মুসলমানদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ কোরান। তারা বিশ্বাস করেন এটি স্বয়ং আল্লাহ নবী মুহাম্মদের কাছে বিভিন্ন পদ্ধতিতে নাযিল করেছেন। প্রায় সকল মুসলমানই বিশ্বাস করেন যে কোরান অবতরণের পর থেকে তাতে আজ পর্যন্ত কোনো বিকৃতি ঘটে নাই এবং তা লওহে মাহফুজে যেমন রয়েছে ঠিক সেই অবস্থায় বর্তমানে রয়েছে – এসব বিশ্বাসের সমর্থনে কোরানে অজস্র আয়াত রয়েছে। এটা হল কোরানের অলৌকিকতায় বিশ্বাসীদের কথা। এবার কোরানের অলৌকিকতার দাবি কতটা যৌক্তিক সে আলোচনায় আসা যাক।
কোরানের অলৌকিকতাঃ প্রমাণের দায়িত্ব কার
ধরুন, আকমল সাহেবের কাছে একশ’টি বই আছে। এবার তিনি এর মধ্য থেকে একটি বই বের করে বললেন, ‘এই বইটি আল্লাহ দ্বারা রচিত আর বাদবাকি নিরানব্বইটি মানুষের দ্বারা রচিত’। এখন একটু ভাবুন- এর প্রত্যুত্তরে আকমল সাহেবকে কি বলা যেতে পারে। একজন যুক্তিবাদী প্রথমেই তার কাছ থেকে জানতে চাইবেন তিনি কিভাবে ওটা আল্লাহ প্রদত্ত বলে নিশ্চিত হলেন। এটা জানতে চাইলে আকমল সাহেব বলতে পারেন ‘আপনিই বরং প্রমাণ করুন ওটা আল্লাহ রচিত নয়’। আমরা প্রায়ই ধর্মবিশ্বাসীদের কাছ থেকে এধরণের হাস্যকর উদ্ভট কথাবার্তা শুনে থাকি। তাদের কথা হলো আমরা নাস্তিকরা যেহেতু আল্লাহতে বিশ্বাস করি না, ধর্মে বিশ্বাস করি না তাই আমাদেরকেই এগুলো অপ্রমাণ করতে হবে। কিন্তু যা প্রমাণ করা যায় নি তা তো এমনিতেই অগ্রহণযোগ্য, একে কি আলাদাভাবে অপ্রমাণ করার প্রয়োজন আছে?
এবার কোরানের ক্ষেত্রে আসি। বই মানুষ লিখবে এটাই স্বাভাবিক। এখন কেউ যদি কোনো বই কো্নো অলৌকিক সত্তার দ্বারা রচিত বলে দাবি করেন তবে স্বাভাবিকভাবেই তা প্রমাণ করার দায়িত্ব ঐ দাবিকারকের। একজন আকমল সাহেব বা অন্য কেউ কোনো একটা গ্রন্থকে আল্লাহ প্রদত্ত বলে দাবি করলে তা অপ্রমাণের দায়িত্ব অন্য কারো উপর পড়ে না এবং তিনি যদি তার দাবি প্রমাণে ব্যর্থ হোন বা তার দেয়া প্রমাণ ভুল বলে প্রমাণিত হয় তবেই তার দাবি অগ্রহণযোগ্য – এ সহজ কথাটি বুঝার জন্য যদিও গভীর চিন্তার প্রয়োজন নেই তারপরেও ধর্মবাদীরা বরাবরই তা না বুঝার ভান করেন এবং নিজের প্রমাণের দায়িত্ব অন্যের ঘাড়ে চেপে দিয়ে নিরাপদ থাকতে চান। আপনিই বরং প্রমাণ করুন ওটা আল্লাহ প্রদত্ত নয়- এ ধরণের অজুহাত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় কেননা এতে করে যে কেউ নিজের রচিত বই বা অন্য কারো লেখা বইকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বা অন্য কোনো কারণে ঈশ্বরপ্রদত্ত বলে দাবি করতে পারেন এবং তা প্রমাণ করতে না পেরে এ ধরণের ছুঁতো ধরতে পারেন এবং সবচেয়ে বড় কথা – কোনো ধর্মগ্রন্থ আল্লাহ প্রদত্ত নয় তা প্রমাণ করা যুক্তিবাদীদের দায়িত্ব নয়; যুক্তিবাদীদের দায়িত্ব হলো এ পর্যন্ত ঐ গ্রন্থকে আল্লাহ প্রেরিত বলে প্রমাণের জন্য প্রদত্ত যুক্তিগুলো খণ্ডন। তবে কোরানের যেহেতু বস্তুগত অস্তিত্ব আছে তাই যুক্তিবাদীদের কাছে কোরানকে আল্লাহ প্রদত্ত নয় বলে প্রমাণের পন্থা উন্মুক্ত রয়েছে।
মোট কথা, কেউ যদি কোরানকে আল্লাহর দ্বারা রচিত বলে দাবি করেন তবে-
১। এ দাবি প্রমাণ করার দায়িত্ব সম্পূর্ণ তারই। তাকে কোরানের সব বাক্য ও শব্দ আল্লাহ রচিত এবং কোরানের সাথে অন্য কিছুর সামান্যতম মিশ্রণও ঘটে নি বলে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করতে হবে।
২। যেহেতু তিনি কোরানকে আল্লাহর রচিত বলে দাবি করছেন তাই সর্বাগ্রে তাকে আল্লাহর অস্তিত্ব প্রমাণ করতে হবে, বলা বাহুল্য এ পর্যন্ত আল্লার আস্তিত্বের স্বপক্ষে যেসব যুক্তি উপস্থাপিত হয়েছে তার সবগুলোই খণ্ডিত হয়েছে। এ নিয়ে অন্য কোথাও আলোচনা করা যাবে।
৩। আল্লাহ ঠিক কোন্ প্রক্রিয়ায়, কখন, কিভাবে কোরান মানুষের কাছে পাঠালেন এবং কেন পাঠালেন, তা যে উদ্দেশ্যে পাঠালেন তা কতটা সফল হয়েছে এগুলোর উপযুক্ত ব্যাখ্যা তাকে দিতে হবে।
৪। মানুষ নবী ও রাসূল হতে পারে আর মুহাম্মদ নবী ও রাসূল ছিলেন –এ বিষয়টিও তাকে প্রমাণ করতে হবে। আরো প্রমাণ করতে হবে- মুহাম্মদ দীর্ঘ ২৩ বছর পুরো মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন এবং কখনো ইচ্ছাকৃতভাবে বা বাধ্য হয়ে বা পরিস্থিতির শিকার হয়েও নিজের বা অন্য কারো রচনাকে ওহী বা প্রত্যাদেশ বলে ঘোষণা দেন নি।
৫। যেহেতু কোরান অবতীর্ণ হওয়া একটি অলৌকিক ঘটনা তাই অলৌকিক ঘটনা বাস্তবে ঘটতে পারে তা তাকে প্রমাণ করতে হবে।
এছাড়া মুসলমানরা বিশ্বাস করেন জিবরাইল ফেরেশতা আল্লার কাছ থেকে মুহাম্মদের কাছে ওহী নিয়ে আসতেন। তাই জিবরাইলের অস্তিত্বও তাদেরকেই প্রমাণ করতে হবে।
উপরোক্ত বিষয়গুলোসহ কোরানের অলৌকিকতা সম্পর্কিত সবগুলো বিষয় যতক্ষণ কোরানের অলৌকিকতার দাবিদাররা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে না পারছেন ততক্ষণ একজন যুক্তিবাদীর কোরআনকে অলৌকিক বলে মেনে নেয়ার কোন সংগত কারণ নেই।
ওহী অবতরণ পদ্ধতি ও কিছু কথা
কোরান আল্লার বাণী? ভালো কথা, ওটা তবে মুহাম্মদের কাছে এলো কিভাবে? এ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর কিভাবে কোরানের অলৌকিকতায় বিশ্বাসীরা দিতে চেয়েছেন তা আলোচনা প্রয়োজন।
কোরান নাকি পুরো ২৩ বছরে মুহাম্মদের উপর অবতীর্ণ(?) হয়েছে। কিভাবে অবতীর্ণ হয়েছে তার বিচিত্র বিবরণ রয়েছে ইসলামে। এগুলো এতই উদ্ভট যে একজন যুক্তিবোধ সম্পন্ন মানুষের কাছে তা ‘ফেয়ারি টেল’ ব্যতীত আর কিছু মনে হওয়ার অবকাশ নেই। আমরা এখন কোরান নাযিলের বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে জানব। এখানে এ, বি, এম, আব্দুল মান্নান মিয়া ও আহমদ আবুল কালামের লেখা “উচ্চ মাধ্যমিক ইসলাম শিক্ষা, দ্বিতীয় পত্র” – এ বর্ণিত বিভিন্ন প্রকার ওহী অবতরণ পদ্ধতি ও তার ব্যাখ্যা নিচে হুবহু তুলে দেয়া হলো-
