এই ধরনের ব্লগ খোলা উচিত না। তবুও একটা রেট্রোস্পেকশন চাইছি।
[১] বাংলাদেশের ভোটে ইসলামিক শক্তির ‘কনক্লুসিভ’ পরাজয়। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির পুনঃজাগরন
[২] ভারতের বিজেপি তথা হিন্দুত্ববাদি শক্তির শোচনীয় পরাজয়। হিন্দুত্ববাদ রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে পরিতক্ত্য।
[৩] কর্পরেট আগ্রাসানের বিরুদ্ধে ফলশ্রুতি হিসাবে পশ্চিম বঙ্গে ৩৩ বছর কমিনিউস্ট শাসনের পর, ৩৩ বছরে প্রথম প্রতিটি নির্বাচনে কমিনিউস্ট শক্তির শোচনীয় হার। লালগরে কর্পরেট তথা রাষ্ট্র শক্তির বিরুদ্ধে আদিবাসিদের সফল আন্দোলন।
[৪] অর্থনৈতিক মন্দা থেকে আমেরিকার ঘুরে দাঁড়ানো।
[৫] ল্যাটিন আমেরিকাতে সমাজতান্ত্রিক দলগুলির নির্বাচনী সাফল্য।
[৬] ইউরোপে ইসলামের বিরুদ্ধে তীব্র রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া।
[৭] তালিবানদের হাতে পাকিস্তানের ছিন্ন বিচ্ছিন্ন অবস্থা।
[৮] মোল্লাতন্ত্রের বিরুদ্ধে ইরাণের গণতান্ত্রিক আন্দোলন।
[৯] কোপেন হেগেনের কার্বন সার্কাস।
[১০] আরো তীব্রতর খাদ্য এবং শক্তি সংকট
কিছু কিছু ঘটনা আঞ্চলিক হলেও বিশ্বরাজনীতিতে এর প্রভাব আছে। পশ্চিম বঙ্গের নন্দীগ্রাম এবং লালগড়, নিও লিব্যারালিজমের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী আন্দোলনে এখন আন্তর্জাতিক প্রতীক। কারন এত সফল ভাবে আর কোথাও রাষ্ট্র যন্ত্রের বিরুদ্ধে মানুষ ঘুরে দাঁড়ায় নি । শয়ে শয়ে মৃত্যুর মিছিলের ওপরে মানুষের জয় ঘোষিত হয়েছে। বাংলাদেশে ইসলামিক শক্তির চুড়ান্ত পরাজয়, নিঃসন্দেহে ইসলামিক বিশ্বে নতুন ট্রেন্ড। বাংলাদেশের মুসলমানরা প্রমান করেছেন, তারা একবিংশ শতাব্দিতে দৌড়াতে চাইছেন-সপ্তম শতকে আরবের উটের দুধ খাওয়ার ইচ্ছা তাদের নেই। যেটা মিশর, মালেশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এমন কি তুরস্কেও সম্ভব হয় নি। ভারতে সিপিএম এবং বিজেপির পরাজয় খুব পরিস্কার ভাবেই একবিংশ শতাব্দিতে অচল আদর্শবাদের বিরুদ্ধে মানুষের রায়।
বাকী সব বিষয়গুলি-পাঠকের হাতে তুলে দিলাম বিশ্লেষনের জন্যে। ভবিষ্যতের পৃথিবীতে এর প্রভাব কি হবে?
