মেরা জুতা হ্যায় জাপানী
মেরা পাতলুন ইংলীস্তানী।
লাল টুপি রুশী
ফিরভি দিল হ্যায় হিন্দুস্তানী।
রাজকাপূরের ঠোটে আওয়ারা ছবির একটি বিখ্যাত গান। সেই রাজকাপুরের মুখশ্রী আর সুনীল দত্তের দীর্ঘ দেহধারী আমার এই নিবন্ধের নায়ক। নাম হরে বনিক – হরে। সীঁথিকাটা পরিপাটি চুল। কার্ত্তিকের এক জোড়া গোঁফ। পৃথিবীর সমস্ত রাজপুত্রদের তেজ, দীপ্তি, সৌন্দর্য আর আত্মবিশ্বাস ঐ একটি মুখাবয়বে। বিধাতা অকাতরে তাঁকে সৌন্দর্য দিয়েছেন। কিন্তু কবি, সাহিত্যিক, গায়ক, লেখক, সমাজসেবক বা কথার যাদুকর, ইত্যাকার সমস্ত গুণ থেকে বঞ্চিত করেছেন। তাঁকে অতি সাধারণ একজন মানুষ করেই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। ফলে তিনি কারও স্মৃতিতে থাকার কোন কারণ নেই। আজ থেকে চুয়াল্লিশ বছর আগে তাঁর প্রথম মৃত্যুটি স্বচক্ষে দেখেছিলাম। তখন আমার মনে তেমন কোন ভাবাবেগ হয়নি। হরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজন সাধারণ মানুষ। সেই বয়সেই জেনে গেছি এদের মৃত্যু এভাবেই। বয়স বেড়েছে। ঘটনাটি নিস্প্রভ হয়ে গেছে। অনুরূপ আরো অনেক ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি। ফলে প্রতিটি নতুন ঘটনার সাথে নিস্প্রভ প্রদীপ খানি ঝাপটা বাতাসে ক্ষনিক দীপ্যমান হয়েছে। ঘটনাগুলোর মূল্যায়ন করতে যেয়ে শুধুই মনে হয়েছে – সংখ্যালঘু হয়ে জন্মই আজন্ম পাপ।
হরে বংশসূত্রে বনিক, ব্যবসায়ী। মুদি দোকানী। সাধারণ মুদিদের চেয়ে আলাদা। আকারে একটু খানি বড়। সাধু ব্যবসায়ী হিসেবে সারা অঞ্চলে খ্যাতি। চুয়াল্লিশ বছর অনেক গুলো বছরের সমষ্টি। তার পরেও তাঁকে দিবালোকের মত পরিষ্কার দেখতে পাই। তাঁর মৃত্যুযন্ত্রনার গভীরতা অনুভব করি। আর তাঁর সেই প্রথম করুণ মৃত্যুর ভিতর দিয়ে সমস্ত সংখ্যালঘুর মৃত্যু্দশা অনুভব করি আজও।
আমি চিত্রশিল্পী নই। স্মৃতি থেকে আঁকার ব্যর্থ চেষ্টা মাত্র। তবে মুখের জ্যমিতিটা অনেক খানি আনতে পেরেছি। ৪০ বছরের হরেকে দেখেছি অনেকটা এরকম। কানের দুপাশে চুল একটু বেশী হয়ে গেছে। সামনের চুলগুলো আরও একটু উপরে।
আমার আঁকা এবং বর্ণনা নির্ভর করে এঁকেছেন ভাস্কর, চিত্রশিল্পী এবং আর্কিটেক্ট
ডঃ আলী আজাদ চৌধূরী। যুব বয়সে হয়তো এমনটাই ছিলেন।
ধামরাই থেকে ছমাইল উত্তর-পশ্চিমে বংশীনদীর ধারে কুশুরা বাজার। প্রতি শনি ও মঙ্গল বারে হাট বসে। তিন তিনটি মহিশের গাড়ী আসে মাইল পাঁচেক পুবে শিমূলিয়া থেকে। বর্ষাকালে নতুন জল আসে। নদী হয় প্রকান্ড, ভয়ালমূর্তি। এ পাশ থেকে ওপাশের লোকটি পুরুষ কি মহিলা সনাক্ত করা যায়। কিন্তু চেনা যায় না। তখন তিনি আসেন বিরাট বজরা নৌকা নিয়ে।
তখন নয়ারহাট থেকে একটাকা দশ আনায় মুড়ির টিনে ঢাকা চক বাজার যাওয়া যেত। প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকদের গয়নার নৌকা আর লঞ্চই একমাত্র মাধ্যম। টাঙ্গাইলের এলাশিন থেকে লঞ্চ যেত ঢাকা। কুশুরা থামত। দূর থেকে লঞ্চের শব্দ শুনতাম। ঘন্টা আধেক আগে থেকেই অপেক্ষা করতাম। লোকজন উঠত, নামত। লঞ্চে উঠার সুযোগ হয়নি। ওর ভিতরে কী আছে! কোথায় বসতে হয়! কিছুই জানিনা। একদিন নিজেই পড়লাম। গায়ে বড় বড় করে লেখা – “তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রীদের উঠা নিষেধ।” হতাশ হলাম। সবে তৃতীয় শ্রেণীতে উঠেছি। লঞ্চে উঠার যোগ্যতা অর্জন করতে পুরো একটা বছর অপেক্ষা করতে হবে। এখন এসব মনে পড়লে বড্ড হাসি পায়।
