পুরানো ক্ষতে খোঁচার যন্ত্রণা
ইন্টারনেটে মুক্তচিন্তার জন্য সুবিখ্যাত বাংলাদেশী গোষ্ঠী ‘মুক্তমনা.কম’’র মাধ্যমে ভজন সরকারের লেখার সংগে প্রথম পরিচয় মাত্রই জানলাম তিনি রবীন্দ্রনাথ বর্ণিত মুগ্ধ বাঙালী জননীর মানুষ না হওয়া একজন সন্তান। সংগে সংগে তাঁকে ইমেইল করে অনুরোধ করলাম ‘বিভক্তির সাতকাহন’ ছোট ছোট ঢেউ নয়, একটি বিশাল তরঙ্গ হিসাবে বই আকারে দেখতে চাই। অনেকের সংগে ভজন আমার কথাও রেখেছেন। বইটি পাওয়া মাত্রই পড়ে ফেললাম এবং আশৈশব কষ্ট দেওয়া পুরানো ক্ষতে আরও একবার খোঁচা খেয়ে যন্ত্রণায় কুঁকড়ে গেলাম। ভাগ্যবান ভজন হাজার বছরের ’সবার উপরে মানুষ সত্য’র পারিবারিক ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিমন্ডলে বেড়ে উঠেছেন এবং জেনেছেন, ‘‘ ধর্ম অশিক্ষিত লোকের সংস্কৃতি; সংস্কৃতি শিক্ষিত মানুষের ধর্ম’’।
প্রকৃত বাঙালি সমাজের সন্তান হিসাবে বড় হওয়ায় তাঁর শৈশব কেটেছে সকল সংকীর্ণতা ও সামপ্রদায়িকতা মুক্ত সহজ সতেজ আনন্দ কোলাহলময় পরিবেশে। কিন্তু বাস্তবজীবনে পা রাখতে গিয়েই মেধাবী ছাত্র ভজন আবিস্কার করল, বাঙালী আর বাঙালী নেই; বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদ অবমুক্ত সামপ্রদায়িকতার বিষাক্ত ভাইরাস বাঙালী হিন্দু ও বাঙালী মুসলমানের অন্তরে পারস্পরিক ঘৃণার ফণা তৈরি করেছে। ধর্ম, ধর্মান্ধতা ও সাম্পদায়িকতা কেমন করে তাঁর ঘনিষ্ঠ, পরিচিত মানুষদের পরস্পরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে হিংসা-বিদ্বেষে লিপ্ত ক্ষুদ্র, নীচ ও প্রতিহিংসাপরায়ন করে তুলল তারই বহু কাহিনীর গুচ্ছ উপহার বিভক্তির সাতকাহন। বিভক্তির সাতকাহন মানুষের পতনের একটি করূণ কাব্য। মীনায় হজ¦যাত্রীদের মত গদ্যের পাথর ছুঁড়ে ভজন লিখতে পারতেন মানুষের উপর মানুষের বিশ্বাস হারানোর দুঃসহ কাহিনীগুলি । কিন্তু রক্তে ও চোখে কবিতা থাকায় সুন্দর তাঁকে অসুন্দর ভাষা ব্যবহার করতে দেয়নি। তাই বিভক্তির সাতকাহনে রাজনীতির নখরের চিহ্ন থাকলেও মনুষ্যত্বের পতনের গভীর দুঃখ বিভক্তির সাতকাহনকে একটি অনিঃশেষ দীর্ঘশ্বাসে পরিণত করেছে।
বিভক্তির সাতকাহন : ভজন সরকার ; প্রকাশক : মুক্তচিন্তা প্রকাশন, ঢাকা ; প্রকাশকাল : জানুয়ারি,২০১০ ।
ধন্যবাদ, ফরিদ আর গীতা দাসকে |
ঢাকায় প্রকাশকের কাছ থেকে সরাসরি বইটি সংগ্রহ করতে পারেন | যারা আমেরিকা বা কানাডা আছেন,আমার কাছে কিছু কপি আছে আমি আগ্রহী পাঠকদের পাঠাতে পারি | এ ক্ষেত্রে আমেরিকায় পাঠানো একটু সময় সাপেক্ষ-ডাকে প্রায় মাসখানেক লেগে যায় |
[email protected]
@ভজন সরকার,
বিভক্তির সাত কাহনের কয়েকটি পর্ব পড়েছি। ভজন ভাল লেখে নিঃসন্দেহে (একটু পেছনের দিকে গেলে দেখা যাবে, ভজনের মা কোন না কোন ভাবে আমার দিদি সম্পর্কিত। ওর মা আমার পাশের গ্রামের মেয়ে)।
বিভক্তি আমি বিভিন্ন স্তরে দেখেছি বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে। কিছু কিছু ঘটনা লিপিবদ্ধ করার ইচ্ছা ছিল অনেক কাল থেকেই। আলসেমি এবং লেখার হাত না থাকার কারণে হয়ে উঠেনি। ভজন তা করেছে দেখে ভাল লাগছে।
বিভক্তির সাতকাহন মুক্তমনায় প্রকাশের সময় কয়েকটি পর্ব না পেয়ে ভজন সরকারকে ই-মেইল করেছিলাম। উনি আমাকে সাতরঙ এর ঠিকানা দিয়েছিলেন। বিভক্তির সাতকাহন বই আকারে প্রকাশের খবরটিও সাত রঙ ওয়েব পেইজে পোষ্ট করা হয়েছিল। এখনও সাত রঙের লেখক আর্কাইভে ভজন সরকারের অন্যসব লেখার সাথে বিভক্তির সাতকাহন রয়েছে। লিংক দেয়ার জ্ঞান নেই বলে দিতে পারলাম না।
বিভক্তির সাতকাহন পড়ে মনে হয়েছিল প্রবাসে আমরা আরও বেশি সংকোচিত, সাম্প্রদায়িক এবং গোষ্ঠিকেন্দ্রীক ।
যাহোক, ই- বুক নয়, বইটিই আমরা কিনতে পারি লেখকের দেয়া প্রাপ্তিস্থান থেকে। আমি বইটির বহুল প্রচার প্রাত্যাশা করি।
বিভক্তির সাতকাহন গ্রন্থ আকারে বের হওয়ায় ভজনদার জন্যে রইলো আন্তরিক অভিনন্দন। দারুণ একটা রিভিউ করার জন্যে বেলাল ভাইকেও ধন্যবাদ।
মুক্তমনার জন্যেও এটা বিশাল এক গৌরবের বিষয়। পুরো বইটাই প্রকাশের আগে সর্বপ্রথম মুক্তমনাতেই প্রকাশিত হয়েছে ধারাবাহিকভাবে। বিভক্তির সাতকাহনের এক থেকে উনত্রিশ পর্বের লিংক ভজনদার আর্টিকেল পেজে পাবেন। উৎসুক পাঠকদের আগ্রহের পিপাসা কিছুটা হলেও মিটবে বলেই আশা করছি। বাড়তি পাওনা হিসেবে পাবেন মুক্তমনায় প্রকাশিত তার সব লেখাগুলোই।
ভজন সরকার আমার খুব পছন্দের একজন শব্দশিল্পী। মুক্তমনায় তার অসাধারণ শব্দমাধুর্যপূর্ণ বাহুল্যবর্জিত ধারালো লেখাগুলোর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলাম আমি। আগে নিয়মিতই মুক্তমনাতে লিখতেন তিনি। বেশ কিছুদিন হলো সেটাতে কিছুটা ছেদ পড়েছে। আশা করবো ভজনদা আবারো মুক্তমনায় নিয়মিত হবেন। তার শক্তিশালী গদ্য এবং ছিপছিপে কবিতায় আবারো তৃষ্ণা মিটবে মুক্তমনার পাঠকদের।
মুক্তচিন্তা প্রকাশনী, ৭৪ কনকর্ড টাওয়ার, কাটাবন,শাহবাগ-এ পাওয়া যাবে |
কিংবা নিচের ই-মেইলে প্রকাশক সাঈদ বাহাদূর-কে বললেও ,তিনি ব্যবস্থা করবেন ঃ
[email protected]
ধন্যবাদ |
ঢাকায় কোথায় পাওয়া যাবে বলতে পারেন?
বইটা ই-বুক আকারে পাওয়া যাবেনা? লেখকের লেখা পড়ে বইটার প্রতি আগ্রহ জাগলো প্রচুর। মুক্তমনার কাছে আবেদন বইটি যেন ই-বুক আকারে প্রকাশ করে।