একজন পাঠক হিসেবে: (প্লিজ কেউ আমাকে পাগল ভাববেন না)
মুক্তমনার সাথে মনে মনে কথা বলি অনেক। কিন্তু তাকে নিয়ে কিছুই লেখা হয়ে ওঠে না। লিখব কখন, তার সাথে কথা বলতে বলতেই তো আমার সময় কাটে। তাছাড়া অনেক সময়ই মনের ভাব প্রকাশ করা সম্ভব হয় না। কারণ আমি তো আর অভিজিত্, অনন্ত, বন্যা আহমেদ, আকাশ মালিক, ফরিদ আহমেদ, বিপ্লব পাল, আবুল কাসেম, দিগন্ত, তানবীরা তালুকদার এদের মত লেখক না। ভয়ে পরিচয় লুকিয়ে রাখা লেখকদের মতও দু চার লাইন যে লিখবো, সে ক্ষ্যমতাও যে আমার নেই তা বুঝতে পারি।
যেদিন থেকে মুক্তমনার সাথে আমার পরিচয় সেদিন থেকেই মুক্তমনার প্রেমে পড়েছি। অনেক সময় নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে মুক্তমনা নিয়ে বসি। পড়ি। চিন্তা করি। ভাবি। কল্পনায় রঙিন স্বপ্ন দেখি তাকে নিয়ে। পড়তে পড়তে পুরো রাত পার করে দিয়েছি বেশ কয়েকবার। কী আছে মুক্তমনায় যা আমাকে তার সামনে থেকে উঠতে দেয় না? কেন এত আবেগ অনুভূতি এর প্রতি? এই আবেগ কতদিন থাকবে? নিজের কাছে নিজেই প্রশ্ন করি। আর ভাবি, এই প্রেম তো অবৈধ প্রেম। পরকিয়া প্রেম। নিজের স্ত্রী সন্তান সবই আছে। তারপরও অনেক সময় তাদের উপেক্ষা করে মুক্তমনার সাথে প্রেম করে চলেছি। বলা যায় একেবারে হাবুডুবু প্রেম।
আমি এইকথাগুলি একটুও বাড়িয়ে বলিনি। আমার ভেতরের বিশ্বাস টলে গিয়ে যুক্তির কাছে আমি নিজেই হার মেনেছি। আরও তো অনেক আন্তর্জাল আছে। সেগুলোর প্রেমেও তো পড়তে পারতাম, তা না পড়ে কেন মুক্তমনার সাথে আমার এত মাখামাখি হলো। আমি যে মুক্তমনার জালে আটকে গেছি, মুক্তমনা নিজেও তো জানে না। জানে না আমার গোপন প্রেমের খবর। জানবেই বা কেমন করে, আমি তো কখনও মুক্তমনাকে বলিনি, ‘ওগো আমি যে তোমায় ভালোবাসি, আমার প্রতি একটু নজর দেও।’ ওমন হ্যাঙলার মতো ভালোবাসার কথা বলে শেষে অপমানিত হই, সেই ভয়ে মুখ খুলিনি। হয়তো তুমি বলবে, তাহলে আজ কেন মুখ খুললে?
আজ যে বড় বিরহ, বড় কষ্ট। সে কারণেই মুখ খুলতে হচ্ছে। আজ না বলে উপায় নেই। না বলে থাকতে পারছি না। অসহ্য কষ্টে বুকের ভেতরের পাজরগুলো ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে। যা দেখানোর নয়, বলার নয়, বুঝানোর নয়।
আমার যেখানে বসবাস, সেই অঞ্চলে যতগুলো সাইবার ক্যাফে আছে সবগুলোতে ঢু মারলাম। কোন জায়গাতেই নেট নেই। ঝড়ে নাকি নেট বিধ্বস্ত। আর সেই বিধ্বস্ত আমার বুকে এসে বার বার লাগছে। এক ঘন্টা, দুই ঘন্টা, তিন ঘন্টা হলে মেনে নেয়া যায়, কিন্তু এ যে টানা তিনদিন।
মনে পড়ছে এই তো সেদিনের কথা, যেদিন মুক্তমনার জনকের মুখ থেকে বের হলো- ‘ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো’। তোমাকে সৃষ্টি করার আনন্দে তার প্রেমে ভাটা পড়লো কেন? কি এমন অভিমান হয়েছিল তোমার প্রতি? মুক্তমনা, তুমি আমার মম, কান্তা, কপোতি! চেয়ে দেখো তোমার প্রতি আমার প্রেমের ভাটা পড়েনি। এখনও উজ্জ্বল প্রভাতী তারার ন্যায় জ্বল জ্বল করছে।
ও আমার মুক্তমনা, তুমি আমাকে যা দিয়েছ, তার প্রতিদানে আমি তোমাকে কিছুই দিতে পারিনি। হয়তো পারবোও না। তুমি আমার ভেতরের কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস, অপবিশ্বাসকে গলাটিপে হত্যা করে আমাকে মুক্ত করেছ।স্বাধীন করেছ। শুধু যে শুধু আমাকেই করেছো তা নয়, আবালবৃদ্ধবনিতা যারাই তোমার বুকে এসে আশ্রয় নিয়েছে তাদের সকলকেই তুমি আলো প্রদান করেছো। তাই তো রানা ফারুক সাক্ষ্য দিয়েছে- ‘মুক্তমনা আমার বিশ্বাসকে বদলে দিয়েছে।’ রানা ফারুককে কতজন উপদেশ দিতে শুরু করে দিল। কেউ কেউ বুক লিস্ট বানিয়ে সিলেবাস তৈরী করে দিল। পাবনার ছেলে মনে করে সন্দেহও করে বসলো। তোমার বুকে চলে কত ধরনের খেলা। কিন্তু আজ তিন দিন আমি উপোস। ভীষণ তৃষ্ণা। তৃষ্ণা নিবারনের কোন উপায়ই খুঁজে পাচিছ না। বলো আমি কী করবো?