হরে প্রথমে হাটের অন্য মুদিদেরকে পাইকারী দরে মুদি সামগ্রী সরবরাহ করতেন। তারপর খুঁচরা বিক্রি। লঞ্চ দেখা এবং সারা হাটে ঘুরে বেড়ানো একটা নেশার মত ছিল। হরের মুদী ব্যবসা দেখা ছিল একটি অন্যতম আকর্ষণ। পুবমূখী একটা বাচারি ঘর। মাটিতে চটের উপর বিছানো দোকান। বড়জোড় ২০০ বর্গফুট জায়গা। সর্ব ডাইনে মহাজনী ভূমিকায় হরে। পড়নে ধূতি। গায়ে হাফ হাতা শার্ট। চার জন কর্মচারী। একদন্ড বিরাম নেই কারও। পাশেই আরও খুঁচরা মুদী দোকান। কিন্তু খদ্দেররা ভীড়ের মধ্যে এখানেই আরও ভীড় করবে। ঠিক জিনিষ। ঠিক মাপ। সারা দুনিয়ায় ভ্যাঁজাল থাকতে পারে, কিন্তু এখানে সেটি নাই। দারুচিনি, গোলমরিচ, লবঙ্গ, ধনে, জিরা ইত্যাকার মশলাদ্রব্য। ছোট্ট পাল্লায় ছোট ছোট মাপ। কাচ্চা, তুলা আর ছটাক। পুরাতন বই ছিড়ে কাগজ দিয়ে প্যাকেট। বাম হাতে কাগজের উপর জিনিস। একটা ভাঁজ। তারপর ডান হাত দিয়ে একটা মুচড়ানি। ডিম্বাকৃতির প্যাকেট।
সবগুলো প্যাকেট শেষ হলে উচু গলায় হাক –
ধনে ১ ছটাক, দারুচিনি ২ কাচ্চা, লবঙ্গ ৩ কাচ্চা, গোলমরিচ ৫ তুলা, …
ওদিকে লম্বা একটা কাগজ়ে হরের হিসেব শেষ
ধনে ১ ছটাক ২দ/
দারুচিনি ২ কাচ্চা ৩||//
লবঙ্গ ৩ কাচ্চা ১|/
গোল মরিচ ৫ তুলা দ//
————–
মোট ৭||//
মোট সাত টাকা দশ আনা। তখন চার আনায় এক সিকি হত, চার সিকি বা ষোল আনায় হত এক টাকা। ‘/’ এক আনার চিহ্ন। ‘|’, ‘||’ যথাক্রমে এক এবং দুই সিকির চিহ্ন। ‘দ’ থেকে মাত্রাটা মুছে দিলে যা থাকে তা তিন সিকির চিহ্ন। দু আনা এবং তিন আনার চিহ্ন এখানে দেখানো যাচ্ছে না।
ফিরতি টাকা সহ রশিদ দিতে হরেকেই প্রথম দেখি। হরের সবই ছিল মেশিনের মত। গুট গুট করে আনা, সিকি, টাকার হিসাব। এক কাজ দুবার এবং ভুল করা হরের স্বভাব-বিরুদ্ধ। যোগ – মাত্র একবার। টাকা গুনাও একবার। খস খস শব্দে টাকা চলে বাম হাত থেকে ডান হাতে। নিমিষে। টাকা গুনা ছিল একটা দর্শনীয় ব্যাপার। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাই দেখতাম। একটা প্রবচন ছিল – হরে কখনও ভুল করে না হিসাবে।
হরের আরও একটা জিনিষ ছিল না। তার নাম “অসাধুতা”। কিন্তু একদিন এক ইতর হাতুড়ে ডাক্তার মিথ্যা অজুহাতে তাঁর গলা টিপে ধরল। তাঁর মৃত্যু হল। তারপর বলল – “পাকিস্তানের সব হিন্দুদেরকেই জুতা পেটা করা উচিত।” চুয়াল্লিশ বছর আগের কথা। কিন্তু কথাটা এখনও আমার কানে স্পষ্ট বাজে।
১৯৬৪ রায়ট হয়ে গেছে। হিন্দুরা জমিজমা দামে-অদামে ফেলে চলে যাচ্ছে। ১৯৬৫ পাক-ভারত যুদ্ধ হল। হিন্দুরা আফ্রিকার পুষ্টিহীন শিশুর মত দুর্বল থেকে দুর্বলতর হল। দেশ ত্যাগের গতি হল বৃদ্ধি। অথচ হরে ব্যাটার কোন ভ্রূক্ষেপ নেই। ব্যাটা আগের মতই ব্যবসা করে যাচ্ছে। রহমান ডাক্তার আর কত সহ্য করবে?
