All ideologies are idiotic, whether religious or political, for it is conceptual thinking, the conceptual word, which has so unfortunately divided man.
Jiddu Krishnamurti
বাংলা সংস্কৃতি এবং চিন্তার তিনটি প্রধান ধারা বর্তমানে খুব সুষ্পষ্ট। ধর্মীয় দক্ষিণপন্থী, বামপন্থী এবং সহজিয়া মানবতাবাদ। বিভাজন রেখা যে সব সময় খুব সুস্পষ্ট না-বরং তা ধুম্রজালিপ্ত।
গত তিন দশকে দুই বাংলাতেই শক্তিশালী ধর্মীয় রক্ষণশীল রাজনৈতিক সমর্থক শ্রেণীর উদ্ভব বাঙালি সমাজের করুন বাস্তবতা। পশ্চিম বাংলাতে তারা ক্ষমতা থেকে অনেক দূরে। কিন্তু সংখ্যার দিক দিয়ে তারা মোটেও নগণ্য না। আর বাংলাদেশেত তারা ক্ষমতায় ছিল দীর্ঘদিন। বাংলার বামপন্থী শক্তিগুলির সর্বান্তিক ব্যর্থতা দক্ষি্ণপন্থী শক্তির উথানের জন্যে দায়ী। অবশ্য এই ব্যর্থতার পেছনে বাম নেতৃত্বের দুষনকে গালাগাল দেওয়াটাও আমাদের অভ্যেস। কিন্তু ভুলটা আমাদের চিন্তাধারাতেই।
এর বাইরে বাঙালীর বিশাল অংশ আজকেও সহজিয়া। যার প্রতিনিধিত্ব করেছেন রবীন্দ্রনাথ, নজরুল এবং লালন ফকির। এটাই বাংলার মূলস্রোত। মার্ক্স, মহম্মদ এবং মনু যে বাঙালীর একটা বড় অংশেরই বদ হজম হয়েছে এবং তা বাঙালার সংস্কৃতির সাথে সম্পূর্ন বেমানান-তার জন্যে পাশের বাড়ির দিকে তাকালেই হবে। খুব বেশী গবেষণা করার দরকার নেই।
এবার মূল প্রশ্নে ফিরে আসি। এই ভাবে আমরা যে নিজেদের মধ্যে বাম ডান বিভাজন টানি-এটা কি ঠিক?
প্রতিটি ধর্মের উত্থানই কিন্ত তৎকালীন সমাজতান্ত্রিক বামপন্থী শক্তি হিসাবে। ইহুদি ধর্মের উৎপত্তি যেমন মিশরের দাস বিদ্রোহ থেকে, ঠিক তেমনই ইসলামের উত্থান তৎকালীন আরবের গরীবগুর্বোদের মক্কার ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে শ্রেনী বিদ্রোহ হিসাবে। ভারতের বৌদ্ধ এবং জৈন ধর্মের উত্থান ও নিঃসন্দেহে ইতিহাসের সাপেক্ষে অবশ্যই বামপন্থী চিন্তা। প্রতিটি ধর্মীয় প্রতিবাদি আন্দোলনের সাথেই সাম্য এবং নতুন চিন্তার জোয়ার এসেছে। তাতে অবশ্য মানব মুক্তি আসে নি। বরং ইসলাম বা খ্রীষ্ঠান ধর্মের ঘারে চেপেই সব থেকে বেশী মানব শোষন অব্যাহত। ভারতেও হিন্দুত্বের ঘারে চেপে ঠিকই একই ব্যাপারটাই চলছে। মার্ক্সবাদ তথা কমিনিউজমের ইতিহাসও আলাদা কিছু না। মানব মুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানবতার সব থেকে বড় দলন কমিনিউস্টরাই করেছেন। প্রতিবাদি আন্দোলনগুলি কেন মানবমুক্তির জন্যে ব্যার্থ হল সেই নিয়ে আগেই বিস্তারিত লিখেছি।
