যখন ইন্টার এ পড়ি তখন থেকেই আসলে অজ্ঞেয়বাদ থেকে নাস্তিক্যবাদের দিকে বিবর্তন শুরু হয় আমার। তখন একটা সময় ছিল, অনেক তর্ক করতাম , অনেক উৎসাহ লাগতো এসবে। নিজে যা বুঝতাম কিংবা বোঝাতে চাইতাম তা অন্যদেরকে ঠিক ঠিক বোঝাতে পারতাম খুব ভালো করেই। কিন্তু এখন আর পারি না। আমার ধারনা যেইসব জিনিস মানুষ খুব বেশি বোঝা আরম্ভ করে সেইসব জিনিস সে একটা সময় আর অন্যদেরকে বোঝাতে পারে না।অন্যদের কাছে আস্তে আস্তে দুর্বোধ্য হয়ে যায়। ভাষার সীমাবদ্ধতার কথা চিন্তা করে যতটা পারে কথা কম বলার চেষ্টা করে। কিন্তু মাঝে মাঝে এত বিরক্ত লাগে কিছু না বলে থাকা যায় না। এখানেই যত বিপত্তি।আর এই বিপত্তির কারনেই লিখতে বসা।
আমাকে কেউ কেউ মাঝে মাঝে প্রশ্ন করে, আমি নাস্তিক কেন ? কখনো উত্তর দেই, কারন মানুষ আমায় নাস্তিক বলে তাই আমি নাস্তিক।ঈশ্বর নামের জিনিসটা সবাই যেমন কমন ভাবে চিন্তা করে, আমি সেরকম করি না, একটু আলাদা ভাবে ভাবি। এ ছাড়া আর দশটা মানুষের সাথে আমার পার্থক্য খুব বেশি একটা চোখে পড়ার মতো না।
যাই হোক সেদিন একজন আমাকে খুব ভালোকরে জেরা করা শুরু করলো আমি কেন ঈশ্বর মানি না ? আমার খুব একটা ইচ্ছা করে না এইসব নিয়ে তর্ক করার । কারন শেষটা খুব একটা ভালো হয় না। বেশিরভাগই তর্কের শেষে একটা উপদেশ বাণি শুনতে হয়- “যই করো মানুষের মনে কষ্ট দিয়ে কথা বলো না” তাই ভাবি মানুষের সাথে কথা বলাই ছেড়ে দেওয়া উচিৎ হয়তো। কারন আস্তিকরা খুব সহজেই কষ্ট পায়( নাকি কষ্ট পাওয়ার ভান করে কে জানে) কিন্তু নাস্তিক হলে কষ্ট পাওয়ার অধিকার আর থাকে না । আমরা ঈশ্বর নাই বললে ওদের মনে কষ্ট লাগে কারন ওরা সেটা বিশ্বাস করে, কিন্তু ওরা ঈশ্বর আছে বললে আমাদের কষ্ট লাগা মানা… আমরা হয়তো মানুষ না। আমাদের মন নাই… খারাপ না যদিও ব্যাপারটা । আসলে আমরা সবাই জানি এইসব ঢং ছাড়া আর কিছুই ন।
অনেক আবোল-তাবোল এর পরে আবার জিজ্ঞেস্ করলো, কেন ঈশ্বর মানি না। বললাম, তোমার ঈশ্বরের একটা রোগ হয়েছে। ঈশ্বর সেই রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করুক। এরপর হয়তো বিশ্বাস করতে পারি।
আবার প্রশ্ন; মানে ? ঈশ্বরের আবার কিসের রোগ ? বললাম , আমার যেই রোগ তোমার ঈশ্বরের ঠিক সেই রোগ!
বুঝলো না এবারো। বললাম… তোমার ঈশ্বরও আমার মতো নাস্তিক… নিজের স্রষ্টাকে মানে না।
আর খুবই স্বাভাবিক , এই ধরনের কথা শুনলে ওনাদের যেইরকম রি-একশন হয়, অনেকটা সেরকমই দেখা গেল। কিন্তু মজার একটা জিনিস শুনলাম ওর কাছ থেকে।
ঈশ্বরের নাস্তিকতার পেছনেও ওর ভালো রকমের যুক্তি আছে। আর সেটা হলো ঈশ্বর এমন একটা জিনিস যা আমাদের এই মনুষ্য মস্তিস্কে ধরবার নয়। আমাদের সেই ক্ষমতাই নেই।মোট কথা মানুষের সীমাবদ্ধতার বিশাল একটা লেকচার শুনতে হলো। খারাপ লাগলো না… আমরা কি কি পারি , কি কি পারি না এইসব। আরো অনেক কিছু। কিন্তু এইসব শুনতে বেশিক্ষন ধর্য্য থাকে না। আমি এমনিতেই খুব তাড়াতাড়ি ধর্য্য হরানোর মানুষ। তাই ওকে বললাম, যাও ফিলসফি ক্লাস নাও… আমি তোমার মনযোগি ছাত্র হতে পারি। কিন্তু তর্ক করতে এসে ফিলসফি করো না।
আসলে মানুষের কিংবা বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কথা বলে এই ধার্মিক মানুষগুলো অনেক শান্তি পায়। আর সেখানেই ঈশ্বরকে আমদানি করে ফেলে এককথায়। কিন্তু সেই জায়গাটাও কোন না কোন ভাবে ঈশ্বরকে ছেড়ে দিতে হয় বিজ্ঞানের কাছে , আমাদের জ্ঞানের কাছে। এটাই হয়ে এসেছে… আল্লাহ ভালো করার মালিক ছিল অনেকদিন… এখন ডাক্তার আর ওষধ কিছুটা হলেও সেই জায়গায় ভাগ বসিয়েছে… দিনে দিনে এমন আরো অনেক হবে। কিন্তু মজার ব্যপার এগুলো ওদের জন্য শুধু ইগনোর করার জিনিস !!
কিন্তু কতক্ষন মানুষের সীমাবদ্ধতাকে পুজি করবে মানুষ ঈশ্বরকে বাচাতে ? আমি ভেবেছি এই জিনিসটা নিয়ে। মানুষের জ্ঞানের ঠিক কোন পর্যায়ে এই ঈশ্বরের অবস্থান হতে পারে ? আর মানুষের এই জ্ঞানের জগৎটা খুব বেশি বড় নয়… অল্প কিছু খন্ডে বিভক্ত। যদিও এই ক্লাসিফিকেশনটা আমার নিজের না। কোন এক জায়গায় শুনেছি… আমি এখন যেভাবে লিখছি সেটা হয়তো একটু আলাদা হতে পারে।
পুরো জ্ঞানের জগৎটা এরকমভাবে সাজানো যায়;
১. সেইসব জিনিস যা আমরা জানি
২. সেইসব জিনিস , যা আমরা জানি না এখনো কিন্তু জানবো
৩. সেইসব জিনিস, যা আমরা কখনেই জানবো না
আর খুবই আক্ষেপের বিষয় ঈশ্বরের এই তিন নম্বর অপশনটাই একমাত্র আবাস্থল।যেটা একটা গানিতিক ডেড এন্ড, ইনফিনিটিও বলা যায়। কিন্তু গনিতবিদরা ইনফিনিটি খুব একটা পছন্দ করেন না সমাধান হিসেবে।
১ নং আর ২ নং এর সাথে আমাদের জিবনের অনেক কিছুর সম্পর্ক আছে। এইগুলো আমাদের জন্য অবশ্যই ম্যাটার করে। কিন্তু এই ৩ নং জিনিসটার সাথে আমাদের আসলেই কোন সম্পর্ক নেই।
যার ব্যপারে আমরা কিছুই জানতে পারবো না তা আছে কি নাই এই নিয়া মারামারির কি দরকার ? থাকলেই কি আর না থাকলেই কি ? আর যা আমরা কখনোই জানবো না তা নিয়ে কেন সময় নষ্ট করবো ? আমাদের কি বেকার সমস্যা এতই তীব্র ? আর তীব্র বেকার সমস্যায়ও বোধয় এই জিনিসটা নিয়ে কেচাল বাধানোর কোন ফায়দা নেই। ইনফিনিটি থেকে কিছু গেলে আর আসলে তাতে কিছুই আসে যায় না। তার চেয়ে বরং যদি এই আস্তিকের দল প্রথম দুইটা জিনিসের দিকে মনযোগ দেয় , তাহলে বোধয় সেটা তাদের এবং সকলের জন্য মঙ্গল। কিন্তু আসলেই এরা মঙ্গল চায় কিনা কে জানে ? রিচার্ড ফাইনম্যান এর একটা কথা খুব মনে পড়ে ওদের স্বভাবটা দেখলে… তিনি মিডিয়া আর সাধারন মানুষদের ওপর বিরক্ত হয়ে বলেছিলেন;
“ এরা কখোনো সেইসব জিনিস নিয়ে প্রশ্ন করে না যা আমরা জানি , বরং সেইসব জিনিস নিয়ে প্রশ্ন করে যেটা আমরা জানি না, এবং আমরা যে সেটা জানি না সেটা তারাও জানে। তারপরেও হাসি হাসি মুখ করে এইসব প্রশ্ন করে।“
আসলেই কি এদের জানার ইচ্ছা আছে ? যখন বিজ্ঞানীরা নতুন কিছু একটা আবিষ্কার করে তখন সেইটা নিয়ে আর আগ্রহ থাকে না মানুষের , বরং বিজ্ঞানিরা কি জানে না , সেইটা গুগল সার্চ দেয়। আর সেইটা নিয়ে কথা বলা শুরু করে… তাহলে আমরা যা কিছু জানলাম তার মুল্য কি রইল এদের কাছে ? এরা আসলে কি চায় ? জানতে চায় ? নাকি জানতে চায় বলে ভন্ডামি করে ?
