কোরবানী ঈদ উপলক্ষে বিশেষ রচনা
জীব হত্যায় পুণ্য কি?
আরজ আলী মাতুব্বর
কোন ধর্ম বলে, ‘জীবহত্যা মহাপাপ’। আবার কোন ধর্ম বলে, ‘জীবহত্যায় পূণ্য হয়’। জীব হত্যায় পাপ বা পূণ্য যাহাই হউক না কেন, জীব হত্যা আমরা অহরহই করিতেছি। তাহার কারণ- জগতে জীবের খাদ্য জীব। নির্জীব পদার্থ যথা- সোনা, রেৈপা, লোহা, তামা বা মাটি-পাথর খাইয়া কোন জীব বাঁচা না। পশু-পাখী যেমন জীব; লাউ বা কুমড়া, কলা-কচুও তেমন জীব। উদ্ভিদকুল মৃত্তিকা হইতে যে রস আহরণ করে, তাহাতেও জৈবপদার্থ বিদ্যমান থাকে। কেঁচো মৃত্তিকা ভক্ষণ করিলেও উহার দ্বারা সে জৈবিক পদার্থই আহরণ করে এবং মৃত্তিকা মলরূপে ত্যাগ করে।
জীবহত্যার ব্যাপারে কতগুলো উদ্ভট ব্যবস্থা আছে। যথা- ভগবানের নামে জীবহত্যা করিলে পূণ্য হয়, অখাদ্য জীবহত্যা করিলে পাপ হয়, শত্রুশ্রেণীর জীবহত্যা করিলে পাপ নাই এবং খাদ্য জীবহত্যা করিলে পাপ-পূণ্য কিছুই নাই ইত্যাদি।
সে যাহা হউক, ভগবানের নামে জীবহত্যা করিলে পূণ্য হইবে কেন? কালীর নামে পাঁঠা বলি দিয়া উহা যজমান ও পুরোহিত ঠাকুরই খায়। কালীদেবী পায় কি? পদপ্রান্তে জীবহত্যা দেখিয়া পায় শুধু দুঃখ আর পাঁঠার অভিশাপ…( এর পর পড়ুন এখানে )। :pdf:
:line:
প্রসঙ্গ কোরবানি
ইসমাইল না ইসহাক উৎসর্গীকৃত কে?
বেনজীন খান
উৎসর্গ শব্দটির দুটি দিক আছে। একটি সদর্থক, অপরটি নএ্ণর্থক। সদর্থক দিকটি হলো – মানুষ যখন মানবতা প্রতিষ্ঠার জন্য ত্যাগ স্বীকার করে, সর্বোপরি জীবন দান করে; এই ত্যাগ তথা জীবন দানকে উৎসর্গ বলে। উৎসর্গের নানা-রেৈপ রয়েছে যেমন, নবান্নের ফসল, নতুন গাছের ফল, প্রথম উপার্জনের অর্থ- মানুষ অন্যের মাঝে বিলিয়ে দেয়। এগুলো উৎসর্গের সদর্থক দিক।
উৎসর্গের নএ্ণর্থক দিক হলো- দেবতার উদ্দেশ্যে নরবলি দেয়া। পশু জবাই দেয়া। সন্তানের মঙ্গল কামনায় পশু জবাই দেয়া বা আকিকা দেয়া (জানের ছদ্কা) ইত্যাদি। আবার মৃতজনের আত্মার শান্তি কামনায়ও কখনো কখনো কোনো কোনো সম্প্রদায় বিভিন্ন দরগায়, মসজিদে, মন্দিরে নানা স্থানে নানা প্রকৃতির দ্রব্যাদি দিয়ে থাকে। এগুলোও উৎসর্গের মধ্যে পড়ে। আর এমন কিছু বিষয় রয়েছে যেমন মৃতজনের আত্মার মঙ্গলার্থে নানা দোয়া, দরুদ, মন্ত্র পাঠ করে; গোরস্থান, শ্মশান, মন্দির, মসজিদের পুরোহিত বরাবর জানিয়ে দেয়া হয়; এটিও একধরণের উৎসর্গ। এমনি উৎসর্গের নানা ধরণ রয়েছে নানা জাতি ও সম্প্রদায়ের মধ্যে যার উল্লেখ করে শেষ করা যাবে না। এক পবিত্র তৌরাত শরীফেই উল্লেখ আছে ১১ ধরণের কোরবানি যেমন, ঢালন কোরবানি (লেবীয় ২৩:১৩), দোলন কোরবানি, দোষ কোরবানি, ধূপ কোরবানি, নিজের ইচ্ছায় করা কোরবানি, গুনাহের কোরবানি, পোড়ানো কোরবানি, প্রথমে তোলা শস্যের কোরবানি, যোগাযোগ কোরবানি, শস্য কোরবানি, সকালবেলার কোরবানি ও সন্ধ্যাবেলার কোরবানি ইত্যাদি।