নিমজ্জন
শায়লার দেয়া আরো একটি একঘেয়ে এবং অর্থহীন ককটেল পার্টির মাঝামাঝি সময়ে ইফতেখার এবং রাশেদ তাদের ব্যবসার আলোচনা শেষ করার জন্য সুপ্রশস্ত বারান্দায় চলে এলো। তারা দুজনে একসাথে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেক্ট্রিক এন্ড ইলেক্ট্রনিকসের উপর ডিগ্রি নিয়েছে। পাশ করার পরে দুজনেই আলাদাভাবে ইলেক্ট্রনিকস জিনিস আমদানী রপ্তানীর ব্যবসায় নেমে পড়ে। অসাধারন ব্যবসায়িক বুদ্ধির কারনে অল্প দিনেই সফলতার শীর্ষে চলে গেছে দু’জনে। ছাত্র জীবনে প্রগাঢ় বন্ধুত্ব থাকলেও বর্তমানে ব্যবসার প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারনে বেশ কিছুটা চিড় ধরেছে সেই সম্পর্কে ।
ইফতেখারের এই পেন্টহাউজ এপার্টমেন্টটি নিউ ইস্কাটনের অভিজাত এলাকায় অবস্থিত। বিশতলার এই বারান্দায় দাড়ালে ঢাকা শহরের দক্ষিণ দিকের এক বিশাল অংশ নজরে চলে আসে।
গরমের এই রাতে এতো উঁচুতে ঢাকা শহরের কোন দূষণই পৌঁছাতে পারেনি। শায়লার লাগানো বারান্দার চারপাশের ছোট্ট লাইলাকের ঝোপগুলো থেকে বের হয়ে মিষ্টি একটা সুবাস বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে চারিদিকে । হুইস্কির গ্লাস হাতে নিয়ে দুজনে বারান্দার রেলিং এর পাশে এসে দাড়ালো।
“শোন”, ইফতেখার বললো, আমাদের দুই কোম্পানীকে মার্জ করতেই হবে। ব্যবসার খাতিরেই এটা করতে হবে আমাদের। এই সহজ জিনিষটা তুই কেন বুঝতে পারছিস না, রাশেদ।”
“কেন বুঝতে পারব না। না বোঝারতো কিছু নেই। তুই কি ভাবিস আমি কিছু বুঝি না।” জড়ানো গলায় রাশেদ বললো। এর মধ্যেই খানিকটা মাতাল হয়ে গেছে সে । হাতের গ্লাসটাও ঠিকমতো সামলাতে পারছে না । “কিন্ত কথা হচ্ছে যে আমি তো তোকে ঘেন্না করি । চরমভাবে ঘেন্না করি । তোর সাথে লাভ ভাগাভাগি করার কোন ইচ্ছাই যে আমার নেই, শালা ।”
“আমিও তোকে ঘেন্না করি ।” ইফতেখার তিক্তস্বরে বললো। “কিন্তু সেটা নিয়ে চিন্তা না করলেও চলবে । ব্যবসার জন্য ওটা অপ্রাসঙ্গিক।”
“ অপ্রাসঙ্গিক? তাই বুঝি?”
“হ্যাঁ, তুইও তা জানিস। চায়না, জাপান, তাইওয়ান, কোরিয়া, ইন্ডিয়া যেভাবে সস্তায় মার্কেটে জিনিস ছাড়ছে তাতে এখন ব্যবসায় টিকে থাকাই মুশকিল হয়ে পড়ছে। তা ছাড়া সরকারী ভর্তুকিও তুলে নেওয়া হয়েছে । এই অবস্থায় একটাই মাত্র কোম্পানী টিকে থাকতে পারবে বাংলাদেশে ।বুঝতে পারছিস, উজবুক কোথাকার।”
“ঠিক তাই ।” বুকে হাত ঠুকলো রাশেদ । “এই শর্মারটাই টিকে থাকবে, তোরটা না।”
“গাধামি করিস না। যতক্ষন আমি আমার কোম্পানী চালু রাখছি ততক্ষন তুই লসই খাবি । অবশ্য আমারও লস হবে ।” ইফতেখার তার দু’হাত ছড়িয়ে দিয়ে কিছুটা রাগ আর কিছুটা অনুনয়ের সুরে বললো, “দেখ, তোর আর আমার কোম্পানীত দেশের সবচেয়ে সেরা ইঞ্জিনিয়াররা রয়েছে। আয় ওদেরকে একসাথে জড়ো করি। অপ্রয়োজনীয় লোকজন, যন্ত্রপাতি, জায়গা-জিরাত কমিয়ে ফেলি। দেখবি এক বছরের মধ্যেই বিরাট লাভ করতে পারবো।”
“বললাম না তোর সাথে লাভ ভাগাভাগি করার কোন ইচ্ছাই নেই আমার।” আরো জড়ানো স্বরে রাশেদ বলে।
