মুসলিম বিশ্বের শিক্ষা ও শক্তি
উত্তর পুরুষ

কমিউনিজম ভেঙ্গে গেছে এখন ‘ইসলামকে ভেঙ্গে দেয়ার পায়তারা চলছে’। এমন উক্তির জবাবে দু’টি প্রশ্ন স্বভাবতই মনে জাগে। (এক) তাহলে কি ইসলামে এমন প্রযুক্তি ও বাহুবল লুকিয়ে আছে,যে বাহুবলের নিকট পৃথিবীর সকল ধনী রাষ্ট্রের মারণাস্ত্র, বোমা, অস্ত্রসম্ভার, ব্যবসা বাণিজ্য প্রভৃতি মার খাবে এক ম্যাজিকের মতো ? আর একারণে ইসলামকে ভেঙ্গে দেয়ার পায়তারা চলছে। কারণ পৃথিবীর সব শক্তির মূলমন্ত্র হচ্ছে ” জোর যার মুল্লুক তার”। একারণে নিষ্ঠুর ইহুদিরা দুর্বল প্যালেস্টাইনীদের অবিরত নির্যাতন করে যাচ্ছে। রক্তের বন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছে দেশ। কেউ তাদেরকে সামাল দিতে পারছেনা। এই যুদ্ধ ও রক্তপাতের মূল কারণ হচ্ছে ধর্ম এবং ধর্মীয় সামপ্রদায়িকতা। যা সেই অতীতকাল থেকে শুরু হয়েছিল।
(দুই) ইসলামের নীতিবল যদি বোমা ও বুলেটের চেয়ে শক্তিশালী হতে হয় তবে তাও প্রমাণ করতে হবে কাজে কর্মে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে নীতিবলকে কার্যকরী করতে হলে “শক্তি” ছাড়া কোন আদেশ কার্যকরী হয় না। তাহলে ‘ইসলামকে ভেঙ্গে দেয়ার পায়তারা চলছে’ এ বক্তব্যটি আমরা কিভাবে বিবেচনা করবো ? মুসলমান রাষ্ট্রে আমাদের চরিত্র অমুসলিমদের চেয়ে ও খারাপ, কিংবা কোরআনের ভাষা অনুযায়ী মুসলিম রাষ্ট্রের সরকার বা কর্ণধার প্রকৃত মুসলিম আদর্শের অনুসারী নয়, এই ঝগড়া তর্ক করে আমরা অমুসলিমদের কিছুতেই বুঝাতে পারবো না যে, ইসলামী আর্দেশর নীতি থেকে বিচ্যুতি হওয়ার কারণেই আজকের বিশ্ব-মুসলিমদের অবস্থা এই চরমে। বিশ্বের অমুসলিমরা বিশেষ করে ইউরোপ, আমেরিকা, ক্যানাডা, সাউথ আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা ইত্যাদি দেশের সরকারগুলো যদি মুসলামানদের ঘৃণা বা অপছন্দ করে থাকে তাহলে তাদের দেশে স্থানে স্থানে মসজিদ, মাদ্রাসা ইত্যাদি নির্মাণ করার জন্য উদার ভাবে অনুমতি দেয় কেমনে ? বাংলাদেশে’তো নতুন গীর্জা কিংবা হিন্দু মন্দির ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করতে গেলে মোল্লা মামাগণ “বেদীনে দেশ দখল করে নিচ্ছে” বলে চিৎকার করতে করতে মহাপ্রলয় ঘটিয়ে ফেলবেন। “আহমদিয়া” কিংবা স্বাধীন চেতা উপজাতি মুসলিম গ্রুপদের তারা কিভাবে নাজেহাল করেছিলেন এবং এখনও করছেন তা’তো আমাদের প্রত্যেকের’ই জানা। আর পাকিস্তানের মওদুদী সাহেব তো যে ভাবে ধর্মের নামে অধর্ম আমদানীর ইতিহাস রচনা করেছেন তা থেকে কি প্রমাণ হয় না উদার মনের মানুষ কারা ?