এমন নয় যে মার্ক্সবাদিরা ওপরে লাইনগুলো জানেন না। কিন্ত তাদের মূল সমস্যা হচ্ছে, তারাও দেখতে পাচ্ছেন না, কেন এক সময়ের প্রতিবাদি আন্দোনগুলি বর্তমানে প্রতিক্রীয়াশীল শক্তিতে রূপান্তরিত। এটা ঠিক করে দেখতে পেলেই, উনারা নিজেদের ভুলটা সবার আগে বুঝতেন। আর সেটা হল এই-জ্ঞান, বিজ্ঞান উন্নতির সাথে সাথে শোষণ এবং শোষক শ্রেনীর বিবর্তন হয়।
উৎপাদন ব্যাবস্থার পরিবর্তনই সমাজ এবং সামাজিক শক্তিগুলির পুনঃবিন্যাস করে। ফলে প্রতিবাদি আন্দোলনের ধারাটাও বদলে যেতে ব্যার্থ। এসব কথা মার্ক্সসাহেব অনেক দিন আগে থেকেই বলে গেছেন-কিন্ত তথাকথিত বাঙালী মার্ক্সবাদিরা মাছভাত আর মার্ক্সবাদের মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন বলে আমার কোন দিনই মনে হয় নি। ফলে বাঙালী বামপন্থী আন্দোলন এখন কোমাতে উঠে গেছে।
বাঙালী বামপন্থীদের চিন্তাশক্তির দৈন্যতা খুঁজতে জিডু কৃষ্ণমুর্তির কিছু কিছু কথা খুবই প্রাণিধানযোগ্য। এগুলো যারা দক্ষিন পন্থী রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন, তারা যদিও বা কিছুটা বোঝেন, বামপন্থীরা এই দিক গুলি নিয়ে একবারেই অবুঝ।
1. যার চিন্তায় স্ববিরোধিতা নেই-সে আসলে কোন চিন্তা করতেই জানে না। আমাদের মনের দ্বন্দগুলিই, মানসিক বিবর্তনের একমাত্র কারন। ইসলাম, হিন্দুত্ববাদি, কমিনিউস্টদের অধিকাংশই নিজেদের মত এবং পথকে এতটাই সঠিক বলে মনে করে-নিজেদের মনের মধ্যে যে দ্বন্দগুলির উৎপত্তি হয়-সেগুলিকে তারা গুরুত্ব দিতে নারাজ। অথচ, নিজেদের মনের দ্বন্দগুলি নিয়ে তারা যদি যথেষ্ঠ অনুসন্ধান করত-তাহলেই তারা নিজেদের স্বআরোপিত বন্দিত্ব দশা থেকে মুক্তি পেত।
2. দ্বিতীয় যে সমস্যাটা আমি আলোচনা করতে চাই-সেটা হচ্ছে সামাজিক সমস্যা বোঝার আগেই, তাহা বাইবেল, কোরান বা দাশ ক্যাপিটালে আছে, এই জাতীয় ভ্রান্ত চিন্তাধারা। ইসলামিস্ট, হিন্দুত্ববাদি এবং কমিনিউস্টদের সব থেকে বড় মিলন দৃশ্য ইহাই। আমাদের সবারই এটাই করুন অভিজ্ঞতা। যেকোন সমস্যার ব্যাপারে এদের সাথে আলোচনা করতে গেলে, দেখবন এরা ১০০% কনভিন্সড-তাদের রচিত ইসলামিক, হিন্দু বা কমিনিউস্ট স্বর্গে এই ধরনের সমস্যা থাকবে না! কেন এমন হয়? সমস্যাটাকে গভীরে বোঝার আগেই, নিজেদের রচিত মূর্খের এরা স্বর্গে সমাধান খোঁজে। আমি একটা সাম্প্রতিক উদাহরন টানি। ভারতে খাদ্যের দামের উর্দ্ধগতি এবং ঘাটতি ভীশন রকমের একটি বাস্তব সমস্যা। এটা নিয়ে বামেরা জেল ভরার আন্দোলন থেকে শুরু করে ইত্যাদি নাচুনি কুদুনি সব সব ধরনের সস্তার রাজনৈতিক পথ নাটিকা করে বেড়ালেন। অথচ এই ধরনের সমস্যার সমাধানের জন্যে