বাল্যকালে একটা ছোট ঘটনা আমার জীবনে একটা গভীর দাগ ফেলে দিয়েছিল। আমরা মফস্বল শহরে থাকতে যে পাড়ায় থাকতাম ওখানে অধিকাংশই হিন্দু পরিবার বাস করত।এই কারনে বোধকরি পাড়াটার নাম ছিল “হিন্দুপাড়া “। খেলা ধুলার সাথী যারা ছিল তারা অধিকাংশই ছিল হিন্দু। কিন্তু ,ঐ বয়সে হিন্দু,মুসলমান বোঝার মতো কোনো ক্ষমতা আমার ছিলনা।
একদিন খেলা ধুলার মধ্যে ভীষণ পানির পিপাসা লাগল। তো বান্ধবী,নাকি (বন্ধু ?) খুব নিকটে তাদের বাড়ী ছিল। সে আমাকে নিয়ে রান্না ঘরে ঢুকল পানি দেবার জন্য। ঐ মুহুর্তে আমার ভালই মনে আছে তার মা অগ্নিমুর্তি হয়ে তেড়ে আসেন আমাদের দিকে।
-গেল –গেল সব অশৌচ হয়ে গেল “ এই বলে চেঁচিয়ে বাড়ী মাথায় করে করলেন । আমি প্রান ভয়ে দৌড়ে পালিয়ে এলাম। এই ঘটনা জীবনে গভীর ছাপ ফেলে দিয়েছিল। পরিবার রক্ষনশীল না থাকায় অনেক কিছুই বুঝতাম না।
পরে বড়ো হতে লাগলে বুঝলাম হিন্দু, মুসলিম, খ্রীষ্টান, বৌ্দ্ধ ইত্যাদি মানুষের ধর্ম আলাদা।
তখন থেকেই মনে প্রশ্ন হচ্ছে ধর্ম কী?
যে শিশুটি হাত,পা, দুই চক্ষু,নাসিকা, কর্ণ নিয়ে জন্ম গ্রহন করে ,সে তো জানেনা তার ধর্ম ।তার স্বভাব সুলভ ধর্মে সে বেড়ে ওঠে। ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠা শিশু জানতে পারে তারা এই ধর্মের বা ঐ ধর্মের।
প্রশ্ন ধর্ম কী?
(আরজ আলি মাতুব্বর “সত্যের সন্ধান “প্রথম খন্ড পৃ; ৫১ প্রকাশক সাহিদুল ইসলাম বিজু )
সাধারনত আমরা যাহাকে ধর্ম বলি তাহা হইল মানুষের কল্পিত ধর্ম। যুগে যুগে মহাজ্ঞানীগন এই কথা বিশ্বসংসারে ঈশ্বরের প্রতি মানুষের কর্তব্য কি তাহা নির্ধারন করিবার প্রয়াস পাইয়াছেন। স্রষ্টার প্রতি মানুষের কি কোন কর্তব্য নাই? নিশ্চয় আছে—এই রূপ চিন্তা করিয়া তাহারা ঈশ্বরের প্রতি মানুষের কর্তব্য কি তাহা নির্ধারন করিয়া দিলেন। অধিকন্তু, মানুষের সমাজ ও কর্মজীবনের গতিপথও দেখাইয়া দিলেন সেই মহাজ্ঞানীগন।
এই রূপে হইল কল্পিত ধর্মের আবির্ভাব। কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন মনীষী বা ধর্মগুরুদের মতবাদ হইল ভিন্ন ভিন্ন।
এই কল্পিত ধর্মের আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গেই দেখা দিল উহাতে মতভেদ। ফলে পিতাপুত্র, ভাইয়ে ভাইয়ে ,এমন কি স্বামী স্ত্রীতেও মতভেদ শোনা যায়।
বর্তমান যুগে পৃ্থিবীর প্রায় সকল ধর্মই আস্তিক বিশেষত একেশ্বরবাদী। হিন্দু ধর্ম মুলতঃ একেশ্বরবাদী। তাহাই যদি হয়, অর্থাৎ জগতের সকল লোকই যদি একেশ্বরবাদী হয়, তবে তাহাদের মধ্যে একটি ভ্রাতৃভাব থাকা উচিত।
কিন্তু ,আছে কী ? আছে যত রকম হিংসা ,ঘৃ্না, কলহ ও বিদ্বেষ। সম্প্রদায়বিশেষে ভুক্ত থাকিয়া মানুষে মানুষ কে এত অধিক ঘৃনা করে যে, তদ্রুপ ইতর প্রাণীকেও করেনা।
হিন্দুদের নিকট গোময় (গোবর) পবিত্র ,অথচ অহিন্দু মানুষ মাত্রেই অপবিত্র। পক্ষান্তরে মুসলমানদের নিকট কবুতরের বিষ্ঠাও পাক, অথচ অমুসলমান মাত্রেই নাপাক। পুকুরে সাপ,ব্যাং বিচ্ছু, মরিয়া পচিলেও জল নষ্ট হয়না, কিন্তু বিধর্মী মানুষে ছুঁইলেই উহা হয় অপবিত্র। কেহ কেহ এ কথাও বলেন যে, অমুসলমানী পর্ব উপলক্ষে কলা,কচু, পাঁঠা বিক্রী পাপ। এই কি ধর্ম? না ধর্মের নামে সাম্প্রদায়িকতা ?