(৩) বিশ্বে এমন কোন মুসলিম দেশ বিগত কয়েক শতাব্দিতে এমন ভাবে গড়ে উঠেনি, যেটা অমুসলিমদের চোখে একটা মডেল বা আদর্শ হয়ে আছে। আজকের মধ্যপ্রাচ্যে যে সমস্ত দেশগুলো গায়েবী খনিজ সম্পদে ধনী হয়েছে বলে গর্ব করে, তাদের মধ্যেও বহু আদর্শ নেই। তাদের ধনী হওয়ার পেছনে পাশ্চাত্যের বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ব্যতীত অন্য কোন প্রযুক্তির অবদান নেই। তাহলে ইসলামকি শুধু পরকালের বাণী নিয়েই ঠিকে থাকবে ? ইসলামী চিন্তাবিদ ও মনীষিরা কি এ ব্যাপারে কোন ভূমিকা পালন করবেন না ? যেহেতু অর্থনৈতিক মুক্তি মানুষের কাছে বড় ধর্ম হয়ে দাড়িয়েছে।
(৪) এই নিবন্ধে আজকে আমি মুসলিম, ইহুদী ও খৃষ্টান জাতির তুলনামূলক শিক্ষা ও শক্তির কথা তুলে ধরবো। সকল মুসলিম বিবেকবান ভাইদের কাছে অনুরোধ থাকলো বিষয়টি তারা যেন গভীর ভাবে খতিয়ে দেখেন। ভাবাবেগ ও কল্পনাকে দুরে সরিয়ে রেখে, বাস্তবতাকে সবাই যেন বুঝার চেষ্টা করেন। তথ্যগুলো আপনারা ইন্টারনেটে খোঁজ নিলে পাবেন। এতদ্ব্যতীত ইউরোপের যে কোন বৃহৎ লাইব্রেরী কিংবা জাতিসংঘের ওয়ার্লড এজুকেশন কমপ্রিহেনসিভ ওয়েভ পেইজ গুলোতে বিচরণ করলে দেখতে পাবেন।
● জনসংখ্যার বিস্তার ও তুলনা ●
বর্তমান বিশ্বে ইহুদী জাতির জনসংখ্যা হচ্ছে ১৪ মিলিয়নের উপরে। অর্থাৎ এক কোটি চার লক্ষ।
এর মধ্যে প্রায় ৭ (সাত) মিলিয়ন আমেরিকায়
প্রায় ৫ (পাঁচ) মিলিয়ন এশিয়ায়
২(দুই) মিলিয়ন ইউরোপে
প্রায় ১০০ হাজারের মত আফ্রিকায়।
বর্তমান বিশ্বে মুসলিম জাতির জনসংখ্যা হচ্ছে ১.৫ বা দেড় বিলিয়নের উপরে।
অর্থাৎ দেড় শত কোটির উপরে। (একশো কোটিতে এক বিলিয়ন)
এর মধ্যে এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য মিলে
জনসংখ্যার পরিমান প্রায় এক বিলিয়ন বা ১০০শত কোটি
আফ্রিকা মহাদেশে আছে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন বা চল্লিশ কোটি।
ইউরোপ মহাদেশে আছে প্রায় ৪৪ মিলিয়ন বা চার কোটি, চার লক্ষ।
এবং উত্তর আমেরিকা আছে প্রায় ৬ মিলিয়ন বা ষাট লক্ষ।
উপরোক্ত জনসংখ্যার তুলনায়, বিশ্বের পাঁচজন মানুষের মধ্যে একজন হচ্ছেন মুসলমান।
একজন হিন্দু কিংবা একজন বৌদ্ধের বিপরীতে আছেন দু’জন মুসলমান।
একজন ইহুদীর বিপরীতে আছেন ১০৭ জন মুসলমান।