পরের বছর – ১৯৬৬ সাল। দিন, তারিখ, মাস সঠিক মনে নেই। তবে আকাশে এক টুকরো মেঘ নেই। খাঁ খাঁ রোদ্দুর। গাছের ছায়া। মৃদু বাতাস। প্রানটা জুড়িয়ে যায়। বৈশাখ কি জ্যৈষ্ঠ্য মাস হবে। দশম শ্রেণীতে পড়ি। স্কুলে টিফিন পিরিয়ড। মুসলমান ছেলেদেরকে ঠ্যাংগাতে ঠ্যাংগাতে মসজিদে নিয়ে যান মৌলবী সাব। চার ফুট দশ ইঞ্চি। বাট্টু। গোল টুপি। তিলা পড়া সাদা পাঞ্জাবী। চোক্কা পাজামা। হাতে বেত। হিন্দু ছাত্রদের নামাজ পড়ার ঝামেলা নেই। ভারী মজার সময়। হাট শুরু হয়নি তখনও। অলিগলি তখনও প্রায় ফাঁকা। দু-একটা মুসলমান ছেলে আমাদের মাঝে লুকিয়ে হেটে বেড়ায়। মৌলবী সাব মাঝে মাঝে সেখানেও হানা দেন। অনেকেই তখন দৌড়ে পালায়। কেউ আবার চান্সে থাকে। হিন্দু ছেলেদের ঢংএ বলে – আদাব স্যার। মৌলবী সাব বেজায় খুশী। হিন্দু ছেলেগুলো খুব ভদ্র। ওরা হেসে কুঁটি কুঁটি। জিনিষটা আমরাও উপভোগ করি।
স্কুল ঘেষে পশ্চিম পাশে উত্তর-দক্ষিনে প্রধান রাস্তা। রাস্তার পাশেই পরেশ মেকারের হ্যাজাকের দোকান। দোকানের পুব পাশে রাস্তার দিকে দরজা ছাড়াও গোটা দুই শিকের জানালা। দক্ষিন পাশেও শিকের জানালা দুটো। সেই জানালা-দরজায় উপচে পড়া ভীড়। দক্ষিন পাশের একটা জানালা দিয়ে মাথাটা ঢুকিয়ে দেই। ভেতরে তর্জনী নেড়ে একাই চিল্লাচিল্লি করে চলেছেন রহমান ডাক্তার। বাম পাশে মাথা নীচু করে বসে আছে রাজকাপুর হরে। পাশে একসময় বাঘ নামে পরিচিত জগদীশ রায়। তিনিও মাথা নীচু করে বসে আছেন।
হরের চুল গুলো এলোমেলো। ঝুলছে। মুখ ভাল দেখা যাচ্ছে না। বুঝাই যাচ্ছে পাঁচ ফূটি রহমান ডাক্তার ছয় ফুটি হরের সামনের চুলের গুচ্ছ ধরে কষে অনেকগুলো চড় বসিয়ে দিয়েছেন। কিল-ঘুষিও মেরে থাকতে পারেন। বিচিত্র কিছু নয়।
রহমান ডাক্তার একাই বকে যাচ্ছেন। একটা হরিনের মাথায় তেমন বুদ্ধি থাকেনা। তাই বাঘের থাবায় আটকা পড়েও বাঁচার চেষ্টা করে। গায়ের শক্তিতে হরে ফুটবলের মত লাথি মেরে ডাক্তারকে মাঠের ওপারে পাঠিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু হরে তো একটা মানুষ। সে জানে রহমান ডাক্তারের হাত থেকে তাঁকে মুক্ত করার জন্য কেউ আসবে না। ডাক্তার এক সময় পরিশ্রান্ত হবে। তখনই তাঁর মুক্তি। তারপর মৃত্যু। তারই অপেক্ষা।
এত গালি, এত মার, এত অপমান। তারপরও হরের মুখে কোন প্রতিবাদ নাই। রহমান ডাক্তারকে আরও ক্রুদ্ধ, অসহনীয় করে তুলে। একটা প্রতিবাদ করলে ডাক্তারের দশটা গালি তৈরী হয়। হরের কোন সহযোগিতা নেই। রহমান ডাক্তারের তেজ বেড়েই যাচ্ছে। গালমন্দের যত ভাষা জানা আছে তার সবই ব্যবহার হয়ে গেছে। কতটা মেরেছেন জানিনা। হাত নিশ্চয় ব্যথা হয়ে গেছে। মারার শক্তি সবটাই নিঃশেষিত। গালিও শেষ। এর পর কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। তখন তার সারা পাকিস্তানের হিন্দুদের কথা মনে হল। আর তখনই অবশিষ্ট ঝাঁড়টা মুখে এল – “পাকিস্তানের সব হিন্দুদেরকেই জুতা পেটা করা উচিত।”
ডাক্তারের হাতে একটা ওষুধ। মুদি সামগ্রীর মত ওষুধপত্রও সরবরাহ করতেন হরে। রহমান ডাক্তারের মত হাতুড়েরাই ওষুধের ক্রেতা। গ্রামাঞ্চলে তখন পাশকরা ডাক্তার মিলত না। হাতুড়েদেরই একচ্ছত্র রাজত্ব। রহমান ডাক্তাররা রুগীদের ব্যবস্থাপত্র দেন। ফি নেন। রুগীর কাছ আবার তারাই ওষুধ বেচেন। এক লাভে দুই লাভ। ওষুধ কিনতে হয় হরের দোকান থেকে। ওষুধের চালানীটা নিজে করতে পারলে তিনটি লাভ। হরে থাকতে তার সে ব্যবসাটি হবার নয়। কুশুরা বাজার থেকে তাঁকে হটাতেই হবে। প্রমান করতে হবে হরে নকল ওষুধের ব্যবসা করে। তারই নাটক পরেশ মেকারের দোকানে।
ওষুধ নকল তার প্রমান কে করবে? রহমান ডাক্তার নিজে বলেছেন। এটাই বড় প্রমান। তিনিই দন্ড-মুন্ডের বিধাতা। হরের অহংকার এবং শক্তি তাঁর সারাজীবনের সাধুতা। স্বয়ং ভগবানের সাধ্য নেই হরেকে অসাধু বলেন। কিন্তু রহমান ডাক্তারের উপর তো কোন কথা নেই। হরে দোষী। সেই দোষে দোষী পাকিস্তানের সমস্ত হিন্দুরা – “পাকিস্তানের সব হিন্দুদেরকেই জুতা পেটা করা উচিত।”