“১।সত্য স্বপ্ন
নবী রাসূলগণের স্বপ্নও ওহী। বিশেষ করে হযরত মুহাম্মদ (স) আল্লাহর অনেক প্রত্যাদেশ বা ওহী লাভ করেছেন স্বপ্নের মাধ্যমে। এই স্বপ্নকে বলা হয় সত্য বা বাস্তব স্বপ্ন। এ এমনই স্বপ্ন যা অবাস্তব হয় না বা বিফলে যায় না। হযরত আয়েশা (রা) ইরশাদ করেন, রাসুলুল্লাহ (স) এর উপর ওহীর সূচনা হয়েছিল সত্য স্বপ্নের মাধ্যমে। তাঁর জাগতিক পর্যায়ের স্বপ্ন দ্বারা তিনি অবহিত হতে পারেন যে যথাশীঘ্র তার উপর আল্লাহর প্রত্যক্ষ ওহী কুরআন অবতীর্ণ হবে। রাসূলুল্লাহ (স) মাদানী জীবনে যে স্বপ্ন দেখেন তা কুরআনে এসেছে এভাবেঃ
আল্লাহ তার রাসূলের স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করেছেন যে তোমরা অবশ্যই মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে……(সূরা আল ফাতহ)
হযরত ইব্রাহিম (আ) তার পুত্র ইসমাঈল (আ) কে কুরবানী করার আদেশও লাভ করেছিলেন স্বপ্নের মাধ্যমে। আরো অনেক নবী স্বপ্নের মাধ্যমে ওহী লাভ করেছেন বলে জানা যায়।
২। ঘণ্টা ধ্বনি পদ্ধতি
ঘণ্টা ধ্বনি পদ্ধতিতে মহানবী (স)- এর উপর ওহী নাযিল হত। ওহী নাযিল হওয়ার পূর্ব মুহূর্ত হতে তাঁর কানে এ ঘন্টা ধ্বনি বাজতে থাকত। তাঁর কাছে উপস্থিত কোন কোন সাহাবীও এ ঘন্টা ধ্বনি শুনেছেন বলে জানা যায়। হযরত আয়েশা (রা) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত হারিছ ইবনে হিশাম রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট জিজ্ঞাসা করেন-
হে আল্লাহর রাসূল! আপনার নিকট কিভাবে ওহী আসে? এর উত্তরে তিনি বলেন-
কখনও কখনও আমার নিকট ওহী আসে ঘন্টা ধ্বনির মত। এ প্রকার ওহী আমার খুবই কষ্টকর মনে হয়। তবুও সে (জিবরাঈল আ) যা বলে আমি তা তাৎক্ষণিক আয়ত্ত করি।
এই ঘন্টা ধ্বনি কিসের ধ্বনি সে বিষয়ে একাধিক মত পাওয়া যায়। কেউ বলেছেন, এটি আল্লাহর কথা বলার ধ্বনি। কেউ বলেছেন, এটি জিবরাঈল (আ)- এর পা বা ডানার ধ্বনি ইত্যাদি। শাহ ওয়ালী উল্লাহ (রহ) বলেছেন, মানুষের বাহ্য ইন্দ্রীয় পার্থিব জীবন হতে পৃথক করা হলে নৈসর্গিকভাবেই উক্তরূপ ঘন্টা ধ্বনি শোনা যেতে পারে।
৩। অন্তর্লোকে ঢেলে দেওয়া পদ্ধতি
রাসুলুল্লাহ (সা)- এর ‘ইলক্বায়ি ফিল ক্বালব’ বা অন্তরে ওহী সঞ্চারণ পদ্ধতি নামেও অভিহিত করা হয়। রাসূলুল্লাহ (সা) এ বিষয়ে ইরশাদ করেন,
রুহুল কুদুস জিবরাঈল (আ) আমার অন্তর্লোকে ঢেলে দিয়েছেন বা সঞ্চারিত করেছেন বা ফুঁকে দিয়েছেন।
এক্ষেত্রে এমনও হতে পারে যে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ (সা)- এর অন্তরে তার ওহী সরাসরি সঞ্চার করেন নিজ ক্ষমতা বলে। যেভাবেই হোক রাসূল (সা) খুবই কম কসরতে এ প্রকার ওহী তার অন্তর্লোকে আপনা আপনি প্রস্তুতভাবে লাভ করে থাকেন।
৪।ফেরেশতার মানবাকৃতিতে আগমন
ফেরেশতাগণের নিজ নিজ আকৃতি রয়েছে। হযরত জিবরাঈল নিজ আকৃতিতে প্রকাশিত হন আবার কখনও কখনও মানব আকৃতিতেও প্রকাশিত হন রাসূল (সা)এর নিকট। সহীহ হাদীস দ্বারা জানা যায় হযরত জিবরাঈল (আ) মানুষরূপে রাসূলুল্লাহ (সা) –এর নিকট এসে আল্লাহর ওহী পৌঁছে দিতেন। সিংহভাগ ক্ষেত্রে সাহাবিগণ উক্ত মানুষটি দেখতে পেতেন কিন্তু বুঝতে পারতেন যে উক্ত মানুষটি আসলে মানুষ নয় ফেরেশতা। বিশিষ্ট সাহাবী হযরত দাহিয়াতুল কালবী (রা) এর আকৃতিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফেরেশতে ওহী নিয়ে আসতেন। অন্য সাহাবী বা অপরিচত লোকের আকৃতিতেও ফেরেশতা ওহী নিয়ে আসতেন।
৫। নিজ আকৃতিতে ফেরেশতার আগমন
আল্লাহ তাআলা হযরত জিবরাঈল (আ) –কে যে আকৃতিতে সৃষ্টি করেছে সে আকৃতিতেও তিনি রাসূল (সা) –এর নিকট ওহী নিয়ে আসতেন বলে জানা যায়। রাসুলুল্লাহ (সা) কুরআনের প্রথম ওহী যখন গারে হেরায় লাভ করেন তখন হযরত জিবরাঈল (আ) নিজ আকৃতিতে আগমন করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা) দুবার বা তিন বার তাঁকে তাঁর নিজ আকৃতিতে দেখেছেন বলে জানা যায় (১) একবার গারে হেরায় (২) একবার মিরাজকালে সিদরাতুল মুনতাহায় (৩) আরেক বার ওহী বন্ধের পরে পুনঃ ওহী চালুর সময়।
৬। পর্দার অন্তরাল হতে
মহান আল্লাহ রাসূলুল্লাহ (স) –এর প্রতি তার জাগ্রতকালে পর্দার আড়াল হতে সরাসরি ওহী করেছেন। পর্দার অন্তরালে আল্লাহ কথা বলেছেন পর্দার বাইরে মুহাম্মদ (স) –এর সংগে। মিরাজ রজনীতে আল্লাহ এরূপ রাসূল (স) –এর সংগে কথা বলেছেন বলে জানা যায় এবং এ পদ্ধতিতেই তার প্রতি প্রথমে ৫০ ওয়াক্ত এবং পরবর্তী পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের বিধান অবতীর্ণ ও ফরজ হয় এই মিরাজ রজনীতে।
৭। তন্দ্রাকালে ওহী লাভ
রাসুলুল্লাহ (স) যেমন জাগ্রত অবস্থায় ওহী পেয়েছেন তেমন পেয়েছেন নিদ্রিত অবস্থায়। একটি রিওয়ায়াত হতে জানা যায় যে রাসূল (স) এ পদ্ধতিতে সাতবার ওহী পেয়েছেন।
৮। হযরত ইসরাফীল (আ) –এর মাধ্যমে ওহী লাভ
আল্লাহ তাআলা কখনও কখনও হযরত ইসরাফীল (আ) –এর মাধ্যমে রাসূল (স)-এর নিকটে ওহী পাঠিয়েছেন বলে জানা যায়। খুব কমই তিনি ওহী নিয়ে এসেছেন।
ওহী অবতরণ পদ্ধতি সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন,
কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় যে আল্লাহ তার সংগে বাক্যালাপ করবেন সরাসরী ওহী ব্যতীত কিংবা পর্দার অন্তরাল ব্যতীত কিংবা দূত প্রেরণ ব্যতীত অতঃপর উক্ত দূত (মানুষের নিকট) তাঁর ইঁচ্ছা মাফিক তার প্রত্যাদেশ পৌছে দিবে তার অনুমতিক্রমে। হযরত হারিছ ইবন হিশাম (রা) রাসূলুল্লাহ (সা) –এর নিকট ওহী আসার পদ্ধতি জিজ্ঞাসা করলে রাসূল (স) বলেনঃ
কখনও আমার নিকট ওহী আসত ঘন্টা ধ্বনির মত। এটি আমার উপর অত্যন্ত কষ্টকর মনে হয়। এতে আমার ঘাম বেরিয়ে যায়। তবুও ফেরেশতা যা বলে আমি তা তাৎক্ষণিকভাবে আয়ত্ত করে লই। কখনও কখনও ফেরেশতা আগমন করে পুরুষের আকৃতিতে। অতঃপর সে আমার সংগে বাক্যালাপ করে। সে যা বলে আমি তা তাৎক্ষণিকভাবে আয়ত্ত করে লই। হযরত আয়েশা (রা) বলেন, আমি দেখেছি যে তাঁর (রাসূল (স)-এর) উপর ওহী আসে কঠিন শীতের দিনে, এতে তাঁর কষ্ট ও উষ্ণতাপ অনুভূত হয় আর তখন তাঁর ললাট হতে টপ টপ করে ঘাম ঝরে পড়ে। (সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম)”
(পৃষ্টা ২৬-২৮; চতুর্থ সংস্করণঃ জুন,২০০৫; প্রকাশকঃ হাসান বুক হাউসের পক্ষে ডঃ মোহাম্মদ আবুল হাসান, ৬৫, প্যারীদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০)
বিখ্যাত সিরাত গ্রন্থ ‘আর রাহীকুল মাখতুম’ এর ওহী অবতরণ সম্পর্কিত অংশ –
ওহী অবতরণের উক্ত পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে কিছু কথা না বললেই নয়। উপরের বর্ণনায় দেখলাম মুহাম্মদ স্বপ্নকেও ওহী বা প্রত্যাদেশ বলে মনে করেছেন বা চালিয়ে দিয়েছেন। এটি অবশ্য খুব নিরাপদ একটা পদ্ধতি – কেউ কোন প্রশ্ন করার অবকাশ নেই। কেউ যদি নিজে কিছু রচনা করে তা স্বপ্নের মাধ্যমে ওহী হিসেবে পেয়েছেন বলে দাবী করেন তবে তা প্রমাণিত হবে কিভাবে? (আমাদের দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা কবিরাজ যারা স্বপ্নে পাওয়া গাছ-গাছড়ার সাহায্যে চিকিৎসা করেন তাদের কাছে গেলে হয়ত বিষয়টি বোধগম্য হয়ে উঠত!)
ঘণ্টা ধ্বনি পদ্ধতি সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। যারা মানসিকভাবে অসুস্থ, মৃগী রোগী বা হিস্টিরিয়াগ্রস্থ তাদের এরকম হওয়া অস্বাভাবিক কিছুই নয়। তখনকার সময়ে মৃগী রোগকে পবিত্র বলে মনে করা হত। তাই মুহাম্মদ যদি মৃগী রোগ বা এ ধরণের কোন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তবে তা তাকে নবী হওয়ার ক্ষেত্রে এবং কোরানকে অলৌকিক বলে প্রচার করতে সহায়ক হয়েছিল। আরো কিছু বিষয় মুহাম্মদের মানসিক সুস্থতা সম্পর্কে সন্দিহান করে তোলে, যেমন- সিনা সাকের ঘটনা- ফেরেশতারা তার বুকের রক্ত যা শয়তানি প্রণোদনার উৎস তা নাকি বুক চিরে কয়েকবার পানি দিয়ে ধুয়ে দিয়েছিলেন(বলাবাহুল্য ধারণাটি হাস্যকর, সিনাসাক করে পাপচিন্তা দূর করা অসম্ভব, এর জন্য প্রয়োজন ব্রেন সাক!!), কথিত ওহী নাযিলের সময়ে অস্বাভাবিক আচরণ- অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাওয়া তারপর সবাই তাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দিত ইত্যাদি। এছাড়া ওহী নাযিল পদ্ধতিটি যদি আল্লাহ নিয়ন্ত্রিত হয় তাহলে তাতে মুহাম্মদের কষ্ট বা বিভিন্ন ধরণের বিপত্তি হওয়ার কারণ কি? দেখেন ঘণ্টা ধ্বনি পদ্ধতিটি তার কাছে নাকি খুব কষ্টকর ছিল। কোরান যেহেতু বরকতময় এবং প্রশান্তিদায়ক তাহলে ওটা নাযিল হলে মুহাম্মদের আরাম অনুভব হওয়াই যৌক্তিক ছিল। শোনা যায়, কোরান যদি পাহাড়ে নাযিল হত তবে তা নাকি ধ্বংস হয়ে যেত আর কোরান নাযিল হওয়ার সময় মুহাম্মদ উটের উপরে থাকলে তা নাকি ভারের আধিক্যে অস্থির হয়ে উঠত। কোন গ্রন্থকে মহিমান্বিত করতে এত বিচিত্র প্রচার আসলেই অনন্য। উপরের বর্ণনায় ঘণ্টা ধ্বনিটি কিসের তার যে বিবরণ বিভিন্ন বুজুর্গ দিয়েছেন তা বড়ই মনোরম। কোরান অবতরণের ঘণ্টা ধ্বনি পদ্ধতিটি শুরু থেকেই অমুসলিমদের হাসির খোরাক যোগিয়ে আসছে।
অন্তর্লোকে ঢেলে দেয়া পদ্ধতিটি আরো চমৎকার। কারো যদি হঠাৎ কিছু মনে আসে আর তারপর তিনি মনে করেন তা আল্লাহর ওহী এবং তা পরবর্তীতে কাব্যে রূপ দিয়ে উপস্থাপন করে একে ওহী বলে দাবী করেন তবে তা নিয়ে কিছু বলার নেই। এ পদ্ধতিটিও পরম সুবিধাজনক। কারণ সত্যি সত্যি ওহী নাযিল হয়েছে কি না তা প্রমাণ করার কোনো ঝামেলা আর রইল না।
আরেকটি উদ্ভট পদ্ধতি হল ‘ফেরেশতার মানবাকৃতিতে আগমন’। ফেরেশতারা মানবাকৃতি ধারণ করে নাকি মুহাম্মদকে বিভিন্ন মেসেজ দিতেন। আমাদেরকে দেখতে হবে এ মানুষগুলো কারা ছিল। একজন সম্পর্কে জানলাম যার নাম ছিল দাহিয়াতুল কালবী। লোকটির সাথে মুহাম্মদের কি বিশেষ সম্পর্ক ছিল? ফেরেশতার মানবাকৃতিতে আসার প্রয়োজনটাই বা কি ছিল আর মাঝে মাঝে দাহিয়ান কালবী এর রূপ ধারণের কারণ কি ছিল তা কিছুটা ভাবলেই আঁচ করা সম্ভব।
এবার নিজ আকৃতিতে ফেরেশতার আগমন। ফেরেশতাদের নাকি নিজস্ব আকৃতি রয়েছে যদিও তারা যেকোন কিছুর আকৃতি ধারণ করতে পারেন। ফেরেশতাদের নিজস্ব আকৃতির রকমারি বর্ণনা শুনতে পাওয়া যায়। কারো কারো আকার নাকি এত বড় যে পৃথিবীর সব জল ঢেলে দিলেও একফোটা জল দেহ থেকে বেয়ে পড়বে না, কারো কারো রয়েছে হাজার হাজার ডানা, কারো আবার প্রতিটি পশমেই মাথা, হাত, পা সংযুক্ত ইত্যাদি। ফেরেশতারা ডানা দিয়ে কি করে তা বুঝা বেশ মুশকিল, কারণ বায়ুমণ্ডলের পরেই তো আর বাতাস নেই। বলাবাহুল্য ইসলামে এত অতি উদ্ভট ‘ফেরেশতা’ ধারণাটি কিভাবে আসল তা জানতে খুব একটা গবেষণা প্রয়োজন নেই; জ্বিন, ভুত, ফেরেশতা – এগুলোর ধারণা আজ থেকে প্রায় চৌদ্দশ’ বছর আগে আরবে বহুল প্রচলিত ছিল।
জিবরাইলকে রেখে ইসরাফিল ওহী নিয়ে কেন আসত তা বুঝা দুষ্কর। ইসরাফিল তার শিঙ্গার ডিউটি রেখে ওহী নিয়ে আসলেন –বিষয়টি কি অস্বাভাবিক নয়?