● বিশ্বের বর্তমান ইতিহাসে যাদের নাম সবচেয়ে বেশী উচ্চারিত হচ্ছে তারা হলেন ●
১। আলবার্ট আইনস্টাইন
২। সিগমন্ড ফ্রয়েড
৩। কার্ল মার্ক্স
৪। পাউল সামুয়েলসান।
তাঁরা সকলেই জাতিতে ইহুদী ছিলেন।

● বর্তমান চিকিৎসা জগতে যাদের অবদান সবচেয়ে অবিস্মরণীয় তারা হলেন ●
১। বেঞ্জামিন রুবেন। রোগ প্রতিরোধের জন্য ভেকসিন সুচ আবিস্কার কর্তা
২। জনাস সল্ক। পলিও ভেকসিনের আবিস্কার কর্তা।
৩। গের্টাড এলিওন। লিউকেমিয়ার ঔষাধ আবিস্কার কর্তা
৪। বারুচ ব্লুমর্বেগ। হেপাটাইটিস বি এর আবিস্কার কর্তা
৫। পাউল এরলিশ। সিফিলিস রোগের ঔষাধ আবিস্কার কর্তা
৬। এলি মেটচেনিকফ। নিউরো মাসকুলার এর উদ্ভাবক।
৭। আন্দ্রে শেলী । এন্ডেক্রিনোলজির উদ্ভাবক।
৮। এ্যরন ব্যাক । কগনিটিফ থেরাপী এর আবিস্কার কর্তা
৯। গ্রেগরী পিনকাস। কনট্রাসেপটিব পিল এর আবিস্কার কর্তা
১০। জর্জ ওয়াল্দ । চক্ষু চিকিৎসার সকল খুটিনাটির উদ্ভাবক।
১১। ষ্টেনলি কোহেন । এমব্রিওলজির উদ্ভাবক
১২। উইলেম ক্লফকাম। কিডনী ডাইলোসিস এর উদ্ভাবক।
উল্লেখ্য যে তাঁরা সকলেই জাতিতে ইহুদী। মনে রাখা দরকার তারা ইহুদী ধর্মে বিশ্বাসী হয়ে যাওয়ার কারণে তা হয়নি। হয়েছে অধ্যবসায়, শ্রম এবং উচ্চতর শিক্ষার প্রতি মনোনিবেশ করার কারণে।

● নবেল প্রাইজ বিজয়ী ●
বিগত ১০৫ বৎসরের মধ্যে ইহুদী ১ কোটি চার লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে থেকে ১৮০ জন পেয়েছেন বিশ্বের সেরা নোবেল প্রাইজ। অথচ ১৫০ কোটি মুসলমানদের মধ্যে নোবেল পেয়েছেন মাত্র ৮ জন। তাও শান্তির জন্য ৫ জন এবং আবিস্কার বা নতুন উদ্ভাবনের জন্য পেয়েছেন মাত্র তিন জন।

যাদের অশেষ শ্রম এবং অধ্যবসায়ের কারণে আজকের পৃথিবী সৃষ্টি করেছে নতুন ইতিহাস তারা হলেন
১। স্টেনলী মেজর। (কম্পিউটারের) মাইক্রো প্রসেসিং চীপ এর উদ্ভাবক।
২। লিও সিলান্ট । নিউক্লিয়ার চেইন রিয়েক্টর এর উদ্ভাবক।
৩। পিটার সুটছ । অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল এর উদ্ভাবক।
৪। চার্লস এডলার। ট্রাফিক লাইট (যানজট নিয়ন্ত্রন) এর উদ্ভাবক।
৫। বেনো স্ট্রাউছ । স্টেইনলেস ষ্টিল এর আবিস্কার কর্তা
৬। ইসাডর কিসি। সাউন্ড মুভি (সবাক চলচ্চিত্র) এর উদ্ভাবক।
৭। এমিল বার্লিনার। টেলিফোন মাইক্রোফন এর আবিস্কার কর্তা
৮। চার্লস গিনসবার্গ। ভিডিও টেপ রেকর্ডার এর আবিস্কার কর্তা
উপরে উল্লিখিত সকলেই জাতিতে ইহুদী।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : অতীতকালের জ্ঞানী মুসলিম দার্শনিকদের তথ্যাদি চুরি করে ইহুদীরা এসব কামিয়েছে এরকম মন্তব্য থেকে দয়া করে দূরে থাকবেন। তা না হলে প্রশ্ন দাড়াবে ওরাই যদি তাই চুরি করে থাকে তাহলে মুসলমানরা কেন সাচ্চা থেকেও ওদের থেকে অধিক জ্ঞানী হতে পারলেন না ?

● বিশ্বের ব্যবসায়ে যে সমস্ত নাম বা কোম্পানীর প্রভাব ও সুনাম সবচেয়ে বেশী,সেগুলো হচ্ছে ●