পরিশ্রান্ত রহমান ডাক্তার একসময় হরেকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিলেন – যাও। আর যেন কোনদিন নকল ওষুধ বেচতে না দেখি।
হরে উঠে দাঁড়ালেন। তারপর পিন-পতন নীরবতা ভেদ করে ধীরে ধীরে দোকানে আসলেন। বললেন – সব বন্ধ কর। গাড়ীতে তোল। হরের চোখ থেকে আধফোটা জল বেড়িয়ে এল। দোকানের উলটো দিকে মুখ করে দাঁড়ালেন। চোখের পাতা নেড়ে মুছে নিলেন। তারপর কুশুরা হাট থেকে বেরিয়ে গেলেন। রাজকাপুরের মৃত্যু হল। আমি, আমার বাবা, কাকা, আত্মীয় স্বজন, পাকিস্তানের সমস্ত হিন্দুদের জন্য পাওনা হয়ে রইল জুতা পেটা।
দু সপ্তাহ পরে নতুন আর একটা দৃশ্য দেখলাম হাটে। একদল লোক বৃত্তাকারে দাঁড়িয়ে ভিতরে খেলা দেখছে। বানর অথবা সাপের খেলা। কিম্বা কোন ক্যানভাসার মলমের ওষুধ বিক্রি করছে। এক ফাঁক দিয়ে সামনে ঢুকে পড়লাম। সিনেমার মারপিটের দৃশ্য চলছে। আমার সহপাঠী হরিপদর বাবা নিতাই রায় ও জেঠা গৌর রায় গোলের মাঝখানে। দুজনেরই হাফ হাতা লম্বা পকেট ওয়ালা সাদা ধবধবে জামা। পড়নে ধূতি। গলায় দুজনেরই অতিরিক্ত একটি বস্ত্র উঠেছে। তার নাম গামছা। হিঁচড়ে দুভাইকে এদিক-ওদিক টানছে আর গালে চপেটাঘাত করছে। সাপের খেলা তখনও শুরু হয়নি। বৃত্তাকারে দাঁড়িয়ে হাটুড়েরা আজ এই নতুন খেলা দেখার জন্য ভীড় করেছে।
হাটে চুরি করে ধরা পড়তে দেখেছি। চোরটির গলা প্রথমেই গামছা দিয়ে বাঁধা হয়। হাটুড়ে কিল ঘুষি চলে কতক্ষন। মজা হয়। কিন্তু এত বড় বৃত্ত রচিত হয়না। মজা শেষে চোরটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। চোরটি আবার নতুন চুরির ধান্ধায় থাকে। হরিপদর বাবা-জেঠা কি চুরি করে ধরা পড়েছে? দেখতে সুদর্শন। ভদ্রলোক চেহারা। কিন্তু এরা চোর! আজ চুরি করে দুজন এক সাথে ধরা পড়েছে?
চাষীরা হাটে পাট নিয়ে আসে। নারায়ণগঞ্জ পাট চালান দেওয়ার মহাজনরা আসে। হরিপদর বাবা-জেঠা খুচড়া পাট কিনে মহাজনদের কাছে বিক্রি করে। কিছু টাকা আগাম দিয়ে দেয়। কিছু বিক্রি শেষে। বছরের পর বছর এভাবেই ব্যবসা চলছে। চাষীরা কখনও এ নিয়ে আপত্তি করে না। চাষীদের আপত্তি নেই তো কী! বদমাইসদের আছে। তারা এখানেই সুযোগ তৈরী করে। পৃথিবীতে তো শুধু একজন রহমান ডাক্তার নয়। প্রচুর আছে। দেশ থেকে হিন্দুদেরকে ভাগাতে পারলে অনেক সুবিধা। বাড়ী, জমিজমা জলের দামে পাওয়া যায়। তেমনি এক রহমান ডাক্তার আজকের দৃশ্যের হিরো – পাট কিনেছিস, টাকা ফেল এক্ষনি। এই হল আজকের সিনেমার মারপিট দৃশ্যের কাহিনী।
গলায় গামছা দেওয়া সাংঘাতিক অপমানজনক অবস্থা। হরিপদর বাবা-জেঠারও জনতার সামনে বিনা প্রতিবাদে মৃত্যু হল। দুই ভাইকে আর কোনদিন কুশুরা হাটে দেখা গেল না। মৃত্যুর ছয় মাসের মাথায় তাঁরা দেশ ছাড়লেন। আর বছর দুইএর মধ্যে তাঁদের গ্রামটি হিন্দু শূন্য হয়ে গেল। কিছু দেশ ছাড়ল। কিছু পার্শ্ববর্তী হিন্দু গ্রামে সরে পড়ল। এভাবেই মধুডাঙ্গা, অমরপুর, সানড়া, কান্টাহাটী কামারপাড়া গ্রাম গুলো হিন্দু শূন্য হয়ে গেল আমার চোখের সামনে। চড়পাড়ার নাথুরামের বিধবা স্ত্রীর গতি নাই। তাই একাই পরে থাকল স্বামীর ভিটায়।
হরে বনিক, নিতাই আর গৌর রায়দের মৃত্যু ঘটিয়ে রহমান ডাক্তাররা ব্যবসা নিলেন। বাড়ীঘর, জমিজমা হাতিয়ে নিলেন জলের দামে। আগে জমিদাররা কৃষকদের শোষন করতেন, অত্যাচার করতেন। তাঁদের কোন বিচার হতনা। কারণ তাঁরা নিজেরাই বিচারক ছিলেন। ছদু মাষ্টার এবং রহমান ডাক্তারদের অত্যাচারের বিচার হয় না। কারণ, এরা নিজেরাই তো বিচারক। জমিদারের অত্যাচার নিয়ে নাটক হয়, সিনেমা হয়। ছদু মাষ্টার আর রহমান ডাক্তারদের নিয়ে কবে নাটক-সিনেমা হবে?