প্রিয় মুক্তমনা,
নতুন বছরের আগমনে তোমাকে জানাই আমার গভীর ভালোবাসা। তোমার প্রতি আমার এ ভালোবাসা ২০১১ সালেও বেঁচে থাকুক। যারা অভিমান করে নীরব রয়েছে, তারা আবার সরব হয়ে উঠুক; নতুন বছরে এই আমার প্রত্যাশা।
@মাহফুজ,
সম্ভবত এই লেখাটা যখন প্রকাশিত হয় তখনও আমি এখানে লগইন করার পারমিশন পাইনি।
লেখাটার ভাব সুন্দর কিন্তু আবেগটা একটু বেশি প্রকাশিত হয়ে গেছে।
তবু ভাল লাগল।
দেখি ইমো কাজ করে কিনা? (y)
@আসরাফ,
বিরহের জ্বালায় আবেগটাকে যেভাবে প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম, ভাষাজ্ঞানের অভাবে সেটা প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছি। আবেগটাকে আরো বেশি করে ফুটে তোলা দরকার ছিল, কিন্তু মস্তিষ্কের মধ্যে যে ক্ষরণ ঘটে তা তো আর ভাষা দিয়ে তুলে আনা সম্ভব নয় আমার মত ব্যক্তির পক্ষে।
@মাহফুজ,
আপনার এমন আবেগ দেখে একটা গানের কলি মনে এল,
ভালোবাসা মোরে ভিখারি করেছে
তোমারে করেছে রানী
এমন অবস্থা হবে নাতো আপনার? বেশি ভালোবাসলে আঘাত পেতে হয়, কথাটা কেন জানিনা মনে পড়ল।
@আফরোজা আলম,
আমার আবেগ দেখে আপনি গান গেয়ে উঠলেন। (8)
আর আমি আপনার গান গাওয়া শুনে আপনারই ‘যে পথে আমার পদধ্বণী’ কবিতার কথা মনে পড়ে গেলো:
আঘাতের দাগ মনে পড়ে
সর্বদা পেছনে ঘোরে কেউ,
এ ভাবেই মৃত্যু দেখি
তার সাথে প্রত্যহ দেখা
এভাবেই সে পরম আত্মীয়।
শুনুন, বড় প্রেম শুধু কাছে টানে না :ban: ও করে দিতে পারে। এই তত্ত্ব বুঝতে হলে বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান ছাড়া গতি নাই।
আমার একটি দিনের কথা মনে পড়ছে। যেদিন ক্রেইগ ভেন্টর কৃত্রিম প্রান তৈ্রির ঘোষনা করেছিলেন তখন আমার ল্যান কার্ড নষ্ট ছিল।আমি এ ব্যাপারে কিছুই দেখতে পারছিলাম না। জানতে পারছিলাম না। সেই কষ্টের দিনটির কথা আবার মনে পড়ে গেল। আমার এক বন্ধুকে বারবার জিজ্ঞাসা করছিলাম মুক্তমনায় এ বিষয়ে কোন পোস্ট এসেছে কিনা। কোথায় এ নিয়ে কি লেখা হচ্ছে এইসব। নেট না থাকলে আর মুক্তমনায় না বসলে বাঁচাই দায়।
@লীনা রহমান,
হুম, তাহলে তো দেখছি আপনিও মুক্তমনার প্রেমে পড়ে গেছেন। মুক্তমনায় না বসলে বাঁচাই দায়; এর মানেই হচ্ছে- মুক্তমনা, তোমায় ছাড়া বাঁচে না এ প্রাণ।
@লীনা রহমান,
এই ভালবাসাটুকু বেঁচে থাকুক সবসময়।
এই তালিকায় আম্রার নাম না থাকায় আপ্নেরে ডাবল মাইনাস! :brokenheart:
তবে এই কথা কওনে আপ্নেরে ভালু পাই! :heart:
@বিপ্লব রহমান,