আরজ আলীর উপরক্ত মন্তব্য থেকে বোঝা যায় যে সারা পৃ্থিবী আজ যে সন্ত্রাস,নৈ্রাজ্য, যে পরিমান অনুপরমাণু শৌর্যে ,বীর্যের প্রতিযোগিতা চলছে তার জন্য মানুষের তৈ্রি “ধর্ম” এবং তা থেকে যে অন্ধ বিশ্বাস জন্মেছে তারাই দায়ী।
একটা উদাহরণে কিছুটা হলেও আমরা সুত্র পাব। দেখুন, আল্লাহ্পাক কি লিখেছেন কোরআনে:
আর তোমরা মুশরেক নারীদেরকে বিয়ে করনা, যতক্ষন না তারা ঈমান গ্রহন করে। অবশ্য মুসলমান ক্রীতদাসী মুশরেক নারী অপেক্ষা উত্তম, যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভালো লাগে। এবং তোমরা (নারীরা) কোন মুশরেকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত সে ঈমান না আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরেকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা দোযখের দিকে আহ্বান করে, আর আল্লাহ্ নিজের হুকুমের মাধ্যমে আহ্বান করেন জান্নাত ও ক্ষমার দিকে। আর তিনি মানুষকে নিজের নির্দেশ বাতলে দেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। (মারেফুল কোরআন, সূরা আল বাক্কারাহ্ ২:২২১, অনূবাদ: মাওলানা মুহিউদ্দিন খান)
তাই আরজ আলী মাতুব্বর লিখেছেন:
মানবতার মাপকাঠিতে মানূষ একে অন্যের ভাই,ভালবাসা পাত্র ,দয়া –মায়ার যোগ্য ,সুখ দুঃখের ভাগী। এক কথায় একান্তই আপন।কিন্তু ধর্মে বানাইল পর ( আরজ আলী মাতুব্বর সত্যের সন্ধানে “ ১ খন্ড পৃ;৫২- “ ৫৩।)
স্বভাবতঃই মানুষ সত্যকে কামনা করে মিথ্যে কে নয় ,তাই আবহমানকাল হইতেই মানুষ “সত্যের সন্ধান করিয়া আসিতেছে। দর্শন, বিজ্ঞান, ভুগোল,ইতিহাস,গণিত প্রভৃতি জ্ঞানাঅনুশীলনের বিভিন্ন বিভাগ সর্বদাই চায় মিথ্যেকে পরিহার করিতে। তাই দার্শনিক না বৈজ্ঞানিক, কোন ঐতিহাসিক সজ্ঞানে তাহাদের গ্রন্থে মিথ্যার সন্নিবেশ করেন না। বিশেষতঃ তাঁহারা তাঁহাদের গ্রন্থের ভূমিকায় এমন প্রতিজ্ঞা করেনা না যে তাহাদের গ্রন্থের কোথাও ভুল ভ্রান্তি নাই। অথবা থাকিলেও তাঁহারা সংশোধন করিবেন না। পক্ষান্তরে যদি কাহারো ভুল ত্রুটি প্রমানিত হয়, তবে তিনি তাহা অম্লান বদনে স্বীকার করেন ,এবং উহা সংশোধনের প্রয়াস পাইয়া থাকেন।
