ভূমিকা:
এই পোস্ট আসলে সামুব্লগে সাহোশি৬ এর পরামর্শে ও অনুরোধে লেখা। তবে আমি মনে করি, কোরআনের মত একটি বিশাল সাইজের গ্রন্থের যাবতীয় কন্ট্রাডিকশন আমার একার পক্ষে একটি পোস্টে নিয়ে আসাটা প্রায় অসম্ভব। তাই আমি কাজটি শুরু করে দিচ্ছি, আশা করবো- সকলে মিলে এই কাজটিকে এগিয়ে নিবেন।

কন্ট্রাডিকশন সমূহ:
এই সংকলনটিকে ফলপ্রসু ও কার্যকর করার জন্য কোরআনের কন্ট্রাডিকশন সমূহকে বেশ কিছু ক্যাটাগরি ও সাব ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছি। প্রতি ক্যাটাগরিতেই আমি কিছু উদাহরণ উল্লেখ করছি, আশা করবো- আপনারা একে আরো অধিক সমৃদ্ধ করবেন। প্রত্যেকেই কোরআনের আয়াত দেয়ার সাথে সাথে (অবশ্যই বাংলায় দিবেন) সুরা ও আয়াতের নম্বর উল্লেখ করবেন এবং সেটা কোন ক্যাটাগরি/ সাব ক্যাটাগরিতে পড়ে- সেটাও উল্লেখ করবেন। আমার উল্লেখিত ক্যাটাগরির বাইরেও নতুন ক্যাটাগরি/সাব ক্যাটাগরি পেলে- সেটাও উল্লেখ করবেন। অংশগ্রহণের জন্য সকলকে অগ্রিম ধন্যবাদ। এবারে একে একে ক্যাটাগরি ওয়াইজ কন্ট্রাডিকশনগুলো তুলে ধরছি:

কন্ট্রাডিকশন ১: কোন এক আয়াতের সাথে আরেক আয়াতের বৈপরীত্য।
১। সুরা ৪১:৯, ১০, ১১, ১২
“বলুন, তোমরা কি সে সত্তাকে অস্বীকার কর যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দু’দিনে এবং তোমরা কি তাঁর সমকক্ষ স্থির কর? তিনি তো সমগ্র বিশ্বের পালনকর্তা।
তিনি পৃথিবীতে উপরিভাগে অটল পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, তাতে কল্যাণ নিহিত রেখেছেন এবং চার দিনের মধ্যে তাতে তার খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন-পূর্ণ হল জিজ্ঞাসুদের জন্যে।
অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ, অতঃপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম।
অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দু’দিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রত্যেক আকাশে তার আদেশ প্রেরণ করলেন। আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা।”
==>> এই আয়াতসমূহ অনুযায়ী দেখা যায়- দুদিনে আকাশ সৃষ্টির আগে পৃথিবী ও পৃথিবীর যাবতীয় কিছু সৃষ্টি হয়েছে চারদিনে।

সুরা ৭৯: ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩
“তোমাদের সৃষ্টি অধিক কঠিন না আকাশের, যা তিনি নির্মাণ করেছেন? তিনি একে উচ্চ করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন। তিনি এর রাত্রিকে করেছেন অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং এর সূর্যোলোক প্রকাশ করেছেন। পৃথিবীকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন। তিনি এর মধ্য থেকে এর পানি ও ঘাম নির্গত করেছেন, পর্বতকে তিনি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তোমাদের ও তোমাদের চতুস্পদ জন্তুদের উপকারার্থে। ”
==>> এখানে আবার দেখা যায়- পৃথবীকে আকাশ সৃষ্টির পরে পৃথিবীকে বিস্তৃত করা হয়েছে ও পর্বতাদি সৃষ্টি করা হয়েছে।

২। …

কন্ট্রাডিকশন ২: কোন এক আয়াতের নির্দেশনা, উপদেশ .. প্রভৃতির প্রতিফলন কোরআনের অন্যত্র না মেলা
১। সুরা ১০৯:৬
“লাকুম দিনুকুম ওয়ালিইয়াদিন”- “যার যার ধর্ম তার তার কাছে”
এর সাথে-
২:১৯১
“আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে| বস্তুত: ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ| আর তাদের সাথে লড়াই করো না মসজিদুল হারামের নিকটে যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে সেখানে লড়াই করে| অবশ্য যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে| তাহলে তাদেরকে হত্যা কর| এই হল কাফেরদের শাস্তি।” এবং এমন অসংখ্যা আয়াত।