… (এর পর পড়ুন এখানে) :pdf:
ইসলামিস্টরা বলে কোরবানী মানে নিজের ভিতরের পশুত্তকে বধ্ করা। কিন্তু আমি বুঝিনা গরু, খাশীর মতো নীরিহ গোবেচারা প্রানীকে হত্যা করে কি করে সেটা সম্ভব, সেটা হতে পারে বাঘ, শিংহ অথবা এই জাতীয় কোনো হিংস্র প্রানীকে নিধন্ করার মাধ্যমে।
আরজ আলীর “জীবহত্যায় পুণ্য কি” লেখাটি পুনঃপ্রকাশের জন্য মুক্তমনা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।
নেপালের বারিয়াপুরে গাধিমা দেবীর জন্য বর্তমানে অনুষ্ঠিত আড়াই লক্ষ মহিষ, ছাগল ও পাখীর হতাযজ্ঞ অনেককে খুবই বিচলিত করেছে। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাপী কুরবানী ঈদের আগমন ঈশ্বরের জন্য পশু উৎসর্গের মত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার সমাপতন।
নেপালের পশু-রক্তলীলা উৎসব প্রতি পাঁচ বছর অন্তর পালিত হয়, অনেক প্রতিবাদ সত্ত্বেও এটা থামান সম্ভব হয় নি। পাঁচ বছর পরে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে মুক্তমনার সমমনা পাঠকরা নেপাল সরকারের কাছে লিখতে পারেন।
মাংসাশী হওয়া ও উৎস-বিচার ছাড়া নির্বিচারে মাংস খাবার মধ্যে তফাৎ আছে, তদুপরি ভগবানের উদ্দেশ্যে জীবকে বলি দেবার কোন প্রাকৃতিক অধিকার মানুষের নেই বলেই আমার ধারনা। আর প্রাণী ও উদ্ভিদজগতকে একাকার করে ফেলাটা মূল সমস্যার ন্যায়-বিচার ও যথার্থতা নির্ণয়ে সাহায্য করবে না, কারণ তাহলে মানুষ কখনই প্রকৃতভাবে কোন ঘটনার সাথে একাত্মতা অথবা এম্প্যাথি বোধ করবে না। 🙂
ধর্মের সাথে সম্পর্ক আছে এমন বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা কেনো জানি আমার একদম ভালো লাগে না। এর কারন হিসেবে আমার কাছে মনে হয়েছে ‘ধর্মের সাথে সম্পর্কযুক্ত’ কোন আলোচনা শেষ পর্যন্ত আর আলোচনা থাকে না, তা হয়ে যায় তর্ক-বিতর্ক। যে তর্ক-বিতর্কের কোন আদি-অন্ত খুঁজে পাওয়া মুশকিল।
সে যাই হোক, আলোচনা উঠেছে “জীব হত্যা” এবং তৎসম্পর্কীয় “পাপ-পূণ্য” বিষয়ে আর আমার মতামতও এই দুটি কিংবা চারটি শব্দকে ঘিরে।