এই রূপ পরবর্তি সমাজ পূর্ববর্তি সমাজের ভুলত্রুটি সংশোধন করিয়া থাকে ।এই রুপ যুগে যুগে যখনই অতীত জ্ঞানের মধ্যে ভুল ভ্রান্তি পরিলক্ষিত হয়, তখনি উহা সংশোধন হইয়া থাকে। এক যুগের বৈজ্ঞানিক সত্য আরেক যুগে মিথ্যা প্রমানিত হইয়া যায়,তখনই বৈজ্ঞানিক সমাজ উহাকে জীর্ণ বস্ত্রের ন্যায় পরিত্যাগ করেন ও প্রমানিত করেন নতুন সত্যকে সাদরে গ্রহণ করেন।
ধর্ম জগতে ঐ রূপ নিয়ম পরিলক্ষিত হয়না।
তৌ্রত, জব্বুর, ইনজিল, কোরান, বেদ, পুরাণ, জেড-আভেস্তা ইত্যাদি ধর্মগ্রন্থ সমুহের প্রত্যেকটি অপৌ্রুষেয় বা ঐশ্বরিক পুঁথি কিনা তাহা জানিনা কিন্তু ইহাদের প্রত্যেকটি গ্রন্থ এই কথাই বলিয়া থাকে, যে এই গ্রন্থই সত্য, যে বলিবে ইহা মিথ্যা সে নিজে মিথ্যাবাদী,অবিশ্বাসী,পাপী অর্থাৎ নারকী।
ধর্ম শাস্ত্র সমুহের এইরুপ নির্দেশ হেতু কে যাইবে ধর্মশাস্ত্র সমুহের বিরুদ্ধে কথা বলিয়া নারকী হইতে?
আর বলিয়াই বা লাভ কি ? অধিকাংশ ধর্মগ্রন্থই গ্রন্থকার বিহীন, অর্থাৎ ঐশ্বরিক বা অপৌ্রুষেয়, সুতরাং উহা সংশোধন করিবে কে?
প্রাগৈতিহাসিক হইতে শতশত রাষ্ট্রের উত্থান হইয়াছে এবং পরস্পর কলহ বিবাদের ফলে তাহাদের পতন হইয়াছে।
কিন্তু ধর্মে যতই কলহ –বিবাদ থাকুক না কেনো , জগতে যতগুলি ধর্মের আবির্ভাব ঘটিয়াছে তাহার একটিও আজ পর্যন্ত বিলুপ্ত হয়নাই। ইহার প্রথম কারন হইল যে ,রাস্ট্রের ন্যায় ধর্ম সমূহের আয়ত্তে তোপ, কামান, ডিনামাইট বা এটম বোম নাই যে তাহা দ্বারা একে অন্যের ধ্বংস সাধন করিতে পারে। ধর্মের হাতে আছে দুইটি অস্ত্র—আশীর্বাদ ও অভিশাপ।
অর্থাৎ আমরা চারিদিক দিয়ে রুদ্ধ। যতো প্রমান করার চেষ্টা চলুকনা কেন এই অস্ত্রের সম্মুখে আমরা কেউ দাঁড়াতে পারছিনা। এখন সব চাইতে মুখ্য বিষয় হল এর থেকে পরিত্রানের উপায় কি?
