২০০৯ সালের নভেম্বরে নাইব ভাই (আলোকচিত্র শিল্পী নাইব উদ্দিন আহমেদ) তাঁর জীবনের সর্বশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনীটি করলেন ঢাকা মিউজিয়ামে। মাত্র এক মাস পরে ডিসেম্বরে তিনি পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন। চিত্রশিল্পী হিসেবে নাইব ভাইএর কোন তুলনা মিলেনা। তিনি নিজেই তাঁর একমাত্র তুলনা।
বাংলাদেশ কৃষিবিশ্ববিদ্যা্লয়ে উনার একটাই নাম ছিল – “নাইব ভাই”
পেশাদার হিসেবে উন্নতির সোপান বেয়ে উঠার সময় বা অভিপ্রায় কোনটাই তাঁর ছিল না। বাংলাদেশ কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রশিল্পী হিসেবে একটা চাকুরী করে গেছেন মাত্র। তাঁর আসল নেশা ছিল চিত্রশিল্পে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করার। বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগেই আঙ্কারা এবং ইউরোপে্র বিভিন্ন দেশে চিত্রশিল্প প্রদর্শনী করে তিনি প্রচুর প্রশংসা এবং বেশ কিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন। কিন্তু তাঁর মেধার প্রকৃত সদ্ব্যবহার করেছেন বাংলাদেশ স্বাধীনতার ইতিহাসের অনন্য দলিল সৃষ্টির মাধ্যমে।
১৯৭১ সালে পাক হানাদারদের অত্যাচারের দৃশ্য ক্যামেরা বন্দী করার নেশায় মেতে উঠেন তিনি। পূর্ব পাকিস্তান থেকে বিদেশী পত্রিকায় ছবি পাঠানো প্রচুর ঝুকি তখন। তাই তিনি খোদ পশ্চিম পাকিস্তানে এসে পশ্চিমা সাংবাদিকদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেন। ঐ সময় পাকবাহিনী এবং তার দোসরদের অত্যাচারের যত ছবি দেশের বাইরে পাঠানো হয় তার এক বিরাট অংশ নাইব ভাইএর।
আজ ফটোশপ দিয়ে বাচ্চারা পর্য্যন্ত কী না করতে পারে। অবাক বিস্ময়ে ভাবি, ফটোশপ উদ্ভাবনকারীদের যখন জন্মই হয়নি তখন এই মেধাবী মানুষটি বাংলদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসে ছবি নিয়ে কী অসাধারণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন! এখন ফটোশপেও যা সম্ভব নয় তা তিনি প্রায় চল্লিশ বছর আগে নিজ হাতে করে গেছেন।
স্বাধীনতার প্রসব বেদনা তিনি যে ভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন তেমনটি কেউ কোনদিন পারেনি। স্বাধীনতার লক্ষ-কোটি ছবি তুলেছে মানুষেরা। তিনিও তুলেছেন প্রচুর ছবি। ভাবলেন – তিনি এমন একটি ছবি সৃষ্টি করবেন যা একাই হবে পাক-বাহিনী আর রাজাকার, আলবদরদের নৃশংস অত্যাচার আর বাংলদেশ অভ্যূদয়ের স্বাক্ষর। ১৯৭২ সালে কৃষিবিদ্যালয়ের লাইব্রেরীর নীচ তলায় একটি প্রদর্শনী করলেন। সেখানেই প্রথম তিনি তাঁর সেই অসাধারণ সৃষ্টিটি রাখলেন।
ছবিটির সামনে স্থাপন করলেন প্রস্ফুটিত শাপলা ফুল, তারপর ভাঁজে ভাঁজে হাজারো অত্যাচার আর মুক্তিযুদ্ধের ছবি। ছবিটি গোটা মুক্তি যুদ্ধের একটি সমগ্র দলিল হয়ে রইল। নাইব ভাইয়ের ছেলে নিপুণ পাঠিয়েছে ছবিটি ।
নাইব ভাই ছবিটির নাম দিয়েছেন – “স্বাধীনতা”
শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল হওয়ার নেপথ্য কাহিনী স্বাধীনতা যুদ্ধে নাইব ভাই ও তাঁর ভাই ডঃ নওয়াজেশ উদ্দিন আহমদের অবদানের স্বীকৃতি। নীচের একটি মন্তব্যে কাজল ব্যাপারটি পরিস্কার করল। কাজল নাইব ভাইয়ের পুত্রবধু।
কুলদা রায় বিবরণসহ নাইব ভাইএর কয়েকটি ছবি কিশোরী শাহীন, কাশফুল এবং নূরেমবার্গ ট্রায়ালের রেকর্ডভুক্ত নারীর ছবি শিরোনাম নিবন্ধে মুক্তমনায় প্রকাশ করেছেন।
গ্রামটির নাম নিলক্ষ্যা। এখানেই পাক আর্মি চলে যাওয়ার পরে এই ছবিটি তুলেছিলেন নাইব চাচা (কুলদা রা্যের বর্ণনা)
কৃষিবিশ্ববিদ্যালয় অংগনে সদা প্রফুল্ল সংস্কৃতি সেবী প্রফেসর আব্দুল কুদ্দুস মিয়া নাইব ভাইএর সব চাইতে প্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। কুদ্দুস ভাইকে সারা ক্যাম্পাসে একমাত্র তিনিই ‘তুমি’ সম্ভোধন করতেন। কুদ্দুস ভাইএর মধ্যমেই কুলদা রায় নাইব ভাইএর সান্নিধ্যে আসেন।
অবসর নিয়ে কুদ্দুস ভাই এখন মুহম্মদপুরে বসবাস করছেন। ৩ জুন ২০০৭।
কুলদা রায়ের উপস্থাপিত মৃতপ্রায় মেয়ের ছবিটির প্রতি কুদ্দুস ভাইএর মনোযোগ আকর্ষণ করি টেলিফোনে (৫ জুন ২০১০)। তিনি যা বললেন তা নিম্নরূপঃ
ভারতীয় বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল অরোরা ময়মনসিংহ আসেন ১০ই ডিসেম্বর ১৯৭১। তার আগের দিন ৯ই ডিসেম্বর পাক বাহিনী ময়মনসিংহ কৃষিবিদ্যালয়স্থিত অতিথি ভবনের ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়ে যায়। আর তখনই নাইব ভাই, কুদ্দুস ভাইরা কেউ কোথাও বেঁচে আছে কিনা খুঁজে বের করার জন্য বেড়িয়ে পরেন। তাঁরা অতিথি ভবনের কাছে মৃতপায় এই মেয়েটিকে খুঁজে পান। এখানে মেয়েদেরকে এনে আটকিয়ে রেখে দিনের পর দিন মাসের পর মাস অত্যাচার করা হত। এই মেয়েটি্র তখন কথা বলার শক্তিটুকুও নিঃশেষিত হয়ে গেছে। কোন পরিচয় মিলেনি।
নীচের চিত্রটির অনুলিপি কুলদা রায়ের নিবন্ধের প্রথম ছবি।
ফরিদ আহমদ একই ছবি আমাদের বীরাঙ্গনা নারী এবং যুদ্ধ শিশুরা শিরোনামে মুক্তমনায় প্রথম প্রকাশ করেন। কুলদা রায় মেয়েটির নাম দিয়েছেন – শাহীন। ছবিটি বাংলাদেশ অভ্যূদয়ের করুণ ইতিহাসের মূর্ত প্রতীক। নাইব ভাই মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক-বাহিনী আর আলবদর, রাজাকার, আল-শামসদের কূ-কীর্তির হাজারো ছবি তুলেছেন। এগুলোর কোনটি রেখে কোনটি বাদ দিবেন! তাই তিনি সবগুলো লাঞ্ছনার ছবি একটি ছবিতে উজ্জীবিত করলেন। ছবিটি তাঁর মেধাপ্রসুত আরো একটি অসাধারণ সৃষ্টি। এটি সমগ্র বাংলাদেশের শত সহস্র লাঞ্ছিতা মা-বোনদের সম্মিলিত ছবি। স্বাধীনতা যুদ্ধে চরম আত্মত্যাগের ইতিহাস। এটি কোন একক শাহীনের চিত্র নয়। এই ছবিতে শাহীন, সালমা, আনোয়ারা, কুলসুম, সুবর্না, মায়া, সাবিত্রী, বিসকিসেরা একাকার হয়ে আছে। অসাধারণ প্রতিভাদীপ্ত আলোচিত্রশিল্পী নাইব উদ্দিন আহমদের লেখা স্বাধীনতার ইতিহাস এটি।
নাইব ভাইয়ের ছেলে নিপুণের পাঠানো সংক্ষিপ্ত জীবন-বৃত্তান্তঃ
Naib Uddin Ahmed
Naib Uddin Ahmed is one of the pioneers of photography in Bangladesh. His expedition of photography started in pre-1947 undivided Bengal. Since then, in the fifties and sixties, he preserved in his numerous creative photographs the diverse faces of Bangladesh. Life in agro-centric rual Bengal, and its heritage and culture has been portrayed in his photography with a special artistic flavor. Boats and the lives of fishermen and other river centered working people constitute one of the major stems of his photographs. With all these, a vibrant Bengal life, a positive and beautiful Bangladesh is found in his photographs.
In 1971, he risked his life to take numerous domentary photographs of freedom fight. He was so shocked by the brutality of the invading Pakistani army that since then this creative artist of photography has almost left.
Naib Uddin Ahmed was born in a village named Paril in the present Singair Upazilla of the Manikganj district in 1925. Since childhood he grew up with the touch of rural environment, the beauty and taste of the rural Bengal. After completing matriculation from Manikganj Victoria High School in 1943, he started study in the Islamia College of Calcutta. During this time, he came in contact with great artists like Zoinaul Abedin and Quamrul Hasan. Gradually he came closer to them. With Zoinul Abedin he wandered in the roads and lanes of Calcutta to take photographs of the famine of 1946.
Following the division of 1947, he came back to his own village Paril. He worked as an artist at the Public Health Department for a few years since 1951. It was from this time that his photographs started to be published in the renowned journals and periodicals home and abroad including Dawn, the Times, the Illustrated Weekly of Pakistan and Times of Milon. Some of his famous photographs titled, Amar Bangla, Edesh Amar, Bathing Beauty, etc. were published during this time. In 1956, while attending a course on social welfare in Sri Lanka his solo photography exhibition titled, “Rural Life of Pakistan” was held on the United Nations Day.
Afterwards a number of solo and joint exhibitions of his photographs were held in different places including London, Mosco, Karachi and Delhi.
Mr. Naib Uddin was awarded as the best photographer of Pakistan at the World Photo Contest in 1958. After working as photographer at Public Information Department (PID) since 1958, he joined the newly established Bangladesh Agricultural University of Mymensingh in 1961 as Research Photographer. After passign a long career of 32 years with the University, this nature-loving artist moved back to his own village Paril, Manikganj.
Mr. Ahmed died of old age ailment at the Comfort Hospital Dhaka on Monday 14 December 2009 at 7:50pm (Innah Lillahe ……. Razeun). He was 84. He left behind three sons, relatives, friends, colleagues and well-wishers to mourn death.
—
টেক্সাস ৬ জুন ২০১০। নৃপেন্দ্র নাথ সরকার বাংলাদেশ কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৯ জানুয়ারী পর্য্যন্ত সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে চাকুরীরত ছিলেন।
নিপুণের সংগ্রহ থেকে পাওয়া ছবিটি সংযোজিত হল। ছবি সংক্রান্ত দু একটি বাক্য পরিশোধিত করতে হল।
ধন্যবাদ নিপুণ।
ধন্যবাদ কাজল।
@নৃপেন দাদা,
আপনি কুলদা রায়ের “কিশোরী শাহীন, কাশফুল এবং নূরেমবার্গ ট্রায়ালের রেকর্ডভুক্ত নারীর ছবি” -এর যে লিংক দিয়েছেন, সেটা আর পাওয়া যাচ্ছে না। কী করবেন?
@মাহফুজ,
সমস্যা।
এই সমস্যা সমাধানের ব্যর্থতার পুরো বোঝাটা আমার ঘাড়েই থাকবে।
@ নৃপেন দাদা,
অনেক কষ্টে পুরো ওপেন হলো। তাই মন্তব্য না করে পারছি না। ইতোমধ্যে বাকী মন্তব্যও পড়ে ফেলেছি।
ফরিদ আহমেদের ‘আমাদের বীরাঙ্গনা নারী এবং যুদ্ধ শিশুরা’ পড়েছি গতকাল। আমি এর আগে কখনও যুদ্ধ শিশুদের নিয়ে এত সুন্দর লেখা পড়িনি। কেমন যেন বুকটা ভারী ভারী হয়ে আসছিল পড়ার সময়।
সংগ্রামের সময় আমার বয়স ছিল খুবই কম। আবছা আবছা মনে আছে- কানের তুলো গুজে দিয়েছে মা, কোন এক পাড়া গায়ে আমরা পালিয়ে যাচ্ছি ভাই বোন সবাই মিলে।
বড় হয়ে মা বাবার কাছে কত গল্প শুনেছি- মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে। এরপর বই পড়েছি। ছবি দেখেছি। মুক্তিযুদ্ধের উপর সিনেমা, শর্ট ফিল্ম দেখেছি। তাছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে অনেক কাহিনী শুনেছি। কিভাবে তারা যুদ্ধ করেছে, বন্দি হয়েছে, পালিয়েও এসেছে। আরও নানা কাহিনী শুনতে শুনতে মুক্তিযুদ্ধের উপর অপরিসীম ভালোবাসা আর সাথে সাথে রাজাকারদের প্রতি ঘৃণা জন্মেছে।
আমাদের এলাকায় একজন ব্যক্তি আজও আছেন, যিনি পাকিস্তানপন্থী ছিলেন। তার আচার আচরণ দেখে তাকে ঘৃণা করতে পারি না। শোনা যায়, মনে মনে তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন। প্রাণে বাচবার জন্য শান্তি কমিটিতে নাম লিখিয়েছিলেন। গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতেন।
আমি ঘৃণা করি সেই সব লোকদের যারা আমাদের মা-বোনদের উপর পাশবিক অত্যাচার করেছিল। বুদ্ধিজীবি এবং নিরীহ মানুষদের অকারণে মেরেছিল।
@মাহফুজ,
ফরিদের ওটা আর একটা দারূণ লেখা। তার সব লেখাই অসাধারণ।
@ নৃপেন দাদা,
আমি আরেকটি কথা বলতে ভুলে গেছি।
এই যে লেখা পোষ্ট নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য, যুক্তি বিতর্ক, শেষ পর্যন্ত রাগ করে মুক্তমনা ছেড়ে চলে যাওয়া, মুক্তমনায় জীবনে আর লেখা না দেয়া এ ধরনের নানা বিষয় লক্ষ্য করেছি।
আমি নিজেও বেশ কয়েকবার ঝাড়ি খেয়েছি। কিন্তু কখনই মুক্তমনা ছেড়ে চলে যাব এমন ভাবনা ভাবতেই পারি না। আমি এখানে একজন ছাত্র। কোন ভুল হলে ঝাড়ি তো খাবই। আর এই ঝাড়িটা আমার কাছে শাসনের মতো।
আমি আমার জীবনে শিখেছি- “কোন শাসনই আপাত আনন্দের বিষয় বলে বোধ হয় না। কিন্তু তদ্বারা যাদের অভ্যাস জন্মেছে, পরে তাদেরকে শান্তিযুক্ত ফল প্রদান করে।”
@মাহফুজ,
ব্যাপারটা নিয়ে গতকাল আমার প্রচন্ড ধকল গেছে। রাতেও ভাল ঘুম হয়নি।
তুমি না বললে গ্রামে যাচ্ছ কয়েকদিনের জন্য। বিদায় জানালাম। এখন দেখছি এখানেই ঘুরাঘুরি করছ। মতলবটা কী তোমার, বলত?