২। …

কন্ট্রাডিকশন ৩: ভাষা/ব্যকরণগত ভুল
১। সুরা ৫:৬৯-
“নিশ্চয় যারা মুসলমান, যারা ইহুদী, ছাবেয়ী বা খ্রীষ্টান, তাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে আল্লাহর প্রতি, কিয়ামতের প্রতি এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না”।
এটা বুঝতে হলে- সুরা ৫:৬৯, সুরা ২:৬৭ এবং ২২:১৭ এর প্রথম লাইন পাশাপাশি দেখা দরকার:
৫:৬৯
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُواْ وَالَّذِينَ هَادُواْ وَالصَّابِؤُونَ وَالنَّصَارَى مَنْ آمَنَ بِاللّهِ
২:৬৭
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُواْ وَالَّذِينَ هَادُواْ وَالنَّصَارَى وَالصَّابِئِينَ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ
২২:১৭
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَالَّذِينَ هَادُوا وَالصَّابِئِينَ وَالنَّصَارَى وَالْمَجُوسَ
৫:৬৯ এর الصَّابِؤُونَ আসলে Nominative case এবং ২:৬৭ ও ২২:১৭ এর الصَّابِئِيহচ্ছে Accusative case (উদাহরণ: Whom, him, her, me, them, us are the accusative forms of who, he, she, I, they, and we respectively)। যারা ইহুদী, ছাবেয়ী, খৃস্টান- এখানে যারা বা who (إِنَّ) হচ্ছে Nominative case, এর পরে বসবে Accusative case, অর্থাৎ সাবেঈন বসবে (যা সুরা ২:৬৭ ও ২২:৬৭ এ বসেছে), Nominative case অর্থাৎ সাবেঊন (যা ৫:৬৯ এ বসেছে) বসালে সেটা হবে ব্যকরণগত ভুল।

২। ….

কন্ট্রাডিকশন ৪: বর্তমান জ্ঞান-বিজ্ঞান দ্বারা ভুল প্রমাণিত
(এটার ভুরি ভুরি নজির আছে)
১। ৫১:৪৯
“আমি প্রত্যেক বস্তু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি, যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।”
==>> ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস, এ্যামিবা সব কিছু কি জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি হয়েছে?
২। সুরা আল-কাহফঃ
আয়াত ৮৬: পরে যখন তিনি সূর্য অস্ত যাবার স্থানে পৌঁছলেন, তিনি এটিকে দেখতে পেলেন কালো জলাশয়ে অস্তগমন করছে, আর তার কাছে পেলেন এক অধিবাসী। আমরা বললাম- “হে যুলক্কারনাইন, তোমরা শাস্তি দিতে পার অথবা এদের সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পার”।
আয়াত ৯০: পরে যখন তিনি সূর্য উদয় হওয়ার জায়গায় পৌঁছলেন তখন তিনি এটিকে দেখতে পেলেন উদয় হচ্ছে এক অধিবাসীর উপরে যাদের জন্য আমরা এর থেকে কোন আবরণ বানাই নি
==>>> সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের স্থান নাকি যথাক্রমে সর্ব পশ্চিম ও সর্ব পূর্বে!!

৩। সুরা ইয়াসীনঃ
৩৮: আর সূর্য তার গন্তব্য পথে (resting place ) বিচরণ করে। এটিই মহাশক্তিশালী সর্বাজ্ঞতার বিধান।
৩৯: আর চন্দ্রের বেলা- আমরা এর জন্য বিধান করেছি বিভিন্ন অবস্থান, শেষ পর্যন্ত তা পুরনো শুকনো খেজুরবৃন্তের ন্যায় হয়ে যাবে।
৪০: সূর্যের নিজের সাধ্য নেই চন্দ্রকে ধরার, রাতেরও নেই দিনকে অতিক্রম করার। আর সবকটিই কক্ষপথে ভাসছে।

৪। সুরা আম্বিয়াঃ
আয়াত ৩১: আর পৃথিবীতে আমরা পাহাড় পর্বত স্থাপন করেছি, পাছে তাদের সঙ্গে এটি আন্দোলিত হয়; আর ওতে আমরা বানিয়েছি চওড়া পথঘাট যেন তারা সৎপথ প্রাপ্ত হয়।
আয়াত ৩২: আর আমরা আকাশকে করেছি এক সুরক্ষিত ছাদ। কিন্তু তারা এর নিদর্শনাবলী থেকে বিমুখ থাকে।

৫। সুরা আল হিজরঃ
আয়াত ১৯: আর পৃথিবী- আমরা তাকে প্রসারিত করেছি, আর তাতে স্থাপন করেছি পর্বতমালা, আর তাতে উৎপন্ন করেছি হরেক রকমের জিনিস সুপরিমিতভাবে।

৬। সুরা আন নাবাঃ
আয়াত ৬: আমরা কি পৃথিবীটাকে পাতানো বিছানো রূপে বানাইনি?
আয়াত ৭: আর পাহাড় পর্বতকে খুঁটি রূপে?