আওয়ামীলীগকে কোনভাবেই ধর্মনিরপেক্ষ বলা চলে না। পঞ্চম সংশোধনী বাতিল তথা রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের প্রশ্নে আওয়ামী নেতারাই দ্বিধাগ্রস্থ। আমার বহু বন্ধু যারা ছাত্রলীগের ‘ধোয়া তুলসীপাতা’ তারাই এর বিপক্ষে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। ধর্মের প্রশ্নে অন্যান্যরা অন্ধ,কিন্তু মুসলমানরা জন্মান্ধ। এদের বিষদাঁত কখনোই ভাংবে না, যেটা ভারতে হিন্দু মৌলবাদীদের ক্ষেত্রে হয়েছে।
সচিবালয় এখনো মৌলবাদী তৎপরতায় আচ্ছন্ন। না বাংলাদেশে খুব ভালো কিছু ঘটছে না। 🙁
@আগন্তুক,
ভারতে কেন্দ্রে যে সরকার (central government) খমতাএ থাকুক, সরকারের “policy” কম বেশি প্রায় একই থাকে।আমি আমেরিকা, ইউরপএর শব দেশ, ইরান, ইরাক, মিশর, রাসিয়া, পাকিস্তান সব দেশের মানুসদের সাথে কথা বলেছি। আমেরিকা, ইউরপএর শব দেশ, রাসিয়া, ইরান (iranian americans), ইরাক (kurdish visiting scholar in USA) এর মানুসই মনে করে অধিকাংশ মুসলমানেরা তুলনামুলকভাবে অনেক বেশি “conservative and rigid”, ইত্তাদি। Perhaps ইসলাম এর কারন। ইত্তাদি
আমআর বাংলা লিখে অভআশ নেই। আশা করছি বুযতে পারছেন আমার লেখা। আমি চেস্টা করছি। বাংলাএ বেশি লেখা কটিন এবং শময়সাপেখও। শময় খুব কম।
@আগন্তুক, একদিনে কিছু হবে না। চেতনার বিবর্তন হয়। ধর্ম নিরেপেক্ষ সিলেবাসে আগে অন্তত তৈরী হৌক। মিডিয়া ধর্ম নিরেপেক্ষ হৌক। এক বছরে বাংলাদেশ পালটে যাবে এটা ভাবা ঠিক না। কেওউ জন্মান্ধ না। আমাদের ওদিকের মুসলিমরা হিন্দুদের থেকে বেশী প্রগতিশীল ছিল আমাদের ছোট বেলায়। আরবের টাকার মাদ্রাসা আর ধর্মের পেছনে আসা পেট্রোডলারে সব বদলে গেছে। তবুও নতুন প্রজন্মে আমি আস্থা রাখি। কারন স্বভাব ধর্মে তারা একবিংশ শতাব্দিতে বাঁচতে চাই।
মানুষ মানুষই। একজন হিন্দু বাবা, মা, ভাই বোনের সাথে মুসলিম বাবা, মা, ভাই বোনের ১% পার্থক্যও নেই। এই চেতনাবোধটা ছোট বেলা থেকে ঢোকাতে হবে। হিন্দুত্ব বা ইসলাম যে মানুষের খোলসের বেশী কিছু না, সেটা বুঝতে হবে।
আর রাজনীতির প্রশ্ন আসলে বলবো আও্যামী লিগ হুট হাট করে তীব্র ধর্ম নিরেপেক্ষ হতে গেলে ভুল করত। ধর্ম নিরেপেক্ষতা আইন করে আসে না। এটা একটা চেতনা, যা স্কুল সিলেবাসে মিডিয়ার প্রচারে আস্তে আস্তে আনতে হয়। পশ্চিম বঙ্গে তুলনামূলক ভাবে ধর্ম নিরেপেক্ষ লোক অনেক বেশী সেই চেতনা গুলো দীর্ঘদিন সরকার স্কুলে বহন করেছে। এগুলো একদিনে হবে না। আইন করে হবে না। নীরব বিপ্লবের পথে করতে হয়।
@বিপ্লব পাল,
“মানুষ মানুষই। একজন হিন্দু বাবা, মা, ভাই বোনের সাথে মুসলিম বাবা, মা, ভাই বোনের ১% পার্থক্যও নেই। এই চেতনাবোধটা ছোট বেলা থেকে ঢোকাতে হবে।”
