আব্বু, আকাশ নীল কেন?
-এমনি।
এমনি হবে কেন? বল না আকাশ কেন নীল?
-আল্লাহ আকাশ কে নীল বানিয়েছেন।
তাহলে আল্লাহকে কে বানিয়েছেন?
-আল্লাহ কে কেউ বানায়নি। তিনি সব কিছু বানিয়েছেন।
ওহ! তিনি কোথায় থাকেন?
-সাত আকাশের উপর।
সাত আকাশের উপর কোথায় থাকেন?
-সাত আকাশের উপর আল্লাহর সিংহাসন আছে। সেখানে থাকেন।
আচ্ছা… উনি কি খান? কখন ঘুমান?
-তিনি খান না, ঘুমান না।
উনি খান না, ঘুমান না, তাহলে বসে বসে করেনটা কি?
-আল্লাহ কে নিয়ে এত প্রশ্ন করতে নেই! চুপ থাক।
কেন প্রশ্ন করতে নেই?
-কারণ তুমি বুঝনা। না বুঝে উলটাপালটা প্রশ্ন করছ। এরকম প্রশ্ন করলে আল্লাহ রাগ করবেন।
আল্লাহ রাগ করলে কি করবেন?
-আগুনে পোড়াবেন! এরকম যারা প্রশ্ন করে, আল্লাহ তাদের জন্যে অনেক বড় একটা জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে রেখেছেন। সেখানে যাদের উপর আল্লাহ রাগ করেছেন, তাদেরকে পোড়াবেন!
ও! আল্লাহ তাহলে মামদোভূতের মত! মা কাল রাতে বলেছে, না ঘুমালে মামদোভূত এসে ধরে নিয়ে যাবে, তারপর আগুনে পুড়িয়ে তার বাচ্চাদের খাওয়াবে!
-চুপ! আর একটা কথা বলবা না আল্লাহ কে নিয়ে! আল্লাহ আর মামদোভূত এক না।
আমি চুপ হয়ে গেলাম। কিন্তু আমার প্রশ্নগুলো মাথায় ঘুরতে থাকল। কেন মামদোভূত আর আল্লাহ এক না। বড় হতে থাকলাম উত্তর না পেয়ে। আস্তে আস্তে জানতে লাগলাম। আল্লাহ কে, জান্নাত কী, জাহান্নাম কী ইত্যাদি। সেই সাথে বড় হতে লাগল আমার প্রশ্ন। কাউকে জিজ্ঞাসা করতে পারলাম না। পারলাম না বলতে আমার অনুভূতিগুলো। কারণ সবার তুলতুলে ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে যে! সেই সাথে আল্লাহও এ তুচ্ছ মানুষের প্রশ্নে আঘাত প্রাপ্ত হন। কিন্তু তিনি বা তার অনুসারীরা কি করেন অন্যের অনুভূতির বেলায়? যে মানুষটিকে মুসলিমরা তাদের জাতির পিতা মনে করেন, তাকেই তারা কিভাবে অনুসরণ করছেন? ইসলামের সুত্রগুলো দেখা যাক।
আমরা সকলেই ইব্রাহীম এর কথা জানি। কুরানে তাকে মুসলিম জাতির পিতা বলা হয়েছে। তার মনেও মুর্তি পুজো নিয়ে জেগেছিল নানান প্রশ্ন। সুরা (৬) ‘আন আ’ম’এ স্রষ্টা সম্পর্কে ইব্রাহীমের ভাবনার কথাগু্লো লেখা আছে। নিজের যুক্তিবোধকে কাজে লাগিয়ে তিনি যখন বুঝতে পারলেন যে, এ সকল মুর্তির কোন শক্তি নেই, তখন তিনি তার পিতার সাথে তর্কে লিপ্ত হলেন, যার বর্ণনা সুরা(১৯) মারইয়ামে রয়েছে। যে সকল বস্তু শুনতে পারে না, কথা বলতে পারে না ইব্রাহীম এমন সব বস্তুর পূজা করার সমালোচনা করেছেন, এবং তার পিতা ধর্মাবিরোধী এসব প্রশ্নের কারণে তাকে হুমকি দিয়েছেন। ইব্রাহীম তার চিন্তা নিয়ে এখানেই থেমে ছিলেন না, তিনি তার সম্প্রদায় এর কাছে গিয়েছেন, প্রশ্ন করেছেন, এবং তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে সরাসরি আঘাত করেছেন। সুরা (২১) আম্বিয়ায় তার চমৎকার বর্ণনা এসেছে।
যখন তিনি তাঁর পিতা ও তাঁর সম্প্রদায়কে বললেনঃ এই মূর্তিগুলো কী, যাদের তোমরা পূজারী হয়ে বসে আছ।
তারা বললঃ আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে এদের পুজা করতে দেখেছি।
তিনি বললেনঃ তোমরা প্রকাশ্য গোমরাহীতে আছ এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও।
তারা বললঃ তুমি কি আমাদের কাছে সত্যসহ আগমন করেছ, না তুমি কৌতুক করছ?
তিনি বললেনঃ না, তিনিই তোমাদের পালনকর্তা যিনি নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের পালনকর্তা, যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন; এবং আমি এই বিষয়েরই সাক্ষ্যদাতা।
আল্লাহর কসম, যখন তোমরা চলে যাবে, তখন আমি তোমাদের মূর্তিগুলোর ব্যাপারে একটা ব্যবস্থা অবলম্বন করবো।
অতঃপর তিনি সেগুলোকে চূর্ণ-বিচুর্ণ করে দিলেন ওদের প্রধানটি ব্যতীতঃ যাতে তারা তাঁর কাছে প্রত্যাবর্তন করে।
তারা বললঃ আমাদের উপাস্যদের সাথে এরূপ ব্যবহার কে করল? সে তো নিশ্চয়ই কোন জালিম।
কতক লোকে বললঃ আমরা এক যুবককে তাদের সম্পর্কে বিরূপ আলোচনা করতে শুনেছি; তাকে ইব্রাহীম বলা হয়।
তারা বললঃ তাকে জনসমক্ষে উপস্থিত কর, যাতে তারা দেখে।
তারা বললঃ হে ইব্রাহীম তুমিই কি আমাদের উপাস্যদের সাথে এরূপ ব্যবহার করেছ?
তিনি বললেনঃ না এদের এই প্রধানই তো একাজ করেছে। অতএব তাদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তারা কথা বলতে পারে।
অতঃপর মনে মনে চিন্তা করল এবং বললঃ লোক সকল; তোমরাই বে ইনসাফ।
অতঃপর তারা ঝুঁকে গেল মস্তক নত করে, তুমি তো জান যে, এরা কথা বলে না
তিনি বললেনঃ তোমরা কি আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর এবাদত কর, যা তোমাদের কোন উপকার ও করতে পারে না এবং ক্ষতিও করতে পারে না ?
