আলোচ্য নিবন্ধের উদ্দেশ্য অত্যন্ত পরিষ্কার। তা হলো- পরম করুনাময় আল্লাহ তায়ালা তিনি কি তার সৃষ্টির মধ্যে ব্যপক বৈষম্য তৈরী করবেন ? নিশ্চয়ই তার সৃষ্টিতে থাকবে পরিপূর্ন সাম্য ও ন্যয় বিচার। তিনি আমাদের মাথা দিয়েছেন, মাথায় বেশ কিছু পরিমান ঘিলু দিয়েছেন যার দ্বারা আমরা চিন্তা ভাবনা করতে পারি, পারি বুদ্ধি বৃত্তির চর্চা করতে যা আমাদেরকে বুদ্ধিমান প্রানীর স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। আমরা বুদ্ধিমান প্রানী এটার মানে হলো- আমরা আমাদের চিন্তা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে কোন টা ভাল আর কোনটা মন্দ চিহ্নিত করতে পারি, সে নীতির উপর ভিত্তি করে একটা ন্যয় বিচার ভিত্তিক সমাজ গঠন করতে পারি, পারি সমাজের সবার জন্য কল্যাণ হয় এমন রীতি নীতি ও আইন কানুন তরী করতে। একই সাথে পারি প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদকে আমাদের ব্যবহার উপযোগী করতে ও জীবনকে আরামদায়ক করতে। এ সব ক্ষমতা আমাদের মানে মানুষদের আছে বলেই সে না মানুষ বুদ্ধিমান। এর মধ্যে কেউ যদি হঠাৎ এসে বলে যে তাকে আল্লাহ পাঠিয়েছেন এ জন্যে যে- মানুষ কয়বার খাবার খাবে, কখন পায়খানা প্রস্রাব করবে, কখন কয়টা বিয়ে করবে, কয়টা বাচ্চা কাচ্চা হবে, গরু খাবে নাকি শুকর খাবে নাকি কচ্ছপ খাবে,ওজনে কম দেবে নাকি বেশী দেবে, মিথ্যে কথা বলবে নাকি সত্য কথা বলবে, কখন কখন একটা স্ত্রীকে তার স্বামীর যৌনতাড়না প্রশমন করার জন্য রেডি থাকতে হবে, নারীকে তার সারা শরীর ভুতের মত ঢেকে রাখতে হবে কিনা, কয়বার তালাক বললে একজন স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারবে, নারী বাইরে যেতে পারবে কিনা, স্বামী কি কি ভাবে তার স্ত্রীকে শাসন করবে ও প্রয়োজনে মারধর করতে পারবে কিনা, দাসী বাদীর সাথে নির্বিচারে যৌনসংগম করতে পারবে কিনা ইত্যাদি সব অতি সাধারন বা অনেকটাই ফালতু বিষয় শিক্ষা দেয়ার জন্য। বিষয়টা বেশ হাস্যকর হয় না কি ? কারন এত সাধারন বিষয় জানা বা বোঝার জন্য মানুষের সাধারন বুদ্ধি আর বিবেক ই তো যথেষ্ট। আর তা যদি নাই বুঝতে পারবে তাহলে আল্লাহ মানুষকে খামোখা কেন বুদ্ধিমান প্রানী বানাতে গেল ? এত সব সাধারন বিষয় শিক্ষা দেয়ার জন্য প্রেরিত পুরুষ পাঠানোর অর্থই তো হলো আল্লাহ প্রদত্ত আমাদের বুদ্ধিমত্তা অর্থহীন ও প্রকারান্তরে আল্লাহ বা সৃষ্টিকর্তার ধারনাই অর্থহীন। যাহোক, এবারে আসা যাক, এসব ধারনাকে সমর্থন করে যে সব বিদগ্ধ ছদ্ম পন্ডিত তাদের কিছু ব্যখ্যা বিশ্লেষণ করা যাক। প্রসংগ অবশ্যই নারী ও তাদেরকে প্রদত্ত মান মর্যাদার বিষয়।
একটা সাইটে দেখলাম এক লোক কোরানের বেশ কিছু আয়াত উল্লেখ করে প্রমান করতে চেয়েছে যে ইসলাম আর তার কোরান-হাদিস ছাড়া আর কিছুই নাকি নারী জাতিকে কোন মান মর্যাদা দেয় নি। এবারে সেসব আয়াত সমূহ ব্যখ্যা করা যাক।
“হে মানব-জাতি! তোমরা ভয় কর তোমাদের রবকে, যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের এক আত্মা থেকে এবং যিনি সৃষ্টি করেছেন তার থেকে তার জোড়া, আর ছড়িয়ে দিয়েছেন তাদের দু’জন থেকে অনেক নর ও নারী।” (আন-নিসা ৪:১)
উক্ত আয়াতে নাকি নারী আর পুরুষকে সমান মর্যাদা দেয়া হয়েছে । কিন্তু আমি তো তা বুঝতে পারছি না। যিনি সৃষ্টি করেছেন এক আত্মা থেকে- এর মানে কি যারা সৃষ্ট হলো তারা সমান ? যিনি সৃষ্টি করেছেন তার জোড়া- এটাতেও কিভাবে সমান মর্যাদাসম্পন্ন বুঝায় তা বুঝতে পারলাম না। উক্ত সাইটেও অবশ্য কোন ব্যখ্যা পাইনি, না পেয়ে নিজে খুব সূক্ষ্মভাবে বিচার বিশ্লেষণ করে বোঝার চেষ্টা করলাম আসলেই আলোচ্য আয়াতে সত্যি নারী ও পুরুষকে সমান মান মর্যাদা দেয়া হয়েছে কি না , কিন্ত আমি দুঃখিত – কোনভাবেই তা বুঝতে পারলাম না।
“যে ব্যক্তি ভাল কাজ করবে, হোক সে পুরুষ কিংবা নারী, এবং সে ঈমানদার হবে, এরূপ লোক জান্নাতে দাখিল হবে, আর তাদের প্রতি বিন্দুমাত্র অবিচার করা হবে না।” (আন-নিসা ৪:১২৪)
উপরোক্ত্ আয়াতের অর্থ নাকি নারী পুরুষকে সমান মর্যাদা দেয়া হয়েছে। যে কেউ ভাল কাজ করলেই তাকে জান্নাতে দাখিল করা হবে, তার মধ্যে সমান মান মর্যাদা প্রদান কেমন করে করা হলো ? এক্ষেত্রে আল্লাহ বিন্দুমাত্র অবিচার করবেন না , তো তাতে কি বুঝা যায় যাদের প্রতি তিনি অবিচার করবেন না তারা সবাই পরস্পর মান মর্যাদায় সমান ? একজন ভিক্ষুক যদি ভাল কাজ করে তাকে বেহেস্তে নসিব করা হবে, একজন রাজাও যদি ভাল কাজ করে তাকেও বেহেস্তে নসিব করা হবে, তাই বলে বাস্তবে একজন ভিক্ষুক আর রাজার মান মর্যাদা কি সমান ?
“আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে একটি এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের নিজেদের মধ্যে থেকে সঙ্গী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি লাভ কর এবং সৃষ্টি করেছেন তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও দয়া।” (আর-রূম ৩০:২১)
তা তো ঠিকই আল্লাহ আদমের বাম পাজরের একখান হাড় থেকে তার সঙ্গিনী হাওয়াকে সৃষ্টি করেছেন। তার অর্থ তো আদম আর হাওয়া সমান মান মর্যাদাসম্পন্ন না। খেয়াল করুন আল্লাহ প্রথমে আদমকে তৈরী করেছেন। বেহেস্তে আদম একা একা চলা ফেরা করে, একাকীত্ব অনুভব করে, তার একাকীত্ব দুর করার জন্যেই কিন্তু আল্লাহ দয়া করে তার পাজরের হাড় থেকে হাওয়াকে তৈরী করেছেন। হাওয়ার প্রয়োজনে আদমকে তৈরী করেননি। অথবা পরস্পরের প্রয়োজনে আদম ও হাওয়াকে সৃষ্টি করেন নি। যদি আল্লাহ একই সাথে পরস্পরের প্রয়োজনে পরস্পরকে সৃষ্টি করতেন তাহলে তাদেরকে সমান মান মর্যাদা সম্পন্ন বলা যেত। সোজা কথা আদমের মনোরঞ্জনের জন্যই হাওয়ার সৃষ্টি। সৃষ্টির প্রারম্ভেই আদমই একমাত্র গুরুত্বপুর্ন ব্যাক্তি সেখানে হাওয়ার কোনই গুরুত্ব নেই। যেমন-
আর আল্লাহতালা শিখালেন আদমকে সমস্ত বস্তুর নাম। ২ ঃ ৩১
শুধু আদমকেই সমস্ত বস্তুর নাম শিখানো হয়েছে, হাওয়াকে নয়, কারন তা অপ্রয়োজনীয়।
যখন আমি আদমকে সেজদা করার জন্য ফেরেস্তাদের নির্দেশ দিলাম, তখন ইবলিস ছাড়া সবাই সিজদা করল। ২ ঃ ৩৪
শুধু আদমকেই সেজদা করার জন্য বলা হয়েছে , হাওয়াকে নয়, কারন তা অপ্রয়োজনীয়।
আমি আদমকে হুকুম করলাম তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করতে থাক। ২ ঃ ৩৫
শুধুমাত্র আদমকে সম্বোধন করে হুকুম করা হচ্ছে, কারন হাওয়া তো আদমের দাসী তাকে উদ্দেশ্য করে বলার মত তেমন গুরুত্বপূর্ন সে না, তা ছাড়া মালিককে হুকুম করলেই হয়, দাসী বাদীকে আলাদা হুকুম করার দরকার পড়ে না।
অতঃপর আদম স্বীয় পালনকর্তার কাছ থেকে কয়েকটি কথা শিখে নিলেন। ২ ঃ ৩৭
শুধুমাত্র আদম তার স্বীয় পালনকর্তার কাছ থেকে কয়টি কথা শিখে নিলেন, হাওয়ার কোন কথা শেখার দরকার নেই কারন দাসী বাদী আবার কি শিখবে ?
আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, এরপর আকার অবয়ব তৈরী করেছি। অতঃপর ফিরিস্তাদের আদেশ করেছি -আদমকে সিজদা কর, সবাই সিজদা করেছে, কিন্তু ইবলিস সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ৭ ঃ ১১
আল্লাহ বলছেন তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, তার মানে মানব জাতির আদি পিতা মাতা আদম ও হাওয়া কে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু শুধুমাত্র আদমকেই সিজদা করার আদেশ দিয়েছেন তিনি ফিরিস্তাদের , হাওয়াকে নয়। কারন আদম হলো মনিব, হাওয়া হলো তার দাসী, দাসীকে কেন ফিরিস্তারা সিজদা দিবে ?