🙂 , হাসতে বাধ্য হলাম। কারন আমাদের সমাজে শিশুদের মনন গঠন ঠিক এর উল্টাভাবে করা হয়। খুব ছেলেবেলা থেকে ধর্মীয় পরিচয়ের গুরুত্ত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
তবে এটা ষোল আনা খাটি যে মৌলবাদের বিরুদ্ধেও হঠাত করে বিপ্লবাত্মক কিছু করে বসা ঠিক না, বিশেষ করে যাতে সিংহভাগ মানুষের তীব্র সমর্থন থাকে। এতে হীতে বিপরিত হবার সম্ভাবনা অনেক বেশী। অনেকেই বর্তমান সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন ৫ম সংশোধনী বাতিল না করায়। কিন্তু বাস্তবতা চিন্তা করেন না যে সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ এখন আইন করে বাদ দেওয়া মানে হবে দেশকে তালিবানী শাসন প্রতিষ্ঠার পথে বহুদুর এগিয়ে নেওয়া। গণমানুষ যতই উদার হোক এটা সহজভাবে নেবে না, আর যারা হয়ত এর কুফল জানে তাদের কন্ঠও চিরতরে রুদ্ধ হবে। আওয়ামী লীগ যে আসলেই ইসলাম বিরোধী, ভারতের দালাল এর পর প্রমানে আর কোনই অসুবিধে থাকবে না। এ বাস্তবতা মাথায় রেখেই বর্তমান সরকার চিন্তা করে বিসমিল্লাহ রেখে ৫ম সংশোধনী বাতিল।
@আদিল মাহমুদ,
মূল অপরাধটা এখান থেকেই সংগঠিত হয়। ইশ্বর বা আল্লার অস্তিত্ব আছে বা নেই-সেটার থেকেও জোর দেওয়া উচিত শিশুদের বিরুদ্ধে এই অপরাধ কি করে থামানো যায়। প্রায় প্রতিটা হিন্দু বা মুসলিম ফ্যামলিতেই অন্য ধর্মালম্বীদের বিরুদ্ধে বিষ উদরে দেওয়া হয়। আমার কাছে যা অপরাধ-মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। এই ভাবে শিশু এবং কিশোরদের মনকে ধ্বংশ করে- সমাজকেও ধ্বংশ এবং উচ্ছন্নে পাঠানো হয়।
ঘৃণায় শুধু ঘৃণার জন্ম হয়। মিথ্যায় জন্ম হয় মিথ্যার। অসাম্য আরো অসাম্যের জন্ম দেয়। হিংসায় ফিরে আসে আরো হিংসা। আজ একবিংশ শতাব্দিতে দাঁড়িয়েও যদি বাঙালী হিন্দু মুসলমানে বিভক্ত থাকে, সে দায় আমাদের সকলের। যদ্দিন বাঙালী হিন্দু মুসলমানে বিভক্ত থাকবে, এই নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠি, কিছু নাবালকের খেলাঘর ভাংবে আর গড়বে। আওয়ামী লীগ বা সিপিএম, যাদের কাছে আমাদের ধর্ম নিরপেক্ষতার প্রত্যাশা, তাদের দোষ দেওয়া সহজ। বরং ধর্ম মুক্ত, ধর্মীয় পরিচয় মুক্ত মানব ধর্মে গর্বিত নতুন প্রজন্ম তৈরী করার দ্বায়িত্ব আমাদেরই।
@বিপ্লবদা,
বাংলাদেশের বাস্তব প্রেক্ষাপট খুবই খারাপ। এখানে ছোটবেলা থেকেই অন্য ধর্মাবলম্বীদের কোন না কোনভাবে ঘৃণা করতে শেখানো হয়। এটা মুসলিমদের মধ্যে বেশি দেখেছি। মানে অনেকে লুকিয়ে করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে আর কি! হিঁদুরাও কম যায় না। এটা আমিও মানি হুটহাট কিছু করা আওয়ামীলীগের পক্ষে অসম্ভব। কিন্তু দীর্ঘ যোগাযোগের কারণে জানি আওয়ামীলীগের খুব কম নেতাই ধর্মনিরপেক্ষ। এটাই আশঙ্কার কারণ। আমি অনেকের ব্যাপারেই জানি। ব্যস…ফুলস্টপ!!!