টেক্সাস, ৩ আগষ্ট ২০১০।
সংখ্যালঘুদের উপরে সংখ্যাগুরুর অত্যাচার সর্ব যূগে পৃথিবীর সকল ভূখন্ডে ছিল , আছে ও থাকবে। এর জন্য শুধু ধর্মকে বা নির্দিষ্ট কোন ধর্মকে দায়ী করা ঠিক নয়। খলের যেমন ছলের অভাব হয় না , তেমনি সংখ্যাগুরুর মধ্যে কিছু চতুর দুষ্ট লোক থাকে যারা বিভিন্ন বাহানায় সুযোগকে কাজে লাগায়। ইদানিং কালে রুয়ান্ডা , কেনিয়া , আবখাজিয়া বা আজারবাইজানে ঘটা ঘটনাগুলির পিছনে কিন্তু ধর্ম ছিল না , জাতি বিদ্বেষ কে সেখানে দুরাচাররা কাজে লাগিয়েছে।
@ফারুক,
:yes:
প্রসংশা করতে পারছি না, করলে মিথ্যা কথা বলা হয়।
তবে সেটা লেখনীর জন্য প্রযোজ্য নয়, এ জাতীয় লেখা পড়লে মনটা অদ্ভূত বিষন্নতায় ভরে যায়। মানুষের নীচতা পশুত্ব দেখলে পুরো দুনিয়ার উপরই মনটা বিষিয়ে ওঠে।
সাম্প্রদায়িং দাঙ্গা হাঙ্গামার কথা দুতরফেই অনেক পড়েছি, তবে এভাবে পড়িনি। এটাকে অবশ্য দাংগা বলা যায় না কোনভাবেই। ভাবলে প্রচন্ড খারাপ লাগে যে সমাজ তো শুধু রহমান ডাক্তারদের নিয়েই নয়, চারপাশে আরো অসংখ্য মানুষ আছে যারা নীবে এসব দেখে যান, তারা নিরব দর্শক হিসেবে থেকে যান পর্দার বাইরে। গালিগালাজ কিছুটা জুটলে হয়ত জোটে কেবল রহমান ডাক্তারদের। আর বাকিরা সবাই নিরীহ উদারমনা মডারেট ধার্মিক? এই প্রবনতা আজকের দিনেও তেমন বদল হয়নি। দূর দেশ প্যালেষ্টাইনে ইসরাইল ভিনদেশী মুসলমান ভাইদের উপর কি অত্যাচার করে তা সবাই অকপটে বিশ্বাস করে নেন, কোন কূটতর্ক বা রাজনীতি এসবের চিন্তা তখন করেন না। কিন্তু নিজ দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর কোন রকম অত্যাচার হচ্ছে বা হতে পারে তা শুনতে অনেকেই তেড়ে আসেন, তার মধ্যে রাজনীতি ষড়যন্ত্র অনেক কিছুই খুজে পান। এই প্রবনতা ২০০১ সালে নিজে বহুবার পর্যবেক্ষন করেছি। এই না হলে মডারেট ধার্মিক।
আমেরিকার মিসিসিপিতে ১৯৫৫ সালে এমেট টিল নামের ১৪ বছরের এক কালো কিশোরকে এক সাদা মহিলার দিকে শীষ দেবার দায়ে বাড়ি থেকে প্রকাশ্য দিবালোকে অপহরন করে অসহনীয় নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। সে সময়কার দক্ষিনের আইন ব্যাবস্থায় এসবের কোন বিচার ছিল না, এ ঘটনারও বিচার হয়নি। দুই খুনী হাসি মুখে কোর্ট থেকে এমেটের মায়ের চোখের সামনে বেকসু্নেখালাস পেয়ে যায়। তবে ঘটনার ৫০ বছরেরও পর ফেডারেল সরকার আবারো এই বিচার পূণঃ তদন্তের ব্যাবস্থা নিয়েছে।
ভুল মানুষ করে, সে ভুল স্বীকার করতে দোষ কোথায়?