গুটি কয়জন লিখে গেলে কি করে প্রমানিত করে মানুষের সমাজে প্রতিষ্ঠা করা যাবে,যে এই কল্পিত ধর্ম একেবারেই ভিত্তিহীন। মানুষের আসল ধর্ম মানবতা।
@একা,
যে আদর্শের কথা বলেছি তার জন্য অপেক্ষা করা। এ ছাড়া তো কোন গতি দেখি না। ইতিহাস ঘেটে দেখুন মানব সভ্যতা কিন্তু নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে শত শত এমন কি হাজার হাজার বছর পার করে দিয়েছে নতুন আদর্শের অপেক্ষায়।
@ একা, আপনি সৌভাগ্যবান, এ কারণে যে, আপনার শৈশবেই আপনি শিখে ফেলেননি সেই সাম্প্রদায়িক ছড়া:
—
আপনার লেখাটি ভাল লাগলো। চলুক। :yes:
@ মাহফুজ
বর্তমান বিশ্বে ২২% নাস্তিক। এইটাই বা কম কি ।
@ সৈকত চৌধুরী
‘মানুষ ধর্ম কেন বানাল’ এর উপর একটা গবেষণামূলক লেখা আপনার কাছ থেকে কামনা করি।
আপনার কথা রাখতে চেষ্টা করব । বিষয়টা লেখা সময় সাপেক্ষ ।
ধন্যবাদ আপনাদের ।
@একা,
কাউকে জবাব দিতে হলে তার মন্তব্যের নীচের ‘জবাব’ অংশে ক্লিক করেন তারপর আপনার জবাব লিখেন।
উদ্ধৃতি দিতে হলে একে প্রথমে সিলেক্ট করেন তারপর মন্তব্য লেখার ঘরের উপরের অংশের ‘উদ্ধৃতি’ তে ক্লিক করেন। এভাবে আপনি ‘ইটালিক’ ‘বোল্ড’ ও ‘লিংক’ ইত্যাদি দিতে পারেন।
অভ্র দিয়ে লিখতে গেলে প্রথমে এরকম সমস্যা হয়ই। আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। ভুল হচ্ছে বলে মন ভার করার কিছু নেই। কোনো সমস্যা হলে আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। অনেক ধন্যবাদ।
@সৈকত চৌধুরী, বাহ ! আমি এক্কেবারেই খেয়াল করিনি। আসলে আমি একটা বোকা 🙁
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ । 🙂
@ ভবঘুরে
ভালো প্রশ্ন ।এই কথার জবাব দিতে হলে বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে । মানে আরো একটা প্রবন্ধ লিখে
যুক্তি সহকারে দেখানো যেতে পারে ,কেনো বা কোন প্রয়োজনে ধর্ম সৃষ্টি হল । আপনাকে ধন্যবাদ ।
@একা,
মধ্য ও আধুনিক যুগে ধর্ম ও সমাজে তার প্রভাব নিয়ে আলোচনা করলে আমরা ভালোর চেয়ে খারাপ বিষয়গুলোই বেশী দেখতে পাব। যেমন- যুদ্ধের মাধ্যমে ইসলাম প্রচার, ইউরোপে ইসলামকে রুখতে ধর্মযুদ্ধ বা ক্রুসেড, বর্নপ্রথার কারনে হিন্দু সমাজে নিম্ন বর্নের মানুষের প্রতি উচ্চ বর্নের মানুষের অত্যাচার ও শোষণ ইত্যাদি বহুকিছু। কিন্তু আমরা যদি প্রাগৈতিহাসিক আমলের কথা চিন্তা করি, তাহলে দেখব ধর্ম তখন মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে সাহায্য করেছে যা পরিশেষে জাতি ও রাজ্য গঠনে সহায়ক ভুমিকা পালন করেছে। এ কারনেই কিন্তু সভ্যতা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পেরেছে , নানা ঘাত প্রতিঘাতের পর আজকের সভ্যতায় উন্নিত হতে পেরেছে। বিবর্তনবাদি তত্ত্ব যদি আমরা মানুষের সমাজ বিকাশের ক্ষেত্রে বিবেচনা করি তাহলে দেখব, আজকের যুগে মানুষের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে ধর্মের কোন দরকার তো নেই ই , বরং তা প্রচন্ড প্রতিবন্ধক। কিন্তু সেরকম পরিস্থিতিতে মানুষ তার