প্রশ্নটা যে বড় বেশি সরলীকৃত তাতে কোন সন্দেহ নেই। প্রশ্নটার উৎপত্তিও নাস্তিকদের কাছ থেকে হয়নি। প্রশ্নটা সম্প্রতি উঠেছে অস্ট্রেলিয়ার অনেক ধার্মিকদের কাছ থেকে।বিশেষ করে বিরোধী দলীয় ক্যাথলিক গোষ্ঠীর কাছ থেকে। কারণ আবারো একজন নাস্তিক অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবার সময় যখন এতদিনের প্রথা অনুসারে ‘পবিত্র বাইবেল’-এ হাত রাখতে প্রকাশ্যে অসম্মতি জানালেন- খোদ সরকারের মধ্যেই অনেকে অস্বস্তি বোধ করলেন। অস্ট্রেলিয়ার সংবিধানে ব্যক্তিগত ধর্মবিশ্বাসের স্বাধীনতা এতটাই আছে যে রাষ্ট্রপ্রধান প্রকাশ্যে নিজেকে নাস্তিক বলে ঘোষণা করলে ‘গেল গেল’ বলে চিৎকার করেও খুব একটা সাড়া পাওয়া যায় না। এদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা আর যৌন স্বাধীনতাকে সমার্থক মনে করা হয়।
ব্যক্তিগত ধর্ম-বিশ্বাসের স্বাধীনতা পৃথিবীর অনেক দেশেই আছে। কিন্তু সেসব দেশেও দেখা যায় রাষ্ট্রপ্রধান বিশ্বাসীদের ভোট হারানোর ভয়ে নিজের অবিশ্বাসের কথা কোনদিনই প্রকাশ করেন না। আর ধর্মীয় বিশ্বাসের ব্যাপারটাকে এতটাই স্বাভাবিক বলে ধরে নেয়া হয় যে – সারাজীবন কোন ধরনের ধর্মীয় আচার আচরণে অংশ না নিয়েও মানুষ দিব্যি ‘আস্তিক’ থাকতে পারেন। পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলোতে যে সব বিধি-নিষেধ আছে সেগুলোকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েও মানুষ ‘ধার্মিক’ বলে পরিচিত হতে পারেন। কেবল প্রকাশ্যে ধর্ম-পালনের ভান করলেই হলো। মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ বা হোসেন মুহাম্মদ এরশাদ ব্যক্তিগতভাবে কতটুকু ধর্মপালন করতেন বা করেন তা সবাই জানেন, তারপরও তাঁদের আস্তিকতা নিয়ে কেউ সন্দেহ প্রকাশ করবেন না।মোদ্দা কথা হলো নাস্তিকতার ব্যাপারটা নিজেকেই প্রকাশ করতে হয়। অবশ্য যে সমাজে নাস্তিকতার স্থান নেই, সেখানে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে কোন কোন গোষ্ঠী কাউকে কাউকে ‘নাস্তিক’ ঘোষণা করেন এবং তাঁদের মাথার মূল্য নির্ধারণ করে দেন।এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়- যাদের ‘নাস্তিক’ ঘোষণা করা হয় তাঁরা বিবৃতি দিয়ে নিজেদের ধর্ম-বিশ্বাসের কথা প্রচার করেন। কিছু উজ্জ্বল ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে- তবে তাঁদের সংখ্যা সেই সব সমাজে খুব কম।
প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড সরাসরি বলেছেন, তিনি যা বিশ্বাস করেন না তা করার ভান তিনি করতে পারবেন না। তাঁর ধর্মীয় অবিশ্বাস নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছে।টিভি অনুষ্ঠানে এ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। তবে তা কিছুতেই মাত্রা ছড়ায় নি। কারণ অস্ট্রেলিয়ায় কারো ব্যক্তিগত ধর্ম-বিশ্বাস নিয়ে হৈ-চৈ এর শব্দ বেশিদূর যায় না।
টিভিতে প্রচারিত একটা অনুষ্ঠানের অংশবিশেষ ইউ টিউবে এই লিংক থেকে দেখা যেতে পারে।
httpv://www.youtube.com/watch?v=NXgtjwOBdM0
অস্ট্রেলিয়ার সংসদে প্রতিদিন অধিবেশন শুরুর আগে বাইবেল থেকে পাঠ করা হয়। সংসদের স্পিকার এই কাজটি করে থাকেন। এখন অনেকেই যৌক্তিক প্রশ্ন তুলছেন যে এর কোন দরকার আর আছে কি না।
কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিকত্বের অধিকারের সুযোগ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছি। নাগরিকত্বের শপথ পাঠ করান কমনওয়েলথ সরকারের একজন প্রতিনিধি। অনুষ্ঠানে দু’ধরণের শপথ ব্যবস্থা থাকে। আস্তিকদের শপথে ‘ঈশ্বরের নামে শপথ করছি’ কথাটি উল্লেখ থাকে। আর নাস্তিকদের শপথে ওই বাক্যাংশটি থাকে না। আমি ভেবেছিলাম নাস্তিকদের সংখ্যা খুব একটা বেশি হবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখলাম নাস্তিকদের সংখ্যা প্রায় আস্তিকদের সমান।
অস্ট্রেলিয়ায় ঈশ্বরে অবিশ্বাসীদের সংখ্যা ক্রমশঃ বাড়ছে। এখানে যারা জন্মেছেন তাদের মধ্যে তো বটেই, অন্য দেশ থেকে যারা এখানে আসছেন তাদের ভেতরও ঈশ্বরের ধার ধারেন না এমন ব্যক্তির সংখ্যা প্রচুর। এই ব্যাপারটা আস্তিকদের জন্য কিছুটা অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠছে।
ভাল লাগল। অষ্ট্রেলিয়ার উন্নতি অবধারিত। :rose2:
@মোঃ হারুন উজ জামান ,
ধন্যবাদ আপনাকে ।
আমি আসলে প্রগতিশীলতাকে যথার্থই বহুমুখী (multi-faceted) হিসেবে বোঝাতে চেয়েছি , বহির্মুখী(outward) নয়। এর কারণ , প্রগতিশীলতার সাথে রাজনীতির সম্পর্ক রয়েছে । অনেকে উদারনৈতিকতাকে (liberalism) প্রগতিশীলতার সাথে এক করে দেখেন যেটা ঠিক নয় ।
@সংশপ্তক,
যদি বলা হয় উদারনৈতিকতা = প্রগতিশীলতা (মিথ্যা)
অর্থাৎ উপরের বাক্যকে যুক্তির নিয়মে একটা বচন (Proposition) বলে দাবী করে যদি তাকে মিথ্যা মূল্যারোপ করা হয় তাহলে সঙ্গত পালটা দাবী হবে প্রথমে উদারনৈতিকতা ও প্রগতিশীলতা উভয়ের স্বাধীন ও সুস্পষ্ট সংজ্ঞা দিয়ে পরে উদাহরণ দিয়ে দেখান যে উদার না হয়েও প্রগতিশীল হওয়া যায় বা উল্টোটি। তা না হলে দাবীটি একটি ব্যক্তিগত মতের পর্যায় পড়বে, যুক্তিসিদ্ধ মত নয়।
@অপার্থিব,
দারুণ আলোচনা হচ্ছে। গ্যালারিতে বসলাম। :coffee:
প্রদীপ দেবের লেখাকে ভিত্তি করে উপভোগ্য আলোচনা। খুব ভাল লাগল।সাথে বোনাস পেলাম How Many Atheists Are There In The World?
@মাহফুজ
নাস্তিকতা একটি অন্তর্মুখী দর্শন । অন্যদিকে, প্রগতিশীলতা একটি বহুমুখী দর্শন । এই দুটি দর্শনের তুলনা করা সংগত কারনেই ভুল হবে। নাস্তিকতার সমাপ্তি ঈশ্বরের অস্তিত্ব অস্বীকার করা পর্যন্ত কিন্তু প্রগতিশীলতার ব্যপ্তি আক্ষরিক অর্থেই অসীম । নাস্তিকতার সর্বশেষ সীমান্ত রেখা থেকে শুরু হয় প্রগতিশীলতার অন্তহীন যাত্রাপথ । তবে, এ ধারনা আমার একান্তই নিজস্ব ।
@সংশপ্তক,
তাহলে বুঝা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড অন্তর্মুখী দর্শন পর্যন্ত গিয়ে আটকে আছেন। এখন তাকে বহুমুখী দর্শনের পাঠ করা গ্রহণ করা দরকার। প্রধান মন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড কবে প্রগতিশীলতার অন্তহীন যাত্রাপথের উদ্দেশ্যে রওনা দিবেন, তা এখন দেখার বিষয়। ঠিক আছে ধৈর্য ধরি, দেখা যাক কী হয় শেষ পর্যন্ত।
@সংশপ্তক,
:yes: সুন্দর বলেছেন।
@সংশপ্তক,
কথাটা বুঝতে পারলামনা। আমার মনে হয়না প্রগতিশীলতার সাথে নাস্তিকতার কোন সম্পর্ক আছে। ধর্মীয় কুপমুন্ডকতা বাদ দিলে, প্রগতিশীল হওয়ার জন্য আস্তিকতা বা নাস্তিকতা বাধা স্বরূপ হয় বলে আমার মনে হয়না।
@সংশপ্তক,
আপনার অন্তর্দৃষ্টিমূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আপনি মনে হয় বলতে চেয়েছেন যে, প্রগতিশীলতা একটি *বহির্মুখী* দর্শন। কারন অন্তর্মুখী (inward-looking) এর বিপরীত হল বহির্মুখী (outward-looking), বহুমুখী (multi-faceted) নয়। আমি কি ঠিক বলেছি?
