে ও মেয়ের মস্তিষ্কের মধ্যে গঠনগত ভিন্নতা রয়েছে। ফলে তাদের প্রবণতাও বিভিন্ন হতে বাধ্য। এর পরষ্পরায় ছেলেমেয়ের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করেছেন তিনি গোটা বিশ্বের এন্তার সমীক্ষা হাজির করার মাধ্যমে।
আবার মানুষের পাশাপাশি প্রাণিজগতের সমকামিতা বিষয়ে ব্যাখ্যান আছে এ গ্রন্থে। অন্যদিকে এই প্রপঞ্চ সম্পর্কে বিভিন্ন ধর্মের দৃষ্টিভঙ্গি কিরূপ, তার খোঁজও মেলে। সেক্সের সঙ্গে জেন্ডারের সম্পর্ক এবং পার্থক্য, সমাজের সঙ্গে এর রিস্তা-বহু বিচিত্রভাবে সমকামিতার স্বরূপ বিশ্লেষিত হয়েছে বইটিতে। তত্সঙ্গে সেক্সচুয়ালিটি বা যৌনতার খোলনলচেকে যথাসম্ভব পরিচ্ছন্ন করে ব্যবচ্ছেদ করার দিকেও অভিজিত্-এর অভিমুখ। তাঁর ভাষ্য যেমন সেক্স বিষয়টি পুরোপুরি শরীরের ওপর নির্ভরশীল তেমনি জেন্ডার কিন্তু নির্ভর করে সমাজের ওপর। … ‘মেয়েলি’ বা ‘পুরুষালি’ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে জেন্ডার প্রপঞ্চকে যুক্ত করা হয় যেখানে নারী বা পুরুষের লিঙ্গীয় বৈশিষ্ট্যকে ছাপিয়ে স্বভাব-আচরণ ইত্যাদি বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য ও প্রকাশ পায়।
আলতাফ শাহনেওয়াজের সাথে আমার কোন ব্যক্তিগত যোগাযোগ নেই। কিন্তু তিনি যে আমার বইটি পড়ে একটি চমৎকার শিরোনাম দিয়ে ছোট কিন্তু সুন্দর একটি রিভিউ করেছেন, তার জন্য আমি সত্যই কৃতজ্ঞ।সেই সাথে প্রথম আলোকেও ধন্যবাদ দিতে হয় – কারণ, তারা এই রিভিউটি প্রকাশ করেছেন তাদের পত্রিকায়।
শুনতে পাই, বইটি নাকি ‘সুধীজনের একটু আধটু দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে’। সামনে নাকি আরো কিছু রিভিউ বড় আকারে পত্রিকায় ছাপা হবে। যদি হয়, তবে এখানে এমনিভাবে পাঠকদের জানিয়ে যাব ভাবছি। অবশ্য আমি যদি সৌভাগ্যক্রমে সেটা জানতে পারি কখনো!
৮ম ও ৯ম অধ্যায় কি পাবো ?
বইয়ের জগৎ নামে একটি পত্রিকা বের হয় আহামাদ মাযহারের সম্পাদনায়। বেশ ভাল পত্রিকা। প্রতিবছর যে সমস্ত ভাল ভাল বই বের হয়, তার থেকে নির্বাচিত কিছু গ্রন্থের সমালোচনা থাকে এতে। গ্রন্থ সমালোচনামুলক পত্রিকা কলকাতা থেকে একটা বের হয় – বইয়ের দেশ নামে। বাংলাদেশে তেমনই একটি পত্রিকা শুরু করেছেন আহামাদ মাযহার।
গত বছর দেশে যাবার পর বইয়ের জগৎ পত্রিকাটির খবর পাই। প্রথম সংখ্যাটিতে (প্রথম সংকলন, নভেম্বর ২০০৯) বন্যার বিবর্তনের পথ ধরে বইটির চমৎকার রিভিউ ছাপা হয়েছিলো। রিভিউটি করেছিলেন সাজিদ রাজ্জাক।
এবারের বইয়ের জগৎ সর্বশেষ সংখ্যাটিতে (চতুর্থ সংখ্যা) আমার সমকামিতা বইটির একটি রিভিউ ছাপা হয়েছে। রিভিউটি করেছেন অঞ্জন আচার্য। প্রথম আলোর রিভিউটি পড়ে ফরিদ ভাইয়ের যে খেদ জন্মেছিলো, এই রিভিউটি পড়ে তার সেই খেদ থাকবেনা বলে আমার ধারণা , পড়ুন তাহলে –
অঞ্জন আচার্যের রিভিউটি রাখা আছে এখানে।
খুবই ব্যালেন্সড এবং মানোত্তীর্ণ রিভিউ মনে হয়েছে আমার। আমার সমকামিতা বইটির প্রশংসা তো আছেই, কিন্তু সেই সাথে কিছু দুর্বলতার কথাও বলেছেন তিনি (সবগুলোর সাথে আমি একমত নই যদিও)। কিন্তু রিভিউ হিসেবে সত্যই দারুণ। ফরিদ ভাই কি কন?
অঞ্জন আচার্য আগেও যুক্তি পত্রিকাটির রিভিউ করেছিলেন বিভিন্ন পত্রিকায়। তিনি সত্যই আমাদের বইগুলোকে আক্ষরিক অর্থেই মানুষের দুয়ারে পৌঁছিয়ে দেয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন যেন!
আর রিভিউটা বইয়ের জগৎ থেকে স্ক্যান করে তিনি এবং রামগড়ুড়ের ছানা প্রায় একই সময়ে আমাকে ইমেইল করেছেন। দু-জনকে সেজন্য আবারো ধন্যনাদ জানাচ্ছি।
খবরটা পেয়ে ভালো লাগলো খুব। শুভেচ্ছা।
ও হরি, প্রথম আলোর একি ভীমরতি আমরা দেকতিছি। কলিকাল বুঝি আইসেই পইড়ল। রাম রাম রাম রাম। 😀
@সাইফুল ইসলাম,
ছিঃ এইভাবে বইলেন না। শোনেন নাই,
যা কিছু ভালু, তার সাথে প্রথম আলু!
প্রথম আলোর জয় হোক!
অভিদা এই বইয়ের পরিশিষ্টও কি…………
প্রতি বইমেলায় অভিদার কাছ থেকে বই দাবি করছি।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
মিয়া তোমার দেখি স্বভাব খারাপ। বই থুইয়া খালি পরিশিষ্টের দিকে নজর ক্যান? 🙂
ভাল টার্গেট। তবে, চাইলেই তো হইব না, আমার ছাইপাশ কারো ছাপাইতেও তো হবে।
ঢং! 😀
আমার কাছে বইটা আছে। সন্দেহজনক বই আমি প্রথম সুযোগেই কিনে ফেলার চেষ্টা করি। সন্দেহ মানে আর কখনো পাওয়া যাবে কিনা, এমন সন্দেহ থাকলে আর কি। রিভিঊটা কেমন হয়েছে বুঝতে পারছিনা, কারন বইটা এখনও পড়া হয়নি। আশা আছে এবছরের মধ্যে পড়ে ফেলার।
তবে আসলেই মজার ব্যাপার যে ‘প্রথম আলো’ রিভিউটা ছেপেছে। এখন অনেকেই বইটার ব্যাপারে আগ্রহবোধ করবে। এটা অবশ্যিই ভাল দিক।
অভিদা কে অভিনন্দন জানাবার কিছু নেই। অভিনন্দিত হবার কাজ তিনি করেছেন বইটা লিখে শেষ করার সাথে সাথেই, বরং ‘প্রথম আলোকে’ অভিনন্দন।
অভিজিৎ,
আমি পাঠক হিসেবে এত খারাপ না যে অভিজিৎ এর আবারও এমন sensitive ( আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে অবশ্য) বিষয় নিয়ে পড়ব না।
যাহোক, আপনি দেশে আসলে জানাবেন। একটি নারী সংগঠন থেকে সমকামিতা নিয়ে একট মুক্ত ফোরামের আয়োজন করব।
প্রথম আলো’র মতো পত্রিকা যাদের বিজ্ঞান পাতা অনেকসময় মাসে একবারও প্রকাশিত হয়না,আবার ছাপা হলেও যেখানে বিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়বলী ঘুণাক্ষরেও প্রকাশিত হয়না, সেখানে তারা যে রিভিউটি ছাপিয়েছে তাতেই আমি খুশি।
রিভিউ পড়ে মনে হল তা যেন মাঝখানেই শেষ হয়ে গেছে।হয়তো বা পুরো লেখাটা ছাপা হয়নি।
:yes:
অভিজিৎ,
জাতিসংঘের সদস্যভূক্ত প্রতিটা দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য ২০০৭ সাল থেকে শুরু হয়েছে ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ ( ইউ পি আর)ব্যবস্থা। এই ইউ পি আর ব্যবস্থার আওতায় ২০০৯ সালের ফেভ্রুয়ারি মাসে জেনেভাস্থ জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। বাংলাদেশ সরকারের পাঠানো রাষ্ট্রীয় প্রতিবেদন, বেসরকারী সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদন এবং জাতিসংঘ কর্তৃক সঙ্কলিত তথ্যের ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত এই পর্যালোচনা শেষে বিভিন দেশ বাংলাদেশকে ৪২টি বিষয়ে সুপারিশ করে। ফেভ্রুয়ারির অধিবেশন থেকে প্রাপ্ত সুপারিশগুলো বিচার বিবেচনা শেষে ২০০৯ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত ইউ পি আর অধিবেশনে ৪২টি বিষয়ের মধ্যে দুটি বিষয় ( মৃত্যুদন্ড বিলোপ ও সমকামিতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য না করা) ছাড়া ৪০টি বিষড়ে সপারিশ গ্রহণ করে ও সে অনুযায়ী কাজ করা অঙ্গীকার করে বাংলাদেশ।
কাজেই
নিয়ে সহমত পোষণ করছি।
আর আপনার কথা
নিয়ে দ্বিমত পোষণ করছি। বিষয়টিকেই মেইনস্ট্রিম করার জন্য বাংলাদেশের নারীবাদী আন্দোলন লড়তে চাচ্ছে। এ বইটিই অদূর ভবিষ্যতে অনেক কাজে লাগবে।
@গীতাদি,
বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সন্নিবেশিত করেছেন মন্তব্যে। অনেক ধন্যবাদ। জেণ্ডার স্টেরিওটাইপিং নিয়ে বেশ বড় সড় আলোচনা আছে আমার বইয়ে, আমি জানিনা আপনি দেখেছেন কিনা। বিষয়টিকে মেইনস্ট্রিম করার জন্য বাংলাদেশের নারীবাদীরা যে আন্দোলন করছে, তাতে যদি বইটি সামান্যতম অবদানও রাখতে পারে তাহলে ধন্য মনে করবো।
ভাল থাকুন।
প্রথম আলো যে নানাবিধ ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত এ তো প্রায়ই শোনা যায়।
আরেকটি বড় প্রমান পাওয়া গেল 🙂 ।
@আদিল মাহমুদ,
এক্কেবারে ঠিক কথা! 😀
@অভিজিৎ,
আমাদের আদিল মাহমুদ নিজেই গোয়েন্দা বিভিগের লোক নন তো! :-/ ইয়েলোস্টোনের ভ্রমন কাহিনীতে একজন ওনাকে সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হতে বলেছিলেন! সামরিক গোয়েন্দাও হতে পারেন! বিচিত্র কিছু নয়! নীচে গীতা দাসের মন্তব্য দেখুন! কাজেই আপনি নিজে আর প্রথম আলো দুজনেই সাবধান হোন। দিনকাল সুবিধার মনে হচ্ছে না!