পর্দার অন্তরাল হতে কেনো ওহী নাযিল করতে হয় ওটাও বোধগম্য নয়। মুহাম্মদের সম্মুখে আল্লাহ নিজেকে প্রকাশ করলে সমস্যা কি ছিল? অনেকে হয়ত বলবেন মুহাম্মদ তা সহ্য করতে পারবেন না। কিন্তু কথা হলো –আল্লাহ তো ইচ্ছে করলেই সে ক্ষমতা মুহাম্মদকে দিতে পারতেন। আরেকটি ব্যাপার ঠিক পরিষ্কার হলো না- এ পর্দাটি কিসের পর্দা? আর পর্দার অন্তরাল হতে আল্লাহ যদি ওহী পাঠাতে পারেন তবে জিবরাইলকে দিয়ে পাঠালেন কেন? আল্লাহ যদি সব জায়গায় আছেন তবে মুহাম্মদকে কেন মেরাজে রজনীতে উর্ধ্বলোকে নিয়ে গিয়ে আল্লাহ পর্দার অন্তরাল হতে তার সাথে আলাপ করলেন তা বুঝা একদম অসাধ্য ব্যাপার!(মেরাজ কিন্তু রাতের বেলায়ই হয়, দিনের বেলায় যদি হয় আর মানুষ দেখে ফেলে তবে তার আর মাহাত্ম্য থাকল কোথায়?)
তন্দ্রাকালে ওহী লাভ? মাঝে মাঝে জটিল চিন্তায় আচ্ছন্ন হলে যদি তন্দ্রা ভাব আসে আর তখন যদি কিছু নতুন আইডিয়া মাথায় আসে তাহলে এগুলোকে কি ওহী বলতে হবে?
আরো বেশ কিছু প্রশ্ন মাথায় এসে ভর করে। যেমন- আল্লাহ সরাসরি বা জিবরাইলের মাধ্যমে নবী-রাসূলদের সাথে যেমন যোগাযোগ করতেন সেরকমভাবে সাধারণ মানুষের সাথে যোগাযোগ করলে সমস্যা কোথায়? অনেকে বলবেন, তাতে আল্লাহ মানুষকে পরীক্ষা করার যে ব্যবস্থা নিয়েছেন তা ব্যাহত হবে। আমরা বলব, তাতে বরং মানুষের পরীক্ষা নেয়া বাস্তবসম্মত হত কেননা এতে করে মানুষ আল্লার সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে ধর্মসংক্রান্ত প্রশ্নগুলোর সমাধান পেত ও আল্লাহর অস্তিত্ব সম্পর্কে নিঃসন্দেহ হওয়ার একটা উপায় খূঁজে পেত এবং এতে করে ধর্ম না মানার জন্য পরকালের অবর্ণনীয় শাস্তির কিছুটা হলেও যৌক্তিকতা থাকত।
(ওহী অবতরণ সম্পর্কিত বেশ কিছু হাদিস পাবেন প্রধান হাদিসগ্রন্থ বোখারিতে; লিংক-
http://www.usc.edu/org/cmje/religious-texts/hadith/bukhari/
বোখারি এর ওহী অবতরণ সম্পর্কিত হাদিসগুলোঃ
Volume 1, Book 1, Number 2; Volume 1, Book 1, Number 3; Volume 1, Book 1, Number 4; Volume 4, Book 52, Number 95; Volume 4, Book 54, Number 438; Volume 4, Book 54, Number 458; Volume 4, Book 54, Number 461; Volume 5, Book 59, Number 618; Volume 5, Book 59, Number 659; Volume 6, Book 60, Number 447; Volume 6, Book 60, Number 448; Volume 6, Book 60, Number 478; Volume 6, Book 60, Number 481; Volume 6, Book 61, Number 508;
এগুলো ভিন্ন ওহী অবতরণ সম্পর্কিত আরো অনেক হাদীস বোখারি সহ সিহাহ সিত্তাহ এর অন্যান্য হাদীসগ্রন্থে পাওয়া যাবে।
অন্যান্য হাদিসগ্রন্থ পাবেন- http://www.usc.edu/org/cmje/religious-texts/hadith/
বোখারি এর বাংলা অনুবাদ – http://www.banglakitab.com/BukhariShareef.htm
)
কোরান টা নিরপেক্ষ ভাবে আগে তুমি পড়ে দেখো।
যারা প্রশ্ন করছেন, তারা কোরান ভালোভাবে পড়েই করছেন। যার আদর্শের মধ্যে লুকিয়ে আছে, অজস্র ঘৃণা, হিংসা, বিদ্ধেষ যৌনতা, মিথ্যাচার সভ্য সমাজ এই গুলু জানার পরেও কি ভাবে অন্ধের মতন বসে থাকবে তখন বুঝতে পারবে।
যে লোক অতি অন্ধকারের যুগে আল আমিন বলে পরিচিত তাকে কিভাবে তোমরা এত খারাপ ভাবে লাঞ্চিত করো। কুরআন টা ভালকরে পুরো টা পরে দেখো সব বুঝে যাবে। আগে চিন্তা করো গৌতম বুদ্ধ বাসুদেব ইব্রাহীম যীশু বা মোহাম্মদ কত ভাল ছিলেন হাজার বছর পরেও তাদেরকে মানুষ অনুসরণ করে।
৯ বছরের বালি্কা??? deatails জানালে বাধিত হবো
http://www.somewhereinblog.net/blog/papiaaktar
[email protected]-> একটা বই ডেলিভারি করে দেন। ইবনে ওয়ারাকের “Why I Am Not A Muslim” থাকলে ওইটাও দিয়েন, নইলে আলী সিনার কাছে কান্নাকাটি করে মেইল পাঠাতে হবে।
আপনার কাছে ড্যান ডেনেটের Breaking the Spell- Religion as a Natural Phenomenon আর হুমায়ুন আজাদের পাক সার জমিন সাদবাদ না থাকলে এই দু’টো মেইল করে দিতে পারি, তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে এক মাস অপেক্ষা করতে হবে।
vaai thanks for u r topic…….
vaai plz send me a copy of Understanding Muhammad..
I will send u some nice E-book
this is my mail id,
[email protected]
@রামগড়ুড়ের ছানা,
আর কমিক বইটি দেখেছ – :rotfl:
http://islamcomicbook.com/comics/english/pdfs/MBOE.pdf (সাইজ 6.83 MB)
High resolution : http://islamcomicbook.com/comics/english/pdfs/MBOE-HIRES.pdf (সাইজ 94 MB)
সুপাঠ্য লেখা [বাকি মন্তব্য মুছে দেয়া হল – এডমিন]
@রায়হান আবীর,
আমার মনে হয় এগুলো মন্তব্য অপ্রয়োজনীয়। বিশেষণ ব্যবহার না করে বরং যৌক্তিক আলোচনায় নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখি। সিদ্ধান্তের ভার পাঠকদের থাকুক।
আর @ সৈকত,
এতদিন কেবল ফাঁকিবাজি লেখা দিয়া পার পাইছ। এবারে পূর্ণাঙ্গ লেখায় হাত দিলা দেখে ভাল লাগলো।
@অভিজিৎ দা,
উপদেশ মাথা পেতে নিলাম। মন্তব্য চাইলে মুছে দিতে পারেন 🙂
@অভিজিৎ,
:yes: সহমত।
সৈকত ভাই,
খুবই চমৎকার লেগেছে। কিছু ব্যাপার নিয়ে আমার বিশ্বনবী লেখাটায় আলোচনা করেছিলাম। আপনি বিষয়টাকে রীতিমত উপাদেয় করে তুলেছেন।
একটু ভুল করেছেন। মৃগীরোগ মানসিক রোগ নয়, স্নায়বিক রোগ। মুহাম্মদকে নির্দোষ ও ভালো বলা যায় যদিয আমরা স্বীকার করে নিই তাঁর Schizophrenia নামের মানসিক রোগ ছিল। তবে তার সম্ভাবনা কম। লোকটিকে শেষ পর্যন্ত ভণ্ড বলেই মনে হয়!
@আগন্তুক,
:yes: :yes: :yes:
এই লেখা পড়তে গিয়ে আরেকটা কথা মনে আসলো। সেদিন আমার মামাতো বোনরে নিয়া গেলাম বইয়ের দোকানে, সে কোরান কিনবে(দোকানদার আমার পরিচিত, সেই উসিলায় যদি কিছু কমে পায়!!)। দোকানের কর্মচারীরে বললাম যে ভাই কোরান দেখান। সে তখন বিনা অজু তে, বিনা টেনশনে(!!) ধুম কইরা কোরান ধইরা নামায়া নিয়া আসল!!! (শ্যাষে আবার কয়,”কোরান নিয়া দামাদামি নাই”!!!)