আর একটা কথা হল কারো সাংস্কৃতিক অবস্থানের সাথে তার আর্থসামাজিক অবস্থানের কোন সরল সম্পর্ক নেই। একই লোকের পক্ষে সাংস্কৃতিকভাবে উদারপন্থী এবং আর্থসামাজিকভাবে রক্ষণশীল হওয়া সম্ভব। এর ঠিক উল্টোটাও সম্ভব।
জুলিয়া গিলার্ডের রাজনৈতিক ও সামাজিক দর্শন প্রসংগে কয়েকটা বিষয় উল্লেখ না করলেই নয় । তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আসেন তার লেবার দলের ডানপন্থীদের সমর্থনে যারা একই দলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং উদারপন্থী কেভিনকে ক্ষমতাচ্যুত করেন| অভিবাসন নীতিতে তার অবস্থান কঠোর । তিনি গর্ভপাতে সরকারী অর্থ বরাদ্দের বিরোধী । সমকামী বিবাহের বিপক্ষে তার অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার ।প্রসংগত: সমকামী বিবাহ অস্ট্রেলিয়ায় এখনও বেআইনী। তিনি নাস্তিক সত্যি , তবে তিনি রক্ষনশীলও বটে।
সূ্ত্র:
http://www.theaustralian.com.au/news/opinion/say-werent-you-left-wing/story-e6frg6zo-1225887103691
http://www.abc.net.au/news/stories/2010/06/27/2938009.htm
http://www.theage.com.au/news/National/Gillard-warns-on-abortion-funding/2005/02/03/1107228831705.html
http://au.news.yahoo.com/a/-/latest/7487734/gillard-does-not-support-gay-marriage/
@সংশপ্তক,
এতদিন মনে করতাম- নাস্তিকরা প্রগতিশীল। আজ জানলাম নাস্তিক হয়েও রক্ষণশীল হওয়া যায়।
উপরোক্ত বাক্যের পরিপ্রেক্ষিতে কি একজন আস্তিককে বলা যায়?- তিনি আস্তিক সত্য, তবে তিনি মুক্তমনা।
@সংশপ্তক,
আপনি যে লিংকগুলি দিলেন তা থেকে মনে হল সমকামী বিবাহের ব্যাপারটা বাদ দিলে উনি মূলত অর্থনৈতিক অর্থে ডানপন্থী বা রক্ষণশীল। এর সাথে নাস্তিকতার বিরোধ আছে বলে মনে হয়না, আর পাঁচটা রাজনৈতিক মতের মত এটাও একটা বৈধ অবস্থান।
@রৌরব,
সমকামিতাকে নিশ্চই তিনি অবৈধ বলেননি। সমকামিতার সাথে বিয়ের অদৌ কি কোন সম্প্তর্ক আছে, না দরকার আছে ?