@কেশব অধিকারী,
ঠিকই বলছেন। আদিল মাহমুদ লুকটারে আমি এইজন্যই কখনো ভালু পাই না। 🙂
অভিজিতের বই এর ওপর আলোচনা যেদিন বেরোল সেদিনই পড়েছি (আমি প্রথম আলো পড়ি)। “অবগুন্ঠন সরে গেল” শিরোনামটা খুব ভালো লেগেছে, তবে আলোচনাটা অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে। সত্যিই অভিজিৎ অনগুন্ঠন সরিয়ে দিচ্ছেন আমাদের মত চিন্তায় পিছিয়ে থাকা সমাজের। অভিকে অভিনন্দন।
খুব আনন্দ পেলাম।তোমার বই সম্বন্ধে মানুষ আর জানুক। আর পড়ুক।আন্ধকারকে আলকিত করুক।
@সেন্টু টিকাদার,
অনেক ধন্যবাদ, সেন্টুদা। আপনি ইমেইল চেক করেন। মডারেটরের পক্ষ থেকে আপনাকে ইউজার আইডি পাঠানোর কথা। পেয়েছেন কিনা জানান দিয়েন। এর পর থেকে নিজেই লেখা দিতে পারবেন, আর লগ ইন করে মন্তব্য করলে সাথে সাথেই প্রকাশিত হয়ে যাবে। দেখেন মেইল গিয়েছি কিনা আপনার একাউন্টে।
@অভিজিৎ,
ভাই অভিজিৎ, তোমার, বন্যার এবং সবার লেখাই পড়ি। মুক্তমনার অনেক বড় বড় লেখকদের লেখার মত তোমাদের লেখাও মাঝে মাঝে খুব কঠিন লাগে। তাই মাঝে মাঝে তোমাদের profound technical ও scientific লেখাগুলিতে মন্ত্যব করতে সাহস পাই না। জানইত আমার বিদ্যার শিমানা ।
তোমার লেখা বই সমকামিতা পঃবাংলা থেকেও প্রকাশিত হওয়া দরকার। মনে হয় পঃবাংলায় এই ধরনের বই ওখানের কেউ লেখেনি বা প্রকাশ করেনি।
আমার সাথে মাঝে মাঝে ফোনে কথা হয় কোলকাতার কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউজের পাশে Mahabodhi Book Agency র মালিকের ছেলের সাথে। ওঁর নাম Jayadewa । ওঁরা বই প্রকাশ করে। কিছুক্ষন আগেও তোমার নাম করে কথা বল্লাম।
তুমি যদি চাও তো কথা বলতে পার।
ওফিস ইমেল [email protected]
ইয়াহু মেল চেক করেছি। পেয়েছি। ধন্যবাদ।
সমকামিতা ব্যপারটি যতই প্রাকৃতিক হোক, মানব সমাজে এর বৈধতা আমার কাছে যৌক্তিক মনে হয় না। অনেকের কাছে গ্রুপ সেক্স ভাল লাগে, আবার অনেক ভাই বোন নিজেদের মাঝে আকর্ষণবোধ করে। বিবর্তনীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে গেলে এরও কোন কারণ বেরিয়ে আসবে। তাই বলে এসবের বৈধতা দেয়া সামাজিক কারণেই অযৌক্তিক। আগে দেখা যেত অনেকে ছেলে বন্ধুর কাধে হাত রেখে বা জড়ায় ধরে বসে থাকতো। ইদানিং এরকম কিছু ঘটতে দেখলে অনেকে বলে দূরে যা! গে নাকি! অথচ সেরকম কোন মানসিকতাই অনেকের মাঝে নেই। বইটি আমি পড়িনি। তাই বলতে পাড়ছিনা এটি কি মেসেজ দিতে চাচ্ছে।
@আনাস,
মানব সমাজে এর বৈধতা দেয়া হবে কি হবে না, সেজন্য বইটা লেখা হয়নি, লেখা হয়েছে মূলতঃ যৌনপ্রবৃত্তির ডাইভার্সিটি ব্যাখ্যা করতে, এবং সমকামীদের প্রতি একটা সহিষ্ণু মনোভাব যাতে আমাদের দেশে গড়ে উঠে, অযথা সমকামী শুনলেই হেনস্তা না করা হয় সেই দৃষ্টিকোন থেকে লেখা। শুধু সমকাকিতা নয়; সেই সাথে রূপান্তরকামিতা এবং উভলিঙ্গত্ব নিয়েও দীর্ঘ পরিসরে আলোচনা হয়েছে আধুনিক বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন থেকে। আর মূলতঃ সমানাধিকারের এবং মানবাধিকারের প্রশ্নে। আমি নিজেও সমকামী নই। উপরে যারা মন্তব্য করেছেন তাদের অনেকেই হয়তো আপনার মতোই সমকামিতা পছন্দ করেন না। কিন্তু সেজন্য তো অধিকার দিতে কার্পন্য থাকা উচিৎ নয়। আপনি কিংবা আপনার মত অনেকেই (এটা কেবল আমি কথা প্রসঙ্গে ধরে নিচ্ছি) সম্ভবতঃ বিয়ের আগে নারী পুরুষে যৌনাচারও পছন্দ করবেন না । কিন্তু তা বলে নিশ্চয় ‘জেনা’ করার অপরাধে ইসলামী দেশগুলোতে যেরকম হয় – শরিয়ত মোতাবেক পাথর ছুঁড়ে হত্যাকেও সমর্থন করেবন না, তাই না? এটি নিষ্ঠুরতা। আমাদের যত অপছন্দই হোক, আধুনিক গণতান্ত্রিক আইনকানুন এবং মানবাধিকারের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তে আসা উচিৎ। সমকামীদের আপনি পছন্দ না করতে পারেন, কিন্তু তারা আপনার কোন বাড়াভাতে ছাই দেয়নি। তাদের নিজেদের পছন্দ অভিরুচি নিয়েই আছেন। কিন্তু সেজন্য তাদের হত্যা করা, তাদের উপর রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাস করা নিশ্চয় গ্রহনযোগ্য কিছু নয়। সমকামীরা আজকের বিশ্বে সংখ্যালঘু, খুব প্রকটভাবেই সংখ্যালঘু। আমাদের মত দেশ গুলোতে তো বটেই, সাড়া বিশ্বেই মোটামুটি তাদের অবস্থা সংকটাপন্ন। তাদের গায়ে ‘বিকৃত রুচির’ তকমা এঁটে দেয়া তো হচ্ছেই, অনেক দেশেই তাদের দাঁড়াতে হচ্ছে আদালতে। অভিযুক্তদের ওপর ক্রমাগত এবং যত্রতত্র চলছে নির্যাতন। কখনোবা রাষ্ট্রীয়ভাবেই দেয়া হচ্ছে মৃত্যুদন্ড কিংবা নির্বাসন। খোদ ইরানেই ১৯৭৯ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৪০০০ ব্যক্তিকে সমকামিতার অযুহাতে হত্যা করে হয়েছে। ইরাকে সমকামী দেখলেই রাস্তায় পিটিয়ে হত্যা করা হত কিছুদিন আগেই। এই মধ্যযুগীয় চিন্তা ভাবনা আপনি যদি সমর্থন না করেন, তবে এর বিরুদ্ধে আপনাকে দাঁড়াতে হবে।
আমার বইটা সমকামিতাকে উৎসাহিত করা কিংবা বৈধতা দেয়ার জন্য লেখা নয়, লেখা হয়ছে মানবাধিকারের দৃষ্টিকোন থেকে। আমার অনুরোধ বইটা আপনি পড়ুন।
@আনাস,
সমকামিতা ব্যপারটি যদি প্রাকৃতিক মনে করা হয় তাহলে কেউ এর বৈধতা দেয়ার প্রশ্নটি অবান্তর। প্রাকৃতিক কারনেই সমকামিতার জন্ম হয়। এতে কারো কোন হাত নেই। আমি মনে করি সম্পুর্ন মানবিক কারনে এবং যুক্তিসংগতভাবেই অন্যান্য সবাইর মতো সমাজে তারা বৈধ।
@ব্রাইট স্মাইল্,
অভিদা আর আপনাকে একই সাথে নিজের অবস্থানটা ব্যাখ্যা করছি। অবশ্যই মধ্যযুগীয় এসকল বর্বর শাস্তির বিপক্ষে। অনেক দেশে আজ মৃত্যদন্ড নিষেধ করেছে। এসব কিছুই গণতান্ত্রিক ও মানবিক মুল্যবোধের আলোকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর সাথে দ্বিমতের কোন কারণ দেখছি না।