সাংবাদিকদের হাতে বহুত ভোগান্তি খাইছি, এইজন্য তাদের একটু এড়িয়ে চলি। মাঝে মাঝে সাংবাদিকরা বড়ই সাংঘাতিক হয়। ঐ কারণেই নামটা লই নাই। এখন দেখতাছি- আপনি সেই ধরনের সাংঘাতিক সাংবাদিক না। আপনার নাম আমার মনের মধ্যে add কইরা দিলাম। আর একটা কথা- আপনার ছবি আর আমার ছবি পাশাপাশি রাখলে একদম মিলে যাবে। সেই চশমা, সেই চুল, সেই মুচ। হুবহু ডুপলিকেট!! মনে হয় থিওরি অব ইভোলিউশনের আছর।
ফরিদ ভাইয়ের মতোই মুক্তমনার প্রতি আপনার ভালবাসাটুকুর সন্ধান পেয়ে আমার হৃদয়ে স্পর্শ করে গেল। এই ভালবাসাটুকু বেঁচে থাকুক।
এখানে অনেক বড় লেখকই আছেন, কিন্তু এমন আপন করে ভাবে কয়জনা? আমাদের গালাগালি করে লেখাই যায়, কিন্তু এ ধরণের একটা প্ল্যাটফর্ম গড়া আর টিকিয়ে রাখা যে চাট্টিখানি কথা নয়, তা নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন। এর অবদান আপনার আমার আমাদের সকলের। এই প্রেরণাটুকু বেঁচে থাকুক।
মুক্তমনায় লেখালিখি করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ,
:yes: :yes: :yes:
মুক্তমনার প্রতি আপনার ভালবাসাটুকু হৃদয়ে স্পর্শ করে গেল। আপনাদের মত মানুষদের নিঃস্বার্থ প্রেমটাই এর সম্পদ।
মুক্তমনায় অনেক বড় বড় লেখক আছেন এটা খুব সত্যি কথা। আমি নিজেও তাদের লেখার ভয়াবহ রকমের ভক্ত। ওগুলো পড়ে পড়েই বহু দিবস এবং রজনী অতিক্রান্ত হয়েছে আমার। এখন হুট করে সেই সমস্ত দীপ্তিময় লেখকদের কাতারে নিজের নাম দেখে দারুণভাবে বিব্রতবোধ করছি।
@ফরিদ আহমেদ,
তবে আপনার ভালোবাসার সাথে তুলনীয় নয়।
এই রোগে অনেককেই আক্রান্ত হতে দেখছি।
:yes: :rose2:
@ আবুল কাসেম ভাই।
আমি স্বপ্ন দেখছি না তো! ‘ইসলামিক ভুদু’- বইয়ের লেখক আমার লেখার উপর মন্তব্য করেছেন!এজন্য আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমি ইংরেজী কম বুঝি। তারপরও কষ্ট করে হলেও ইসলামিক ভুদু শেষ করেছি। বইটির বাংলা অনুবাদ কি করে দিতে পারেন না?
তবে দু:খের বিষয়, বইটি ছিল আমার পেন ড্রাইভে, সেই পেন ড্রাইভ নষ্ট হয়ে গেছে। পরে আর কিছুতেই বইটি ডাউন লোড করতে পারি নি।
@মাহফুজ,
ইসলামী ভুদুকে বাংলায় অনুবাদ করার মত ধৃষ্টতা আমার এখনও হ্য়নি। কারন বাংলা ভাষায় আমা্র পারদর্শিতা প্রায় শুন্যের কোঠায়। আজ প্রায় ৩৫ বছর পর আবার নতুন করে বাংলা শিখছি।
কোনদিন যদি অন্যান্য লেখকদের মত বাংলায় পারদর্শীতা পাই তবে চিন্তা করব অনুবাদের কথা। এর মাঝে কেউ যদি স্বেচ্ছসেবক হয়ে অনুবাদের দায়িত্ব নেয় তবে আমি তাকে সাহায্যের হাত দিতে পারি।
কথাটি কি সত্যি? মুক্তমনায় যারা লেখেন তাদের লেখা আপনার হৃদয়নিংড়ানো লেখার চাইতে কোন ভাবেই উৎকৃষ্ট নয়। আপনার লেখাটা এক নিঃশাসে পড়ে ফেললাম। এতে কি বুঝা যায়?