@রৌরব,
সমকামী বিবাহের ব্যাপারটা বাদ দিচ্ছেন কেন? ওটাওত (সমকামী বিবাহ বিরোধীতা) একটা রক্ষণশীল অবস্থান এবং তার অন্যান্য অবস্থানের সাথে সংগতিপূর্ণ। মনে হচ্ছে একমাত্র ধর্মবিশ্বাস ছাড়া বাকী সব ব্যাপারে জুলিয়া গিলার্ড একজন নির্ভেজাল রক্ষণশীল। বাদ দিতে হলে শুধু ধর্মবিশ্বাসকেই বাদ দিতে হবে।
আমি আপনার সংগে একমত যে জুলিয়া গিলার্ডের নাস্তিকতা আর তার অন্যান্য রক্ষণশীল অবস্থানের মধ্যে কোন বিরোধ নেই এবং এই অবস্থানগুলো সম্পূর্ণ বৈধ। কারন নাস্তিক হলে যে রক্ষণশীল হওয়া যাবেনা একথাত কোন শাস্ত্রে লেখা নেই (pun টা ক্ষমা করবেন)। একইভাবে আস্তিকতার সাথে প্রগতিশীলতার কোন মৌলিক বিরোধ নেই।
কর্মজীবনে আমার একজন প্রাক্তন বস ছিলেন রিপাবলিকান (তার পদটা ছিল রাজনৈতিক নিযুক্তি)। এই মহিলার সাথে ব্যক্তিগত আলাপে জানতে পারি ধর্মবিশ্বাসে উনি একজন পাঁড় নাস্তিক, আর্থসামাজিক ব্যাপারে কট্টর রক্ষণশীল এবং রিপাবলিকান হওয়া সত্তেও ইরাক যুদ্ধ বিরোধী। নাস্তিক/অজ্ঞেয়বাদী কিন্তু রক্ষণশীল এর আরো উদাহরণ হল আমেরিকাতে যারা “neocon” বলে পরিচিত তারা (কার্ল রোভ, রিচার্ড পার্ল ইত্যাদি)। অন্যদিকে ড: মার্টিন লুথার কিং এবং ম্যাল্কম এক্স এর মত প্রগতিশীল নেতারা শুধু আস্তিকই ছিলেননা, ছিলেন প্রথাগত ধর্মেও বিশ্বাসী।
আমাদের অফিসে একজন অষ্ট্রেলিয় বর্ন লোক আছে। সে ১২/১৩ বছর বয়সে কানাডায় সেটল করে।
তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম এই ব্যাপারে। প্রথমে আসল ঘটনা টানিনি। তার ধর্মবিশ্বাসও কোনদিন জানতাম না। পশ্চীমের আর দশটা সাধারন মানুষের মতই ধর্ম নিয়ে তার কোন ভাবনা আছে মনে হয়নি। সে প্রথম বলে চলেছিল সে এই মহিলাকে পছন্দ করে কি কি কারনে…
আমি মূল কথা বলার পর তার প্রতিক্রিয়া হল ব্যাপক। প্রথমেই বলল যে বাইবেলে নাকি একটা ভার্স আছে কারো কসম না খাওয়ার জন্য। তা স্বত্ত্বেও তার প্রতিক্রিয়া হল “We’ll kick out the folks like her…….” 🙂
@আদিল মাহমুদ, এখন এরা (ধার্মিকরা) উঠে পরে লাগবে জুলিয়া গিলার্ডের দোষ খুঁজে বের করার জন্য। আর কিছু পাইলেই চিৎকার শুরু করবে এইটা নাস্তিকতার দোষ।
জুলিয়া গিলার্ডকে তার সৎ সাহসের জন্য অভিনন্দন। :rose2:
@হোরাস,
ওনার অনেক দোষ অবশ্যই বেরুবে।
তবে কেউ ওনার সত সাহসের প্রসংশা করবে না।
উনি এই ঝামেলা অতি সহজেই এড়াতেন পারতেন সামান্য ভণ্ডামীর আশ্রয় নিয়ে, যেমনটা বেশীরভাগ লোকেই আকছার করে থাকেন। ধর্মওয়ালাদের তাহলে কোনই সমস্যা হত না। সমস্যা হবে এই ভন্ডামী না করার অপরাধে। এজন্যই এইসব ধর্মওয়ালাদের বিরক্ত লাগে।
আমেরিকার কোন প্রেসিডেন্ট নিকট ভবিষ্যতেও এমন সাহস কোনদিন দেখাতে পারবেন কিনা সন্দেহ আছে।
আমেরিকায় মনে হয় নাস্তিক হলে বড় দুই দল থেকে নির্বাচনেও নমিনেশন দেবে না। বাইবেল চার্চ এগুলো নিয়ে কিছুটা ঘেষাঘেষি দেখাতেই হবে।
রাজনীতিবিদরা খুব পিছলা প্রকৃতির হয়। দার্শনগত এবং অন্যান্য ‘বিতর্কিত’ বিষয়গুলোতে স্পষ্ট স্ট্যান্ড নেন না। প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড এর স্ট্যান্ড নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী।
এটা আর কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী করতে পেরেছেন বলে আমার জানা নেই। স্রোতের বিপরীতে দাঁড় বাওয়া এমনিতেই কঠিন। আর উনি কঠিন কাজটাকেই সহজ করে ফেললেন, আর তৈরি করলেন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
এই ব্যতিক্রমী পোস্টটির জন্যও প্রদীপ দেবকে ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ, রাজনীতির ইংরেজী প্রতিশব্দ হল – poly tricks. সে জন্যই এরা পিছলামী করে।
জুলিয়া গিলার্ড – ছড়িয়ে দাও তোমার আলোর মশাল দিকে দিকে। :rose2: :rotfl:
Religious affiliations
Roman Catholic 29 percent
Anglican 22 percent
Protestants 14 percent
Other Christian 15 percent
nonreligious 14 percent এই সংখ্যা কি বেড়ে যাচ্ছে?