আরো একটা কারনে আমি এই তৃতীয় অপশনটাকে পছন্দ করি না। কারন এই যে জায়গাটা এটা একটা অন্ধকার ঘরের মতো… এখানে যে কেউ যেকোন কিছু করতে পারে অন্যেরা সেটা দেখার সুযোগো পাবে না। সেইভাবেই আমাদের সমাজের সব কুসংস্কারগুলো গড়ে উঠেছে। তাই একজন বুদ্ধিমান মানুষ কেন যে জেনেশুনে এই অন্ধকার ঘরে ঢুকতে চায় সেইটা অবশ্যই সন্দেহের বিষয়। আমার ভাই অন্ধকার ভালো লাগে না খুব একটা। তাই এই জায়গায় আমার চরম বিতৃষ্ণা।
জানি না কবে এরা আসলেই বিজ্ঞানকে বুঝবে, বিজ্ঞান কিভাবে কাজ করে সেইসব বুঝবে। বিজ্ঞানের সুত্রগুলো দিয়ে শুধু গানিতিক সমস্যা সমাধান করে শুধু নাম্বার তুলবে না বরং সেইসব সূত্র কে ভালোবাসবে, সেইসব সূত্রের পেছনের কষ্টগুলোকে বুঝবে…
সবকিছুর ব্যাখ্যা আল্লাহ হলেও তাতে কিছু যায় আসে না অন্তত এই ব্যপারটা বুঝবে… ফ্যানের বাতাস , টিভির সিরিয়া কিংব আজকের এই ইন্টারনেট এর কোনটাই আল্লাহ এসে কোন নবীর কানে বলে দিয়ে যায় নি। আমার জানা মতে কোন বিজ্ঞানীই নবুয়াত লাভ করে বিজ্ঞানী হয় নি। এটা চোখে পড়াড় জিনিস হলেও কেন যে চোখে পড়ে না কে জানে ?
আমার মনে হয় মুক্তমনায় ধর্মের সাথে সাথে বিজ্ঞান সাহিত্য রাজনীতি দর্শন নিয়েও অনেক লেখা আসে। কিন্তু ধর্মটা মানুষের প্রাত্যাহিক জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত বলে এসব লেখায় মন্তব্য হয় প্রচুর।
অন্যান্য বিষয়গুলো দৈনন্দিন জীবনের সাথে অতটা জড়িত নয় বলে লোক এগুলো পড়ে মুলত জ্ঞান আহরনের জন্য, তাই বিষয়গুলো নিয়ে প্রচুর মন্তব্য চোখে পড়েনা। অনেকেই এগুলো পড়েন জানার কৌতুহলে, হয়ত মন্তব্য করার কিছু খুঁজে পান না অথবা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন।
তবে রাজনীতি বিষয়টা এর থেকে আলাদা বলে মনে হয়। যে বিষয়গুলো মানুষকে প্রভাবিত করে বেশী সেগুলো নিয়েই স্বভাবতঃ মন্তব্য চলতে থাকে। এতে আর আর্শ্চয্য কি।
আমি সমাধান বাতলেছি-মুক্তমনাতে একটি নিধার্মিক মাসের আয়োজন হোক-যেখানে ধর্ম নিয়ে কোন পোষ্ট করা চলবে না। শুধু বিজ্ঞান সাহিত্য অর্থনীতি অভিজ্ঞতা রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হবে। মুক্তমনা ব্লগ এই ভাবে শুধু ধর্মের ক্যাঁচালে ফেঁসে গেলে সবার ক্ষতি হবে। একমাস আমরা ” নিধার্মিক মাস” হিসাবে পালন করি।
@বিপ্লব পাল,
একমত, আমি নিজেই ধর্ম নিয়ে বেশী লাফালাফি করি। তবে আজকাল আমিও ক্লান্তি বোধ করছি।
@বিপ্লব পাল,
প্রস্তাবটা খারাপ না, তবে কেউ তো বিজ্ঞান সাহিত্য রাজনীতি দর্শন নিয়ে লিখতে নিষেধ করেনি। লিখে ফেলুন না আপনারা কেউ। তা হলেই তো হয়।তখন যার যা রুচি সেটা পড়বে আর মন্তব্য করবে।
মুক্তমনাতে একটি ঈশ্বর, ধর্ম, ইসলাম, মহম্মদহীন সপ্তাহ পালন করা হৌক!
আমি হতাশ হচ্ছি এখানে সাহিত্য, রাজনীতি,অর্থনীতি নিয়ে কোন ব্লগ আসছে না-বিজ্ঞান নিয়ে কিছু ভাল ব্লগ আসছে। তাই ওই এক সপ্তাহে লোকজনকে সাহিত্য বা রাজনীতি বা নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখতে বলা হোক। ঈশ্বরকে নিয়ে বিতর্ক আর কুকুরের লেজ সোজা করা একই ব্যাপার-অনর্থক সময় নষ্ট।
@বিপ্লব পাল,
এগুলো নিয়ে কথা বলে বলে ক্লান্তশ্রান্ত হয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছি আমি।
মুক্তমনায় কিছু লোকজনই আছে যারা ধর্ম বিশেষ করে ইসলাম ধর্ম, মুহাম্মদ আর মুসলমানদের নিয়ে রসালো আলোচনা করে ব্যাপক মজা পায়। ভাবটা এমন যেন অন্যসব ধর্ম ধোয়া তুলসীপাতা আর অন্যধর্মালম্বী লোকজন সব গৌতম বুদ্ধের মত নিরীহ। এতেও আমার তেমন কোন আপত্তি ছিল না, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই এককেন্দ্রিক আলোচনার আড়ালে জ্ঞানের আর সব দিক হারিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। মুক্তমনা একটা মনোটোনাস এবং ম্যাড়মেড়ে ব্লগে পরিণত হয়ে যাচ্ছে যা খুবই বিপদজনক। আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন যে, এখানে শুধু ইসলামকে বাঁশ দেওয়ার লোকজনই আসে না, ভিন্ন ধরনের আগ্রহ নিয়েও মানুষেরা মুক্তমনায় পা রাখে। সেইসব লোকজনের জন্য এই পরিস্থিতি মোটেও সুখকর এবং আশাব্যাঞ্জক নয়।
এনিওয়ে, যার যার স্বাধীনতার বিষয় এটা, কাউকে বাধ্য করার অধিকারতো আমাদের নেই। আমরা শুধু আমাদের মতামতটাই জানাতে পারি। এর চেয়ে বেশি কিছু করার কোন ক্ষমতাও নেই আমাদের।
@ফরিদ আহমেদ,
আরে আছে। আমগো জ্ঞানের পরিসর বাড়ানোর জন্য লেখা দেন জলদি। আপনেরা না লিখা বইসা থাকলে হইবো নাকি?
ফরিদ দা আর বিপ্লব দার কথার সাথে সম্মতি প্রকাশ করছি। তবে আর কিছু বলতে ভয় লাগছে,আবার কে আমার কমেন্টে মডু পরিচয় খুজে পাবে কে জানে।
@শাফায়েত,
আমার সম্মতিটাও দিয়া গেলাম। ধর্ম নিয়া এই ক্যাচালে মাথা আউট হওয়ার যোগাড়! দুনিয়ায় কত সুন্দর সুন্দর বিষয় থাকতে আমরাও ফ্যানাটিক (বিশেষ) ধর্মবিরোধী হয়ে যাচ্ছি কিনা ভেবে দেখা দরকার।
সাহিত্য-দর্শন-বিজ্ঞানের বিষয় গুলো নিয়া ভাল লেখা চাই সবার কাছ থেকেই। এটা আমার একদম ব্যক্তিগত মতামত।
প্রশ্নটি আস্তিকদের প্রতিই হওয়া উচিত ছিল যে তারা আস্তিক কেন? যদি সঠিক উত্তর দিতে না পারে তবে আর তাদের আস্তিক থাকা কেন? আর ‘নয় আস্তিক’ = নাস্তিক।
@লেখকঃ
১. সবকিছুরই একটা কারণ আছে
২. এই সৃষ্টিরও একটা কারণ আছে
৩. সেই কারণ হলো ঈশ্বর
এভাবে যদি কেউ ঈশ্বরকে সংজ্ঞায়িত করে তাহলে তার ভুল এক জায়গায়, তার হলো ১ নম্বরে, আপনি কি ১ নম্বরকে ঠিক মনে করেন? যদি না করেন, তাহলে বৈজ্ঞানিক গবেষণা সম্বন্ধে আপনার মত কি?
