চুয়াত্তর সালের কথা। তখন গোটা রংপুর জুড়ে দুর্ভিক্ষ। প্রতিদিন অনাহারে মানুষ মারা যাচ্ছে। খোলা হয়েছে লঙ্গর খানা।এই লঙ্গরখানা কেন্দ্রিক এক বিস্ময়কর ঘটনা জানার জন্য একটু ভুমিকা টানতে হচ্ছে। আমি তখন স্কুলে পড়ি। এ সময় আমার মধ্যে তবলাবাদক হবার ইচ্ছা প্রবল। এই বাসনার কথা প্রকাশ করি আমার এক নিকটতম প্রতিবেশী বাবন ব্রহ্ম’র কাছে। তিনি একাধারে আমার বড় ভাই এবং বন্ধুও বটে। তিনি আমাকে তালিম দেয়া শুরু করলেন। কিন্তু গোড়াতেই বিপত্তি দেখা দিলো। আমি বা হাতে ডুগী বাজাতে পারিনা। ডান হাতে ডুগী বাজাই আর বা হাতে তবলা। এতে তবলার চাটি বা আওয়াজ ঠিকমতো হয়না। কিন্তু আমার ওই ওস্তাদ হাল ছাড়েন না। তিনিও ধনুর্ভঙ্গ পণ করেছেন আমাকে তবলাবাদক বানাবেনই। আমার তবলার ওস্তাদ বাবনদার যথেষ্ট আর্থিক অনটন ছিলো। এ কারনে তিনি গানের টিউশনি করতেন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় যার বাড়িতে টিউশনি করাতে যেতেন তিনি ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা। পি.আই.ও বা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। তার কিশোরী মেয়ে হেলেন গান শিখতো বাবনদার কাছে। তারা থাকতেন সি.ও ( বর্তমান উপজেলা পরিষদ )অফিসের সরকারি কোয়াটারে। এই হেলেনের বড্ড বেসুরো গলা ছিলো। এ নিয়ে এক কাহিনী আর একদিন বলা যাবে।
যাহোক, সম্ভবত অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহ। বাবনদা আমাকে বললো, চল হেলেনদের বাড়িতে, সেখানে হেলেনকে গান শেখাবো আর তোকে তবলার তালিম দেবো। আমি রাজী হলাম। তখন রংপুরের এই থানায় বিদ্যুত আসেনি। হেরিকেন আর কুপীর আলোই এখানকার মানুষের সম্বল। আমরা রাত আটটার দিকে গায়ে চাদর মুড়িয়ে রওনা দিলাম হেলেনদের বাড়ির উদ্দেশ্যে। আমরা সি.ও অফিস পার হওয়ার পর যখন একটা ফাঁকা যায়গায় পৌঁছলাম, তখন অন্ধকার ফুঁড়ে এক বয়স্কা মহিলা আমাদের গতি রোধ করলো। বাবনদা তার নিস্তেজ ব্যাটারির নিভু নিভু টর্চের আলোয় মহিলার মুখ দেখে বললেন, কে রে হাজিরন ? তারপর হাজিরনের কান্না জড়িত ক্ষীন কণ্ঠ- বাবা দুই দিন হাতে (থেকে) না খায়া আছোঁ (আছি)কাইল নঙ্গরখানা (লঙ্গরখানা) হাতে কয়টা উটি (রুটি)আনি মোক(আমাকে)দ্যান। বাবনদা রাজী হলো। বললো কাল দুপুরে আমার সাথে দেখা করিস, তাহলে নিয়ে দেবো। হাজিরন বাবনদার গায়ে হাত বুরিয়ে দোয়া করলো- আল্লা তোর ভালো কইরবে। এরপর আবার সে অন্ধকারে মিশে গেলো। বাবনদা আমাকে বললো এই মহিলা হেলেনদের বাড়িতে মাঝে-মধ্যে কাজ করে দেয়। বাড়ি হায়াতখাঁ গ্রামে। আমরা এরপর হেলেনদের বাড়িতে পৌঁছলাম। হেলেনের গান আর আমার তবলার তালিম হলো। এরপর শুরু হলো চা পর্ব। চা খেতে খেতে পি.