Other 6 percent
Microsoft ® Encarta ® 2009.
উপরের % এ কি তাই মনে হয়? যদিও এটা একটু পুরনো পরিসংখ্যান। বর্তমান পরিসংখ্যান কত?
কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ , বৃন্দাবন আর কতদূর? চলুন সবাই মথুরা যাই।
এই পরিসংখ্যানে তেমনটা দেখতে পাইনি।
Sweden 85%
Vietnam 81%
Denmark 80%
Norway 72%
Australia 25%
মা দুর্গার আশির্বাদে দেখবেন আমরাও একদিন বাংলাদেশে একজন নাস্তিক প্রধান মন্ত্রী বসাবো। :-/
@আকাশ মালিক,
আমি বলতে চেয়েছি নাগরিকত্ব নেয়ার অনুষ্ঠানে শপথ গ্রহণকারীদের মধ্যে নাস্তিক আর আস্তিকের সংখ্যা প্রায় সমান ছিল। অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসাধারণের মধ্যে নাস্তিকের সংখ্যা প্রায় ২৫%।
@প্রদীপ দেব,
তাই বলেন স্যার,
তবুও আমি আশায় বুক বাঁধি, আজ নাগরিকত্ব নেয়ার শপথ অনুষ্ঠানে, কাল বিয়ের অনুষ্ঠানে, পরশু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এভাবে করে একদিন এই পৃথিবী আস্তিকশুন্য হবে।
@আকাশ মালিক, এই পরিসংখ্যানটা কোথা থেকে নেওয়া? আমার ধারণা ছিল সুইডেনে ৮০%+ মানুষ ধর্ম মানে না, কিন্তু ২০-৩০% এর বেশী বোধ হয় নিজেদেরকে নাস্তিক বলে দাবী করে না। পুরো ইউরোপেই তো ধর্মের অবস্থা বেশ খারাপ। কোথায় যেন পড়েছিলাম খোদ ইটালিতেই নাকি মাত্র ৫% মানুষ চার্চে যায়, এটা কি ঠিক?