প্রাকৃতিক বলতে আমি বুঝিয়েছি পুরোন আচার অভ্যাস। যেমন, ধর্মগ্রন্থগুলোতে পাবেন যে মানব সৃষ্টির শুরুতে মানুষ তার নিজের বোনের সাথেও রি-প্রডাকশন করত। মানুষ ছাড়া অন্য জীবের মাঝে এর প্রচলন এখনো হয়ত আছে। আবার নারী প্রধান উপজাতির মাঝে মেয়ের জামাই এর সাথেও সেক্স করা খারাপ ভাবা হয়না। অনেক পিতা তার কন্যার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। এসব কিছুই পরীক্ষা করে দেখলে মানুষের মাঝে এরকম জীন পাওয়া যেতে পারে। তাই বলে এসব কিছু বৈধ করে দেয়া আমার কাছে মানুষের মাঝে হিংস্রতার জীন আছে, তাই হিংস্রতা বৈধ করে দেয়ার মতই মনে হয়। সমকামিতা আমার কাছে ঐ একই গোত্রের অন্তর্ভুক্ত বলে মনে হয়েছে। তাত্বিকভাবে যদি বলি, পৃথিবীতে কোন কারণে মানব প্রজাতী কমে গেলে উপরের অনেক প্র্যকটিসই সমাজের প্রয়োজন হতে পারে। সেটি স্বাভাবিক কোন সমাজের নয় নিশ্চই। সমকামীরা যদি সংখ্যালঘুই হয়, স্বার্থপরতার জীন যেমন আমাদের মাঝে আছে, সেটিকে নানাবিধ মুল্যবোধ দিয়ে আমরা প্রতিহত করি, ঠিক তেমনিভাবে এসব আদিম জীনগুলোকে দূর করার চেষ্টা করাই ভাল। অবশ্যই বর্বর প্রথার মাধ্যমে নয়। বোর্ডিং স্কুল ও মাদ্রাসায় এর প্রাদুর্ভাব রয়েছে। ”অনেকের জন্যে এটি চিরস্থায়ী মানসিক সমস্যা তৈরী করতে পারে”।
আপনাদের একটা উদাহরণ দেই, তাহলেই বুঝতে পারবেন কি বললাম। ইসলামে চার মাজহাবের দুই ইমামের এরকম একটা ফতোয়া আছে, জিনাকারী যার সাথে জিনা করেছে, তার কন্যা বা মাতাকে বিয়ে করতে পারবে। ব্যপারটি কারো ভাল না লাগলেও এটি অনুমদিত। আবার নিজের কন্যাকে হত্যা করলেও পিতার শাস্তি হবেনা। (যেটি অনার কিলিংকে উৎসাহিত করে) এসকল কিছুই বৈধ হলেও সেই গণতান্ত্রিক ও মানবিকতাবোধের কারণে অচল। অনেক বৈধ কিছুই অবৈধ হয়ে যায় সময়ের সাথে সাথে, আমার অবস্থানটা এখানেই।
বইটা পড়েই আসলে কমেন্ট করা উচিত ছিল। অভিদা’র কমেন্টেই অনেক কিছু পরিস্কার হয়েছে।
@আনাস,
তাহলে এক্ষত্রে আপনার সাথেও আমার কোন রকম বিরোধের অবকাশ নেই।
ব্যাপারটা এভাবে দেখলে ভুল হবে। মানুষের হিংস্রতাকে সমকামিতার সাথে তুলনা করা আসলে ভুল। হিংস্রতার ফলে আরেকজনের জীবন বিপন্ন হয়। সেজন্যই দাগী আসামীর খুন খারাবি করলে তাদের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে শাস্তির ব্যবস্থা থাকে। ঠিক একই ভাবে কাউকে ধর্ষণ করলেও রাষ্ট্র দায়িত্ব নেয় অপরাধীকে শায়েস্তা করার। কিন্তু ধর্ষণ না হয়ে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক নরনারীর মধ্যে স্বচ্ছায় সম্পর্ক হয় – তবে কি তাকে দোষ দেয়া যাবে, অপরাধি হিসেবে সাব্যস্ত করা যাবে? অধিকাংশই বলবেন, না ঠিক নয়। যদিও সনাতন অনেক রাষ্ট্রেই পরপুরুষের সাথে মেলামেশা করলে জেনার অপরাধে শাস্তি আছে। আমার চোখে এটা রাষ্ট্রীয় অন্যায়। অনেকেই আবার হয়তো দ্বিমত করবেন। অনেকেই ‘সৃষ্টির শুরুতে মানুষ তার নিজের বোনের সাথেও রি-প্রডাকশন করত’ ইত্যাদি বলে রাষ্ট্রীয় আইনকেই জায়েজ করার চেষ্টা করবেন, নইলে তাদের চোখে ‘সমাজ উচ্ছন্নে যাবে’। আসলে সত্যি বলতে কি আধুনিক মানবিক সমাজ ব্যবস্থা এমন যে, কেউ ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে আমরা সেটা অবৈধ বা অন্যায় বলতে পারি না পারিনা শাস্তি দিতে, সেটা আমাদের জন্য যতই রুচিবিরুদ্ধ ঠেকুক না কেন। আমার সাপ দেখলেই ঘিন ঘিন করে, তা বলে পৃথিবীর সকল সাপকে তো রাষ্ট্রিয়ভাবে ধ্বংস করে দিতে বলতে পারি না, তাই না? কারণ আমি জানি, মানুষ যদি বিবর্তনের পথ পরিক্রমায় উদ্ভুত হয়ে থাকে সাপ, ব্যাং টিকটিকি সবই। সমকামীরা বায়োলজিকাল কারণেই হোক, আর কিছুটা সামাজিক বা যে কারণেই হোক বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করেন না। এটা অনেকে মনে করেন হয়তো ব্যাপারটা জৈবিকভাবেই অঙ্কুরিত (দুই পক্ষেরই বেশ কিছু আলোচনা আমার বইয়ে আছে)। আজকের দিনের মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন যৌন-প্রবৃত্তির ক্যানভাস আসলে সুবিশাল। এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠের বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ (বিষমকামিতা) যেমন দৃষ্ট হয়, তেমনিভাবেই দেখা যায় সম লিঙ্গের মানুষের মধ্যে প্রেম এবং যৌনাকর্ষণ। এই দ্বিতীয় ধারার মানুষেরা বিপরীত লিঙ্গের মানুষের প্রতি এরা কোন যৌন-আকর্ষণ বোধ করে না, বরং নিজ লিঙ্গের মানুষের প্রতি এরা আকর্ষন বোধ করে। এদের যৌনরুচি এবং যৌন আচরণ এগুতে থাকে ভিন্ন ধারায় । ব্যাপারটি অস্বাভাবিক নয়। সংখ্যাগরিষ্ঠের বাইরে অথচ স্বাভাবিক এবং সমান্তরাল ধারায় অবস্থানের কারণে এধরনের যৌনতাকে সমান্তরাল যৌনতা (parallel sex) নামেও অভিহিত করা হয়। এখন কথা হচ্ছে ব্যাপারটাকে আপনি ‘স্বাভাবিক’ ভাবে গ্রহণ করে (স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করা মানে নিজেকেও সমকামী হতে হবে এমন কোন কথা নেই) তাদের জন্য সহমর্মিতার হাত বাড়াবেন নাকি, তাদেরকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কালাকানুনের দিকে ঠেলে দেবেন? ব্যাপারটা আপনার হাতেই ছেড়ে দিলাম। কালাকানুনের দিকে ঠেলে দিলে তাদের অবস্থা দাঁড়াবে এরকম । ইরানে বছর কয়েক আগে (২০০৫ সালে) দুজন কিশোরকে সমকামিতার অপরাধে ফাঁসি দেয়া হয় তারপর সেই লাশ শহরের সাড়া রাস্তায় ট্রাকে করে ঘোরানো হয়। উইকিতে এ সংক্তান্ত খবর আছে এখানে। নীচে ছবি দেয়া হল –
[img]http://i.current.com/images/asset/895/902/36/GMbOAE.jpg[/img]
তালিবান নিয়ন্ত্রিত সময়কার আফগানিস্তানে ১৯৯৮ সালে কান্দাহারে তিনজন পুরুষকে জীবন্ত মাটিতে পুঁতে হত্যা করা হয়। তাদের অপরাধ ছিলো সমকামিতা । ২০০৯ সালে ইরাকে গুপ্ত হত্যায় সাত মাসে বিরাশিজন সমকামী প্রাণ হারায় । সমকামিতাকেন্দ্রিক বিভিন্ন নৃশংসতার ঘটনা মরোক্কো, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, সুদান, বাংলাদেশ সহ প্রায় প্রতিটি মুসলিম প্রধান দেশে অহরহই ঘটছে। ইরাকে সমকামীদের এভাবে রাস্তায় পিটিয়ে মারা হয়েছ, এখনো হচ্ছে –
[img]http://gayguidetoronto.com/wp-content/uploads/2009/08/iraqilgbt.jpg[/img]
আমরা নিশ্চয় সেরকম কোন সমাজ চাই না, তাই না?