ধিক তোমাদের জন্যে এবং তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদেরই এবাদত কর, ওদের জন্যে। তোমরা কি বোঝ না?
তারা বললঃ একে পুড়িয়ে দাও এবং তোমাদের উপাস্যদের সাহায্য কর, যদি তোমরা কিছু করতে চাও। (সুরা আম্বিয়া ২১, আয়াত ৫২-৬৮)
ইব্রাহীমের এ ঘটনাসমুহ সাধারণ কিছু সত্যের দিকে আকৃষ্ট করে। মানুষের মৌলিক বৈশিষ্টই এসকল ঘটনায় প্রকাশিত হয়েছে। মানুষ প্রশ্ন করে জানার জন্যে। নিজে নিজে চিন্তা করে। অযৌক্তিক, অসার দাবীকে আঘাত করে চরম ভাবে। ইব্রাহীম তার সময়ের জ্ঞান অনুযায়ী দেখিয়েছেন মানুষের অমুলক দাবী, ধর্মীয় অনুভুতির আড়ালে রাখা অজ্ঞানতা, ভিত্তিহীন অযৌক্তিক দাবী সমুহের প্রতি সদ্য় হবার কোন প্রয়োজন নেই। তুলতুলে ধর্মানুভূতিতে আঘাত করার দাবী যুক্তির তরবারী থেকে বাঁচার ঢাল মাত্র। কিন্তু মুসলিমরা কি তা বোঝেন? এক্ষেত্রে মুসলিমরা আসলে কার অনুসারী? ইব্রাহীম না নমরুদের? আজ আমি যদি দাবী করি যে, কুরান আল্লাহর বাণী নয়। মুহাম্মাদ নবী ছিলেন না। যমযম কূপের কোন অলৌকিকত্ব নেই। মক্কা মদীনাকে প্রত্নতাত্বিক এলাকা হিসেবে ঘোষনা করুন। আমি কাবা ভেঙ্গে পাথরগুলোর পরীক্ষা করে দেখতে চাই এটি কত পুরনো। মদীনার কবরগুলো খুঁড়ে দেখতে চাই ওখানের মৃত মানুষের দেহগুলো সাধারন মানুষের মত কঙ্কাল হয়ে গেছে কি না? সেগুলোর ডি এন এ টেস্ট করে দেখতে চাই দেহগুলো কার? যমযম কুপ খুঁড়ে দেখতে চাই এর উৎস কোথায়? আমি ঐ কাবাকে বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিতে চাই, সেটা বাঁচাতে আল্লাহ আর আবাবীল পাখি পাঠান কিনা? আল্লাহ ও আল্লাহর অনুসারীগণ আমাকে সেই অনুমতি দিবেন? যদি আপনাদের ধর্ম সত্য হয়, তাহলে সত্যের মুখোমুখি হতে আপনাদের ভীত হওয়ার কথা নয়। ইব্রাহীম তার জ্ঞানানুযায়ী সমাজকে প্রশ্ন করে মূর্তি পুঁজোর যুক্তিহীনতা দেখিয়েছেন। সেই সময়ের মানুষের ধর্ম নিয়ে ইব্রাহীমের প্রশ্ন করা যদি তাদের ধর্মানুভুতিতে আঘাত করা না হয়, তাহলে আজ আমি যখন যুক্তির মাধ্যমে আল্লাহর অস্তিত্ব নিয়ে, ১৫০০ বছরের পুরনো ঘটনার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চাই, আপনারা একে আপনাদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত বলবেন কেন? সত্যের মুখোমুখী হতে যুক্তির বদলে আপনাদের হাতে খুনের অস্ত্র কেন? কেন আপনাদের মুখের ভাষা এত নোংরা? এর উত্তর ইসলামের ইতিহাসেই আছে।
প্রথমেই দেখে নেই অন্যের ধর্মানুভূতিতে আঘাতের ব্যাপারে কুরান কি বলে…
তোমরা তাদেরকে মন্দ বলো না, যাদের তারা আরাধনা করে আল্লাহকে ছেড়ে…
অতীব সুন্দর কথা। এ কথার উদ্দেশ্য কি? এটা জানানো যে অপরের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দেয়া ঠিক না? তা জানতে আয়াতের পরের অংশ দেখা যাক।
তাহলে তারা ধৃষ্টতা করে অজ্ঞতাবশতঃ আল্লাহকে মন্দ বলবে… (সুরা ৬ আন’আম, আয়াত ১০৮)
এতক্ষণে বুঝা গেল, কেন মুহাম্মাদ তার অনুসারীদেরকে অন্য ধর্মের উপাস্যদের মন্দ বলতে নিষেধ করেছেন। তিনি নিষেধ করেছেন কারণ ইট মারলে পাটকেলটি খেতে হয়। আর ইসলামের প্রথম যুগে বাপ-দাদার ধর্মকে আঘাত করায় এমনিতেই মুসলমানগণ সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলেন না। আরবের লোকেরা তাদের উপাস্যদের মন্দ বলা সহ্য করতে না পারায় মুহাম্মদকে একটি প্রস্তাব দেন। সুচতুর মুহাম্মাদ ভেবে দেখলেন যে এটি তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণের অনুকূল হবে। তখনই তিনি এ হুকুম জারী করলেন। সেই হুকুম সংক্রান্ত আয়াতটির শানে নুযুল মা’রেফুল কুরান থেকে পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে দিচ্ছি।
“কতিপয় কোরাইশ সর্দারের পরামর্শে আবু তালেবের কাছে যাওয়ার জন্যে একটি প্রতিনিধিদল গঠন করা হল। আবু সুফিয়ান, আবু জেহেল, আমর ইবনে আছ প্রমুখ সর্দার এ প্রতিনিধিদলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। সাক্ষাতের সময় নির্ধারণের জন্যে মুত্তালিব নামক এক ব্যক্তিকে দায়িত্ব অর্পণ করা হল। সে আবু তালেবের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে প্রতিনিধিদলকে সেখানে পৌছে দিল।
‘’ তারা আবু তালেবকে বললঃ আপনি আমাদের মান্যবর সর্দার। আপনি জানেন, আপনার ভ্রাতুষ্পুত্র মুহাম্মদ আমাদেরকে এবং আমাদের উপাস্যদেরকে ভীষণ কষ্টে ফেলে রেখেছেন। আমাদের অনুরোধ এই যে, তিনি যদি আমাদের উপাস্যদেরকে মন্দ না বলেন, তবে আমরা তার সাথে সন্ধি স্থাপন করবো। তিনি যেভাবে ইচ্ছা নিজ ধর্ম পালন করবেন, যাকে ইচ্ছা উপাস্য করবেন, আমরা কিছুই বলব না।“