আই.ও সাহেব কথা তুললেন দূর্ভিক্ষ আর দেশ নিয়ে। এই কথার ফাঁকে বাবনদা বললো, আপনাদের বাসায় হাজিরন নামে যে মহিলা মাঝে-মধ্যে এসে ফুট-ফরমাশ খাটে ওই মহিলা এখানে আসার আগে আমাকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে বললো, সে নাকি দুই দিন থেকে অনাহারে আছে। কাল লঙ্গরখানা থেকে রুটি এনে দেয়ার জন্য খুব অনুরোধ করলো। একথা শেষ হওয়ার সাথে সাথে বাসার পরিবেশ মুহুর্তে বদলে গেলো। ঘরে পিন পতন নিস্তব্ধতা। ঘরভর্তি সবাই আমাদের দু’জনের দিকে বোবা দৃষ্টিতে তাকিয়ে। আমি নিরবতা ভাঙ্গলাম। বললাম কি হলো আপনাদের! সম্বিত ফেরে সকলের। এরপর যা ঘটলো তা অবিশ্বাস্য ও ভীতিকর। হেলেনের মা জানালো, হাজিরন অনাহারে থেকে থেকে সাতদিন আগে মারা গেছে। এ কথা শোনার পর আমার গায়ের লোম কাঁটা দিয়ে উঠলো। বাবনদা শীতের রাতেও ঘামতে শুরু করলো আর ঘনো ঘনো বাথরুম যেতে লাগলো। আমরা সহ বাড়িসুদ্ধ মানুষের তখন ভয়ে ভুতঙ্গ অবস্থা। পি.আই.ও সাহেব চিতকার করে অফিসের পাহারাদারকে ডাকলেন। কারন, জীবিত হাজিরনের চেয়ে মৃত হাজিরন তখন আমাদের কাছে অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
এরপর পাহারাদার আমাদের বাসায় পৌঁছে দেয়। এঘটনার পর আমারো আর তবলা শেখা হয় নাই। সেদিনের কথা মনে হলে এখনো গা শিউরে ওঠে। আসলে আমরা কি সেদিন হাজিরন কে দেখেছিলাম নাকি অন্য কোনো ক্ষুধার্ত মানুষের প্রতীকি আত্মা ? যে আমাদের সামনে এসেছিলো আমাদের বিবেককে নাড়া দিতে ? এ প্রশ্নের জবাব আমার জানা নাই। হয়তো জানতে পারে হুমায়ুন আহমেদ’র মিসির আলী সাহেব।
আমাদের প্রকৃতির অনেক কিছুর উত্তর আমাদের জানা নেই। জানি না সেই সকল উত্তর কবে আমরা জানতে পারবো। যেমন ডেজাভু এর ব্যাপারটা আমার ক্ষেত্রেও অনেকবার ঘটেছে। অনেক জিনিসের ব্যাখ্যা বর্তমান বিজ্ঞান ব্যাখ্যা নাই দিতে পারে, তবে আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে ধর্মের উৎপত্তি প্রাকৃতিক কর্মকান্ড ব্যাখ্যা করতে না পারার অক্ষমতা থেকেই সৃষ্টি হয়েছে। আবার এমনো হতে পারে কিছু কিছু ব্যাপার আমরা কোনদিনো জানতে বা বুঝতে পারবো না কারন আদৌ আমাদের সেই ব্যাপারগুলো বুঝবার সক্ষমতাই নেই। উদাহরন হিসেবে বলতে পারি কোন গরু বা শিয়াল কখনোই মধ্যাকর্ষন শক্তির ব্যাপারটা উপলব্ধি করতে পারবে না। এখন আমরা কিভাবে নিশ্চিত হলাম যে সব ধরনের জ্ঞান ধারন করার ক্ষমতা মানব মস্তিষ্কের আছে। আমার মতে জগতের যত আশ্চর্য জিনিস আছে সবকিছুরই ব্যাখ্যা বিদ্যমান, হয়তোবা আমরা সেই ব্যাখ্যা এখনো প্রদান করতে সক্ষম হই নাই অথবা সেই ব্যাখ্যা আমাদের কাছে ধরা দেবার জন্য মানব মস্তিষ্কের আরো অনেক বিবর্তনের প্রয়োজন।