আমিই যাচ্ছি। কী আর করা।
প্রতিদিন ডিনারের পরে বাংলাদেশী নাটক দেখি প্রায় দুঘন্টা। এর কোন ব্যতিক্রম নেই অন্য কোথাও না গেলে। এখন নাটক দেখার সময়।
বাই বাই।
@নৃপেন দাদা,
আমি বলেছি- এ সপ্তাহের মাঝে গ্রামে যাব। আজই যাব একথা তো বলিনি। মুক্তমনায় ঘুর ঘুর করা আমার স্বভাব। তাছাড়া আপনার মত মানুষের সান্নিধ্য থেকে নিজেকে বঞ্চিত করতে চাচ্ছি না। আপনি ডিনার সারুন, টিভি দেখুন। বিরক্ত করবো না। কিন্তু দোহাই আপনার মুক্তমনা থেকে বিদায় নিতে বইলেন না। থাকি আরো কিছুক্ষণ। মনে হচ্ছে আজকে নেট ভালো যাবে।
@মাহফুজ,
থ্যাঙ্কু। “মধ্যে” কথাটা মিস করেছি।
@মাহফুজ,
সংগ্রামের কথা আপনার আবছা আবছা মনে আছে, প্রফাইলের ছবিটা দেখলে
কিন্তু তা মনে হয় না। 😀
আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। যেমন আপনার শিক্ষানবিস সুলভ মনোভাব। ঝাড়ি খাবার জন্য সদা প্রস্তুত থাকা। আপনাকে
:guru:
বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর ঠিক ৫ দিন পরে আমার জন্ম। কিন্তু ত্রিশে পা দেয়ার পর থেকেই নিজেকে ঝাড়ি খাবার উপযোগী ভাবতে কষ্ট হয়। আপনার মনোভাব আমাকে অনুপ্রানিত করছে। আমিও ঝাড়ি খাবার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছি।
@আতিক রাঢ়ী,
সবাই বলে বয়স বাড়ে, আমি বলি কমেরে- এজন্য প্রফাইলের ছবিটা এমন।
বিশ্ব আমার পাঠশালা আর আমি সবার ছাত্র।
@মাহফুজ,
মুক্ত-মনায় পেজ লোড হতে সমস্যা হলে অপেরা ব্যবহার করে দেখতে পারেন। অপেরার টারবো অন করে রাখলে আশা করা যায় আমার মত সুফল পাবেন।
@সৈকত চৌধুরী,
অপেরাতেও একই অবস্থা। আসলে এখানকার নেটেরই সমস্যা। মাঝে মাঝেই এমন হয়।
এ মূহুর্তে কিন্তু আর সমস্যার হচ্ছে না।
সাহায্যের মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য ধন্যবাদ।
Guelph থেকে এই মাত্র একটা ইমেইল পেলাম। আমার শেয়ার করতে ইচ্ছে করছে। (অনুমতি ছাড়াই paste করছি)
Sir:
I have read your articles in Muktomona. I have cried after reading your post on Naib Chacha. Nitun (his eldest son) is one of my very good friends and I visited his home in so many occasions during my university life. We were always exited to talk to him about his experience during the liberation war.
I was a student of Agricultural Engineering at BAU (1985 batch). I have seen you in the department but didn’t get chance to attend any of your courses as I was in IWM.
Regards,
Samar
:brokenheart:
প্রায় বছর দুই তো হবেই | মুক্তমনার সাথে তাল মেলাতে-মত মেলাতে পারছিলাম না | বলবেন, সে আপনার অক্ষমতা,অজ্ঞতা ! সেটা মেনে নিতে আমার মনে মলিনতা নেই একটুকুও | সে অজ্ঞতাকে জ্ঞান করেই বসে ছিলাম | কেন জানি না, আবার অবসরে ঢু মারা শুরু করেছি ইদানিং মুক্তমনায় | এসেই দেখি কিছু অশোভন বিতর্ক ! বলবেন, তর্কে মিলায় বস্তু, বিশ্বাসে বহুদূর ( !!!)| তাই বলে কাউকে সভ্যতার পাঠ শেখানোর দায়িত্ব কোন শোভন বিতর্কের কাজ নয় | একটু পরিশীলিত হতে বাধা কোথায়? একটি কবিতা দিয়ে শেষ করি,গুরু শক্তি চটোপাধ্যায়ের কবিতা,
যেতে যেতে এক-একবার পিছন ফিরে তাকাই,আর তখনি চাবুক
আকাশে চিড়,ক্ষেত-ফাটা হাহা রেখা তার কাছে ছেলে মানুষ |
ঠাট্টা-বটকরা নয় হে
যাবেই যদি ঘন ঘন পিছন ফিরে তাকানো কেন?
@ভজন সরকার,
সহমত। পুরো ব্যাপারটা অন্য ভাবে শেষ হতে পারত। যারা থামাতে চেয়েছেন তাদের হয়তো আরেকটু সাবধান হওয়া উচিৎ ছিলো। বিশেষত এখানে যারা নতুন তাদের ব্যাপারে পুরাতনদের আরেকটু উদার হওয়া দরকার।
কুলদা রায়ের এভাবে চলে যাওয়াটা অনেকের মাঝেই একটা খারাপ লাগা অনুভূতি তৈরী করছে। আশা করছি উনি ফিরে আসবেন।
সকলের এতো অনুরোধ উপেক্ষা করে উনি চলে যেতেই পারেন সেটা উনার নিজস্ব সিদ্ধান্ত, এতে আমার বলার কিছু নেই। কিন্তু এভাবে পোষ্ট মুছে দেওয়ার কোন অধিকার রাখেন না। আমাদের এত সময় ব্যয় করা মন্তব্যগুলো মুছে দিয়েছেন সেটা মেনে নিতে পারছিনা। মডারেটরদের অনুরোধ করবো, যদি সম্ভব হয় পোষ্টগুলোকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায় কিনা চিন্তা করতে। আর যদি সম্ভব না হয় তবে যে কোন লেখকের পোষ্ট মুছে দেওয়ার অধিকারটুকু হরণ করা হোক। কোন একটি পোষ্ট বা মন্তব্য হয়ে গেলে সেটা মুক্তমনার হয়ে যাওয়া উচিত। সেই বিষয় মাথায় রেখেই যে কারো পোষ্ট বা মন্তব্য করা উচিৎ বলে মনে করি।
@স্বাধীন,
এর আগেও এমন ধরনের ঘটনা ঘটেছে। উত্তর পুরুষের লেখা মুছে যাওয়াতে অনেকের কষ্ট করা সুচিন্তিত মন্তব্য হাওয়া হয়ে গেছে। মেনে নিতে না চাইলেও মেনে নিতে হলো। কি জানি এর মধ্যেও হয়তো মঙ্গল নিহিত রয়েছে। আজ যেটা অসঙ্গত মনে হচ্ছে, কালকেই আবার সেটা সঙ্গত মনে হবে। জীবন তো এ রকমই।
লেখক তার লেখা মুছে ফেলেছেন। তার সাথে মন্তব্য গেছে। লেখকের কাছে কি কোন Option ছিল যে তিনি শুধু তার লেখাই মুছবেন, মন্তব্য নয়। যদি না থাকে লেখককে দায়ী করা ঠিক নয়। এর দায়-দ্বায়িত্ব system এর।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
নৃপেন্দা, সিস্টেমের পেছনে লজিকটা বোধ হয় একটু বোঝা দরকার। লেখকের যদি তার লেখা এডিট করার ক্ষমতা থাকে, সেটা মোছার ক্ষমতাও অটোমেটিক থাকবে। ব্যাপারটার পার্থক্য করা কঠিন। কারণ আপনি যদি একটি লাইন লেখা থেকে মুছতে পারেন সংশোধনের জন্য, ৫০ টি লাইনও মুছতে পারবেন। কোন লেখক তার লেখা পোস্ট করার পরে বহুভাবেই এডিট করেন। এমনকি কেউ লেখা মুছে দিয়ে নতুন করেও পোস্ট দেন, সিস্টেম কিভাবে সব দিক সামলাবে?
মুশকিল হল লেখা মুছে দিলে তো মন্তব্য গুলো আকাশে ঝুলে থাকতে পারে না। কারণ কমেন্ট থাকে লেখার সাথে সংযুক্ত। কাজেই এ প্রসঙ্গে লেখকেই দায়িত্ব নিতে হবে (অথবা আপনি যদি চান, মুক্তমনায় লেখকের লেখা এডিট করার ক্ষমতা থাকতেই পারবে না, তবে অবশ্য অন্য কথা)। আমরা এতো অনুরোধ করারও উনি যেভাবে ছেলেমানুষের মত অভিমান করে শুধু একটি নয় সব লেখা মুছে দিলেন, তাতে আমার খারাপই লেগেছে। যা হোক, উনি যদি ফিরে আসেন তবে খুশি হব। ইমেইল করেছি।
@অভিজিৎ,
System ডিজাইনের ব্যাপারটি ভেবে মন্তব্য করেছিলাম। কঠিন তো বটেই। তবেই অসাধ্য নয়। তবে ঐ রকম একটা নাজুক মুহুর্তে মন্তব্য মুছে যাবে কি যাবে না তা সে হয়তো ভাবেনি। গতকাল কেউ একজন মন্তব্য মুছে ফেলার জন্য কুলদাকে দায়ী করেছে। তার প্রেক্ষিতেই আমার পূর্বের মন্তব্য। কুলদার হয়ে বা তার সাথে কথা বলে কিন্তু আমি মন্তব্য করিনি। আমি কুলদার সাথে কথা বলার অপেক্ষায় আছি।
১) লেখকের নিজের লেখা মুছে ফেলা বা এডিট করার ক্ষমতা থাকাটা ভাল যেটা এখন আছে।
২) এই মুহুর্তে System যেহেতু লেখার সাথে মন্তব্য হারিয়ে ফেলে, সেজন্য আপাতত “মুছো” বাটন না টিপে, content টা highlight করে কেটে দেওয়া পদ্ধতি চালানো যেতে পারে।
মুক্তমনায় সবার ইচ্ছা বা তাগিদ দেখতে পাচ্ছি কুলদা ফিরে আসুক। আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি কুলদাকে ফিরিয়ে আনতে। আশা করছি কুলদা আমাদেরকে বিমুখ করবে না।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
Content বলতে নিজের লেখা mean করেছি।
hightlight করে, কেটে Update করার কথা বলতে চেয়েছি।
নতুন কিছু বলিনি। ভবিষ্যতে আমি বা কারও করার দরকার হলে এটা মনে রাখলে কাজ চলবে। এই যা।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
নিচে যেমন আপনি বলেছেন সে রকম কিছুটা অপশনতো ছিল। উনি মন্তব্যগুলো রেখেও উনার লেখার কন্টেন্ট মুছে দিতে পারতেন। তবে উনার বর্তমান মানসিক অবস্থায় সে রকম চিন্তা করে মন্তব্য রেখে লেখা মুছা কারোর পক্ষেই সম্ভব নয়, আমি হলেও পারতাম না। তাই লেখককে সেভাবে দোষারূপ করিনি। তবে আহত হয়েছি তো বটেই, যে সকলের এত অনুরোধের পরেও উনি যা করলেন সেটা আমার চোখে নিতান্তই ছেলেমানুষী। উনার হারিয়ে যাওয়া লেখায়ও এটাই বলেছিলাম যে চলে যেতে থাকলে সব জায়গা থেকেই চলে যেতে থাকবেন। সেটার শেষ কোথায়, উনি কি ভেবে দেখেছেন? টিকে থাকাটাই বিবর্তনের প্রথম শর্ত :-/ ।
তবে আমার মন্তব্যটির উদ্দেশ্য আরেকটি ছিল, তা হল লেখাগুলোকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা এডমিনদের পক্ষে কতটুকু সম্ভব সেটা জানা। আমি যতটুকু বুঝি (তবে নিশ্চত নই), কোন কিছু মুছা হলেও সিস্টেম এ থাকার কথা সেটা, এবং এডমিনদের সেই পোষ্ট উদ্ধার করতে পারা যাওয়ার কথা। আমার অনুরোধ হবে যদি সেটা সম্ভব হয় তবে পোষ্টগুলো ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হোক। পোষ্ট এবং সেখানকার মন্তব্যগুলোকে আমি যথেষ্ট মূল্যবান বলেই মনে করি।
লেখকের লেখা সম্পাদনা করার অধিকার থাকার প্রয়োজন আছে। কিন্তু সেটার সাথেই যে লেখা মুছে দেওয়ার অধিকার যুক্ত সেটা জানা ছিল না। কি আরা করা যাবে? কিন্তু কোন লেখা মুছা হলে সেটা উদ্ধারের ব্যবস্থা সিস্টেমে কি নেই? এটাতো থাকা উচিৎ 😛 ।
কুলদা’দা আপনি আমাদের মাঝে আবার ফিরে আসবেন এই কামনা করি। আপনার বন্ধুচক্রের ধারণা সঠিক নয়। আপনি এই ব্লগে একদমই নুতন, এবং মুক্তমনার অনেক লেখাই আপনি পড়েননি বলেই ধারণা করি। না হলে এখানেই অভি’দা এবং ফরিদ ভাই নিজেরাও যেভাবে তর্ক করেছেন ভয়ই হচ্ছিল কখন না জানি কি হয়। আমি নিজেও মাহফুজ ভাইয়ের পোষ্টে ফরিদ ভাইয়ের সাথে দ্বিমত প্রকাশ করে মন্তব্য করেছি। আপনার সাথে অন্য ব্যাপারে সহমত হবে না সেটা কিভাবে ধরে নিলেন। তাই ফিরে আসুন, এবং আমাদের আপনার সুন্দর লেখা উপহার দিন।
@স্বাধীন,
আপনি যে ভাবে লিখেছেন এভাবে অনেকে লিখলে তাকে ফিরিয়ে আনা সহজ হবে আমি মনে করি।
আপনি কিছু মনে করবেন না। আপনিই যে মন্তব্য মুছার কথা বলেছেন তা আমার মনে ছিল না বা খেয়াল করিনি। কাল আমার প্রচুর ধকল গেছে। রাতে ভাল ঘুম হয়নি। আমি কীভাবে কুলদার কষ্টটা একটু লাঘব করতে পারব সেটাই ভেবেছি। ভাবলাম (আমার বিশ্বাসও বটে) কুলদা জেনে শুনে মন্তব্য মুছে নি। সে কথাটাও এখন আর বলতে আসবে না। তাই সকালে বলেছি কেউ ওকে দায়ী করেছে। আমার এই মন্তব্যে আপনি কষ্ট পেলে ক্ষমা প্রার্থী।
System এ অনেক সুবিধাই থাকতে পারে। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে মুক্তমনা কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নয়। volunteer রা বিনে পয়সায় কাজ করে যাচ্ছেন। কাজেই সব কিছু আশা করতে পারিনা।
মন্তব্য রেখে লেখা মুছার একটা জিঞ্জিরা পদ্ধতির কথা আগের একটি মন্তব্যে লিখেছি। আপনি ঠিকই বলেছেন ঐ রকম মানসিক পরিস্থিতিতে কোন জিঞ্জিরা পদ্ধতিই মনে থাকবে না।
ভাল থাকবেন।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
না দাদা, আমি কষ্ট পাইনি। তবে মনে হল নিজের অবস্থানটুকু আরেকটু পরিষ্কার করে রাখি, পাছে কেউ যেন ভুল না বোঝে। আপনি কিসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন সেটাও ধারণা করতে পারি। কুলদা রায়ের একজন ভক্ত পাঠক আমি নিজেও। তাই আমিও চাই উনি মুক্তমনায় লিখুক। আপনার চেষ্টাটুকু সফলকাম হোক এই কামনা করি।
কুলদা রায় – দীর্ঘ এই মন্তব্য আপনার চোখে পড়বে কি না জানি, তবুও লিখছি।
আপনি লেখেন, লিখতে ভালোবাসেন। আপনি যখন কিছু একটা লেখেন সেটা নিশ্চয়ই অন্তত একজন পাঠকও পড়বে ভেবেই লেখেন? একজন পাঠকও যদি আপনার লেখেটা সময় ব্যয় করে পড়ে, পড়ে সেটা নিয়ে ভাবে, এবং ভেবে আপনাকে তার প্রতিক্রিয়া জানায় – কিছুটা হলেও কি আপনার লেখার পরিশ্রম এবং আনন্দ সার্থকতা পায় না? ব্লগ ব্যাপারটা সেদিক থেকে কী চমৎকার একটা সুযোগ আমাদের দিচ্ছে – আমরা কিছু লেখার পরপরই পাঠকের প্রতিক্রিয়া জানতে পারছি, দরকার হলে আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা/স্পষ্ট/জোরদার করতে পারছি। মতে মিলতেই হবে এমন তো কোন কথা নেই। পাঠক আর লেখকের একই উপসংহারে পৌঁছুতে হবে এমন তো কোন কথা নেই। মতপ্রকাশের এই প্রক্রিয়াটাও তো লেখার আনন্দের অনেকখানি হওয়ার কথা। অন্তত সেরকমটাই হওয়ার কথা ছিলো না?