তখন আমার এই কথা মনে পড়ল যে, যারা বই গুলা বাধাই করে তারাতো বই গুলার বাধাই শক্ত হবার জন্য এবং আঠা ভালোমত জোড়া লাগার জন্য বইগুলা কে পা দিয়ে দলাই মলাই করে (কোরানের বেলাতেও একই বলেই শুনেছি)। তাহলে তাদের কি পাপ হয় না!!! 😛 (ব্যপারটা অনেকটা সৌদি খেজুরের মত!! সস্তা খেজুর প্রক্রিয়াজাত করার সময় কফি বিনের মত ওগুলোকেও পা দিয়ে দলাই মলাই করা হয়! আর আমজনতা সেগুলো মহান নেয়ামত হিসাবে পরম তৃপ্তি সহকারে দোয়া পড়ে পড়ে খায়!!!! 😀 )
আর বইয়ের দোকানেও তো হরদম অজু ছাড়া, পাক নাপাকের ধার না ধরে কোরান ধরা হচ্ছে!!! তাইলে তাদের যদি পাপের ভয় না থাকে তবে আমজনতা এত ডরায় ক্যা?
@তানভী,
ভাইরে, তুমার অন্তরেই তো যা মনে হইতাছে, শয়তান হেড কোয়ার্টার বসাইছে। বলি, না হলে এইসব বেয়াদব প্রশ্ন করার সাহস পাইতাছ কোত্থেকে? নাহ্ তুমারে নিয়া আর পারা গেলনা 😀
কোরান সত্য কারণ কোরানে লেখা কোরান সত্য। যেমন আমি সত্যবাদী কারণ আমি বলি আমিই সত্যবাদী।
@তানভী,
তাও ভাল, কম দামের আশায় লটকন মার্কেটের পুরান বই এর দোকানে যাও নাই।
আসলে ধর্মকে যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করতে গেলেই গোল বাধতে বাধ্য। তাতে উত্তরের চেয়ে প্রশ্নের পরিমান বাড়তেই থাকবে। অহী নাজিলের এত রকমের উপায় বা কোরান কেন একমাত্র অথেনটিক গ্রন্থ তা নানান রকমের কিচ্ছা কাহিনী বা গানিতিক মিরাকল এসবের সাহায্যে ব্যাখ্যা না করে বিশ্বাসের উপর ছেড়ে দিলেই ল্যাঠা চুকে।
তবে আজ এ প্রবন্ধ পড়ে আর কাল অভিজিতের দেওয়া কার্ডিওলজি জার্নালে হাদীস কোরানের মহাত্ম্য দেখে আমার মাথায়ও জার্নাল লেখার একটা আইডিয়া এসেছে।
সৈকতের প্রবন্ধ থেকে অহী প্রাপ্তির কিছু উপায় থেকে যা বুঝলাম তা আমার মতে আধুনিক যুগের টেলি-কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ছাড়া আর কিছুই নয়। ভেচে দেখুন সেই আমলে কোনরকম মাধ্যম ছাড়া (সে যুগে মাধ্যম ছিল শুধু মানুষ বা বড়জোড় পায়রা) বার্তা প্রেরনের উপায় অলৌকিক ছাড়া আর কি বলা যাবে? এটা নিঃসন্দেহে বেতার টেলি-যোগাযোগের ইঙ্গিত। কাজেই এখন আই ট্রীপল ই বা অমন কোন জার্নালে হাদীস কোরানে টেলি-কম ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর একটা আর্টিকেল লিখব বলে চিন্তা করছি। কেউ কো-অথর হতে চাইলে সত্ত্বর যোগাযোহ করুন।
@আদিল মাহমুদ,
আবার জিগস। তবে দু:খিত, এই মুহুর্তে আমার হাতে একদমই সময় নেই। তবে একজনের কথা আমি আপনাকে বলতে পারি যে সানন্দে রাজী হবে। বুঝতেই তো পারছেন কার কথা বলছি… 😀
@মিঠুন,
আপনার সময় নেই জেনে দূঃখিত হলাম। তবে যার কথা বলছেন বলে মনে হচ্ছে উনি কেন আমার কো-অথর হতে যাবেন??? উনি হবে পিয়ের রিভিউ কমিটির সভাপতি।
@আদিল মাহমুদ,
“উনি হবে পিয়ের রিভিউ কমিটির সভাপতি”
হে হে….দারুন হবে। তাহলে শুরু করে দিন কাজ..
@মিঠুন, 😀
@আদিল মাহমুদ,
এখানে ধর্ম নয় বরং প্রশ্ন হচ্ছে কোরান অলৌকিক ধর্মগ্রন্থ কি না?
ল্যাঠা চুকেনা বলেই সাহাবীগন হাদীসের মাধ্যমে, মুফাসসিরীন বা তাফসীরকারকগণ কিচ্ছা কাহিনী দিয়ে, কোরান সমর্থকগণ গানিতিক মিরাকল দেখিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে, কোরান আল্লাহর বাণী অলৌকিক ধর্মগ্রন্থ। বাদ দিলাম এদের কথা, স্বয়ং কোরান যখন দাবী করে এটা কোন মানুষের লিখা বই নয়, তখন তার সত্যতা যাচাইয়ের জন্যে যৌক্তিক ব্যখ্যার প্রয়োজন হয়। কারণ কোরান বস্তু জগত নিয়ে, আমাদের সমাজ নিয়ে, পরিবার নিয়ে, রাস্ট্র নিয়ে কথা বলেছে। সুতরাং মানুষের জীবনে এর প্রভাব অস্বীকার করার উপায় নেই। কোরান যেহেতু একটি বস্তু, চোখে দেখা যায়, হাতে ছুঁয়া যায়, তাই চোখ বুঁজে এটিকে অলৌ্কিক মনে করা বা এতে লিখিত সকল আইন কানুন আল্লাহর নির্দেশ বলে বিশ্বাস করা যায়না, এর একটা যৌক্তিক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অবশ্যই থাকতে হবে। পদার্থ বিজ্ঞানের নিয়মেই স্বীকার করে নিতে হবে, কোরান আল্লাহর বাণী অলৌকিক ধর্মগ্রন্থ নয়, ইহা একটি মানব রচিত বই। তারপর অন্যান্য বইয়ের মতো বিবেচনা করা যেতে পারে, এই বই মানুষের কল্যাণে ব্যবহার উপযোগী কি না। বইটিকে তখনই কালোপযোগী করে তোলতে এর সংস্কারের পথে আর কোন বাধা থাকবেনা।
@আকাশ মালিক,
এখানেই তো বিশ্বাসের ব্যাপার চলে আসে। আপনাকে প্রথাগত যুক্তির জগত থেকে বাইরে তাকাতে হবে। আপনি যদি আদৌ কোন ধর্মেই বিশ্বাস না করেন তাহলে কোরান বা অন্য কোন ধর্মগ্রন্থ আলৌকিক কি কোন মানুষের বানানো এ নিয়ে তো মনে কোন প্রশ্নই আসা উচিত নয়। অন্য ধর্মে বিশ্বাসীদের এ নিয়ে তর্ক করার অবকাশ আছে যেহেতু তারা অন্তত কোন ধর্মে বিশ্বাস করে, তাই কোরান নাকি বাইবেল নাক বেদ বেশী অথেন্টিক তা নিয়ে তাদের তর্ক করার অবকাশ আছে। তবে যিনি কোন ধর্মেই আদৌ বিশ্বাসী না তার কাছে ধর্মগ্রন্থ অলৌকিক এই শব্দগুলিরই তো কোন মানে নেই।
”
আমার মতে এই প্রচেষ্টাই ধর্মে মৌলিক দর্শনের সাথে সাংঘর্ষিক। ধর্মের মূলই হল অন্ধবিশ্বাস, এখানে যুক্তি প্রমানের কোন অবকাশ নেই। কিছু লোকে অতি ভক্তি বা নিজ ধর্ম শ্রেষ্ঠ প্রমানে এহেন কাজকারবার করে থাকেন। মানসিকভাবেও ধার্মিকেরা নিজেদের অন্ধবিশ্বাসী স্বীকার করাতে হীনমন্যতা বোধ করেন।
”
কোরান অলৌকিক কোন গ্রন্থ প্রমান করা গেলেই কি সমাজ বা রাষ্ট্রীয় জীবন অক্ষরে অক্ষরে কোরান মেনে চালাতে হবে? আমার তা মনে হয় না। আমার কাছে কোরান অলৌকিক গ্রন্থ নাকি তার চেয়ে অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ হল কোরানিক আইন কানুন বাস্তব জীবনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা সেটা।