মুক্তমনা আমার অনেক প্রিয় একটি ব্লগ। অন্য কোন প্রবন্ধে মন্তব্য দেবার মত জ্ঞান না থাকার কারনে এটিই মুক্তমনায় আমার প্রথম মন্তব্য।
আপনারা ভীতু বলেন আর যাই বলেন আমি ভূতে বিশ্বাস করি :guru: । যদিও আমার তেমন কোন ভৌতিক অবিজ্ঞতা নেই আর থাকাও কথা নয় 🙂 । কারণ এ সব অবিজ্ঞতা হয় মূলত গ্রামে। আমি আমার গ্রামে গেলে বথরুম ছাড়া একা অন্য কোথাও যাই না 🙁 । আর আমার বয়স তের আমি আমাকে খুব ছোট ভাবি। ছোটদের মূলত ভূত ভয় দেখায় না 😀 ।
@ আদিল মাহমুদ:
আমারও আজকে এমন একটা ঘটনা ঘটেছে পড়ন্ত বিকেলে।মনোবিজ্ঞানে ইহারে দেযাবু (Deja vu) বলা হয়।
ভালো থাকুন।
@সালাম,
বলেন কি! তানভী তো মনে হচ্ছে এই রোগ মহামারীর আকারে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
তবে নামটা বলে উপকার করলেন। এই নামে একটা সিনেমা দেখেছিলাম বটে। না দেখে থাকলে দেখতে পারেন, মজা পাবেন। ডেঞ্জেল ওয়াশিংটনের, একশন মুভি।
@আদিল মাহমুদ, 😀
জ্বিন-ভুত-প্রেত দর্শন নিয়ে আমার নিজের একটা ইন্টারেস্টিং এনালাইসিস আছে। আমার কেন যেনো মনে হয় ভুত প্রেত দর্শনের সময় ব্যক্তিবিশেষের ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক পরিবেশের কল্পণা অনেকাংশেই রাজত্ব করে। যেমন আমার অনেক মুসলমান বন্ধুকে বলতে শুনেছি – ভুত নাই কিন্তু জ্বিন আছে। অমুক বন্ধুর নানী নাকি নিজেই জ্বিন পালে। সেই জ্বিন নাকি ঝড়ের রাতে নানীর জন্য আম নিয়ে আসে, ইত্যাদি। আবার হিন্দু বন্ধুর মুখে শুনেছি মরা পোড়াতে গিয়ে শ্মশান ঘাটে ভুত কিভাবে ধুতি টেনে ধরেছিলো ইত্যাদি…। মুসলমান ঘরে বড় হওয়া ছেলে সাধারণতঃ কখনো ভুত দেখে না, আর হিন্দু ঘরে বড় হওয়া ছেলে কখনো জ্বিন দেখেনা … ব্যাপারটা কি একেবারেই কাকতালীয়?
আরো একটা মজার উদাহরণ দেই। হিন্দুরা জন্মান্তরের কাহিনীতে বিশ্বাস করে। সেজন্য যতগুলো জাতিস্মরের ঘটনা আমরা শুনি প্রায় সবই ভারতে। আমি এখনো কোন মুসলমান ছেলেকে পাইনি যে তার পূর্বজন্মের কথা স্মরণ করতে পারে। ইন্টারেস্টিং না?
স্পেসিফিক বিশ্বাসের কারনেই যীশুর অনুসারীরা আকাশের মেঘে যীশু দর্শন করে, আর হিন্দুরা মা কালী। আর আমার মত নাস্তিকেরা কিছুরই দেখা পায় না 🙁
@অভিজিৎ,
ইউরি গেলারটা কি সেই লোক যিনি একবার কতদুর থেকে নাকি চোখের দৃষ্টি দিয়ে কাটা চামচ বাকিয়ে দিয়েছিলেন বলে গল্প বেরিয়েছিল?