যে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়াটি শুরু করার দরকার ছিল-সেটি নিয়ে কোন বামনেতৃত্বই ভাবলেন না। সামান্য হলেও কংগ্রেসের প্রণব বাবু সমস্যাটির রাজনৈতিক সমাধান না খুঁজে বিশেষজ্ঞ কমিটি বসিয়ে খাল বিল সংস্কার থেকে কৃষিগবেষনাতে টাকা ঢালার সিদ্ধান্ত নেন। সমাধানের জন্যে এই তীব্র আবেগ-আসলেই সমস্যাকে তীব্রতর করে-সমাধানের পথে নিয়ে যায় না। যেকোন সমস্যাকে গভীরে গিয়ে বিশ্লেষন করাই সমাধানের প্রথম এবং একমাত্র পথ।
3. আদর্শবাদ দিয়ে কোন সত্যেই পৌছানো যায় না। হিন্দুত্ব, ইসলাম, কমিনিউজম-মানুষকে কোন সত্যের পথে দেখাতে পারে না-কারন ওই ধরনের পরম সত্যের আদৌ কোন অস্তিত্ব নেই। বাস্তব এটাই প্রতিটা মানুষের জীবনে অনেক প্রশ্নেরই কোন উত্তর থাকবে না। এই অপূর্ণতা নিয়েই আমাদের জন্ম এবং মৃত্যু। অথচ যেকোন হিন্দুত্ববাদি, ইসলামিস্ট বা কমিনিউস্টদের মধ্যে যে মিলন দৃশ্যটি আপনি সবার আগে পাবেন-সেটি হচ্ছে এদের অগাধ আত্ম বিশ্বাস-এরা জীবনের প্রশ্নগুলির উত্তর পেয়ে গেছেন! এগুলো শ্রেফ অজ্ঞানতা এবং অগভীর চিন্তার মূর্খামি।
4. ইসলামিস্ট, কমিনিউস্ট এবং হিন্দুত্ববাদিদের মধ্যে আরো একটি সাদৃশ্য -ঐতিহ্য নিয়ে এদের সহমত। বামেরা বাম ঐতিহ্যে, ডানেরা ডান ঐতিহ্যে বিশ্বাসী। কেন? এর উত্তর সমাজ বিজ্ঞানে পাওয়া যায়। সবাই ক্লাব মেম্বারশিপ ভালো বাসে। কোন একটি প্রথাগত ধারায় বিশ্বাস করলে, সমর্থক এবং সহযাত্রী জোটে অনেক-যা মানুষের সামাজিক মুল্যবৃদ্ধির সহায়ক। টাকা পয়সার মতন এটাও একটি লোভ । রিপ্রোডাক্টিভ ফিটনেসের জন্যে আমরা সবাই “সমাজে নিজেদের কে ফিট করানোর চেষ্টা করি”। নিজেকে হিন্দু বলে জাহির করে যেমন আপনি একটা ক্লাবে ফিট করবেন, ঠিক তেমনই “সিপিমের সমর্থক” বা “আওয়ামী লীগের সমর্থক’ বললে আরেকটা ক্লাব মেম্বারশিপ আপনি পাবেন, যা নিজেদের সামাজিক মুল্যবৃদ্ধির জন্যে লোভনীয়। ট্রাডিশনের সাথে নিজেকে ‘ফিট’ করানোর এই চেষ্টা আসলে একধরনের মানসিক নিরাপত্তার জন্ম দেয়। কিন্ত এর একটা মারাত্মক কুঃপ্রভাব আছে। মনের বিবর্তনের জন্যে ক্লাব মেম্বারশিপের মাধ্যমে মানসিক নিরাপত্তার সন্ধান-আসলেই মানসিক উন্নতির অন্তঃরায়।
আরো কিছু লেখার ইচ্ছে ছিল। কিন্ত আশা করব, আপনার এখন বুঝতে পেরেছেন, হিন্দু, ইসলামিক বা কমিনিউস্টরা নিজেদের যতই আলাদা ভাবুক না কেন, তাদের মানসিক গঠন আসলেই এক প্রকৃতির। এখন প্রশ্ন তুলতেই পারেন, কমিনিউস্টরা বিজ্ঞানে বিশ্বাসী-তাদের সাথে কেন রূপকথায় বিশ্বাসী হিন্দুত্ববাদি বা ইসলামিস্টদের তুলনা টানছি?