আপনার হয়তো হয়নি। ঠিক। যেখানেই একইসাথে বিভিন্ন ব্যক্তিত্বের, বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির অনেকগুলো মানুষ পারস্পরিক চিন্তা বা মতের বিনিময় করবে – নিরবচ্ছিন্নভাবে কোন কিছুই কি হওয়া সম্ভব? আপনি মুক্তমনায় বিবর্তন নিয়ে লেখাগুলো পড়লে দেখবেন, সেটাতে অনেকসময় লেখককে তার বক্তব্যের চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে হয়, অসংখ্যবার কোন দ্বিমত প্রকাশকারীকে তথ্য, উপাত্ত দিয়ে প্রমাণ করতে হয় নিজের কথার সারবত্তা। এবং সেটা শুধু বিবর্তন নিয়েই নয়, যে কোন লেখার জন্যই সত্যি। অন্তত তাই কি হওয়ার কথা নয়? ধারাপাতের মতো গালি অথবা পাঠকের মুগ্ধতা – এই দুইয়ের মাঝে সুস্থ সমালোচনার খুব প্রশস্ত একটা জায়গা রয়েছে। কখনও কখনও কিছুটা কড়া সমালোচনাও হয়। কিন্তু, সেটা নিয়ে কি আপনি ততোটাই ভীত অথবা বিতৃষ্ণ হবেন?
আপনি ইতিহাস রচনা করতে চান নি। ঠিক। কিন্তু, ‘৭১ মুক্তমনার পাঠকদের কাছেও তো অত্যন্ত সংবেদনশীল একটা ব্যাপার। এটা নিয়ে অনেকেই অনেকভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে পারেন। আমি এবং অন্যরা করেওছি। কিন্তু, সেই প্রতিক্রিয়া কি এতোটাই অন্যায় এবং অশিষ্ট ছিলো যে আপনি এরকম একটা সিদ্ধান্ত নেবেন? অভি ঐ কথাটা আপনাকে আসলেও বলে নি। আপনি নতুন এসেছেন বলে হয়তো ঐ ধরনের নতুনদের দলে আপনাকেও ফেলা হয়েছে বলে মনে করেছেন, সেটা একেবারেই ঠিক নয়। অভি তো মন্তব্যটা আমাকে করেছে, আমিও কিন্তু পড়ে এটা আপনাকে উদ্দেশ্য করে বলা ভাবি নি। আর, আপনাকে রাজাকার তকমা কে দেবে, কীভাবেই বা সেটা দেয়া সম্ভব?!
ফরিদ ভাই এবং আপনি দুজনেই ‘৭১ নিয়ে অত্যন্ত স্পর্শকাতর, কারণ মুক্তিযুদ্ধ আপনাদের দুজনের জন্যই অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ এবং আবেগের বিষয়, ঘটনা, একটা বিশ্বাস। এটা কি খুবই দুঃখজনক একটা ব্যাপার নয় যে সেই ‘৭১ নিয়েই কিনা আপনাদের দুজনের মতবিরোধ এই পর্যায়ে এসে পৌঁছুলো? কড়া কথা দুজনেই বলেছেন, বাঁকা কথাও। কিন্তু, এই পর্যায়ে এসে দোষবিচার করাটা এই মন্তব্যের উদ্দেশ্য নয় মোটেই। আমি আপনাকে বলতে চাইছি – এরকম মতবিরোধ মাঝে মাঝেই হয় এবং ভবিষ্যতেও হবে। এর মানে এই না যে আপনাকে বা অন্য কাউকেও অপমান করা, ছোট করা অথবা নিছক আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে ঝাপিয়ে পড়া হয় বা হবে। এটা বন্ধুচক্রের ব্যাপার নয়। বন্যা আমার ছোটবেলার বন্ধু – ওর সাথে আমার মতের অমিল হয় সবচাইতে বেশি। অভিও আমার বন্ধু, ও আর আমি খুব কম সময়ই কোন বিষয়ে একমত হতে পারি। ব্লগে বরং আমরা পরস্পরের সাথে ভদ্র ব্যবহার করি। বাস্তব জীবনে আমাদের দেখলে আপনি বন্ধুতা ব্যাপারটা নিয়েই হয়তো দ্বিতীয়বার ভাবতে বসবেন! 🙂
ফরিদ ভাইয়ের সাথে আমার আগেও এই মুক্তমনাতেই তর্ক হয়েছে। সেটা খুব বন্ধুত্বপূর্ণ তর্কও ছিলো না। অর্থাৎ বন্ধুচক্রটিও নিরবচ্ছিন্ন নয় 😉
ছেড়ে যাওয়াটা খুব সহজ। কিন্তু কোন সমাধান কি?
আপনার লেখা খুব পছন্দ করি আগেও বলেছি। পাঠক হিসেবে আপনার কাছে আমার অনুরোধ থাকবে আপনার লেখা পড়ার সুযোগ দেয়ার। আশা করছি ভেবে দেখবেন।
@স্নিগ্ধা,
আপনার এই মন্তব্যটি ভাল লাগছে। কুলদা আপনার এই মন্তব্য পড়লে মুক্তমনায় চলে আসতেও পারে। আমি সেই আশাতেই থাকতে চাই।
ধন্যবাদ।
এডমিন,
হচ্ছেটা কী। অনেকগুলো মন্তব্য নিমিষে হারিয়ে গেল মনে হচ্ছে।
@নৃপেনদা,
কুলদা রায় পোস্ট মুছে দিয়েছেন, সেজন্য মন্তব্যগুলোও হারিয়ে গেছে। উনি দেখছি কারো কথাই শুনলেন না। 🙁
@অভিজিৎ,
এতক্ষনে বুঝলাম। আমার শেষের মন্তব্যটা দেখতে পেলে হয়ত শুনত। আমার খুব খারাপ লাগছে।
কুলদা বলছে আমাকে ফোন করেছিল লিখেছে। আমার স্ত্রী বাসায় থাকলে আমি সাধারণত ধরি না। তিনি আবার answering machine এ কথা শুনে তুলেন। আবার ওকে ঔ সময়েই কথা বলতে খেয়াল করেছি। কিন্তু সেটা
পরে দেখলাম সেল ফোনে কথা বলছে।
আমি পরে তাকিয়ে ছিলাম। ফোন আসলেই ধরব। ফোন আসেনি। আমার আবার long distance, caller ID কিছুই নেই যে ফোন করি।
কুলদা তুমি এই পোস্টিং দেখলে আমাকে ফোন করবে প্লিজ।
তুমি চলে যাচ্ছ দেখে আমার খারাপ লাগছে। আমার শেষ পোস্টটি দেখেছ কিনা জানি না। আমি লিখেছিলাম এরকমঃ
১) সেন্সরের কথা নীতিমালায় লেখা থাকে। মাঝে মাঝেই দেখানো হয়। এ নিয়ে অনেক মজাও করে অনেকে। তুমি নতুন, জান না। তাই তোমার কাছে আঘাতের কারণ মনে হয়েছে। আসলে তা নয়।
২) তুমি যদি “বন্ধু চক্রই” মনে কর, এদের ignore কর। মুক্তমনায় হাজার হাজার পাঠক আছে, যারা লেখে না। তাদের উপরই না হয় বিচারটা ছেড়ে দাও। তারা তো নিরপেক্ষ।
৩) এভাবে চলে যাওয়া পরাজয়কে বরণ করা। তুমি প্রচন্ড ভাল লেখ এটা সবাই স্বীকার করছে। সবাই তোমার লেখা চাচ্ছে। তুমি তোমার লেখা দিয়ে তুমি প্রমাণ করে দাও তোমার মূল্য।
৪) আমার খুবই খারাপ লাগছে। প্লিজ লেখাটি তুমি upload কর। আমার কথাটি রাখ। ছেড়ে দেওয়ার মধ্যেও মহত্ব আছে। ছেড়ে দাও প্লিজ। বাদ-বিবাদ মুক্তমনাতে নতুন নয়। আমরা সবাই আবার বন্ধু হব। ফরিদ সাহেবই তোমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হবেন।
৫) অভিজিত নিজেও দুঃখ প্রকাশ করেছে। কয়েক পোস্ট উপরে দেখ তাঁর পোস্ট।
৬) তোমার নম্বর আমার কাছে নেই। প্লিজ আমাকে কল কর।
আমি আমার লেখাটাকে কখনোই ইতিহাস বলে দাবী করি নি। আমি একটি ঘটনার বিবরণ বলেছি মাত্র।
আর আমার জানা ঘটনা যে মিথ্যা তা প্রমাণ করা যায় নি। তবু আমাকে দৌষী সাব্যস্ত করছেন। একটা বিষয় বুঝতে পারছি–আপনাদের স্কুলিং আর আমার স্কুলিং আলাদা। কী করা যাবে। কোন ঘেরাটোপ আমার পছন্দ নয়। লেখা অনেক রকম হতে পারে। সেটা আপনারা মানছেন না।
আমি বলেছি, ফরিদ আহমেদ বা নৃপেন স্যার বা অন্য কেউ আমার বিবৃত ঘটনার বিপরীতে অন্য কোন ঘটনা জানা থাকলে সেটা বলুন। সেখান থেকে মিলিয়ে ছেকে বের করা যাবে সত্যিকারের ইতিহাস।
দেখুন, রৌশনারা নিয়েও এরকম অনেক বিতর্ক আছে। অমর পাল গান গেয়েছেন। অনেকে কবিতা লিখেছেন। ছফা উপন্যাসে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু রৌশনারা কি মিথ্যে হয়ে গেছেন? তিনি মিথ।
এ সময়ে বাইবেল লেখার কি দরকার আছে?
@কুলদা রায়,
চলো, ব্যাপারটি আপাতত স্থগিত রাখি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নতুন কিছু লিখি।
সবাই তোমার নতুন লেখাটি নিয়ে ব্যস্ত, কুলদা। লেখাটি বেশ। কিন্তু শেষ অংশ মিসিং আছে। সে জন্য লেখাটি বুঝতে পারিনি।
ভূমিকাটা বাদ দিয়ে দাও প্লিজ।
@কুলদা রায়,
কুলদা রায়, আপনার এই কথাগুলো দেখে একটু অবাকই হলাম। আপনি শক্তিশালী লেখক, মুক্তমনায় আপনার লেখা দেখে খুশিই হয়েছিলাম। তবে সভ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা কি একটু বাড়াবাড়িই হয়ে গেল না? আপনি এখানে যেভাবে বলছেন ব্যাপারটা তো সেভাবে ঘটেনি, ফরিদ ভাই তার প্রথম মন্তব্যে আপনাকে যে প্রশ্নগুলো করেছিলেন তার উত্তরতো আপনি দেননি। হ্যা, ফরিদ ভাই তার শেষের মন্তব্যে বেশ কড়া কিছু কথাই বলেছেন। কিন্তু এর পিছনে কি কারণটা কাজ করেছে সেটা আপনার অজানা থাকার কথা নয়। প্রথমে উত্তর দিয়ে দিলেই কিন্তু এত কিছুর দরকার পড়তো না, সব কিছু তখনই মিটে যেত। আপনি কিন্তু তখন অনেককে উত্তর দিলেও ওনার প্রশ্নগুলো এড়িয়ে গেছেন। ওনার ওই প্রশ্নগুলো কিন্তু আমার কাছে যথেষ্ট যুক্তিপূর্ণই মনে হয়েছিল।
আপনি মুক্তিযুদ্ধের উপর একটা লেখা লিখেছেন, এধরণের লেখাগুলো ইতিহাসের সাক্ষ্মী, আপনি যেভাবে শাহীনের বাপ মা, ঠিকানা উল্লেখ করে লিখেছেন তা তে করে আমার মত অনেক পাঠকই ধরে নেবেন যে, এটা একটা ঐতিহাসিক দলিল। কেউ সে লেখার রেফারেন্স চাইলে বা কোন তথ্যকে চ্যালেঞ্জ করলে তার উত্তর দেওয়াটা লেখকের দায়িত্ব বলেই মনে করি আমি। আপনার এটা যদি ঐতিহাসিক দলিল না হয়ে থাকে, কারও মুখে শোনা কাহিনি বা গল্প বা আংশিকভাবে কল্পনার রঙ মেশানো সাহিত্য হয়ে থাকে তাহলে সেটা ডিস্ক্লেইমারে বলে নেওয়া দরকার ছিল। অন্ততপক্ষে যখন প্রশ্নটা উঠেছিল তখনি তা বলা উচিত ছিল। গল্প, কবিতা, সাহিত্য, প্রবন্ধ আপনার যা ইচ্ছে আপনি লিখুন এ নিয়ে কারো কিছু বলার নেই। কিন্তু ঐতিহাসিক ঘটনা নিয়ে স্পেসিফিক কিছু লিখতে হলে সেখানে স্বচ্ছতা থাকাটা অপরিহার্য। আপনি বারবারই বলছেন আপনি ইতিহাস লেখেননি, ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। এই কথাটার অর্থ আমি বুঝতে পারছি না। ঐতিহাসিক কোন নির্দিষ্ট ঘটনা নিয়ে সময়, স্থান উল্লেখ করে, পাত্র পাত্রীর পরিচয় দিয়ে বিস্তারিত কোন প্রবন্ধ লিখলে সেটা কি ঐতিহাসিক ঘটনার বিবরণ হয়ে যায় না?