৭। সুরা আল বাক্বারাহঃ
আয়াত ২২: যিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে ফরাশ (couch) বানিয়েছেন, আর আকাশকে চাঁদোয়া (canopy)…..

৮। সুরা লুকমানঃ
আয়াত ১০: তিনি মহাকাশমণ্ডলীকে সৃষ্টি করেছেন কোন খুঁটি ছাড়াই,- তোমরা তো দেখতেই পাচ্ছ; আর তিনি পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পর্বতমালা পাছে এটি তোমাদের নিয়ে ঢলে পড়ে….
==>> সূর্য কিন্তু রাতের সময় বিশ্রাম নিতে যায়!! সূর্য ও চাঁদ উভয়েই কক্ষপথে গতিশীল, কিন্তু পৃথিবী এতটুকু যাতে নড়চড় করতে না পারে- তার জন্য পেরেক রূপী পাহাড়-পর্বত।

৯। সুরা ২৩:১৩,১৪
“তারপর আমরা তাকে বানাই শুক্রকীট এক নিরাপদ অবস্থান স্থলে। তারপর শুক্রকীটকে বানাই একটি রক্তপিণ্ড, তারপর রক্তপিণ্ডকে বানাই একতাল মাংসের তাল, তারপরে মাংসের তালে আমরা সৃষ্টি করি হাড়গোড়, তারপর হাড়গোড়কে ঢেকে দেই মাংসপেশী দিয়ে, তারপরে আমরা তাকে সৃষ্টি করি অন্য এক সৃষ্টিতে। সেইজন্য আল্লাহরই অপার মহিমা, কত শ্রেষ্ঠ এই স্রষ্টা।”
==>> সম্পূর্ণ পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গী- এখানে ডিম্বাণুর কোন অস্তিত্ব নেই। শুক্রকীটই রক্তপিন্ড, একতাল মাংস, হাড়গোড় … ইত্যাদি তৈরি হচ্ছে। ভ্রুণ থেকে নয়!! মাংসের তাল থেকে তৈরী হয় হাড়গোড়, তারপর সেটাকে ঢেকে দেয়া হয় মাংসপেশী দিয়ে!!!

কন্ট্রাডিকশন ৫: মুহম্মদ সা: একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়াদি নিয়ে তাৎক্ষণিক আয়াত
১। সুরা তাহরীমঃ
আয়াত ১: হে নবী, কেন তুমি নিষিদ্ধ করেছ, যা আল্লাহ তোমার জন্য বৈধ করেছেন? তুমি চাইছ তোমার স্ত্রীদের খুশী করতে? আর আল্লাহ পরিত্রাণকারী ও অফুরন্ত ফলদাতা।
আয়াত ২: আল্লাহ তোমাদের জন্য বিধান দিয়ে রেখেছেন তোমাদের শপথগুলো থেকে মুক্তির উপায়; আর আল্লাহ তোমাদের রক্ষাকারী বন্ধু, আর তিনিই সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।
আয়াত ৩: আর স্মরণ করো! নবী তাঁর স্ত্রীদের কোন একজনের কাছে গোপনে একটি সংবাদ দিয়েছিলেন, – কিন্তু তিনি যখন তা বলে দিলেন, এবং আল্লাহ তার কাছে এটি জানিয়ে দিয়েছিলেন; তখন তিনি তাকে কতকটা জানিয়েছিলেন এবং চেপে গিয়েছিলেন অন্য কতকটা। তিনি যখন তাকে তা জানিয়েছিলেন তখন তিনি বললনে, – “কে আপনাকে এ কথা বললেন?” তিনি বলেছিলেন, “আমাকে সংবাদ দিয়েছেন সেই সর্বজ্ঞাতা ও চির- ওয়াকিফহাল”।
আয়াত ৪: যদি তোমরা উভয়ে আল্লাহর দিকে ফেরো, কেননা তোমাদের হৃদয় ইতোপূর্বেই ঝোঁকে গিয়েছে। কিন্তু যদি তোমরা উভয়ে তার বিরুদ্ধে পৃষ্ঠপোষকতা করো, তাহলে আল্লাহ,- তিনিই তাঁর রক্ষাকারী বন্ধু, আর জিব্রীল ও পুণ্যবান মুমিনগণ উপরন্তু ফেরেস্তারাও তাঁর পৃষ্ঠপোষক।
আয়াত ৫: হতে পারে তাঁর প্রভু, যদি তিনি তোমাদের তালাক দিয়ে দেন, তবে তিনি তাঁকে বদলে দিবেন তোমাদের চাইতেও উৎকৃষ্ট স্ত্রীদের- আত্মসমর্পিতা, বিশ্বাসিনী, বিনয়াবনতা, অনুতাপকারিনী, উপাসনাকারিনী, রোযাপালনকারিনী, স্বামিঘরকারিনী ও কুমারী।
==>> মুহম্মদ সা: এর বিবিদের অন্তর্কলহ মেটাতে (অনেকের মতে উপপত্নীর সাথে নবীজীর সম্পর্কে কোন কোন নবীপত্নী বাঁধা দেয়ায়) আল্লাহ মারফত নবীজীর হুংকার!!