এক্ষেত্রেও একটু ভেবে দেখলে দেখবেন, কমিনিউস্টদের চিন্তাধারার পেছনেও মর্গানের নৃতত্ত্বের রূপকথা বা ফ্রেডরিক এঞ্জেলেসের সামাজিক বিবর্তনের আষাঢ়ে গল্পই কাজ করছে, যা শতবর্ষ আগেই এক্যাডেমিক সার্কলে পরিতক্ত্য। সুতরাং আসলে, তারাও একধরনের রূপকথাতেই বিশ্বাস করছেন।
আসল সত্য হল, হিন্দুত্ববাদি বা ইসলামিস্ট বা কমিনিউস্টরা সবাই এক গোয়ালের গরু-শুধু এদের সময়কাল আলাদা। কেও ব্রজের বৃন্দাবনে বাঁশীর সুরে সামাজিক কংস বধের স্বপ্ন দেখে-কেওবা সপ্তম শতকের আরবে উটের দুধ খেতে খেতে আদর্শ ইসলামিক রাষ্ট্রের স্বপ্নে বিভোর-আর কমিনিউস্টরা বলশেভিক বিপ্লবের ন্যায় এক গণতন্ত্র হত্যাকারী প্রতিবিপ্লবকে সমাজতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠার সোপান বলে বিশ্বাস করে বসে আছে।
এদের মানসিক রোগটা একই গোত্রের। সেটা হল আধুনিক বিজ্ঞান এবং দর্শনশাস্ত্রে সম্পূর্ন অজ্ঞানতা।
The constant assertion of belief is an indication of fear.
Jiddu Krishnamurti
মধ্যপন্থি টা কি পরিষ্কার answer chai?
মার্কসের ব্যপারে হয়তো সত্যি। কিন্তু আমার সন্দেহ হচ্ছে ইসলাম অথবা মনুর ব্যপারে কি তা সত্য।
আমার যা অভজ্ঞতা তাতে তো মনে হয় প্রায় সব বাঙ্গালী ধর্মের অনুগত—রবীন্দ্রনাথ অথবা ্নজরুলের নয়। যাক, এই অনুমান হয়ত সম্পূর্ণ সঠিক নাও হতে পারে।
হাঁ, কথাগুলো খুব সত্যি।
@আবুল কাশেম,
সনাতন হিন্দুধরমের মুল গ্রন্থ “বেদ”। মনুসংহিতা নয়।
আপনার লেখাগুলো পরেছি। logical and solid.
বর্তমান আওয়ামি লীগের অন্তত তৃণমূল নেতাদের সাথে বিএনপি এমনকি জামাতের নেতাদেরও আদর্শগত কোন পার্থক্য দেখা যায়না। পশমওয়ালা ও টুপিওয়ালাই এখন আওয়ামিলীগের কান্ডারী।
তাই বকলমের কথাই ঠিক-
আওয়ামীলীগ বা বি এন পি কিছুতেই সহজিয়াদের প্রতিনিধিত্ব করেনা। এরা লুটপাট, আর ভোটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
আসলে বাংলাদেশের সহজিয়া মানবতাবাদিরা খড়কুটুর ন্যায় আওয়ামিলীগকে আশ্রয় করে এবং প্রত্যেকবারই প্রমাণ হয় যে আওয়ামিলীগ তাদের সঠিক পাত্র নয়।
বিপ্লব দা,
যেকোন মধ্যবিত্ত, নিজেকে প্রগতিশীল ভাবা, বাঙ্গালী মতই ছাত্র জীবনে স্বাভাবিকভাবে বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছিলাম। একটা সময়ে এসে এই উৎকট আদর্শবাদ ছেড়েও দিয়েছি। কিন্তু কিছু কথা থেকে যায়।
রাজনৈতিক শক্তির কথা যদি বলি তাহলে দেখি যে মধ্যপন্থী দলগুলো, যেমন আওয়ামীলীগ, বি এন পি তাদের প্রয়োজন অনুসারে ধর্মকে ব্যবহার করে। তারা মধ্যপন্থী হলেও মূলত ডান কেই বেছে নেবে ভোটের প্রয়োজনে। তাদের দলীয় নেতা কর্মী বা ছাত্রবাহিনী ব্যস্ত টেন্ডারবাজী, মারামারি,নেতাগিরি এসবে। আর ধর্মীয় ছাত্র সংগঠনগুলো তো তাদের স্বভাব সূলভ মৌলবাদ ছড়ানোতে ব্যস্ত।
ধরুন একটা ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে গেল। তার সামনে আছে তিন ধরনের ছাত্র সংগঠন। মৌলবাদী (শিবির), সুবিধাবাদী (ছাত্রলীগ, ছাত্রদল) এবং বামপন্থী। এ অবস্থায় আদর্শের বিচারে একজন ছাত্রের যদি রাজনীতি করতে হয় তাহলে তার সামনে ভাল উদাহরন হিসাবে বামপন্থী সংগঠন গুলোকেইতো আদর্শ মনে হওয়া উচিত। তাই নয় কি?