আপনার নতুন লেখার ভূমিকাটা দেখে হতাশই হলাম, মনে হল এ বিষয়ে আমার মতামত জানানো দরকার। না হলে স্নিগ্ধা এবং স্বাধীন ইতোমধ্যেই সব কথাই বলে দিয়েছেন, নতুন করে আর বলার তেমন কিছু ছিল না।
@বন্যা আহমেদ, আপনার সঙ্গে ১০০% আমি দ্বিমত। আপনার বিচার পদ্ধতির আমার ভরসা নেই। ফরিদ ভাই যা বলেছেন তাই সহি! আমার বক্তব্যকে আপনাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হল না। এ জন্য কোন খেদ নেই।
এ রকম মুক্তমনা হওয়া ইচ্ছে নেই।
ভবিষ্যতে মুক্তমনায় লেখায় ইচ্ছেটা উবে গেল। এবং কপালে জনাব ফরিদ সাহেবের দেয়া রাজাকারের তকমা জুটে গেল।
বিদায়।
@কুলদা রায়,
আপনি তো আপনার পুরো লেখাই মুছে দিলেন। এই সমস্ত ছোট ব্যাপারে অভিমান না করে, আসুন আমরা ঠিক হই। আর আমিও দুঃখ প্রকাশ করলাম এখানেও – আমার মন্তব্যে আপনি দুঃখ পেয়েছেন বলে। সিনসিয়ারলি সরি।
মুক্তমনায় আপনার আগের মতোই অংশগ্রহণ কামনা করছি।
@কুলদা রায়,
সবাই মিলে যেভাবে আপনার উপর মন্তব্য করলেন, তাতে আমার কাছে মনে হলো লঘু পাপে গুরুদন্ড। যাই হউক এটা আমার নিজস্ব মতামত।
@ব্রাইট স্মাইল্,
আপনার বক্তব্যের ভিত্তি আছে। যাদের নিরপেক্ষভাবে ব্যাপারটি handle করার কথা তারা কি নিরপেক্ষ থাকতে পেরেছেন? অনেককেই দেখলাম একপেশে কথাবার্তা বলেছেন। তারা বিতর্কের বাইরে থাকলে কুলদা হয়তো আমাদের ছেড়ে চলে যেত না।
আরেকটি কথা যোগ করে যাই। মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা নিয়ে লেখায় এরকম বিতর্ক পর্যন্ত যাওয়াটাই চরম হতাশা জনক। এই ঘটনাটির একটি সুন্দর সমাপ্তি আমি কামনা করছি যেন আমরা প্রমান করতে পারি যে মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে সবাই একতাবদ্ধ হয়ে চলার ক্ষমতা রাখি, ব্যক্তিগত ভুলবোঝাবুঝির উর্ধ্বে থেকে।
কুলদা রায়
আপনি একজন শক্তিমান লেখক। অসম্ভব সুন্দর আপনার প্রকাশভঙ্গি। এই একটি কারণে আমি আপনাদের মত লেখকদের ঈর্ষা করি :-X । নিজের গল্প লেখার ক্ষমতা নেই, তাই দু’একটি বই পড়ে চোথা লিখি। চোথা লেখার কাজটুকু কলেজ, বুয়েট জীবন থেকেই ভাল পারি। কিন্তু চোথা কখনো গল্প বা প্রবন্ধ হয় না 😥 ।
পাঠক হিসেবে আপনার আগের লেখাটি আমাকে ছুঁয়ে গিয়েছে। আমি এটাকে মুক্তিযুদ্ধের উপর নির্মিত একটি গল্প হিসেবেই দেখবো। কিন্তু সেটাকে যখন আপনি কোন সুনির্দিষ্ট ঐতিহাসিক ঘটনা বা কোন নির্দিষ্ট ছবিরে সাথে যুক্ত করতে যাবেন তখন সেটি আরা নিছক গল্প হয়ে থাকে না। তখন আপনাকে অবশ্যই অবশ্যই দায়িত্ববান হতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখায় নিজের আবেগকে দমন করে সত্য তোলার প্রতি যত্নবান হতে হবে। একজন পাঠক হিসেবে আমি লেখকের কাছে এই দায়বদ্ধতাটুকু আশা করি। আমি এই ক্ষেত্রে ফরিদ ভাইয়ের এবং স্নিগ্ধা উনাদের সাথে একমত। বিশেষ করে ফরিদ ভাইয়ের এই প্যারাটুকুর সাথে বিশেষ ভাবে সহমত।
আশা করি আপনি এই বিষয়টুকু বিবেচনায় নিবেন। এটি আমাদের কারো ব্যক্তিগত বিষয় নয়। এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিষয়ক। একই ভাবে আপনার নুতন লেখাটির ভু্মিকাও পছন্দ করিনি। লেখক হিসেবে এই সব তুচ্ছ ব্যক্তিগত রেষারেষি দূরে রাখতে পারা উচিত সকলের।
@কুলদা রায়,
বিষয়টা নিয়ে ইতোমধ্যেই এতো কথা হয়ে গিয়েছে যে, এই মন্তব্যটি চর্বিত চর্বণের মতো মনে হতে পারে, সে বাবদে আগাম দুঃখপ্রকাশ করে রাখলাম।
ফরিদ ভাই বা আপনার বিতর্কে ইন্ধন জোগানোও এই মন্তব্যের উদ্দেশ্য নয়, সেটিও পরিষ্কার করে বলে রাখাটা জরুরি।
শ্রদ্ধেয় নাইব উদ্দিন আহমেদের তোলা ছবির মেয়েটি’র পরিচয়, বা ছবির প্রেক্ষাপট নিয়ে আমার প্রতিক্রিয়া হয়তো আপনাদের দুজনের কারুর মতের সাথেই মিলবে না, হয়তো মিলবে, কিন্তু সেটাও গৌণ।
একাত্তরের ধর্ষিতা মেয়েদের নিয়ে কোন পোস্ট পড়লে আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া হয় সেই লেখা থেকে পালিয়ে যাবার একটা প্রবল ইচ্ছা। ছবি দেখলে সেই ইচ্ছে একইসাথে প্রবলতর হয়, এবং অসম্ভব হয়। আমারই মতো আরেকটি মেয়ে কী ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গেছে সেই উপলব্ধিটা ছবির মাধ্যমে প্রায় প্রত্যক্ষভাবে সামনে এসে দাঁড়ায়, তখন তার হাত থেকে এমনকি পালাতেও পারি না। এই মেয়েটির পরিচয় নিয়ে যে সংশয় বা মতবিরোধ দেখা দিয়েছে সেটা আমার মতে অনভিপ্রেত। ঘটনাটাই এতো বড়, যে সেটা ছপিয়ে তার প্রেক্ষাপট নিয়ে কথা এগুতে পারে তখনই, যখন ঘটনা ছাড়িয়ে ঘটনার কাহিনীর গল্প প্রাধান্য পায় এবং পেতে থাকে। এতোটার দরকার ছিলো কি? বিশেষ করে যেখানে জনাব কুদ্দুসও বলেছেন যে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়েছিলো একটি নির্যাতন ক্যাম্প থেকে এবং ছবিটি ওখানেই তোলা?
যদি ধরেও নেই যে মেয়েটি’র নাম সত্যিই শাহীন, এবং পরে হাসপাতালে তার মা নাইব উদ্দিনকে অনুরোধ করেন ওর ছবি তুলতে – যেটি ওই মেয়েটির চুলের আড়ালে মুখ ঢাকা ছবি, তাহলে ঐ হাত বাঁধা মেয়েটি কে বা তার ছবি কোথায় তোলা হয়েছিলো? আপনার দেয়া ছবির ক্যাপশন অনুযায়ী – “(চিত্র৩ :গ্রামটির নাম নিলক্ষ্যা। এখানেই পাক আর্মি চলে যাওয়ার পরে এই ছবিটি তুলেছিলেন নাইব চাচা। চাচাকে দেখে চেঁচিয়ে উঠেছিল- ওরা আমাকে মেরে ফেলেছে। আমাকে বাঁচান।)” এই মেয়েটিও শাহীন। যদি এমনকি আপনি এখানে ‘শাহীন’কে আসলে সমস্ত বীরাঙ্গনাদের প্রতিভূ হিসেবে প্রতীকি অর্থেও ব্যবহার করে থাকেন, আমার মতে আপনার লেখার ভঙ্গিটি একটু ড্রামাটাইজড হয়ে বিষয়টির গুরুত্ব হ্রাস করে দিয়েছে। আপনি অত্যন্ত শক্তিশালী একজন লিখিয়ে, আপনার লেখার ভঙ্গি আমি খুবই পছন্দ করি, এবং এক হিসেবে আপনার লেখার সমালোচনা করাটা হয়তো আমার ধৃষ্টতাই হচ্ছে। তবুও পাঠকের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জায়গায় দাঁড়িয়ে একথাটা বললাম। আশা করছি কথাটাকে সেভাবেই নৈর্ব্যক্তিকতার সাথে বিচার করবেন।
ওই মেয়েটা, ওই মেয়েগুলো যে অবর্ণনীয় অত্যাচারের মধ্য দিয়ে গেছে সেটাকে আমি সামান্য ব্যক্তি আমার পক্ষ থেকে সম্মান দেখাই এভাবে – যে ঐ ঘটনাগুলোকে আমি যথাযথভাবে বোঝার চেষ্টা করি। যদি কখনও কোথাও লিখি বা উপস্থাপন করি, তাহলে যথাযথভাবে বলার চেষ্টা করবো। আমার আলঙ্কারিকতার দায়ে যদি তাঁদের অভিজ্ঞতা গৌণ হয়ে পড়ে, সেটা আমার ঐ ছবিগুলো থেকে পালাবার পথটা আরও কঠিনই করে দেবে।
ভালো থাকবেন। মুক্তমনায় আপনার মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আরও অনেক লেখা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম 🙂
@স্নিগ্ধা, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
এখানে ঘটনাই বড়। সেখানে পাত্রপাত্রী বিচার করারটা আমি সঙ্গত মনে করি না। তবু কেউ কেউ সেটা করবেন। সেটা নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই। সমস্যা হল–কিশোরী শাহীনের এই ঘটনাটি পাওয়া যায় মুখ পরম্পরায়। কোন গ্রন্থভূক্ত নেই। নাইব চাচার সঙ্গে যেরূপ কথা হয়েছিল–আমি সেরূপই লিখেছিলাম।
আমার মনে পড়ে ১৯৯৩ সালের দিকে সালিম হাসান নামেও একজন এই বিষয়টি নিয়ে লিখেছিলেন। তিনি একজন লেখক। সুদর্শন। বিএনপির সূত্র ধরে তখন সবে চাকরী যোগাড় করেছেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগে। তার কোন রুম ছিল না। একদিন তিনি একটি রুম দখল করে বসেন। সালিম হাসানও তার লেখাটিতে শাহীন নামটিই উল্লেখ করেছিলেন। সালিম হাসান কি এখনও ওখানে চাকরী করেন? নিপুন বলতে পারবে। মনে পড়ে–সালিম হাসান আমার সাক্ষাৎকার পড়ে কুপিত হয়েছিলেন। আমি কেন তার বিষয় নিয়ে লিখলাম। লেখালেখি মনে করেছিলাম নিরিবিলি কাজ। কিন্তু এখানেও অনেক ঝামেলা।
আমি সাংবাদিক, গবেষক, বা ঐতিহাসিক নই। আমি মাঝে মাঝে লিখি। এ লেখাটিতে আমি কিন্তু কোন কিছুই দাবী করি নি। আমি একটি ঘটনাকে বিবৃত করেছি মাত্র।
ঘটনা কি রকম সেটা বোঝাতে অবশেষে একটি গল্প আমাকে পোস্ট দিতে হয়েছে।
স্নিগ্ধা, আমি জানি–পাঠকই ভগবান।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমার ইচ্ছে লেখাগুলোকে পছন্দ করার জন্য।
@কুলদা রায়,
পাত্রপাত্রী বিচার সঙ্গত তো অবশ্যই! বিশেষ করে যেখানে ‘৭১ নিয়ে কথা হচ্ছে! আমার বক্তব্য ছিলো মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা তেমন হওয়াই উচিত যেমনটাতে ঘটনা ছাপিয়ে পাত্রপাত্রীই মুখ্য না হয়ে ওঠে। এই কথাটায় কিন্তু আসলে একভাবে পাত্রপাত্রীর বিচার খুব শক্তভাবেই প্রোথিত। ঘটনা অনেকসময় যেমন ঘটনার গুরুত্বেই গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি আবার পাত্রপাত্রীর পরিচয়ের ভিত্তিও ঘটনাকে অন্য মাত্রা দেয় না কি? ইতিহাসনির্ভর, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধনির্ভর কোন লেখায় যদি পাত্রপাত্রীকে সনাক্ত করাই হয়, তাহলে তা যথাযথ হওয়া উচিত। সেখানে যদি সংশয়ের কোন অবকাশ থাকে, বা কোন পাঠকের মনে যদি লেখার কারণে সংশয়ের উদ্রেক হয়েই থাকে, তাহলে প্রথমেই সেটা নিরসন করা লেখকের দায়। একদম প্রথমেই মন্তব্যগুলোর উত্তর দিলে ব্যাপারটা এতোদূর গড়াতো না।
আপনার লেখা নিয়ে আরেকটা সমালোচনা করবো? ‘৭১ নিয়ে যে গল্প বা পোস্টটা মোটেই দিয়েছেন, সেটা পড়তে গিয়ে মনে হচ্ছিলো কোন একটা শান্ত, নিস্তরঙ্গ গ্রামজীবনের কথা পড়ছি। ওইসময়ই কি মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায় নি? আপনি পাকবাহিনীর নৃশংসতার অভিঘাত বোঝাতে গিয়ে প্রথমে যে মেদুরতা নির্মাণ করেছেন, সেটা আমার কাছে প্রয়োজনের চেয়ে একটু বেশিই মনে হয়েছে। শেষটা নিয়ে কিছু বলার নেই অবশ্য …… যাঁরা এসবের মধ্য দিয়ে গেছেন, স্বজন হারিয়েছেন, তাঁদের নিয়ে কোন বক্তব্যই কি যথেষ্ট? কিছু বলতে গেলে তাই বাতুলতা মনে হয়!