সারা বছর ধরে আমরা জীব হত্যার কাজটি করে থাকি খাদ্যে পরিপূর্ণতা বা তৃপ্তি আনয়নের জন্য, আর এর সাথে যুক্ত হয় বছরের দুটি সময় বলি এবং কোরবানীর নামে হত্যা যা প্রকান্তরে (যদিও এর সাথে ধর্মীয় বিষয় যুক্ত) খাদ্যে তৃপ্তি আনয়নের বহিঃপ্রকাশ। সারা বছর ধরে এই যে জীব হত্যা সংঘঠিত হয় তা মূলত মানুষের খাদ্যে পরিপূর্ণতা বা তৃপ্তি আনয়নের জন্যেই হয়ে থাকে। পাশাপাশি ছোট জীবকে বড় জীব গ্রাস করার মনবৃত্তিও এর মধ্যে কিঞ্চিত লুকায়িত। মানুষ যেমন প্রায় সকল প্রানী কুলকে গ্রাস করে তেমনি বোয়াল মাছ পুটি, রুই- কাতলার বাচ্চা কিংবা অন্যান্য ছোট মাছ গুলোকে গ্রাস করে, শুধু তাই না হাঁস-মুরগী, কুকুর-বিড়াল, টিকটিকিসহ অসংখ্য প্রানী কেউ কিন্তু এর বাইরে নয়। তবে হ্যাঁ এই হত্যা কিংবা গ্রাসের বাইরে থাকতে পারবে তারাই যারা প্রানীকুলের কান্না বুঝতে পারবেন, যারা বুঝতে পারবেন উদ্ভীদকুলের কান্না স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর মত। আর পাপ-পূণ্যের যে হিসেব মিলানো হয়েছে ধর্মীয় অনুশোষনের দিক থেকে তাই তাকে তার মতই থাকতে দেওয়া ভালো।
কিছুদিন আগে চট্টগ্রামের একটি স্কুলের ইসলাম ধর্মশিক্ষার সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে নিজামী সাহেবের দেশপ্রেমের পরিচয় পাওয়া যায়। এতে নিজামী সাহেবের বিদেশী পণ্য পরিহার ও তার দেশীপণ্য প্রীতির কথা উল্লেখ করা হয়। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে,নিজামী সাহেব কি এবারের ঈদে দেশী গরু ক্রয় করেছেন?যদি তিনি দেশী গরু ক্রয় করে থাকেন এবং তার অণুকরণে যদি সবাই দেশী গরু ক্রয় করতে শুরু করে,তাহলে বাংলাদেশে অতি শীঘ্র গরু প্রজাতি,অত:পর ছাগল প্রজাতি বিলু্প্ত হয়ে যাবে।
আমি সেই আশংকায় আছি। 🙁 😥
খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা সরল প্রশ্ন।
বেনজীন খানের প্রবন্ধটি আগেই পড়েছিলাম। চমৎকার বিশ্লেষণ।
কোরবানি যে কতটা হাস্যকর…….. :-Y
আমার এক মামা চার লাইনের কবিতা লিখে পাঠিয়েছে ইমেইলে। কবিতাটা আবার আমার মেয়েকে উৎসর্গ করা –
কোরবানী, খুনাখুনি, খাসি, উট, দুম্বা
ইসলামী জোশে কাঁদে গরু, ভেড়া হাম্বা
আমি একা বড় ভয়, ঘরে রই বদ্ধ
কোরবানী মিটে গেলে বের হবো অদ্য।
কবিতাটা শেয়ার করলাম সবার সাথে।
@বন্যা আহমেদ,
সারা দিন ঠ্যং ধইরা কইরা টানাটানি,
আমার জীবনটাই আধা কুরবানী-
হয়া গেল গরু কাটিতে কাটিতে,
মঞ্চায় যদি উনার মত পারিতাম ভাগিতে!!