আরেকটা উপায় হল, সব কিছু থেকে দূরে থেকে একাডেমিয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকা। কিন্তু আমাদের মত দেশগুলোর পরিস্থিতিতে যেখানে রাষ্ট্র এবং প্রতিষ্ঠান ক্রমাগত অগনতান্ত্রিক কাজ করে চলেছে, সেখানে ছাত্রদের ও তো একটা সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে।
এই দায়বদ্ধতা পুরনে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর যে ক্রমাগত সংগ্রাম তার অবদান কি অস্বীকার করা যায়?
এক্ষেত্রে আরেকটু বলে নেই। পশ্চিমবংগের সি পি এম এর ক্যাডার ছাত্রবাহিনীর সাথে আমাদের দেশের ছাত্র ইউনিয়ন বা ছাত্রফ্রন্টের (এস ইউ সি আই – এর বাংলাদেশ সংস্করণ) রাজনীতির একটা পার্থক্য আছে। আমাদের দেশের বামপন্থীরা কখনো ক্ষমতায় যেতে পারেনি, ফলে আমার মনে হয় ক্ষমতা সংক্রান্ত দোষগুলো এদেরকে ততটা আচ্ছন্ন করতে পারেনি এখনো, যতটা করতে পেরেছে সিপিএম এর ক্যাডারদের।
এক্ষেত্রে সহজিয়াদের আমরা দায়ী করছিনা কেন? সহজিয়ারা কেন ডান পন্থী শক্তির উত্থানকে রুখতে পারল না? ডান পন্থীদের রুখার কাজ কি বামপন্থীদের? চরিত্রগত দিক থেকে যদি ডান ও বাম একই রকমের হয় তাহলে সহজিয়ারা কি দুপক্ষকেই রুখতে চেষ্টা করা উচিত?
আওয়ামীলীগ বা বি এন পি কিছুতেই সহজিয়াদের প্রতিনিধিত্ব করেনা। এরা লুটপাট, আর ভোটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সেক্ষেত্রে সহজিয়াদের প্লাটফর্ম কী?