ওহ, হ্যাঁ – আর পোস্টের শুরুর অংশটা একেবারেই ভালো লাগে নি। আসলে নাম ধরে এরকম বলা টলা আমার ব্যক্তিগতভাবে নিতান্তই অপছন্দ 🙂
@স্নিগ্ধা,
আমার মনে হয়না এতো বড় মন্তব্য তুমি কখনো করসো। ভুইলা গেছিলা নাকি যে এইটা সচু না 😉 (সরি, ভুল হইয়া গ্যাছে – এই ইমো তো তুমি আবার পছন্দ কর না, 😀 )
এপার্ট দ্যান দ্যাট, তোমার মন্তব্যে এ+। ঝামেলা মিটানোর একটা সহজাত ক্ষমতা আছে তোমার। অন্য ব্লগে এক সময় স্বতঃস্ফুর্ত ভাবেই করসো (যদিও আমার মনে হইতো পেইড দারোয়ান : ) )। মনে হচ্ছে মুক্তমনার জন্যও তোমারে লাগবে। মুক্তমনা ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। নতুন নতুন সদস্য লেখা শুরু করেছে। একেক জনের মানস জগৎ একেক রকম। তাল মিলাতেই সমস্যা (আর আমি আবার একটু তালকানাও, সেইটা তো জানোই)। তারপরেও অন্ততঃ এখানে প্রতিদিনই ঝগড়া ঝাটি লাগে না অন্য ব্লগের মতো। সদস্যদের বের হয়ে যাওয়ার হুমকি, একে ওকে বের করে দেয়া, মডারেটরের চলে যাওয়া, কাউকে অনির্দিষ্টকালের জন্য মডারেশনের আওতায় আনা … কিছুই ঘটে না এখানে। তবে শঙ্কিত হই ভবিষ্যতে হবে না কে বলতে পারে। ট্রেন্ড তো ভালা পাই না 🙂 । বিভিন্ন লোকজন আসতেসে যারা আউল বাউল ব্লগে ছাগু রাজাকার এইগুলা নিয়া ঝগড়া ঝাটি করতো, আর ভাবসে এইখানেও একইভাবে করা যাবে। কি মুশকিল। তোমার মত লেবেল হেডেড দারয়ান লাগবে মনে হয় একজন।
পেইড দারোয়াননের ফী কত, যেন ? 🙂
অফ টপিক – ‘শক্তিশালী লিখিয়ে’ না বলে ‘শক্তিশালী লেখক’ বললে কেমন হয়?
@অভিজিৎ,
আমিও সহমত জানালাম। স্নিগ্ধা আপুরে আমিও ভালু পাই দারোয়ান হিসেবে। কাজ দিয়ে দিন।
@অভিজিৎ,
দারোয়ান, আমি দারোয়ান??!!!! ইইইইইইইই … এটা চিৎকার, তোমার ইনস্টল করা কোন ইমোটিকনের সাধ্য নাই যে এই মুহূর্তে আমার মেজাজকে ঠিকভাবে রিফ্লেক্ট করতে পারে, তাই এই চিৎকারটা দিসি। আবারও দিলাম … ইইইইইইইইইইইই………
অন টপিক অ্যাবাউট অফ টপিকঃ শক্তিশালী লিখিয়ে বললে কী অসুবিধাআআআ?
@স্নিগ্ধা,
ক্যামন যেনো ফুয়াদের ‘তুরাই’ এর মতো শোনায়। 😀
@অভিজিৎ,
অভি …… অনেএএএক কথা বলার ছিলো, কিন্তু এই তুলনার পর চোখটা কেন যেন ঝাপসা লাগে আর গলায় কেমন যেন ব্যথা ব্যথা করে! বিদীর্ণ এই হ্নদয় নিয়ে চলে যাবার আগে তবুও একটা কথা আমি বলে যেতে চাই – তোমার মন্তব্য আমি ‘তুরাই কেয়ার’ করি!! 😥 + 😀
নৃপেন স্যার আমাকে ফোনে বলেছিলেন, আমি যেন এইখানে ফরিদ আহমদের মন্তব্যের উত্তর না দেই। তিনি আমার শিক্ষক। আমি তাকে মান্য করেছি। সেজন্য গতকাল কোন উত্তর দেই নি। আজ ফরিদ আহমদের মন্তব্য পড়ে মনে হল–কিছু বলা দরকার। স্যার, আমাকে ক্ষমা করবেন।
আমি ব্যস্ত সময় কাটাই রুটিরুজির ধান্ধায়। এর মধ্য থেকে অবসর বের করে লেখালেখি করতে হয়। সব সময় সব কিছু পড়া হয় না। সব মন্তব্যের উত্তর দেওয়া হয় না। আমার সব কিছুর উত্তর দিতে মনও সায় দেয় না। রুচি এসে বাঁধা দেয়।
ফরিদ আহমদ ও নৃপেন স্যার মন্তব্য করেছিলেন আমার লেখাতে। মনে হয়েছিল–পুনরুক্তি রোধে একজনের কাছেই উত্তরটা লিখি। আমার আশঙ্কা ছিল, ফরিদ আহমদের কাছেই সরাসরি উত্তরটা দিলাম না–এটা হয়তো ওঁর ইগোতে লাগতে পারে। ইগো আহত হলে দুর্দৈব ঘটতে পারে। আমরা ধারণা ছিল, মুক্তমনাতে যারা লেখেন তারা এই বালখিল্যপনা অতিক্রম করতে পেরেছেন। আমার আশঙ্কাই সত্যি প্রমাণিত হয়েছে। বোঝা গেল, আমাদের আরও সময় প্রয়োজন সভ্যতার পাঠ নিতে।
ফরিদ আহমদকে আমি চিনি না। এখন বুঝতে পারছি, তিনি ময়মনসিংহে ছিলেন। হয়ত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র/ শিক্ষক বা অন্য কেউ হবেন। মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত লেখা লিখছেন, এটা ভাল সংবাদ। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যতই লেখা হবে ততই মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কাছে কাছে থাকবে–তার অপার মহিমা নিয়ে জেগে উঠবে। চারিদিকে যখন মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের এত আস্ফলন–সে ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের জেগে ওঠার মত ভাল সংবাদ আর নেই। তিনি প্রশ্ন করেছেন, মুক্তিযুদ্ধের একটি বিখ্যাত প্রামাণিক আলোকচিত্রের পটভূমিকা নিয়ে কল্পগল্প লেখার অধিকার কুলদা রায়ের আছে কি না?
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
ভেবেছিলাম, নৃপেন স্যার এই প্রশ্নের উত্তরটি দেবেন।
১৯৯৩ সালে ১৫ ডিসেম্বর দৈনিক ভোরের কাগজে আনন্দ রোজারিও নামে নাইব চাচার একটি সাক্ষাৎকার লিখেছিলাম। দেখুন একজন ব্লগার আলী মহমেদ সেখান থেকে বলছেন–
এ ছাড়া এ সংক্রান্ত আরও কিছু লেখা নাইব চাচার জীবিতকালে প্রকাশিত হয়েছিল। আমার নেওয়া অই সাক্ষাৎকারে শাহীন নামেই ঘটনাটি বিবৃত করা হয়েছিল। চাচা কি তাহলে সে সময় মিথ্যে বলেছিলেন, জনাব ফরিদ আহমদ? প্রয়োজনে আরও লিংক দেওয়া যাবে।
আমি গতকাল মেরুনার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। মেরুনা কানাডায় থাকে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়ে উঠেছে। ও বলল, যারা জানেন তারা এ ঘটনার পাত্র পাত্রীর নাম কেউ বলবেন না। বাংলাদেশে এটা স্বাভাবিক। কে হায় হৃদয় খুড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!
বাগ-বিস্তার করে লাভ নেই। এখন অন্য কথা বলি। সত্যর কথা বলি।
সত্য অনেক রকম। শিল্পের সত্য আর ইতিহাসের সত্য কি এক রকম? দু রকম সত্য প্রকাশের কৌশল কি একই?
শাহীনর যে বয়স ছিল সে সময় তার কাশবন ভাল লাগার কথা। কত বয়স? সত্যজিতের দুর্গার বয়সী হবে। অপু দিদি দুর্গার সঙ্গে লুকিয়ে ট্রেন দেখতে গিয়েছিল তেপান্তরের মাঠে। আখক্ষেত কাশবন পেরিয়ে ট্রেনের দেখা মিলল।
[img]http://t0.gstatic.com/images?q=tbn:H0ZcAAdR4RKkBM:http://image.absoluteastronomy.com/images/encyclopediaimages/p/pa/patherpanchali_1.png%5B/img%5D
এই ট্রেন শহরের ছেলেমেয়েদের কাছে তেমন কিছুই না। কিন্তু নিশ্চিন্তপুরের অপু-দুর্গার কাছে স্বপ্নে মতন ঘটনা। আর কাশবন–তাদের সরল সৌন্দর্যের প্রতীক।
আমি কাশবনের সংলাপটি শাহীনের মুখে দিয়েছি–শাহীনের কিশোরী বয়সটাকে, তাঁর বয়সের মানসিক গড়নটাকে বর্ণনা করার জন্য। যে বয়সে যে মেয়েটির কাশবন দেখার জন্য মন কেমন করার কথা সে বয়সে মেয়েটিকে সভ্যতার নির্মম অভিজ্ঞতা নিয়ে হাসপাতালের বেডে পাগল হতে হয়েছে। এই কাশবনের মধ্য দিয়ে সত্য প্রকাশের শিল্পের সহজ কৌশলটি আমি ব্যবহার করেছি। আমি তো প্রবন্ধ লিখি নি। ইতিহাসও লিখি নি। আমি একটি ঘটনাকে বর্ণনা করেছি মাত্র। যারা এই শিল্প রচনার এই কৌশলটি ধরতে ব্যর্থ, কিন্তু কঠোর অনুশাসনে আবদ্ধ তারা কেউ কেউ বলতে পারেন কুলদা রায় কল্পগল্প বলেছেন।
আমি যদি কল্পগল্পই করে থাকি– ১৯৯৩ সালে নাইব চাচা কেন তা অনুমোদন করেছিলেন?
আপনাকে সালাম ফরিদ আহমদ।
@কুলদা রায় এবং ফরিদ ভাই,
বিতর্ক কি আরেকটু বন্ধু্সুলভ ভাবে করা যায়? ফরিদ ভাই এবং কুলদা রায় দুজনই খুব চমৎকার লেখেন, তাদের মন্তব্যও শক্তিশালী। কিন্তু সেটাকে ব্যক্তিগত হাউ কাউয়ে নিয়ে গিয়ে কি লাভ?
ফরিদ ভাই এর প্রশ্নে কিন্তু যৌক্তিকতা আছে। নাইব সাহেবের তোলা ছবিটির মূল প্রেক্ষাপট আসলে কি ছিল সেটা আমরা সবাই জানতে চাই। উনি নিজেও ছবিটি নিয়ে একটা অসামান্য লেখা লিখেছিলেন, সেটার রেফারেন্সও তিনি দিয়েছিলেন।
কুলদা রায়, আপনি বলেছেন আপনার নেওয়া সাক্ষাৎকারটিতে মেয়েটিকে শাহীন নামেই বিবৃত করা হয়েছিল। সেটা ঠিক। তারপরেও এটা আপনার নিজেরই নেয়া সাক্ষাৎকার। কারণ আনন্দ রোজারিও আপনার নিজেরই নাম। কোন তৃতীয় সোর্স কি দেয়া যায়, যা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, সেই মেয়েটি শাহীন এবং আপনার বর্ণিত প্রেক্ষাপটটিই সঠিক?
অনেক ধন্যবাদ আপনাদের দু জনকেই।
@ফরিদ ও কুলদা রায়,
তোমরা দুজনই লেখায় সিদ্ধহস্ত।
অভিজিতের মত আমিও দুজনকেই সংযমী হয়ে লিখতে অনুরোধ করছি।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আমার লেখায় অসংযমটা কোথায় হয়েছে সেটা একটু স্পেসিফিক বলে দিলে ভাল হতো নৃপেন্দ্র দা। সংশোধন করে নিতাম।
কুলদা রায় লিখেছেনঃ
এ বিষয়েও আপনার একটা বক্তব্য আশা করছি আমি।
@ফরিদ আহমেদ,
আমরা তিন জন একই জায়গার মানুষ। নাইব ভাই আমাদের তিন জনেরই অত্যন্ত প্রিয় মানুষ ছিলেন। এই বিষয়টি নিয়ে বাদানুবাদ করাটা আমাদের ঠিক নয়। নাইব ভাইয়ের বিদেহী আত্মা কষ্ট পাবে। তাঁর নিকট জনও কষ্ট পাবেন। টেলিফোনে কুলদাকে আমি সেই কথাটার উপরেই গুরুত্ব আরোপ করেছি।
টাইম লাইনটা এরকমঃ
১) কুলদা আমাকে গতকাল দুপুর বেলা ফোন করে।
২) তোমার মন্তব্যটি দেখেছি আজ সকালে।
৩) তার ঘন্টা তিন পরে (মিনিট পনের আগে) কুলদারটি দেখি যেটি তুমি রেফার করেছ।
৪) তার পর অভিজিতের মন্তব্য দেখে দুজনকেই সংযত হতে অনুরোধ করি।
আমি একটা নাজুক পরিস্থিতিতে পরে গেছি। ফরিদ, যা হয়েছে, হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে অসহিষ্ণুতার দিকে না যায় সেটাই আমি চেয়েছি, এবং চাই।
আমি আবার দুজনের প্রতি একই দাবী রাখছি।
@অভিজিৎ, দেওয়া যাবে।
@নৃপেন স্যার, নিপুনের কাছে জানতে চান–এই ছবির বিষয়টি সম্পর্কে। ও বলুক। ওর নিজেরও সে সময় একটি ঘটনা ছিল। পরে সেটা পোস্ট দেব।
@ফরিদ আহমেদ, আপনাকে যে প্রশ্নগুলো করেছি–তার জবাব দিলে খুশী হব।
আমি কিন্তু একটি ঘটনা বলছি। ঘটনাটাকে ইতিহাসের অংশ করতে হলে তা সরেজমিন অনুসন্ধান প্রয়োজন। আমি শুধু ঘটনার সূত্রটাকে বলে দিয়েছি। ছবিটার পেছনের গল্পটি মিথ্যে হয় কি করে? আমি তো ফরিদ আহমদের বিব্রত করা ঘটনাটিকে চ্যালেঞ্জ করি নি। বলেছি এইভাবে অনেকের কাছ থেকে একই ধরনের ঘটনা প্রকাশিত হলে সত্য অনুসন্ধানের উৎস সম্পর্কে জোর পাওয়া যায়।
@কুলদা রায়,
…………………………………………………………………………
মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে আব্বার এই ছবিটি প্রায় প্রতি ২৬ মার্চ এবং ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ কৃিষ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং আলোক িচত্র শিণ্পি সংসদ-ময়মনসিংহ সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শিত হয়েছে। একই সাথে িবভিন্ন জাতীয় পত্র পত্রিকায় এই ছবি সহ আরো অনেক ছবি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে ছাপা হয়েছে। যতবার প্রদর্শণী হয়েছে ততবারই আব্বা এই ছবি সম্পর্কে উপরে বণির্ত তথ্যই দিয়েছেন।
আব্বা এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে যাবার িকছুদিন আগে ৭-১৩ নভেম্বর ২০০৯ জাতীয় যাদুঘরে ৭ দিন ব্যাপী আব্বার তোলা বিভিন্ন ছবি নিয়ে আমার বাংলা নামে আলোকচিত্র প্রদর্শণীর উদ্বোধন করেন বর্তমান সরকারের মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলম নাহিদ। উদ্বোধনী দিনেো আব্বা মন্ত্রীর এক প্রশ্নের জবাবে এই ছবির প্রেক্ষাপট হিসেবে উপরোক্ত ঘটনাটিই বিবৃত করেন। সেদিন ো তিনি মেয়েটির নাম উেল্লখ করেননি। আমাদের পারিবারিক অনেক আলপচারিতার সময়ো আব্বা মেয়েটির বর্ণণা এভাবেই দিয়েছেন, কিন্তু মেয়েটির সামাজিক মর্যাদা রক্ষার জন্যে তার নাম প্রকাশ করেননি।
আশা করি এর পর এই ছবিটি সম্পর্কিত বিতর্কের অবসান ঘটবে।
Nowsher Ahmed (Nipun)
নাইব উদ্দিন আহমেদের মেঝ ছেলে
@নৃপেন্দ্র সরকার,
ক্ষমা করবেন, আমি একটু কনফিউশনে আছি। এই একটি ছবি কি সেই মেয়েটির যে সত্যিকারে লাঞ্ছিতা হয়েছিলেন, নাকি লাঞ্ছিতা মা-বোনদের সম্মিলিত ছবি হিসাবে ছবিটি এক ধরনের রুপক অথবা সিম্বল হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
@ব্রাইট স্মাইল্,
দ্বিতীয় অংশ আপনার সঠিক উত্তর।
Amiekhane niomito likhte chi
@mahmuda nasrin kajol,
অনেক ধন্যবাদ ও স্বাগতম। :rose2:
মুক্ত-মনায় লেখতে হলে বাংলা হরফে লেখতে হবে। চেষ্টা করেন ঠিক হয়ে যাবে। নীতিমালা দেখুন।
অভ্র বাংলা কিবোর্ড টুল ডাউনলোড করুন এখান থেকে।
আর কোনো সাহায্য লাগলে নিঃসঙ্কোচে বলবেন।
@সৈকত চৌধুরী,
Apnader uddyog vison valo legese, ami regular nukto-Mona te likhte chi, kintu bangla font e jete parsi na. onek try korlum avra kyeboard download korar. keno jani holona. ami detail bujhte chi.