@তনুশ্রী রয়,
সবকিছুর একটা কারন আছে – সত্য
এই সৃষ্টিরও একটা কারন আছে – সত্য
সেই কারন হলো ঈশ্বর – এখানে এসেই ঝামেলাটা বাধালেন। আপনি যদি সাহিত্য করে থাকেন তাহলে আমার আপত্তি নাই কোন… সেই কারনকে ঈশ্বর নামে ডাকুন অথবা ভবিষতে আবিষ্কৃত কোন বিজ্ঞানীর দেওয়া নামে ডাকুন। কি আসে যায় ? …
এই সৃষ্টী বলতে আসলে আপনি কতটা বুঝিয়েছেন আমি জানি না। ধরে নিলাম কতগুলো ছোট ছোট অংশে ভাগ করে যদি আমরা চিন্তা করি তাহলে কারো আপত্তি থাকবে না। উদাহরন হিসেবে বলি;
ধরুন , প্রশ্ন আসলো পরমানু কেন গঠিত হয় ? এর একটা কারন আছে , এই যে পরমানুর সৃষ্টী এরও একটা কারন আছে… কিন্তু সেই কারনটা ঈশ্বর না। সেই কারনটা হলো ইলেক্ট্রোম্যাগ্নেটীক ফোর্স। এরকম আরো অনেক ঘটনার প্রশ্ন আসতে পারে, কিন্তু তাই বলে এর একটার জন্যও আমাদের ঈশ্বরের দরকার পরে নি আশা করি পরবেও না। এখানে ঈশ্বর বলতে প্রচলিত অর্থে ঈশ্বরকে বুঝিয়েছি।
আশা করি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিটা কেমন আপনি বুঝতে পারছেন… এক একটা সুত্র এক-একটা ঘটনার জন্য কারন হিসেবে কাজ করে। সেই সুত্রটাকেই আপনি ঐ ঘটনার জন্য দায়ি ঈশ্বর বলতে পারেন। যেমনটা আমার এক বন্ধু করে। তার ধারনা গ্রান্ড উনিফাইড ফিজিক্সই আসলে ইশ্বর … ওর এই ধারনায় আমার কোণ আপত্তি নেই, কারন ও শুধু নামটা বদলেছে ফ্যাক্টটা বদলায় নি। যদিও প্রশ্ন করেছিলাম তাহলে বল আমায় ; কোন একটা সুত্র যদি ঈশ্বর হয় তাহলে দিনে কয়েকবেলা সেই সুত্রের কাছে প্রার্থনা করার কি আছে ? আমি যদি বলি, হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা সুত্রের কাছে দিনে তিন বেলা প্রার্থনা করি সেটা কেমন শোনাবে ?
১ নং ঠিক আছে , ২ নংও তাই ঠীক আছে কিন্তু ৩নংটা যুক্তিবিদ্যা কিংবা বিজ্ঞানের জন্য ঠীক না। কারন উত্তর জানার আগে এই নিয়ে বিজ্ঞান কোণ কথাই বলবে না। এই যে বলা হয় বিগ ব্যাং এর কারনে মহাবিশ্বের সৃষ্টী এটা বলেই কিন্তু বিজ্ঞান থেমে যাবে না। আরো এগিয়ে যাবে আরো প্রশ্ন করবে … আপনার এই ক্রমিক যুক্তির ৩নং এ এসে থেমে যাবে না। বরং বারবার রিপিট করবে।তাই বৈজ্ঞানিক গবেষনা এই ধরনের সস্তা ডিডাকটিভ লজক থেকে অনেক অনেক ওপরে। আপনার এই ক্রমটায় ভালো করে খেয়াল করেন অনেকগুলো সিড়ি না ভেঙ্গেই একটা সিদ্ধাতে চলে এসেছেন কিভাবে এলেন এইটা আমি বুঝতেই পারলাম না। অংক না করেই সমাধান বলে দেওয়ার মতো, আইডিয়া খারাপ না। কিন্তু সবাই যে এই ব্যাপারটা পছন্দ করবে তা তো নয়, বিশেষ করে যারা পরিশ্রমী।
@অনন্ত নির্বাণ,
আপনি এত সুন্দর করে বোঝাতে পারেন!! আপনার মত করে আমিও চিন্তা করি, ভাবি। কিন্তু বোঝাতে বললে এত পরিস্কার ভাবে বোঝাতে পারতাম না কখনই।
আপনি আরো লিখবেন। বিজ্ঞান নিয়ে বিশেষ করে পিওর ফিজিক্স নিয়ে। আপনার পোস্টের জন্য আপনাকে :rose2: :rose2: :rose2:
@অনন্ত নির্বাণ,
matter বা বস্তু হলো মূলে, সে আপনি সেটাকে ঝিল্লি, সুতা, ইলেক্ট্রণ যে নাম ই দিতে পারেন। আপনি বলেছেন,
এটা কোথায় পেলেন?
t=10^-43 sec এর আগে যে matter ছিল, তার উদ্ভব কোথা থেকে?
সাহিত্য বলুন আর যাই বলুন এটাই তো ঈশ্বরের সংজ্ঞা।
আমি সৃষ্টি বলতে ঐ কনাভরের কথাই বলছি, যে পর্যন্ত আজকের বিজ্ঞান যেতে পেরেছে।
ধন্যবাদ
@তনুশ্রী রয়,
আপনি এ ভিডিওটি দেখতে পারেন।
httpv://www.youtube.com/watch?v=aD9MtIma5YU&playnext_from=TL&videos=dD-KwN5MOmQ
@তনুশ্রী রয়,
আসলে আমি এখানে একটা এটম এর স্ট্যবিলিটির জন্য দয়ী একটা বল কে উদাহরন হিসেবে দেখিয়েছি শুধু।EMF না থাকলে কোন পরমানুই গঠীত হতে পারতো না।যাই হোক ইচ্ছা করলে আরো অনেক পারফেক্ট উদাহরন দেওয়া যেত।কিন্তু আমি এখানে যেটা বুঝাতে চেয়েছি সেইটা কি খেয়াল করেছেন ?
প্রশ্ন করাকে বিজ্ঞান কখনো অনুৎসাহিত করে না। কিন্তু প্রশ্ন করতে করতে একটা সুবিধাজনক জায়গায় এসে থেমে গিয়ে মনগড়া সমাধান কল্পনা করলে সেটা ভালো দেখায় না। সেই ম্যাটার এর উদ্ভব কোথা থেকে এই প্রশ্ন বিজ্ঞানও করছে সেটা অবশ্যই জানেন, আর এর উত্তর হিসবে বিজ্ঞান কিছু বলে নি এখনো, আরো অনেক গবেষনা বাকি কিন্তু আমি বুঝতে পারলাম না আপনারা কি এমন যাদুর বলে জেনে গেলেন যে সেটার কারন ঈশ্বর ? আমাদের প্রত্যেকটা অক্ষমতাকে ঈশ্বর বলে আসলে আমরা কি প্রমান করতে চাইছি ? আর ধরে নিলাম যে আপনার ঈশ্বর সেই ম্যাটার এর সৃষ্টীকর্তা, তাহলে সেই ঈশ্বরের অস্ত্বিত্বের ব্যাখ্যা কি ? এমন একটা সমাধান আমাদের কখোনেই কাম্য নয় যার নিজেরই কোন সমাধান নেই।
আর সৃষ্টী বলতে শুধুমাত্র কনা ভরেই কি থেমে থাকবেন ? এর থেকেও মৌলিক কিছু যদি বিজ্ঞান খুজে পায় তখন ? নাকি ভাবখানাই এমন , বিজ্ঞানের জ্ঞান যেখানে এসে শেষ হয়েছে সেখানেই আপনাদের জ্ঞান শুরু হয়েছে ?
আর ঈশ্বরের সংজ্ঞার ব্যাপারটা আমার কাছে এখনো ঠীক ক্লিয়ার না। যে যেভাবেই আমাকে বোঝাতে চেয়েছে আমার কাছে একটাও সুবিধার মনে হয় নি। আপনাকে অনুরোধ করতে চাইছি আপনি কি মনে করেন এই নিয়ে একটা লেখা লিখে ফেলুন , এই ছোট ছোট দুয়েকটা লাইনে স্পষ্ট করে কিছু বোঝা যায় না।
@অনন্ত নির্বাণ,
আপনার চিন্তার সাথে আমার কী মিল! আমি একটা লেখায় অগোছালোভাবে বলেছি-
ভালো লাগল। ধন্যবাদ।
অজ্ঞেয়বাদি হলেন কিভাবে আর কিভাবে তা থেকে নাস্তিক্যবাদের দিকে গেলেন? আপনার কাছে অজ্ঞেয়বাদ ও নাস্তিক্যবাদের মূল পার্থক্য কোথায়?