যখন আমি ফিরিস্তাগনকে বললাম আদমকে সিজদা কর ,তখন ইবলিস ব্যতীত সবাই সিজদায় পড়ে গেল——-। ১৭ ঃ ৬১
আল্লাহ শুধুমাত্র আদমকে সিজদা দেয়ার জন্য ফিরিস্তাগনকে আদেশ করছেন, হাওয়াকে নয় ।
একেবারে সৃষ্টির শুরুতেই যে আল্লাহ আদমকে হাওয়ার মনিব বা প্রভু রূপে সৃষ্টি করেছিলেন তা উপরোক্ত সূরা গুলোর বর্ননা থেকে পরিস্কার হয়ে যায়। যদি আদম ও হাওয়াকে সমান মর্যাদা ও সম্মান দিয়ে তৈরী করতেন , আল্লাহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই আদম-হাওয়া দুজনকেই উল্লেখ করতেন। ইসলামী পন্ডিতরা বলতে পারেন যে- যদি একদল শ্রমিক তাদের মালিকের কাছে সম্মিলিতভাবে কোন দাবী নামা পেশ করতে যায় সেক্ষেত্রে তো মালিক সবার সাথে আলাদা আলাদা ভাবে কথা বলেন না বা সম্বোধন করেন না। কথা বলেন শ্রমিকদের মনোনীত একজন প্রতিনিধির সাথে। এক্ষেত্রেও আল্লাহ ঠিক সে পদ্ধতি অনুসরন করেছেন। মানব জাতির প্রতিনিধি হিসাবে শুধুমাত্র আদমকেই সম্বোধন করেছেন। বুঝলাম কথায় যুক্তি আছে। কিন্তু, কথা হলো- তখন মানব জাতির সদস্য সংখ্যা ছিল কতজন ? মাত্র দুজন- আদম আর হাওয়া যারা নাকি ভবিষ্যতে মানবজাতির পত্তন ঘটাবে দুনিয়াতে। সুতরাং সেক্ষেত্রে যদি উভয়েই মান মর্যাদায় সমান হয়, তাহলে তো উভয়কেই সম্বোধন করে সব কথা বলতে হবে আর তা করতে তো কোন সমস্যাও নেই। আল্লাহ উপরোক্ত আয়াতগুলোকে এভাবেই বলতে পারতেন-
আর আল্লাহতালা শিখালেন আদম-হাওয়াকে সমস্ত বস্তুর নাম।
যখন আমি আদম-হাওয়াকে সেজদা করার জন্য ফেরেস্তাদের নির্দেশ দিলাম, তখন ইবলিস ছাড়া সবাই সিজদা করল।
আমি আদম-হাওয়াকে হুকুম করলাম তোমরা স্বামী স্ত্রী হিসাবে জান্নাতে বসবাস করতে থাক।
অতঃপর আদম-হাওয়া তাদের পালনকর্তার কাছ থেকে কয়েকটি কথা শিখে নিলেন।
আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, এরপর আকার অবয়ব তৈরী করেছি। অতঃপর ফিরিস্তাদের আদেশ করেছি –আদম-হাওয়াকে সিজদা কর, সবাই সিজদা করেছে, কিন্তু ইবলিস সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
এবং অনুরূপ——————–। এরকম হলেই শুধুমাত্র নারী পুরুষকে সমান অধিকার ও মর্যাদা প্রদান করা হতো। তখন আর ঠেলায় পড়ে অত্যন্ত অস্পষ্ট আয়াত ঘেটে তথাকথিত ইসলামী পন্ডিতদেরকে নারীর মান মর্যাদার হদিস ঘাটতে রাতের ঘুম হারাম করতে হতো না।
“আমি বিনষ্ট করি না তোমাদের কোন পরিশ্রমকারীর কর্ম, তা সে হোক পুরুষ কিংবা নারী। তোমরা একে অন্যের সমান।” (আল-ইমরান ৩:১৯৫)
উপরে খেয়াল করুন বলছে- তোমরা একে অন্যের সমান। আমি দেখেছি অন্য সব অনুবাদকও মোটামুটি ভাবে একই রকমভাবে অনুবাদ করেছেন। কিন্তু আসলে সুভংকরীর ফাকিটা অন্য যায়গাতে আর সেটা হলো সুরাটির আংশিক এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এবার আমরা বিস্তৃত আকারে আয়াতটি দেখি।
অতঃপর তাদের পালনকর্তা তাদের দোয়া এই বলে কবুল করে নিলেন যে, আমি তোমাদের কোন পরিশ্রমকারীর পরিশ্রমই বিনষ্ট করি না, তা সে হোক পুরুষ কিংবা স্ত্রীলোক। তোমরা পরস্পর এক। (আল-ইমরান ৩:১৯৫)
খেয়াল করুন, এখানে বলা হচ্ছে যে কেউ কোন পরিশ্রম করলে তার ফল আল্লাহ প্রদান করবেন এ প্রসংগেই স্ত্রী ও পুরুষকে এক কাতারে সামিল করা হচ্ছে। অর্থাৎ স্ত্রী হোক বা পুরুষ হোক তারা যদি কোন পরিশ্রম করে তাহলে সেক্ষেত্রে ফল প্রদানের ব্যপারে আল্লাহ কোন বৈষম্য করেন না। স্ত্রী বলে যে তাকে কম ফল প্রদান করবেন বিষয়টা তা নয়। সুতরাং বিষয়টা দাড়াচ্ছে যে- নারী পুরুষকে সমান মর্যাদা ও সম্মান প্রদর্শনের বিষয় এটি নয়, শুধুমাত্র কর্মফল প্রদানের ক্ষেত্রে আল্লাহ কারও সাথে বৈষম্য পূর্ন আচরন করেন না সে বিষয়টিই পরিস্কারভাবে বলছেন, এর সাথে মান মর্যাদা প্রদানের বিষয়টি সম্পর্কিত নয়। যেমন ধরুন, বাংলাদেশ সরকার মাঝে মাঝে মুক্ত বাজারে ন্যয্য মূল্যে চাউল বিক্রি করে যদি হঠাৎ চালের মূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। দাম প্রতি কেজি ২০ টাকা , একজন ক্রেতা এক সাথে ৫ কেজি চাউল কিনতে পারবেন। তা সে ক্রেতা ভিখারী হোক আর কোটিপতি ব্যবসায়ী হোক, অথবা হোক পাতিনেতা বা মন্ত্রী। অর্থাৎ উক্ত চাউল ক্রয়ের ক্ষেত্রে একজন বস্তিবাসী ভিখারী,একজন কোটিপতি ব্যবসায়ী, পাতি নেতা বা মন্ত্রী সবাই সমান। তাই বলে কি অন্য সব ক্ষেত্রে ভিখারী,কোটি পতি ব্যবসায়ী, পাতি নেতা বা মন্ত্রী এদের প্রত্যেকর মর্যাদা সমান হবে নাকি ? আলোচ্য আয়াতে ঠিক সেরকমই একটা ব্যপার বর্নিত হয়েছে আর সেটা হলো- শুধুমাত্র কর্মফল প্রদানের ক্ষেত্রে আল্লাহর কাছে নারী পুরুষ কোন ভেদাভেদ নেই, সবাই সমান, কিন্তু অন্য সব ক্ষেত্রে তারা সমান নয়। অথচ ইসলাম বিশারদরা ঠিক সে বিষয়টাকে সুচতুর ভাবে নারী পুরুষের মান মর্যাদা প্রদানের সাথে সম্পর্কিত করে ফেলেছে। আর মজার ব্যপার হলো এধরনের আয়াত কিন্তু গোটা কোরানে আর দ্বিতীয়টা নেই। এতই যদি কোরানে আল্লাহ নারী আর পুরুষকে সমান মর্যাদা সম্পন্ন করে থাকে তাহলে তা এত অস্পষ্ট কেন? কেন সরাসরি বলে দেন নি- আমি নারী ও পুরুষকে সৃষ্টি করে সমান মর্যাদা ও সম্মান সহকারে । তারা কেউ কারেও ওপর কর্তৃত্বশীল নয়।বরং তারা একে অন্যের পরিপূরক। -তাহলে তো আর কোন ঘোর প্যাচ থাকে না , থাকে না কোন অস্পষ্টতা। আল্লাহ এত কথা কোরানের নামে বলতে পারে আর এ সামান্য কথাগুলো সরাসরি সহজ সরল ভাষায় বলতে পারল না ? বিষয়টা আসলে তা নয়। কোরানে মোহাম্মদ নারীদেরকে আসলেই কোন মর্যাদা দেন নি, মর্যাদা দেয়ার বিষয়টি সাম্প্রতিক যা তথাকথিত ইসলামী পন্ডিত দের আবিষ্কার অথবা বলা বলা যায়- তারা এটা আবিষ্কারের জন্য আদা জল খেয়ে লেগেছে। কিছু কাল আগ পর্যন্ত সমস্ত মুসলিম দেশ ছিল সামন্ততান্ত্রিক বা উপনিবেশ আর বলা বাহুল্য গরীব যেখানে নারীদের তেমন কর্ম সংস্থানের সুযোগ ছিল না। বর্তমানে মুসলিম দেশ গুলো আধুনিকতার ছোয়া পেয়েছে, একটি পরিবারে শুধুমাত্র একজন পুরুষের আয়ে এখন আর সংসার চলছে না, নারীটিকেও কাজ করতে হচ্ছে। এ বিষয়টিকে হজম করতে এ একই সাথে সচেতন মুসলিম নারীদের বিদ্রোহ ঠেকাতেই মুলত ছদ্ম ইসলামী পন্ডিতদের কোরান ও হাদিসের মধ্যে নারীর মর্যাদা আরিষ্কারের প্রানান্তকর প্রচেষ্টা।
এবারে দেখা যাক কোরান কি রকম সম্মান আর মর্যাদা দিয়েছে নারীকে –
পুরুষগণ নারীদিগের উপর কর্তৃত্বশীল, এই কারনে যে, আল্লাহ উহাদের কাহাকেও কাহারও উপর মর্যাদা প্রদান করিয়াছেন, এবং পুরুষেরা স্বীয় মাল হইতে তাহাদের অর্থ ব্যয় করিয়াছে, ফলে পূন্যবান রমনীগন অনুগত থাকে, অজ্ঞাতেও তত্ত্বাবধান করে, আল্লাহর তত্ত্বাবধানের মধ্যে এবং যাহাদের অবাধ্যতার সম্ভাবনা দেখিতে পাও, তাহাদিগকে উপদেশ দাও, এবং তাহাদের সহিত শয্যা বন্ধ কর এবং তাহাদিগকে সংযতভাবে প্রহার কর, তারপর যদি তোমাদের নির্দেশ অনুযায়ী চলিতে থাকে, তাহা হইলে তাহাদের উপর নির্যাতনের পন্থা অবলম্বন করিও না, নিশ্চয়ই আল্লাহ সুউচ্চ মর্যাদাশীল মহান। সূরা-৪:নিসা, আয়াত:৩৪