মজার জিনিস হচ্ছে, ধার্মিকেরা দাবী করে যে ধর্ম না থাকলে নাকি নৈতিকতা থাকবে না। অথচ বেশীরভাগ উন্নত দেশেই ধার্মিকের সংখ্যা ক্রমশঃ কমে আসছে, যেখানে খুন খারাপি, চুরি ডাকাতি, ভায়োলেন্স জাতীয় অনৈতিক ব্যাপারগুলো ধার্মিক দেশগুলোর তুলনায় অনেক কমে গেছে, শিক্ষাদীক্ষা এবং মানবাধিকার প্রশ্নেও তারা অনেক এগিয়ে আছে।
@বন্যা আহমেদ,
পরিসংখ্যানটা এখান থেকে নেওয়া
@আকাশ মালিক,
শতকরা কতভাগ আস্তিক নাস্তিক এই প্রশ্নটা আসলে পরিসংখ্যান যেমন দেখায় সবসময় ততটা সরল নয়। এটার বিশুদ্ধ আদম শুমারী মনে হয় না হয়।
আমি সুইডেনের এই ব্যাপারটা নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করেছিলাম কিছুদিন আগে। সাধারনভাবে অনেকেই বলেন যে সুইডেনে ৮০ ভাগ নাস্তিক। তবে এটা মনে হয় অতি সরলীকরন। কয়েকটি সূত্র ঘাটার পর আমারও বন্যার মতই ধারনা হয়েছে।
আসলে ৮০ ভাগ লোকে ধর্ম নিয়ে কোন চিন্তাভাবনা করে না, তবে এদের সবাই ঘোষিত নাস্তিক না।
@আকাশ মালিক,
বাংলাদেশে তরুণ সমাজে যুক্তিবাদের যে জোয়ার দেখতে পাচ্ছি তাতে মনে হয় সেদিন বেশী দুরে নয়।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
খুব যে বেশী কাছে তাও নয়।
দাদা, এটা আশার বাণী। বাস্তবে কি হচ্ছে:
দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিবিরের তৎপরতা। প্রকাশ্যে এবং গোপনে নানা মৌলবাদী সংগঠন। দিনে দিনে টুপিওয়ালার সংখ্যা বৃদ্ধি। রংবেরং-এর বোরকা পরিহিত স্কুল, কলেজগামী ছাত্রী। শুধু তাই নয়, হিন্দু ছাত্রীরা পর্যন্ত মাথায় স্কার্ফ দেয়। গ্রামে গঞ্জে পর্যন্ত তাবলিগ জামাতের প্রসার। ইসকন-এর হরে কৃষ্ণ নাম জপ বৃদ্ধি। মাঝে মাঝে হরে কৃষ্ণ আন্দোলনে যোগ দেয় টুপি পরিহিত হুজুর। একই গ্রামে নতুন নতুন মসজিদ গজিয়ে ওঠা। নতুন নতুন কউমি মাদ্রাসা স্থাপন- আর কত বলবো? ইন্টারনেটেও মৌলবাদীদের হামলা, যেমন সদালাপ নামে একটা ওয়েব সাইট।
এগুলোর কথা শুনার পরও কি বলবেন, সেদিন বেশি দূরে নয়?
@মাহফুজ,
হ্যা,তবুও বলব।
কেননা এই মুক্তমনাতেই দেখছি অনেকেই মন খুলে যুক্তি দিয়ে বক্তব্য রাখছে। খোদ কোরানের সমালোচনা করছে। বাংলাদেশে নাটকেও হঠাত হঠাত অনেক সংলাপ শুনতে পাই। ৩০/৪০ বছর আগে এমনটি দেখিনি। সব মিলিয়ে আমি একটা পরিবর্তনের আভাস দেখি।
ডঃ হুমায়ুন আজাদ, তসলিমা নাসরিণ এদেরকে মানুষ যত অপছন্দই করুক, এদের পরোক্ষ অবদান অনস্বীকার্য। শম্বুক গতি সন্দেহ নাই। শম্বুক গতিই শক্তিশালী।
মৌলবাদীরাও বসে নেই। সেটাও ঠিক। হরে কৃষ্ণ আগে ছিল না। এখন হয়েছে। এটা কোন ব্যাপারই না। এদের উতসাহ কোন দিন হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে ওরা নিজেরাই বুঝতে পারবে না।
@ দাদা,
শম্বুক গতি যে শক্তিশালী হয়, জানতাম না। আপনি কি কচ্ছপ আর খরগোশের প্রতিযোগীতার কথা বলতে চাচ্ছেন? দেখুন ড. আজদ কী বলেছেন- “কোন কালে এক কদর্য কাছিম দৌড়ে হারিয়েছিলো এক খরগোশকে, সে গল্পে কয়েক হাজার ধ’রে মানুষ মুখর। তারপর খরগোশ কতো সহস্রবার হারিয়েছে কাছিমকে, সে-কথা কেউ বলে না।”
