।। আমার এ কারাবাস।।

 

আব্দুর রহমান আবিদ

 

কারাগারে বাস আমার, সাথী তিন দস্যু;

রাত-দিন অত্যাচারে জীবন ক্ষয়িষ্ণু।

 

বড়জন লম্বাটে, চোখে আঁটা চশমা;

শোনেনা তো কোনো কথা, বেজায় সমস্যা।

ভাল কথা বললেও, তেড়ে আসে সজোরে;

ভয়ে থাকি কখন আমি পড়বো যে নজরে।

খেলাধূলা তার প্রিয়, হলে তাতে কমতি,

শাষিয়ে আমায় যায় প্রয়োজনের বাড়তি।

আমতা আমতা করে সবে আমি সাঁই দিই,

মুক্তির আশা নিয়ে কষ্টটা মেনে নিই।

 

মেজ জন মানী খুব, ধরাকে তার সরা জ্ঞান;

রাগলে সে খবর আছে, ভয়ে আমি অজ্ঞান।

হেরফের কিছু হলে, বাঁধাবে যে কান্ড!

ভেঙ্গে-চুরে তচ্‌নচ্‌, রাগ যে প্রচন্ড।

সাধ্যি কি কারও আছে, সামনেতে দাঁড়াবে?

নাকি, চড়-কিলের বন্যায় পিঠটাকে বাঁচাবে!

আমতা আমতা করে সবে আমি সাঁই দিই,

মুক্তির আশা নিয়ে কষ্টটা মেনে নিই।

 

ছোট জন আরও তেজী, সহজেই ফোঁসফাঁস;

ক্ষেপে গেলে পিটিয়ে সে আমায় বানায় লাশ।

পড়ি-মরি ছুটি আমি দুচোখ যেদিকে যায়,

আটকা যে চারিদিক, বসে বসে মার খাই।

তবুও পড়েনা ক্ষোভ, যায়না কো রাগ তার,

মাফ চেলে উলটে সে ঝাঁপিয়ে পড়ে আবার।

আমতা আমতা করে সবে আমি সাঁই দিই,

মুক্তির আশা নিয়ে কষ্টটা মেনে নিই।

 

কারাগারের রক্ষীটি সবকিছুই দেখছে;

তাদের পক্ষ নিয়ে, উলটে আমায় শাষাচ্ছে!

চারজনই এক দলে, যেন হরিহর আত্মা!

আমায় করছে তারা কেবলই শায়েস্তা।

রক্ষীটি কেউ নয়, দস্যুদেরই জননী;

কারাগারের অধিপতি, আমারই অর্ধাঙ্গিনী।

মুক্তি চাইনে আমি, কারাবাসই থাক আমার;

স্বর্গের সুখ যেন মর্তে মিলেছে আমার।

 

আমার এ কারাবাস শান্তি এনেছে বয়ে;

বিশ্বে কে আর আছে, সুখী আমার চেয়ে?

 

iPbvKvj : জানুয়ারী, ২০১০