বিপ্লব পাল,
দয়া করে নীচের বানানগুলো একটু ঠিক করে নিতে অনুরোধ করা হচ্ছে-
দক্ষিন (দক্ষিণ হবে)
রক্ষনশীল (রক্ষণশীল হবে)
ব্যার্থ (ব্যর্থ)
বাঙালী, বাঙ্গালী (বাঙালি)
মূলশ্রোত (মূলস্রোত)
সম্পূর্ন (সম্পূর্ণ)
গবেষনা (গবেষণা)
দাশ বিদ্রোহ (দাস বিদ্রোহ)
খ্রীষ্ঠান (খ্রিষ্টান)
শোষন (শোষণ)
কমিনিউস্ট (কমিউনিস্ট)
পৌছানো (পৌঁছানো)
মুক্তমনায় লেখার জন্য ধন্যবাদ।
@মুক্তমনা এডমিন,
ধন্যবাদ। ঠিক করা হল। তবে কমিনিউজমের দুটি বানানই চলে।
রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বাম এবং ডান মতবাদের মধ্যে গুনগত পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় প্রধানত: সরকারের আকৃতি , রাষ্ট্র এবং জনগনের ওপর নিয়ন্ত্রনের পরিধি এবং রাষ্ট্রীয় ব্যয় – এই সকল ক্ষেত্রে। বামপন্থীরা বড় সরকার , অধিক নিয়ন্ত্রণ এবং অধিক রাষ্ট্রীয় ব্যয় – এ বিশ্বাসী। অন্যদিকে , ডানপন্থীরা ক্ষুদ্র সরকার , কম নিয়ন্ত্রণ এবং কম রাষ্ট্রীয় ব্যয় – এ বিশ্বাসী।
ধর্মপন্থীদের তাই বামপন্থী বলাই শ্রেয় এবং তাদের সাথে কম্যুনিস্টদের অাসলে কোন পার্থক্য নেই। যেমন ,
ধর্মপন্থী = কম্যুনিস্ট + ঈশ্বর
ধর্মপন্থী = কম্যুনিস্ট [ ঈশ্বর = 0]
এ কথাটির ব্যাখ্যা চাই।
@সৈকত চৌধুরী,
৯ নাম্বার সুরাটা একটু পড়লেই বুঝতে পারবে, আল ইসলামে যারা ছিল, তাদের অধিকাংশই গরীব,। ভীষন গরীব। এবং ৯ নাম্বার সুরাতে মক্কা আক্রমনের জন্যে এই গরীব সেনাদের বড়লোক প্যাগানদের লুঠ করার জন্যে আল্লার ইনসেন্টিভ আছে।
‘বাঙালীর বিশাল অংশ আজকেও সহজিয়া। যার প্রতিনিধিত্ব করেছেন রবীন্দ্রনাথ, নজরুল এবং লালন ফকির। এটাই বাংলার মূলশ্রোত। মার্ক্স, মহম্মদ এবং মনু যে বাঙ্গালীর একটা বড় অংশেরই বদ হজম হয়েছে এবং তা বাঙালীর সংস্কৃতির সাথে সম্পূর্ন বেমানান-তার জন্যে পাশের বাড়ির দিকে তাকালেই হবে। খুব বেশী গবেষনা করার দরকার নেই।’
কিন্ত বিপ্লবদা, পশ্চিমবঙ্গের খবর জানিনা, বাংলাদেশের রুরাল এরিয়ায় মূলশ্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন মানুষের সংখ্যাই কিন্ত বাড়ছে। সেখানে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা টাকায় দিনকে দিনকে মসজিদ-মাদ্রাসা গজিয়েই চলেছে আর সাথে সাথে পশমওয়ালাদের সংখ্যাও কিন্ত জ্যামিতিক হারে বেড়েই চলেছে।১৫ বছর আগেও যেখানে নিয়মিত যাত্রাপালা হতো, এখন তা নাকি চিন্তাও করা যায়না।
এটা শুধু যে আমার গ্রামের চিত্র তা না, মোটামোটি পুরো গ্রাম বাংলা। সেখানে সহজিয়া মানবতাবাদকেই ধর্মীয় দক্ষিনপন্থীরা উৎখাত করছে।
@হেলাল,
এটা শোনা কথা না সত্যি? যদি সত্য হয় তাহলে আওয়ামী লীগ এত ভোটে জিতল কি ভাবে?
@বিপ্লব পাল,হেলালের এই কথাটা আমার কাছে ঠিক বলে মনে হয়,
আর আওয়ামী লীগকে যারা ভোট দিয়েছেন তারা যে সবাই সহজিয়া মানবতাবাদের অধিকারী এমনটা বলাও মুশকিল।
@বিপ্লব পাল,
ধর্মকে পুঁজি না করে রাজনীতি করার কথা আওয়ামিলীগ, বি,এন, পি, জামাত কেউই ভাবছে না। এরা যথাক্রমে সুফিজম, মডারেট ও গোড়া এই তিন শাখাকে অবলম্বন করে আগাচ্ছে। তবে উদ্দেশ্য অভিন্ন, ক্ষমতা আর সম্পদ। কিন্তু এই বিভাজন আবার সবসময় সুস্পষ্ট না।