@আগন্তুক/বিপ্লব,
আমিও সেটাই বলি।
ঈশ্বর আছে কি নেই এ বিতর্ক আমার কাছে তাই অর্থহীন মনে হয়। ধর্মের খারাপ দিক চোখে আংগুল দিয়ে দেখাতে হলে কোয়ান্টাম মেকানিক্স খুলে ঈশ্বর নেই প্রমান কোন কাজে আসবে না।
মানবিকতা আর বাস্তবিকতার দৃষ্টিকোনে খারাপ দিকগুলি দেখাতে হবে।
@আগন্তুক,
যারা রাজনীতি করে, তারা জানবে আসলেই খুব নিরেপক্ষ্য লোক। মানুষের হাওয় বুঝে, নিজেরা বদলায়। তারা বহুরূপী, হিমালয় পর্বত না। মানুষ ধর্ম নিরেপেক্ষ হলে তারাও তাই হবে। না হলে, তারাও তাই হবে না।
আদিল মাহমুদ এর সাথে আমি সহমত।
এবং এখন বাংলাদেশে ইসলামী শক্তির জোর কমে গেছে বলে আমার মনে হয় না। সামযয়িকভাবে কিছুটা চুপ মেরে আছে। যে কোন সময়ে সুযোগ পেলেই ছোবল দেবে।
আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকার মানে কিন্তু তা নয়।আমলাদের মধ্যে চিহ্নিত কিছু মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি রয়েছে।
তাছাড়া আপাত দৃষ্টিতেও ইসলামের লেবাস বাড়ছে বলেই তো মনে হয়। মেয়েদের মাথায় পর্দা বেড়েছে। অফিসে নামাজীর হার বেড়েছে। যদিও আমি নামাজী আর ইসলামের নামে অপশন্তিকে এক করে দেখছি না , তবুও কথাবার্তায় তো খুব একটা ভাল ঠেকে না।
যাহোক, ভিনদেশীদের পর্যবেক্ষণের সাথে আমাদের অনুভূতির পার্থক্য তো থাকবেই।
@গীতা দাস,
গীতাদিদি টিক বলেছেন। আপনি “ground reality” টা জানএন।
আমি বাংলাদেশের এক জনার জন্মদিনে গিয়েছিলাম। পনর মিনিটে দশবার “আলহামদুল্ইললা” “আল্লাহ রহমত” ইত্তাদি বলতে শুনেছি। এরা মানশিকভাবে ব্রেইন brainwashed. আমি গত এগার বছরে আমেরিকাতে কনও program-এ অমুস্লিমদের এতবার “God” এর রেফারেন্স দিতে দেখিনি।
আমআর বাংলা লিখে অভআশ নেই। আশা করছি বুযতে পারছেন আমার লেখা।
@Truthseeker,
বুঝতে মোটেই অসুবিধে হচ্ছেনা। আমি এও বুঝি যে প্র্যাকটিস করলে, চেষ্টা করলে আপনি ভালভাবেই বাংলা লিখতে পারবেন। আমি এভাবে নীচের শব্দগুলো লিখি- (আমার amar) (অভ্যেস obhyes) (বুঝতে bujhte অথবা bujhote)
Truthseeker, সময় থাকতে লিখুন, নতুন প্রজন্মের জন্যে লিখুন। তীব্রগতিতে সদা পরিবর্তনশীল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উন্নতশীল পৃথিবীর অন্যান্য শিশুদের সাথে বেঁচে থাকার প্রতিযোগিতায় বাঙ্গালী, বাংলাভাষী, মুসলমান শিশুরা টিকে থাকতে পারবেনা। কবির ভাষায় বলি- ওরে নবীণ ওরে আমার কাঁচা, আধমরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা।
ধন্যবাদ-
@আকাশ মালিক,
আপনার সুন্দর মত, লেখা, পরামরশ-এর জন্য ধন্যবাদ। আমি আপনার লেখা কয়েকজন মুসলিমদের রেফআর করেছি। কন অমুসলিম যদি ইসলাম সম্পরকে লেখে তাহলে সাধারন মুসলিমরা সেটা গ্রহন না করাই সাভাবিক। কাজেই প্রগিতিশিল মুসলিমদের বেশি লিখতে হবে। কিন্তু অধিকাংশ মুসলিমরা আপনার লেখা পরতে মানসিকভাবে তঈরি নয়। ধরম ভিশন sensitive.