@আদিল মাহমুদ, :yes:
অসাধারন বর্ননা।
সব কিছুই ধর্মের জন্য বলে মনে হচ্ছে।
ব্যাপারটা অনেকটা এরকম যে, আরে ওতো হিন্দু, ও একটা মানুষ নাকি? হিন্দুদের উপরে মুসলমানদের নির্যাতন অনেকটা গা সওয়া হয়ে গেছে আমাদের কাছে।
@সাইফুল ইসলাম, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সংখ্যালঘুরা সামাজিক ভাবে দুর্বল। কিছু সুবিধাভোগী লোক পৃথিবীর সর্বত্র আছে। এরা সংখ্যালঘুদেরকে ইজি টারগেট করে। ধর্মীয় ঘৃনাবোধ থেকেও হয়।
ধন্যবাদ।
বাংলাদেশের বেশির ভাগ হিন্দুরা মনে দেশে কিছু হলে ভারত চলে যাবে ভারত তাদের মানে হিন্দুদের দেশ
এটা আমার ধারনা
@shan,
বুঝতে পারলাম না। মনে হয় আপনার বাক্যটি অসমাপ্ত।
ভারতের সাথে কী অর্থে জুড়ে দিচ্ছেন বুঝতে পারছি না। একটু বুঝিয়ে বলতে পারেন।
ভালো লাগলো।
@প্রদীপ দেব, ধন্যবাদ।
অসাধারন একটা লেখা। আমার স্মৃতিতেও এমন দু’একটা ঘটনা আছে। তবে ঘটনার সময়কাল স্বাধীনতার অনেক পরে এসে। কখনও সময় সুযোগ হলে লিখবো। লেখককে ধন্যবাদ।
@আব্দুর রহমান আবিদ,
ধন্যবাদ। দেখুন, এই যে গুটিকতক লোকের জন্য এত গুলো পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হল, কয়েকটি গ্রাম হিন্দুশূন্য হয়ে গেল। কেউ কিন্তু একবিন্দু প্রতিবাদ করল না। নীরবে দেশ ছেড়ে চলে গেল। অনেকের সাথে পশ্চিম বংগে দেখা হয়েছে। এসব কিছুই মনে নেই হয়ত। একটা লোকের কাছে কোন অভিযোগ শুনলাম না। হয়ত বা এতদিন পরে ক্ষনিকের জন্য দেখা হয়েছে। সেই আবেগের কাছে ঐ সব দুঃস্বপ্নের দিন গুলি তুচ্ছ।
নৃপেন্দ্রে সরকার,
একই কারণে গুজরাটের দাঙ্গা হয়েছিল। মুসলমান ব্যবসায়ীদের হটাতে। স্থান ও কাল্ আলাদা হলেও সংখ্যালঘুর অসহায়ত্বে পার্থক্য নেই এবং তা দিন দিন গভীরতর হচ্ছে।
@গীতা দাস,
সংখ্যালঘুরা সব জায়গাতেই দুর্বল। নরপিশাচ গুলো তারই সুযোগ নেয়।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা,
ঠিক এরকম একটি ঘটনা মোকছেদ আলীর লেখার মধ্যে পেয়েছি। ইউনুস মিয়া তহশিলদার। নির্মল কুণ্ডুদের সম্পত্তি নিজ নামে করে নেয়। মোকছেদ আলীর লেখা থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি-
[…ইউনুস তহশিল অফিসে চাকরী করিত, খুব ধূর্ত লোক। সত্যেন কুন্ডুকে কিছু টাকা দিয়া আসল মালিকের ভূয়া স্বাক্ষরে বায়নামা করিয়া শতকরা ৮০ ভাগ ওয়াশিল দেখাইয়া, উকিলের পরামর্শে কেচ করে। অফিসে ঘুষ ঘাষ দিয়া কেচের রায় বাহির করিয়া মূল্যের অবশিষ্ট ২০ ভাগ টাকা সরকারে জমা দিয়া, জজের মারফত নিজ নামে কবালা করিয়া লয়। এ সমস্ত কার্য খুব সংগোপনে করে। পরে আমি সত্যেন কুন্ডুর নিকট সব শুনিয়াছি।
নির্মল কুন্ডুরা দেশ ভাগের পরে ইন্ডিয়ায় চলিয়া যায়। আদায়কারী হিসাবে সত্যেনকুন্ডু আদায় করে।
একদিন সরকারী অফিসারগণ আসিয়া ফিতা দিয়া মাফ জোক করিয়া আমাকে কহিলেন- এটা ইনেমী প্রোপার্টি অর্থাৎ পাকিস্থান সরকারের আইনমতে শত্রু সম্পত্তি। যাহা হোক, ধূর্ত ইউনুস তহসিল অফিসে চাকরী করিত-ওটা ইনেমী প্রপার্টি কাটাইয়া কিভাবে হিন্দু নাগরিক সম্পত্তি করিল তাহা বুঝিতে পারি না।…]
দাদা, এই ইউনুস মিয়াকে আমি দেখেছি। প্যারালাইজ হয়ে পড়ে আছে। বর্তমানে বেঁচে আছে কিনা জানি না। এই লোক আপন ভাইয়ের সম্পত্তি পর্যন্ত গ্রাস করেছিল।
@মাহফুজ,
এটা উপর থেকে নেমে আসা কোন গজব নয়।
ছদু মাষ্টার, রহমান ডাক্তারদের তো প্যারালাইসিস বা অন্য কিছু হয়নি। ছদু মাষ্টারের এক ছেলে অর্দ্ধ উন্মাদ। মানুষে বলে ছেলের উপর দিয়ে গেছে। এসব ভেবে মানুষ শান্তনা খুঁজে পায়।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা,
আমি নিজে গজব জাতীয় কিছু বোঝাতে চাইনি। অবস্থাটা বর্ণনা করতে চেয়েছি। কিন্তু সাধারণ মানুষ ঐভাবেই ভাবতে ভালোবাসে।
@মাহফুজ,
সেটা ঠিক আছে। কিন্তু তুমি আমার ছবি আঁকার প্রশংসা করোনি। :guli:
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা,
আরে দাদা, আপনি তো দারুন ছবি আঁকিয়েছেন!! পাবলো পিকাসো, লিউনার্দো দা ভিঞ্চি ফেইল। চমৎকার, চমৎকার চমৎকার।
এই বার খুশি তো?