@mahmuda nasrin kajol,
কাজল, স্বাগতম। প্লিজ নাইব ভাইকে নিয়ে লিখ। সৈকত চৌধুরী যেমনটা বলেছেন – অভ্র ডাউনলোড করে নাও। দেখবে কী সহজ বাংলা লেখা।
আমার মনে হয় তুমি এর মধ্যে করেছ।
১। একটা নতুন word ফাইল ওপেন কর।
২। F12 বাটনটিএ চাপ দাও – এবারে বাংলা লেখা হবে
৩। দরকার মনে করলে F12 বাটনটি তে চাপ দিলে ইংরেজী লেখা হবে
:rose2: স্বাগতম,কাজল।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
Dear Uncle,
Thanks for reply. apnee amak kajol bolte paren. etato sneher besoy. apner poramorsho moto Avro download koresi. kintu Mukto mona te banglay comments dite parsina. ekhane word file kivabe open korbo? F12 button-e press kore-o kono kaj holona to. Ei website-e ami regular hote chi, likhte chi. pls. help me.
kajol . :rose2:
@mahmuda nasrin kajol,
আপনি মুক্তমনা পেইজ ওপেন করলে একেবারে সর্বোচ্চ উপরে “নীড়পাতা, মুক্তমনা কি , ই-বুক,ই-বার্তার পরে শেষ শব্দটি হলো সাহায্য , এই সাহায্য শব্দটিতে কিল্ক করলে আপনি বাংলায় মুক্তমনায় লেখার সব নিয়ম-কানুন জানতে পারবেন। আশা করি সফল হবেন। মুক্তমনায় স্বাগতম। :rose2:
@mahmuda nasrin kajol,
অথবা এখানে সাহায্য শব্দটিতে ক্লিক করুন।
@mahmuda nasrin kajol,
মারাত্মক ভুল করেছি। যেখানে যেখানে ‘কাজল’ লিখেছি ‘মাহমুদা’ অথবা ‘নাসরিণ’ পড়ে নাও প্লিজ।
কেমন করে এই ভুলটা করলাম! :-X :-Y
নৃপেন আঙ্কেল।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আরে, ‘কাজল’ লিখা তো ঠিকই ছিল!
ভুলের পরে ভুল, তার পরে ভুল। :-Y :-Y :-X :-Y :-Y
নাইব ভাইয়ের ছেলে নিপুণের কাছ থেকে ই-মেইলে নাইব ভাইয়ের ছবি ও তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবন-বৃত্তান্ত পেলাম কিছুক্ষণ আগে। এ দুটো জিনিষ জুড়ে দিলাম। এই তথ্যদুটো দরকার ছিল এই নিবন্ধে।
নিপুণের কাছে একটি বিশেষ ছবি চেয়েছি। পেলে জুড়ে দেব।
@আফরোজা আলম,
ধন্যবাদ।
নৃপেন্দ্র দা,
কাশবনের কাব্যকথা আর কু-উ-উ ঝিকঝিক এর ঝকমারি কল্পনাবিলাসের কায়াহীনতা থেকে কর্কশ সত্যটাকে সমুদ্র মন্থন করে সেঁচে বের করে আনার জন্য আপনার প্রতি সবিশেষ কৃতজ্ঞতা।
এই জীবনে এটুকু বুঝেছি যে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি শুধু এর বিরোধিতাকারীরাই করে না, একাত্তরের পক্ষের স্বঘোষিত কিছু মানুষেরাও মাঝে মাঝেই মহান কোন মন্ত্র জপে মনের মাধুরী মিশিয়ে মায়াবী মায়াজালের মনোমুগ্ধকর মোহনীয় মোহাচ্ছন্নতা তৈরি করেন। এর আড়ালে আষাঢ়ে গল্পের আজগুবি গরুর গোটা পালকেই গাবগাছে তুলিয়ে ছাড়েন তাঁরা।
@ফরিদ আহমেদ, আপনি কেন এ রকম বলছেন?
আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি আপনার মুখব্যাদান দেখে। দেখুন আমি কি বলেছি–
আমি কি কোন অন্যায় করেছি শাহীনকে নিয়ে লেখাটি লিখে? দেখুন নৃপেন স্যার কী বলেছেন-
ফরিদ আহমেদ, বলুন–কেন আপনি এ ধরনের মুখব্যাদান করলেন?
@কুলদা রায়,
ফরিদ ভাইয়ের কথা বাদ দেন, তাঁর মারফতি কথা-বার্তা প্রায়ই আমি নিজেও বুঝি না।
এ কথাগুলোকে একটু ব্যাখ্যা করেন –
ফটোসপ দিয়ে কি হবে? তিনি তো ফটোগ্রাফার ছিলেন, তাই না? বাস্তব ফটোর জন্য ফটোসপের প্রয়োজন কি? আর “ছবি নিয়ে কী অসাধারণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা” মানে কি?
এই প্যারাটা একটু ভেঙ্গে বলেন –
@সৈকত চৌধুরী,
আমার ধারণা ছিল বেশ সহজ সরল বোধগম্য বাংলাতেই আমি লিখি। এখন দেখছি তা ঠিক না, মারফতি কথা-বার্তা লিখি ফলে প্রায়ই আপনি আমার কথা বোঝেন না। আমার মারফতি কথা-বার্তার মাত্র একটা উদাহরণ দেখালেই খুশি হবো যেটা আপনি বোঝেন নি।
এই থ্রেডে করা মন্তব্যটার মূল অর্থকে আরো সহজ এবং সরল করে দিচ্ছি। বুঝতে না পারলে জানাবেন প্লিজ।
মুক্তিযুদ্ধের একটি বিখ্যাত প্রামাণিক আলোকচিত্রের পটভূমিকা নিয়ে কল্পগল্প লেখার অধিকার কুলদা রায়ের আছে কি না?
@ফরিদ আহমেদ,
শুধু মজা করার জন্য বলা এ কথাটিকে এমন সিরিয়াসলি নিবেন ভাবি নি। :-Y
@সৈকত চৌধুরী,
গোলমেলে ব্যাপার তো। হাজারটা ছবির প্রত্যেকটাই গুরুত্ত্বপূর্ন, কোনটাকেই রাখা বা বাদ দেবার প্রশ্নই বা আসছে কেন ? সবগুলো লাঞ্ছনা এক ছবিতে উজ্জীবিত করা——-ফটো সপ———-মেধাপ্রসুত সৃষ্টি———————
আমিও সৈ্কত ভাইয়ের সাথে লেখকের কাছে পুরো ব্যাপারটা ভেঙ্গে বলার জন্য অনুরোধ করছি।
@আতিক রাঢ়ী,
ঠিক বলেছেন। কোনটাই বাদ দেওয়ার নয়। বাদ কথাটা লেখার সময় একটা প্রেক্ষিত আমার মাথায় ছিল। সেটা হল লাইব্রেরী ভবনের নীচ তলায় উনার প্রদর্শনী। সেখানে তো জায়গার সীমাবাদ্ধতা আছে।
আশা করি বুঝাতে পেরেছি।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
ধন্যবাদ, এখন বুঝতে পেরেছি।
@সৈকত চৌধুরী,
এই প্রশ্নটা হতই না যদি আমি ছবিটা দেখাতে পারতাম। লক্ষ্য করুণ, Parentheses এর ভিতরে আমি নিপুণের কাছে ছবিটা চেয়ে রেখেছি।
@কুলদা রায়,
সামান্য একটু মুখব্যাদান দেখেই অবাক হয়ে যাচ্ছেন? আরেকটু ভাল করে দেখলে শুধু মুখব্যাদানই নয়, মুখচ্ছবিতে মুখচাপা হাসিটুকুও দেখতে পাবেন।
আমি ইচ্ছে করলেই জিজ্ঞেস করতে পারতাম যে, নৃপেন্দ্র দাকে করা আমার এই মন্তব্যে হঠাৎ করে আপনার এত গভীর গাত্রদাহ হলো কেন? এই মন্তব্যতো আপনার নামে করা হয় নি। নিজের গায়ে টেনে নিলেন কেন? কিন্তু সেটা আমি করবো না। আপনাকে যে শেষ পর্যন্ত পেয়েছি এটাই আমার বিরাট পাওনা। আপনার লেখায় বিরাট বিরাট মন্তব্যের প্লাকার্ড ঝুলিয়েও আপনাকে আমার দিকে নজর ফেরাতে পারি নি আমি। এখন যেহেতু সেই সুযোগটা পেয়েছি, হেলায় আর হারাতে রাজি নই কিছুতেই।
আপনি এই লেখায় মন্তব্যের ঘরে কী লিখেছেন সেটা আমি দেখেছি। এই বিষয়টাই যদি একটু কষ্ট করে আপনার লেখাতেই দিতেন তাহলে আর নৃপেন্দ্র দাকে এত খাটাখাটুনি করে এই প্রবন্ধটা লিখতে হতো না। কাশবনে উড়ানো আপনার আজগুবি গল্পের বেলুনটাকে যখন নৃপেন্দ্র দা সুঁই দিয়ে খুঁচিয়ে সাতটা টুকরো করে দিয়েছেন, তখনই আপনি এখানে এসে এই কথাগুলো বলেছেন। এর আগে আমি এবং নৃপেন্দ্র দা শত চেষ্টা করেও এই বিষয়ে আপনার মুখ খোলাতে পারি নি। আমাকেতো তখন না দেখার মত করে উপেক্ষা করে গিয়েছেন আপনি।
আসুন দেখা যাক শুরু থেকে কী কী হয়েছিল।
আপনি যখন আপনার লেখাটা পোস্ট করেন তখন বিশালাকৃতির একটা মন্তব্য করেছিলাম আমি। শুধু ওই একটাই নয়, এর সাথে সম্পূরক হিসেবে আরো তিনটি মন্তব্য ছিল আমার। আপনি মাত্র একটা মন্তব্যে উত্তর দিয়েছিলেন। তাও সেটা আমার করা কোন প্রশ্নের উত্তর হিসেবে নয়। সাজ্জাদ শরীফ নাইব সাহেবের ছবি সাজানো বলেছিল বলে তাকে আপনি মৌলবাদী মনে করেন এই ধরনের একটা কঠিন মন্তব্য। এটা আমার কথার উত্তরে কেন এলো সেটা বুঝতে অবশ্য ব্যর্থ হয়েছি আমি। আমার মন্তব্যে আমি ছবিটাকে সাজানো বলি নি, শুধু বলেছি যে এটা নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। আমাকে উত্তর দেবার মাধ্যমে সাজ্জাদ শরীফকে মৌলবাদী গালি দেওয়াতে তাই এর কিছুটা ঝাঁজ আমার গায়েও এসে লেগেছিল। মনে হয়েছে যেন ঝিকে মেরে বউকে শেখাচ্ছেন আপনি।
আপনার লেখায় যে সমস্ত মন্তব্য ছিল তার মধ্যে আমার প্রথম দুটি মন্তব্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলেই আমি মনে করি। আপনার কাছ থেকে পালটা উত্তর এলে আপনার লেখাটাই সমৃদ্ধশালী হতো বলেই আমার বিশ্বাস। আপনি উত্তর দেবেন বলে আমি আশাতে বুকও বেঁধে বসে ছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে যে, আপনি এসে অনেকেরই অনেক মন্তব্যের উত্তর দিলেও আমার করা সবচেয়ে বড় দুটো মন্তব্য কেন যেন আপনার চোখ এড়িয়ে যায়।
ওই মন্তব্যগুলোতে বীরাঙ্গনা ওই মহিলার ছবির বিষয়ে আপনার বর্ণনাকৃত কাহিনির সাথে আমার জানা ঘটনার অমিলের বিষয়টাতে বিনীতভাবে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছিলাম আমি। এই প্রসঙ্গে আমি নৃপেন্দ্র দার বর্ণিত কাহিনিরও রেফারেন্স দিয়েছিলাম। নৃপেন্দ্র দা সেটা দেখেই তড়িৎগতিতে জানিয়ে দেন যে, তার বর্ণনা ভুলও হতে পারে। অথচ আপনি একবারও বললেন না যে, আপনার কাহিনিটা জনশ্রুত, তা অন্যদের শোনা বা জানা কাহিনির চেয়ে ভিন্নতর হতেই পারে। এটুকুই বললেই কিন্তু ল্যাঠা চুকে যেত তখন। এমনকি নৃপেন্দ্র দা ঘটনাটা আসলে কী সেটা জানার জন্যে রাতে কুদ্দুস স্যারকে জিজ্ঞেস করবেন বলে যখন জানালেন, তখনও আপনি আপনার মুখ বন্ধ করেই রেখেছেন। একটু খানি মুখব্যাদান করলেই সমস্যার সমাধান হয় যেখানে, সেখানে মুখচোরা আপনি আপনার মুখচন্দ্রিকাকে লুকিয়েই রাখলেন। ফলে সমস্যা সমাধানের সব প্রচেষ্টাই মূলত মুখ থুবড়ে পড়লো তখনই।
আমি যখন আপনাকে জানালাম যে আপনার কাহিনির সাথে আমার জানা কাহিনির মিলছে না, সুস্পষ্ট চারটা খটকার কথা জানালাম আমি, কেন উত্তর দেন নি তখন আপনি? উত্তর দেবার মত যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মানুষ আমাকে ভাবেন নি বোধহয়, তাই না? নাকি কোন উত্তরই ছিল না আপনার কাছে? কিংবা ভয় পেয়েছিলেন? সত্য প্রকাশ হয়ে যাবার ভয়ংকর কোন ভয়?