আরবের লোকদের আত্মসম্মানবোধ অনেক বেশী ছিল। তারা তাদের উপাস্যদের মন্দ বলায় মুসলিমদের উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। তারা ভেবেছিলেন এ কষ্ট দূর করতে মুহাম্মাদকে হত্যা করবেন। তবে আবু তালিবের সম্মানার্থে তারা এ কাজ থেকে বিরত ছিলেন। তাদের আত্মসম্মানবোধ এত বেশী ছিল যে তাদের মধ্যে কয়েকজন আবু তালিবের মৃত্যুর পর মুহাম্মাদকে হত্যা করার প্রস্তাব করলে তারা এই বলে ফিরিয়ে দেন যে, এটি তাদের কাপুরুষতা প্রমাণ করবে। তাই তারা মুহাম্মাদকে সন্ধির প্রস্তাব দেন। তারাই আগে মুহাম্মাদের ধর্ম পালনের অধীকার মেনে নেন। শানে নুযুলেই দেখুন, আরবের লোকেরা মুহাম্মাদকে বলেছেন যে তাদের উপাস্যদের আঘাত না করে মুহাম্মাদ নিজের মত করে তার ধর্ম পালন করুক। মুহাম্মাদ ভেবে দেখলেন তার জন্যে প্রস্তাবটি বেশ সুবিধাজনক। তবে যেহেতু তিনি সমস্ত আরবের নেতা হবার সপ্ন দেখতেন, তাই তিনি তাদেরকে প্রথমে অন্য প্রস্তাব দিয়ে দেখলেন।
“ আবু তালেব রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে ডেকে বললেনঃ এরা সমাজের সর্দার, আপনার কাছে এসেছেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) প্রতিনিধিদলকে সম্বোধন করে বললেন আপনারা কি চান? তারা বললেনঃ আমাদের বাসনা, আপনি আমাদেরকে এবং আমাদের উপাস্যদেরকে মন্দ বলা থেকে বিরত থাকুন। আমরাও আপনাকে এবং আপনার উপাস্যকে মন্দ বলবোনা, এভাবে পারস্পারিক বিরোধের অবসান হবে।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ আচ্ছা, যদি আমি আপনাদের কথা মেনে নেই, তবে আপনারা কি এমন এক বাক্য উচ্চারণ করতে সম্মত হবেন, যা উচ্চারণ করলে আপনারা সমগ্র আরব জাহানের প্রভু হয়ে যাবেন এবং অনারবরাও আপনাদের অনুগত করদাতায় পরিণত হয়ে যাবে?”
এটি কি একজন সত্য প্রকাশকারীর চরিত্র? সত্যের প্রকাশক কি সত্য গ্রহনে প্রতিদানের প্রস্তাব করেন? উপরের বক্তব্যে মুহাম্মাদের সমস্ত আরবের নেতা হওয়ার তীব্র বাসনার কথাই ফুটে উঠেছে। তিনি আরবের নেতাদেরকে প্রলোভন দেখালেন যে, যদি তারা মুহাম্মাদকে তাদের নেতা হিসেবে মেনে নেয়, তবে তারা সমগ্র আরবের প্রভু তো হবেনই, এমনকি অনারবরাও তাদেরকে কর দিবে। তিনি কি সত্য প্রচার করতে এসেছিলেন, না কি মানুষকে একটি গোষ্ঠীর করদাতায় পরিণত করার জন্যে এসেছিলেন? আসলে মুহাম্মাদ আরব নেতাদের একটু নাড়ায়ে দেখলেন।
যাহোক, মুল আলোচনায় আবার ফিরে আসি। মুহাম্মাদের এ প্রস্তাবে আরবের লোকেরা তার কুটচাল বুঝতে পারলেন। তারা বুঝতে পারলেন যে, মুহাম্মাদ তাদের উপাস্যদেরকে মন্দ বলা থেকে বিরত থাকবেন না। তখন তারা হুমকি দিলেন যে, যদি তিনি এ ধরনের কাজ বন্ধ না করেন, তাহলে মুহাম্মাদ যার উপাসনা করেন, তাকে তারাও মন্দ বলবেন। মক্কার লোকেরা আল্লাহকে বিশ্বাস করতেন (সুরা ২৯: আয়াত ৬১,৬৩)। ফলে তারা বলেন নি যে, তারা আল্লাহকে গালি দিবেন। বরং তারা বলেছিলেন যে, সেই সত্তাকে গালি দিবেন যে সত্তাকে মুহাম্মাদ বিশ্বাস করেন। মুহাম্মাদ যখন দেখলেন তার চালটা কাজে আসলোনা, তখন তিনি ভেবে দেখলেন, কাফেরদের এ প্রস্তাব মেনে নিলে ধর্ম প্রচার তার জন্যে বরং সুবিধের হয়। তখন তিনি তার অনুসারীদের এ নির্দেশ দিলেন। কিন্তু মনেমনে ঠিকই তাদের প্রতি শত্রুতা পোষন করতে থাকলেন। এবং তার অনুসারীদেরও নির্দেশ করলেন, যতক্ষণ না তারা মুসলিম হবে, ততক্ষণ তাদের প্রতি শ্ত্রু মনোভাব বজায় রাখতে (সুরা ৬০: আয়াত ৪)।
রাজনৈতিক কারণে মুহাম্মাদ আপাতত অন্যের ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেয়ার প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও শক্তি বৃদ্ধির সাথে সাথে তিনি তার সমালচোনাকারী ও তার উপাস্যের সমালচোনাকারীদের হত্যা করার আয়াত নাজিল করেন। ইতিহাসে আমরা দেখতে পাই মুহাম্মাদ ও তার অনুসারীরা কাপুরুষের ন্যায় রাতের অন্ধকারে অথবা ঘুমন্ত অবস্থায় নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকল সমালচোনাকারীদের নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছেন। এ কারণেই আজকেও আমরা দেখি সভ্য জগতে মুসলিমরা যুক্তির বদলে তরবারীর কথা বলেন, খুন হত্যার হুমকি দেন। ‘ইসলামীক প্রশ্ন উত্তর’ নামক ওয়েব সাইটের এমন একটি ফতোয়া দেখুন…
The ruling on one who insults the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him)
The scholars are unanimously agreed that a Muslim who insults the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) becomes a kaafir and an apostate who is to be executed.