২। সুরা ৩৩:২৮
“হে নবী, আপনার পত্নীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার বিলাসিতা কামনা কর, তবে আস, আমি তোমাদের ভোগের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদের বিদায় নেই।”

৩। সুরা ৩৩:৫১
“হে নবী! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি মোহরানা প্রদান করেন। আর দাসীদেরকে হালাল করেছি, যাদেরকে আল্লাহ আপনার করায়ত্ব করে দেন এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি আপনার চাচাতো ভগ্নি, ফুফাতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি, খালাতো ভগ্নিকে যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে। কোন মুমিন নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পন করে, নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে সেও হালাল। এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য-অন্য মুমিনদের জন্য নয়। আপনার অসুবিধা দূরীকরণের উদ্দেশে। মুমিনগণের স্ত্রী ও দাসীদের ব্যাপারে যা নির্ধারিত করেছি আমার জানা আছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।”
===>> খাওলা বিনতে হাকিম নামে এক মহিলা নবীজীর সামনে নিজেকে উপস্থাপন করে বিয়ের প্রস্তাব করেছিল- তখন আয়েশা আপত্তি তুলে ঐ মহিলাকে ‘বেহায়া’ বললে- এই আয়াত নাযিল হয়। অবশ্য বুদ্ধিমান নবীপত্নী আয়েশার শেষ পর্যন্ত মন্তব্য: “বাহ! আপানার আল্লাহ আপনার জন্য তো ফটাফট কি সুন্দর আয়াত বানিয়ে দিচ্ছেন!!”

৪। ….

কন্ট্রাডিকশন ৬: মুহম্মদ সা: একান্ত ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানকল্পে অহেতুক সময়ক্ষেপন করে আয়াত
১। সুরা ২৪:৩, ৪
“ব্যভিচারী পুরুষ কেবল ব্যভিচারিণী নারী অথবা মুশরিকা নারীকেই বিয়ে করে এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী অথবা মুশরিক পুরুষই বিয়ে করে এবং এদেরকে মুমিনদের জন্যে হারাম করা হয়েছে।
যারা সতী-সাধ্বী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অতঃপর স্বপক্ষে চার জন পুরুষ সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং কখনও তাদের সাক্ষ্য কবুল করবে না। এরাই না’ফারমান।”
==>> নবীপত্নী আয়েশা’কে কেলেংকারি থেকে মুক্ত করা হয় এই আয়াতের মাধ্যমে। আর সমস্ত আয়াত ফটাফট নাযিল হলেও- এই আয়াত নাযিল হতে প্রায় এক মাসের অধিক সময় লাগে। এই এক মাস- নবীজী যথেস্ট কনফিউজড ছিলেন (আয়েশা যখন জিজ্ঞেস করে যে তিনি তাকে সন্দেহ করছেন কি না- তখনো নবীজী সরাসরি কিছু জবাব দেননি)। শেষে ঘনিষ্ঠ সাহাবিদের পরামর্শ চাইলে একমাত্র আলী রা: জানান- এই অসতী মহিলাকে তালাক দিয়ে দেন, কিন্তু বাকি সবাই পরামর্শ দেন- নবীপত্নীকে তালাক দেয়াটা ভালো কাজ হবে না। এর পরদিনই এই আয়াত নাযিল হয়।