একটু কৌতুহল হওয়ায় প্রশ্নগুলো করলাম। উত্তর না দিলে মোটেও কিছু মনে করব না।
@অনন্ত নির্বানঃ
বিজ্ঞানের ছাত্র হয়ত আপনি, আমি না। আমি শুধু বিজ্ঞানের ইতিহাস/সাহিত্যটুকু পড়েছি। তাতে আমার মনে হয় নি, বিজ্ঞান থেমে গেছে বা যাবে, তবে একই ভাবে এটাও মনে হয় নি যে বিজ্ঞানের যা অগ্রগতি তাতে ঈশ্বরের প্রয়োজনীয়তা নাকচ হয়ে গেছে, কিংবা বিজ্ঞান কখনো এ বিষয়টা নিয়ে চিন্তিত।
ধন্যবাদ মুক্তমনাকে, আমি এখন সরাসরি মন্তব্য করতে পারি।
@তনুশ্রী রয়,
এটা ঠিক বলেছেন মোটামুটি, যদিও আপনার উপসংহারের সাথে কিছুটা দ্বিমত আছে। ঈশ্বরের প্রয়োজনীয়তা নাকচ হয়ে হয়ত যায়নি, কিন্তু ঈশ্বরের অনুমান ছাড়াই এখন পদার্থবিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের উৎপত্তির ব্যাখ্যা দিয়ে পারছেন (প্রান্তিক কিছু প্রশ্ন আছে ঠিকই, কিন্তু সেগুলো বিজ্ঞানের অগ্রগামীতার সাথে সাথে তার উত্তরও বেরিয়ে আসবে)। আর জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এটি আরো স্পষ্ট। ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব উইলিয়াম প্যালির ডিজাইন আর্গুমেন্টকে বাতিলই করে দিয়েছে। কারণ ডারউইনের তত্ত্ব দেখিয়েছে যে, আলাদা আলাদা ভাবে জীব সৃষ্টির প্রয়োজন পরেনি, তারা একই উৎস থেকে ধারাবাহিকভাবে বিবর্তিত হয়েছে। কোন সৃষ্টিকর্তা দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতি বিভিন্ন সময় সৃষ্টির দরকার পড়ে নি।
এখন, মহাবিশ্বের উৎপত্তি এবং জীব্জগতের অস্তিত্বের যদি প্রাকৃতিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়, তবে ঈশ্বরের খুব বেশি ভূমিকা হয়তো বাকি থাকে না। তারপরেও কেউ বলতেই পারেন ‘ঠুটো জগন্নাথ’ মার্কা এক ধরনের ঈশ্বর উপরে আছেন কিন্তু তার সৃষ্টিতে হস্তক্ষেপ করে না, কারো পাপ পূন্য নিয়ে ভাবিত নন, জীবজগতে বিবর্তন ঘটতে দিচ্ছেন ইত্যাদি। সে ধরনের ঈশ্বর নাকচ হয়নি এটি সত্য। কিন্তু সে ধরনের কোন ঈশ্বর থাকলে যিনি বিশ্বাস করেন তাকেই সেটি প্রমাণ করতে হবে, অন্যদের নয়। মনে রাখতে হবে – বিজ্ঞান কিন্তু ব্রহ্মদৈত্য কিংবা ফ্লাইং স্পেগেটি মনস্টারের অস্তিত্বও নাকচ করতে পারে না। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আমাদের বিশ্বাস করতে হবে এগুলো আছে। যিনি ওতে বিশ্বাস করেন প্রমাণ করার দায়িত্ব তার উপরেই বর্তায় (বার্ডেন অব প্রুফ)।
@অনন্ত নির্বাণ,
১ নং ঠিক কেন সেটা কিন্তু বুঝলাম না।
আমার তো মনে হয় বিজ্ঞান বিবরণমূলক, কারণ টারণ বড় ব্যাপার না।
@রৌরব,
আর তাছাড়া ১ নং পয়েন্টটি যে স্বতঃসিদ্ধ তা মনে করার কোন কারন নেই। বিশেষতঃ কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার জগতে কারণবিহীন ঘটনার বহু প্রমাণ বিজ্ঞানীরা পেয়েছেন। কোয়ান্টাম দোদুল্যমনতা (Quantum Fluctuation), আণবিক পরিবৃত্তি (Atomic Transition), আণবিক নিউক্লিয়াসের তেজষ্ক্রিয় অবক্ষয়ের (Radio active decay of nuclei) মতো কোয়ান্টাম ঘটনাসমূহ ‘কারণবিহীন ঘটনা’ হিসেবে ইতিমধ্যেই বৈজ্ঞানিক সমাজে স্বীকৃত।
আসলে তনুশ্রী রয় যে যুক্তিমালা সাজিয়েছেন সেটার দার্শনিক নাম – কালাম কসমোলজিকাল আর্গুমেন্ট। এর অনেক রিবিউটাল আছে নেটে।
আমাদের বিবর্তন আর্কাইভেও দেখা যেতে পারে এই লিঙ্কটি –
সব কিছুর পেছনেই কারণ আছে, মহাবিশ্বের উৎপত্তির একটি আদি কারণ রয়েছে, সেই কারণটিই ঈশ্বর
@অভিজিৎ,
কৌতুহল বশত কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের ওপর উইকিপিডিয়ায় কিছু পড়াশোনা করলাম (অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন আমার জ্ঞানের বহর)।
প্রথমে সাধারণ ভাবে কোয়ান্টাম তত্বের ব্যবহারের ওপর একেবারেই একটা ব্যক্তিগত মত দিই। এই তত্বটি অত্যন্ত জটিল হওয়ায় পারতপক্ষে এটার ব্যবহার না করাই উচিত বলে মনে করি। কারণ না হলে কোয়ান্টাম তত্বের ভারি মুগুর দিয়ে প্রতিপক্ষকে বধ করা হচ্ছে এমন একটা ধারণার সৃষ্টি হতে পারে। অনেকটা “আপনি কি খাঁটি আরবিতে কোরান পড়েছেন” বলবার মত।
এখন আমার উইকিপিডিয়া আহৃত মহাজ্ঞানের বোঝাটি নামাই :-P। মনে হল, কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনে যে “অকারণ” শক্তি আসে যায় সেটার আসলে একটা ব্যাখ্যা আছে, সেটা মেট্রিক্স অ্যালজেবরার একটা সাধারণ বৈশিষ্টের সাথে জড়িত (non-commutability)। এখন এই “ব্যাখ্যা” কে কি কারণ বলা যায়? আমি আবার আগে যা বলেছিলাম সেখানে ফিরে যাব, বলব সেটা অপ্রাসঙ্গিক। বিজ্ঞান বিবরণমূলক। “কারণ” নিয়ে মাতামাতি করে লাভ নেই।
@অভিজিৎ,
দাদা,
এই স্বীকৃতি কি সীমাবদ্ধতার স্বীকৃতি না ? আজ অবধি বিজ্ঞানীরা জানেন না এইসবের “কারন”, কিন্তু তাই বলে কি কখনোই জানবে না ? এইগুলোকে আমি কারনহিন ফেনোমেনা না বলে বলতে চাই কারন না জানা ফেনমেনা।
কোয়ান্টাম ফিজিক্স আর ক্লাসিকাল ফিজিক্স এখনো দুই মেরুতে , ইউনিফিকেশন এর আগে এগুলোকে কারন-হীন বলাটা বোধয় ঠিক না।
@ রৌরব
আমরা বোধয় অবশেষে ভাষার প্যাচে আটকে যাচ্ছি.
@অনন্ত নির্বাণ,
আমরা আমাদের পরিবেশে যা সচরাচর দেখি সেটাকেই স্বাভাবিক বলে মনে করি। আমরা কারণ বিহীন কোনো ঘটনার সাথে পরিচিত নই। তাই মনে করি – সব কিছুর পেছনে কোনো কোনো কারণ থাকতেই হবে। এবার প্রশ্ন- আমার মনে হয় বলেই কি সব ঘটনার পেছনে কারণ থাকতে হবে? আমার মনে হওয়ার সাথে সব ঘটনার পেছনে কারণ থাকার কোনো সম্পর্ক কি আছে? আর হ্যা, কোনো কিছু বিজ্ঞানীরা কোনোকালেই জানবেন না এমন মনে করার কোনো কারণ নেই। বিজ্ঞানীরা কেন কিছু ঘটনার পেছনে কারণ নেই বলছেন তা তাদের কাছ থেকেই জেনে নিতে হবে।
আরেকটি কথা। আমরা যুক্তি প্রয়োগের সময় “সব কিছুর” সাথে ‘মহাবিশ্বের’ কারণকে গুলিয়ে ফেলি। মহাবিশ্ব হল সব কিছুর সমষ্টি। আর কোনো কিছু হল মহাবিশ্বের অন্তর্গত কোনো বস্তু বা ঘটনা। তাই সব কিছুর পেছনে কোনো কারণ আছে বলেই মহাবিশ্বের পেছনে কারণ থাকতে হবে এধরণের ধারণা ভুল এবং তা পূর্ব-সংস্কার আশ্রিত ধারণা।
এগুলো আমার একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত। কোনো দ্বিমত থাকলে জানাবেন।
@সৈকত চৌধুরী,
একমত।
@অনন্ত নির্বাণ, আপনি ভাষার প্যাঁচের কথাটা যে বলেছেন, ঠিক বলেছেন। আমার মন্তব্যের লক্ষ্যও কিন্তু তাই ছিল, নানান ধরণের সামাজিক-মানবিক অর্থ বিজড়িত “কারণ” শব্দটাকে পরিহার করা।
দ্বিমত। colloquial অর্থে ঠিক আছে, কিন্তু সুস্পষ্ট সংজ্ঞার্থে নয়। প্রথমত যা দেখতে পাইনা (অর্থাৎ observable নয়) সেটা আমাদের জানার বা জানতে চাওয়ার স্রেফ কোন উপায় নেই। কোন না কোন ভাবে একটা phenomenon কে observable হতে হবে। আমরা সাধারণ অর্থে যােক কারণ বলি সেটা অনেকটা এরকম — আমরা নতুন একটি phenomenon দেখছি, এর “কারণ কি”? পড়ুন — আমরা নতুন একটি phenomenon দেখছি, আমরা কিভাবে মহাবিশ্বের বিবরণকে update করতে পারি যাতে বিবরণটা এই phenomenon এর সাথে সংগতিপূর্ণ হয় (এবং যতদূর সম্ভব ভবিষ্যৎবাণী করা সম্ভব হয়)?