এর চাইতে মুক্তমনার আর কি বড় সাফল্য হতে পারে?
একটি খাটি কথা।
স্কুল জীবন থেকেই সনাক্ত করতে শিখেছি। কিন্তু সাহস নিয়ে জোড় গলায় বলার শক্তি মুক্তমনাই দিয়েছে। মুক্তমনা সত্য পথের প্রদর্শক।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
মুক্তমনার সাথে মিশতে মিশতে আমার অবস্থা হয়েছে: ”এত সাহস, যে আর ভয় করে না।” আগে কত ধরনের ভয় যে মনে গহিনে বাসা বেধেছিল তা ব’লে বোঝানো যাবে না। ধর্মের ভয় আমার ভেতরটাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল। সেটা থেকে মুক্তি আমাকে মুক্তমনায় দিয়েছে।
লেখা প্রকাশের সময় লেখকদের অনুরোধ করা হচ্ছে “মন্তব্য করতে দিন” -এই অপশনটা টিক মার্ক দেয়া আছে কিনা দেখে নিতে। ওটায় টিক মার্ক দেয়া না থাকলে অন্যরা লেখায় মন্তব্য করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।
মডারেটরের পক্ষ থেকে ব্যাপারটা ঠিক করে দেয়া হয়ছে।
@মুক্তমনা এডমিন,
লেখা প্রকাশ করার সময়-
Allow comments on this post
Allow trackbacks and pingbacks on this post
এই দুটোতে আমি টিক চিহ্ন দিয়েছিলাম। কিন্তু এলো না কেন বুঝতে পারলাম না। কেন এমন হলো? ঠিক করে দেবার জন্য ধন্যবাদ।
আর একটি বিষয়, আমার লগ ইন করতে অনেক সময় লাগে। কোন কোন সময় ১৫/২০ মিনিট সময় লেগে যায়। আর সেজন্য এখন লগ ইন ছাড়াই মন্তব্য করলাম।
@মাহফুজ,
উজ্জ্বল প্রভাতী তারার ন্যায় জ্বল জ্বল একটি পূর্ণ লেখা তাড়াতাড়ি মুক্তমনায় ছেড়ে দিন। অধীর আগ্রহ নিয়ে লক্ষকোটি মুক্তমনা আপনার লেখা পড়ার অপেক্ষায় আছে।
@আকাশ মালিক,
একটি লেখা আছে বটে, তবে সেটি আমার নয়। স্বশিক্ষিত মোকছেদ আলীর। সেটি একটি চিঠি। ’একজন নাস্তিক পুত্রের নিকট পিতার চিঠি’। পাঠাবো, তবে তাড়াতাড়ি নয়, মডারেটরদের নিষেধ আছে। প্রথম পাতা থেকে আমি আউট না হওয়া পর্যন্ত প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ।
আপনার লেখাগুলো আমার হৃদয়ে জ্বল জ্বল করে- আশেয়া, বোকার স্বর্গ, খুতবা, ইসলামের অপর পৃষ্ঠা। ভাই, লিখলেন কিভাবে?
আপনার খুতবা পড়ার পর আমিও আপনার অনুকরণে একটা লিখেছি। সেটি মাওলানা হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদীর ওয়াজ অবলম্বনে।
চিন্তা করি- হেই ব্যাটা যুক্তিবাদী হইল ক্যামনে?
@মাহফুজ,
মিয়া ভাই, এই প্রেমের পরিনতি কি ? কি তার প্রতিদান ?
আপনাদের ভাবি ল্যাপটপের সামনে বসতে দেখলেই আমার প্রতি এমন সব বাক্যবান নিক্ষেপ করে যে মাথায় উকুন থাকলে এতদিনে তারাও পালিয়ে যেত।
আমি মনে মনে গেয়ে উঠি, নিন্দার কাঁটা যাদি না বিধিল গায়ে———————————–প্রেমের কি সাধ আছে বল।
এমন একটি প্লাটফর্ম তৈ্রিতে যারা ( নামগুলি না হয় নাই বললাম) নিরলস ভাবে অবদান রেখেছেন বা রেখে চলেছেন তাদের সকলের প্রতি থাকল অসীম কৃ্তজ্ঞতা, শ্রদ্ধা ও ভালবাসা।