২। …

কন্ট্রাডিকশন ৭: আজকের নীতি-নৈতিকতার বিচারে বর্বর ও চরম অনৈতিক আয়াত (এটারও ভুরি ভুরি নজির আছে)
[su]ক) ঘৃণা, হত্যা, জোর-জবরদস্তি[/su]
১। সুরা ২:১৯১, ১৯২, ১৯৩
আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে| বস্তুত: ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ| আর তাদের সাথে লড়াই করো না মসজিদুল হারামের নিকটে যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে সেখানে লড়াই করে| অবশ্য যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে| তাহলে তাদেরকে হত্যা কর| এই হল কাফেরদের শাস্তি।
আর তারা যদি বিরত থাকে, তাহলে আল্লাহ্ অত্যন্ত দয়ালু|
আর তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর, যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহ্র দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়| অত:পর যদি তারা নিবৃত হয়ে যায় তাহলে কারো প্রতি কোন জবরদস্তি নেই, কিন্তু যারা যালেম (তাদের ব্যাপারে আলাদা)।

২। সুরা ২:২১৬
“তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়| পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর| আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর| বস্তুত: আল্লাহ্ই জানেন, তোমরা জান না।”

৩। সুরা ৩:৫৬
“অতএব যারা কাফের হয়েছে, তাদেরকে আমি কঠিন শাস্তি দেবো দুনিয়াতে এবং আখেরাতে-তাদের কোন সাহায্যকারী নেই।”

[su]খ) নারীর অবমূল্যায়ন[/su]
১। সুরা ২:২২৩
“তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র| তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর| আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্খা কর এবং আল্লাহ্কে ভয় করতে থাক| আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে| আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও।”

২। সুরা ২:২২৮
“আর তালাকপ্রাপ্তা নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েয পর্যন্ত| আর যদি সে আল্লাহর প্রতি এবং আখেরাত দিবসের উপর ঈমানদার হয়ে থাকে, তাহলে আল্লাহ্ যা তার জরায়ুতে সৃষ্টি করেছেন তা লুকিয়ে রাখা জায়েজ নয়| আর যদি সদ্ভাব রেখে চলতে চায়, তাহলে তাদেরকে ফিরিয়ে নেবার অধিকার তাদের স্বামীরা সংরক্ষণ করে| আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছে, তেমনি ভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের উপর নিয়ম অনুযায়ী| আর নারীরদের ওপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে| আর আল্লাহ্ হচ্ছে পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ।”

৩। সুরা ২:২৩০
“তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়| অত:পর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই| যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে| আর এই হলো আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা; যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়|”

৪। সুরা ৪:৩৪
“পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে| সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ্ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে| আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর| যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না| নিশ্চয় আল্লাহ্ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।”

কন্ট্রাডিকশন ৮: একই কথার অহেতুক পুনরাবৃত্তি
[su]ক) একই সুরায়[/su]
১।সুরা ১০৯:৩
“এবং তোমরাও এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি”
সুরা ১০৯:৫
“তোমরা এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি”।

২। ….

[su]খ) ভিন্ন ভিন্ন সুরায়:[/su]
১। সুরা ২:১, ২৯:১, ৩০:১
“আলিফ-লাম-মীম”

২। ….

কন্ট্রাডিকশন ৯ : অর্থহীন অক্ষরসমষ্টি
১। সুরা ২:১
“আলিফ-লাম-মীম”
২। সুরা ২৭:১
“ত্বা-সীন”
৩। ……

কন্ট্রাডিকশন ১০ : কোরআনের ঐ সব আদেশ, নিষেধ, উপদেশ- যা মুহম্মদ সা: নিজেই মানেন নি
১। সুরা ৪:৩
“আর যদি তোমরা ভয় কর যে, এতীম মেয়েদের হক যথাথভাবে পুরণ করতে পারবে না, তবে সেসব মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায় সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে, একটিই অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীদেরকে; এতেই পক্ষপাতিত্বে জড়িত না হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা।”

২। ….

বিঃদ্রঃ
১। এই পোস্ট নিয়মিত আপডেট করা হবে।
২। বেশীরভাগ পয়েন্টই আসলে দুর্বলতা বা ভুল বা … (কেবল ১ আর ২ নং পয়েন্ট ছাড়া)। আমি “কন্ট্রাডিকশন” শব্দটির মধ্যে সমস্ত দুর্বলতা, ভুল, নেগেটিভ সব কিছুকেই ইনক্লুডেড ধরেছি কারণ- এগুলোই আসলে কোরআনের ঐশীত্বের দাবীর সাথে কন্ট্রাডিক্ট করে।