@সৈকত চৌধুরী,
এই লাইনগুলো চমৎকার লাগলো –
আরেকটি কথা। আমরা যুক্তি প্রয়োগের সময় “সব কিছুর” সাথে ‘মহাবিশ্বের’ কারণকে গুলিয়ে ফেলি। মহাবিশ্ব হল সব কিছুর সমষ্টি। আর কোনো কিছু হল মহাবিশ্বের অন্তর্গত কোনো বস্তু বা ঘটনা। তাই সব কিছুর পেছনে কোনো কারণ আছে বলেই মহাবিশ্বের পেছনে কারণ থাকতে হবে এধরণের ধারণা ভুল এবং তা পূর্ব-সংস্কার আশ্রিত ধারণা।
আচ্ছা ভুলেই গিয়েছিলাম, আদি কারণের অসঙ্গতি দেখিয়ে নিয়ে তোমারও তো একটা চমৎকার লেখা ছিলো মুক্তমনায়-
স্রষ্টা এবং ধর্ম প্রসঙ্গ যখন অসঙ্গতির
একটা পূর্ণাংগ লেখা লিখতে পারো এ নিয়ে।
@সৈকত চৌধুরী,
@সৈকত চৌধুরী,
কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সাথে জড়িত কোন বিজ্ঞানি আজ অবধি বলতে পারে নি যে সে কোয়ান্টাম মেকানিক্স ঠিক বোঝে, বরং যদি কেউ বলে যে সে কোয়ান্টাম মেকানিক্স বোঝে তবে তাকে নিয়ে সন্দেহ করা হয়। তাই তারাই যা বলবে সেটাই শেষ কথা না।না জানা যে কোন কিছুর কারন নেই বলা আসলেই অতি-সরলীকরন কিন্তু লঘু অর্থে এতে আমি সমস্যা দেখি না। দুনিয়ার এমন কোণ বিজ্ঞানী বলতে পারবে না নিশ্চিত করে যে তার কোন থীয়োরী কোন একদিন কোন একটা ফ্রেম এর জন্য ভুল প্রমানিত হবে না, আর তাই কারনহীন ঘটনা একেবারে এক্সট্রিম অর্থে আমি মানতে পারছি না। এটা অনেকটা ধার্মিকদের স্টাইল হয়ে যাচ্ছে, খেয়াল করে দেখুন । বিজ্ঞানে কোন আল্টীমেট ঘোষনা নেই। তাই একেবারে কারনহীন বলাটা এখনো বোধগম্য নয় আমার জন্যে।
আর কারন কে আমি এখানে কিন্তু থাকতেই হবে বলি নি একবারো , বলেছি কোন একটা আলোচনা কিংবা একটা যুক্তি শুরু করার আগে এটা আমরা মেনে নিতে পারি , এর বেশি কিছু না।
আমার ধারনা এই ধরনের কথা বলাও একই যুক্তিতে ভুল !! মহাবিশ্বের পেছনে কোন কারন থাকবে না এইটা কেউ বাজি ধরে বলতে পারে না, যেমনটা পারে না এইটা বলতে যে মহাবিশ্বের পেছনে কারন আছেই। আমি জানি ওটা পূর্ব-সংস্কার আশ্রিত একটা ধারনার আওতায় পড়ে তাই বলেই কি সেইটা মিথ্যা হয়ে গেল ? এটা ভাবাওতো একটা নতূন সংস্কারের মত শোনায়।
@অনন্ত নির্বাণ,
কিন্তু সৈকত চৌধুরী কারণ থাকতেই পারেনা এমন দাবি করছেন বলে তো মনে হয়না। বলছেন কারণ থাকতেই হবে এমন কোন কথা নেই। অর্থাৎ তনুশ্রী রায় এর ১নং গ্রহণযোগ্য নয়।
@রৌরব,
কারন থাকতেই পারে না এমন দাবি করেন নি , কিন্তু কারন থাকতে পারে এইটা চিন্তা করাতে সমস্যা কোথায় ? আর এই চিন্তাকে ভুল বলারতো অধিকার থাকতে পারে না কারো। তাই না ? আপনি যে কোন সম্ভবনা চিন্তা করতে পারেন এবং সেটা বিশ্লেষন করতে পারেন , আগেই সেটা ভুল না ঠিক এটা ভাবা কতটা জরুরী ?
আর তনুশ্রী রয়ের যুক্তির ক্রমের অসংগতি টা দেখাতে হলেতো আপনাকে প্রথম টাকে মেনে নিয়েই এগুতে হবে এর ভেতরের সমস্যাটা বের করার জন্য। অন্য ভাবেও এটাকে সামলানো যায় কিন্তু সেইটা হবে অন্যরকম, যেটা অনেকেই মানতে চাইবে না , যেমনটা কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে এলে হবে। প্রথম যুক্তিটাকেই আমি ফেলে দিতে চাইনি , কারন এটা করলে হয়তো এখানে আমি ভেতরের সমস্যাটা বের করতে পারবো না। কারন তখন অন্য পেচাল আরম্ভ করতে হবে , QM এর উদ্ভট কাহিনী যার কোন কারন নেই।
@অনন্ত নির্বাণ,
হমম। কিন্তু ১নং এর দাবীটাই তো ছিল কারণ থাকতেই হবে। কাজেই সেটার ব্যাপারে আপত্তি থাকলে সেটা নিয়ে আলোচলা চলতেই পারে।
আপনি বলতে চাইছেন (যা বুঝতে পারছি, ভুল হলে ক্ষমাপ্রার্থী) যে ১নং মেনে নিলেও রয়-এর যুক্তিক্রমে সমস্যা আছে। ঠিক আছে, আমি অন্তত তাতে দ্বিমত পোষণ করছিনা।
কিন্তু আপনার যুক্তিক্রমের পাশাপাশি ১নং নিয়ে আলোচলাটা আমি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছি। এর কারণ( :-D): ওটার মধ্যে আমি লক্ষ্য করছিলাম সাধারণ ভাষার কিছু concept কে বিজ্ঞানের ওপর প্রক্ষিপ্ত করবার একটা প্রবণতা। সত্যি বলতে কি, আমার মতে এখানে QM কে টানার প্রয়োজনীয়তাই নেই। ধরেন QM নাই, ধরেন ক্লাসিকাল মেকানিক্স-এই সবকিছুর ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে। তাতে কেন আমি ভাবব যে “সবকিছুর” কারণ আছে? ক্লাসিকাল মেকানিক্স-এর মূল সূত্রগুলির “কারণ” কি, এ প্রশ্নের তখন জবাব কোথায়? আমার মতে জবাব, বিজ্ঞানের উদ্দেশ্য কে পরিষ্কার করা।
@রৌরব,
১নং টা এত গুরুত্বের সাথে ছিল না যদিও । বলা হয়েছে যে সবকিছুর কারন আছে , কিন্তু এটা স্পষ্ট করা হয় নি , “যেইসব” বিষয়ের কারন জানা( আপনি বলতে পারেন বিবরন জানা) সেইসব’ই কি “সবকিছু” কিনা ? তাই আমি দ্বিমত পোষন করি নি। আমি চেয়েছি সক্রেটীক স্টাইল অনুসরন করার জন্য।
হুম… সেই চেষ্টা ছিল বলেই আমি ওটা সরাসরি নিয়ে আপত্তি করি নি। বরং প্রক্ষেপনের বৈসাদৃশ্যটা দেখাতে চেয়েছি। আর তাছাড়া qm এর মত ক্লাসিকাল মেকানিক্স এত র্যডিকাল না তাই এইটা খুব সহজে ক্লাসিকাল মেকানিক্স দিয়ে বোঝানো কঠীন।আসলে আমি এখানে বলতে পারি আমরা কেন ভাববো যে একটা কারন আছে সেটা হয়তো সম্পুর্ণ ভাষাগত । কিছু দেখলেই আমরা প্রশ্ন করি , কেন এমন ? কিভাবে এমন ? এই সহজাত জানার ইচ্ছাই দায়ী বলতে পারেন। আমরা সবকিছু সম্বন্ধে ক্লিয়ার থাকতে চাই তাই হয়তো। সবকিছুর কারন থাকতে হবে এইটা আমার কাছেও খুব বেশি গ্রহনযোগ্য না কিন্তু কারন হয়তো নেই এইটা ভাবলে আমার মনে হয় আমাদের গতি কমে যাবে। এইটা একটা পজিটিভ ফিডব্যাক এর মত কাজ করে বিজ্ঞানের জন্য।
@অনন্ত নির্বাণ,
না পদার্থবিজ্ঞানীরা তা ভাবেন না। কোন কিছুর কারণ বলতে যা বোঝানো হয় তা হল – সারটেইন পেয়ার অব ইভেন্টস এর মধ্যে ধরা যাক বলছি B ঘটার কারণ A. পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় – ইভেন্ট B ঘটার আগে ইভেন্ট A অবশ্যই ঘটতে হবে, এর মানে হচ্ছে এদের মধ্যে প্রায় ১০০% ভাগ কোরিলেশন থাকবে। কিন্তু আমি যে কোয়ান্টাম ফেনোমেনাগুলোর কথা বলছি তাদের সেরকম কোন কোরিলেশন থাকে না। যেমন রেডিও এক্টিভ ডিকের কথা বলা যায় – এটি একটি স্পন্টেনিয়াস ইভেন্ট এবং র্যান্ডম। মুক্তমনা ফোরামে আগে আলোচনা হয়েছিল, দেখুন এখানে, এখানে, কিংবা এখানে।