আসলে ধর্মীয় ব্যাপারটি নিয়ে আমি আলোচনা করতে চাইনা। ব্যাপারটি বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে দেখেন। পারস্য সাহিত্যে অনেক কবি তাদের প্রেমিকাকে পুরুষ নামে ডাকতেন। আরব সমাজে এ ধরণের যৌন সম্পর্ক গ্রহনযোগ্য তো বটেই মধ্যযুগে (ইসলামের বিস্তৃতির সময়) বহুল প্রচলিতও ছিল। সাকী বলতে এখন আমাদের চোখের সামনে সুরাপাত্র হাতে যে মোহনীয় লাস্যময়ী নারীর ছবি ভেসে উঠে, প্রাচীন আরবে সাকী বলতে তা বোঝানো হত না। গবেষকরা বলেন, সাকী বলতে আরবে নারীর পাশাপাশি সুদর্শন কিশোরও বোঝানো হত। তারা শুধু পানপাত্রে দ্রাক্ষারসই পরিবেশন করতো না, পাশাপাশি অন্যান্য পার্থিব সেবাও পরিবেশন করতো। এর উল্লেখ পাওয়া যায় আরবের বহু সমকামী কবিদের রচনায় (যেমন, আরবীয় কবি আবু নুয়াসের (৭৫৬ – ৮১৪) বেশ কিছু কবিতা আছে সমকামিতাকে উদযাপন করে) । এমনকি কোরানের কিছু আয়াতে (৫২:২৪, ৫৬:১৭, ৭৬:১৯) বেহেস্তে উদ্ভিন্নযৌবনা হুরীর পাশাপাশি ‘মুক্তা-সদৃশ’ কিশোর বালকের সেবা পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। কোরাণের বর্ননা মতে, এই মুক্তা সদৃশ কিশোর বালকেরা হবে চিরতরুণ (৭৬:১৯), তাদের আভরণ হবে স্বচ্ছ রেশমের কাপড় (৭৬:২১), এবং তারা অলঙ্কৃত থাকবে রৌপ্য নির্মিত কঙ্কণে (৭৬:২২)। এদেরকে সাধারণভাবে অভিহিত হয় গিলমান হিসেবে। বেহেস্তে গিলমানদের সত্যিকার দায়িত্ব নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও এদের কাজ যে কেবল পানীয় বিতরণে সীমাবদ্ধ থাকবে না,তা অনেক স্কলারই মনে করেন (বিস্তৃত আলোচনায় যাচ্ছিনা)। সেজন্যই প্রতিটি যুগে মুহম্মদ ইবনে আব্বাদ আল মুতাদিদ, অয়াবু নুহাস, ইফিতি নাসিমের মত কবি সাহিত্যিক মুসলিম বিশ্বে সব সময়ই খুঁজে পাওয়া যারা সমকামিতাকে উদযাপন করেছেন।
তবে আমার শেষ কথা খুব পরিস্কার। সমকামীদের কাজ কর্ম আমাদের অপছন্দনীয় হতে পারে, কিন্তু তাদের বিষয়গুলোকে বৈজ্ঞানিক এবং মানবিক দৃষ্টিকোন থেকেই দেখা উচিৎ, সব সময়ই আমাদের নিজস্ব অভিরুচিগত মানসিকতার নিরিখে নয়। সবারই বেঁচে থাকার অধিকার আছে সমানভাবে এই পৃথিবীতে।
@অভিজিৎ,
ধন্যবাদ ধৈর্য ধরে উত্তর দেবার জন্যে। কিছুদিন আগে Larry David এর একটা মুভি দেখলাম, Whatever Works। সমাজ সেরকম হতে অনেক দেরী। বেশ কিছুদিন ধরেই দেখছেন হয়ত এদেশের সমাজে একটা অস্থিরতা তৈরী হয়েছে। মা সন্তানকে খুন করছে, অথবা একসাথে আত্মহত্যা করছে। এসবই ঘটছে ব্যক্তির সম্পুর্ণ বৈধ অধীকার প্র্যকটিস করার কারণেই। একাধিক বিয়ে ধর্মেও বৈধ। আগেও একাধিক বিয়ে করত মানুষ, তবে দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে সংসারে অশান্তি করে সন্তানসহ আত্মহনন আগে দেখা গিয়েছে কিনা সন্দেহ। আবার ব্যক্তি স্বাধীনতা বিচার করলে পরকীয়া বা বহুবিবাহ অথবা বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্ক খারাপ কিছু না। কারো সাথে ভাল লাগছে না তো করার কি আছে। পাশ্চাত্য অনেক সমাজে এসব খুবই স্বাভাবিক। খুব সহজেই তাদের পরিবারগুল ভেঙ্গে পড়ছে। পাশ্চাত্য চলচিত্রগুলতেই আমরা তা দেখতে পাচ্ছি। ব্যক্তি স্বাধীনতার অবাধ চর্চার ফলে সমাজের উপর এর ক্ষতিকর প্রভাব অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত। এটিকে ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতার কালাকানুন ভাবতে পারেন।
মানুষ সমাজবদ্ধ প্রাণী। একজনের কাজ আরেকজনের উপর প্রভাব রাখবেই। ভাল খারাপের মান বিবেচনা করে সেসবের উপযোগীতা নিয়েই কাজ করা উচিত। দুটি মানুষ দুদিকে চলে গেলে ব্যক্তি লাভবান হয়। সন্তান কিন্তু ঠিকই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ক্ষতিটা ফিজিক্যালী দেখা যায় না। তেমনি ভাবে এদেশের সমাজে সমকামিতা ক্ষতিকর যে নয় সেটি ঠিক না। মাত্রা এবং সামাজিক চাপের কারণে এর প্রকাশ কতটা তার পরিসংখ্যান হয়ত নেই। যে হিন্ট দিতে চেয়েছিলাম, তথা বোর্ডিং স্কুল ও মাদ্রাসা, এসব স্থানে এর ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। কিছু বর্ণনা দিতে চেয়েছিলাম। ব্লগের কথা ভেবে বিরত থাকলাম। তবে ছোট বয়সে সমকামিতার মুখে পড়ে জীবনে এর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রয়ে গেছে কিনা, অথবা সমকামিতা ব্যপারটি ছোট বয়সে ধরা পড়লে তা দূর করা যায় কিনা, পাশের বাসায় দুজন সমকামী থাকলে ছোটদের উপর এর প্রভাব কিরুপ এসব দিক বিবেচনা করা অথবা গবেষণায় এসব উঠে আসছে কিনা তা ভেবে দেখা দরকার।
ধর্মীয় ব্যপারটি কেন তুলে ধরলেন তা বুঝলাম না। আমিতো বলেছিই যে ধর্মে অনেক কিছুই আছে যা বৈধ কিন্তু আজ অবৈধ, আবার ধর্ম সমাজের কারণেই অনেক বৈধ বিষয়কে অবৈধ করেছে। যেমন মদ খাওয়া এখানে হারাম, অথচ জান্নাতে মদের নদী দেয়া হবে। এটি প্রমাণ করে যে সামাজিক বিবর্তনই আসল কথা। সেই সমাজের প্রয়োজনে মদ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
আপনার বক্তব্য পরিস্কার, সেটি নিয়ে আমার আপত্তি নেই, অনেক কিছুই মানবিকতার দৃষ্টিতে দেখতে হবে। সে অর্থে মৃত্যদন্ডও অমানবিক। কিন্তু সবকিছুরি উপযোগীতা কোন সমাজে কতটা তা বিবেচনা করা নিশ্চই অযৌক্তিক না।
@আনাস,
অনেক দীর্ঘ আলোচনা হয়ে যাচ্ছে। মতের ভিন্নতার পার্থক্য থাকবেই। মনে হয় না আমি বা আপনি যে দিক থেকে ব্যাপারটিকে দেখছি খুব বেশি ঐক্যমতে পৌঁছুতে পারব। আমি আপনার কথা শুনলাম। আপনিও আমার। এখন না থামলে একই বিষয়ে ঘুরপাক খেতে হবে।
আপনি প্রথম প্যারাগ্রাফে যা বলেছেন তা অপ্রাসঙ্গিক। আগেই বলেছি যদি কারো ক্ষতি করা না হয় আধুনিক রাষ্ট্রগুলোর দায়িত্ব নয় যে কারো ব্যক্তিগত অভিরুচিতে নাক গলানোর। মা সন্তানকে খুন করলে সেটা অপরাধ, সেটা প্রচ্যেই হোক আর পাশ্চাত্যেই। কারণ এর দ্বারা কারো ব্যক্তিগত ক্ষতি হচ্ছে। সমকামিতা একটি যৌনপ্রবৃত্তি। এটা নিয়ে রাষ্ট্রের মাথা না ঘামানোই ভাল। যৌনপ্রবৃত্তি ব্যাপারটা জৈবিকভাবেই মানুষ এবং প্রানীজগতে অঙ্কুরিত (অন্ততঃ বহু বিশেষজ্ঞই সেভাবে দেখেন)। সমকামীরা কারো ক্ষতি করছে না। এটাকে অপরাধ বলা হলে নাস্তিকতাকেও অপরাধ হিসেবে অনেক সাব্যস্ত করতে পারেন। আপনি যে সমস্ত যুক্তি দিয়েছেন, সেগুলো প্রত্যেকটাই ধর্ম না মানা, ইসলাম না মানা, রক গান শোনা ইত্যাদির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারেন। দোহাই পাড়তে পারেন সমাজ উচ্ছনে যাবার। আমার মতে রাষ্ট্র ব্যক্তিগত পছন্দের ব্যাপারগুলোতে (যদি না কারো সরাসরি ক্ষতি হয়) নাক গলালে মানবিকতা লঙ্ঘিত হয়। সমকামীরা য়াপনার কোন ক্ষতি না করলে আমি যুক্তি দেখিনা তাদের বিরুদ্ধে এত কঠোর হবার।