কোরানে যিনি বিশ্বাসী তার কাছে কোরান অলৌকিক কোন গ্রন্থ নয় এটা আপনি কোনদিন প্রমান করতে পারবেন না। আল্লাহর অস্তিত্ব, পরকাল এসবের কি কোন যৌক্তিক প্রমান কোনদিন করা যাবে? তবে কোরানে বিশ্বাসীদের কাছে আপনি হয়ত প্রমান করতে পারবেন যে কোরান ভিত্তিক সব আইন কানুন সব যুগে চলে না, কোরানকে শ্রেষ্ঠ বা একমাত্র পূর্নাংগ জীবন বিধান এধরনের দাবীর যৌক্তিক ভিত আসলে নাই।
@আদিল ভাই,
যারা কোরান বা আল্লার অলৌকিকতায় বিশ্বাস করে তাদের বিরুদ্ধে মনে হয়না অবিশ্বাসিদের কোন কিছু বলার আছে। যতক্ষণ সেই বিশ্বাস তারা তাদের নিজের কাছে রেখে দেয়। কিন্তু সমস্যা হয় যখন সে বিশ্বাসের ভিত্তিতে তারা অন্যের জীবন, সমাজ এবং রাষ্ট্রকেও প্রভাবিত করতে চায়। যেমন ধরুন ক্লাসে ক্রিয়েশনিজম পড়ানো। আরো খারাপভাবে বলতে গেলে কাউকে মুরতাদ ঘোষণা করা বা মাথার দাম ঘোষণা করা। হুমায়ুন আজাদ, তাসলিমা নাসরিনদের উদাহরণ তো চোখের সামনেই আছে।
তারা যেহেতু সেই বিশ্বাস ব্যক্তিগতভাবে না রেখে আমার আপনার জীবনকেও প্রভাবিত করতে চায় তখন অবিশ্বাসিদের নিজের স্বার্থেই সে বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন করা বা সেগুলোর ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। কোরানের অলৌকিকতার সাথে তাকে অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার সম্পর্ক আছে। যদি প্রামানিত হয় যে কোরান ঐশী কিতাব তাহলে কাল থেকে আমিইতো তা মানার চেষ্টা করব এবং অন্যদের মানানোর চেষ্টা করব। কারণ তখন আল্লার অস্তিত্বও প্রমানিত হয়। বা উল্টো দিকে আল্লার অস্তিত্ব প্রমানিত হলেই তো কোরানের ঐশীতা (?) প্রমানিত হয়।
বলতে পারেন তাতে কি লাভ? বিশ্বাসীরা তো বিশ্বাস করেই যাবে, যতই যুক্তি দিন। কিন্তু এরকম চেষ্টাতেই তো বিশ্বাসীদের ভীত একটু একটু করে নরম হবে। কেউতো জন্ম অবিশ্বাসি নয়। অনেকে এসব পড়ার পরেই ধীরে ধীরে অন্ধবিশ্বাস থেকে বের হয়ে আসছে। প্রক্রিয়াটা যদিও ধীর।
কাজেই যত বেশি এ ধরনের লেখা বা মতামত মানুষের কাছে পৌছানো যাবে তত বেশি কম অন্ধবিশ্বাসী, যুক্তিমনষ্ক মানুষ তৈরি করা যাবে। আগেতো এ সুযোগও ছিলনা। এখন ইন্টারনেট এর কল্যাণে কিছুটা সম্ভব হচ্ছে।
কাজেই বিশ্বাস এর উপর ছেড়ে দিলেই ল্যাঠা চুকে যাচ্ছেনা বরং সেই অন্ধ বিশ্বাসকে বার বার প্রশ্ন করে তাকে দূর্বল করাই যুক্তিবাদিদের ঈমানী দায়িত্ব 😀
শুধু আশা করব যে যুক্তিবাদীরা কোনো মোল্লার মাথার দাম ঘোষণা করবেনা ধর্ম বিশ্বাসের জন্য।
@বকলম,
আমি আপনার সাথে একমত। তাই নিজেও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে ধর্ম যেহেতু বিশ্বাসের ব্যাপার তাই এ উপর ভিত্তী করে জগত সংসার চালানো ঠিক নয়। জগত সংসার চলে বিশ্বাসে নয়, যুক্তিতে।
ধর্মবাদীদের অযাচিত হস্তক্ষেপ আমিও কোনভাবেই সমর্থন করি না। এগুলির বিরুদ্ধে সরব হবার যথেষ্ট কান আছে, আমি মনে করি সেটা সবাই দায়িত্ব। আল্লাহর অস্তিত্ত্ব বিশ্বাসে কোন সমস্যা থাকার কথা নয়। কিন্তু সেই বিশ্বাসের ভিত্তীতে আল্লাহ রসূলের নামে যা তা রীতিনীতি বলপূর্বক চাপিয়ে দেওয়া অত্যন্ত অন্যায়। মালিক ভাইকে এ বিষয়ে কিছু বলেছি।
-এখানে আমার দৃষ্টিভংগী কিছুটা ভিন্ন। ধরা যাক কোরান ঐশী গ্রন্থ বলে গানিতিক বা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমান করা গেল। তার মানেই কি এই দাড়ায় যে আমি কোরান আজকের দুনিয়ার সব প্রান্তে অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলব? তা কোনভাবেই সম্ভব নয়। সেরকম কথা কোরানেও আছে বলে আমার জানা নেই। কোরানে বেশ কিছু আয়াত আছে ব্যাক্তি নবী মোহাম্মদকে উদ্দেশ্য করে লেখা, বেশ কিছু আয়াত আছে রূপক, বেশ কিছু নির্দেশনামূলক আয়াত আছে যেগুলি আসলে সে যুগের আরব দেশে জন্যই প্রযোজ্য; আজকের দুনিয়ায় মানা সম্ভব নয়। তবে বেশ কিছু কথাবার্তা আছে যেগুলি সব যুগের জন্যই প্রযোজ্য। সামগ্রিকভাবে কোরান ঐশী গ্রন্থ হলেই এর সব কথাবার্তা সব যুগের সব দেশের সব মানূষের জন্য এ ধারনা হজম করা বেশ কঠিন
মুশকিল হল বেশীরভাগ মুসলমান এই সত্য গ্রহন করতে পারেন না। এমন সব দাবী আবেগ বা অন্ধবিশ্বাস বশত করে যান যেগুলি সম্পর্কে নিজেই জানেন না। যেমনঃ, কোরানিক বা আদর্শ ইসলামী সমাজ গঠন করতে হবে এ জাতীয় বড় বড় লেখা প্রায়ই চোখে পড়ে। তাতে থাকে অনেক আয়াতের কোটেশন, নানান হাদীস। মুশকিল হল আদর্শ ইসলামী সমাজের উদাহরন কি হতে পারে সে প্রশ্নে কেউই পরিষ্কার নন। তালেবানী সমাজ আদর্শ কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে আবার ক্ষেপে উঠেন। সৌদী বা মধ্যপ্রাচ্যীয় দেশগুলিকেও আদর্শ বলতে এনারা নারাজ।
কোরানের অলৌকিকত্ব সম্পর্কেও একই কথাই খাটে। কোরানে আল্লাহ একটি চ্যালেনজ় দিয়েছেন এর মত একটু সূরাও কোন মানুষে বানাতে পারবে না। প্রায়ই শুনি এ চ্যালেঞ্জের কথা, অনেকেই গর্বভরে বলেন গত ১৫শ বছর ধরে অনেকে নাকি চেষ্টা করেছে, কেউই এ পর্যন্ত পারেনি। সপ্তাহ দুয়েক আগে এই নিয়ের আরেক যায়গায় বেশ কজনের সাথে আলাপ হয়েছে। তাদেরকে সেই সুরা লাইক সাইট দিয়েছিলাম। তাদের থেকে যা উদ্ধার করতে পেরেছি তাতে শেষ পর্যন্ত সেই বিশ্বাসের কাছেই ফিরে যেতে হয়। কারো মতে কঠিন আরবী না জানলে এই চ্যালেঞ্জ বোঝা সম্ভব নয়, আবার কারো মতেই এই চ্যালেঞ্জ মোহাম্মদের আমলের কবি যারা কোরানকে ব্যাংগ বিদ্রুপ করত তাদের উদ্দেশ্যেই করা হয়েছিল। মোদ্দা কথা হল সেই বিশ্বাস, এখানে যুক্তির কোন ঠাই নেই।
@আদিল মাহমুদ,
একদিন আমি এবং আমার মতো আরো অনেকেই ঐ বিশ্বাসীদের মতোই বিশ্বাস করতাম যে, কোরান একখানি অলৌকিক গ্রন্থ। যে ভাবে, প্রক্রীয়ায়, পদ্ধতিতে আমাদের এবং আরো অগণিত মানুষের কাছে প্রমাণীত হয়েছে যে, কোরান কোন অলৌকিক গ্রন্থ নয়, সে ভাবেই অন্যরাও জানতে পারবে, যদি আমরা জানাতে চাই। আর যদি বিশ্বাসের উপর ছেড়ে দেয়া হয়, তাহলে যুগে যুগে এই বই বিন লাদেন, শেখ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাইয়ের জন্ম দেবে। যদি বিশ্বাসের উপর ছেড়ে দেয়া হয়, তাহলে যুগ যুগান্তর ধরে বিশ্বাসীরা কুয়োর, জলাশয়ের বিষাক্ত জলকে অলৌকিক মনে করে পান করে নিজে মরবে অন্যকেও মারবে।