আপনি হয়তো দুঃস্বপ্নেও ভাবেন নি যে, ব্রক্ষ্মপুত্রের পাড় ঘেষে বেড়ে উঠা সাদা সাদা কাশফুলের সুবাস গায়ে মাখা একজন ফরিদ আহমেদ মুক্তমনায় থাকতে পারে। সত্যানুসন্ধানী একজন নৃপেন্দ্র সরকারের অস্তিত্বও হয়তো আপনি কল্পনাও করেন নি এখানে, যার সাথে যোগাযোগ রয়েছে কুদ্দুস স্যারের। ভেবেছিলেন যে, যা খুশি একটা করুণ কাব্যগাথা লিখে দিলেই খোঁজখবর না রাখা মানুষের বেশ বাহবা কুড়ানো যাবে। সেই আশা আপনার পুরণ হলো না এই যা আফসোস।
আমার সুস্পষ্ট জিজ্ঞাসার বিপরীতে আপনি যেটা করেছেন সেটা হচ্ছে নাইব সাহেবের পরিবারে আপনি সদস্য হিসেবে থাকতেন, নাইব সাহেবের সাথে আপনি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতেন, নাইব সাহেব আপনাকে রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় গায়ে চাদর জড়িয়ে দিয়ে যেতো ইত্যাকার কথা বলেছেন। নাইব সাহেবের পারিবারিক ছবি পোস্ট করে সেটাকে পাকাপোক্তও করতে চেয়েছেন আপনি। এগুলোর মূল উদ্দেশ্য ছিল আপনার কাহিনি কতখানি বিশ্বাসযোগ্য সেটা প্রমাণ করা। এমনকি আপনার জীবনের করুণ আখ্যানকাহিনিও আপনি অপ্রয়োজনীয়ভাবে বর্ণনা করেছেন পাঠকের সহানুভূতি আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে। জানি না এই ধরনের কাজ আপনি আপনার অন্য লেখাতেও করেন কি না। সে উদ্দেশ্য হয়তো আপনার সফলও হয়েছে। আহা, উঁহুঁ হয়তো কুড়িয়েছেনও কারো কারো। তবে, আমার কাছে মুক্তিযুদ্ধের কোন ঘটনা বর্ণনাকারীর নিজের জীবনের করুণ কাহিনির কোন মূল্যই নেই। মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাটাই হচ্ছে সবচেয়ে মূল্যবান, আর সব কিছুই গৌণ এখানে। তাই, আশেপাশের সব পাথর সরিয়ে কষ্টিপাথরে যাচাই করেই আমি গ্রহণ করতে চেয়েছি আপনার বর্ণিত কল্পকাহিনিকে।
নৃপেন্দ্র দার লেখায় আপনি লিখেছেনঃ
‘যা সত্য তাই হলো ঘটনা’ – এটাই যদি আপনি বিশ্বাস করেন তাহলে বলতে হবে যে, আপনার এই ঘটনাটাও সত্য, তাই না? নৃপেন্দ্র দা কুদ্দুস স্যারের কাছ থেকে যে ঘটনা শুনেছেন এই ছবিটা সম্পর্কে সেটাও কি তব্যে সত্যি? দুটো ভিন্নধর্মী ঘটনা নিশ্চয়ই একসাথে সত্যি হতে পারে না। নৃপেন্দ্র দার লেখায় যেহেতু কোন প্রতিবাদ করেন নি তাহলে ধরেই নিচ্ছি যে, কুদ্দুস স্যারের বরাতে করা নৃপেন্দ্র দার বর্ণনা করা ঘটনাটাই সত্যি। নাকি?
এই ছবিটা তুলেছেন নাইব সাহেব। তাঁর সাথে দীর্ঘদিন ছিলেন আপনি। বলুনতো, এই শাহীনের ঘটনাটা কি তাঁর মুখ থেকেই শুনেছেন আপনি? এরকম আজগুবি গল্প নিশ্চয়ই নাইব সাহেব আপনাকে বলেন নি? অন্য কারো কাছ থেকে হয়তো শুনে থাকবেন।। তাহলেও প্রশ্ন এসে যাচ্ছে, নাইব সাহেবের এত কাছাকাছি থাকার পরেও আপনি কেন তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন নি। তাঁকে জড়িয়ে যে এরকম কাশফুল দেখাদেখি, ট্রেনের কু-উ-উ ডাক ছেড়ে ছুটে আসা দুর্গা-অপু ধরনের পথের পাঁচালি লোকমুখে ছড়িয়ে পড়েছে সেটা কি আপনি তাঁকে জানাতে পারতেন না? নাকি এরকম একটা করুণসুরের লেখা লিখলে বেশ বাহবা পাবেন সেজন্যে জমা করে রেখেছিলেন এটি?
আপনি বারবার বলছেন যে আপনি শুধু ঘটনা বর্ণনা করে যাচ্ছেন, ইতিহাস রচনা করছেন না। এই ঘটনা থেকেই ঐতিহাসিকেরা ছেঁকে ছেঁকে তুলে নেবে ইতিহাস। আসুন আমরা একটু কষ্টকল্পনা করি। ধরুন, আপনার এই অসাধারণ লেখাটি ছাপা হয়েছে মুক্তমনার বদলে বাংলাদেশের জাতীয় কোন দৈনিকে কিংবা প্রকাশিত হয়েছে কোন বইয়ের অংশ হিসেবে। মুক্তমনার সদস্য তানভী এর ভিত্তিতে উইকিতে একটা ভুক্তি লিখে ফেললেন এই ছবিটার প্রেক্ষাপট নিয়ে। উইকির প্রশাসক রাগীবও তথ্যের যাচাই বাছাই করে প্রকাশের অনুমোদন দিয়ে দিলেন সেটাকে। এখন ধরুন, অনাগত দিনের কোন একজন ইতিহাসবিদ এই ছবিটার ইতিহাস লিখতে চাইলেন। তিনি অনুসন্ধান করে পেলেন উইকির এই ভুক্তিটা। ভুক্তিটা নেড়েচেড়ে এর গভীরে গিয়ে তিনি দেখলেন যে এই ভুক্তিটা মূলত গড়ে উঠেছে একজন সুবিখ্যাত লেখক কুলদা রায়ের একটি অনন্যসাধারণ লেখার উপর ভিত্তি করে। তিনি আরেকটু অগ্রসর হয়ে দেখতে পেলেন যে এই ছবির স্রষ্টার বাসাতেই একসময় থাকতেন কুলদা রায়। এখন ওই ঐতিহাসিকের কী দশা হবে? তিনিতো চোখ বন্ধ করে ইতিহাস লিখে ফেলবেন যে এই ছবির মেয়েটার নাম শাহীন অথবা শাহানা, বাকৃবি-র এক কর্মচারীর মেয়ে। কাশফুল দেখার জন্য যে বায়না করতো নাইব সাহেবের কাছে। এই মিথ্যা ইতিহাসের দায় কি একজন কুলদা রায়ের ঘাড়ে চাপে না তখন? তিনি কি এই দায়বদ্ধতাকে এড়াতে পারেন কোনভাবেই?
শাহীনকে ওই ছবির মূল চরিত্র বানিয়ে লেখাটা লিখে আপনি কোন অন্যায় করেছেন কি না সেটা নিজেকেই জিজ্ঞেস করে দেখুন না? নিজেকেই প্রশ্ন করে দেখুন না শাহীন নামে আদৌ কেউ এই ছবির সাথে যুক্ত ছিল কি না? বীরাঙ্গনা নারীদের উপর অত্যাচারের উপর যে দুই একটা অসামান্য ছবি আছে এটা তার মধ্যে অন্যতম। সেটার গায়েই যদি অসত্যের বসন পরিয়ে দেই আমরা, সেটা কি আপনার কাছে অন্যায় বলে মনে হয় না? নাইব সাহেব বেঁচে থাকলে তার তোলা ছবির এরকম বিকৃত ইতিহাস রচনার এত বড় অন্যায় কি হতে দিতেন? আপনার কি মনে হয়?
নৃপেন্দ্র দা অত্যন্ত ভদ্র এবং দয়ালু একজন মানুষ। এই ছবির পটভূমিকা নিয়ে আপনি যে আষাঢ়ের গল্প লিখেছেন তা ফাঁস হয়ে যাওয়াতে আপনি যে লজ্জায় সাগরে ডুবে যাবেন সেটা থেকে পরিত্রাণের উদ্দেশ্যে কিছু খড়কুটো ছুড়ে দিয়েছেন তিনি আপনার সামনে। আর সেটাকেই এখন শক্ত হাতে ধরে আপনি বাঁচার ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এই ব্যাখ্যা কি একবারও আপনি দিয়েছেন। এখন নৃপেন্দ্র দা দিয়েছেন আর ওমনি সেটাকে আকঁড়ে ধরেছেন আপনি। এর আগে মৃত একজন মানুষের আড়ালে লুকোতে চেয়েছিলেন, এবার চেষ্টা চালাচ্ছেন নৃপেন্দ্র দার আড়ালে লুকোতে। নৃপেন্দ্র দার মত অত দয়ালু আমি নই, অত ভদ্র মানুষও আমি নই । মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোন ধানাইপানাই এর কোন ছাড় কাউকে দিতে রাজি নই আমি। আপনিই শাহীন বা শাহানার কাল্পনিক কাব্যকথা লিখেছেন, সুতরাং আপনাকেই এর মুখোমুখি হতে হবে। অন্য কারো দোহাই দিয়ে সেটা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না কিছুতেই।
মুক্তিযুদ্ধের কোন গুরুত্বপূর্ণ ছবি নিয়ে গুলতানি ধরনের কোন লেখা লিখে ধরা খেলে আমিতো লজ্জায় মুখই তুলতাম না। মুখব্যাদানতো দূরের কথা মুখ চুন করে মুখ বন্ধ রেখে মুখ লুকিয়ে রাখতাম মুখোশের আড়ালে।
কুলদা রায়, বলুন-কেন আপনি কল্পনাবিলাস করলেন ছবিটাকে কেন্দ্র করে?
@ফরিদ আহমেদ,
আপনার এই কথাগুলি খুবই ভালো লাগলো। আর এই মুহূর্তে মনে পড়ছে একটি কথা- “একবার রাজাকার মানে চিরকালের জন্য রাজাকার, কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা মানে চিরকালের মুক্তিযোদ্ধা নয়।”
আপনি এত সুন্দর করে লিখেন, কথাও কি এত সুন্দরভাবে বলেন, খুব জানতে ইচ্ছে করে। আপনার উদ্ধৃতির অংশটুকুর মধ্যে আমি একটি বাক্য বোল্ড করেছি। বাক্যটার মধ্যে ‘ম’ বর্ণের শব্দসহযোগে তৈরি বাক্য। কী মধুরই না লাগছে বাক্যটি। আমার যদি ভালো লাগে, সেই ভালো লাগাটা, বলা কি অন্যায়?
@মাহফুজ,
আরে মিয়া, আমার আগেই তুমি ক্রেডিট টা নিয়া নিলা?
আমি অনেক আগেই ‘ম’ গুলো গুনে রেখেছি।
মাহফুজ, তারই উপরের প্যারায় কতগুলো ‘ক’ এর সমষ্টি।
সেটা কি দেখেছ? দেখোনি।
এটার ক্রেডিট পুরোটাই আমার। :rotfl:
@নৃপেন্দ্র সরকার,
‘ম’ এর প্রতি আমার একটু বেশি টান আছে। কারণ আমার নাম ম দিয়ে, বসে থাকি মুক্তমনায়, যার লেখা নিয়ে কাজ করি, তার নাম মোকছেদ, যে জায়গায় থাকি সেই জায়গার নামও ম দিয়ে। যে বসের আন্ডারে কাজ করি তার নামও ম দিয়ে। যে জিনিসের কাববার করি সেই জিনিসও ম দিয়ে মানে মাছ। তাই ম-এর প্রতি মনোনিবেশ। ম নিয়ে বেশি চিন্তা করি।
ক নিয়ে অন্য কেউ ভাবুক। ছোট বেলায় শিখেছিলাম এর কারবার। যেমন- কলিকাতার কানাই কর্মকারের কনিষ্ঠ কন্যা কল্যানী কাকাকে কহিল, কাকা, কাকেরা কা কা করে কেন? কাকা কহিল, কা কা করাই কাকের কর্ম।
@মাহফুজ,
তুমিও দেখছি, ফরিদের চেয়ে মোটেই কম নও। :rose2:
শেষ পর্যন্ত আমাকে কাকের হাতে ছেড়ে দিলে? :guli:
আলোকচিত্র শিল্পী নাইব উদ্দিন আহমেকে বিনম্র শ্রদ্ধা। :rose:
তার সর্ম্পকে জানানোর জন্য একই সঙ্গে নৃপেন সরকার ও কুলদা রায়ের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। অনেক ধন্যবাদ।
*সংশোধনী: নৃপেন্দ্র সরকার।
নামটি লিখতে ভুল হওয়ায় আন্তরিকভাবে লজ্জিত।
@বিপ্লব রহমান,
নাম ভুল হয়নি তো। বরং আপনি ঠিকটি করে ফেলেছেন। :yes:
আমি পুরো নাম লিখি এভাবে – নৃপেন্দ্র নাথ সরকার
সংক্ষেপে লিখি এভাবে – নৃপেন সরকার (যেটা আপনি লিখেছেন)
@নৃপেন্দ্র সরকার, 🙂
@ নৃপেন্দ্র দাদা,
গতরাতে বন্ধুরা জোর করে আমাকে খেলা দেখাতে নিয়ে গিয়েছিল।
এমন ব্যক্তিত্বকে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আর তার শিল্পকর্মের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।
সত্যি বলতে কি আমি ছবির ভাষা বুঝি না তেমন। বেশ কয়েকবার ছবির প্রদর্শনীতে গেছি। কত ধরনের চিত্রকলা যে থাকে, কী যে আঁকা হয় তা বুঝতে কষ্ট লাগে। কিন্তু সেসবের মধ্যে নাকি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাসেজ থাকে।
এই বুঝতে না পারাটা আমার ব্যর্থতা। ভীষণ লজ্জা।
@মাহফুজ,
মনে হয় একটু ভুল হচ্ছে।
নাইব ভাই ছবি আঁকতেন এটা শুনিনি। উনি ছবি তুলতেন। ছবি দিয়ে ছবি সৃষ্টি করতেন।
@নৃপেন্দ দাদা,
না, আমার বুঝতে কোন ভুল হয়নি। আমি জানি যে, নাইব ভাই একজন ফটোগ্রাফার ছিলেন।
আমি বলতে চেয়েছি চিত্রকলার বিষয় নিয়ে। আঁকানো ছবির বিষয়ে। যেমন জয়নুল আবেদীন, হাসেম খান। এদের নিয়ে। জল রঙ, তৈল রঙ নিয়ে যে সব কাজ কারবার হয়।
@নৃপেন্দ দাদা,
যখনই আমি মন্তব্য করলাম- না, আমার বুঝতে কোন ভুল হয়নি। আমি জানি যে, নাইব ভাই একজন ফটোগ্রাফার ছিলেন। তখনই কুলদা রায় মন্তব্য করলেন (নিচে দেখুন)।
আসলে আমি জানি বলতে আপনার লেখা থেকে বুঝতে পেরেছি যে তিনি শুধু ছবি তুলতেন। কিন্তু এখন তো আমার সেই ভাবনাটাও ভুল হয়ে গেল। কী মুশকিল বলুন তো?