ঠিক আছে, বুঝলাম। কিন্তু ‘ভাল’ ‘খারাপের’ মন্দন্ড নির্ণয়ের দন্ডমুন্ডের কর্তা কে? আপনার ইসলামবিরোধি লেখাগুলোকেও যে কেউ উড়িয়ে দিতে পারেন এই বলে যে, ‘ভাল খারাপের মান বিবেচনা করে সেসবের উপযোগীতা নিয়েই লেখা বা কাজ করা উচিত’। শুধু যৌনপ্রবৃত্তিতে বিষমকামীরা সংখ্যাগরিষ্ট বলেই অন্যপ্রবৃত্তি ‘খারাপ’ এই মনোভাব ঠিক নয়। সারা পৃথিবীতেই আস্তিকেরা সংখ্যাগুরু, নাস্তিকেরা নয়। নিঃসন্দেহে অনেকে সেজন্য তাদের ‘খারাপ’ ভাবতে পারেন। তবে মনে হয় না আমি আপনি সেভাবে চিন্তা করব।
এ ব্যাপারটি কেন বললেন বুঝলাম না। এটার সাথে সমকামিতার সম্পর্ক দেখছি না তেমন। তদুপরি আপনার মন্তব্যের সাথেও আমি একমত নই। আপনার কি ধারণা দুটি মানুষ দুদিকে চলে গেলেই সন্তান ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সারাদিন ঝগড়াঝাটি, মারামারি করে পড়ে থাকলে, আর সেগুলো দেখে সন্তান বড় হলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না? আমাদের দেশে বেশিরভাগ মেয়েরাই তাহলে ভাল আছে- স্বামীর লাত্থিগুতা খেয়ে, কারণ তাদের অনেকেরই যাবার জায়গা নেই। তাদের সন্তানেরাই নিঃসন্ধে পাশ্চাত্যের সন্তানদের থেকে সুগুণসম্পন্ন? স্বামী মদ্যপ হোক, লম্পট হোক, একসাথে থাকাটাই কি সব সময় ভাল? সন্তানের দোহাই পেড়ে অনেক অন্যায়কেই বৈধতা দেয়া হয়েছে যুগে যুগেই। আমার মতে পাশ্চাত্যে মেয়েরা আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার পেয়েছে বলেই তারা এ ধরণের স্বামীকে ছেড়ে চলে যেতে পারছে। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সহ অনেক কিছুই এখানে মূখ্য ভূমিকা পালন করছে; কেবল ট্র্যাডিশনাল ‘ভাল’ ‘খারাপ’ কেন্দ্রিক চিন্তা নয়।
ভাই এগুলো নিয়ে অতীতেও গবেষণা হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে। ক্ষতিকর প্রভাব সবকিছুরই আছে। দোষ কি শুধু সমকামিতারই? বিষমকামিতার নেই? ভীরের মধ্যে তো মেয়েদের গায়ে হাত দেয়ারও প্রচুর উদাহরণ আছে, উদাহরণ আছে জোর করে ধর্ষনের, উদাহরণ আছে নাবালিকাদের প্রতি লালসার, অফিসে আদালতে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের। তাহলে আপনি কেন বিষমকামিতাকে নিরুৎসাহিত করছেন না? আপনি যে স্কেলে সমকামিতার ক্ষতিকর দিক দেখেন তার চেয়ে শতগুন বেশি ঘটছে বিষমকামিতাকেন্দ্রিক যৌনতার আগ্রাসন। কিন্তু সেগুলো আপনার চোখে কখনো সেভাবে ধরা পড়ে না। কারণ বিষমকামিতার ব্যাপারটা জন্মের পর থেকেই প্রাকৃতিক আর স্বাভাবিক বলে দেখে এসেছেন। সমকামীরা যেহেতু আপনার আমার মতো নয়, সেহেতু তাদেরকে জন্য দাওয়াই আলাদা। 🙂
আসলে জোর করে যে সম্পর্কই করা হোক না কেন – সেটা সমকামীই হোক বিষমকামীই হোক – সেটা অন্যায়। সেগুলো হলে রাষ্ট্রীয় আইনেই বিচার হবে। কিন্তু এর বাইরেও বহু উদাহরণ আছে কোন কিছু ছাড়াই (মাদ্রাসায় বা অন্য কোথাও কোন ধরণের শারিরীক নিগ্রহের শিকার না হলেও) মানুষ এমনিতেই সমকামী হিসেবে গড়ে উঠেছে। আপনি যেভাবে ছোটবেলায় মেয়েদের জন্য আকর্ষণ অনুভব করতেন, ঠিক সেভাবেই তারাও সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করে ছোট বেলা থেকেই- বহু উহারণ আমার কাছে আছে (অনেকে এ জন্য লজ্জিত হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছেন, অনেকে আবার ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হয়ে প্রবৃত্তি বদলের চেষ্টা করেছেন, লাভ হয়নি- আমার বইয়েই অনেক কেস স্টাডি আছে এ নিয়ে) । আমি আপনি যেমন ডানহাতে কাজ কর্ম করি, অনেকে বাম হাতে। কেউ তাদের ছোট বেলা থেকে বাম হাতে লিখতে উদ্বুদ্ধ করেনি এই বলে দেয়নি যে, বাবা সোনা – বাম হাতে লেখ ,ওটাই ভাল। কিছু ব্যাপার নিজে নিজেই গড় উঠে ব্যবহারিক বৈশিষ্ট হিসেবে (জৈবিকভাবে অঙ্কুরিত)। পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই ডানহাতি বলে বাহাতি দের গলায় ‘অস্বাভাবিকতার’ তকমা ঝুলালে কেমন শোনাবে?
বিজ্ঞানীরা আজ মেনে নিয়েছেন যে, শুধু মানুষের মধ্যে নয় সব প্রানীর মধ্যেই সমকামিতার অস্তিত্ব আছে। কাজেই সমকামিতা প্রকৃতিজগতের একটি বাস্তবতা। ব্যাপারটা বাস্তবতা বলেই ১৯৭৩ সালের ১৫ই ডিসেম্বর আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক এসোসিয়েশন বিজ্ঞানসম্মত আলোচনার মাধ্যমে একমত হন যে সমকামিতা কোন নোংরা ব্যাপার নয়, নয় কোন মানসিক ব্যধি। এ হল যৌনতার স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। ১৯৭৫ সালে আমেরিকান সাইকোলজিকাল এসোসিয়েশন একইরকম অধ্যাদেশ প্রদান করে। পশ্চিমা বিশ্বে কোন আধুনিক চিকিৎসকই সমকামিতাকে এখন আর ‘রোগ’ বা বিকৃতি কিঙ্গা অস্বাভাবিকতা বলে আর চিহ্নিত করেন না।আমি আপনি ব্লগে সেটা ভাল না খারাপ তা নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা তর্ক করতে পারি, ফল হবে না কিছুই।
না অযৌক্তিক নয়। কেউ আপনাকে বা আমাকে সমকামিতায় উদ্বুদ্ধ হতে কিন্তু বলছে না। বললে অবশ্যই সেটা অযৌক্তিক হত। আমরা কেবল বলছি সমকামী বলেই কাউকে যেন নিগৃহীত না করা হয়। এটাই আমার শেষ কথা।
@অভিজিৎ,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আসলে যে কোন একটি আদর্শে গড়ে উঠলে অনেক বিষয়কে অন্যভাবে দেখার সুযোগ থাকেনা। অনেক সময় পুরোন চিন্তা ভাবনা ও যুক্তি সমুহ সামনে এসে দাঁড়ায়। সেগুল নিয়ে আলচোনা না করলে সমস্যা থেকেই যায়। আপনার মন্তব্যগুল বিষয়টাকে অন্যভাবে দেখতে সাহায্য করেছে। সে জন্যে আপনাকে যে কষ্ট দিলাম। আশাকরি তা খারাপভাবে নিবেন না। 🙂
@আনাস,
এ বিষয়ে আগেও এই ব্লগে বিতর্ক হয়েছে। আপনি আমার সমকামিতা বিষয়ে এই মন্তব্যটি পড়তে পারেন। এটা অনেকটা আপনার আর অভির ধারণা বা মতের সমন্বয় বলা যেতে পারে।
@আনাস,
অনেক ধন্যবাদ আনাস। কৃতিত্ব আসলে আপনারই। আমাদের অনেকেই মনের জানালা খুলতে পারেন না। আপনাকে আমি যতই দেখছি ততই অবাক হচ্ছি। প্রথম প্রথম যখন মুক্তমনায় এসেছিলেন তখন আমার মনে আছে যে আপনি ইসলামের অনেক কিছুই ডিফেন্ড করতেন। এখন সেই আপনি আর আজকের আপনার মধ্যে অনেক পার্থক্য দেখি আমি। আপনার সাথে কথা বলে আমারও অনেক উপকার হচ্ছে। আশা করি আপনারও তাই।
কষ্ট দেয়ার তো প্রশ্নই উঠে না। নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি এক্ষেত্রে।
@আনাস,
সমকামিতার মাধ্যমে তো আর বাচ্চার জন্ম হচ্ছে না। তাই এই যুক্তিতে সমকামিতাকে খারাপ বলা যাচ্ছে না।
@আনাস,
আমার মনের কথাগুলো অভিজিৎ এত সুন্দর করে বিশ্লেষন করেছেন যেটা আমার পক্ষে বলা অসম্ভব ছিল। আমার নুতন করে বলার কিছু নেই। ধন্যবাদ অভিজিৎ।
আপনাকেও ধন্যবাদ যে আপনার কারনে সমকামীতা প্রসংগে কিছু দারুন ব্যাখ্যা অভিজিৎ-এর কাছ থেকে পেলাম।
সমকামিতা বিষয়টি বাংলা ভাষায় পপুলার হবে বলে মনে হয় না। এদেশের সমাজ বাস্তবতা এটাকে গ্রহণ ও করবে না।
@মনসুর আজিজ,
“What is right is not always popular and what is popular is not always right.”