@মাহফুজ,
প্রায় ঝাড়ি খাইছিল্যা। পরে দেখি মত না লিখে লিখেছে ফেইল।
ফেইল ত মারতেই হইব। আমি ওদেরকে সব কিছু শিখাইছি নাকি? আসল জিনিষ হাতে রাখছি না? ওরা এখনও স্বপ্নে আসে শিখার জন্য।
হাইসো না, মিয়া।
চমৎকার লেখা। বর্ননাটাও অসাধারন।
@ব্রাইট স্মাইল্, ধন্যবাদ।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আমার ছোটবেলাকে খুবই মিস করি। সে জন্যই দেশে গেলে অর্দ্ধেকটা সময় পশ্চিম বংগের জেলা গুলো ঘুরে বেড়াই। আত্মীয়স্বজন পুরণো বন্ধুদের সাথে দেখা করি। লিস্টে অনেক আছে যারা আমার বন্ধু ছিল না। কিন্তু ছোট বেলায় দেখেছি। তাদের খুঁজে বের করি। অনেক দিন দেখা না হওয়া মানে উভয়ে উভয়ের কাছে বেঁচে থেকেও মৃত মনে হয়। যদি শুনি কেউ মারা গেছে, তখন খারাপ লাগে। একটু খানি কষ্ট হলেও কেন গেলাম না। এখন তো মিলিয়ন ডলার খরচ করেও দেখা হবে না।
আমার স্ত্রী মনে করে এটা আমার খুবই বাড়াবাড়ি। মনে হয় ঠিকই বলে। মাঝে মাঝে বলি সংসার বিবাগী মন আছে আমার ভিতরে। একটা দুতারা বাজিয়ে গান গাইতে পারলে একদিন ঠিকই চলে যেতাম কোন দিকে।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা, এখনো সময় আছে,একটা দুতারা কিনে বাজনা শেখা ও গান গাইতে শুরু করে দেন।দেখবেন একদিন বৈরাগী হয়ে দেশ-দেশান্তরে বেরিয়ে গেছেন। 🙂
সহজ,সরল গ্রাম-বাংলার চিত্র একদিকে যেমন আপনার লেখায় নিয়ে এসেছেন অন্যদিকে ঐ সরলতার মাঝে কি জটিল ,লোভী,হিংসুটে,বদমাইশ , টাউট শ্রেনীর শোষনকারীরা গরীব লোকজনকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে সর্বহারা করে দেয় বা দেশ ত্যাগে বাধ্য করে। আর এই শোষনকারী দলের পিছনে সর্বদা রাষ্ট্র নামক সংস্থাটি সব যুগে বা কালে বড় যোগানদানকারী ভূমিকা পালন করে থাকে। দারুন লাগলো আপনার লেখাটি পড়ে। :yes:
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
ভাল লাগছে ভাই, তোমার মন্তব্যের জন্য।
সংসার বিবাগী হওয়াটাই নির্বাণ লাভ। নির্বাণেই তৃপ্তি, পরম শান্তি। কিন্তু এটা বড়ই দুরুহ ব্যাপার। সব মায়ার বন্ধন ত্যাগ করতে না পারলে তো সম্ভব নয়।
ভালো থেকো।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা,
বাণপ্রস্থ জীবনে প্রবেশের জন্য দরকার ৭৫ বৎসর বয়স। সেই বয়স কি আপনার হয়েছে? বেশ কিছুদিন আগে বিবাহের ব্রহ্মচর্চ নামে একটি বই পড়েছিলাম। তাছাড়া ইসকনের কিছু কিছু বই পড়েও বিষয়টি জেনেছি। মায়ার জগতে থেকেও কিভাবে মায়ামুক্ত হওয়া যায় তা জানতে হলে ইসকনের বই পড়া ছাড়া গতি নেই। প্রভুপাদের বই সংগ্রহ করে পড়তে পারেন।
দাদা, এক সময় হরে নাম জপতে শুরু করেছিলাম আধ্যাত্মিক কিছু পাবার আশায়। চট্টগ্রামের মেখলে হরে কৃষ্ণ মিশনে কিছুদিন ঘুর ঘুর করেছি। কিন্তু সব ফাকা বুলি। নেতারা শুধু নাদুস নুদুসই হয় সেখানে। নেতারা সম্মান পেতে ভালোবাসে।
@মাহফুজ,
হয়নি এখনও।
প্রভুপাদের বই পড়তে বলো না। তোমার নিজের কোন দাওয়াই থাকলে তাই বলো।