কোয়ান্টাম দোদুল্যমনতা, আণবিক পরিবৃত্তি, আণবিক নিউক্লিয়াসের তেজষ্ক্রিয় অবক্ষয়ের মতো কোয়ান্টাম ঘটনাসমূহ ‘কারণবিহীন ঘটনা’ হিসেবে স্বীকৃত এই কারণে নয় যে এর কারণ আমরা জানিনা, বরং এগুলোকে চিরন্তন কার্যকারনের ছকে তাদের ফেলা যায় না। আমাদের সকল সিদ্ধান্ত আসলে মানব অভিজ্ঞতা কেন্দ্রিক। কিন্তু কোয়ান্টাম ফেনোমেনাগুলো স্বাভাবিক নয়, বরং চরম অবস্থার প্রতিফলন। চরম অবস্থাকে কেবল মানবিক অভিজ্ঞতা থেকে আসা যুক্তির আলোকে ব্যাখ্যা দিলে হবে না (ঠিক একই ভাবে, চারপাশে ঘটা মানব অভিজ্ঞতার সাহায্যে যুক্তি দিলে আপনি আইন্সটাইনের রিলেটিভিটির টাইম ডায়ালেশন, লেন্থ কন্ট্রানশন ব্যাখ্যা করতে পারবেন না, কারণ এগুলো চরম অবস্থার প্রতিফলন, চারপাশে ঘটে না)। বহু বিজ্ঞানীই মনে করেন মহাবিশ্বের উৎপত্তি হয়েছিলো খুব চরম অবস্থায় ‘কারণ বিহীন’ কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের মধ্যে দিয়ে। আপনি এ প্রসংগে ভিক্টর স্টেঙ্গরের বইয়ের The Uncreated Universe অধ্যায়টি দেখতে পারেন।
@অভিজিৎ,
এটা কি কারনের সার্বজনীন সংজ্ঞা ? মেকানিকালি ঠিক আছে , কিন্তু সাধারন অর্থে এর বাইরেও কারন এর চেহারা অন্যরকম ভাবে দেখানো যায়। যেমন ধরুন বলা হলো , তেজষ্ক্রয় ভাঙ্গন এর কারন কোন বল ?, এখানে কারন হিসেবে ইলেক্ট্রোউইক ফোর্সকে দেখানো যায়। এখানে দুইটা ইভেন্টের দরকার পড়ছে না , যদিও এইটা খুব সাধারন অর্থে, আর আমি শুরু থেকেই সাধারন অর্থেই কথাটা বলে আসছি।
চরম অবস্থা আর ক্লাসিকাল অবস্থা এই দুইটাই কিন্তু বাস্তব । কিন্তু এই দুই ক্ষেত্রে ফ্রেম টা আলাদা তাই বলে এই দুইটা জিনিসের টান্সফর্মেশন অসম্ভব বলে মনে করি না আমি। একদিন হয়তো আমরা কোয়ান্টাম ফিজিক্সকে ক্লাসিকাল ফিজিক্সে অনুবাদ করতে পারবো। আর কারন বিহীন কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন গুলোও কিন্তু থার্মোডায়নামিক্স এর সুত্র্গুলো মেনে চলে, এর কারনই বা কি ??
@অনন্ত নির্বাণ,
আসলে তেজষ্ক্রয় ভাঙ্গন এর কারণ হিসেবে আপনি যা বলেছেন সেটা হচ্ছে তেজস্ত্রিয় ভাঙ্গনের ব্যাখ্যা। আমি ‘কারণ’ হিসেবে যেটা বলছি সেটা হচ্ছে ‘নির্ভরশীলতা’ অর্থে, পদার্থবিজ্ঞানীরা যেভাবে ব্যবহার করেন। যেমন বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের ফলে শূন্যস্থানে প্রতি নিয়ত ভার্চুয়াল পার্টিকেল তৈরি হচ্ছে, এবং এই ঘটনার ব্যাখ্যা দেয়া যায় হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা তত্ত্ব ব্যবহার করে, কিংবা ফার্মির গোল্ডেন রুল অনুযায়ী। কিন্তু সেই ব্যাখ্যা ঘটনাটির ‘কারণ’ নয়। আসলে আমরা ভুলে যাই যে, কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সূত্রগুলো সম্ভাবনাভিত্তিক, আমরা এর সাহায্যে ঘটনার একটা ‘সম্ভাবনা ভিত্তিক’ ব্যাখ্যা দিতে পারি কিন্তু কখনোই বলতে পারবো না যে, ঠিক কখন কিংবা কোন মুহূর্তে একটি নির্দিষ্ট নিউক্লিয়াসের ডিকে হবে। কোন নির্দিষ্ট অনুর ডিকে হবে – সেটা কি রাম, রহিম নাকি কামালের – আমরা কখনোই হলফ করে বলতে পারবো না। রামের ডিকে শুরু হলে ব্যাটা চেঁচিয়ে বতে পারে – আমি কেন রহিম ব্যাটা কি দোষ করল? আর কামালই বা নয় কেন, ইত্যাদি।
আসলে কোয়ান্টাম লেভেল কার্যকারণ সেভাবে কাজ করে না। আর আদি কারণ খোঁজার তো কোন মানেই হয় না। আমি রিচার্ড মরিসের বই থেকে উদ্ধৃতি দেই –
the idea of a First Cause sounds somewhat fishy in light of the modern theory of quantum mechanics. According to the most commonly accepted interpretation of quantum mechanics, individual subatomic particles can behave in unpredictable ways and there are numerous random, uncaused events. (Morris, Morris, Richard. 1997. Achilles in the Quantum World. New York: Henry Holt & Co., 1997, 19)
এখন ভবিষ্যতে ‘কোয়ান্টাম ঘটনার’ কোন কারণ পাওয়া যাবে কি যাবেনা সেই বতর্কে আপাততঃ যাচ্ছি না। ভবিষ্যতের দোহাই পেড়ে যে কোন কিছুকেই বৈধতা দেয়া যেতে পারে, এমনকি ঈশ্বরও 🙂
সত্যি বলতে কি, প্রতিটি ঘটনার পেছনেই কারণ থাকবে – এই অনুমান আমাদের প্রাত্যহিক অভিজ্ঞতা সঞ্জাত পূর্বানুমান ভিত্তিক। কিন্তু অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নেয়া সিদ্ধান্ত সব সময় সঠিকই হবে এরকম কোন নিয়ম নেই। প্রাত্যহিক অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই একসময় মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে পৃথিবীটা সমতল, কিংবা সূর্য পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরছে, ইত্যাদি। কিন্তু আজ আমরা জানি যে ব্যাপারগুলো ঠিক উলটো। আমি আগেই বলেছি – প্রতিটি ঘটনার পেছনেই কারণ থাকবে -এই ব্যাপারটি পদার্থবিজ্ঞানের কোন সূত্র দিয়ে সমর্থিত স্বতঃসিদ্ধ নয়, স্রেফ প্রাত্যহিক অভিজ্ঞতা সঞ্জাত ধারণা। কোয়ান্টাম জগতে আমরা এই ধারণার বহু বিচ্চুতি দেখি। আর কোয়ান্টাম ফেনোমেনাকে গোনায় ধরতেই হচ্ছে, কারণ – বহু পদার্থবিদেরাই মনে করেন বড় সড় এক কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের মধ্য দিয়ে কারণবিহীন অবস্থায় আমাদের এই মহাবিশ্বের জন্ম হয়েছে, কিভাবে তার হাল্কা ব্যাখ্যা আমি দিয়েছিলাম এখানে। যারা বিস্তারিতভাবে জানতে আগ্রহী তারা পড়তে পারেন এম আইটির অধ্যাপক এলেন গুথের ইনফ্লেশনারি ইউনিভার্স বইটি।
আলোচনা এখানে শেষ করছি। এটিই এই বিষয়ে আমার শেষ মন্তব্য।
@রৌরব,
১নং ঠিক একটা এক্সিওম অর্থে , এটা ছাড়া হয়তো আমরা যে আলোচনা করছি সেটা আরম্ভ করাই সম্ভব না। আমার ধারনা আপনি গনিতের সাথে জড়িত আছেন তাই এটা খুব সহজ একটা ধারনাই মনে হওয়ার কথা। কারন আছে ধরে নিয়েই আমরা কারন বের করতে পারি।এবং কারনটা বিশ্লেষন করতে পারি।
বিবরনমূলক অবশ্যই কিন্তু কিসের বিবরন ? যা আমরা দেখতে পাচ্ছি তার বিবরন অবশ্যই না, যা দেখতে পারছি না সেটার বিবরন, যা বুঝতে পারছি না সেটার বিবরন। আর যা দেখতে পারছি না , যেটা অজানা সেটাই কি “কারন” না ? নাকি আপনি অন্য কোন নামে ডাকতে চাইছেন ?