— Albert Einstein
অভি দা,
আজকে অনেকদিন পর মুক্তমনায় ঢুকে আপনার লেখা দেখে তাড়াতাড়ি পড়া শুরু করলাম। দেখি প্রথমেই আমার নাম! আসলে বইমেলার সময় আমার মনে হয়েছিল বইটাকে ব্লাক-আউট করা হয়েছে। কারণ অনেক বইয়ের খবর এলেও মূল মিডিয়ায় এই নামটা তেমন আসেনি। তবে আশার কথা মিডিয়া কাভারেজ না পেলেও বইটা ভালই চলছে। কারণ মেলার পরে শুদ্ধস্বরে একদিন কিনতে গিয়ে আমি ফিরে এসেছি – বইটা শেষ হয়ে গেছে শুনে। এরপর আমার বইটা আর কেনা হয় নি। নেটে পাওয়া ফ্রি অধ্যায়গুলো পড়ছি ধীরে ধীরে। (লেখকের অটোগ্রাফসহ একটা বই পাওয়ার আশা আছে, তাই আপাততঃ কিনছি না!) ।
শুদ্ধস্বরের টুটুল ভাইয়ের সাথে দেখা হলেই আমার প্রথম প্রশ্নটা হয়, অভিদার বইটা কেমন চলছে? উনিও স্মিত হেসে বলেন, ভালই!
আমার কাছে বইটাকে লাইম-লাইটে না আসার দুটো কারণ আছে মনে হয়ঃ
১।বইটার বিষয়বস্তু বর্তমান সমাজের মানুষের ভাবনার চেয়ে অনেক অগ্রসর হয়ে গেছে বলে আমার মনে হয়। সাধারণ মানুষরা তো বটেই, যুক্তিবাদী মানুষরাও এ নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন। প্রবীর ঘোষের মতে, সমকামিতা প্রকৃতিবিরুদ্ধ এবং এটা খারাপ।
২। বইইয়ের নামটা সরাসরি বইয়ের বিষয়টাকে হাইলাইট করে দেওয়াতে নামটা উচ্চারণ করতেই অনেকে অস্বস্তিতে ভোগেন। যেমন সমকালে বইটার নামে শিরোনাম দেওয়া হয়নি।
মনে পড়ে, চ্যাটে অভি দা বলেছিলেন এই ধরণের বই একদিনে একশ কপি বিক্রি হবে না, ধীরে ধীরে চলবে। কারণ এই ধরণের বই পড়ার মত ম্যাচিওর পাঠকের সংখ্যা খুব বেশি নয়। সেটাই সত্যি হচ্ছে বলে মনে হয়। প্রথম আলো আমিও পড়ি না, তবে নানা অভিযোগ থাকলেও প্রথম আলো দেশের প্রধান দৈনিক এটা মানতেই হবে। এখানে ছাপা রিভিউ দেশের বৃহত্তর পাঠকগোষ্ঠীর দৃষ্টি আকর্ষণ করবে, এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। আশা করি অভিদা দেশে এলে রয়ালটির টাকা দিয়ে একটা মহা ভূরিভোজ দেওয়া হবে!
@পথিক,
তোমার প্রতিটি পয়েন্টই গুরুত্বপুর্ণ। চমৎকার করে খুব গুছিয়ে লিখেছ। থ্যাঙ্কস।
দেশে আসলে ভূরিভোজ কোন সমস্যা না। তবে সতর্ক করে দেই আগে ভাগে -রয়ালিটির টাকায় ভূরিভোজ করতে চাইলে তোমারই সমস্যা। উলটো তোমাকেই না আবার খাওইয়াতে হয় আমার হতশ্রী অবস্থা দেখে। তবে টুটুল ভাইয়ের উপর আস্থা আছে। কিছু একটা হয়েই যাবে 🙂
মন্তব্যের শেষ প্যারাটির পুরোটা না আসায় বাকি অংশ দিলাম। উপরের মন্তব্যের সাথে যোগ করে পড়বেন।
আপাতত আমার বকর বকর শেষ হয়েও শেষ হচ্ছে না। আরেকটু বাকি আছে। ফরিদ সাহেবের কাছে প্রথম আলোতে দেয়া আলতাফ শাহনেওয়াজকৃত রিভিউটি মান্ধাতা আমলের হয়েছে বলে ব্যক্তিগত অভিমত জানিয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে মডার্ন মার্কা বাক্যবন্ধের সুন্দর একটি রিভিউ কামনা করছি। তিনি যদি বিপ্লব এবং প্রদীব দেবের কোনো রিভিউয়ের লিংক দিতেন তাহলে খুব ভালো হতো। তাহলে সেখানে গিয়ে রিভিউয়ের তালিম নিতে পারতাম।
এখন আমার বকরবকর বা বকবকানী শেষ। ধন্যবাদ।
@মাহফুজ,
তোমার বকবকানি শেষ না করে বরং এক কাজ কর না তুমিই বইটির একটি রিভিউ লিখে ফেল।লিখে মুক্ত-মনার নীড় পাতায় প্রকাশ করে দিলে খুব ভালো কাজ হবে বলে মনে করি। তাহলে কাজের কাজ হবে। :yes:
বাংলাদেশের প্রকাশনা,পত্রিক ও মিডিয়ার জগৎ প্রায় পুরো দখল করে আছে প্রতিক্রিয়াশীল মালিক,সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের গুনীজনেরা।এরা শুধু বস্তাপঁচা টন টন ওজনের তথাকথিত গত হওয়া শত শত বছরের গতানুগতিক ট্রাডিশন বা প্রতিক্রিয়াশীল সংস্কারের কথা ছাড়া আমজনতাকে আর কিছু উপহার দিতে জানে না।
সেখানে সমকামিতার মতো এমন একটি স্পর্শাকাতর বিষয় যা আমাদের জীবনের অংশ তা ওনারা জানেন , এমন কি অনেকেই নিজেরা এর চর্চাও করে থাকেন হয়তো অথচ এটাকে মানুষের সমাজে এমন একটা ট্যাবু বানিয়ে রেখেছেন যা নিজের সাথে নিজেদের হটকারিতারই সামিল।
জীবন মানেই যে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিষয়ে জানা,আর জানা মানেই যে কোন বিষয়ে জ্ঞানার্জন করা ও সমর্থন করা এবং তা মানুষের সমাজে বিলিয়ে দেওয়া এরা এটা বেমালুম ভূলে যায়।কারন তাদের মানসিক সংস্কারের ইগুর বেড়ীজাল ইস্পাত কঠিন জিল্লী দ্বারা আবরিত বা বদ্ধ।
সব কিছুর পরেও হাটি হাটি পা পা করে জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলো বাংলাদেশের মতো একটি পশ্চাদপদ দেশে মিট মিট করে ছড়িয়ে পড়ছে তাতেই বা মন্দ কি -সের ?