@আবুল কাশেম
আমি জানি, কিন্তু ওদিকে যেতে চাইনি লম্বা তর্ক এড়ানোর জন্যে। কোরানের পাতায় পাতায় মুহাম্মদ প্রমাণ রেখে গেছেন যে এই বইয়ের লেখক তিনি নিজে। মক্কী জীবনের বাক্যগুলোতে কিছু কিছু যায়গায় ‘কুল’ শব্দ ব্যবহার করে যদিও ইন্ডাইরেক্ট বা পরোক্ষ ভাষায় বাক্য লিখেছিলেন, মদীনায় এসে তারও প্রয়োজন বোধ করেন নি। সুরা ফাতিহা ছাড়াও প্রচুর বাক্য, নিজে ফার্স্ট পার্সন হয়ে ডাইরেক্ট বা প্রত্যক্ষ ভয়েসে লিখে প্রমাণ করেছেন যে, বাক্যের বক্তা তিনি নিজে, এসব তার নিজস্ব উক্তি। ঐ যে আপনি উল্লেখ করলেন-
১৯:৯৬ যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদেরকে দয়াময় আল্লাহ্ ভালবাসা দেবেন।
এখানে বক্তা কে? এবার এই সুরার ৯৪/৯৫ আয়াত দুটো দেখুন-
(৯৪) তিনি অবশ্যই তাদের হিসাব রেখেছেন—–
এই বাক্যে বক্তা আল্লাহ বললে ব্যাকরণ অশুদ্ধ হয়ে যায়।
(৯৫) আর কিয়ামতের দিনে তাদের সকলকেই আসতে হবে তার কাছে নিঃসঙ্গ অবস্থায়।
বাক্যটিতে বক্তা যদি আল্লাহ হতেন, তাহলে এভাবে হতো- আর কিয়ামতের দিনে তাদের সকলকেই আসতে হবে আমার কাছে নিঃসঙ্গ অবস্থায়।
@বকলম
:yes: :yes:
@আকাশ মালিক,
– বলতেই হবে যে আপনারা আসলে ব্যাতিক্রম। ধর্মীয় জগতে আপনাদের মত মানুষের অস্তিত্ত্ব বিরল। অন্ধবিশ্বাসীর সংখ্যাই অনেক বেশী। আমি এ জাতীয় লেখার জন্য দোষারপ করি না, বরং উতসাহই দেই। কারন ধর্মীয় নানান কুসংষ্কার, ধর্মের নামে বাটপাড়ী সমাজকে পেছানোর প্রচেষ্টা এসবের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে এসবের খুবই প্রয়ো্যন আছে। এ ধরনের গালগল্পের বিরুদ্ধে যে শুধু নাস্তিকরাই লিখেছেন তা কিন্তু নয়, ধার্মিকদের মধ্যে যারা সত, নিজের বিচার বিবেচনাবোধকে তালা চাবি মেরে রাখেন না তারাও কিন্তু লিখছেন।
তবে লাদেন, বাংলা ভাই এ জাতীয় প্রানীদের আবির্ভাব ধর্ম সম্বল করে হলেও এর পেছনের রাজনীতির খেলা কিন্তু অগ্রাহ্য করা যায় না। মাত্র কয়েক দশক আগেও তো এ ধরনের আলামত এত প্রবল মাত্রায় দেখা যায়নি। তবে এ কথা খুবই মানি যে প্রচলিত ধর্মীয় শিক্ষা মূল্যবোধের নামে যা শেখানো হয় তাতে এ ধরনের স্যাম্পল জন্ম নেওয়া খুবই সম্ভব।
বকলম সাহেব যা বলেছেন সেটা আমারো কথা;
– ধর্ম জগতের লোকজনে এটা মেনে চললে আর কোন গোল বাধার সম্ভাবনা থাকে না। কারো কাছে মা কালী রাত বিরেতে চাক্ষুস ধরা দেন বা স্বপ্নে প্রিয় নবীর দেখা পান সে বিশ্বাসে কারো কোন ক্ষতি হতে পারে না যতক্ষন না তিনি সেই বিশ্বাসের ভিত্তীতে অন্য লোকের জীবনযাত্রা নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা শুরু না করেন। জানি, এই আশাবাদ খুবই অবাস্তব।
@আকাশ মালিক,
আল্লাহপাক কোরানে লিখেছেনঃ
১৫:৯ আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।
কিন্তু আল্লাহপাক কি কথা বলছেন নিচের আয়াতগুলিতে? এই সব আয়াত কার লেখা অথবা কার উচ্চারন করা?
১৯:৯৬ যারা বিস্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদেরকে দয়াময় আল্লাহ্ ভালবাসা দেবেন।
১৬:১০১ এবং যখন আমি এক আয়াতের স্থলে অন্য আয়াত উপস্থিত করি এবং আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেন তিনিই সে সম্পর্কে ভাল জানেন; তখন তারা বলে: আপনি তো মনগড়া উক্তি করেন; বরং তাদের অধিকাংশ লোকই জানে না।
২:১১০ তোমরা নামায প্রতিষ্টা কর এবং যাকাত দাও। তোমরা নিজের জন্যে পূর্বে যে সৎকর্ম প্রেরণ করবে, তা আল্লাহ্র কাছে পাবে। তোমরা যা কিছু কর, নিশ্চয় আল্লাহ্ তা প্রত্যক্ষ করেন।
৪:১১৩ যদি আপনার প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও করুণা না হত, তবে তাদের একদল আপনাকে পথভ্রষ্ট করার সংকল্প করেই ফেলেছিল। তারা পথভ্রান্ত করতে পারে না কিন্তু নিজেদেরই এবং আপনার কোন অনিষ্ট করতে পারে না। আল্লাহ্ আপনার প্রতি ঐশীগ্রন্থ ও প্রজ্ঞা অবতীর্ণ করেছেন এবং আপনাকে এমন বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন, যা আপনি জানতেন না। আপনার প্রতি আল্লাহ্র করুণা অসীম।
৫:১১ হে মুমিনগণ, তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহ স্মরণ কর, যখন এক সম্প্রদায় তোমাদের দিকে স্বীয় হস্ত প্রসারিত করতে সচেষ্ট হয়েছিল, তখন তিনি তাদের হস্ত তোমাদের থেকে প্রতিহত করে দিলেন। আল্লাহ্কে ভয় কর এবং মুমিনদের আল্লাহ্রই উপর ভরসা করা উচিত।
৮:৫৩ তার কারণ এই যে, আল্লাহ্ কখনও পরবর্তন করেন না সে সব নেয়ামত, যা তিনি কোন জাতিকে দান করেছিলেন, যতক্ষণ না সে জাতি নিজেই পরবর্তিত করে দেয় নিজের জন্য নির্ধারিত বিষয়। বস্তুতঃ আল্লাহ্ শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী।
৮:৭৪ আর যারা ঈমান এনেছে, নিজেদের ঘর বাড়ি ছেড়েছে এবং আল্লাহ্র রাহে জেহাদ করেছে, তাঁরাই হলো সত্যিকার মুসলমান। তাঁদের জন্যে রয়েছে, ক্ষমা ও সম্মানজনক রুযী।
৯:১২৩ হে ঈমানদারগণ, তোমাদের নিকটবর্তী কাফেরদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাও এবং তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা অনূভব করুক। আর জেনে রাখ, আল্লাহ্ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।
১৯:৬৮ সুতরাং আপনার পালনকর্তার কসম, আমি অবশ্যই তাদেরকে এবং শয়তানদেরকে একত্রে সমবেত করব, অতঃপর অবশ্যই তাদেরকে নতজানু অবস্থায় জাহান্নামের চারপাশে উপস্থিত করব।
কোরানশরিফ খুলে দেখলে এই ধরনের অগুনতি আয়াত পাবেন। তা হ’লে আল্লাহপাক কি মিথ্যাবাদী?