আমি ওদের আপনার লেখা দিলে ওরা ভাবতে পারে যে আমি মুসলিমবিরধি। ধরম ভিশন sensitive.
আর ধরম নিয়ে যদি এত সময় নশট করি তাহলে কাজ করব কখন? 🙂 শবকিছু ভিশন competitive. তখন আমাকে সাধের লাউ গান গাইতে হবে। 🙂
কেশবের মত আমিও বলতে চাই যে বাংলাদেশের গত নির্বাচনের ফলাফল দেখে ইসলামী বা মৌলবাদী শক্তির কনক্লুসিভ পরাজয় এ সিদ্ধান্তে আসাটা পুরোপুরি ঠিক নয়।
ঐ নির্বাচনে কিন্তু আওয়ামী লীগ ও প্রথমে মৌলবাদী শক্তির একটি অংশের সাথে জোট করেছিল, পরে সেটা বাদ দেয়। বাদ না দিলে মৌলবাদীদের কিছু অংশ আজ ক্ষমতায় থাকত।
গত নির্বাচনে ইসলামী বা মৌলবাদী শক্তিকে ঠেকাতে মানুষ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছে এটা যতটা না সত্য তার থেকে বেশী সত্য মানুষ গত জোট সরকারের অনাচার দূর্ণীতিতে তিক্ত বিরক্ত হয়ে বিকল্প আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় বসিয়েছে। এতে তেমন ব্যাতিক্রমের কিছু নেই। খুব বড় ধরনের মিরাকল না হলে সামনের নির্বাচনে একই সাইকেলই দেখা যাবে। লীগ সরকারের কাজ কর্মে বিরক্ত হয়ে মানুষে আবার বিএনপি জামাতকে ক্ষমতায় আনবে। তখন কি বলা যাবে যে ইসলামী মৌলবাদী শক্তির জয় হয়েছে? না।
তবে গত নির্বাচনে একটিই ব্যাতিক্রম হয়েছে। এ দেশে রাজনীতিতে একটা শক্ত ধারনা ছিল যে জোটগত ভাবে বিএনপি জামাত কে হারাবার মত ক্ষমতা আওয়ামী ও তার সমমনাদের নেই। এ ধারনা ভুল প্রমান হয়েছে। তবে আমার মনে হয় এ কৃতিত্ত্ব আওয়ামীদের নিজেদের থেকে বিএনপির অনেক অনেক বেশী। তাদের নেতা/নেত্রী, রাজপুত্রদের দূর্ণীতি, সীমাহীন লোভের যে নজির মানুষ নিজের চোখে দেখেছে তাতে অভূতপূর্বভাবে মানুষ সাড়া দিয়েছে।
রাজাকার বা মৌলবাদী ইস্যুর নির্বাচনে কতটুকু ভুমিকা রেখেছে নিশ্চিত নই। যতটুকু শুনেছি তাতে বুঝেছি যে এই ইস্যু ভুমিকা রেখেছে নুতন প্রজন্মের কিছু ভোটারের উপর। আমার মনে হয় না যে এটা ডিসাইসিভ ছিল।
আমেরিকা কি ২০০৯ সালে অর্থনৈতিক মন্দা থেকে ঘুরে দাড়িয়েছে? আমি যা জানি বাস্তব তা মোটেও বলে না। বাস্তব বলে ২০০৯ সালেই মন্দা চরমে গিয়েছে, অনেকে ধারনা করেন যে সবচেয়ে খারাপ সময় চলে গেছে, অনেকে বলেন আরো খারাপ সামনে আসছে। বাস্তব যা বলে তাতে বুঝি যে ২০১২ সালের আগে উন্নতির তেমন সম্ভাবনা নেই।
একটু বেশীমাত্রায় প্রি-ম্যাচিউর ও অতি আশাবাদি মনে হয়।
বরংচ বলা চলে বিশ্ব অর্থনৈতিক সুপারপাওয়ার হিসাবে আমেরিকার অবক্ষয়ের শুরু।
আমি দুই একটা বিষয় যোগ করতে চাইঃ
১) কালো মানুষ হিসাবে বারাক ওবামার প্রথম আমেরিকান প্রেসিডেন্ট হওয়া ও অতিরিক্ত আশাবাদের বিপরিতে বাস্তবতার কশাঘাত।
