বেগম রোকেয়ার পথ ধরে বাংলাদেশের নারীরা এগিয়ে গেছে সবখানে সারা বিশ্বে ও।
তারপরও কথা থাকে।
আমরা নিজ বাসভূমে কতটা নিরাপদ ও মর্যাদায় বাস করছি!
প্রতিদিন কাগজ পড়লেই বোঝা যায় দেশের চিত্র-বখাটে যুবক ও তরুনরা বসবাসের অযোগ্য
করে তুলছে জনপদ।বিশেষ করে স্কুল, কলেজে পড়া তরুনীদের।
গভীরভাবে তাকালে দেখা যাবে তারা আসছে মূলতঃ-অশিক্ষিত পরিবেশ থেকে।
অনেকটা বলতে গেলে অশিক্ষা পেয়ে ভালভাবে গড়ে ওঠেনি।
এতে মা দেরও অবদান খাট করে দেখার অবকাশ নেই।
মায়েদের হাতেই সন্তানরা বড় হয় শিক্ষা নেয়।
কথা হচ্ছে যে যেদেশে দারিদ্রপীড়িত জনগণের পেটের খাবার জোটেনা,
তারা কোথা থেকে সুশিক্ষা পাবে ও সন্তানদের শিক্ষা দেবে!
নিজের শিক্ষা থাকলেইতো সন্তানদের সুশিক্ষিত করা যায় নৈতিক শিক্ষা দেয়া যায়।
অবশ্য এর ব্যতিক্রমও আছে তা হাতে গোণা।
স্কুল,কলেজের শিক্ষকরা দায়সারা কোনরকম শিক্ষা দিয়ে খালাস!
ছাত্রছাত্রীদের নৈতিক ও সামাজিক শিক্ষা দেওয়ার সময় কোথায় তাদের!
একটা সমস্যার সাথে আরেকটা জড়িত।
দারিদ্র,শিক্ষা,নৈতিকশিক্ষা,পারিবারিক শিক্ষা।
আমাদের দেশে সাধারনতঃ পুরুষেরা জীবিকার জন্য ব্যস্ত থাকেন নারীরাও কেউ কেউ।
তবে বিপুল সংখ্যক নারী ঘরে থাকেন।।
আগামী প্রজন্মকে সুশিক্ষিত করার দায়িত্বকে তারা এড়িয়ে যেতে পারেননা।
প্রশ্ন হচ্ছে কিভাবে?
তারা নিজেরাই যদি তা না জানেন!আমাদের দেশে নারীশিক্ষার হার আশংকাজনকভাবে কম!
দেশকে অর্থনৈতিক,সামাজিক ও নৈতিকভাবে সামনে এগিয়ে নিতে শিক্ষার বিকল্প কিছু নেই।
এবার দেশে গিয়ে যা দেখলাম, রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রোকেয়ার জন্মউতসব উপলক্ষে
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হল।
প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী ফাহমিদা খাতুন(বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক,যখন বাংলাদেশের হাতে গোনা
কজন মহিলা ঐ পদে ছিলেন,তার বিনয়ী প্রশংসাসুলভ ব্যবহারে সবাই মুগ্ধ)।
গান গাওয়ার শুরুতেই পেছন থেকে ছাত্রদের গুঞ্জন শোনা গেল।
উনি দুইটা বেহেস্তে যাবেন!সংগত কারণেই ওনার প্রথম বিয়ে স্থায়ী হয়নি।
আমি নিশ্চিত ওনার জায়গায় একজন পুরুষ হলে ওরা এসব বলতনা!
এই হল আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রদের নৈতিক ও সামাজিক ব্যবহার!
ফাহমিদা খাতুনের অন্য গুনগুলো ওদের চোখে পরেনি হয়তবা তা ওদের কাছে অতটা প্রয়োজনীয় নয়!
দেশের এনজিও গুলো পাশ্চাত্য সমাজের মত কম্যুনিটি সেন্টার গড়ে এসব পরিবারের শিশুদের ও
তরুনদের সামাজিক,নৈতিক ও সাংস্কৃতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারলে হয়তবা কিছুটা সমস্যার
সমাধান কিছুটা সম্ভব।
তারপরও সবার আগে দরকার পারিবারিক শিক্ষা!