আত্মিক খাদ্য (বিপদে বা অসহায় অবস্থায় দৈর্যধারন, মানষিক চাপ নিয়ন্ত্রন) কোথা থেকে পাবে , এর কোন সমাধান কি আমরা বের করতে পেরেছি? আমরা পারি নি। বরং উল্টো বাজার অর্থনীতির নামে সবকিছু এমনকি প্রেম ভালবাসাকেও পন্য হিসাবে গন্য করতে শুরু করেছি, অর্থকেই সকল রকম মূল্যায়নের মাপকাঠি হিসাবে স্থির করেছি। এমন একটা অবস্থায় আমরা আর মানুষ না থেকে বাজার অর্থনীতির শুধুমাত্র ক্রেতা ও ভোক্তাতে পরিনত হয়েছি। মানব সভ্যতা তাই একটা ক্রান্তি লগ্নে উপনীত হয়েছে বলা যায়। এখন আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ- আমরা মানুষ থাকব নাকি বাজার অর্থনীতির ক্রেতা বা ভোক্তা থাকব? নাকি একই সাথে দুটোই থাকার কোন নতুন আদর্শ উদ্ভাবন করব ? যতদিন না সে আদর্শ উদ্ভাবিত হবে ততদিন মনে হয় ধর্মের অসারতা যতই প্রমান করার চেষ্টা করি না কেন, মানুষকে অন্ধ বিশ্বাস থেকে ব্যপক ভাবে সরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। কারন এখনও মানুষ যে কোন বিপদ বা আপদে কল্পিত ঈশ্বরের কাছে আত্মসমর্পন করে মনে শান্তি অনুভব করে যদিও সেখানে ঈশ্বরের কোন ভূমিকাই নেই।
@ মুক্তমনা এডমিন।
ধন্যবাদ ,এইবার কিছুটা বুঝতে পারলাম কী করে ঠিক করতে হয় বিভিন্য কোড কে ।
আপনাদের সাথে থাকার জন্য কৃ্তজ্ঞ । 🙂
@একা,
এবারে চমৎকার হয়েছে। আশা করি বুঝতে পারছেন যে সাইটের মানের ব্যাপারে আমাদের সবাইকে আরেকটু সচেতন হতে হবে, এটুকু বোঝানোর জন্যই এডমিনের পক্ষ থেকে বানান নিয়ে বলা। আমরা চাই অন্যান্য ব্লগ সাইটের সাথে মুক্তমনার গুণে মানে পার্থক্য থাকুক। একটু কষ্ট করলেই কিন্তু আমরা আমাদের লেখার মান আরেকটু বাড়িয়ে নিতে পারি। আপনার সহযোগিতার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
@ মুক্তমনা এডমিন।
১ -আমি পোস্ট করি অত্যন্ত কষ্টকর ভাবে ।অনেক কিছু এখনো বুঝতে পারছিনা । এখন ও কি ঠিক করার উপায় আছে ?
২ – বানানের বিষয়ে আমি যা বলতে চাই ।ইংরাজি হরফের মত এখন বাংলা হরফে অনেক পরিবর্তন
এসেছে । যেমন , অনেক ক্ষেত্রে আজকাল ণ আর ন পার্থক্য টা অহেতুক ভাবছেন ।
আবার ূ এবং ু এই দুটো বানানে কিছু যায় আসেনা। তথপি আমি বলতে চাই যে ,যা বইতে ছিল ।
আমি হুবহু তাই করেছি । আর অভ্র টাইপ আমি একবারেই নতুন ।
আপনাদের কথা মাথায় রেখে বার বার চেক করি ,
ভুল তো মানূষের ই হয় ।
একা,
সুন্দর প্রবন্ধের জন্য ধন্যবাদ।
সব কিছুর আগে জানা দরকার মানুষ ধর্ম কেন বানাল? সমাজবিজ্ঞানীরা এর উত্তর দিয়েছেন এরকম- প্রাগৈতিহাসিক যুগে মানুষের অসহায়ত্ব, অক্ষমতা, অজ্ঞতা ইত্যাদি থেকেই কল্পিত ধর্মের পত্তন ঘটে যা পরে ফলে ফুলে বিবর্তিত হয়ে আজকের অবস্থানে এসেছে। ধর্ম এক ধরনের শৃংখল যা মানুষকে এক ধরনের মানসিক কয়েদখানায় বন্দি করে ফেলে। ফলে ধর্মবিশ্বাসী লোকজন সেই কয়েদখানা থেকে বের হতে পারে না বলে তাদের ওপর যুক্তিবোধ গুলো কোন কাজ করে না। মানুষ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রভুত উন্নতি সাধন করলেও