অভিজিত এর জ্ঞান-বিজ্ঞানের উপর স্বর্নময় কাজগুলি আজ হয়ত বাংলাদেশের তথাকথিত জ্ঞানী-গুনীজন থেকে শুরু করে শিক্ষিত পড়ুয়া শ্রেনী বাঁকা চোখে দেখে বা মনে মনে তেঁতো ডেকুর তোলে এই তাদেরই পরবর্তী জেনারেশনরাই আবার ঐ জ্ঞান-বিজ্ঞানের কাজ করা বিষয়গুলি নিজেদের জীবনে প্রয়োগ করে বাংগালি সমাজকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে এতে কোন সন্দেহ নেই।কারন এছাড়া যে আর কোন বিকল্প পথ মানুষের জীবনে খোলা নেই।
ধন্যবাদ অভিজত এমন একটি জটিল বিষয়ের উপর মহৎ কষ্টসাধ্য কাজটি বাংগালি সমাজকে উপহার দেওয়ার জন্য। :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2:
@মাহবুব সাঈদ মামুন ভাই,
আপনি এত দারুন করে লিখেছেন! এক একটি বাক্য মুক্তোর মালার মত। আপনার এবং আমার লেখার মধ্যে তুলনা করলেই বুঝা যায় কে রিভিউ লিখলে ভালো হবে? কাউকে জিজ্ঞেস করলে অবলীলায় বলবে- মামুন ভাই।
একটা ছোট্ট ঘটনা বলি- আমরা যে বাসায় থাকতাম। তার দোতলায় এক সিমেন্ট ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি একজন হাজীও বটে। তিনি যে সমকামী ছিলেন, সেটা জানলাম একজনের কাছ থেকে। বিশ্বাস হতে চাচ্ছিল না। তার স্ত্রী সন্তান সবই ছিল। কিভাবে এটা সম্ভব? তার দোকানের কর্মচারীর সাথে তার ছিল সম্পর্ক। এই অভ্যাসটাকে তিনি জীবন থেকে বাদ দিতে পারেন নি। অন্য এক ভাড়াটিয়া সেই বিষয়ে আমাকে গোপনে সত্যতার সাক্ষ্য দিল।
ওগুলোকে আমি বিকৃত রুচিই মনে করতাম। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার, এই হাজীর চালচলন ব্যবহার ছিল মন কাড়ার মত।
সমকামিতা বইটি পড়ার পর বিকৃত রুচির মনোভাবটি আমার পরিবর্তন ঘটেছে। বাকি দুই চ্যাপ্টার পড়ার অপেক্ষায় রয়েছি।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, এমন দারুন উৎসাহপূর্ণ মন্তব্যের জন্য।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
এ রকম মহৎ শ্রমের, কাজের ক্ষয় নেই। ভবিষ্যত প্রজন্ম কৃতজ্ঞতা ভরে তা স্মরণ করবে।
‘আমার ব্লগ’ স্টলে একজন মহিলা Spectator দাঁড়িয়ে ভিজিটরদের গতিবিধি লক্ষ্য করছেন। দেখলেন একজন লম্বা দাড়িওয়ালা মোল্লাটাইপের লোক স্বস্ত্রীক স্টলে ঢুকলেন। স্ত্রীকে একজায়গায় দাঁড়িয়ে একটি বই পড়ায় ব্যস্ত দেখে স্বামী অন্যান্য বইগুলো ঘুরে দেখতে গেলেন। বহুক্ষণ পর ফিরে এসে দেখেন স্ত্রী একই বই মুগ্ধ হয়ে পড়ে চলেছেন। জিজ্ঞেস করলেন কী এমন ইন্টারেস্টিং বইটা দেখি। বইটি হাতে নিয়ে আস্তাগফিরুল্লাহ নায়ুজুবিল্লাহ বলে মহিলার হাত থেকে জোর করে কেড়ে নিয়ে ধপাস করে ছুড়ে ফেললেন। বইটির উপর ভদ্রলোকের রাগের কারণ জানতে গিয়ে Spectator মহিলা বইটি হাতে নিয়ে দেখেন বইয়ের নাম ‘সমকামিতা’ লেখক অভিজিৎ রায় ।
মন্তব্যটি আমার ব্লগে পড়েছিলাম বই মেলার সময়।
@আকাশ মালিক, “আমার ব্লগ” স্টলে অভিজিতদার বই গেল কেমনে? ওই স্টলে তো শুধু ওই ব্লগের ব্লগারদের লেখা বই থাকার কথা!
@পৃথিবী,
তাহলে অন্য কোন একটা স্টল হবে। নামটা সঠিক মনে পড়ছেনা। তখন ইচ্ছে ছিল মন্তব্যটা কপি করে রাখি। সেই সময়ের আমার ব্লগের মন্তব্য বিভাগে খুঁজ নিলে অবশ্যই পাওয়া যাবে।
সমকামিতা বইটি নিয়ে একটু বকবক করতে ইচ্ছে করছে:
একুশে বইমেলা ২০০৯ এ বইমেলায় গেছি। বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে বই নাড়াচাড়া করে দেখছি। কিছু বইও কিনে ফেললাম। হঠাৎ করে একটি স্টলে এসে থেমে সমকামিতা নামে বইটি দেখলাম। কেউ কেউ বইটির দিকে এক নজর তাকিয়ে চলে যাচ্ছে, কেউ কেউ হাতে তুলে আবার রেখে দিচ্ছে। কেউ কেউ ডানহাতে বইটি ধরে বাম হাতের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে বইয়ের পাতা অতি দ্রুত কির কির করে সরিয়ে দিয়ে আবার যথাস্থানে রেখে দিচ্ছে। যতক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম, কাউকেই ঐ বইটি কিনতে দেখলাম না। বইটি আমিও হাতে নিয়ে আবার রেখে দিলাম। নামটাতেই কেমন এলার্জি ফিল করলাম। হঠাৎ করে একজনের মন্তব্য কানে এলো, লেখক মনে হয় দেশে সমকামিতা চালু করতে চাচ্ছে। আর একজন বলছে- নারী বইয়ের মত বইটা ব্যান্ড হতে পারে। যাহকো আমি বইটা না কিনেই চলে এসেছিলাম।
ঐ সময়ে মুক্তমনার সাথে পরিচয় ঘটেনি আমার। অভিজিৎ নামে কোন লেখকের নামও জানতাম না। মুক্তমনার সন্ধান পাই ডিসেম্বর ২০০৯। মুক্তমনায় এই বইটি ই-বই হিসেবে দেখি। পরে সেটি ডাউনলোড করি। পড়তে থাকি। কিন্তু দুটো অধ্যায় (অষ্টম অধ্যায় : সমকামিতা: সমাজ, ইতিহাস এবং সাহিত্যে এবং নবম অধ্যায়: ধর্মে সমকামিতা) ই-বইয়ে সংযোজন দেয়া হয়নি। এই দুই অধ্যায় বাদেই বইটি পড়ে ভীষণ আফসোস হলো, কেন বইমেলা থেকে কিনলাম না?
মুক্তমনার সাথে সম্পর্ক হলো। পাতায় পাতায় ঘুরে ঘুরে পড়তে লাগলাম অন্যান্য অনেকের লেখা।
অভিজিৎ দাদাকে কয়েকবার অনুরোধ করলাম- দুটো অধ্যায়ের জন্য। শেষে একবার বললাম (মন্তব্য ঘরে গিয়ে) বললাম- ধর্মে সমকামিতা পড়তে মঞ্চায়। তিনি জবাব দিলেন- শীঘ্রই পোষ্টাইবেন।
আমি জানি না এই শীঘ্র বলতে তিনি কতদিন বুঝাতে চেয়েছেন। যিশু তার শিষ্যদের বলেছিলেন- ‘আমি শীঘ্রই আসিতেছি।’ আজ দু হাজার বছর পার হয়ে গেল। যিশু এলেন না। যিশুর শীঘ্র আর শেষ হয় না। আমার অভিজিৎ দাদার শীঘ্র যিশুর মত হলে এই ইহ জনমে আমার স্বাদ পূর্ণ হবে না।
আপাতত আমার বকর বকর শেষ হয়েও শেষ হচ্ছে না। আরেকটু বাকি আছে। ফরিদ সাহেবের কাছে প্রথম আলোতে দেয়া আলতাফ শাহনেওয়াজকৃত রিভিউটি মান্ধাতা আম
@মাহফুজ, ২০০৯ সালের বইমেলাতে সমকামিতা বইটা পেলেন ক্যাম্নে??????
বইটা বের হল-ই তো এ বছর। আপনার টাইম-মেশিন আছে নাকি? এটা মিথ্যা হলে আপনার দেওয়া বইটা সম্পর্কে ও মেলার দর্শকদের নিয়ে লেখা গল্পও মিথ্যা!!!
অভিদা ভুলে এ বছরের বইমেলাটাকে ২০০৯ বলে উল্লেখ করেছেন, সেটা দেখে আপনিও কিছু গল্প বানিয়ে দিলেন। বইটাতেই লেখা আছে, প্রথম প্রকাশ: জানুয়ারী, ২০১০।
যেভাবে গল্প বানালেন মোকসেদ আলী নিয়ে সন্দেহটা এখন বেশ জোরদার হল আমার।
আর, ফরিদ আহমেদকে অযথা আক্রমণ না করে পারলে নিজেই একটা রিভিউ লিখে ফেলেন। সেটাও না পারলে যেকোন জায়গায় উড়ে এসে ঝগড়া লাগানোর প্রবণতাটা ত্যাগ করুন। আপনাকে কিছু প্রশ্ন করলেই নীতিমালার দোহাই দেন অথচ নিজেই সেটার কথা বারবার ভুলে যান,এটা কেমন কথা!