লক্ষ্য করুন আগে যত গুলো সূরার আয়াত দিয়ে নারীর মর্যাদার বিষয়টি প্রমান করার চেষ্টা করা হচ্ছিল তা কিন্তু স্রেফ এই একটি আয়াতই এক ফুৎকারে উড়িয়ে দিতে সক্ষম। লক্ষ্য করুন এখানে কোন অস্পষ্টতা নেই , নেই কোন ভনিতা। একেবারে সহজ সরল বর্ননা যা যে কোন সাধারন পাঠকেরই সুন্দরভাবে বুঝে যাওয়ার কথা। এমনকি এর কোন ব্যখ্যা দেওয়ারও দরকার নেই।অথচ যেসব আয়াত দিয়ে ইসলামী পন্ডিতরা নারীর ব্যপক মর্যাদার কথা প্রমান করতে চায় তার একটিও স্পষ্ট নয়, পরিস্কার কিছু তা দিয়ে বোঝা যায় না, বরং সব ক্ষেত্রেই অন্য কোন অর্থ বুঝাতে অস্পষ্ট ও ভাসা ভাসা কিছু বক্তব্য পেশ করেছে। অথচ এ আয়াতে দেখেন নারীর প্রতি তথাকথিত ইসলামি মর্যাদা কর্পুরের মত একেবারে হাওয়ায় উড়ে গেছে । কত পরিস্কার ভাবে এখানে নারীদের ওপর পুরুষের কর্তৃত্বের কথা বলা হচ্ছে। উপরোক্ত আয়াতে নারীকে মর্যাদা দেয়া তো দুরের কথা, স্বামীর কথা বার্তা ঠিক মতো না শুনলে স্ত্রীকে রীতি মতো মারধর করার জন্য আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন। কেন দিচ্ছেন? কারন স্বামী তার আয় উপার্জন থেকে তার স্ত্রীকে ভরনপোষণ করে থাকে তাই। উক্ত আয়াত থেকে বুঝা যায়, মোহাম্মদ নারীদের সম্পর্কে কেমন ধারনা করতেন। তার ধারনা ছিল যেহেতু নারীরা পুরুষদের থেকে হীন ও নির্বোধ, তাই তারা কোনদিনই আত্মনির্ভরশীল হতে পারবে না, হওয়া উচিৎও না আর তাই তাদের জন্য উপরোক্ত নিদান। ইসলামে নারীদের প্রদত্ত মর্যাদা নিয়ে আলোচনাতে অবধারিত ভাবে উক্ত সূরার আয়াতটি চলে আসে। আমি নানা ইসলামী পন্ডিতদেরকে এর জবাব দিতে গিয়ে দেখেছি তারা আসল প্রসঙ্গ এড়িয়ে আবোল তাবোল বা অপ্রাসঙ্গিক কথা বার্তা বলে, যেমন- হিন্দু ধর্মে নারীকে মৃত স্বামীর সাথে পোড়ানো হতো, ইসলাম পূর্ব যুগে নারী শিশুকে জীবন্ত কবর দেয়া হতো ইত্যাদি। এসব বলে তারা বুঝ দিতে চায় যে তার থেকে উক্ত বিধান অনেক উন্নত ও মান সম্মত। তারা তখন একথা ভুলে যায় যে- আসলে তারা নারীকে আল্লাহ প্রদত্ত অপরিসীম মর্যাদা সম্পর্কে যুক্তি তর্ক করছেন। তারা ভুলে যায় যে তারা প্রমান করার চেষ্টা করছে যে কোরানে আল্লাহ নারীকে পুরুষের সমান মান মর্যাদা প্রদান করেছে। অথচ আমাদের সহজ একটা প্রশ্ন হলো- যেখানে আল্লাহ স্বয়ং বিধান দিচ্ছেন সেখানে কেন বৈষম্য থাকবে, কেন আল্লাহ নারীকে প্রহার করার অধিকার পুরুষকে দেবে। স্বয়ং আল্লাহ যখন বিধান দেবেন তখন তো তিনি অন্য ধর্মে কি বিধান আছে তা দেখে বিধান দেবেন না, তাই না ? কারন অন্য ধর্মকে তো আল্লাহ বা মোহাম্মদ স্বীকারই করেন না। যা ন্যয়সঙ্গত সেই বিধান দেবেন। সেখানে নারীকে প্রহার করার অধিকার পুরুষকে দিয়ে আল্লাহ কি ধরনের ন্যয় সঙ্গত বিধান দিচ্ছেন , সেটার ব্যখ্যা ওই সব তথাকথিত পন্ডিত ব্যক্তিবর্গ্ আর দিতে পারেন না ঠিক মতো।
কিন্তু গভীর ভাবে চিন্তা করলে আর একটা সম্ভাবনা উকি দেয়। মোহাম্মদ যে তার ইসলাম প্রচার করেছিলেন তার পিছনে অপরিসীম সমর্থন ছিল তার প্রায় যৌবনোত্তীর্না প্রথম বিবি খাদিজা। মোহাম্মদের বয়স যখন ২৫ , খাদিজার বয়স তখন ৪০ আর তখন তাদের বিয়ে হয়। খাদিজা ছিলেন তৎকালীন সেই আরবের একজন ধনাড্য ব্যবসায়ী যার বৈদেশিক বানিজ্য ছিল বিশেষ করে সিরিয়ার সাথে। খাদিজা মোহাম্মদকে তার ব্যবসার কাজ দেখা শোনা করার চাকরিতে নিয়োগ করেন। মোহাম্মদ তার ব্যবসায়িক সততা ও দক্ষতা দিয়ে খাদিজাকে মুগ্ধ করেন। মোহাম্মদ নিজে কথিত সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহন করলেও মুলত ছিলেন প্রচন্ড গরীব যার ঠিকমতো দুবেলা খাবার জুটত না। সেই মোহাম্মদ-এর প্রতি খাদিজা দারুন সন্তুষ্ট হলেন ও এক পর্যায়ে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। একটা ২৫ বছরের যুবক কি কারনে একটা ৪০ বছরের প্রায় যৌবনোত্তীর্না নারীকে বিয়ে করতে পারে যদি না তাতে ভালমতো কোন লাভ না থাকে ? বলাবাহুল্য, মোহাম্মদ এ ধরনের প্রস্তাবকে দারুন লাভজনক বিবেচনা করলেন ও বিনা বাক্য ব্যয়ে রাজী হয়ে গেলেন।কারন তাতে তার দারিদ্র দুর তো হবেই পরন্তু এক পর্যায়ে তিনি নিজেই খাদিজার সমস্ত সম্পত্তির মালিক হবেন কারন খাদিজার নিজের কোন পুত্র সন্তান ছিল না। এর পর আস্তে আস্তে তার নুতন ধর্ম প্রবর্তনের পরিকল্পনা মাথায় আসে যার মূল উদ্দেশ্য ছিল গোত্র বিভক্ত ও গোত্রে গোত্রে শত্রুভাবাপন্ন ও সর্বদাই যুদ্ধরত আরবগুলোকে একত্রিত করে একটা ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী জাতি রূপে গঠন করা। আর তা করতে গেলে প্রথমেই ধ্বংস করা দরকার বিভিন্ন গোত্র যে বিভিন্ন দেব দেবীকে পুজো করে সে ঐতিহ্য। পরিবর্তে এক ঈশ্বর বা আল্লাহর আরাধনাতে তাদের আনতে পারলে তা গোত্রে গোত্রে বিভক্তি ও শত্রুতার পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে একটা বৃহত্তর ঐক্যবদ্ধ আরব সমাজ গঠন করা যায়। অর্থাৎ তার মূল উদ্দেশ্য ছিল যতটা না ধর্মীয় উদ্দেশ্যে তার চাইতে বেশী রাজনৈতিক। আর তার এ ধারনা বাস্তবায়ন করতে দরকার ছিল তার অর্থনৈতিক নিরাপত্তা যা বিবি খাদিজাকে বিয়ের মাধ্যমে সমাধান হয়। তার অর্থ- প্রায় বৃদ্ধ এক মহিলার উপর শতভাগ নির্ভর করেই তাকে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দিকে এগোতে হয় যা তার মধ্যে একটা হীনমন্যতার জন্ম দেয় যার বহিঃপ্রকাশ দেখি তার পরবর্তী কার্য কলাপে। যখন মোহাম্মদ পরিপূর্নভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন আর আরবদেরকে ঐক্য বদ্ধ করে বেশ শক্তিশালী জাতি রূপে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন, তখন তার সেই হীনমন্যতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে- একের পর এক যুবতী বিয়ে করার মধ্য দিয়ে।দু একজন বয়স্ক স্ত্রীও ছিল যদিও।তাও তিনি করতে পারেন নি যতদিন খাদিজা বেচে ছিলেন। যখন ৯/১০ জন যুবতী সুন্দরী নারী একই সাথে মোহাম্মদের স্ত্রী, তখন একটা সমস্যা দেখা গেল। প্রায়ই অনেক লোকজন তার কাছে আসত নানা সমস্যা নিয়ে, তাছাড়া তিনি মদিনা ও মক্কা শাসন করতেন তখন ,তাই অনেক লোককেই নানা প্রয়োজনে তার কাছে আসতে হতো্। আজকের মত তো আর আলীশান দালান ছিল না তার , অনেকটা কুড়েঘরের মত ঘরে তার সুন্দরী বিবি গন থাকত। তাই মোহাম্মদের কাছে আসা মানুষ জনদের নজরে পড়ত তার বিবিরা। ওদিকে মোহাম্মদ তখন বিগত যৌবনপ্রাপ্ত। তাই তার মনে সব সময় আশংকা কখন না জানি তার কোন বিবি অন্য সুঠাম স্বাস্থ্যবান যুবকের প্রেমে পড়ে যায়। আর সে আশংকাতেই তিনি তার বিবি দেরকে পরপুরুষ থেকে রক্ষা করার জন্য নানা ফন্দি ফিকির বার করার তালে থাকলেন। ব্যস আল্লাহও ওদিকে রেডি ছিলেন, তাই সুরা নাজিল হতে দেরী হলো না আর –
হে মুমিনগন, তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাওয়ার জন্য রন্ধনের অপেক্ষা না করে নবীর গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমরা আহুত হলে প্রবেশ করো। তবে অতঃপর খাওয়া শেষ হয়ে গেলে আপনা আপনি চলে যেও, কথা বার্তায় মশগুল হয়ে যেও না। নিশ্চয়ই এটা নবীর জন্য কষ্ট দায়ক। তিনি তোমাদের কাছে সংকোচ বোধ করেন। কিন্তু আল্লাহ সত্য কথা বলতে সংকোচ বোধ করেন না।তোমরা তার পত্নীদের কাছে কিছু চাইলে আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাদের অন্তরের জন্য অধিক অধিকতর পবিত্রতার কারন। আল্লাহর রসুলকে কষ্ট দেয়া আর তার ওফাতের পর তার বিবি গনকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়। আল্লাহর কাছে এটা গুরুতর অপরাধ। ৩৩ ঃ৫৩