১। পলো। (বস্ত্র ব্যবসা)। রাফ লরেন (Ralph Lauren)
৩। কোকা কোলা । (শীতল পানীয়)
৪। লেভিস জিন্স। নীল সুতার জীন বস্ত্র। লেভি ষ্ট্রাউছ
৫। ষ্টারবাক্স (কফি ও কফিজাত পানীয়ের ব্যবসা) হাওয়ার্ড সুল্টছ
৬ । গোগল, (ইন্টারনেট সারভার) সার্জে ব্রিন।
৭। ডেল কম্পিউটারস । ( কম্পিউটার/ কম্পিউটারের খুচরা যন্ত্রাংশ) মাইকেল ডেল
৮। অরাকোল। (কম্পিউটারের নানাবিধ সফ্টওয়ার উৎপাদক) লেরী এলিসন
৯। ডি কে এন ওয়াই ( ইলেকট্রনিঙ্ ও পারফিউম) ডনা কারান
১০। বাসকীন এন্ড রবিন্স। ডেয়ারী প্রডাক্ট। ইরভ রবিন্স
১১। ডানকিন্স ডনাট্স। (বিখ্যাত কফি ও প্রেষ্ট্রি উৎপাদক) বিল রজেনর্বেগ।
উপরে উলি্লখিত ব্যবসা কিংবা কোম্পানী সমুহ একমাত্র ইহুদী জাতির।

● বুদ্ধিমান ও খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব , রাজনীতিবিদ ●
১। হেনরী কিসিঞ্জার। এক সময়ের আমেরিকার সেক্রেটারী অফ স্টেট।
২। রির্চাড লেভিন। প্রেসিডেন্ট, এইল ইউনিভার্সিটি
৩। এলান গ্রীনস্পান। আমেরিকান ফেডারেল রিজার্ভ প্রধান ।
৪। জোসেফ লিভারম্যান।
৫। আলব্রাইট মেডেলিন । আমেরিকার সেক্রেটারী অফ স্টেট।
৬। কেসপার ওয়াইনবের্গ। আমেরিকার সেক্রেটারী অফ ডিফেন্স।
৭। ম্যাক্সিম লিথভিনব। এক সময়ের রাশিয়ান ফরেইন মিনিষ্টার।
৮। ডেভিড মার্শাল। সিঙাপুরের চীপ মিনিষ্টার।
৯। আইজ্যাক্স আইজ্যাক । গর্ভনর জেনারেল অফ অষ্ট্রেলিয়া।
১০। বেনজামিন ডিজরেলী । ব্রিটিশ স্টেটসম্যান।
১১। এভেঞ্জি প্রিমাকভ। এক সময়ের রাশিয়ান প্রাইম মিনিষ্টার।
১২। বেরী গোল্ডওয়াটার। আমেরিকান রাজনীতিবিদ।
১৪। জর্জ সামপিও। পর্তুগালের প্রেসিডেন্ড।
১৫। হার্ভ গ্রে। ক্যানাডিয়ান ডেপুটি প্রাইম মিনিষ্টার।
১৪। পিয়েরে মেনডেস। এক কালের, ফ্রান্সের প্রাইম মিনিষ্টার।
১৫। মাইকেল হাওয়ার্ড । এক সময়ের ব্রিটিশ হোম সেক্রেটারী।
১৬। ব্রুনো ক্রিসকী। এক সময়ের অষ্ট্রিয়ান চ্যানসেলোর
১৭। রর্বাট রুবিন। আমেরিকার সেক্রেটারী অফ ট্রেজারী

উপরে উল্লিখিত ব্যক্তিবর্গ সকলেই ছিলেন জাতিতে ইহুদী

● বিশ্ব প্রভাবিত প্রচার মাধ্যম। যার মালিক,প্রকাশ কিংবা সম্পাদক হচ্ছেন ইহুদী ব্যক্তিত্ব ●

সি এন এন। ওলফ ব্লিটজার
এ বি সি নিউজ। বারবারা ওয়ালটার্স।
ওয়াশিংটন পোষ্ট। ইউগেন মায়ার।
টাইম ম্যাগাজিন। (সাপ্তাহিক) হেনরী গ্রুনওর্য়াল্ড
ওয়াসিংটন পোষ্ট ক্যাথারিন গ্রাহাম
নিউ ইর্য়ক টাইম্স। জোসেফ লেলইয়েল্ড। ১৯৯৪-২০০১
নিউ ইর্য়ক টাইম্স। ম্যাক্স ফ্রাঙ্কেল। (১৯৮৬ -১৯৯৪)

দু’জন খ্যাতিমান ইহুদী (ফিলএনথ্রোপিস্টস) যারা হাসপাতাল,
শিক্ষা, এতিমখানা, মিউজিয়াম ইত্যাদিতে বৃহৎ অঙ্কের অর্থ অনুদান করেন।
১। জর্জ সরোজ ২। ওয়ালটার আনেনবের্গ