এখনও অনেক সময় তারা বৈরী প্রকৃতির (যেমন ঘূর্নিঝড়, সুনামি, ভুমিকম্প ইত্যাদি) কাছে অসহায়, সিংহভাগ মানুষ বিশেষ করে অনুন্নত দেশ সমূহে, এখনও আর্থিক নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে, মানুষ যে কোন সময় দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে জীবন হারাতে পারে বা কোন কঠিন রোগে আক্রান্ত হতে পারে যার ওপর তার কোন নিয়ন্ত্রন নেই। এসব অসহায়ত্বের বিপরীতে মানুষ মানসিক বা আত্মিক শান্তনা বা শান্তি লাভ করার জন্যেই কল্পিত সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাসী হয়ে ওঠে যা তাকে এক পর্যায়ে ধর্মের কঠিন শৃংখলে আটকে ফেলে।
@ভবঘুরে,
‘মানুষ ধর্ম কেন বানাল’ এর উপর একটা গবেষণামূলক লেখা আপনার কাছ থেকে কামনা করি।
মানুষ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রভুত উন্নতি সাধন করলেও এখনও অনেক সময় তারা বৈরী প্রকৃতির (যেমন ঘূর্নিঝড়, সুনামি, ভুমিকম্প ইত্যাদি) কাছে অসহায়, সিংহভাগ মানুষ বিশেষ করে অনুন্নত দেশ সমূহে, এখনও আর্থিক নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে, মানুষ যে কোন সময় দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে জীবন হারাতে পারে বা কোন কঠিন রোগে আক্রান্ত হতে পারে যার ওপর তার কোন নিয়ন্ত্রন নেই। এসব অসহায়ত্বের বিপরীতে মানুষ মানসিক বা আত্মিক শান্তনা বা শান্তি লাভ করার জন্যেই কল্পিত সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাসী হয়ে ওঠে যা তাকে এক পর্যায়ে ধর্মের কঠিন শৃংখলে আটকে ফেলে।
এই গুলো যদি হয় তা হলে মিডেল ষ্টারে কোন মুসলিম থাকত না ভারতে কোন মুসলিম থাকত না োমিরিকায় কোন মুসলিম থাকত না অপনি দেখেন দৈনিক কেমন হারে অ মুসলিমরা ইসলাম গ্রহন করতেছে এবং রাশিয়া যেটা বড় নাস্তিক দেষ সেই খানে ো ইসলাম ধম গ্রহন করতেছে তারা কি না বুঝে ইসলাম ধম গ্রহন করতেছে আর আপনারা বেশি বুঝে গেছেন ?
@জাহেদ,
এখন যত লোক ইসলাম কবুল করে, তার চেয়ে ইসলাম ত্যাগ অনেক বেশী মানুষে। পার্থক্য হলো- যারা ইসলাম গ্রহন করে তাদেরকে ফলাও করে দেখানো হয়, যারা ত্যাগ করে তারা লুক্কায়িত থাকে। আমি প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে দেখেছি সেখানে শুধুমাত্র সাধারন জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে কিছু কিছু সাধারন শিক্ষিত মানুষ ইসলাম ত্যাগ করেছে ( ইসলামিক নাম নয়), কারন তারা আল্লাহর প্রেরিত নবীর ৫১ বছর বয়েসে ৬ বছরের আয়েশার মত একটা দুগ্ধ পোষ্য শিশুকে বিয়ে করা বা তার এক সাথে ১৩টা বউ নিয়ে ঘরসংসার করার মধ্যে কোন মহৎ কিছু দেখতে পায়নি আর সেকারনেই কোরান, হাদিস ও ইসলাম সব কিছুর ওপর বিশ্বাস হারিয়েছে। তবে তা তারা ফলাও করে প্রচার করে বেড়ায় না সঙ্গত কারনেই। আর কিছুদিন অপেক্ষা করুন, আরবদের তেলটাকে একটু শেষ হতে দিন, এর পর দেখবেন কত ধানে কত চাল। অমুসলিম বিশ্ব মুসলিমদের প্রতি এখনও অনেক উদার শুধুমাত্র আরবদের তেলের