উক্ত সুরা পড়ে কি মনে হয়? মনে হয় একটা সন্দেহ প্রবন, ঈর্ষাপরায়ন ও নিজের ওপর আস্থাহীন এক বিগত যৌবন লোক তার অগনিত সুন্দরী স্ত্রীদেরকে অন্যের নজর থেকে বাচানোর এক করুন আকুতি জানাচ্ছে আল্লাহর বানীর নামে। শুধু তাই নয় , তার মরার পরেও যেন কেউ তার স্ত্রীকে বিয়ে করতে না পারে সে বিধি নিষেধও তিনি দিয়ে যাচ্ছেন অত্যন্ত নির্লজ্জভাবে। তার স্ত্রীর অধিকাংশই ছিল যুবতী, যেমন আয়শার বয়স ছিল ১৮, জয়নবের ৩৫ , দুই এক জন ছাড়া কারোরই বয়স ৩৫ এর উপর ছিল না। তো তারা বিয়ে ছাড়া কিভাবে তাদের দৈহিক চাহিদা পূরন করবে ? সে বিষয়ে তার কোন তোয়াক্কা ছিল না।
হে নবী পত্নীগন, তোমরা অন্য নারীদের মত নও, যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করো তবে তোমরা অন্য পুরুষদের সাথে কোমল ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে সেই ব্যাক্তি কুবাসনা করে যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে। তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে। তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে- মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামাজ কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে , আল্লাহ ও তার রসুলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবৃন্দ, আল্লাহ কেবল চান তোমাদের কাছ থেকে অপবিত্রতা দুর করতে এবং তোমাদেরকে সর্বতোরূপে পুত পবিত্র রাখতে। ৩৩ ঃ৩২-৩৩
এখন কি মনে হয় ? মোহাম্মদ কি সত্যি সত্যি তার বহু সংখ্যক বিবি নিয়ে শংকিত ছিলেন না ? এ থেকে আরও একটা বিষয় ধরা পড়ে যে – মোহাম্মদ আল্লাহর নবী দাবী করা সত্ত্বেও তার বিবি গন পরিপূর্নভাবে তার সব কথা শুনত না। যদি তারা তার সব আদেশ নিষেধ পালন করত তাহলে মোহাম্মদকে কষ্ট করে আর আল্লাহর নামে এসব পারিবারিক নিতান্ত ফালতু বিষয় নিয়ে আয়াত নাজিল করতে হতো না । এ থেকে এরকমও সিদ্ধান্ত নেয়া যায় যে তার বিবিদের অনেকেই তাকে সত্যিকার ভাবে আল্লাহর রসুল হিসাবে অন্তর থেকে বিশ্বাস করত না। আজকের এই বিজ্ঞানের যুগেও আমরা যদি কোন ব্যাক্তিকে সত্যিকার ভাবে জানতে পারি যে তিনি আল্লাহ প্রোরিত পুরুষ আমরা কি তার কথা অমান্য করার কথা কল্পনাও করতে পারব ? পারব না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে- মোহাম্মদের স্ত্রীরা সবাই তার কথা সব সময় অক্ষরে অক্ষরে পালন করত না। তারা কি এমন হিম্মত রাখত যে আল্লাহর নবীর কথা অমান্য করতে সাহস পেত ? তাদের অন্তরে মোহাম্মদ-এর নবুয়ত্ব সম্পর্কে শতভাগ বিশ্বাস থাকলে নিশ্চয়ই তারা এধরনের অবাধ্যতা দেখাতো না। যেহেতু তারা মাঝে মাঝে অবাধ্যতা করত- তার অর্থ তারা তাকে পরিপূর্নভাবে বিশ্বাস করত না। কিন্তু তারা তার বিবি হিসাবে প্রচুর সম্মান পেত, নিরাপদ জীবন যাপন করত, খাওয়া পরার চিন্তা ছিল না যা তাদেরকে বেশী অবাধ্য করত না হয়ত। কিন্তু প্রায় বৃদ্ধ নবী তার যুবতী স্ত্রীদেরকে নিয়ন্ত্রন করতে , বশে রাখতে উপরোক্ত সূরা নাজিল করেন আল্লাহর নামে। একটু উদার দৃষ্টি ভঙ্গী নিয়ে চিন্তা করলেই সহজেই তা ধরা পড়ে। আর এ আশংকা থেকেই মূলত নারী জাতির উপর গজব নেমে এসেছে। দেখা যায়- নারীদের অবমাননাকর যত সূরা নাজিল হয়েছে তা এসব ঘটনার পর পরই, হাদিসে নারী সম্পর্কিত যত অবমাননাকর বক্তব্য সংযোজিত হয়েছে তা এসব ঘটনার পর। মোহাম্মদ শুধুমাত্র নিজের স্ত্রীদেরকে নিরাপদ রাখতেই সমস্ত মুসলিম রমনীদেরকে শৃংখলাবদ্ধ করেছেন তাদেরকে চরম অবমাননা ও অপমান করেছেন। তা কিভাবে ? একমাত্র নবীর স্ত্রীদের বিয়ের বিষয়টি বাদে বাকি সব বিধি বিধান কিন্তু পরবর্তীতে সকল মুসলিম নারীর জন্য প্রযোজ্য। অর্থাৎ তারা ঘরের বাইরে যেতে পারবে না, পরপুরুষের সাথে কথা বা দেখা করতে পারবে না, পুরো শরীর কাপড়ে এমন ভাবে মুড়তে হবে যেন কেউ শরীরের এতটুকু অংশ দেখতে না পায় তা সে যতই গ্রীষ্মকালে গরম থাক না কেন।
নবীর স্ত্রীদের কেউ কেউ যে তাকে সন্দেহের চোখে দেখত তার জ্বাজ্বল্যপ্রমান পাওয়া যায় খোদ আয়েশা কর্তৃক একটা হাদিসে, যা নিম্মরূপ:
হিসামের পিতা থেকে বর্নিত, নবীর কাছে স্বেচ্ছায় যে সব নারীরা বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল খাওলা বিনতে হাকিম তাদের একজন। তখন আয়েশা বলেছিলেন- একজন স্ত্রী কি একজন পুরুষের কাছে নিজেকে নিবেদন করতে লজ্জা বোধ করে না ? ঠিক তখনই এ সূরা নাজিল হলো – আপনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা দুরে রাখতে পারেন এবং যাকে ইচ্ছা কাছে রাখতে পারেন। আপনি যাকে দুরে রেখেছেন তাকে কামনা করলে তাতে আপনার কোন দোষ নেই। এতে অধিক সম্ভাবনা আছে যে, তাদের চক্ষু শীতল থাকবে। তারা দুঃখ পাবে না এবং আপনি যা দেন তাতে তারা সকলেই সন্তুষ্ট থাকবে। তোমাদের অন্তরে যা আছে আল্লাহ তা জানেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।এর পর আপনার জন্য কোন নারী হালাল নয় এবং তাদের পরিবর্তে অন্য কোন স্ত্রী গ্রহনও হালাল নয়, যদিও তাদের রূপ লাবন্য আপনাকে মুগ্ধ করে, তবে দাসীর ব্যপার ভিন্ন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ের ওপর সজাগ নজর রাখেন। (৩৩:৫২-৫৩)
তখন আয়শা বললেন- ও আল্লার নবী, আমি দেখছি আল্লাহ আপনাকে সন্তুষ্ট করতে বিন্দু মাত্র দেরী করে না। বুখারী, বই-৬২, হাদিস-৪৮
কি সন্দেহ জনক ভাবে বিবি আয়শা বলছেন – ও আল্লাহর নবী , আমি দেখছি আল্লাহ আপনাকে সন্তুষ্ট করতে বিন্দু মাত্র দেরী করে না। কি দারুন পর্যবেক্ষন আর মন্তব্য! এখানে আরও উল্লেখ্য যে, আল্লাহর নবীকে আল্লাহ যত ইচ্ছা খুশী দাসীর সাথে বিয়ে বহির্ভুত যৌন মিলনের অনুমতি দিয়ে দিয়েছেন। মোহাম্মদ তার অবাধ যৌন লালসা চরিতার্থ করার জন্য যখন ইচ্ছা খুশী নিজ বক্তব্যকে আল্লাহর বক্তব্য বলে চালিয়ে দিয়ে অর্ধ সভ্য , বর্বর ও অশিক্ষিত আরবদেরকে কি পরিমান ধোকা দিয়েছেন তা এ হাদিস থেকে বোঝা যায়। বিবি আয়শা পরবর্তীতে এ হাদিস সংকলন করেন যখন গোটা মুসলিম বিশ্ব তাকে আমিরুল মুমেনিন বা সমস্ত মুসলমানদের মা হিসাবে বরন করে নিয়েছে তখন তিনি কি আর এমন কিছু মোহাম্মদ সম্পর্কে লিখবেন যাতে মোহাম্মদের নবুয়ত্ব সম্পর্কে মানুষের মধ্যে ন্যূনতম সন্দেহ জাগ্রত হয়? অবশ্যই না। কিন্তু উপরোক্ত হাদিসটি ভাল করে পড়লে দেখা যাবে তিনি মনের অগোচরে তার প্রায় শৈশব আমলের ( সেসময়ই মোহাম্মদ বেচে ছিলেন )ঘটনা খুব সহজ সরল ভাবে বর্ননা করেছেন। অবশ্য নব্য ইসলামী পন্ডিতরা এর ভিন্ন ব্যখ্যা করে আর তা হলো তারা বুঝাতে চায় , মোহাম্মদকে যে আল্লাহ সব সময় নেপথ্য থেকে সাহায্য করত এটা তারই প্রমান আর তাই যখনই মোহাম্মদ একটা নতুন যুবতীকে বিয়ে করার খায়েশ করল তখন কি আর আল্লাহ বিলম্ব করতে পারে ??? আবার এই আয়শাই আর একটা হাদিস বর্ননা করেছেন নারী সম্পর্কে দেখুন-
আয়শা থেকে বর্নিত, আমাকে বলা হয়েছিল কি কি জিনিস নামাজকে নষ্ট করে। সেগুলো হলো –কুকুর, গাধা ও নারী। সহী বুখারী, বই-৯, হাদিস-৪৯৩
দেখুন কি সুন্দর ধারনা আমাদের মহানবীর নারী সম্পর্কে। তিনি নারীকে তুলনা করছেন কুকুরের সাথে। আমার তো মনে হয়- শুধু এই একটি হাদিস আর সূরা নিসার ৩৪ নম্বর আয়াত এ দুটি বক্তব্যই প্রমান করতে সক্ষম যে ইসলাম নারী জাতিকে আদৌ কোন সম্মান দেয় নি, দেয়নি কোন মর্যাদা যা তারা ইদানিং শোনে তা সম্পূর্নই কিছু ভুয়া ও ভন্ড তথাকথিত ইসলামী পন্ডিতের মনগড়া কথা যা আবার কোরানকে বিকৃত করার অপরাধের মধ্যে পড়ে এবং যার জন্য তারা মরার পরে সোজা জাহান্নামে চলে যাবে।
@লেখক,
আমার দৃষ্টিতে আপনার প্রথম কথাই সমস্যাগ্রস্ত.
আপনি বলেছেন, আলোচ্য নিবন্ধের উদ্দেশ্য অত্যন্ত পরিষ্কার। তা হলো- পরম করুনাময় আল্লাহ তায়ালা তিনি কি তার সৃষ্টির মধ্যে ব্যপক বৈষম্য তৈরী করবেন ?
আমি বলছি, অবশ্যই হতে পারে … 🙂
নয় কেন, সৃষ্টিকর্তা যখন একটা system তৈরী করবেন, তাতে সব অভিন্ন থাকবে নাকি ভিন্ন ভিন্ন জিনিস থাকবে, এটা তার পছন্দ… হ্যা ধরে নিচ্ছি তার পছন্দ ভিন্নতা… তাতে ক্ষতি কি?
উদাহরণ, আপনি একটি বিশ্ববিদ্যালয় খুললেন. সেখানে সকল শিক্ষক একই বিষয়ের, একই গুনের অধিকারী, তারা ১০০% একই রকম…. এখন বলেন, তারা কিভাবে পড়ানোর বিষয় ভাগ করবে? লটারির মাধ্যমে?
ধরে নিচ্ছি, তারা সবাই মিলে একটি বড় কোনো গবেষণা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে… আপনি তাদের সবাইকে একই কাজ দিলেন … একই অধিকার দিলেন… আপনার কি মনে হয়না, তারা একটা chaos ছাড়া আর কিছু দিতে পারবেনা? তা যাহোক, বাস্তবে কি ভিন্ন জিনিস দিয়েই একটি পূর্ণাঙ্গ system গঠন লাভ করে না?
এবং সেই ভিন্ন ভিন্ন জিনিসের কি ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্ব এবং ভিন্ন ভিন্ন অধিকার থাকে না? তবে সেটা নারী-পুরুষের বেলায় নয় কেন?
সুরা আননিসা ৪:১ বলছে, আদম-হওয়াকে এক আত্না থেকে সৃষ্টি করা…
একই সুরা ৪:১২৪ কে নিয়ে কিছু বলার নাই
আর-রূম ৩০:২১ থেকে কিভাবে জানলেন, যে হওয়াকে আদমের পাজর থেকে তৈরী করা হয়েছে… এমন কিছু তো লেখা নেই?
২ ঃ ৩১
শুধু আদমকেই সমস্ত বস্তুর নাম শিখানো হয়েছে, হাওয়ার প্রসঙ্গ আসছে না… কেননা তাকে তখনো সৃষ্টি করা হয়নি…. যে আগে এসেছে তাকে আগে শেখানো হবে সেটাই তো স্বাভাবিক… তাকে কেন আগে সৃষ্টি করা হলনা, সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ…
২ ঃ ৩৪
পূর্বের মতো… আমার জানা মতে, হাওয়া তো আদমকে সিজদা করেনি … তাহলে?
…………..
দুখিত ভাই… এতক্ষণ ধরে মনে হচ্ছিলো, আপনি বোধহয় কিছু বিশ্লেষণ ধর্মী কিছু লিখেছেন… তাই পড়ছিলাম আর আমার মন্তব্য লিখছিলাম… কিন্তু এতক্ষণে মনে হচ্ছে আপনি নিশ্চিত ভাবে সবকিছুকে ইচ্চাকৃত ভাবে একটি flavor-এ ব্যাখ্যা করছেন… আপনার যুক্তিগুলো এতটাই আবেগতাড়িত যে, এরকম লেখায় কোনো মন্তব্য করা অর্থহীন…. যতদিন বেচে আছেন ভালো থাকবেন… আপনার লেখা এটাই হলো আমার শেষ পড়া… ইচ্ছা থাকা সত্তেও ৩ নম্বর তা পড়তে পারলাম না…
At first, I apologize to all the readers as I am writing in english. I already downloaded, the Bengali key board and trying to be familiar with it. I am regular reader of this blog for a few months. I started reading the books of the freethinking writers since 80’s and I really enjoy reading different up to date collections of this site. Certainly, I am an atheist and stopped debating on religion for a long time. In my experience, about 95% of the religious people are religious by default without knowing anything about religion. They just inherite that identity blindly and ambiguously in their whole life. It’s like a brain cancer for them which is twisted with their nervous system. You may take that cancer cell out by surgery, but it will paralyze them. They are really sick! We might need an alternative to bring them out from that vicious cycle. One way is to unveil the dark side of the religion, at the same time we need to find out some alternatives where they can get their shelter slowly in absense of religion. We should be aware that religion is dominating on common people’s thinking for thousands of years. So, like free market economy, it will not be obsoleted unless they find a better products to rely on. There are lots of strong writers in this forum and they can contribute by their constructive writings to heal all those people. If we urge people to boycott something, they will never do that unless they could see a better alternative.
@thirsty,
ধর্ম এবং ধর্মানুসারীদের নিয়ে ছোট্ট কিছু কথায় এত সুন্দর বিশ্লেষণ খুবই কম দেখা যায়। আশা করি অতি শীঘ্র আপনি বাংলায় লিখতে সক্ষম হবেন।
এবার আপনার কাছ থেকেও আমরা একটা Constructive লেখা চাই।
আলোর পথের যাত্রীদলে আপনাকে স্বাগতম।
@thirsty,
ধর্মানুসারীদের নিয়ে আপনার মতামতটি চমতকার। আশা করছি আপনি ধর্ম বিষয়ক বির্তকে আবার নুতন করে অংশগ্রহন করবেন।
ধর্মের অন্ধকার জগত নিয়ে অনেক লেখকই এই পর্য্যন্ত অনেক যুক্তিপুর্ণ লেখা প্রকাশ করে আসছেন এবং তাঁদের লেখা নিঃসন্দেহে মানুষকে ধর্মের কুপমুন্ডকতা থেকে রক্ষা করতে গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা পালন করছে। কিন্তু ধর্মের অনুপস্থিতিতে ধর্মের বিকল্প অন্য কি ব্যবস্থা মানুষের জন্য কার্য্যকর হতে পারে সে সম্পর্কে একটু ধারনা দিবেন কি?
লেখা খুব সুন্দর- আপনার আগেও বেশ কয়েকটা লেখা পড়েছি।কিন্তু ভাই আসলে আপনে এসব প্রশ্ন বের করছেন কেন? এসব প্রশ্ন মনের ভিতর থেকে কি কারনে বের হচ্ছে সেটা জানতে পারলে ভাল লাগত। যদিও উত্তর অনেকটাই জানা থাকার কথা।
যাইহোক-দুই ধরনের জ্ঞান, একটি বস্তু জ্ঞান অপরটি আধ্যাত্নজ্ঞান। এর একটি প্রমান করা যায় অপরটি প্রমান করে দেখাতে পারবেননা। তবে দুইটি হল একটি পয়সার এপিঠ আর ঐপিঠ।
একটি জ্ঞান, চক্ষু বুজিয়া অর্জন করতে হয়, অপরটি চক্ষু খুলিয়া। দুইটি জ্ঞানের একটি মিলন পথ হইল একজন মানুষ আর এক মানুষের কাছে যেতে হবে, জ্ঞান নিতে হবে। সবই মানুষ নিয়ে কথা।
কাগজের কোরানে জ্ঞান থাকেনা, তবে জ্ঞানের বিষয় বস্তু দেয়া আছে। সেই জ্ঞানের ভান্ডার হল মানুষ। কোরান জ্ঞানে জ্ঞানী কোন মানুষের কাছে যান। তারাই হলেন আলে মীম। তথা মহাম্মদের বংশধর। মোহাম্মদ ও তাঁর উচ্চ পরিষদ সমুহ, এবং তাঁহার আদর্শের অনুসারীগণ। ইনারা বিরল, তবে অবশ্যই আছে, কোরান জানতে চাইলে সেখানে যাওয়া উচিত।
বেতন ভোগী কাগজের ডিগ্রী ধারী দাড়ি, টুপি জুব্বা পরিহিত আলেমদের জিজ্ঞাসা করে সময় নষ্ট কেন করেন?আকারেত সবাই মানুষ কিন্তু আত্না সবার মানুষের না। ইহা আলাদা জ্ঞান। যেই জ্ঞানে এই সমগ্র বিশ্ব পরিচালিত, যেই জ্ঞান মহা বিজ্ঞানময়ী, এই জ্ঞান যার নিকট পাওয়া যাবে তিল পরিমান সুক্ষ্ণ জ্ঞান দিতে সক্ষম তার নিকট যাওয়া চাই। তাহলেই প্রকৃত জ্ঞান পাওয়া যাবে।
মোহাম্মাদী ইসলাম এত উচচাঙ্গের একটি জীবন দর্শণ যে, ইহা সাধারনের বুঝবার বা পালনের কোন ধর্ম নয়। অথচ একে সাধারনের আওতাভুক্ত করে সংখ্যাধিক্কের (মেজরিটি) আওআজ তোলা হচ্ছে। ফলে সংখ্যাগুরুর হাতে পরে এর বেহাল অবস্থা হয়ে পড়েছে। যারা প্রকৃ্ত সংরক্ষক এবং জিম্মাদার তাঁদেরকে বলপূ্র্বক সরিয়ে দিয়ে ইসলাম লেখা সাইনবোর্ড (দাড়ি, টুপি, জুব্বা) গলায় ঝুলিয়ে জয় ডংকা বাজাচ্ছে, আর নিজেদেরকে মুসলিম মুসলিম বলে চিৎকার করছে। অতএব ইহার স্বাভাবিক পরিনতির দূর্ভোগ ভুগতেই হবে।
একথা সত্য যে যারা বস্তুবিজ্ঞান ক্ষেত্রে চরম জ্ঞানসম্পন্ন হয়ে থাকেন একমাত্র তারাই নতুন নতুন আবিস্কারের দ্বারা বিজ্ঞানের উন্নতি সাধন করে থাকেন, মানুষের বৈজ্ঞানিক সমাজ গঠনে কল্যান সাধন করে থাকেন, এবং যে যে যেই ক্ষেত্রে প্রখর জ্ঞানী তারা সেই ক্ষেত্রটি নিয়ে মানুষ সমাজ রাষ্ট্রের কল্যান সাধন করে যাচ্ছে। সকল ক্ষেত্রেই এই বিষয়টি লক্ষ করা যায়, চিকিৎসা বিজ্ঞান, কৃষি বিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, রসায়ন, ফিজিক্স ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ গড়ে উঠছে, প্রচার,প্রসার উন্নয়ন হচ্ছে।অবশিষ্ট সকলে মিলে তাদের দেয়া নিয়ম সমুহ গ্রহন করে পার্থিব উন্নতি সাধন করে এবং তদ্বারা উপকৃত হচ্ছে।
অথচ ধর্মবিজ্ঞান ও আধ্যাত্নবিজ্ঞান বিষয়ে ঠিক এর বিপরীত ব্যবস্থা গ্রহন করছে। যারা এ বিষয়ে প্রকৃত নিয়ন্তা তাদের নিয়ন্ত্রন ত্যাগ করে সে বিষয়ে নিন্মশ্রেনীর লোকদিগের ব্যবস্থা গ্রহন করছে। তাই মুসলিম জাহানের এই করুন দশা। শুধু যে নিয়ন্ত্রন ত্যাগ করেছে তা নয়, বরং বেশভূসার আড়ালে, দাড়ি-টুপি পড়ে তাঁদের অত্যাচারও করেছে,এখনো করে যাচ্ছে।
অনেক কিছু বলার থাকলেও বলা যায়না।
যদি জ্ঞানের অনুসন্ধানী হতে চান- আর সেই কারনে প্রশ্ন করে থাকেন তাহলে কিছুটা চিন্তার খোরাক দেই-
কোরান রুপক, আল্লাহ বলেন কোরান রুপক (৩-৭), নবী করিম (সাঃ) ও বলেন কোরান রুপক, আলী(আঃ) কোরানকে রুপক জানতেন।এখন রুপক কি আর সঠিক কি জানা চাই। কোরান কি সেই বিষয়ে খুবই সংক্ষিপ্ত কথা লিখেছিলাম এক সাইটে-্মোল্লাতন্ত্রের দৌরাত্নে সেখান থেকে আমাকে ব্লগ করে দেয়া হয়। http://www.somewhereinblog.net/blog/manush_007/29039555 । ঐখানে আরও টপিক আছে পড়ে দেখতে পারেন।
মুল কথায় আসি- কোরানে নারী সম্পর্কে যে আয়াত লেখা আছে তা মুলত জৈবিক নারি পুরুষ নয়। এখানে সৃষ্টির এক অপার সৌন্দর্যের কথাই বলা হয়েছে। নারি হল প্রকৃতি, পুরুষ হল স্বত্বা। যাহা কিছুই প্রকৃতির, উতপাদনশীল তাহাই নারী। এখন উতপাদনটা কিরুপ? সেটা উদাহরন দিয়ে ব্লা যেতে পারে- মানব মস্তিষ্কে যার ভিতর লভ, মোহ, কামনা উতপন্ন হয়না, জন্ম নেয় না, সৃষ্টি হয়না, তাই পুরুষ বাকি সব সৃষ্টি নারী। খুব সহজ এবং এক অংশ বললাম, বাকিটা চিন্তা করুন। আপনার উপর। ইহা যদি গ্রহন করতে পারেন তাহলে দেখবেন সমীকরন ধীরে ধীরে মিলতে থাকবে, আর যদি তাও না পারেন – বলতে পারি কোন মহামানব এর নিকট যান- হয়ত তকদির ঘুরলেঅ ঘুরতে পারে। যদিও এখানে সেই মানবের একান্ত দয়া দরকার। এখানে আল্লাহ নয় বরং মানুষ দেখুন। মানুষকে এক ভাবতে পারলেই খোদা এক হয়ে যায়।
নজরুল বলেন- কেন খুজে ফির দেবতা ঠাকুর মৃত পুথি কংকালে
হাসিছেন তিনি অমৃত হিয়ার নিভৃত অন্তরালে।।
যদি কোরান এর বাক্য(রুপক) বুঝতে সমস্যা মনে হয় তাহলে লালন এর গান পড়ুন, শুনুন, বা নজরুল- অথবা যাননা রবী ঠাকুরের কবিতা গানে,,,,, একই কথাই আপনার ভাষায় পাবেন- যদিও গভির ঐ জ্ঞান পাইতে অবশ্যই একজন জ্ঞানীর কাছে যেতেই হবে।
লালন যেমন বলছেন- যে রাসুল, তিনিত খোদা, মুর্শিদও সেই হয়, এই কথা লালন না কোরান কয়,,,,
ঠিকিত। লালন শুনেছি ব-কলমহীন মানুষ অথচ কোরানের কথা কি সুন্দর করে নিজের গানে নিয়ে আসলেন। তিনি কোরান পড়েছেন বলে আমি জানিনা। কোরানের সুরা নিসা এর ১৫০ থেকে ১৫২ একটু পড়েনত? দেখুন এই কথাই আছে।
লা্লন এ কোন কোরানের কথা বললেন? এটাও জানার বিষয় বটে।
যাইহোক নারী মানেই জৈবিক ভোগি নারি নয়। অনেক জ্ঞান আছে।।।যদিও মোহাম্মদ (সাঃ) এর চির শত্রু দ্বারা এই কোরানের ব্যাখ্যা তফসির, অর্থ, সংকলন, প্রচার প্রসার হয়ে আসছে, এবং ঐ সকল পুথিবিদ্যা ধারী আলেম দিয়ে আজও ইহা রক্ষিত।।।
ধন্যবাদ
@russell,
ভাই, এত কথা কইলেন..এত্ত এত্ত সব মহামানব দের কাছে যাইতে কইলেন কিন্তু কামের কাম যে কথাডায় হইব হেইডা তো কইয়া গ্যালেন না। মহামানব এর সংগা কি ভাইজান? কেডা যে মহামানব হেইয়া ক্যমনে বুঝুম? এট্টু দ্যাহাইয়া দিয়া যান। আমার মন ক্যান যানি কইতাছে যে, য্যায় কোরানের সাপোর্ট কইরা কথা কইব হ্যায়ই আসল জ্ঞানী। কি ভাইজান হাছা কইছি না?
তয় আফনে দ্যাহাইয়া না গ্যালেও এইবারে মনে হইতাছে আসল জ্ঞানীর সন্ধান পাইছি। কারন যারা প্রকৃত জ্ঞানী হ্যারা জম্মেও নিজেরে জ্ঞানী কইবার চায়না। ঠিক কইছি না ভাইজান? আফনের দ্যাহা পাইয়া মনে আনন্দের উথাল পাথাল ঢেউ উঠলেও এহন যেন ক্যামন আবার সব মিয়াইয়া গ্যাছে। কি সব কি আধ্যাত্মিক না কি সব জ্ঞানের কথা কইলেন বুঝতে আরি নাই। ভাই, আধ্যাত্মিক জ্ঞান কি জিনিস? প্রাকৃতিক জগতে কিরম কইরা আধ্যাত্মিক ঘটনা ঘটে, হেইয়া থিওরী সহ প্রাকটিক্যাল দ্যাখতে চাই।
ভাই প্রতিদিনই এই মুক্তমনায় অনেক লোকের দ্যাহা পাই, ভাবি যে আইজক্যা পাইছি। আইজক্যা আমার জ্ঞান তৃষ্ণা নিবারন করুমই করুম। কিন্তু পোড়া কপাইল্ল্যা আমি, আমার, এই পোড়া কপাল দেইখা কেউ আর আয় না মোর ধারে। একখান উচ্চমার্গের জ্ঞানের কথা কইয়াই হেইডা না বুঝাইয়া দিয়া প্রস্থান করেন। ভাই আফনের পায়ে পড়ি, আফনেও মোর লগে এইরম কইরেনা। যদি না জানেন তয় অন্তত এইডুক কয়েন যে, আফনে কোত্থেইকা পাইলেন এই জ্ঞনের সন্ধান।
বড়ই কৃতার্থ হইতাম।
@মিঠুন,
মহামানব এর কি সংগা দিব? অসীম নিরপেক্ষ জ্ঞান, চৈতন্য জগতের জ্ঞান, যিনি মনজগতের পথপ্রদর্শক ও সঠিক জ্ঞান দিতে সক্ষম, তিনি মুলত মহামানব বলা যেতে পারে, যদিও এই সংগা এইখানেই সীমাবদ্ধ নয়। এই মহামানবের সন্ধান মুলত ভাগ্যের ব্যপার দাড়ায়। ইহা অতি সাধনার দ্বারা পাওয়া যেতে পারে। যেমন তৃষ্ণার্ত, – সে খুজে নদীর সন্ধান, নদী কখনোই তৃষ্ণার্তের কাছে আসবেনা। কিন্তু নদীর নিকট তৃষ্ণার্ত গেলে নদী কখনোই পানি দিতে কৃপনতা করেনা, কেননা তার সংযোগ থাকে সমুদ্রের সহিত। তেমন সেই জ্ঞান রাজ্যে, প্রেমের সেই অসীম সাগরে ভাসতে সেই মানুষের সন্ধানে বের হতে হয়, যেই মা্নুষ আপনার ভিতর খুজে, পরিচয় করিয়ে দেখাবে আপনেও এক, আপনেও অদ্বিতীয়। আপনেই নিরাকার, আপনেই আবার আকার। লালন বলেন- নিরাকারে ব্রক্ষা হয় সে , আকার সাকার হয় সে- আপনেও নিরাকারে ছিলেন? আকারে আপনেও এসেছেন। যাইহোক এইসকল কথা।
মুলত উপরের লেখা বা আমার দেয়া ঐ লিংক সবই উপলব্ধি মূলক লেখা। ইহা একবার পড়ে কোনই লাভ হবেনা, ইহা আমি অহঙ্কার দিয়ে বলছিনা। যতবার পড়বেন ততবার কিছুনা কিছু জানবেন আশা রাখি।উপলব্ধি দিয়ে পড়ুন, আশা রাখি চিন্তার খোরাক দেয়া আছে- ্লিংক দেয়া লেখাটি পড়ুন।
যেই জ্ঞান আপনাকে আপনার নিজেকে চিনতে জানতে তথা স্রষ্টার পরিচয় লাভের সন্ধান দেয় তাকে সেই জ্ঞানকে আধ্যাত্নজ্ঞান বলা যেতে পারে – যদিও এখানেও ইহা সীমাবদ্ধ কোন উত্তর নয়।
ধন্যবাদ
@russell,
ভাই, আপনার কথা ভাল বোধগম্য হলো না। কোরানে আল্লাহ বলছেন- আমি কোরানকে সহজ করে প্রকাশ করেছি যাতে সবাই বুঝতে পারে। বস্তুত সত্যি সত্যি আপনি কোরান যদি পড়ে থাকেন বিষয়টাও সত্য। খুব সহজ সরল ভাষায় লেখা। কিন্তু যদি আপনি আরবী না জানেন অথচ আরবী কোরান পড়ে অর্থ বুঝতে যান তাহলে তো তা কঠিন ও দুর্বোধ্য লাগবেই। আর এ কারনে আপনি যদি তথাকথিত ইসলাম পন্ডিতদের কাছে গিয়ে ইসলাম শিখতে বলেন তাহলে তো সমস্যা। আমাদের সমস্যাই তো ওখানে। তথাকথিত ইসলামী পন্ডিতরা তো কোরান হাদিসের বিকৃত ব্যখ্যা করে চলেছে অহরহ। যেমন ধরেন আপনাদের কাছে আজকের জাকির নায়েক বা হারুন ইয়াহিয়ারা মহান ইসলামী পন্ডিত। অথচ আমরা দেখছি তারা অহরহ কোরানের অপব্যখ্যা দিয়ে চলেছে, সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য বলে প্রমান করার চেষ্টা করে চলেছে। সমস্যাটা ওখানেই। গোটা কোরানের সব যায়গাতেই বলা হয়েছে- পৃথিবী হলো একটা সমতল চ্যাপ্টা যায়গা, অথচ এই সব জাকির নায়েকেরা হঠাৎ করে কোরানের মধ্যে পৃথিবী নাকি উট পাখির ডিমের মত আবিষ্কার করে বসল। তার পরেও কিন্তু বিষয়টা সত্য না, কারন পৃথিবী ডিমের আকৃতির নয়।দেখুন, এত চেষ্টা করেও জাকির মিয়ারা পৃথিবীকে কমলালেবু বা আপেলের মত আকৃতির করতে পারে নি কারন কোরানে সত্যি সত্যি পৃথিবীকে চ্যাপ্টা সমতল আকৃতির বলা হয়েছে। আর আরবী কেন কোন ভাষাতেই চ্যাপ্টা আর গোলাকার আকৃতির শব্দ একই হতে পারে না। যে কারনে নানান রকম ধানাই পানাই করে জাকির গং রা পৃথিবীর আকারকে উট পাখির ডিমে নিয়ে ঠেকিয়েছেন। পুরোপুরি গোলাকার বা কমলালেবুর আকার এখনো বানাতে পারেনি। তবে যেভাবে তারা মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছে তাতে মনে হয় কিছুদিন পর তারা নিজেরাই কোরান লিখে পাবলিকের সামনে বলে বেড়াবে যে আগের কোরান ঠিক ছিল না, তাদের টাই সঠিক আর এজন্যই আল্লাহ তাদের ধরাধামে পাঠিয়েছেন। বুঝেছেন? একটা উদাহরন দেই-
নজিদেরে ইচ্ছা অনুযায়ী দুই-দুই, তনি-তনি ও চার-চার রমনীকে ববিাহ কর, কন্তিু তোমরা যদি আশংকা কর য,ে সমতা রা করতে পারবিে না, তদবস্থায় একই স্ত্রী কংিবা তোমাদরে অধীনস্ত দাসী; ইহা অবচিার না হওয়ারই অতি নকিটতর। সূরা-৪: নসিা, আয়াত:৩
এ সুরা স্পষ্টভাবে বলছে একজন পুরুষ চারটা নারী বিয়ে করতে পারে যদি সমতা রক্ষা করতে পারে। আমি জাকির মিয়ার একটা অনুষ্ঠানে দেখেছি শুধুমাত্র উক্ত আয়াতটি উল্লেখ করে খুব আত্মবিশ্বাসের সাথে বলছে- একমাত্র কোরানই সর্বপ্রথম একজন পুরুষকে একজন নারীকে বিয়ে করতে বলেছে কারন যেহেতু সমতা রক্ষা করা সম্ভব নয় তাই ইচ্ছে থাকলেও একজনের বেশী বিয়ে কেউ করতে পারবে না। আপনি যদি অন্য কোন সুরা না জানেন তাহলে আপনি খুব সহজেই জাকির মিয়ার ফাদে পড়ে তাকে বিশ্বাস করতে পারেন আর মনে করতে পারেন জাকির মিয়া হলো একবিংশ শতাব্দীর এক নয়া পয়গম্বর। এখন এ আয়াতটি দেখেন-
তোমরা কখনো স্ত্রীগনের মধ্যে সমতা রক্ষা করতে পারবে না যদিও লালায়িত হও, তবে সামগ্রিকভাবে ঝুকিয়া পড়িও না যে অপর স্ত্রীকে ঝুলানবৎ করিয়া রাখিবে এবং যদি সংশোধন কর এবং উভয়ে যদি পৃথক হইয়া যায়, তবে আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাকারী দয়াল্।ূ এবং যদি উভয়ে পৃথক হইয়া যায় তবে আল্লাহ আপন উদারতায় প্রত্যেককে অমুখাপেক্ষি করিয়া দিবেন। সূরা-৪ নিসা, আয়াত: ১২৯-১৩০
খেয়াল করুন –তবে সামগ্রিকভাবে ঝুকিয়া পড়িও না- একথা বলে কিন্তু একথাই বুঝানো হচ্ছে যে চারটা বিয়ে করা যাবে কিন্তু কারও খুব বেশী ঝুলে পড়া যাবে না। তো এটা তো খুবই বাস্তব যে একসাথে চার পাচটা বৌ থাকলে সবাই কে সমান নজরে দেখা যায় না , কাউকে একটু বেশী কাউকে একটু কম ভাল লাগে আর এটা বুঝেই আল্লাহ মোহাম্মদকে সমাধান দিচ্ছেন যে , ঠিক আছে চার টা বৌ রাখ তবে কারও প্রতি খুব বেশী ঝুকে পড়ো না। তার অর্থ আগের আয়াতে যে কথা বলা হয়েছে পরের আয়াতে তাকে হালকা করে বহুবিবাহকে হালাল করে দেয়া হলো। ধূর্ত জাকির নায়েক এ আয়াতটি কিন্তু আর উল্লেখ করে না বহুবিবাহ সমস্যার সমাধানের সময়। এর পরেও যদি কাউকে এবেবারে পছন্দ না হয় তাহলে তাকে তালাক দিয়ে দেয়ার কথা বলছে আলোচ্য সূরাতে। আর এ তালাকের অধিকারটাও কিন্তু স্বামী প্রবরটির। তাহলে ভাই , ইসলাম কোথায় নারীদের সম্মান দিল? আর এসব তো আমরা কোরান পড়েই জানতে পারি ? এসব জন্যে আমাদেরকে কোথায় যেতে হবে ? তাহলে আমরা লেখা পড়া করলাম কেন? শিক্ষিত হলাম কেন ?
@russell,
ভাই, আপনার কথা ভাল বোধগম্য হলো না। কোরানে আল্লাহ বলছেন- আমি কোরানকে সহজ করে প্রকাশ করেছি যাতে সবাই বুঝতে পারে। বস্তুত সত্যি সত্যি আপনি কোরান যদি পড়ে থাকেন বিষয়টাও সত্য। খুব সহজ সরল ভাষায় লেখা। কিন্তু যদি আপনি আরবী না জানেন অথচ আরবী কোরান পড়ে অর্থ বুঝতে যান তাহলে তো তা কঠিন ও দুর্বোধ্য লাগবেই। আর এ কারনে আপনি যদি তথাকথিত ইসলাম পন্ডিতদের কাছে গিয়ে ইসলাম শিখতে বলেন তাহলে তো সমস্যা। আমাদের সমস্যাই তো ওখানে। তথাকথিত ইসলামী পন্ডিতরা তো কোরান হাদিসের বিকৃত ব্যখ্যা করে চলেছে অহরহ। যেমন ধরেন আপনাদের কাছে আজকের জাকির নায়েক বা হারুন ইয়াহিয়ারা মহান ইসলামী পন্ডিত। অথচ আমরা দেখছি তারা অহরহ কোরানের অপব্যখ্যা দিয়ে চলেছে, সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য বলে প্রমান করার চেষ্টা করে চলেছে। সমস্যাটা ওখানেই। গোটা কোরানের সব যায়গাতেই বলা হয়েছে- পৃথিবী হলো একটা সমতল চ্যাপ্টা যায়গা, অথচ এই সব জাকির নায়েকেরা হঠাৎ করে কোরানের মধ্যে পৃথিবী নাকি উট পাখির ডিমের মত আবিষ্কার করে বসল। তার পরেও কিন্তু বিষয়টা সত্য না, কারন পৃথিবী ডিমের আকৃতির নয়।দেখুন, এত চেষ্টা করেও জাকির মিয়ারা পৃথিবীকে কমলালেবু বা আপেলের মত আকৃতির করতে পারে নি কারন কোরানে সত্যি সত্যি পৃথিবীকে চ্যাপ্টা সমতল আকৃতির বলা হয়েছে। আর আরবী কেন কোন ভাষাতেই চ্যাপ্টা আর গোলাকার আকৃতির শব্দ একই হতে পারে না। যে কারনে নানান রকম ধানাই পানাই করে জাকির গং রা পৃথিবীর আকারকে উট পাখির ডিমে নিয়ে ঠেকিয়েছেন। পুরোপুরি গোলাকার বা কমলালেবুর আকার এখনো বানাতে পারেনি। তবে যেভাবে তারা মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছে তাতে মনে হয় কিছুদিন পর তারা নিজেরাই কোরান লিখে পাবলিকের সামনে বলে বেড়াবে যে আগের কোরান ঠিক ছিল না, তাদের টাই সঠিক আর এজন্যই আল্লাহ তাদের ধরাধামে পাঠিয়েছেন। বুঝেছেন? একটা উদাহরন দেই-
নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী দুই – দুই, তিন-তিন, চার-চার রমনীকে বিবাহ কর, কিন্তু তোমরা যদি আশংকা কর যে , সমতা রক্ষা করতে পারবে না, তদবস্থায় একই স্ত্রী কিংবা তোমাদের অধীনস্ত দাসী, ইহা অবিচার না হওয়ারই অধিক নিকটতর। সূরা-৪: নিসা, আয়াত: ৩
এ সুরা স্পষ্টভাবে বলছে একজন পুরুষ চারটা নারী বিয়ে করতে পারে যদি সমতা রক্ষা করতে পারে। আমি জাকির মিয়ার একটা অনুষ্ঠানে দেখেছি শুধুমাত্র উক্ত আয়াতটি উল্লেখ করে খুব আত্মবিশ্বাসের সাথে বলছে- একমাত্র কোরানই সর্বপ্রথম একজন পুরুষকে একজন নারীকে বিয়ে করতে বলেছে কারন যেহেতু সমতা রক্ষা করা সম্ভব নয় তাই ইচ্ছে থাকলেও একজনের বেশী বিয়ে কেউ করতে পারবে না। আপনি যদি অন্য কোন সুরা না জানেন তাহলে আপনি খুব সহজেই জাকির মিয়ার ফাদে পড়ে তাকে বিশ্বাস করতে পারেন আর মনে করতে পারেন জাকির মিয়া হলো একবিংশ শতাব্দীর এক নয়া পয়গম্বর। এখন এ আয়াতটি দেখেন-
তোমরা কখনো স্ত্রীগনের মধ্যে সমতা রক্ষা করতে পারবে না যদিও লালায়িত হও, তবে সামগ্রিকভাবে ঝুকিয়া পড়িও না যে অপর স্ত্রীকে ঝুলানবৎ করিয়া রাখিবে এবং যদি সংশোধন কর এবং উভয়ে যদি পৃথক হইয়া যায়, তবে আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাকারী দয়াল্।ূ এবং যদি উভয়ে পৃথক হইয়া যায় তবে আল্লাহ আপন উদারতায় প্রত্যেককে অমুখাপেক্ষি করিয়া দিবেন। সূরা-৪ নিসা, আয়াত: ১২৯-১৩০
খেয়াল করুন –তবে সামগ্রিকভাবে ঝুকিয়া পড়িও না– একথা বলে কিন্তু একথাই বুঝানো হচ্ছে যে চারটা বিয়ে করা যাবে কিন্তু কারও খুব বেশী ঝুলে পড়া যাবে না। তো এটা তো খুবই বাস্তব যে একসাথে চার পাচটা বৌ থাকলে সবাই কে সমান নজরে দেখা যায় না , কাউকে একটু বেশী কাউকে একটু কম ভাল লাগে আর এটা বুঝেই আল্লাহ মোহাম্মদকে সমাধান দিচ্ছেন যে , ঠিক আছে চার টা বৌ রাখ তবে কারও প্রতি খুব বেশী ঝুকে পড়ো না। তার অর্থ আগের আয়াতে যে কথা বলা হয়েছে পরের আয়াতে তাকে হালকা করে বহুবিবাহকে হালাল করে দেয়া হলো। ধূর্ত জাকির নায়েক এ আয়াতটি কিন্তু আর উল্লেখ করে না বহুবিবাহ সমস্যার সমাধানের সময়। এর পরেও যদি কাউকে এবেবারে পছন্দ না হয় তাহলে তাকে তালাক দিয়ে দেয়ার কথা বলছে আলোচ্য সূরাতে। আর এ তালাকের অধিকারটাও কিন্তু স্বামী প্রবরটির। তাহলে ভাই , ইসলাম কোথায় নারীদের সম্মান দিল? আর এসব তো আমরা কোরান পড়েই জানতে পারি , না কি ? এসবের জন্যে আমাদেরকে আবার কোথায় যেতে হবে ? তাহলে আমরা লেখা পড়া করলাম কেন? শিক্ষিত হলাম কেন ? তাহলে তো আপনার আমার শিক্ষালাভই অর্থহীন , তাই না ?
@ভবঘুরে,
জাকির নায়েক কি করে সব পুরুষমানুষের খবর রেখে বলে দিতে পারেন যে চারটা নারী বিয়ে করলে সমতা রক্ষা করা সম্ভব নয়। সমতা রক্ষা করার মাপকাঠি কি বা কে এটার মান নির্ধারন করবে? সোজা কথা কেউ যদি একের অধিক বিয়ে করতেই চায়, সে সমতা রক্ষা করার একটা মাপকাঠি নিজের মনমতো তৈরী করে নিবে, তারপর মনে করবে যে, সে যেহেতু সমতা রক্ষা করতে সক্ষম, সুতরাং ধর্ম অনুযায়ী সে একের অধিক বিয়ে করতেই পারে।
ধর্ম বলেছে,
সুতরাং কেউ আশংকামুক্ত হলে ধর্ম অনুযায়ী চারটা বিয়ে করতে বাঁধা কোথায়? তাই জাকির নায়েকের উক্তি “ইচ্ছে থাকলেও একজনের বেশী বিয়ে কেউ করতে পারবে না” ধোপে টিকেনা।
@ভবঘুরে
পুরুষদের জন্য আছে ৭০ টা তর তাজা যৌবনবতী হুর, আর নারীদের জন্য কি আছে? কলা ছোবড়া , তাই না ?
কলা ছোবড়া! বহুত দুঃখের কথা ভাই।
ভবঘুরে
পুরুষদের জন্য আছে ৭০ টা তর তাজা যৌবনবতী হুর, আর নারীদের জন্য কি আছে? কলা ছোবড়া , তাই না ?
কলা ছোবড়া! বহুত দুঃখের কথা ভাই।
shahbaz nazrul
আপনি ভাই খুব সত্য কথা বললেন যার নিহিতার্থ সম্ভবত আপনি নিজেই বুঝতে পারেন নি। বুঝলে একথা আপনি বলতেন না। আসলে এভাবেই সত্য কথা মনের অগোচরে বেরিয়ে পড়ে।একেই বলে অতি চালাকের গলায় দড়ি। আপনার বক্তব্য যদি সঠিক হয় তাহলে তথাকথিত ইসলামী পন্ডিতরা কেন গলা ফাটিয়ে চিল্লাচিল্লি করছে যে ইসলাম নারীকে সীমাহীন মান সম্মান প্রদান করেছে? ধানাই পানাই না করে সোজা বলে দিলেই তো হয় যে ইসলাম নারীকে মোটেও পূর্নাঙ্গ মানুষ হিসাবে গন্য করেনি আর তাই তাদের অত মান সম্মান দেয়ারও দরকার নেই। আমাদের বক্তব্য অত্যন্ত পরিষ্কার আর তা হলো- আমরা ভাল করে ঘেটে দেখেছি কোরান বা হাদিস নারী জাতিকে সামান্য কিছু সম্পত্তি দেয়া ছাড়া আর কোন ভাবেই ইজ্জত প্রদান করে নি। আর তা ছাড়া বেহেস্তেও তো নারীদের জন্য কোন সুবন্দোবস্ত নেই। পুরুষদের জন্য আছে ৭০ টা তর তাজা যৌবনবতী হুর, আর নারীদের জন্য কি আছে? কলা ছোবড়া , তাই না ?
“যে ব্যক্তি ভাল কাজ করবে, হোক সে পুরুষ কিংবা নারী, এবং সে ঈমানদার হবে, এরূপ লোক জান্নাতে দাখিল হবে, আর তাদের প্রতি বিন্দুমাত্র অবিচার করা হবে না।” (আন-নিসা ৪:১২৪)
উপরোক্ত্ আয়াতের অর্থ নাকি নারী পুরুষকে সমান মর্যাদা দেয়া হয়েছে। যে কেউ ভাল কাজ করলেই তাকে জান্নাতে দাখিল করা হবে, তার মধ্যে সমান মান মর্যাদা প্রদান কেমন করে করা হলো ? এক্ষেত্রে আল্লাহ বিন্দুমাত্র অবিচার করবেন না , তো তাতে কি বুঝা যায় যাদের প্রতি তিনি অবিচার করবেন না তারা সবাই পরস্পর মান মর্যাদায় সমান ? একজন ভিক্ষুক যদি ভাল কাজ করে তাকে বেহেস্তে নসিব করা হবে, একজন রাজাও যদি ভাল কাজ করে তাকেও বেহেস্তে নসিব করা হবে, তাই বলে বাস্তবে একজন ভিক্ষুক আর রাজার মান মর্যাদা কি সমান ?
—
লেখক একজন ভিক্ষুক আর রাজার মর্যাদা কিভাবে সমান বা অসমান তা বুঝতে পারছেননা, কেননা উনি কেবল এই জীবণের আলোকেই সফলতাকে বিচার কতে চাইছেন। হ্যাঁ, একজন রাজা আর একজন ভিক্ষুকের মর্যাদা কিংবা প্রাপ্তি সমান, যদি তাঁরা জান্নাতের একি স্তরে পৌঁছান। এই জীবনে কে কি পেলো, ইসলামের দৃষ্টিতে তা দিয়ে সফলতাকে নিরূপণ করা হয় না।
@shahbaz nazrul,
ভাই, অলীক পরকালের লোভ বা ভয় দেখিয়ে কি ফায়দা হবে? পরকালের লোভে বা ভয়ে যদি আপনার মধ্যে কোন সুনীতিবোধেরও জন্ম হয়, তবে সেই নীতিবোধ শ্রদ্ধার যোগ্য নয়। পরকাল নিয়ে আমার কোন মাথাব্যাথা নাই।তার থেকে আসুন, ওসব অলীক স্বপ্ন দেখিয়ে এজগতে ইসলাম আমাদের কাকে কি করার হুকুম দিচ্ছে, আর কাকে কিরকম মর্যাদা দিচ্ছে তা বিশ্লেষনে মনযোগী হই।
ধন্যবাদ।
@shahbaz nazrul,
এই জীবনে কে কি পেলো, ইসলামের দৃষ্টিতে তা দিয়ে সফলতাকে নিরূপণ করা হয় না।
ভাই, ইসলামের দৃষ্টিতে পৃথিবীর এই জীবনে সফলতা কি দিয়ে নিরূপণ করা হয় তার একটা ক্রমিকানুসারে লিস্ট দিলে ভাল হয়।
"এই জীবনে কে কি পেলো, ইসলামের দৃষ্টিতে তা দিয়ে সফলতাকে নিরূপণ করা হয় না।"
ইসলামী দর্শনে ইহকালের তেমন মূল্য নেই পরকালই আসল। এতে তেমন সমস্যা নেই। মুশকিল হল এই পরকালের ছুতো দেখিয়ে দুনিয়ায় অন্যায় অবিচার বা অযৌক্তিক তত্ত্ব হালাল করার চেষ্টা করা হলে। সবার আসল বিচার পরকালে হবে। এই বিশ্বাস নিয়ে বসে থেকে দুনিয়া থেকে জেল ফাঁসি তুলে দেবেন? পরকালে যখন ন্যায্য বিচার হবেই তখন বেহুদা এ দুনিয়ায় এসব হ্যাপা পোহানো কেন? অন্তত মুসলমান বা পরকালে বিশ্বাসী অপরাধীদের এ সুবিধে দেয়াই যায়।
ধনী মুসলমানেরাই বা কেন তাদের স্বর্বস্ব গরীব লোকের খেদমতে বিলিয়ে দিয়ে পথের ফকিরে পরিনত হচ্ছেন না? ইহজীবনের সফলতা যখন কিছুই নয়? পরকালে তো ভিক্ষুক ও আমীরের মর্যাদা একই।
মহিলাদের উদেশ্যে যতসব মধ্যযুগীয় মূল্যবোধের অমানবিক কালাকানুন হালাল করবেন পরকালে তারাও বেহেশতে যাবার সম অধিকার রাখে এই বিশ্বাসে?
কুকুর ও গাধা যে অতি নিকৃষ্ট ধরনের প্রাণী তা আমরা মনুসংহিতা থেকেই জানতে পারি-
@ ভবঘুরে
"আয়শা থেকে বর্নিত, আমাকে বলা হয়েছিল কি কি জিনিস নামাজকে নষ্ট করে। সেগুলো হলো –কুকুর, গাধা ও নারী। সহী বুখারী, বই-৯, হাদিস-৪৯৩"
" এক বুদ্ধ মন্দিরে দেখেছিলাম "এখানে কুকুর ও নারীর প্রবেশ নিষেধ"
কোণো পার্থক্য পেলাম না। দারুন বলেছেন।
চলুক…
বিস্ময়ের সাথে দুটো ভিন্ন ভুবনের আশ্চর্য সাযুজ্যগুলো খেয়াল করছি !