● কয়েকজন ইহুদী অলিম্পিক গোল্ড মেডালিস্ট ●
মার্ক স্পিটস। তিনি পেয়েছেন সাতটি গোল্ড মেডাল।
ক্রেজেল বাগ। একটি করে ।
বরিস ব্যাকার একটি করে।

● বিশ্ব নেতৃত্বের ভূমিকায় বর্তমান শিক্ষা, প্রযুক্তি ও আনুষাঙ্গিক ●
১। বর্তমান মুসলিম বিশ্বের ৫৭ টি দেশে প্রকৃত বিশ্ব বিদ্যালয়ের পরিমান হচ্ছে ৫০০ (পাঁচশত) টি
২। কেবল মাত্র আমেরিকায় বিশ্ব-বিদ্যালয় আছে ৫৭৫৮ (পাঁচ হাজার সাত শত আটান্নোটি)
৩। ভারতে আছে ৮৪০৭ (আট হাজার চারিশত সাতটি) ইউনিভার্সিটি ও কলেজ।এর মধ্যে ইউনিভার্সিটির সংখ্যা ৪৬৯। সুত্র : (ইন্ডিয়াষ্টাডিচ্যানেল.কম। ইন্ডিয়াষ্টাডিসেন্টার ডট কম।
বিশ্বে যে খ্যাতিমান (টপ র‌্যাঙ্কের) পাঁচ শতটি ইউনিভার্সিটি আছে, সেই তালিকায় ইসলামিক বা মুসলিম বিশ্বের কোন ইউনিভার্সিটির নাম নেই।
৪। বিশ্বের ক্রিশ্চান সমাজে শিক্ষার হার ৯০% (নব্বুই ভাগ)
৫। বিশ্বের মুসলিম সমাজে শিক্ষার হার ৪০% (চল্লিশ ভাগ)
৬। বিশ্বের ১৫ টি ক্রিশ্চান সংখ্যাগুরু দেশে শিক্ষার হার ১০০% (একশত ভাগ)
৭। অধিকাংশ মুসলিম দেশে শিক্ষার হার ৫% (পাঁচ ভাগ)
৮। বিশ্বের ক্রিশ্চান দেশ সমুহে প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সমাপ্ত করে শতকরা (৯৮%) আটান্নব্বই ভাগ ছাত্র ছাত্রী।
৯। বিশ্বের ৫৭টি মুসলিম দেশের মধ্যে মাত্র ২৬ টি দেশের শিশুরা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সমাপ্ত করে,
তাও অধিকাংশ ছাত্র। ছাত্রীরা থাকে অনুপস্তিত।
১০। শতকরা ৪০% (চল্লিশটি) ক্রিশ্চান দেশের ছাত্র ছাত্রীরা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়ন করে।
১১। আর মুসলিম দেশের শতকরা ৩% (তিন ভাগ) ছাত্র ছাত্রীরা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়ন করে।
১২। অধিকাংশ মুসলিম দেশে, এক মিলিয়ন জনসংখার মধ্যে, বিজ্ঞানীর সংখ্যা ২৩০ জন।
১৩। আমেরিকায় এক মিলিয়ন জনসংখ্যার মধ্যে, বিজ্ঞানীর সংখ্যা ৫০০০ (পাঁচ হাজার)
১৪। ক্রিশ্চান বিশ্বে এক মিলিয়ন জনসংখ্যার মধ্যে, প্রযুক্তিবিদ বা টেকনিশিয়ানদের
সংখ্যা ১০০০ (এক হাজার) জন।
১৫। সমস্ত আরব বিশ্বের প্রতি এক মিলিয়ন জনসংখ্যার মধ্যে, প্রযুক্তিবিদ বা টেকনিশিয়ানদের সংখ্যা
৫০ (পঞ্চাশ) জন।
১৬। গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য মুসলিম বিশ্ব খরচা করে, জিডিপি (গ্রস ডমেস্টিক প্রডাক্ট)এর ০.২%
১৭। গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য ক্রিশ্চান বিশ্ব খরচা করে, জিডিপি এর ৫% ( শতকরা পাঁচ ভাগ)
১৮। উচ্চ প্রযুক্তির উৎপাদিত পণ্য বা দ্রব্যের মাত্র ১% (এক ভাগ) পাকিস্তান বর্হিদেশে রফতানী করে।
১৯। উচ্চ প্রযুক্তির উৎপাদিত পণ্য বা দ্রব্যের মাত্র ০.৩% (জিরো পয়েন্ট তিন ভাগ) সৌদী আরব বর্হিদেশে রফতানী করে।
২০। তদ্রূপ কুয়েত, মরক্কো, আলজিরিয়া ০.৩% (জিরো পয়েন্ট তিন ভাগ) বর্হিদেশে রফতানী করে।
২১। উচ্চ প্রযুক্তির উৎপাদিত পণ্য বা দ্রব্যের ৫৮% (আটান্নো ভাগ) সিঙ্গাপুর বর্হিদেশে রফতানী করে।