http://www.islam-qa.com/en/ref/22809/insult%20muhammad
http://www.islam-qa.com/en/ref/12930
কিন্তু এই মুহাম্মাদের অনুসারীরাই অন্যের ধর্মানুভুতির কোন পাত্তা দেন না। তারা মানুষের ধর্মানুভুতিকে অত্যন্ত বাজে ভাষায় আঘাত করেন।
অমুসলিমদের প্রতি ইসলামের প্রথম ও দিতীয় খলিফা হজরত আবুবকর ও হজরত ওমরের পবিত্র মুখে উচ্চারিত কিছু কথা শুনা যাক…
“Urwah went to the Prophet and began speaking to him. The Prophet spoke as he had spoken to Budayl. Then Urwah said: “Muhammad, tell me: if you extirpate [i.e. exterminate] your tribesmen, have you ever heard of any of the Arabs who destroyed his own race before you? And if the contrary comes to pass, by God I see both prominent people and rabble who are likely to flee and leave you.” Abu Bakr said, “Go suck the clitoris of al-Lat! Would we flee and leave him?” (History of al-Tabari, Volume 8, p. 76)”
“Hind [a Meccan woman who had lost her father, son, and brother to Muhammad’s raiders at Badr] stopped to mutilate the Muslim dead, cutting off their ears and noses until she was able to make anklets and necklaces of them. Then she ripped open Hamzah’s body for his liver and chewed it. Then she climbed a high rock and screamed rajaz poetry at the top of her voice, taunting us. ‘We have paid you back for Badr. A war that follows a war is always violent. I could not bear the loss of Utba nor my brother, his uncle, or my first-born son. I have slaked my vengeance and fulfilled my vow.’ Umar recited these verses back to her: ‘The vile woman was insolent, and she was habitually base with disbelief. May Allah curse Hind, she with the large clitoris. …Her backside and her genitals are covered with ulcers as a result of spending too much time in the saddle… ‘” (Ibne Ishaq:385)
কি মধুর ভাষা রাসুলের সংগী সাথীদের! স্বজনহারা একজন নারীর ক্ষোভের জবাবে এটি হল সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মানুষদের মুখের ভাষা! এ কারণেই মুসলামনারা যখন তরবারী দিয়ে আঘাতের সুযোগ পান না, তখন তাদের মুখের ভাষাও এরকম জঘন্য, নোংরা, অশ্লীল হতে দেখা যায়। আর তাদের নেতা মুহাম্মাদ কি কম যান? তার ব্যক্তি আক্রোশের প্রমাণ সুরা লাহাব আজো বহন করে চলেছে। আবার তিনিই তার কবি সাহাবীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন…
Narrated Al-Bara: The Prophet said to hassan, “abuse them (with your poems), and Gabriel is with you (i.e, supports you).” (Through another group of sub narrators) Al-Bara bin Azib said, “On the day of Quraiza’s (besiege), Allah’s Apostle said to hassan bin Thabit, ‘abuse them (with your poems), and Gabriel is with you (i.e. supports you).’ ” (Bukhari; Book #59, Hadith #449)
নিরস্ত্র, নিরপরাধ অসহায় মানুষগুলোকে বন্দী করে গালিগালাজের আদেশ দিলেন মুহাম্মদ। এটা একজন উচ্চাভিলাষী সামরিক নেতার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত কিছু নয়, কিন্তু একজন নবী কি তা করতে পারেন? আজকের গুয়ান্তানামো সহ পৃথিবীর জঘন্য বন্দী শিবিরে সামরিক জান্তা কর্তৃক অমানুষিক নির্যাতন, যুদ্ধ-বন্দীদের প্রতি আশালীন অভদ্রে আচরণ আর মুহাম্মদ ও তার সামরিক বাহিনীর ভাষা ও আচরণে মূলত কোন পার্থক্য আছে কি? আজ তথ্য-প্রযুক্তি, ইন্টারনেটের কল্যাণে মুসলমানদের কালো অধ্যায় প্রকাশ হয়ে পড়েছে। সভ্যতার চাকা সামনের দিকে এগিয়ে নিতেই মুহাম্মদের আসল রূপ ও ইসলামের কুৎসিত ইতিহাস সমাজের সামনে তুলে ধরতে হচ্ছে। প্রাচীন সব নৈতিকতা মানবিকতা আজকের বোধের সাথে বেমানান হয়ে পড়েছে। যুদ্ধবন্দীদের সাথে আচরণের যে ব্যাবস্থাটি পনেরো-শত বছর আগে সম্পুর্ণ ঠিক মনে করা হত। তা আজকের পৃথিবীর যে কেউ করলে আমরা নিন্দা করি, প্রতিবাদে ফেটে পড়ি মিছিলের মাধ্যমে, টেলিভিশনে বলার মাধ্যমে, লিখার মাধ্যমে। সে কাজ করতে যেয়ে যে কারো ভালবাসার বিষয়কে সমালচোনায় আনতেই হয়। যেমন বুশের কর্মকান্ডের সমালোচনা করতে হলে বুশের চরিত্র আলোচনায় আসতে পারে। এতে করে বুশের ভক্তদের কষ্ট হতে পারে। তা থেকে বাঁচতে ভালবাসার বস্তুকে আঘাতের দোহাই তোলা অথবা ধর্মানুভূতির দোহাই তোলা কাপুরুষতার শামিল।
ইসলামের সুত্রগুলো থেকেই আমরা দেখলাম যে মুসলিমদের জাতীর পিতা ধর্মানুভূতির আড়ালে কুসংস্কার ও কুপমন্ডুকতাকে প্রশ্রয় দেন নি। নিজের যুক্তিগুলো বলিষ্ঠভাবে উপস্থাপন করেছেন। মুহাম্মাদও তার ধর্ম প্রচার করতে গিয়ে প্রথমে ইবরাহীমকে অনুসরণ করলেও পরবর্তীতে নিজের স্বার্থে অনুসারীদেরকে ধর্মানুভুতিতে আঘাত করতে নিষেধ করেছেন। তারপরেও কুরানে সে সকল আয়াত রহিত হয়নি এবং শক্তিশালী হবার পর তিনি ও তার অনুসারীরা আগের চেয়ে ভয়ংকর রুপ ধারন করেন। তারা অন্যের অনুভুতিতে আঘাত করেছেনই, আবার যারা তাদের সমালচোনা করেছে, তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে। এভাবেই তিনি যুক্তি ও সমালচোনার দ্বারকে ধর্মানুভুতির ঢাল দিয়ে প্রতিহত করতে চেয়েছেন এবং তার অনুসারীদের জন্যে জ্ঞানের দুয়ার রুদ্ধ করে দিয়েছেন চিরদিনের জন্যে।
অন্ধের হাতি দেখার মত বিশ্লেষণ বলতে পারেন অনেকে।
প্রথম প্রস্তাবঃ ধুমপান খারাপ। এটা ছেড়ে দিন।
প্রতিক্রিয়াঃ ধুমপানকে খারাপ বলবেন না। তাহলে আমরাও আপনাকে খারাপ বলবনা।
দ্বিতীয় প্রস্তাবঃ যদি আপনার প্রস্তাব মেনে নেই তাহলে কি ধুমপান ছেড়ে জীবনের ঝুঁকি কমাবেন ???
একই রকম হতে পারে পরের ব্যাখ্যাটিঃ
“ আবু তালেব রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে ডেকে বললেনঃ এরা সমাজের সর্দার, আপনার কাছে এসেছেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) প্রতিনিধিদলকে সম্বোধন করে বললেন আপনারা কি চান? তারা বললেনঃ আমাদের বাসনা, আপনি আমাদেরকে এবং আমাদের উপাস্যদেরকে মন্দ বলা থেকে বিরত থাকুন। আমরাও আপনাকে এবং আপনার উপাস্যকে মন্দ বলবোনা, এভাবে পারস্পারিক বিরোধের অবসান হবে।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ আচ্ছা, যদি আমি আপনাদের কথা মেনে নেই, তবে আপনারা কি এমন এক বাক্য উচ্চারণ করতে সম্মত হবেন, যা উচ্চারণ করলে আপনারা সমগ্র আরব জাহানের প্রভু হয়ে যাবেন এবং অনারবরাও আপনাদের অনুগত করদাতায় পরিণত হয়ে যাবে?”
প্রশ্ন হলো সৃষ্টি্কর্তা আছে না নেই? ধর্ম কেনো? এত ধর্মের কি দরকার? ধর্ম পালনে কি লাভ? কোন ধর্ম পালনে লাভ বেশি? মানুষের কাজ কি? বিজ্ঞানে প্রমাণ খুঁজে না পেলে তাকে কি ভ্রান্ত বলা হয়???
@যাযাবর,
মানুষকে বিবর্তন তত্ত্ব শোনানোর কথা আমরা এখানে বলছি না । ধর্ম বাদীদের এপ্রোচ করার সময় শুধু মনস্তাত্ত্বিক ব্যপার গুলো মাথায় রাখতে বলছি । এছাড়া বিড়ালের রং কোন বিষয় নয় । ইঁদুর ধরাই যেহেতু আসল ।
@অভিজিৎ ,
এ ব্যপারে আমি একমত যে , “বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের ব্যাখ্যা থাকুক আর নাই থাকুক, আনাসের এ লেখাগুলোর গুরুত্বও অপরিসীম”। আনাস সহ সকলের উচিৎ কিছুটা কম করে হলেও ধর্মের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ তাদের লেখায় টেনে আনা । সংশয়কে জমাট বাঁধতে এটা যথেষ্ট সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস ।
শুধুমাত্র যু্ক্তি-তর্ক দিয়ে ধর্মবাদীদের বদলানো সম্ভব নয় । যু্ক্তি-তর্ক সাধারনত: তাদের এক কানে প্রবেশ করে আবার অন্য কান দিয়ে বেরিয়ে যায় । শেষ পর্যন্ত এই যু্ক্তি-তর্ক একজন পাড় নাস্তিকের কাছে পুনরায় নাস্তিকতা প্রচারে পর্যবেশিত হবে ।
ধর্মবাদীদের মন থেকে ধর্মের ধূয়া পরিষ্কার করতে হলে আমাদের প্রথমেই ধর্মকে বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের আতশি দি্য়ে বিচার করতে হবে । ধর্মের বিকাশকে কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে ধরলে চলবে না । হাজার হাজার বছর আগে আমাদের আদিম পূর্বপুরুষদের কিছু স্বাভাবিক সীমাবদ্ধতার কারনেই প্রথমে সমাজ প্রথা এবং পরে ধর্মের আবির্ভাব ঘটে । এখন ধর্মের এই অতীতকে অস্বীকার করে মানুষের মন থেকে ধর্মকে বিদায় করার চিন্তা বিলাসিতাই মাত্র । আমাদের প্রথমেই মানুষের মন থেকে এই অতীত ছেটে ফেলে সেখানে ধর্মের চেয়েও আকর্ষণীয় মাদকের বীজ বপন করতে হবে যা কেবল কথার ফুলঝরি নয় , পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে সহজে অনুভব করা যায় ।
@সংশপ্তক,
:yes: আমি সেজন্যই ইদানিং বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের ব্যাখ্যাকে প্রাধান্য দিয়েই লেখা লিখতে চেষ্টা করি। এই বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের বিশ্লেষণগুলো এ পর্যন্ত কেবল একাডেমিক লেভেলেই সীমাবদ্ধ ছিল। বাংলাতে তো বটেই এমনকি ইংরেজীতেও খুব বেশি বিশ্লেষণ চোখে পড়ে না। এটার প্রয়োজনীয়তা যে ধীরে ধীরে প্রকাশিত হতে শুরু করেছে এটা দারুণ আশার ব্যাপার।
কিন্তু তারপরেও বলব, বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের ব্যাখ্যা থাকুক আর নাই থাকুক, আনাসের এ লেখাগুলোর গুরুত্বও অপরিসীম। সাধারণ পাঠকেরা এই লেখাগুলো দিয়েই সংশয় শুরু করতে পারেন, পরে এক সময় অর্থনৈতিক, সামাজিক কিংব বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে যাওয়া যেতে পারে। সবকিছুরই দরকার আছে।
@অভিজিৎ,
:yes:
আলোচনা একাডেমিক অর্থে সফিসটিকেটেড হলেই খুব সফল হবে, এ ধারণা অদ্ভুত ঠেকে। যারা যুক্তি-তর্কে হার মানবেন না, তারা বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান দেখলেই থমকে দঁাড়াবেন কেন? একেক জনের একেক ধংয়ের আলোচনায় একটি বহুমাত্রিকতা অর্জনই তো কাঙ্ক্ষিত বলে মনে হয়।
@সংশপ্তক,
যারা যুক্তি মানে না তারা বিবর্তনের তত্বই বা মানবে কেন? ধর্মবাদীরা তো বিবর্তনেই বিশ্বাস করে না তা আবার বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান! আবার অনেক ধর্মবাদীরা আবার বিবর্তনেও বিশ্বাস করে। তারা বিবর্তনের সাথে কুরাণেরে কোন বিরোধ নেই এটাও বিশ্বাস করে! আর বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান দিয়ে এখানে তো শুধু ধর্ষণ, প্রেম ইত্যাদি আলোচনা হচ্ছে। তাতে তাদের মন থেকে ধর্মের ধূয়া পরিষ্কার হবে কেমন করে? কুরাণ, হাদিস এগুলিই ইসলাম ধর্মের ভিত। কুরাণের অসারতা প্রমাণ করতে ম্যাট্রিক লেভেল জ্ঞান ও লাগে না, বড় বড় পেপার এর রেফারেন্স লাগে না। সাধারণ যুক্তি দিয়েই সহজে তা বোঝান যায়। আর যারা এই যুক্তি পড়ে ইসলামে বিশ্বাস হারায় তারা অতি সহজেই বিবর্তন মেনে নিতে পারে। কিন্তু উল্টোটা সত্য নয়। ইন্টার্নেটের বদৌলতে এখন নতুন প্রজন্মের অনেক মানুষই প্রথম বারের মত ইসলামের সত্যিকার রূপের সাথে পরিচিত হচ্ছে। যত বেশী এই ধরণের লেখা প্রকাশিত হবে ততই এটা অনেকের কাছে পৌঁছাবার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। বিবর্তনের শিক্ষা একই সাথে চলুক। সেটাও অনেকের কাছে জীবন/বিশাস পরিবর্তনকারী। দুটোরই গুরুত্ব্ব আছে। তবে আমার মনে হয় প্রথম পথেই বেশি মানুষকে নড়ান সম্ভব।
পড়েছি আগেই, আজকে মন্তব্য করলাম। দুর্দান্ত লিখেছেন, বলার অপেক্ষা রাখে না। :yes:
মাঝে মাঝেই বেশ কিছু ইমেইল/ফেইসবুক মেসেজ পাই, জঘন্য গালাগালিতে ভরা। কয়েকদিন ফোনেও হুমকি দিয়েছে। কি আশ্চর্য ব্যাপার!
@আসিফ মহিউদ্দীন,
এ নিয়ে অবাক হবার কিছু নেই, ধার্মিক ভাইয়েরা ধর্মের সমালোচনাকে ব্যাক্তিগত আক্রমন হিসেবে ধরে নেন। সেভাবেই তারা জবাব দেন।
যদিও তারাই আবার তাদের ধর্মের উদারতা,সহিষ্মুতা এসব সম্পর্কে খুব উচ্চ ধারনা পোষন করেন ও গর্ব করেন।
@আদিল মাহমুদ,
ধর্মপ্রবর্তকেরা মানব জাতির অংশ, প্রত্যেকেই রক্তমাংশের মানুষ ছিলেন। তারা তো তাদেরকে একদম বাপদাদার সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছেন।
মানুষ হিসেবে আমি প্রতিটা মানুষ সম্পর্কে নিজের মতামত তুলে ধরতে পারি।একটা স্বাধীন দেশে এটা আমার অধিকার হওয়া উচিৎ, এই সাধারন ব্যাপারটা তারা কেন ধরতে পারেন না আমি জানি না। মুহাম্মদ যীশু বুদ্ধ প্রত্যেকেই আমার মতই মানুষ, তাদের সম্পর্কে বস্তুনিষ্ঠ আলোচনায় তাদের ভীতিই প্রমান করে তারা কতটা অসহায়, নিজেদের ধর্ম সম্পর্কে তারা কতটা হীনমন্যতায় ভোগেন।
@আসিফ মহিউদ্দীন,
ধর্মবাদীদের কাছে ধর্মের ব্যাপারে স্বাধীন মতামত দেবার অধিকার কারো নেই। ওনারা অবশ্য মুখে স্বীকার করবেন না, কারন তাহলে আবার তারা বা তাদের ধর্ম উদার নয় এই অভিযোগ উঠবে, সেটাও আবার মানতে তাদের বাধা। মুখে বলবেন যে তাদের ধর্মে মুক্তচিন্তায় কোন সমস্যা নেই, যেকোন বিষয় নিয়েই আলোচনা সমালোচনার দ্বারা সবসময়ই খোলা। তবে যেটা বলেন না সেটা হল যতক্ষন না এই আলোচনা তাদের প্রচলিত বিশ্বাসের চুল পরিমান বিরুদ্ধে যায়। অন্য কথায়; আলোচনা সমালোচনা সবই হতে পারে তবে তা হতে হবে ওনাদের মন মত। এর বাইরে গেলেই আসল চেহারা বেরিয়ে যাবে। তখন মুক্তচিন্তা খোলা আলোচনা সব উদারতার পথ বন্ধ।
শুরু হয়ে যাবে ব্যাক্তিগত আক্রমন। এসব উন্মাদের সাথে আলোচনা চালানোরও উপায় থাকে না। অদ্ভূত অদ্ভূত অভিযোগ আর যুক্তির মোকাবিলা করতে হয় যা স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে বোঝা যায় না। যেমন, আপনি কোন হাদিসের রেফারেন্স দিয়ে মহানবীর চরিত্র বিষয়ক প্রশ্ন তুললেন। তার প্রতিক্রিয়া হবে আপনি কত বড় ইসলাম বিদ্বেষি। যিনি এই হাদীস লিখেছেন এবং হাজার বছর ধরে লালন পালন করা হচ্ছে তাদের কিন্তু কোনই দোষ নেই। ওনাদের কথায় একমত হতে না পারলেই অবশ্যম্ভাবী পরিনতি।
দোষ হবে আপনার, আপনি কেন এটার কথা বলতে গেলেন? চেপে গেলেন না কেন? চেপে গেলেই ভাল ধার্মিক, পাক্কা ঈমান্দার। এর নাম কি ধর্ম বা এতে কি কল্যান নিহিত থাকতে পারে তা আমি বুঝি না।
@আসিফ মহিউদ্দীন,
এ বিষয়ে আপনার লিখাটি বেশী ভাল লেগেছে। পড়ার জন্যে ধন্যবাদ 🙂
যতক্ষন না বাস্তবিক, পার্থিব, পদার্থিক কোন ক্ষতিসাধন হইতেছে ততক্ষন আপনি যতই ফিলিংস্এ হিট খান না কেন, আপনাকে Guiter মারিয়া নিরস্ত থাকিতে হইবে……………….
প্রত্যেকটা বিষয় বা বস্তুর নিজস্ব ধর্ম বা বৈশিষ্ট বিদ্যমান । যেমন পানির ধর্ম হলো উপর থেকে নীচে গড়ানো । তেমনি পুজিবাদের বৈশিষ্ট হলো টাকা কামানো । মসজিদ নির্মানের জন্য একজন কন্সট্রাকশন কনট্রাকটরের প্রয়োজন হবে । নির্মান কাজে সর্বনিম্ন মুনফা ২৫% । ১০০ মিলিয়নে মুনফা ২৫ মিলিয়ন । পুজিবাদী রাষ্ট্রএর বৈশিষ্ট হলো মুনফা নিশ্চিত করা । অতএব কে মসজিদ বানালো তা দেখার এবং অর্থের উৎস খোঁজার দায়ীত্ব রাষ্ট্র বা কনট্রাকটরের নয় ।
@আ. হা. মহিউদ্দীন,
দেশের প্রচলিত আইন মেনে মসজিদ বা চার্চ মন্দির বানানলে তাতে আপত্তির কিছু থাকতে পারে না।
তবে ইসলাম বিদ্বেষীদের প্রান কেন্দ্রে এই রকম প্রচেষ্টা খুবই কৌতুককর।
চলুক। :yes:
আগে দেখতাম পশ্চিমা দেশ সমূহে ধর্মীয় উদারতা আর গনতন্ত্রের নামে ধর্ম নিয়ে খুব তীব্র সমালোচনা হতো না। ইদানিং সে ট্রেডিশনের পরিবর্তন ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। ইউরোপ আমেরিকাতে বেশ কিছু রাজনীতিবিদ এখন সোচ্চার হয়েছে ইসলামকে সে সুযোগ দেয়া উচিত কিনা। তারা খুব উচ্চ কন্ঠে কোরানের সন্ত্রাসী ও হিংসামূলক আয়াতগুলো উল্লেখ করে সমালোচনা করছে দেখলাম। বোঝাই যাচ্ছে, পশ্চিমা দেশসমূহে ইসলাম ধর্মের স্বাধীনতা বোধ হয় বেশীদিন থাকবে না । তার পরেও নিউইয়র্কের জিরো পয়েন্টে ১০০ মিলিয়ন ডলারের মসজিদ তৈরীর প্রজেক্ট কিভাবে বা কেন হচ্ছে ঠিক বোধগম্য নয়। কেউ কি এ বিষয়ে কিছু বলবেন ?
@ভবঘুরে,
মেয়র ব্লুমবার্গ এর নাম জানেন কিনা জানি না। নিউ-ইয়র্কের এক নম্বর মাস্তান বলা যেতে পারে এই লোকটাকে। সে তার রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার জন্য যেকোন কিছু করতে পারে, রিপাব্লিকান ও হতে পারে আবার ওবামার জুতা পরিস্কার করে দিতে পারে। আরো মজার ব্যাপার হলো, সবাই জানে যে সে মেয়র হিসেবে সিটি থেকে এক পয়সাও বেতন নেয় না।
মেয়র সাহেব বলেছেন, ঐ বিল্ডিং এর মালিক যা ইচ্ছা তা বানাতে পারে, আর সেই বিল্ডিং এর মালিক সম্ভবত এক ইমাম… তাই তেনার কাজ তিনি করছেন এখানে সিটির কিছু করার নেই। আসলে নিউ-ইয়র্কে খুব বড় ধরনের একটা মুসলিম ভোট ব্যাংক আছে ব্লুমবার্গের এইটাকে ঠিক রাখার জন্য ব্লুমবার্গ অনেক জায়গায় অনেক মসজিদ বানানোর অনুমতি দিয়েছে, আর সেইসবের কিছু মসজিদে মাইক লাগিয়ে আজান দেওয়া হয়। এইসবের অবশ্যম্ভাবী পরিনতি হলো এই গ্রাউন্ড জিরো মসজিদ। আমি মোটেও অবাক হই নি এটা শুনে, যতদিন নিউ-ইয়র্কে ব্লুমবার্গ আছে ততদিন আরো অনেককিছু হতে পারে।
@ভবঘুরে,
এ শম্পরকে নিচের দুটো আরটিকেল দেখতে পার।
http://www.nytimes.com/2010/08/04/opinion/04friedman.html?_r=1
http://www.psychologytoday.com/blog/side-effects/201008/the-manhattan-mosque-tale-two-islams
@ভবঘুরে,
যে ছাগলের গায়ে হঠাৎ করেই ঘি মাখানো তৈলাক্ত লোম গজায়, আমরা অনুমান করি এটাকে কোরবানীর আগে স্পেশিয়েল খানা-পিনা সরবরাহ করে বিশেষ ভাবে যতন করা হচ্ছে। মুসলমানের কুরবানীর চাঁদ উঠেছে। গীর্জা বন্ধ করে সেখানে মসজিদ (কসাই খানা) বানানো হচ্ছে, মুসলমানকে কোরবানী দেয়ার লক্ষ্যে। পশ্চিমের পোষা সাদ্দাম ও বিন লাদেনের কোরবানী দেখেও মুসলমান তা বুঝতে পারছেনা।
অসাধারণ বিশ্লেষণ। এরকম লেখার জন্য প্রচুর পরিশ্রম ও ধৈর্যের প্রয়োজন হয়।
ভবঘুরের মন্তব্য না দেখলে হয়ত এ লেখাটি দেখতামই না। আমার ধারনা ছিল যে এটি একটি কবিতা, কারন ফ্রন্ট পেজে শুধু ওপরের ক লাইনই দেখা যায়।
কোরানকে ইতিহাসের সাথে মিলিয়ে এ রকম বিশ্লেষন প্রসংশার দাবী রাখে। কোরানের ব্যাখায়ই সবসময় স্কলাররা বলেন যে কন্টেক্সট বুঝতে হবে। তার প্রয়োযন অবশ্যই আছে।
@আদিল মাহমুদ,
@আদিল মাহমুদ,
ভালই! এরপর থেকে আনাস নামীয় কোন ব্লগার এর লেখা দেখলে নিশ্চিত জানবেন সে কবিতা লিখে নাই। কারন সাইফুল ভাই এর মত কবিতা শক্তির ক ও তার মাঝে নাই!