“নেই?” অবাক হয়ে ইফতেখার কিছুক্ষনের জন্য রাশেদকে পর্যবেক্ষন করলো। “আমি বুঝতে পারছি না এতে তোর সমস্যাটা কোথায়। শায়লাকে ভাগাভাগি করতেতো তোর কোন সমস্যা দেখছি না।”
এধরনের বিষয়ে যে কথা উঠবে রাশেদ এটা একেবারেই আশা করেনি। বিস্ময়ে চমকে উঠলো সে। ইফতেখারের দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে গ্লাসে দীর্ঘ চুমুক দিলো। ইফতেখার ঠান্ডা চোখে রাশেদের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো।
“ফালতু প্যাচাল পারিস না।” দীর্ঘক্ষন পরে রাশেদ বললো।
“প্যাচাল? ক্যাদরামি করিস না।” ঝাজের সাথে ইফতেখার বললো। “ তোর আর শায়লার বিষয়টা আমি শুরু থেকেই সব জানতাম।”
“তুই বানিয়ে বানিয়ে বলছিস এসব।”
ইফতেখার কাধ ঝাকিয়ে নীরব হয়ে গেলো। রেলিং এ হেলান দিয়ে আলোকিত ঢাকা শহরের দিকে তাকিয়ে রইলো। সে খুব ভাল করেই জানে যে রাশেদ তার দিকে তাকিয়ে আছে। মনে মনে হাসলো ইফতেখার। রাশেদ চুপ করে থাকার মত বান্দা না। বিশেষ করে এরকম বিষয়ে যে চুপ করে থাকতে পারবে না তা সে ভালো করেই জানে।
আধ মিনিট যাওয়ার আগেই রাশেদ কথা বলে উঠলো, “ইফতি, তুই যদি শায়লা আর আমার মধ্যে কিছু সন্দেহই করে থাকিস তাহলে আগেই বলিস নাই কেন।”
“তার কোন প্রয়োজন আমি দেখি নাই। তুই শায়লার প্রথম শিকার না।”
রাশেদ আগুন চোখে ইফতেখারের দিকে তাকিয়ে বললো, “এটা তোর আরেকটা নোংরা মিথ্যা কথা, শালা।”
“না, মিথ্যা না।”
“শায়লা ওরকম মেয়েই না।”
“শায়লা শুধু ওরকমেরই না, তার চেয়েও খারাপ মেয়ে। তুই ওকে আমার চেয়ে বেশী চিনিস না।”
“আমি তোর কোন কথা বিশ্বাস করি না।”
“ঠিক আছে, বিশ্বাস করতে না চাইলে না করিস না।”
এবার নীরবতার পরিমান হলো আরো কম। পনেরো সেকেন্ড পরেই রাশেদ বললো, “তুই যা বলছিস তা যদি সত্যিই হয় তাহলে তুই ওকে ডিভোর্স দিচ্ছিস না কেনো?”
“আমি দিতে চাইলেইতো হবে না। ও আমাকে ডিভোর্স দেবে না। আমি ওকে অসংখ্যবার বলেছি। কিন্তু সে রাজী না। আমার মনে হয় আমাকে যন্ত্রনা দিয়ে ও সুখ পায়। যদিও শায়লা সেটা স্বীকার করে না।”
“তুই এমনভাবে বলছিস যেন শায়লা একটা……।” রাশেদ পুরোটা বাক্য শেষ করলো না।
“শায়লা একটা কি? বল শুনি শায়লা একটা কি।”
রাশেদ উত্তর না দিয়ে মাথা ঝাকালো।
“শোন, শায়লা কি আমি বলছি। ব্লাক উইডো মাকড়শার নাম শুনেছিস কখনো। মাদী মাকড়শা। সেক্সের পর এরা পুরুষ সঙ্গীকে খেয়ে ফেলে। শায়লা হচ্ছে ওই মাদী মাকড়শা। ব্লাক উইডো।”
রাশেদ ইফতেখারের দিকে হতভম্ব দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে । তার ভাবভঙ্গিই বলে দিচ্ছে যে ইফতেখারের কথায় তার ভেতরে তোলপাড় চলছে।
“তুই যেহেতু ওর সাথে এখন জড়িয়ে গেছিস কাজেই এতোদিনে নিশ্চয়ই সম্ভবত বুঝে গেছিস ও কি রকম। কে জানে তুই হয়তো এখন ওকে বাতিলের খাতায় নাম লেখাতে চাইছিস। ওর কবল থেকে মুক্ত হতে চাইছিস। কিন্তু ও তোকে মুক্তি দেবে না। দেবে কি? নিজে থেকে না ছাড়া পর্যন্ত হাজার চেষ্টা করলেও ওর হাত থেকে নিস্তার নেই তোর।” ইফতেখার বললো।
রাশেদ কাঁপা কাঁপা হাতে কপালের ঘাম মুছলো।
“মারুফের কথা তোর মনে আছে?”