@পথিক ভাই,
শুভেচ্ছা।
মনে হয় টাইম মেশিনটা গণ্ডগোল বাঁধিয়েছে। অপেক্ষা করতে হবে। পুরোনো ডাইরী-ফাইরী যে কোথায় রেখেছি খুঁজে দেখতে হবে। তবে মনে হচ্ছে আপনার কথাই ঠিক। ২০১০ ই হবে। কারণ মার্চ ২০১০ এ ই-বই ডাউন করেছিলাম। সাল মনে হয় হেরফের হয়েছে।
যতদিন মোকছেদ আলীর কোন পান্ডুলিপি স্বচক্ষে দেখছেন না, তত দিন তো সন্দেহ থাকবেই। কিরা-কসম কেটে বিশ্বাস করাতেও চাই না।
ফরিদ ভাইকে আক্রমণ করেছি বলে কি মনে হয়? আমার ভেতর তো ঐরকম মনোভাব নাই। সেইরকম মনোভাব নিয়েও লিখিনি। তাহলে আপনার ভেতর এরকম বোধ হচ্ছে কেন? অবশ্য সেটা আপনার ক্ষেত্রে হতেই পারে, কারণ প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে বিতর্ক করার টেনডেন্সি তো আপনার মধ্যে রয়েছে। কথায় বলে- যার ভেতর যা ফাল দিয়ে ওঠে তা। ফরিদ ভাই যদি উপলব্ধি করেন, এটা ব্যক্তি আক্রমণ; তাহলে অবশ্যই ক্ষমা চাই। আমি তো মনে করি, ফরিদ ভাইয়ের যে ভাষাজ্ঞান রয়েছে। সেগুলো ব্যবহার করে তিনি চমৎকার একটি রিভিউ লিখতে পারবেন। সেটা লিখলে আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তি হবে। এইটুকু চাওয়া নিশ্চয়ই অন্যায় নয়।
আপনাকে আবার ব্যক্তি আক্রমণ করেছি বলে মনে করবেন না। আপনি ‘ঈশ্বর বিশ্বাস পরিমাপের স্কেল!!!আপনার অংশগ্রহণ চাই।’ বলেছেন-
“প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে বিতর্ক লাগিয়ে দেওয়া হল! মডারেটররা অতিষ্ট হয়ে এই থ্রেডে মন্তব্য করার সুযোগ বন্ধ করার আগ পর্যন্ত সবাই ব্যক্তিগত আক্রমণ পরিহার করে যুক্তির লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে আশা করছি!”
কুয়োর ব্যাঙকে রিভিউ-এ আহ্বান করছেন কেন? মামুন ভাই-ও একই প্রস্তাব দিয়েছেন। ভাইরে, এই কাম করতে হলে ট্রেনিং দরকার, জ্ঞান দরকার। সেগুলো যে আমার নাই তা আপনি ভালোমতই জানেন। তবে চেষ্টা করতে দোষ নেই। বিপ্লব আর প্রদীব দেব এর রিভিউগুলো পড়ে পড়ে নিজেকে আগে গড়ে তুলি। ট্রেনিং ছাড়া রিভিউ লিখলে, আর সেই লেখা যদি ফরিদ ভাই দেখেন, তাহলে যে ঝাড়ি খাবো তাতে বিছানা থেকে ওঠার শক্তিও হারিয়ে ফেলবো। তাই দোহাই ঐ কম্মটি আপাতত আমারে দিয়েন না।
ভালো থাকবেন।
@পথিক,
এইটাই ক্লাসিক হৈসে!!! আর আমিও এক মগা নিজের বই প্রকাশের সময়টাও ভুল লিখসিলাম। আর মাহফুজ সাহেবও গল্পের ঝাঁপি খুলে দিসে। সোনায় সহাগা একেবারে। :lotpot:
যাক আমার লেখাটা ঠিক করে দিলাম। বইটা আসলে ২০১০ সালের বইমেলাতেই বেরিয়েছে, ২০০৯ এ নয়।
@অভিজিৎদা,
এটা স্রেফ গল্প নয়। বই মেলায় আমার অভিজ্ঞতা। চোখের সামনে জ্বল জ্বল করে ভাসছে। ঐ তো আগামী প্রকাশনীতে গেলাম, অবসরে গেলাম, তবে সুদ্ধস্বর স্টলটার সাইনবোর্ডের দিকে তাকাই নাই। বইটার প্রতি আমার নজর ছিল।
বিশ্বাস করলে করেন, না করলে না করেন। কিন্তু যেই দিন ডায়েরী দেখামু, সেইদিন কইবেন এটা গল্পের ঝাপি না।
এ বিষয়ে পথিকের মন্তব্যে কিছু বলেছি। আর একটু বলতে চাই- মোকছেদ আলীর মৃত্যু ২০০৯ এ। সেটা বার বার টাইপ করি তো। তাই ভুল হয়া গ্যাছে।
@পথিক,
সন্দেহ জোরদার হয়েছে তাতে অসুবিধা নেই, তবে সন্দেহের দোলাচলে মন যেন বেশি আবার দুলে না উঠে। সেক্ষেত্রে মন্তব্যের অর্ধেক আসবে আর বাকি অর্ধেক হাওয়া হয়ে যাবে হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়ে। 🙂
মোকছেদ আলীকে নিয়ে আপনার সন্দেহ থাকলেও আমার কোন নেই। কারণ, তাঁর লেখা পড়তে পড়তে তাঁকে চিনে ফেলেছি আমি। মোকছেদ আলীর ঝোলা থেকে যেদিন অভিজিৎ নামের এই লেখাটি বের হলো সেদিনই মনে হলো যে তিনি আমার অনেকদিনের চেনাজানা লোক। সেই থেকে তাঁর বালসুলভ বদনখানা আর নিষ্পাপ চাহনি চিরতরে চিত্রিত হয়ে গিয়েছে আমার চিত্তে। এরপর যখন তাঁর এই লেখা নিয়ে বকবকানি লেখাটির শিরোনাম দেখলাম তখনই বুঝলাম যে কতখানি ভাল করে চিনি তাঁকে আমি।
আমার ধারণা ছিল যে, মুক্তমনায় আমিই একমাত্র ব্যক্তি যার চোখেই সবসময় কলসের নীচের ফুটোখানা চোখে পড়ে। এখন দেখছি সেটা ঠিক নয়। আরো অনেক ছিদ্রান্বেষীরই চোখ চলে যায় কলসির নীচের লুকোনো ছায়াঢাকা ছিদ্রতে। 😛
একসাথে অবাক ও আনন্দিত হলাম। ইয়াহু!! :guli:
অভিনন্দন অভি!!!
আলতাফ শাহনেওয়াজের রিভিউ খুব একটা পছন্দ হলো না আমার। মান্ধাতার আমলে বইয়ের রিভিউ মনে হয় এরকম হতো। বইয়ের রিভিউ কীভাবে করতে হয় তা বিপ্লব আর প্রদীপ দেবের কাছ থেকে লোকজনের শেখা উচিত।
তারপরেও আমি খুশি এই কারণে যে প্রথম আলোর এই রিভিউ এর জন্যেই অনেক লোক উৎসাহিত হবে বইটির বিষয়ে।
@ফরিদ ভাই, আমি আপনার কোন বাড়া ভাতে (স্যান্ডুইচে বা পিৎজাতে) ছাই দিয়েছি যে আমাকে এভাবে লজ্জা দিচ্ছেন? (এখানে প্রচুর ছাইপাশ পাওয়া যায়, কিন্তু ছাই নয়, সুতরাং দিতে বললেও তো দিতে পারবো না)
@প্রদীপ দেব,
ফরিদ ভাই কিন্তু খারাপ কিছু বলে নাই। আপনার রিভিউ লেখার হাত আসলেই অসাধারণ। যুক্তির রিভিউ লেখার সময় থেকেই লক্ষ্য করছি।
ছোট্ট একটু ব্যাখ্যা দেবার জন্য মন্তব্য করছি আবার। এই লেখায় আমার আগের মন্তব্যে আমি বলেছিলাম যে, আলতাফ শাহনেওয়াজের রিভিউটা আমার খুব একটা পছন্দ হয় নি। এই বক্তব্যটা আমার নিজের কাছেই পরে বেশ রূঢ় মনে হয়েছে। রিভিউটা পছন্দ হয় নি, সেটা সত্যি কথা। সে বিষয় থেকে অবশ্য আমি সরছিও না।
কিন্তু, যেটা আসলে উচিত ছিল আমার সেই কাজটাই করা হয় নি তখন। বইটার রিভিউ করার জন্য আলতাফ শাহনেওয়াজের বেশ বড়সড় একটা ধন্যবাদ পাওনা ছিল। এই ভদ্রলোকের সাথে অভির কোনো জানাশোনা নেই। অথচ তিনি খুঁজে পেতে এরকম একটা বই পড়েছেন এবং নিজের গরজে সেটির একটি পর্যালোচনাও লিখে ফেলেছেন প্রথম আলোতে। এর জন্য নিঃসন্দেহে সাধুবাদ এবং ধন্যবাদ তাঁর প্রাপ্য। আমার এই অনিচ্ছাকৃত কার্পণ্যের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। রিভিউটাকে অসম্পূর্ণ মনে হবার কারণ এটাও হতে পারে যে, প্রথম আলোতে হয়তো যে কোনো লেখার ক্ষেত্রেই সীমিত স্থানকে বরাদ্দ দেওয়া হয়।
ঠিক আছে আমরা লাইম লাইট দিচ্ছি। বইটাকে আমাদের বইবাজার
আমাজন স্টোরে তুলে দাও।
@বিপ্লব পাল,
এই উইক-এন্ডে কথা হবে এ নিয়ে। তোমার ইমেইলও পেয়েছি। সবকিছু নিয়েই কথা বলার ইচ্ছে আছে।
৮ম, ৯ম এবং পরিশিষ্ট ডাউনলোড করা যাচ্ছে না। দয়া করেএকটু দেখুন।
@আব্দুল হক,
৮ম, ৯ম এবং পরিশিষ্ট ডাউনলোডের জন্য নহে। উহারা বইয়ের ক্রেতাদের জন্য ইস্পিশাল 🙂 ।
@অভিজিৎ দা
আবার জিগস? :clap2: