আলতারঙা পায়ের নূপুর ঝনঝনে
-দিদি, এনেছি পাটিসাপটা পিঠে।
সুখ উপচে পড়া মেয়েটিকে দেখি
-বড় মায়াবী ছায়াগো তোর চোখে।
শ্যামলা মুখে মিষ্টি হাসি ঝরে
-জবা ফুল নিয়ে আসি গিয়ে।
ধূপ-ধুনো সাজায় মেঘলা মেয়ে-
নির্জীব প্রতিমার তরে।
আরতির থাল উল্টে পড়ে গায়ে।
চমকে ওঠে জনাদশেক লোকে।
হঠাৎ আমি গভীর চোখে দেখি
আগুনের আঁচে বীভৎস এক মেয়ে।
সুতোর বুনন লালপেড়ে সেই শাড়ি-
আগুন লেগে জমে আছে গায়ে।
যে প্রতিমা ধ্যান নিল কেড়ে,
সে প্রতিমা স্তব্ধই যায় থেকে।
বোকা মেয়ের নিথর দেহ কি জানে –
মাটির পুতুল পারেনা জীবন দিতে।
জনাদশেক মানুষের কাঁধে চড়ে-
মেয়েটি চলে দাহ্য বস্তু হতে।
১৭/১২/২০০৯
কবিতা আর বিজ্ঞানের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হচ্ছে কবিতা ব্যক্তিনির্ভর, আর বিজ্ঞান বস্তুনির্ভর। তাই কোন একটা কবিতা সম্পর্কে যখন কেউ কোন মন্তব্য করেন – তখন তা শুধুমাত্র তার একার অনুভূতি। মউ এর এই কবিতাটি আমার খুব ভালো লেগেছে। অভিনন্দন মউ।
@প্রদীপ দেব,
ধন্যবাদ, ভালো থাকুন 🙂
@আতিক রাঢ়ী,
কবিতা একটু বিশ্লেষণ করে দেখালে কাব্যসমালোচনা স্বার্থক হলেও হতে পারে।আপনি কি ‘তোমাতেই’ ‘মায়াবী ছায়াগো’ ‘শ্যামলা মেয়ে’ ‘মেঘলা মেয়ে’…পড়ে রবীন্দ্রনাথের ছায়া পান? নাকি ‘তরে’ ‘জনাদশেক’… দেখে উনিশ’র আগের রচনাশৈলী মনে পড়ে!পোরনো বিষয়ের সাথে আধুনিক ভাষা ও ছন্দের আমিল থাকলেই কি কবিতা নিম্নমানের হয়ে যায়? কবিতা বা শিল্পকলায় ঐতিহ্যের কি কোন দাম নাই?
আমার মনে হয় ঈশ্বর সর্বদা এমন মেয়েকেই,যার আছে শুধু মধুর শরীর, শিকার করতে ভালোবাসেন।
(সালামের ৮নং মন্তব্যে উল্লিখিত আছে সামান্য)
অনেকের প্রথম কবিতাগুলোই কবিতা।পরের সব অকবিতা।যেমন কবি আল মাহমুদ বা টি এস এলিয়ট প্রমুক বিখ্যাতদের নাম বলা যেতে পারে। নজরুলের মানদন্ডও আবেগে হুজুকে বারবার আক্রান্ত হয়েছে। তারাঁ সৃষ্টিশীল না থেকে হয়ে উঠেন প্রতিক্রিশীল।
কেনো আমি বলি ”ঈশ্বর তোমাতেই ছিল” একটি ভালো কবিতা?
নৃবিজ্ঞান বলে, মানুষ ঈশ্বর সৃষ্টি করেছে।ঈশ্বর কখনও মানুষ বানায়নি। এই সহজ বা কঠিন বিষয়টাকে এই ছোট্ট কবিতায় বিশেষভাবে নয়, খুব সরল আর্টে সরল ভাবে সহজে প্রকাশ করতে সফল হয়েছেন মউ।
উল্লেখ্য,বাঙলায় নৃবিজ্ঞানকে না জেনে না বুঝে সন্দেহের চোখে দেখা হয়।
@সালাম,
ভালই হলো, সবাই শুধু এক লাইনে প্রশংসা করেই মন্তব্য শেষ করে দিচ্ছিল। আমার ফ্লপ আইডিয়া ফলে আপনার সুন্দর ব্যাক্ষা পেলাম। ধন্যবাদ ভাল থাকবেন।
কবিতা অতি নীম্নমানের হয়েছে। প্রথম লেখাতো; তাই সবাই উৎসাহ জোগাবার জন্য মিছামিছি, মানে হুদা-মিছা, ভাল বলছে। এই মিথ্যা প্রশংসায় বিভ্রান্ত না হয়ে, লেখায় আরো যন্তবান হোন। 😎
লেখা যেমনি হোক, মুক্তমনায় আপনাকে স্বাগতম। :rose:
@আতিক রাঢ়ী,
কবিতা অতি নীম্নমানের হয়েছে।
সবাই উৎসাহ জোগাবার জন্য মিছামিছি ভাল বলছে।
কথাগুলো অন্যভাবেও বলা যেতো।
@আকাশ মালিক,
একমত। আসলেই অন্যভাবে বলা যেত।
আমি নিজে কবিতা কিছুই বুঝি না তাই সাধারণত দূরে দূরে থাকি; তবে এই কবিতার
“হঠাৎ আমি গভীর চোখে দেখি
আগুনের আঁচে বীভৎস এক মেয়ে।”
লাইন দুটি কেন যেন অসাধারন লাগে, কেন লাগে জানি না, এখানেই মনে হয় কবিতার স্বার্থকতা।
@আদিল মাহমুদ,
পাঠকের ভালোলাগা লেখকের আনন্দ।
ভালো থাকুন।
@আকাশ মালিক,
বিধিবামে গেলে যা হয় আরকি। মজা করতে চেয়েছিলাম। বুঝলাম পুরাপুরি ফ্লপ আইডিয়া। ব্যাস্ত ছিলাম, ফলে যুতসই স্মাইলি বসাতে পারিনি।
তবে অনুতপ্ত। যারা আমার কমেন্টে আহত হয়েছেন, তাদের সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। বিশেষ করে লেখকের কাছে।
@আতিক রাঢ়ী,
ঠিকমত স্মাইলি না দিলে বিধিতো বামেই যাবে, ডানে নয়। 😀
এর আগেও একবার আল মুর্শেদ সাহেবের একটা মন্তব্যে ঠিকমত স্মাইলি না দেয়াতে উলটো অর্থ প্রকাশ হয়েছিল।
সারকাসটিক কোন মন্তব্য করলে আশা করবো সবাই স্মাইলি বসাবেন। এতে করে অনেক ভুল বুঝাবুঝির অবসান হয়ে যাবে অবলীলায়।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ এবং ফুলেল শুভেচ্ছা বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্য। :rose2:
মুক্তমনার সদস্যদের মধ্যে সুমধুর সম্পর্ক বিরাজ করুক এটাই আমাদের কামনা।
আতিক রাঢ়ীর মনে হয় মাঝে মাঝে একটু রূঢ় কথা বলার প্রবনতা আছে।
আমার নিজের লেখা নিয়ে আমি সাধারণত তৃপ্ত নই। সবসময় মনে হয় যে ঘাটতি রয়ে গেছে কোথাও। পারলে আবার নতুন করে লিখতাম প্রায় সবগুলোই। ফলে, কেউ সমালোচনা করলেও গায়ে লাগে না আমার। কিন্ত্ এর মধ্যেও দুই একটা লেখা আছে যেগুলো আমার নিজেরই অসম্ভব পছন্দ। সেগুলো লিখে পরিপূর্ণ তৃপ্তি পেয়েছি আমি। আবার সুযোগ পেলেও ওই লেখাগুলো নতুন করে লিখতে নারাজ আমি। এর মধ্যে একটা হচ্ছে নীল পাহাড়ের চূড়ায় গল্পটা। সবাই যখন এই গল্পটার প্রশংসা করছিল, অসাধারণ বলছিল, আতিক তখন স্রোতের বিপরীতে গিয়ে ‘অতি সাধারণ গল্প’ বলে মন্তব্য করেছিলেন।
আমার চামড়া অনেক মোটা, কাজেই আমার গায়ে লাগেনি। কিন্তু, এই ধরনের রূঢ় মন্তব্য যখন নবীন কোন লেখক শোনে তখন তার জন্য তা হজম করা আসলেই খুব কষ্টকর। এমনও হতে পারে পাঠকের একটা মাত্র মন্তব্যই একজন নবীন লেখকের লেখালেখির ইতি ঘটিয়ে দিতে পারে চিরতরে। কাজেই, কোন মন্তব্য করার আগে, বিশেষ করে নবীন লেখকদের ক্ষেত্রে, আমাদের অনেক বেশি সতর্কতার সাথে বিবেচনা করা উচিত।
মউ বয়সে যদিও নবীন, কিন্তু লেখালেখিতে অনেক প্রবীন। এই জগতে অনেক অভিজ্ঞতা তার। আমার জানামতে এর মধ্যেই গোটা কয়েক বই বের হয়ে গেছে তার। কাজেই, এই অযৌক্তিক আক্রমণকে উপেক্ষা করে যাবার মত বুদ্ধিমত্তা, সাহস এবং পরিপক্কতা তার আছে বলেই আমার বিশ্বাস।
@ফরিদ আহমেদ,
ধন্যবাদ 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
আমি গতকাল আতিক ভাই এর কমেন্ট দেখে প্রথমে ভেবেছিলাম মউ বুঝি ওনার পরিচিত তাই মজা করছেন।
আসলে গল্প, কবিতা এগুলি তো অনেকটাই আর্টের মত ব্যাপার। কারো কাছে ভাল লাগবে আবার কারো ভাল লাগবে না। তাই কারো কাছে ভাল না লাগলে তার দোষ তো দেওয়া যায় না। তবে খারাপ হয়েছে বা ভাল হয়নি এ জাতীয় কথাবার্তা না বলে অন্যভাবে বলা যায়।
যেমন, তেমন কোন ভাব ফোটেনি, ছন্দ মাত্রায় যত্নবান হতে হবে এমন করে বলা যায়।
নুতন লেখক/লেখিকার জন্য আসলেই প্রথম দিকে এক কথায় কিছুই হয়নি গোছের কথাবার্তা খুবই বেদনার।
@ফরিদ আহমেদ,
প্রিয় ফরিদ ভাই, “নীল পাহাড়ের চূড়ায়” আমার করা মন্তব্যটা আবার একটু প্রিতীপ্রদ ভাবে খেয়াল করে পড়লে আপনি দেখবেন, মন্তব্যের শুরুতে একটা “না” শব্দ আপনি বাদ দিয়ে গেছেন। আমার কপালটাই বোধ হয় খারাপ।
@আতিক রাঢ়ী,
কপালতো খারাপই বটে। এরকম “না অতি সাধারন গল্প। ” ধরনের উত্তরাধুনিক মন্তব্য লিখলেতো মানুষের বকাঝকা খাবেনই। 😀
কবিতা ভাল্লাগছে :coffee: ।
মুক্তমনায় স্বাগতম মউ ।
@নুরুজ্জামান মানিক,
আপনার মন্তব্য আর উষ্ণ অভিনন্দন পেয়ে ভালো লাগলো ভাইয়া।
ভালো থাকবেন 🙂
বহুবছর পর ”ঈশ্বর তোমাতেই ছিলো” নিয়ে আসে মানুষ নয়, জ্বলন্ত এক নারীর ছবি।পুরাতন সমাজচিত্র কবিতায় আবার নতুন হয়ে উঠছে!হাঁ, সত্যই ঈশ্বর তোমাতেই ছিলো।এবং এখনো আছেই বলতে হয়।কি শিক্ষিত কি অশিক্ষিত প্রায় সকল বধুই তাদেরঁ মরদকে ঈশ্বর-জ্ঞ্যানে -দেখে- মানে- ভক্তি-প্রনাম করে।কবিতার অশিক্ষিত হতভাগা মেয়েটির আছে শুধু মধুর শরীর!ওর কোন মস্তিস্ক নেই।মাটির পুতুল আর ওর মধ্যে পার্থক্য কোথায়!?কাজেই তারে আমি দোষী না,দোষী আমি তথাকথিত শিক্ষিতাগণকে!যারাঁ তাদেরঁ মাথার চেয়ে শরীরকেই দাম দেন বেশী।হাত পায়ের শেকল থেকে তারাঁ এখনও মুক্ত হতে পারেননি।কত পলিশ!কত আস্তরণ! কেন এ হীনমন্যতা? পশ্চিমের মেয়েরা একদিন স্বাধীন হয়েছিলো।এখন দেখছি এরাঁও আবার দিনদিন বদলে যাচ্ছে!প্লাস্টির নখে ঢেকে যাচ্ছে তারঁ সব!
তার কি কোন উদ্ধার নেই!??
কবি জুয়েইরিযাহ মউকে ধন্যবাদ।
@সালাম,
পাঠপ্রতিক্রিয়া জানতে পেরে ভালো লাগলো।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
@সালাম, সহমত।
কবিতাটি পড়ে বেশ ভাল লাগলো। ধন্যবাদ।
@সৈকত চৌধুরী,
জেনে ভালো লাগলো, ভালো থাকুন 🙂
মউ, মুক্তমনায় আপনাকে লিখতে দেখে ভাল লাগছে। সুস্বাগতম।
@অভিজিৎ,
জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ এবং সবিশেষ কৃতজ্ঞতা।
ভালো থাকুন 🙂
সুন্দর হয়েছে,মউ! আহ্ নৈবেদ্য জীবন! অবশ্য আমি আশা হারাই না, আগুনে জ্বলন শেষেও কিছু থেকে যায় অগোচরে-কোথাও কোথাও!
@মণিকা রশিদ,
হুম দিদি, তাও বটে।
ছাই আর গলিত মাংস উর্বর করে মাটি…
পাঠপ্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ 🙂
ভাল লাগল
@শেখর সিরাজ,
ধন্যবাদ 🙂
মুক্তমনায় স্বাগতম মউ।
@ফরিদ আহমেদ,
ধন্যবাদ আপনাকে 🙂
অসাধারন লাগলো।
@মিঠুন,
ধন্যবাদ 🙂
মুগ্ধ হয়ে কবিতাটি বারবার পড়েছি। এরকম চিন্তাজাগানিয়া কবিতা আরো চাই।
ধন্যবাদ।
@আকাশ মালিক,
আপনাকেও ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।