“মারুফ? কোন মারুফ? “
“মারুফ হাসান। বছর দুয়েক আগে আমি যে একটা অল্পবয়েসি ইঞ্জিনিয়ার ছেলেকে চাকরি দিয়েছিলাম। তোর রিকমেন্ডেশনে। একদিন রাতে মাতাল হয়ে একশো কিলোমিটার গতিতে গাড়ী নিয়ে ইলেক্ট্রিকের খাম্বার সাথে ধাক্কা খেয়ে পটল তুলেছিলো। মনে আছে তোর?”
“মনে হয় কিছুটা মনে পড়ছে।”
“তুই কি জানিস কি জন্য মারুফ ওরকম বেহেড মাতাল হয়ে গাড়ী চালাচ্ছিলো।”
“তুই কি বলতে চাস ওটা শায়লার জন্য হয়েছে…”
“একেবারে ঠিক। ঠিক ওই কথাটাই আমি বলতে চাচ্ছি। শায়লার আরো অনেক শিকারের একটা শিকার হচ্ছে মারুফ । তবে অন্যদের চেয়ে ছোকরা অনেক বেশি দুর্বল আর দুর্ভাগা এই যা।”
গরমের রাত হওয়া সত্ত্বেও রাশেদের গায়ে হালকা কাঁপুনি এসে গেলো।
“তুই আমাকে এই সব বলছিস কেন? তুই যদি ভেবে থাকিস এগুলো বললেই আমি শায়লার কাছ থেকে সরে যাবো তা হলে ভুল করছিস।”
“না, তা ভাবছি না।” ইফতেখার বললো। “আমি তোকে এগুলো বলছি শুধুমাত্র একটাই কারনে। মার্জার। আমাদের দুই কোম্পানীর এক হয়ে যাওয়া। তুই যে আমার প্রস্তাবে রাজী হচ্ছিস না তা যে শায়লার কারনে সেটা পরিস্কার। শায়লা কোন এক অজ্ঞাত কারনে আমাদের মার্জারের পুরোপুরি বিপক্ষে। আমি নিশ্চিত যে সে তোর সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছে। এ ছাড়া আমার ধারনা গোপন প্রেমিকার স্বামীর সাথে পার্টনারশীপের ব্যবসা করার ব্যাপারে তোর খুব একটা উৎসাহ থাকারও কথা না।”
রাশেদ চুপ করে রইলো।
“দেখছিস ও তোকে কিভাবে অক্টোপাসের মতো বেঁধে ফেলেছে?” ইফতেখার বললো।
“শুধুমাত্র ওর জন্য তোর ব্যবসার লালবাতি ঠেকানোর যে একমাত্র পথ আছে সেটাও তুই ছুড়ে ফেলে দিতে চাচ্ছিস।”
ইফতেখার হঠাৎ করে কথা বলা থামিয়ে দিল। চোখের কোন দিয়ে দেখতে পেয়েছে শায়লা এদিকেই এগিয়ে আসছে। রাশেদের দিকে তাকিয়ে দেখলো সেও আড়ষ্ঠ হয়ে গেছে। নীল রঙ এর শাড়ীর সাথে হাতা কাটা একটা সাদা ব্লাউজ পরে সারা শরীরে বঙ্গোপসাগরের ঢেউ তুলে দুজনের মাঝখানে এসে দাড়ালো শায়লা। ঢেউ খেলানো লালচে চুলগুলো ছড়িয়ে আছে তার নগ্ন কাধে। শায়লার অসাধারণ সৌন্দর্য্য দেখে মনে মনে প্রশংসা না করে পারলো না ইফতেখার। রাশেদের আর কি দোষ। এরকম আগুন ঝরানো রূপ যৌবন দেখলে ছেলেরাতো পাগল হবেই।
“কোন ফাকে দুজনে পার্টি থেকে সটকে পড়েছো। ঠিকই ভেবেছিলাম বারান্দায় পাওয়া যাবে দু‘জনকে। নিশ্চয়ই দুই কোম্পানী এক করা নিয়ে শলা পরামর্শ হচ্ছে ।” ভ্রু কুচকে শায়লা বললো।
“সেরকম কিছু না। রাশেদের সাথে টুকটাক ব্যবসার আলাপ করছি, এই আর কি।” ইফতেখার হালকা গলায় বললো।
শায়লা ইফতেখারের কথা কিছু শুনেছে কিনা বোঝা গেলো না। সে তার আগের কথারই জের ধরলো।
“আমি এখনো মনে করি এটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত। তুমি কি আমার সাথে এ ব্যাপারে একমত না, রাশেদ?”