২) নোবেল শান্তি পুরস্কারের ভন্ডামী উন্মোচন
৩) গাজাতে ইসরাইলি বর্বর আগ্রাসন ও আন্তর্জাতিক আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বুঝানো আংকেল স্যাম পিছনে থাকলে আন্তর্জাতিক আইন কোন ব্যাপার নয়।
৪) লকারবিতে সংঘটিত বিমান হামলার নায়ককে স্কটল্যান্ডের জেল থেকে মুক্তি, লিবিয়াতে সংবর্ধনা। এক দেশে ভিলেন অপর দেশের হিরো।
৫) ওমর আল-বশিরের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির মাধ্যমে তার গ্রহযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ, আফ্রিকান ইউনিয়নের বৃদ্ধাঙ্গুলি।
৬) আন্তর্জাতিক রাজনিতিতে রাশিয়ার শক্তিশালী প্রত্যাবর্তন। সাওথ ওশিটিয়াতে জর্জিয়ার হামলার জবাবে রাশিয়ার পালটা ব্যাবস্থা। সাউথ ওশেটিয়া ও আবখাজিয়ার স্বাধিনতা ঘোষনা।
৭) ইয়েমেনে সরকারী বাহিনী ও হুতু বিদ্রোহীর মধ্যে যুদ্ধের আন্তর্জাতিকরন সৌদি আরব ও আমেরিকার জড়িত হওয়া।
৮) এশিয়ান অর্থনীতির শক্তিমত্তা প্রদর্শন। পশ্চিমা মন্দার ধাক্কাকে পাশকাটিয়ে শ্রেষ্ঠ অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসাবে আত্ম প্রকাশ। জাপানকে হটিয়ে দ্বীতিয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে চিনের আবির্ভাব।
৯) বাংলাদেশে হামলা ও মামলার বছর। বিডি আর বিদ্রোহ নিয়ে জল ঘোলা, খালেদা জিয়ার বাড়ি নিয়ে টানা টানি, বিএনপির সংসদ বর্জন, ১৬ বছর পর বিএন পির কাউন্সিল, ঘুষ কেলেংকারীতে হাসিনা পুত্র জয়, ভৈরব জেলা নিয়ে রাজনীতিবিদরা নাকাল, বঙ্গবন্ধু হত্যামামলার রায়, জামাত কতৃক মুক্তিযোদ্ধাদের সংম্বর্ধনা বিতর্ক, বাংলাদেশে অবস্থানরত ওলফা নেতাদের ভারতে গ্রেফতার, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে চিন আউট ভারত ইন, টিপাইমুখি বাধ নিয়ে আন্দোলন ও বিতর্ক।
১০) ডিজিটাল টাইম নামে খ্যাত ‘ডে লাইট সেভিং টাইম’ নিয়ে জনজিবনে ব্যাপক ভোগান্তি। স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক লাইট দিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা।
:yes:
:yes:
বিপ্লব পাল,
যদিও দশটা পয়েন্ট উল্লেখ করে ব্লগটি দিয়েছেন, কিন্তু ব্যাপক ভিত্তিক পর্যালোচনার অবকাশ রয়েছে প্রতিটি পয়েন্ট ধরে। অরো মজার হচ্ছে যে এই বিষয় গুলে পরষ্পর সম্পর্কিত, যা আপনি নিজেও উল্লেখ করেছেন। আমি প্রথম পযেন্টটা নিয়ে সামান্য দু-এক কথা বলার চেষ্টা করি।