সম্প্রতি এক হিন্দুর মামলা, নাস্তিকদের মন্তব্য ও মুহাম্মদের কার্টুনকে কেন্দ্র করে মুসলিমদের ধর্মানুভুতির যুক্তি শুনতে শুনতে এ নিবন্ধটি লিখলাম। ভেবেছিলাম অন্য কোথাও প্রকাশ করব। কিন্তু সেই নোংরা ভাষা শোনার ভয়ে আর তা করলাম না। সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন মুক্তমনাতেই প্রকাশ করলাম।
আর কন্টেক্সট থেকে লিখা প্রায় ভুলে যেতেই বসেছিলাম কুরান অনলিদের কারণে। পরে দেখলাম তারা ছাড়া অন্য মুসলিমদের কাছে কন্টেক্সট এর গুরুত্ব আছে। সময় করে পড়ার জন্যে ধন্যবাদ।
@আনাস, 🙂
ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগলে আপত্তি হতেই পারে, তাতে কোন ভুল নেই।
মুশকিল হল ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগতে দেখি যখনই কোন রিচূয়ালের ব্যাপারে কেউ সন্দেহ পোষন করে বা নবী রসূলের নওবুওত্ব বা চরিত্র নিয়ে সন্দেহ করে তখন।
কিন্তু ধর্মের নামে চোখের সামনে হাজার ভন্ডামী, অমানবিক কার কারবার এসব চললে তখন কারো ধর্মানভূতিতে কোন রকম সমস্যা হয় না।
ধর্মের নামে অনার কিলিং? ফতোয়া দিয়ে কাউকে দোররা মারা বা উলংগ করে গ্রাম ঘোরানো? এসবে ঈমান্দার ভাইদের ধর্ম পালনের কোন সমস্যা হয় না। এসব নিয়ে তাদের কোনদিন তেমন চিন্তিত হতে দেখি না।
@আদিল মাহমুদ,
লিখায় আরো কিছু যোগ করতে চেয়েছিলাম। যেমন যুক্তিবাদীদের অনুভুতি। যারা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভংগি অনুসরণ করেন। তাদেরকে যখন মেরাজ নিয়ে ইমামের অবৈজ্ঞানিক কথা শুনতে হয়। তখন তাদেরও কষ্ট হয়। সে পরিস্থিতে এ লোকটি যদি প্রতিবাদ করেন তবে তার যে কি দশা হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আবার আমি যেমন মক্কা মদিনার প্রচলিত অলৌকিক বিষয়গুল নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছি, এ বিষয়টি সাধারণ কোন ব্লগে প্রকাশ করলে এত আরামে থাকতে পারতাম না।
প্রত্যেকেরই অনুভুতির বা ভালবাসার বস্তু আছে। ক্ষেত্রে বিশেষে সমালোচনায় তা আসতেই পারে। তখন যৌক্তিকভাবেই তা মোকাবেলা করতে হবে। এক্ষেত্রে মুহাম্মাদের দ্বিমুখী নীতিও তুলে ধরেছি।
খুবই যুক্তিপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ। এই রাজনৈতিক শুদ্ধিতার যুগে যখন মুসলিমরা ইসলামের যে কোন সামান্যতম সমালোচনার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগার জিগির তোলে আর প্রাণনাশের চেষ্টা করে, তখন সবাইকে এটা স্মরণ করিয়ে দেয়া উচিত যে ইসলামের সূচনাই হয়েছে অন্য ধর্মের প্রতি আঘাত হানার মাধ্যমে । আকাবার দ্বিতীয় চুক্তিতে মোহাম্মদ তাঁর অনুসারীদের এই প্রতিজ্ঞাই দিয়েছিলেন যে তিনি পৃথিবীর সকল কাফিরদের বিরুদ্ধে লড়বেন। এটাতেই পরিস্কার যে শুধু নিজের ধর্ম প্রচারই নয় অন্য ধর্মের বিনাশ সাধন করে ইসলামী একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠাই তাঁর উদ্দেশ্য ছিল। লেখাটার জন্য আনাস ধন্যবাদার্হ। এরকম লেখা বারে বারে আসুক।
@যাযাবর,
ধন্যবাদ 🙂
@যাযাবর, আমি কুরান এবং বাইবেলে দেখেচি প্রথম দিকে পর ধরম সহনশিল কিন্তু যখন নিজের শক্তি হয় তখনআঘাত করে, আমার কাছে তাই মনে হয়
পিতার সাথে সন্তানের কথোপকথনে আমারও একটি বাস্তব কথোপকথন মনে পড়লো।
কন্যা: আচ্ছা মা, আল্লাহর কাছে সব চাইলে আল্লাহ কি সব দেন?
মা: হ্যা, তা তিনি দিতে পারেন।
কন্যা: আমার দুধ খেতে পছন্দ। আচ্ছা মা আল্লাহর কি গরুর মত বড় বড় দুধ আছে?
মা: এস
@মাহফুজ,
মন্তব্য পুরোটা এলো না কেন? মন্তব্য করার অধিকার কি হরণ করা হচ্ছে? কী জানি, হতেও পারে। নিজেকে সন্দেহের দোলায় দোলায়িত করছি।
@মাহফুজ,
আপনার কোন অধিকারই হরণ করা হয়নি। কমেন্ট ঠিকমত করতে পারেননি বলেই কমেন্ট আসেনি। আবার চেষ্টা করেন। ট্রাই দেয়ার সময় বেশি দোলাদুলি না করাই ভাল হবে মনে হয়। 🙂
@অভিজিৎ,
:laugh:
@অভিজিৎ,
বাক্যটির অর্থ বুঝতে পারছি না। প্লিজ একটু বুঝিয়ে দিবেন। এখানে ট্রাই শব্দের অর্থই বা কী?
@মাহফুজ,
নেট স্লো হলে কমেন্ট করার সময় অন্য সাইটে গুতানো,ডা্উনলোড করা বন্ধ রাখেন। ঠিকমত না আসলে আবার পোস্ট করেন,পুরোনোটা মুছে দেয়া হবে।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
এইবার মুক্তমনায় ঢুকে আমি অন্য কোনো সাইটে গুতাতে কিম্বা কোনো কিছু ডাউনলোডও করিনি।
ট্রাই দেয়ার সময় বেশি দোলাদুলি না করাই ভাল হবে মনে হয়।
বোল্ডকৃত বাক্যটির অর্থ বুঝতে পারছি না। প্লিজ একটু বুঝিয়ে দিবেন। এখানে ট্রাই শব্দের অর্থই বা কী?
৭৭ বার পাঠ করে ফেললো দেখি নিবন্ধটি কিন্তু কারো কোন মন্তব্য নেই, বিষয় কি ? দারুন আকর্ষণীয় নিবন্ধ নি:সন্দেহে । কিন্তু খারাপ লাগছে এই ভেবে যে , লেখক সাহেবের জন্যেও মনে হয় এতোক্ষনে জাহান্নামে একটা সীট বুক হয়ে গেছে। 🙁
@ভবঘুরে,
জাহান্নামেই সিট বুক? আমিতো করি নাই। অন্য কেউ আমার নামে করছে নাকি?