“আ-আ- আমি ঠিক শিওর না।” শায়লার দিকে না তাকিয়েই রাশেদ বললো। শায়লা তার পাশেই বেশি ঘনিষ্ঠ হয়ে দাড়িয়েছে। অস্বস্তি বোধ করছে রাশেদ। আড়চোখে ইফতেখারের দিকে তাকালো। ভাবলেশহীন চেহারা করে রেখেছে সে।
“অবশ্যই তুমি শিওর। কিন্ত বলতে চাচ্ছো না। তোমাদের দুজনের পার্টনারশিপে ব্যবসা করার মতো সম্পর্ক নেই। একজন আরেকজনকে দুই চোখে দেখতে পারো না তোমরা। কিভাবে একসাথে ব্যবসা করবে।” হালকা গলায় রিনরিন করে হাসলো শায়লা।
শায়লার ঠান্ডা হাসিতে অশুভ একটা কিছু ছিলো। ঘাড়ের সব লোম খাড়া হয়ে গেলো ইফতেখারের। শক্ত গলায় সে বললো, “মার্জারই একমাত্র সমাধান।”
“বুদ্ধু কোথাকার।” ধমক দিলো শায়লা। রাশেদের আরো কাছে ঘেসে দাড়ালো সে। তার নগ্ন কাঁধ রাশেদের বাহুতে গিয়ে ঠেকেছে।
“এটাই আমাদের একমাত্র আশা।” ইফতেখার জোর দিয়ে বলার চেষ্টা করলো। তবে, এখন সে আর শায়লার সাথে কথা বলছে না। রাশেদের সঙ্গে কথা বলছে। ” ব্যবসায় টিকে থাকতে গেলে এটা আমাদের করতেই হবে ।”
“না।” তীক্ষ্ণস্বরে প্রতিবাদ করলো শায়লা।
এক মুহুর্তের জন্য সব কিছু নীরব হয়ে গেলো। কেউ কোন কথা বলছে না। ইফতেখারই প্রথম নৈশব্দ্য ভাঙলো। ঠান্ডা চোখে ধীর স্বরে রাশেদের দিকে তাকিয়ে বললো “রাশেদ, তুই নিশ্চয়ই বুঝতে পারছিস আমি কি বলছি। তাই না?”
“হ্যাঁ।” বড় একটা নি:শ্বাস ছাড়লো রাশেদ। “বুঝতে পারছি তুই কি বলছিস।”
দুই বন্ধু পরস্পরের দিকে নি:শব্দে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষন। তারপর একই সাথে দুজনের চোখ চলে গেলো শায়লার দিকে। রেলিং এ হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে শায়লা । এক হাতে শ্যাম্পেনের গ্লাস। হালকা বাতাসে অল্প অল্প করে উড়ছে শায়লার লালচে চুল।
বিশ তলা থেকে পড়ে শায়লার মৃত্যুকে পুলিশ নিছক দুর্ঘটনা হিসাবেই মেনে নিলো। রাশেদ এবং ইফতেখার হুবহু একইভাবে শায়লা কিভাবে রেলিং এ বেশি ঝুকতে গিয়ে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গেলো তার সবিস্তার বর্ননা দিলো পুলিশকে। সন্দেহ করার মতো পুলিশের অবশ্য কোন কারণও ছিলো না। পার্টির কোন অতিথিই যে কিছু দেখেনি বা শোনেনি। পার্টিটা যতই একঘেয়ে হোক না কেন, হই হট্টগোলের তো কোন অভাব ছিলো না সেখানে।
শায়লার মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর সাকুরা বারে বসে আছে ইফতেখার ও রাশেদ। বোতল খুলে প্রথমে রাশেদের গ্লাসে হুইস্কি ঢাললো ইফতেখার। তারপর নিজেরটাও ভরে নিলো।
“আমরা সোমবারেই মার্জারের কাজটা সেরে ফেলবো। কি বলিস তুই?” সে বললো।
রাশেদ গম্ভীরভাবে মাথা নাড়লো “শুভস্য শীঘ্রম।”
ক্লান্তভাবে হাসলো ইফতেখার। হুইস্কির গ্লাস তুলে ধরে চিয়ার্স করলো, “ব্যবসার খাতিরে।”
রাশেদ ও তার গ্লাস তুলে ইফতেখারের গ্লাসে ঠুকে দিয়ে পাল্টা চিয়ার্স করলো, “ব্যবসার খাতিরে।”
Leave A Comment