এটা অবশ্যই ঠিক বিজ্ঞানের সব কারনের ব্যাখাই একটা বিবরন। যেমনটা দুনিয়ার সব বাক্যই বিবরনমূলক, কঠিন গ্রামাটিকাল অর্থে না।সাধারন অর্থে। কারন ছাড়া বিবরনের অস্তিত্ব কল্পনা করা কঠিন আর বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এট আরো বেশি প্রযোজ্য, কারন, ‘কারন” খোজাই বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় জ্বলানি।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ চমৎকার বিশ্লেষণের জন্য। সহজভাবে কথা বলার একটা সুন্দর গুণ আপনার আছে। চাই নিয়মিত লেখবেন।
আমি আরেকটু বলি। আস্তিকরা যখন বলে ঈশ্বর এমন একটা জিনিস যা আমাদের এই মনুষ্য মস্তিস্কে ধরবার নয তখন আমার প্রশ্ন –
১। এটা আস্তিকদের মাথায় ধরল কিভাবে?
২। আস্তিকরা ঈশ্বরের সব বৈশিষ্ট্য এমন ভাবে বলেন যেন ঈশ্বর তাদের বেশ পরিচিত। ঈশ্বরের কথিত বৈশিষ্ট্য যেমন অসীম দয়ালুতা, অসীম ক্ষমতা, অসীম জ্ঞান এসব বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আস্তিকরা নিশ্চিত হলেন কিভাবে?
কোনো কিছু অজানা থাকলেই তার কারণ হয়ে যায় ঈশ্বর- এজন্যই রাহুল সা. বলেছিলেন, “অজ্ঞতার অপর নাম ঈশ্বর”
বিষয়টা নিয়ে আমি ছোটবেলা থেকে ভেবে আসছি। আমার তো মাথায় ঢুকে না- কোনো কিছু অজানা হলে তার কারণ কিভাবে ঈশ্বর হয়।
ঈশ্বরবাদীরা সব সময় একটা বিভ্রান্তির মধ্যে থাকে যাকে ডকিন্স বলেছেন “গড ডিলিউশন”
শুধু মানুষের অজ্ঞতা নয়, মানুষের অক্ষমতা নিয়েও ইশ্বরবাদিরা ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে চান। আমি লিখেছিলাম-
মানুষের অজ্ঞতা ও অক্ষমতাকে ঈশ্বরবাদীরা ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণ হিসেবে দেখাতে চান যা নিতান্তই হাস্যকর। যেমন কেউ কেউ বলেন, আপনি কি পারবেন চাঁদ, সূর্য, পাহাড় এগুলো তৈরী করতে? আচ্ছা আমি যদি চাঁদ-সূর্য-পাহাড় এগুলো তৈরী করতে না পারি তবে তাতে ঈশ্বরের অস্তিত্ব কিভাবে প্রমাণিত হল? নাস্তিকরা কি বলেন, আমরা ঈশ্বরের অস্তিত্বে বশ্বাস করি না তাই আমরাই ঈশ্বর? বরং নাস্তিকরা বলেন, ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণ না থাকায় আমরা তাতে বিশ্বাস করি না। এ প্রসঙ্গে একটি গল্প স্মরণ হল।
এক আস্তিক আর নাস্তিকের মধ্যে বিতর্ক হচ্ছে-
আস্তিকঃ দেখ ঈশ্বর কী সুন্দর ঝর্ণা তৈরী করেছেন পাহাড়ের গায়।
নাস্তিকঃ এটা তো প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মেই তৈরী হয়েছে, এখানে ঈশ্বর আসল কোথা থেকে?
আস্তিকঃ তাহলে আপনি এরকম একটি ঝর্ণা তৈরী করে দেখান তবে মেনে নেব আপনার কথা।
নাস্তিক বেচারা বহু কষ্টে পাহাড়ের অপর দিকে একটা কৃত্রিম ঝর্ণা তৈরী করে দেখালেন। এবার
আস্তিক বললেন, ওহ, আপনি অনেক পরিশ্রম করে তা বানিয়েছেন যা আমার ঈশ্বর আদেশ করা মাত্রই এক নিমিষেই সৃষ্টি হয়ে গেল!! আর ঈশ্বর যদি সে ক্ষমতা আপনাকে না দিতেন তবে তা কি তৈরী করতে পারতেন? 🙂
আসলে মানুষের অক্ষমতা, সক্ষমতা, জ্ঞান, অজ্ঞান এক ব্যাপার আর ঈশ্বরের অস্তিত্ব ভিন্ন ব্যাপার। যেমন একজন মুসলিম ধর্মবাদী বলতে পারেন, পানি আল্লাহর নিয়ামত, আল্লাহ আমাদের জন্য তার কুদরতি উপায়ে পানি সৃষ্টি করেছেন। এবার কেউ যদি হাইড্রজেন আর অক্সিজেন এর সংমিশ্রণে কৃত্রিম উপায়ে পানি তৈরী করে দেখান তবে ঐ ধর্মবাদী তার অবস্থান থেকে কি এতটুকু টলবেন?
@সৈকত চৌধুরী,
আমার খুব মেজাজ খারাপ না হলে লিখতে ইচ্ছা করে না, আবার খুব মন ভালো না হলেও লিখতে পারি না ; এ এক জটিল পরিস্থিতি। তার ওপর আছে আলসেমি। ধন্যবাদ উৎসাহ দেওয়ার জন্য… 🙂 চেষ্টা থাকবে ভবিষতেও লেখার। 😀
আর মজার ব্যাপার হলো আস্তিকরা সবাইকে এক বাক্যে গাধা বনিয়ে দেয় , কারন আমরা নাকি কিছুই পারি না। সব আল্লাহ দিয়ে রেখেছে আমরা শুধু মডিফাই করি এই সব হাবিজাবি। কিন্তু নিজেদের গাধা বলতে সবসময় ভুল করে… ওরাই একমাত্র স্মার্ট গোষ্ঠী যারা এইসব বোঝে … আমরা কিচ্ছু বুঝি না। যাই হোক বোঝার দরকারও নাই আমাদের। আমরা চাই গাধা হয়ে থাকার স্বাধীনতা। কিন্তু আমদের এই গাধা হয়ে থাকাতেও ওদের আপত্তি। 🙁
@অনন্ত নির্বাণ,
ও হ্যা 🙂 । একজন একটি লেখায় এরকম বলেছিলেন- নাস্তিকরা যেহেতু মনুষ্য জ্ঞানের সীমারেখার ভিতরের অসম্পুর্ন বিদ্যাটাকেই “সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বকে অস্বিকার করার জন্য” যথেষ্ট মনে করেন। অতএব এটাকে তাদের গোড়ামি, মূর্খতা এবং সংকীর্ন মনের পরিচায়ক ধরে নিয়ে তাদেরকে বেওকুব বলা যাইতে পারে।
তাকে দেয়া আমার উত্তর –
@সৈকত চৌধুরী,
এ ক ম ত। খুব ভালো বলেছেন।
আসলেই???
একদা এক ব্লগে বিশিষ্ট এক তথাকথিত আলেম না্মক বিদ্যান ্লিখেছেন বিজ্ঞানে যা যা বলা আছে তা সবই নাকি কোরানে পূর্বেই বলা আছে। ভাইজানরে তখন জিজ্ঞাসা করেছিলাম ভাই, তাহলে যত বিজ্ঞানীরা এইসকল বিষয় আবিষ্কার করেছে তারা হয় চোর নাহয় পাগল। মানে হইল তা্রা হয় কোরান থেকেই চুরি করে আবিষ্কার করেছে নাহয় কোরানে এত কিছু থাকার পরেও নিজেরা বসে বসে না খেয়ে সংসার ধর্ম সকল কিছু বাদ দিয়ে আবিষ্কার করে বেড়াইছে যেখানে কোরানে আপনার মতে সব দেয়াই আছে। তাই তারা পাগল।আমার জানা মতে তারা কোরান পড়েনি বা জানেও না অনেকে কোরান কি জিনিস, তাহলে ভাই তারা পাগল। ঠিক আছে না?