এই পৃথিবীতে এরা মাত্র তিনটি শব্দ জানে – “হরে”, “কৃষ্ণ” এবং “রাম”। এই তিনটি শব্দ দিয়ে সবাইকে গোলক ধাঁধার মধ্যে রাখে। তবে এখানে ফ্রি খাওয়া পাওয়া যায়। এই একটা জিনিষই ভাল।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা,
ফ্রি জিনিসের প্রতি মানুষের আকর্ষণ সব সময়ই থাকে। ইদানিং কমার্শিয়াল বিজ্ঞাপনগুলোতে ফ্রি-এর ব্যবস্থা থাকে। সাবান কিনলে মিনিপ্যাক শ্যাম্পু ফ্রি। মোবাইল কিনলে সীম ফ্রি। কিন্তু এসব ফ্রি-র সাথে শর্ত থাকে।
আমার জীবনে কেউ যদি শর্তহীন ফ্রি-র খাওয়া- থাকার ব্যবস্থা করে দিত, তাহলে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে আঠারো ঘন্টাই মুক্তমনাতে পড়ে থাকতাম। এমন দরদী বন্ধু কেউ কি আছে? থাকলে আওয়াজ দিয়েন।
@মাহফুজ, :laugh:
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা তো দেখছি তা হলে বৌদ্ধের নির্বান লাভের চরম আশায় আছেন,আহারে, কেন যে সংসার নামক প্রতিষ্ঠানটির জন্ম হলো ? :-X
মনে হয় সংসার নামক যন্ত্রনার হাত থেকে বাঁচার তাগিদেই নরডিক দেশগুলির পারিবারিক অবস্থান ভেংগে চুরমার হয়ে এখন একক ব্যক্তি জীবন-যাপনে অবস্থ্য হয়ে পড়েছে।যেমন , সুইডেনে ৪০% জনসাধারন একা একা ব্যক্তিগত জীবন-যাপনে বাস করে।
ভালো থাকবেন।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
মামুন ভাই,
এই শোষিতরাই কি এক সময় বাধ্য হয়ে সর্বহারা পার্টিতে যোগ দেয় নাকি? তবে জটিল, লোভী, হিংসুটে, বদমাইশ, টাউট শ্রেণীর শোষনকারী মানুষ সমাজে চিরকাল থাকবে। এ থেকে পরিত্রাণের কোনই সম্ভাবনা নেই।
@মাহফুজ,
কথায় আছে না যাদের হারাবার কিছুই থাকে না তারা সর্বহারা কেন এমন কি জীবনের তাগিদে যা যা দরকার তাতেই যোগ দেয় বলে মনে হ্য়।
পরিত্রান হয়তো নেই এবং এরা স্থান,কাল,পাত্রভেদে শুধু খোলস বদলায় তা-ও ঠিক।তবে সমাজের বা রাষ্ট্রের মানুষ যদি মানুষের সমমর্যাদা নিয়ে (মানুষের মতো) বেঁচে থাকতে পারে তাহলে ঐ টাটউশ্রেনীটির শোষন প্রক্রিয়াটি আস্তে আস্তে হয়তো লোপ পেতে পারে। :-/
ভালো থেকো।
নৃপেন দা আ প নার লেখা পুরটাই পড়লাম।পড়ার সাথে সাথে ত’ অনেক কিছু মনে আসে ও মনে পড়ে।মন যেন এক বিষাদে ভরে যায় আপনাদের এই সমস্ত লেখা পড়ে।সেই ছো্ট বেলার বাং্লাদেশে মন উড়ে চলে যায়। কিছুতেই যেন সেই ছোট বেলার নিজের গ্রাম,নিজের হাট, নিজের টাউন,বাজার, নদী ভুলতে পারি না। যে দেশের যে গ্রামে গিয়ে বাসা বেঁধেছি তাকে যেন কিছুতেই আত্মার সাথে সংযুক্ত করতে পারিনা। মাঝে মাঝে মনে হয় যদি ্পশ্চিম ও পূর্ব বাংলা এক থাকত বা দিল্লি, গুজরাতের বা পাঞ্জাবের আরো কিছু অংশ পশ্চিম পাকিস্তানে যেতে তবে ভাল হত।তাহলে হয়ত পূর্ব বাংলা পাকিস্তানে যেত না।
আর লিখুন।ভাল থাকুন।
অসাধারণ। ধন্যবাদ।
@রৌরব, ভাল লেগেছে জেনেছে বলে ভাল লাগল। মানুষগুলো বিনা অপরাধে মার খেল। কোন প্রতিবাদ করতে পারল না। কেউ এগিয়ে এসে বলল না। এ হতে পারে না। এ অন্যায়।