🙁 😥 :-X
(দেয়ালে মাথা বাইরানির ইমু টা আইসতেসে না! মডু যদি একটু দেখতেন 🙁 )
@তানভী,
ঠিক করে দেয়া হয়েছে। দেখুন – :-Y
ধন্যবাদ ব্যাপারটা নজরে আনার জন্য! :yes:
@বন্যা আহমেদ,
ফেইসবুক স্ট্যাটাস আপডেট এ লিখছিলামঃ ” the biggest animal killing festival has arrived. Congrats to all muslims”
তার পর থেইকা খালি গালি গালাজ আর চোখ রাংগানী আইতাছে।
@বকলম,
ওসব আসবেই, আরো বেশী বেশী করে লেখেন। এভাবেই একদিন যদি ঘুম ভাঙ্গে।
ঠিক, কাজী নজরুল ইসলাম তাই তো বলেছেন … আমরা যদি না জাগি মা ক্যাম্নে সকাল হবে
মনে হল স্কুলে বাংলা ২য় পত্রের রচনা লিখছি… এ জন্যই তো কবি গাহিয়াছেন…। :laugh:
@অভিজিৎ,
কাজী নজরুল ইসলাম আরো বলেছেন
{{{{{{{{{মন্তব্য প্রয়োজন নেঈ , যেহেতু কবিতাটি আমি লিখি নাই}}}}}}}}}}}
এখান থেকে কপি পেস্ট …….
নির্বিচারে পশু হত্যার উৎসব কোন ফর্মেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। জাকির নায়েকদের কাছ থেকে এই জিনিসটারই ব্যাখ্যা চাইতেছিলাম। কিন্তু তারা দুনিয়ার যত আজে বাজে কথা বইলা তাদের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হাজির করে- কিন্তু এই প্রসঙ্গটা সযত্নে এড়াইয়া যায়। শুরু করে ভেজিটেরিয়ানদের নিয়া। “পশুহত্যা মহাপাপ” এইটার জবাব দেন মনের মাধুরি মিশাইয়া। জ্ঞানীর মত সকলকে জানিয়ে দেন- পশুহত্যা মহাপাপ- কিন্তু “গাছেরও তো প্রাণ আছে”। যেনবা আমরা কেউ এই তথ্যটি জানতাম না! চলে মানুষ ও বিভিন্ন পশু পাখির দাঁতের গঠনের পার্থক্যের সচিত্র প্রতিবেদন, যা দেইখ্যা এক নিমিষেই বুঝা যাইবো- আল্লাহ মানুষরে যে মাংস চিবানোর জন্যই পয়দা করছে সেইটা। তারপরে তারা শুরু করেন ইসলামে জবাই করার নিয়মের মধ্যকার যত বৈজ্ঞানিক ব্যাপার স্যাপার। …. এগুলো নিয়াই পেচাইতে থাকেন। পেচাইতে পেচাইতে একদম ছ্যাড়াবেড়া- আর ধার্মিক ব্যক্তিরা ভাবেন- আহা! এই না হইলে আমাগো ইসলাম!!