আজ যেখানে আপনি বলছেন যে বিগত নির্বাচনে, বাংলাদেশের ভোটে ইসলামিক শক্তির ‘কনক্লুসিভ’ পরাজয়। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির পুনঃজাগরন, আসলে একটি আঞ্চলিক নিম্নচাপের সাথে সমসাময়িক কালেই ব্যপক ভিত্তিক পরিবর্তিত আন্তর্জাতিক পরিবেশের সাময়িক প্রভাব। এরকম ঘটনা ৯৬-তেও ঘটেছিলো। দেখবেন ভারত কিংবা ইউরোপীয় ভুখন্ডের রাজনৈতিক চেহারা পরিবর্তনের প্রভাব এখানেও কম বেশী পড়ে। আজও তাই ঘটেছে।
আপাতঃ দৃষ্টিতে পরিবর্তনটি ইতিবাচক মনে হলেও এর স্থায়ীত্ত্ব সামান্যই। কারণ যতক্ষন পর্যন্ত না নিম্নলিখিত কারণ দুটিকে সক্রীয়ভাবে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কল্যানে কাজে লাগানো না যায়। যা আমি মনে করি যথার্থ ভাবেই সম্ভব।
প্রথমতঃ এই ব-দ্বীপ বাসীর মূল চেতনার স্তরে তাদের পৌঁছে দেয়া, যেখানে সে তার শেকড়ের অস্তিত্ত্ব খুঁজে পাবে। সংকীর্ন জাতীয়তাবাদী বোধের ঊর্ধ্বে সমগ্র মানবজাতির সাধারন তাড়নার স্তরে তাদের পৌঁছে দেয়া। আর
দ্বিতীয়তঃ এই কাজটিই করতে হবে ব্যপকতর আধুনীক টেকনোলজীর গোড়া পত্তনের মধ্যদিয়ে। অর্থাৎ টেকনোলজীকে দুবৃত্তের ছোবলমুক্ত করে একে সাধারনের দোড় পর্যন্ত পৌঁছে দিতে হবে। অর্থাৎ গোটা জাতিকেই আসতে হবে তার আত্মবিশ্লেষনের যায়গাটিতে। আমি বলতে চাইছি, জাতিকে দেখতে হবে তার নিজের অবয়বকে, কোন ধর্মীয় আদর্শের আয়নায় নয়, নয় কোন জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব আদর্শের ভিত্তিতে।
২০০৯ সালের উল্লেখ যোগ্য একটি ঘটনা হিসেবে একে দেখা যেতো যদি না সময়ের আবর্তে একে বেঁধে রাখি (অর্থাৎ ২০০৯), বস্তুতঃ ব্যাপক জনগোষ্ঠীর প্রাক্তন ভ্রান্তবোধের উপরে যদি নতুন আদর্শের বীজ রোপন করা যেতো। যা বাস্তবিকই হয়নি। কাজেই মনে হয় কুচক্রীর তথাকথিত ইসলামী ধ্বজা যে জাতির মাথা থেকে অপসারিত হয়েছে এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষশক্তির উত্থান ঘটেছে, কনক্লুসিভলি তা বলার সময় সম্ববতঃ এখনো হয়নি। দেশের সামরিক বাহিনীই সম্ভবতঃ এখনো পর্যন্ত তথাকথিত সৌদি-পাকিস্তানী অসুস্থ শক্তির কবলমুক্ত নয়।
কারন,
# জাতি এখনো আমাদের স্বাধীনতার মূল চেতনায় ফিরে আসতে পারেনি।
# স্বাধীনতা উত্তর বাহাত্তরের মূল সংবিধান এখনো অন্ধকূপে!
# ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল এবং সংস্কৃতির এখনো বিলোপ সাধন হয়নি।
# যেসব দুবৃত্তদের দ্বারা এজাতি নিঃশেষিত হয়েছে, মাঠ থেকে সেই সব দুবৃত্তের অপসারন হয়নি।
@Keshab K. Adhikary,
আত্মবিশ্লেষনের জায়গাটাই ত গণতন্ত্র তৈরী করে দেয়। ওয়াহাবি ইসলামের প্রভাবে বাংলাদেশ নিজের আত্মসমালোচনার জায়গাটাই তৈরী করতে পারছিল না। সেটাত অন্তত তৈরী হয়েছে। আত্মসমালোচনা শুরু হলে, অনেকটা নতুন পথ প্রসস্থ হবে।