উপরের খতিয়ানগুলো স্থির মাথায় যাচাই করে দেখুন। মুসলিম ভাইয়েরা আজ শিক্ষার দিক দিয়ে কত পশ্চাতে। আজকের মুসলমান জাতির শিক্ষা দীক্ষার দিকে তেমন খেয়াল নেই। তাদের অধিকাংশ মনে করেন রাছুল (সঃ) স্কুল কলেজে না গিয়েও যখন নবুয়তি পেয়েছেন এবং আল্লাহর সাথে বন্ধুত্ব করে শেষ বিচারের দিনে সাফায়াত বা সুপারিশকারী হিসেবে ভার নিয়েছেন সুতরাং চিন্তার কোন কারণ নেই। এখন শুধু হজ্জ্ব পালন করতে পারলেই জীবনটা স্বার্থক। এই আশ্বাসে প্রিয় নবীকে খুশ রাখার জন্য তিনির নামে সালাম ও দুরুদের প্রবাহ বয়ে চলেছে অবিরাম গতিতে। মুসলিম যুগের “বনু আব্বাসীয় খলিফা আল-মুতাওয়াক্কিল আলাল-লাহের আমলে ২৩২ হিজরীতে হাদীস সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়। এ সময়ে আবু বকর ইবনে শায়বা ‘জামে রাসাফায়’ হাদীস শিক্ষাদান শুরু করেন। ফলে তাঁহার নিকট হইতে হাদীস শিক্ষার জন্য মুসলিম জাহানের বিভিন্ন অঞ্চল হইতে প্রায় ত্রিশ হাজার শিক্ষাথীর্রা সমবেত হয়”। (হাদীস সংকলনের ইতিহাস, মওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম, দশম সংস্করন জানুয়ারী ২০০৭, পৃষ্টা ৩৬৫ ) ঐ সময় থেকে অতীতের সাহাবী এবং তাবে তাবেঈনদের সুত্র ধরে রসুলের চলা ফেরা, কোরআনের সমর্থনে বিভিন্ন বাণী, সামাজিক নিয়ম কানুন, প্রার্থণা, পাক পবিত্রতা ইত্যাদি নিয়ে সহস্র সহস্র হাদিছ লিখে হাদিছবেত্তাগণ মুসলমানদের মাথা ভারী করেছেন। এসব লিখার জন্য কি কোরআনের কোথাও তাগিদ এসেছিল ? যদি তাগিদ আসতো তাহলে ইসলামের ৫টি স্তম্ভের বদলে ৬টি স্তম্ভ হতো ধর্মের মুল খুঁটি। অতি ভক্তিদ্বারা আরবদেশীয় একটি ধর্মকে কি ভাবে জটিল করা হয়েছে তার প্রমাণ আজকের মুসলমান পন্ডিতদের বাড়াবাড়ি। পবিত্র কোরআনে আয়াত আছে মাত্র ৬৬৬৬ টি। আর রছুলের জীবন কাহিনী ও হাদিছ কাহিনী গড়তে গিয়ে মুসলামানরা সৃষ্টি করেছেন ছয় কোটির ও বেশী আয়াত। এসব আয়াত পুঙ্খানুপুঙ্খু ভাবে কয়জনে মেনে চলেন ? তাহলে বিবেকবানরা চিন্তা করে দেখুন, বিশ্ব নেতৃত্বের জন্য যে বহুমুখী শিক্ষার প্রয়োজন সেই অনুপাতে মুসলিম বিশ্বের কি শিক্ষা এবং কি শক্তি আছে ? শিরক এবং কুফর এদুটি পাপ যদি আপনি না করেন আর হিংসা বিদ্বেষ ভুলে, সৎ উপার্জনে টিকে থাকতে পারেন তাহলে আপনি যেকোন ধর্মে বিশ্বাসী হোন না কেন, আপনি অবশ্যই মুক্তি পাবার আশা করতে পারেন। বিষয়টি আপনার নিজ বিবেক থেকেই যাচাই করুন।
.