আমি ভাবি- যে আমি ছোটবেলা থেকে পশুর মাংস খেয়ে অভ্যস্ত, যে আমার পশু জবাই করা নিয়ে কোনই বাছবিচার নাই (তিন কোপ আর এক কোপে জবাই হয়েছে কি না সেটা নিয়া মাথাই ঘামাই না, একবার আদিবাসীদের মারা পশুর মাংসও খেয়েছিলাম যা নাকি খুচিয়ে খুচিয়ে মারা)- সেই আমারে এইসব কথা কইয়া কি লাভ? আমরা আজ কসাইখানা নামক একটা আলাদা জায়গা রাখছি- কিন্তু ধর্মের নামে একটা দিন দুনিয়ারে এইরকম কসাইখানা বানায় দেয়ার মানে কি হতে পারে- এইটাই বুঝতে পারি না এবং সেইটা কেউ বুঝাইতেও আসে না। একবার একজন অবশ্য বুঝাইতে আইসা কইছিল- অন্য ধর্মেও এইরকম নির্বিচার পশুহত্যা আছে- আমি কেবল ইসলামরে নিয়া লাগছি ক্যান। আজব একখান প্রশ্ন বটে! অন্য ধর্মরে দিয়া ইসলামরে রক্ষা করার চেস্টায় বেচারার যে ঈমানের পরীক্ষায় মুনকার-নাকির দুইটা বেশী প্রশ্ন করবো- সেদিকে খেয়াল নাই- আমারে জিগায়, আমি ইসলামের পেছনে লাগছি ক্যান! যাউকগা, জবাব চাইতে গিয়া দেখি লোকে আমার কাছেই জবাব চায়- এই টাইপের প্রশ্নের মেলা জবাব দিছি, তাই এইটারে পাত্তা দেওনের খুব বেশি কারণ দেখি না।
আরেকজন আইসা কইলো- আল্লাহ কোরবানী দিতে কইছে- নিজ হাতে তো পশু হত্যা করবার কয় নাই- আলাদা নির্দিষ্ট স্থানে বা কসাইখানায় সমস্ত পশুর কোরবানীর ব্যবস্থা হইলেই তো হয়। আমি খুব খুশী হই, হুম যান পারলে এই ব্যবস্থা চালু করেন – আর আপত্তি করুম না। রোযার ঈদেও মুসলমানরা পোলাও-মাংস খায়, ফলে ঐদিনও দেশে বেশী গরু ছাগল জবাই হয়, কই এই ঈদ নিয়া তো বর্বরতার অভিযোগ কেউ তুলি না। কসাইখানা থেকে দরকারে রোযার ঈদের তুলনায় দশগুন কইরা মাংস কিনেন, কিইনা নিজে খান- বিলি করেন, ছোয়াব হাসিল করেন, পরকালের খাসা খাস সব জিনিসগুলানের বুকিং দিয়া দ্যান- কোনই আপত্তি নাই; খালি দয়া কইরা দুনিয়াটারে একটু বাসযোগ্য রাখেন- খালি আমাগো নাস্তিকগো লাইগা না- আপনেগো নিজেগো লাইগাও।
হগ্গোলরে ঈদ মুবারক।
@নাস্তিকের ধর্মকথা,
বানর বা শিম্পাঙ্গিরা মানুশের মত প্রায় একই গঠনের (দুপাটিতে চারটি সার্প দাত) দাত দিয়ে ডিনার লাঞ্চে কি কি প্রানীর মাংস খায় তা জাকিরের কাছ থেকে শুনা দরকার।
কোরবানীর বিরুদ্ধে আমার যুক্তি মাংস ভোজী বা প্রানী হত্যার হিসেবে নয়। জীবহত্যা ভিগানদেরও করতে হয়। জীবহত্যা না করলে তো ফুড সাইকেল বন্ধ হয়ে গোটা জীব জগতই ধ্বংস হয়ে যাবে।
খাদ্যাভাসের কারনে মাংস খাওয়া চলতেই পারে, সব মানুষে ভেজিটেরিয়ান হয়ে গেলেও তো তার ফল মনে হয় না ভাল হবে বলে।
কাজেই জীবহত্যা জীবজগতের অস্তিত্ত্ব রক্ষার জন্যই দরকারী।
তবে এই যুক্তিতে কোরবানীর মত অর্থহীন রিচূয়ালের কোন মানে নেই। অন্য কোন অবলা প্রানীর প্রান পৈশাচিক উপায়ে নিয়ে ফূর্তি করার মাঝে কোন সূস্থ মানসিকতা থাকতে পারে না। এর সাথে খাদ্যের প্রয়োযনে হত্যার প্রয়োযন খুবই সামান্য।