Apni ki Rangpurer?
Amake chinben hoito…amar mayer naam nazma.
[email protected]
আমি অশিক্ষা থেকে কুশিক্ষাকেই দায়ী করব বেশী। অশিক্ষিত, মানে যারা কোনরকম প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পায়নি (এদের আবশ্যিকভাবে আমি অশিক্ষিত বলি না) সেসব পরিবারের ছেলেরাও যে এসব করবে তেমন কোন কথা নেই।
তেমনি তথাকথিত উচ্চশিক্ষিত ছেলেরা এসব করবে না তেমন কোন নিয়ম নেই।
ঘরের পরিবেশ ও সামগ্রিকভাবে আশাপাশের পরিবেশের প্রভাব সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে। আমার মনে পড়ে না বাড়িতে আমাকে কোনদিন পার্টিকুলারলি মহিলাদের সাথে কেমন ব্যাবহার করতে হবে তেমন কোন শিক্ষা কেউ সরাসরি দিয়েছে বলে। আমি মনে করি না যে শিক্ষিত অশিক্ষিত যে কোন বাবা মাই তাদের ছেলেদের এসব শিক্ষা বাড়িতে শিক্ষা দেয়। তারা কম বেশী ভাল শিক্ষাই দেয়। মুশকিল হল শুধু বাড়ির শিক্ষা দিয়ে হয় না। বাড়িতে ভাল শিক্ষা পেয়েও সংগদোষেও এসব রোগ হতে পারে। আর অনেক বাবা মা একদিকে ভাল শিক্ষা দেয়, আবার কোন অন্যায় কাজ করলে পুত্রস্নেহে অন্ধ হয়ে তাদের আষ্কারাও দেয়। এটাই আরো ক্ষতির কারন। দেশের অধিকাংশ বখাটে কেস এই এমন দেখা যায়।
আরেকটি মূল কারন মনে হয় মহিলাদের নীচু চোখে দেখা ও নারী-পুরুষের স্বাভাবিক সম্পর্ককে নিরুতসাহিত করা। এর ফলে স্বভাবতই বয়ঃসন্ধিকালের ছেলেদের মনে মেয়েদের সম্পর্কে কৌতূহল থাকে, কিন্তু সেই কৌতূহল মেটানোর কার্যকরি তেমন উপায় থাকে না। মেয়েদেরও শেখানো হয় ছেলেদের থেকে ১০০ হাত দূরে থাকবে। ফলে সামাজিকভাবেই ছেলে মেয়ের মাঝে একটি বৈষম্যের দেওয়াল তুলে ধরা হয়, সৃষ্টি হয় মানসিক টেনশন।
তার বহিঃপ্রকাশ এসব বখাটেগিরি। যেই ছেলের মেয়ে বন্ধু আছে বা প্রেম করে সেই ছেলের এমন কাজ কারবার করার সম্ভাবনা অনেক কম। উন্নত দেশগুলিতে ছেলে মেয়ের সম্পর্ক অনেক স্বাভাবিক, তাই তাদের সমাজেও এসব সমস্যা কিছুটা থাকলেও অনেক কম।
@আদিল মাহমুদ,
আমার মনে হয় চাইল্ডসাইকোলজী প্রয়োগ করলে হয়ত ভাল
কিছু পাবার আশা থাকতে পারে।
কিন্তু আমাদের দেশে এর কোন চর্চা নাই বললেই চলে।
এখানে দেখি প্রতি উইকএন্ডে মা ছোট বাচ্চাদের নিয়ে লাইব্রেরীতে যান।
গাদা গাদা বাচ্চাদের বই নিয়ে বাসায় ফেরেন।
বাচ্চাদের হয়ত অনেক সময় দিতে পারেন না।
কিন্তু যে টুকু দেন তা ‘কোয়ালিটি টাইম’!
ধন্যবাদ!