তসলিমা নাসরিনকে আজও তার দেশের মাটিতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না।
তারপরও আপনার বাণী বড়ই উৎসাহমূলক। মনে জোর পাচ্ছি। প্রগতিশীল দাদারা এভাবেই নাতীদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। অনেক ধন্যবাদ দাদা।
@মাহফুজ,
নোট বইটা কি তোমার সাথে সাথেই থাকে? তুমি exactly কোথায় থাক, জানা দরকার। তোমার নোট বইটা না সরাতে পারলে আর উপায় নাই।
একটি বিশেষ ঘোষনা —>
কেউ কি মাহফুজকে ধরিয়ে দিতে পারেন? মাহফুজ ছাড়া অন্যরা ধরিয়ে দিলে একটা করে লাল গোলাপ।
@ দাদা,
এইটা যে অনন্ত কর্তৃক পরিশ্রমযুক্ত কম্পোজ করা পোষ্ট। তা কৃতজ্ঞচিত্তের আমার উল্লেখ করা উচিত ছিল। বলা উচিত ছিল- এটা কাট পেষ্ট। তাহলে আপনি আমাকে ধরিয়ে দেবার ঘোষণা দিতে পারতেন না। এই জায়গায় ধরা খেয়ে গেলাম। এবার আপনিই জয়ী। তাই আপনাকে :rose2: দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ছুডো না দিয়ে বড় গোলাপটাই দিলাম। কারণ, আমি আপনার মত অতটা কিপটা না।
@নৃপেন্দ্র সরকার
@মাহফুজ
প্রায় এক মত পোষন করছি আপনাদের সংগে।
যখন ইনটার নেটে বাংলা দেশের সংবাদ পত্রিকাগুলি পড়ি তখন দেখি সম্পাদকীয় গুলো জাত পাতের উধের্র স্তরে। লেখাগুলিতে উদার ও অগ্রনী মনের প্রকাশ দেখে ভাল লাগে।
কয়েক মাস আগে কম্পানীর কাজে কুয়লা লাম পুরে গিয়ে তিন মাস থেকেছিলাম। প্রচুর বাংলা দেশি নাটকের সিডি কিনলাম,দেখলাম। শুনলাম ওই নাটক ধারাবাহিক করে বাংলাদেশ টিভি তে দেখান হয়। না টক গুলি ভারি সুন্দর।
মুক্তমনায় ‘নবজাগরণ’ পন্থী লেখকদের লেখা ও তাদের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হচ্ছে মানুশ। তথাকথিত নাস্তিকতা সহজে উপমহাদেশের মানুশ নিতে পারবেনা। তবে মানুশের মধ্যে ধনাত্বক ভাবে অভাবনিয় পরিবরতন (কিছুতেই রেফ আনতে পারছিনা) লক্ষনিও।
‘আস্তিকতা’ ও ‘নাস্তিকতা’ শব্দ দুটি রিলেটিভ। যে গতানুগতিক ‘বিশ্বাসের’ কাছে নাস্তিক সে নিজের চিন্তা ভাবনার বিশ্বাসের কাছে আস্তিক।
তাই যদি কোন মধ্যবর্তি পথে এগিয়ে, যদি একটু শান্তিতে থাকা যায় তবে দোষ কি? ঈস্কনের প্রভু যদি মউলবীর সাথে থাকে আর মউলবী যদি ঈস্কনের প্রভুর সাথে নাচে তাতো ভাল। আমি মনে করি এই ‘মিলনের’ এখন ভীষন প্রয়োজন। আনেক টা যেন শুফী ভাবধারার মত।
যাতে সন্ত্রাসী দিক টা বাদ দিয়ে প্রত্যেকে নিজের নিজের বিশ্বাস মানে তা মানুক না। ছোট বেলায় কখনো দেখি নি বা শুনিনি যে কনো পন্ডিত বা মওলানা বা মউলবী আতঙ্কবাদী বাদী হয়েছে। দেশে মসজিদের ও মন্দিরের সংখা কমলে যে দেশে শান্তি আসবে তারও কোন গ্যারান্টি নেই। আর তথাকথিত ঐশ্বরীয় গ্রন্থগুলির শংসধন ও কেই মেনে নেবে না।
কঠিন সমস্যা।
আশা, নব চেতনার আশার মশাল যেন না বোজে আমাদের মনে।
@মাহফুজ, দেখো
ঢাকা এমনিতেই যানজটের শহর। তার উপর মরার উপর খাঁড়ার ঘা।
এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক নেতারা কিছুই বলবে না। ভোটের ব্যাপার আছে। সরকার বলবে না কারণ – এর একটা সরকারী সুবিধা আছে – দেখে যাও হে আন্তর্জাতিক বিশ্ব, আমরা কত ধর্মনিপেক্ষ, অন্য ধর্মের প্রতি কত সহনশীল। মুসলমানরা বলবে না কারণ মহরমের সময় অনুরুপ মিছিল করে যানজটের সৃষ্টি করতে হবে।