জন্য, তাই ইসলাম একটা প্রচন্ড রকম ঘৃনা বিদ্বেষ সৃষ্টিকারী ও অগনতান্ত্রিক ধর্ম হওয়া সত্ত্বেও তারা চুপ করে আছে। তেল শেষ হয়ে গেলে সেই উদারতা তাদের কাছ থেকে আর আশা করা যাবে না আর তখন দেখবেন মুসলমানদের কি অবস্থা হয়। একমাত্র মুসলমানদের দুরদর্শিতাই তাদের এ মহাবিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে পারে। বলতে পারেন, তেল পাওয়ার আগে তো কিছু ঘটে নি। ঘটে নি কে বলেছে? ক্রুসেডের মাধ্যমে খৃষ্টানরা মুসলমানদেরকে ইউরোপে অনুপ্রবেশ বন্দ করেছে না? এর পর অমুসলিমরা ইসলাম নিয়ে কোন সমস্যায় (আত্মঘাতী বোমা হামলা, আল কায়েদা বা তালেবানী মতাদর্শ ইত্যাদি) পড়েনি বর্তমান কালের মত। তাই তারা বর্তমানে কোরান ও হাদিসে কি আছে ভাল করে পড়াশুনা করছে , চুল চেরা বিচার বিশ্লেষণ করছে যা অতীতে এত ব্যপকভাবে হয়নি। বলাবাহুল্য, সে বিচার বিশ্লেষণে ইসলাম সঙ্গত কারনেই অকৃতকার্য হচ্ছে আর যার ফলাফল ভবিষ্যতে ইসলাম তথা মুসলমানদের জন্য মহা বিপর্যয়কর। সুতরাং দাত থাকতে দাতের যতœ নেয়া খুবই জরুরী।
@জাহেদ,
ভবঘুরে এখানে ধর্মের কঠিন শৃংখলে আটকে ফেলার কথা বলেছেন, এর সাথে আমেরিকা, ভারতের মুসলমানের সম্পর্ক কেন করা হলো বুঝা মুশকিল। ধর্ম বলতে কি শুধু ইসলামকেই বুঝায় নাকি?
ধর্মই পৃথিবীকে নরকে পরিণত করেছে।
‘একা’ কে অনেক ধন্যবাদ।
@ একা।
এখন সব চাইতে মুখ্য বিষয় হল এর থেকে পরিত্রানের উপায় কি?
বিজ্ঞানের আলো চারিদিকে ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমেই এর পরিত্রাণ বা মুক্তি। দেখুন না, ইলেকট্রিক বাতি আসার পর ভূত পালিয়ে গেছে। এখন অনেক মানুষই ভূত বলে কিছু একটা আছে তা বিশ্বাস করে না। এমন এক সময় আসবে, ঈশ্বরসহ ধর্ম বাতিল হয়ে যাবে। বর্তমান বিশ্বে ২২% নাস্তিক। ভাবুন তো একটু।
@একা, বেশ কিছু বানান ভুল আছে লেখাটায়, একটু কষ্ট করে দেখে বানানগুলো ঠিক করে দিন, এখানে কয়েকটা উদাহরণ দিচ্ছি, বাকিগুলো আপনি একটু দেখে নিন।
এছাড়া লেখাটায় কিছু ফরম্যাটিং ও ঠিক করে দিন, যেমন, আরজ আলী মাতুব্বরের কোটগুলোতে বা অন্যান্য কোটগুলোতে ইনভার্টেড কমা বা কোটেশন মার্ক দিন (উদ্ধৃতির জন্য নির্দিষ্ট বাটন আছে b-quote, সেটাও ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য উদ্ধৃতির অংশটুকু মাউস দিয়ে সিলেক্ট করে b-quote বাটনে চাপ দিন, দেখবেন উদ্ধৃতির আগে পরে উদ্ধৃতির জন্য কোড চলে এসেছে)। এডমিনের পক্ষ থেকে প্রথম উদ্ধৃতিটি ঠিক করে দেয়া হয়েছে। আপনি অন্যগুলো ঠিক করে নিন। লেখার সাথে উদ্ধৃতি মিলে মিশে গেলে পাঠকের জন্য পড়া কষ্টকর। বেশ কয়েক জায়গায় অহেতুক প্যারাগ্রাফ ব্রেক দেখে যাচ্ছে, সেগুলো ঠিক করে দিলেও পাঠকের জন্য লেখাটা পড়তে সুবিধা হবে।
ভীষন = ভীষণ
অগ্নীমুর্তি = অগ্নিমূর্তি
রুপ = রূপ
মণীষী = মনীষী
তদ্রুপ – তদ্রূপ
সাম্প্রদায়বিশেষে = সম্প্রদায়বিশেষে
সুত্র = সূত্র
তৈ্রি = তৈরি
গ্রহন = গ্রহণ
পুর্ববর্তি = পূর্ববর্তী
ধর্মশাত্র সমুহের = ধর্মশাস্ত্র সমূহের