যুবক ও তরুনদের বখাটে হয়ে যাবার পিছনে পরিবেশ মুলত দায়ী, সেটা অশিক্ষা হউক আর কুশিক্ষা হউক। সে পরিবেশ ঘরের ও বাইরের দুটোরই হতে পারে। জন্মসুত্রের সাথে পরিবেশের কোন সম্পর্ক নাই। ঘরের পরিবেশ সৃ্ষ্টি করার পিছনে মা ও বাবা দুজনেই সমান দায়ী, কারো অবদান ছোট বা বড় করে দেখার কোন অবকাশ নাই।
@ব্রাইট স্মাইল্,
আমি এখানে দারিদ্রপীড়িত অশিক্ষিত পরিবেশ বোঝাতে চেয়েছি।
বলিউডের ছবি গুলো এর প্রকৃষ্ট উদাহরন।দেখছেন সেখানে!দারিদ্র আর অপরাধ জগত কেমন
হাত ধরাধরি করে চলে।বাংলাদেশেও পুলিশের বড় কর্তারা বলেন ঢাকার বস্তি উঠে গেলে
ড্রাগব্যবসাও উঠে যাবে।
অবশ্যই ছেলেমেয়ে প্রতিপালনে কারও অবদান ছোট করে দেখার অবকাশ নেই।
আমি বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে বলেছি।
অনেক সময় বাবারা কাছে থাকতে পারেন না নানা কারণে।
তখন পুরো দায় কিন্তু মায়েদের ওপরই বর্তায়।
আসলেই-“When you educate a mother, you educate whole nation”.
ধন্যবাদ!
@লাইজু নাহার,
কিন্তু এটাও দেখতে হবে যে সেই ড্রাগ কিনে কারা। বস্তিবাসীরা ড্রাগের ব্যাবসা করে দারিদ্রতার জন্য, কিন্তু সেই ড্রাগের খরিদ্দারতো ঢাকার সব বড়লোকের ছেলে। সুতরাং যতক্ষন ড্রাগের ক্রেতা থাকবে, বস্তি উঠে গেলেও ড্রাগের ব্যাবসা ঠিকই চলবে।
”
এই বিষয়ে আমি গীতা দাসের সাথে সহমত পষন করছি। এই ভাবে মায়ের দোষ ঢালাও বাহবে দেয়া ঠিক মনে করছিনা। আর নানা প্রেক্ষাপট আছে ।
লাইজু নাহার,
দুটো বিষয়েই দ্বিমত পোষণ করছি। এক, তারা আসছে মূলতঃ অশিক্ষিত পরিবেশ থেকে।অর্থাৎ সব দায় তাদের জন্মের ঠিকানার।
দুই, এতে মা দেরও অবদান খাট করে দেখার অবকাশ নেই। আপনিও যত দোষ নন্দ ঘোষ মানে মায়েদেরই দিলেন।
@গীতা দাস, একা,
ভেবে দেখেছেন এসব ছেলেরা মা থেকে জন্ম নেয় পরে মায়ের জাত কে
অপমান করে, এসিড ছোড়ে,খুন করে আরও কত কি করে!
এখানে মায়েদের করার কি কিছুই নেই?
আমি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বলছি।
অনেক প্রবাসী বাবার ছেলে মেয়ে বাবাকে বছরে একবারও হয়ত দেখেনা,
এমনকি দেশেও এমন অনেক আছেন কর্মসূত্রে পরিবারের কাছে থাকতে পারেন না।
এখানে আমি মেয়েদের দোষ দেইনি।আমাদেরও অনেক কিছু করার আছে এই প্রেক্ষিতে তাই বলেছি।
যুগটা গার্লপাওয়াররের আর আমরা কোথায়!নিজেদের ছেলেদের সামলাতে পারিনা।
ইউরোপে দেখি ছোট থেকেই ওরা ছেলেমেয়েদের কড়া শাসনে রাখে,ন্যায়,অন্যায়,ভাল,মন্দ বোঝায়।ইচ্ছে করলেই বাবা মা ছেলেদের কড়া মনিটরিং করতে পারে।
ধন্যবাদ পড়ার ও মন্তব্যের জন্য!