ক্লিক করলাম। চাচ্ছে URL. ছবি তো আমার ল্যাপটপে।
এতদিন রাজনৈতিক কারনে রাজনীতিবিদরা ধর্মীয় রীতির প্রতি লৌকিক সম্মান দেখাতো। জুলিয়া গিলার্ড সেদিক থেকে একটা পথ দেখালেন। ভবিষ্যতে অন্যান্যরা এ পথ অনুসরন করবে বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ডকে রক্তিম শুভেচ্ছা :rose2:একেই বলে সততা।যে জাতির রাষ্ট্রপ্রধানরা যত সৎ সে রাষ্ট্রের নাগরিকরাও ততটা সৎ হতে চেষ্টা করে।
মানব জাতির জীবনে এটির যেমন একটি বিশাল প্রভাব পড়বে তেমনি অন্যদিকে ভাটিকানের বুকের মধ্যিখানে পড়ল একটি ধারালো চু্রির আঘাত।
আমাদের দেশের রাষ্ট্র প্রধানরা জুলিয়া গিলার্ড থেকে শিক্ষা নিতে পারে।রাষ্ট্র থাকবে রাষ্ট্রের যায়গায়,ধর্ম থাকবে ধর্মের জায়গায়।যদিও এর জন্য আমরা ৭১`যুদ্ধ করে তা অর্জন করেছিলাম।কিন্তু কি দূর্ভাগ্য আজ আমরা চলছি এর উল্টো রথে।
বিষয়টি জানানোর জন্য প্রদীপ দেবকে অনেক ধন্যবাদ।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
এই গোলাপ জুলিয়া গিলার্ড-এর নিকট পৌছবে তো? আমিও মনে মনে ফুল পাঠিয়েছি।
ইস্ আমার দেশের প্রধান মন্ত্রী যদি এমন হতেন! অবশ্য সে আশা গুড়ে বালি। যেভাবে রাষ্ট্র প্রধানরা হজ্বব্রত পালন করেন, তা দেখলে মনে হয়- অন্যদেরই উচিত আমাদের প্রধানদের কাছ থেকে শিক্ষা নেয়া। কী, ভুল বললাম নাকি?
@মাহফুজ,
আকাশ মালিক ভাই কিন্তু উত্তরটা দিয়ে দিয়েছেন। 😀
আহারে এমন বাংলাদেশ যদি এ জীবনে দেখে যেতাম । থাক,তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে গেলাম।
না ভূল বলেন নাই,একদম ঠিক কথা :yes: ।তবে অস্ট্রেলিয়া বা সুইডেন এর মতো দেশ গুলো আমাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে আসবে না,শিক্ষা নিতে আসবে পাকিস্থান ভূল বললাম, উল্টোভাবে বললে আমরা পাকিস্থানের বা সৌদি আরবের পদাংক অনুসরন বা নকলের শিক্ষা নিতে অতিপটু জাতিতে পরিনত হয়েছি। :-Y :-Y
এই প্রবন্ধটি পাঠ করার সময় আহমদ শরীফের কথা মনে পড়লো-
তিনি বলেছেন-
আস্তিকের সবচেয়ে বড়ো দোষ দলছুট বলে তারা নাস্তিকের প্রতি সক্রিয় কিংবা নিষ্ক্রিয়ভাবে অসহিষ্ণু। তারা সমাজে চোর-ডাকাত-গুণ্ডা-লম্পট-মাতাল-জালিয়াত-প্রতারক প্রভৃতি যে কোনো আস্তিক দুষ্ট-দুর্জন-দুর্বৃত্ত-দুষ্কর্মাকে সহ্য করতে এমনকি কৃপা-করুণা বশে ক্ষমা করতেও রাজি, কিন্তু নাস্তিকের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষ পরিহার করতে অক্ষম। যদিও নাস্তিক এমন কোনো নুতন পাপ বা অপরাধ করে না যা আস্তিকে দুর্লভ। বাস্তবে নাস্তিকের ন্যায়-নীতি-আদর্শনিষ্ঠা ও বিবেকানুগত্য বেশিই থাকে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্ভিক সততায় সম্মান জানাতেই হয়।
ধর্মনিরপেক্ষ অষ্ট্রেলিয়ায় বাইবেল পাঠ করে সংসদ অধিবেশন শুরু করাটা তো দ্বি-মুখী নীতি। বাংলাদেশে বিসমিল্লাহ বললে আর সমস্যা কি? শুধু লিখিত আইন করা হয়নি, এটাই পার্থক্য?