সাথে আর একটা কথা বলেছিলাম, ভাই তাহলে আপনে একটা কাজ করেন, এই শুক্র, মংগল প্লুটো এইসব গ্রহে কি আছে কি নাই এইসকল বিষয় আপনে, এবং মহাজগতে কোথায় কি আছে কি নাই সব কোরান পড়ে ঐ সকল বিজ্ঞানীদের আগেই বের করে দেন। আমরাও উপকৃত হই, আর ঐ বেধর্মী বিজ্ঞানীদের মাথায়ও বাজ পড়ুক। কেমন হয়?
কি বলব ভাই, হয়ে গেলাম কাফের। কিছুই করার নাই। মাথায় এই কাফেরে্র কলংক নিয়ে আজও ঘুরে বেড়াই, ভাত খাই, আর তারা আজও সেই সকল বিজ্ঞানীদের পিছেই লেগে আছে।
আপনার লেখা ভালই লাগল।
ধন্যবাদ।
@Russell,
হুম… কি বলার আছে বলেন ভাই ? বিজ্ঞানের এইসব বড় বড় তত্ত্বগুলা বুঝতে জান শেষ হইয়া গেল আমার প্রায়, বলতে গেলে এখনো কিছুই বুঝি না। আর যখন দেখি এই ছাগল গুলা এইসব কুরানে আছে বলে তখন বিরক্তির সীমা থাকে না।একটা বৈজ্ঞানিক তত্ত্বও ওরা ঠিক মতো বোঝে না আমি একেবারে নিশ্চিত , বুঝলে আসলে কোরানের দিকে কোন আকর্ষনই থাকতো না।
আমার পরম শ্রদ্ধেয় গনিত স্যার বলতেন , মহানিবীর মিরাজের মধ্যেই নাকি আপেক্ষিকতা আছে…তখন শুধু হা করে শোনা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না… মিরাজের বর্ননা ঠীক দিলেও আপেক্ষিকতা জিনিসটা কি ? খায় না মাথায় দেয়, তখনো জানি না… স্যার ও বলেন নি কখনো। আমার বিশ্বাস স্যার নিজেই জানতেন না হয়তো। আরো বলতেন , নাসায় নাকি কোরান গবেষোনাগার আছে… সেখান থেকেই নাকি এইসব আবিষ্কার হচ্ছে… আর তখন দেখতাম আমার চারপাশের সহপাঠিদের চোখের পরিধি গর্বে কয়েক ইঞ্চি বেড়ে গেছে।
কি করার আছে ? একসময় যাদের শ্রদ্ধা করতাম … এখন এসে দেখি তারা আমাদের মিস-গাইড করেছে। নিজের ওপর বিশ্বাস করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই আমাদের। সেটাই করতে হবে।
@অনন্ত নির্বাণ,
:-X :-Y
@রৌরব,
স্কুলে থাকতে তো এমনটাই শুনছি। :-/
অনন্ত নির্বাণ,
গুরুতর বিষয়ের সহজ প্রকাশভঙ্গী ভালো লাগলো। আমিও খানিকটা আপনার মতোই, নাস্তিক্যবাদ নিয়ে কূটতর্ক এড়িয়ে চলি। কারণ অন্ধ-বিশ্বাসীদের সঙ্গে আর যা-ই হোক, যুক্তি চলে না। 😉
@বিপ্লব রহমান,
ছড়াটা কার?
@রৌরব,
আমার জানা মতে এটা দ্বিজ দাসের একটা গান। গানের কলিগুলো এরকম –
কেউ বলে আছে খোদা, কেউ বলে নাই
আমি বলি থাকলে আছে, না থাকিলে নাই
তারে নয়নেও দেখি নাই, শ্রবণেও শুনি নাই
দর্শন পাই না তবু করিযে প্রণাম
শোনো দ্বিজ দাসের গান….
রামগড়ুড়ের ছানা একবার মানবতাবাদী গানের তালিকা নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলো। সেখানে আলোচনা হয়েছিলো এ প্রসঙ্গে। এ ছাড়া, আমাদের স্বতন্ত্র ভাবনা বইটাতেও এ ধরণের কিছু গানের নামের উল্লেখ করেছি, দেখতে পারেন।
@অভিজিৎ,
দারুণ :rose:
@অভিজিৎ দা,
রেফারেন্সসহ সংশোধনীর জন্য ধন্যবাদ। :rose:
@অভিজিৎ, @রৌরব
কেউ বলে আছে খোদা, কেউ বলে নাই
আমি বলি থাকলে আছে, না থাকিলে নাই
তারে নয়নেও দেখি নাই, শ্রবণেও শুনি নাই
দর্শন পাই না তবু করিযে প্রণাম
শোনো দ্বিজ দাসের গান….
এই পুর গান এবং দ্বিজ দাশের অন্নান গানের লঙ্ক কি পাওয়া যাবে।। আআপ্নি উপরে যে লিঙ্ক দিয়েসেন তা কাজ করসেনা।।
@ফারুক বান্না,
কেউ মানো বা না মানো / শোনো বা না শোনো
তাতে নাই আমার কোন / লাভ লোকসান শোনো দ্বিজ দাসের গান-
httpv://https://www.youtube.com/watch?v=CCwEuEL4lSs
@আকাশ মালিক,
https://www.youtube.com/watch?v=CCwEuEL4lSs
অনন্ত নির্বাণ,
উর্বর মস্তিষ্ক যখন আফিম দ্বারা আবিষ্ট হয় তখন হ্যালোচিনেসন এর জগতে আমাদের মনোজগতের বিচরন ঘটে। যেখানে যার কোনো অস্তিত্ত্ব নেই তা নিয়ে তখন শুধু এত এতো শত বছর নিজেদের মধ্যে অন্ধভাবে মাতা মাতি,মারামারি ,হানাহানি ও যুদ্ধ-বিগ্রহ এবং মানুষে মানুষে হিংসা-হিংসি,ভেদাভেদ ঘটিয়েই চলছে এবং এ চলা যে আরো কত শত বছর চলবে কে জানে :-/
একটা বিষয় লক্ষ করার মতো তা হলো সাধারন খেঁটে খাওয়া মানুষের এসব বুজরগি বিষয়ে তাদের তেমন কোনো আগ্রহ নেই কারন তারা অলস মস্তিষ্কের জীবন নিয়ে বসবাস করে না বা করতে পারার সুযোগ নেই,কারন প্রতিদিনের জীবনের গ্লানি টানতে টানতেই তাদের জীবনের বেলা শেষ হয়ে যায় ।
যত্তোসব তথাকথিত শিক্ষিত,উচ্চ শিক্ষিত ডিগ্রীধারীরাই এ সব নিয়ে ক্যাচাল করতে করতে নিজের জীবন সহ সমাজের অন্যান্যদের জীবন অতিষ্ঠ করেছিল এবং করে যাচ্ছে।এরাই সমাজের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নেতা অথবা ধর্মীয় নেতা যারা এক বিষ-পোঁড়া হয়ে সমাজের মাথায় ও বুকে বাসা বেঁধেছে।
আমাদের মানব জীবনের সকল দুঃখ-দূ্র্দশা ও প্রগতির পথে এরাই সকল অন্তরায় ও এক আকাশসম বাঁধা কীট।অথচ যুগে যুগে এরাই সবার আগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যতো সুফল আমাদের জীবনে নিয়ে এসেছিল তারাই এর সব ধরনের ভোগ-বিলাস নিয়ে মত্ত থেকেছিল এবং করে যাচ্ছে।এরাই যুগে যুগে সকল দেশে জ্ঞানী,মহাজ্ঞানী ও বিজ্ঞানীদের হত্যা করতে খুনিমস্তিষ্কের এক বিন্দু বিবেকে বাঁধা দেয় নি এবং এখনো দেয় না। এরা জ্ঞান-পাপী :-X
খুব কঠিন একটি বিষয় এতো সহজ করে বর্ননা করার জন্য ধন্যবাদ।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
সত্যই এদের নিয়ে বড়ই সমস্যা, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পি।এইচ।ডি আছে,কিন্তু ঈশ্বরের ব্যপারে অনুমানে তাদের এই বিশ্বাস অবাক লাগে।
@Russell,
ভাই দুখের বিষয় হইলো, আমার এক বন্ধু আমারে তার ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে ডিলিট করে দিয়েছে কারন কি জানেন ?
তার এআইউবি’র পিএইচডি করা স্যার ম্যাডামরা যদি মনে করে যে ঈশ্বর আছে তাহলে আমি কোন ইন্টার পাস মাস্তান আসছি ঈশ্বর নাই বলার। বলাই বাহুল্য সে আমার এই মাস্তানি সহ্য করলো না। এক্কেবারে ডিলিট কইরা দিছে। চান্স পাই নাই, তাই বলা হয় নাই… হয়তো একদিন আমিও পিএইচডি করবো। 😉
@অনন্ত নির্বাণ,
:yes:
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
এইসব শিক্ষিত ডিগ্রীধারীরাই যে জানেন যার কোনো অস্তিত্ত্ব নেই তার ভেল্কিবাজী দেখিয়ে কি করে নিজেদের সুবিধাটা অর্জন করতে হয়। তাই ধর্ম নিয়ে এঁদের উৎপাত যুগ যুগ ধরে মানুষকে সয়ে যেতে হচ্ছে।