আপনি বলছেন- নাইব ভাই ছবি আঁকতেন এটা শুনিনি। আর কুলদা রায় বলছেন- নাইব চাচা কোলকাতার আর্ট স্কুলে পড়তেন। সেখানেই শিল্পাচার্য কামরুল হাসানের সঙ্গে বন্ধুত্ব। নাইব চাচার একটা স্কেচ হামরুল হাসান করেছিলেন। চাচা ভাল ছবি আঁকতেন।
থাক, আপনারা দুজন আলাপ করেন। আমি চুপ চাপ দেখে যাই। সেটাই হবে আমার জন্য মঙ্গল। তা নাহলে তথ্য বিভ্রাটের মধ্যে জড়িয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলবো। অবশ্য আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে একজন ব্যক্তির অজানা নানা বিষয় বেরিয়ে আসে। যেগুলো আমাদেরকে উৎসাহী করে তোলে।
@মাহফুজ,
কলকাতাতে উনার পড়াশুনার ব্যাপারটি যোগ করি মূল নিবন্ধে। এই মাত্র নিপুনের কাছ থেকে একটি ইমেইল পেলাম।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
গুস্তাখি মাফ। :guli:
“যোগ করি” হবেনা। হবে – “যোগ করব”
@মাহফুজ, নাইব চাচা কোলকাতার আর্ট স্কুলে পড়তেন। সেখানেই শিল্পাচার্য কামরুল হাসানের সঙ্গে বন্ধুত্ব। নাইব চাচার একটা স্কেচ হামরুল হাসান করেছিলেন। চাচা ভাল ছবি আঁকতেন।
মুক্তিযুদ্ধের নামে কত অখ্যাত-কুখ্যাত স্বাধীনতাবিরোধীরা বিগত চল্লিশ বছর ধনে-জনে,জোলুসে,প্রতাপে-প্রতিপত্তিতে, পদে-পদকে,ক্ষমতা-দাপটে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে গোটা দেশ | কিন্ত নাইব উদ্দিন আহমদের মত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্য সম্মানটুকু ও কী আমরা দিতে পেরেছি ? সেই পুঞ্জিভূত গ্লানি-লজ্জা আমাদের সবার ! কূলদা রায়,নৃপেন্দ্র সরকার,ফরিদ আহমদ একটু হলে ও সে দায় মোচন করেছেন |
@ভজন সরকার, :yes:
দাদা, আপনার লেখাটি অসাধারণ। আমার কাজ ছিল নাইব চাচার সঙ্গে সারাক্ষণ থাকা। ক্লাশের পরে আমি তার সঙ্গে সঙ্গে থাকতাম। দুজনে মিলে বই পড়তাম, গান শুনতাম, ছবি দেখতাম। উনি জানতেন আমার টাকা পয়সার টানাটানি ছিল। জামা কাপড়ও কিনে দিতেন। উনি ছবি আঁকতেন আর আমি তুলি দিয়ে ছবির জন্য ক্যাপশন লিখতাম। আর ওনার স্মৃতিগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিজ্ঞেস করতাম। রাতে মাঝে মাঝে টের পেতাম, আমার গায়ে হালকা চাদর বিছিয়ে দিচ্ছেন। তিনি ছিলেন একজন শর্তহীন মানুষ। নিষ্কাম কর্ম তার কাছ থেকে শিখেছি। আমার যা কিছু ভাল তাঁর কাছ থেকে পাওয়া। এখনো আমি আমার প্রতিদিনটি শুরু করি নাইব চাচার নাম নিয়ে।
ডালাসের এম এম আর জালাল ভাইয়ের সঙ্গে মাঝে মাঝে কথা বলি। ওনার সঙ্গে একটি বিষয়ে আমার সহমত। সেটা হল, আমরা একাত্তরের মানুষ। এই একাত্তর বিষয়ে কারো প্রতি কোন ছাড় নেই। সে জন্য যেখানে যা পাই তাই তুলে ধরি। আমি একটি বই লিখেছি। তার ৯০% একাত্তরকে নিয়ে। বইটির নাম– কাকমানুষের চকখড়ি।
এই লেখাগুলো আসলে মৌখিক ইতিহাস। একে ঘটনা বলাই ভাল। যা সত্য তাই হল ঘটনা। মহাভারতে এই কথা বলেছিলেন হুতাশন। তবে ঘটনার ভেতর থেকে ছেকে ইতিহাস বের করতে হয়। সে দায়িত্ব ঐতিহাসিকের। আমরা শুধু ঘটনাকে বিবৃত করছি। কারণ ঘটনা হারিয়ে গেলে ইতিহাস রচিত হবে কিভাবে।
এই ঘটনাগুলো নিয়ে ঘটনাস্থলে যেতে হবে। স্থানীয় লোকজনকে জিজ্ঞেস করে তার সত্যতা যাচাই করতে হবে। স্থানীয় ডকুমেন্টগুলোর সন্ধান করতে হবে। এভাবেই তো ইতিহাসটি আসবে দাদা।
আমি ঐতিহাসিক নই। সে দায় আমার নয়। আমি শুধু একাত্তরের ঘটনা বলছি মাঝে মাঝে। কেউ কেউ হয়তো ইতিহাস লিখতে এসে যাবেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।
বি:দ্র: আপনি কি আমার শিক্ষক ছিলেন? কৃষি প্রকৌশল বিভাগের ক্লাশ নিতেন? সেটা ১৯৯৫ সালে।
একটু সংশোধনী-
বি:দ্র: আপনি কি আমার শিক্ষক ছিলেন? কৃষি প্রকৌশল বিভাগের ক্লাশ নিতেন? সেটা ১৯৮৫ সালে।
ভুল করে ১৯৯৫ লিখেছি।
@কুলদা রায়,
আমি কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগে ছিলাম জানুয়ারী ১৯৮৯ পর্যন্ত।
@কুলদা রায়,
মনে ছুঁয়ে যাওয়ার মত একটা কথা লিখেছ। “রাতে গায়ের চাদরটা ঠিক করে দিতেন।” তুমি সৌভাগ্য বান।
লেখাটার নীচের লাইনটা পড়ে দেখ।
@নৃপেন্দ্র সরকার, এবার নিশ্চিত–আপনি আমার শিক্ষক ছিলেন। এখন থেকে আপনাকে স্যার বলব।
নাইব চাচা বিষয়ে আমি বিচ্ছিন্নভাবে লিখেছি। একটি বড়ো লেখা লিখব। আর কুদ্দুস স্যারকে নিয়েও। আমি যে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরেছিলাম–সেটা কুদ্দুস স্যারের অবদান। তিনি না থাকলে আমি অজ পাড়াগাঁর মুদি দোকানী হতাম খুব বেশি হলে। এঁদের কাছে আমার অনেক ঋণ। এক জন্মেও শেষ হওয়ার নয়।
@কুলদা রায়,
অপরিচিত লোকদেরকে স্যার বলা হয়। তুমি যেহেতু এখন আমার কাছে পরিচিত ব্যক্তি, তুমি বরং “নৃপেন দা” বলতে পার।
@কুলদা রায়,
আজকাল লোকে উপকারের কথা ভূলে যায়!
আপনার কথা গুলো খুব ভাল লাগল!
অন্তর ছোঁয়া!
ভাল থাকুন!
@কুলদা রায়,
দাদা, এটি এখন সময়ের দাবি। আপনার সেই লেখাটি পাঠের প্রতীক্ষায়। :rose:
@ নৃপেন্দ্র দাদা,
ফন্টগুলো এত ছোট হয়েছে যে পড়তে পারছি না। চশমাতেও কুলাচ্ছে না। বড় করার ব্যবস্থা করেন।
@মাহফুজ,
আমার তো চশমা লাগে না।
@মাহফুজ, এডিটরে খুঁজে পাচ্ছি না ফন্ট বদলানোর জায়গা টা। একটু সাহায্য কর না!
@নৃপেন্দ্র দাদা,
মনে হয় আমার কম্পিউটারের সমস্যা।
তবে বুদ্ধি করছি (মাথায় বুদ্ধি এসেছে) – আপনার লেখাটা কপি করলাম তারপর এম এস ওয়ার্ড অপেন করে সেখানে পেষ্ট করলাম। তারপর পড়েছি।
আমিও জানি না, ওখানে কিভাবে ফন্ট বড় করতে হয়। মডু (মডারেটর) ভাইকে ডাক দেন।
@মাহফুজ,
নাহ! এর আগেও ঝাড় খেয়েছি। আর খেতে চাই না।
আসলে এডিটরের কাঁচা ফন্ট এসেছে। পড়ার জন্য ফন্টটি আসেনি। তুমি ঠিকই বলেছ।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
HTML ফাইলে গিয়ে ১০ থেকে ১২ font বদলায়ে দিলাম। তারপরেও দেখি কোন পরিবর্তন নাই।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
এখন অন্যান্য পোস্ট আর আপনার পোস্টের ফন্ট একই আকার দেখছি। চেক করে দেখেন ঠিক আছে নাকি।
“”margin: 0in 0in 12pt””
আপনি বোধহয় এটা এডিট করেছেন। এটা ফন্টের কোড না।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
ধন্যবাদ।
হায়! আমি মারজিনের ফন্ট চেঞ্জ করে ভেবেছি টেক্সট ফন্ট চেঞ্জ করেছি।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
ফ্রন্ট পেজে হয়েছে। ক্লিক করে গোটা পেজে গেলে দেখা যাচ্ছে একই আছে।
ধন্যবাদ আগেই দিয়ে ফেলেছি। ভালই করেছি ঠিক হওয়ার পর আর দিতে হবে না। কাজটা আগায়ে রেখেছি।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
ব্যাপারটা হয়েছে কারণ আপনি আপনার প্রোফাইলে Disable the visual editor when writing এটা টিক মার্ক দিয়ে রাখেননি। ফলে কপি পেস্ট করার সময় বৃন্দা ফন্টে লেখা পেস্ট হয়েছে। প্রোফাইলের এই অপশনটি সব সময় টিক মার্ক দিয়ে রাখবেন। মডারেটরের পক্ষ থেকে ঠিক করে দেয়া হয়েছে।
এবারে আবার পেস্ট করুন। লেখা ঠিক হয়ে যাবে। ছবিগুলো আবার ঠিকমত দিতে হবে যদিও।
@নৃপেন্দ্র সরকার :
উপরের কমেন্ট আমি করিনি, আমি আবার আসতে না আসতে দেখি এডমিন সাহেব কাজ সেরে ফেলেছেন :guli: ।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
হেঃ হেঃ প্রোফাইলে মডারেটরের ছবি ঝুলাইছ, তুমি কর নাই মানে কি! নিশ্চয় তুমিই করছ! 😀
নৃপেন্দা, কংগ্রাচুলেশন। লেখাটা তো ঠিক করে ফেলেছেন দেখছি।
আর নাইব উদ্দিন আহমেদ নিয়ে পোস্টটা দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। এটা জরুরী ছিলো।
@অভিজিৎ দা,
অবশ্যই। তাহলে সব কৃতিত্ব আমাকে দিচ্ছেন তো? 😀 ।
আর ছবি আমি ঝুলাইতে চাইনি, অন্য একজন একদিন যা করেছিল আমিও তা করে ফেলেছিলাম,এই আরকি।
@অভিজিৎ,
আমি গুতানোর পর পোস্টের শেষ অংশ বাদে বাকিটা ঠিক হয়েছিল, কিন্তু নৃপেন দা বললেন ঠিক হয়নি। কাহিনী কি হলো? :-/ 😕
@অভিজিৎ, babak nea ei lekha porar por redoy ta anoboroto kadse. banla font e likhte parsena ei programe. ekhne dada k neye lekhar dayetto amaroo. amiolikhte chi. apmader kache amra rini.
kajol (daughter in law of Mr. Naib Uddin) :rose2:
jatio pul sapla hoyese choto kaka Sr. Nowazesh ahmed o babar proposal er madhome.
@মুক্তমনা এডমিন,
প্রোফাইলে Disable the visual editor when writing এটা টিক মার্ক দেয়ার কথা আগেও বেশ কয়েকবার বলা হয়েছে। কেন যে মনে পড়লো না, বুঝি না। ইস, নৃপেন দাদারে যদি বলতে পারতাম তাহলে বাহবা কুড়াতে পারতাম।
আপনি যখনই এলেনই তখন একটা প্রশ্ন করি- কোনো লেখা পোষ্ট দেবার পর দেখা যায়, পুরো লেখা ফ্রন্ট পেজে আসে না, আংশিক আসে। এর কারণ কী?
@মাহফুজ, :guli: :guli:
@নৃপেন্দ্র দাদা,
স্মাইলীর অনেককিছুই আমি বুঝি না।
যেমন: :guli: এটার অর্থ কী?
আমার কাছে এই স্মাইলী দেখলে মনে হয় তোমারে গুলি করমু।
আসলেই কি তাই?
আমিও জানি না।
আপনার পোষ্টটি খুব ভালো লেগেছে।
@মাহফুজ,
:guli: মানে কী তা ভাল করেই জান।
দরকারের সময় তোমাকে পাওয়া যায় নাই।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আপনার লেখা সর্বদায় মন কে নাড়া দিয়ে যায়।