হিন্দু বা মোসলমানরাই যে কেবল পশুবলি কোরবানীর মত অমানবিক রিচূয়াল পালন করে তা নয়। এমনকি ধর্মীয় রীতিনীতির নাগপাশ মুক্ত পাশ্চাত্য সমাজেও এধরনের অমানবিক রিচুয়াল আজো আছে, যা যেকোন মানুষের মনকে বিচলিত করতে বাধ্য।
আনাস সাহেবের কথায় কৌতূহলী হয়ে ডেনমার্কের ডলফিন নিধনের কিছু ছবি দেখলাম। না দেখলেই মনে হয় ভাল হত। আমরা আদৌ কতটা সভ্য হয়েছি সে প্রশ্ন সিরিয়াসলি মনে আসছে।
http://www.politicalarticles.net/blog/2009/10/11/denmarks-gruesome-festival-mass-killing-of-whales-and-dolphins-to-prove-adulthood/
@আদিল মাহমুদ,
আমি আপনার মতামতের সাথে সম্পূর্ণ একমত।
এই সব বিতর্ক করা মানে ধার্মিকদের সুবিধা করে দেওয়া। আমিষ বা নিরামিশ খাওয়া উচিত তা বিজ্ঞান দিয়ে সমাধান করা যায় না। তেমনি প্রানী হত্যা করা উচিত না উচিত না-সেসব যুক্তিও বিজ্ঞান দিয়ে খোঁজা যায় না। এগুলো বিতর্ক থেকে বাদ দিলেই ভাল হয়-যেহেতু এসব ক্ষেত্রে সার্বজনীন কোন উত্তর নেই।
শুধু দক্ষিন এশিয়ার পরিপেক্ষিতে এটাই বলা যায়-এখানে মানুষ প্রতি জমি এত কম-লোকে এখানে আমেরিকার মতন মাংস খাওয়া শুরু করলে, পরিবেশের ভারসাম্য ভালো ভাবেই বিগ্নিত হবে এবং খাবারে আরো কমতি পড়বে। কারন পশুখাদ্যের জন্যে, অনেক বেশী জমি ছেড়ে দিতে হবে। তাই জন সংখ্যা না কমিয়ে মাংস খাওয়ার ব্যাপক প্রচলন করা উচিত না। তাতে খ্যাদ্যাভাব আরো বেশী প্রকট হবে।
সময়োপযোগী — দিনোপযোগী পোষ্ট।যদিও পুঃনপ্রকাশ তবুও প্রয়োজন ছিল। আরজ আলীর লেখাটা পড়া ছিল, তবুও আবার পড়লাম। বেনজীনের লেখাটা খুলতে পারলাম না। সাথে আরও কিছু লিংকও পড়ার সুযোগ পেলাম।
এসব লেখা বাংলাদেশের প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত হওয়া উচিত ও প্রয়োজন । রবীন্দ্রনাথের ‘বিসর্জন’ নাটক পড়ে আমার প্রথম পশু বলির নেতিবাচক দিকটি হৃদয়ঙ্গম হয়।
লিংক দেয়া উম্মে মুসলিমার লেখায় একটু সংশোধনী প্রয়োজন। উনি লিখেছেন —- ‘বাংলাদেশের হিন্দু নাগরিক এবং আদিবাসী- উপজাতিরা দিব্যি শুকর দিয়ে তাদের পূজা পার্বব সারছেন’ ।
উনার জ্ঞাতার্থে বলছি — বাঙালী হিন্দুরা বাংলাদেশে শুকর দিয়ে পূজা করেন না। হিন্দুরা পাঁঠা বলি দেয়—যা আবার দুস্প্রাপপ্য। খাসী সহজপ্রাপ্য। অবশ্য এ নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যথা নেই। খাসীও জীব, পাঁঠাও জীব।
মুসলমানরা আবার বলির মাংস খান না তা মুরগী হলেও। গলাটা একটু আটকে রাখতে হয়।
অনেক হিন্দু পাঁঠা খান, কিন্তু মুরগী খান না। মুরগীকে পাঁঠার চেয়ে আরেকটু বিধর্মীয় মনে করেন।
হাস্যকর হলেও উভয় ধর্মের কিছু লোক তা ই চর্চা করে।