কোরান অনুবাদঃ মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
@আবুল কাশেম,
কোরানের লেখক আল্লাহ হলে তিনি নিজেই নিজেকে উদ্দেশ্য করে বেশ কিছু আয়াত রচনা করেছেন। কোরানের শুরুর সুরা ফাতিহাই এর উদাহরন। আমি এ বিষয়ে দুয়েকটি লেখা দেখেছি যাতে বক্তাদের মতে একঘেয়েমী থেকে কোরান মুক্ত রাখার জন্যই আল্লাহ ইচ্ছাকৃতভাবেই বাচ্য পরিবর্তন করেছেন।
এ ব্যাখাও আসলে নিঃসন্দেহে যুক্তিবাদীদের কাছে গ্রহনযোগ্য মনে হবে বলে মনে হয় না। আবারো সেই বিশ্বাসের কাছেই দ্বারস্থ হতে হয়।
@আদিল মাহমুদ,
আপনি ঠিক লিখেছেন।
আরো দেখুনঃ
১৮:১-৩ আল্লাহ নিজেই নিজের নাম ধরে প্রশংসা করছেন।
২৫:১, ৩৪:১, ৩৫:১, ৩৭:১৮২, ৪৫:৩৬ আল্লাহ নিজেই নিজেকে আশীর্বাদ দিচ্ছেন।
৪৮:২৭ আল্লাহ নিজেই আল্লাহ্র নামে ইনশা আল্লাহ্ বলছেন।
এ ছাড়া অনেক আয়াতে আল্লাহ্ নিজেই নিজের নামে কসম খাচ্ছেন।
সময়ের অভাবে দীর্ঘ কিছু লিখতে পারলাম না।
সত্যি সত্যি আল্লাহ, ছাড়া আর কারো ক্ষমতা নেই এই ধরনের পাগলামি করার।
আল্লাহ্র প্রেরীত রসুল মুহম্মদের কি সত্যি কোন মৃগী রোগ ছিল? আমি এ ব্যাপারে সম্পুর্ণ নিশ্চিত নয়। কারন, নবীজি যা করেছেন সব পরিপূর্ণ সজ্ঞানে করছেন। মানুষ খুন করার সময়, লুটতরাজ করার সময়, নারীদের নিয়ে যৌন উন্মত্ততায় নিমজ্জিত হওয়ার সময়, গনহত্যা কয়ার সময়, নিজের পালিত পূত্রের স্ত্রীকে বিবাহ করার সময়, শিশু বালিকাকে ধর্ষন করার সময়…ইত্যাদি নানা ইসলামী ক্রিয়া কলাপে যখন নবীজি মেতে থাকতেন তখন কিন্তু উনার কোন রকঅম মতিভ্রম অথবা মৃগী রোগের লক্ষন দেখা যায়নি। নবীজি যা-ই করেছেন সম্পূর্ণ সজ্ঞানে করেছেন।
তা’হলে, শুধুমাত্র আল্লাহ্র ওহী পাবার সময় নবীজির মৃগী রোগ ধরবে কেন?
আসলে নবীজি ছিলেন অতি পাকা ভনিতার খেলোয়াড়। উনি ছিলেন এক মস্ত অভিনেতা।
কিন্তু কোরআন রচনার সময় নবীজি তাঁর চাতুরী গোপন রাখতে পারেন নাই। তাই কোরআনে উপরিল্লিখিত আয়াত গুলিতে নবীজির সব খেলা ধরা পড়ে গেছে।
হ্যঁ, ইসলামিস্টরা যখন উদ্ভট যূক্তি দিয়ে ঐ সব পাগলের প্রলাপসদৃশ আয়াতগুলিকে বাঁচাবার চেষ্টা করে তখন আমি হাসব না কাঁদব ভেবে পাইনা। ঐ সব আজগুবী যূক্তিতে একটি ব্যাপার পরিষ্কার–আল্লাহ্পাকের কিতাবে অজস্র একঘেঁয়েমি আয়াত আছে।
@আদিল মাহমুদ, কোরানের বক্তা আল্লাহ নিজে না মোহাম্মদ নিজে তা কোরান পড়ে বুঝার উপায় নেই।এক আয়াত পড়ে মনে হয় আল্লাহ, আবার আরেক আয়াত পড়ে মনে হয় মোহাম্মদ। কিন্তু বিভ্রান্তি আরো বাড়ে যখন পড়ি “৪১:১২: পরে “তিনি” আকাশ দুইদিনে সপ্তাকাশে পরিণত করেন এবং প্রতিটি আকাশের কাছে তার কর্তব্য ব্যক্ত করেন, আর “আমি” নিন্মের আকাশ প্রদীপসমূহ দ্বারা সুসজ্জিত করিয়াছি”
এখানে “তিনি” কে আর “আমি” কে??
@ফরহাদ,
উপরে আবুল কাশেম ভাইয়ের মন্তব্য দেখুন।
বেচারা মোহাম্মদ, আমি সব সময় তার দোষ দেইনা। সে বুঝতেই পারেনাই যে সে মানষিক রোগী। আলি সিনার বইয়ের একটা লাইন এরকম—
“When he claimed he heard voices, saw angels and other ghostly entities, he was not lying. He could not distinguish reality from fantasy”
@বকলম, আপনার কাছে কি Understanding Muhammad বইটার সফট কপি আছে? আমার কাছে ছিল কিন্তু আগের বার পিসি নষ্ট হওয়ার সময় সব ডেটা মুছে গেছে। থাকলে কি আমাকে দেয়া যাবে? আমার ইয়াহু আইডি
[email protected]
ধন্যবাদ
@সাইফুল ইসলাম,
আপনাকে সহ অন্যান্য মুক্তমনা বন্ধুদের বইটি পাঠালাম।(সাথে আরো দুটো প্রাসংগিক বই)
@সৈকত চৌধুরী, আমাকে কেন বঞ্ছিত করলেন ভাইজান? 😥 😥 😥
আমার আই ডি [email protected]
@সাইফুল ইসলাম,
আপনাকে মেইল করে দিয়েছি।
ইসলাম নিয়ে অনেক লেখা পড়ার পর আজকাল লেখাগুলোর প্রতি আগ্রহ কমে গিয়েছে কারণ প্রায় সব লেখা একই ধরনের।
তবে এ লেখাটি ব্যতিক্রম, পড়ে ভাল লাগল, যুক্তি গুলোও খুব সুন্দর, ভাষাও সাবলীল। সৈকত ভাইকে ধন্যবাদ
প্রতিটা পদ্ধতিই সুন্দর, নির্মল, শিশুতোষ আনন্দে ভরপুর। 😀
মুক্তমনায়, অনেকেই কিভাবে নাস্তিক বা সংশয়বাদী হয়েছেন তা নিয়ে লেখেন। আমার কাছে মনে হয়, অন্য কারও কাছে কিছু না শুনে, কারও ব্যাখ্যা না পড়ে শুধুমাত্র কোরান, বাইবেল বা বেদ নিজের ভাষায় পড়ে মাথায় ঢুকানোর চেষ্টা করলেই সংশয় জন্ম নিতে বেশিক্ষণ সময় লাগার কথা না।
সৈকত ভাই, খুব তাড়াতাড়ি লেখাটায় চোখ বুলালাম, বেশ মজা করে লিখেছেন। তবে এই তাড়াহুড়োর মধ্যেও বেশ কিছু বানান ভুল চোখে পড়লো, ঠিক করে দিলে ভালো হত। আমার নিজের বানানের অবস্থাও খুব ভালো না, তারপরও চোখে লাগলো দেখে বলছি, আশা করি কিছু মনে করবেন না…
পাটালেন -> পাঠালেন (কয়েক জায়গায় একই ভুল আছে)
একটা উপায় খোঁজে পেত -> একটা উপায় খুঁজে পেত
হটাৎ -> হঠাৎ
রাসূল -> রাসুল, বা রসুল
গ্রহণো্যোগ্য ->গ্রহণযোগ্য
লেখবে -> লিখবে
@রাহাত খান,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। কিছু দিন আগে টের পেয়েছি আমার বানান জ্ঞানের ভয়াবহতা সম্পর্কে। এভাবে সহায়তা করলে আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে আশা করি। আমার ভুল বানান চোখে পড়া মাত্রই জানিয়ে দিলে খুশি হব।