ভুত নাই জ্বীন আছে এই তত্ত্ব ইসলামে বিশ্বাস করলে মানতেই হবে। তবে সেটা বড় ব্যাপার না। জ্বীন বা ভুত একই কথা। লাউ আর কদুর মত।
আমার আম্মাও দাবী করেন অনার নানা নাকি জ্বীন পালতেন, মোক্ষম প্রমান সেই বাড়িতে সন্ধ্যা রাতে জ্বীনে মাছ মুড়ি দাবী করত। নাকি ভাষায় ডাকাডাকি শুনেছেন আমাকে এক মুঠ হুড়ুম দাও। না দেওয়া হলে টিনের চালে ঢিলাঢিলি। মাঝেই মাঝেই কাউকে কাউকে জ্বীনে ধরে নিয়ে যেত, তারা আবার ফিরে এসে অত্যাশ্চর্য ভ্রমন কাহিনী বর্ণনা করত। জ্বীনদের নাই সপ্তাহে একদিন মিলাদ হয়, সে মিলাদে দেদারসে মিষ্টি খাওয়া হয়। এ জাতীয় নানান কেচ্ছা কাহিনী। এছাড়াও টুকটাক ভৌতিক বা জ্বৈনিক কাহিনী তো অনেকের থেকেই শুনেছি। জ়্বীনরা ভাল বা খারাপ দুই শ্রেনীর হতে পারে। ভাল জ্বীনরা মোটামুটি ঈমানদার মোসলমান্দের মতই, হেভি নামাজী হয়। কাউকে ভয় টয় দেখায় না। খারাপ বা খবীস জ্বীনরা বেঈমানদের মতই নামাজ টামাজের ধার ধারে না, উলটা বদমায়েশী করে একে তাকে ভয় দেখায়।
নিয়ার ডেথ এক্সপেরিয়েন্সের ব্যাপারেও জ্বীন ভুত তত্ত্ব খাটে। মোসলমান খ্রীষ্টান অভিজ্ঞতা দুই ধরনের হয়।
জাতিস্মর শুধু মোসলমান নয়, ভারত ছাড়া আর কোন দেশে কেউ দাবী করেছে বলে শুনিনি।
@আদিল মাহমুদ,
জ্বাতিস্বর টাতিস্বর বুঝি না,তবে আমার নিজের মধ্যে মাঝে মধ্যে কিছু আজব ব্যপার ঘটে।যেমন- একদম নতুন কোন রাস্তা দিয়ে হাটলেও,ঠিক তার পর পরই মনে হয় যেন ঐ রাস্তা দিয়ে আমি আগেও এসেছিলাম।কোন ঘটনা ঘটলে মনে হয় যেন এই ঘটনা আমি আগেও দেখেছিলাম।( সবসময় হয় না,মাঝে মধ্যে হয়)
যেমন কদিন আগে আমার মেঝ ভাইয়ের ভার্সিটি তে ভর্তি পরিক্ষা দিতে গিয়ে ওদের হলে উঠেছিলাম,ওখানে রাতের খাবার খেতে বের হয়ে দেখি যে সিনিয়র ভাইয়ারা ভার্সিটির শহীদ মিনারের পাশে বসে গীটার বাজিয়ে গান করছে।আমি গান শুনতে শুনতে তাদেরকে পাশ কাটিয়ে সামনে চলে গেলাম। তার কিছুক্ষন পরেই আমার মনে হতে লাগল এই ব্যপার যেন আগেও আমি ঘটতে দেখেছিলাম,যে সময়ে আমি তাদের পাশে বসে তাদের সাথে গলা মেলাচ্ছিলাম!! 😀
এরকম কেন হয় তার ব্যখ্যা কি অভিজিৎ ভাইয়া দেবেন?
আমার ইচ্ছা ছিল আমি এই ব্যপারে মনোচিকিৎসক এর পরামর্শ নেব। কিন্তু মনো চিকিৎসকের কাছে যাওয়া টা এখানে এত সহজ নয় বলে আর যাওয়া হয়নি কখনো।
@তানভী,
একসময় আপনার মত আমারো হুবহু একই অনুভুতি হত। প্রায়ই মনে হত আশে পাশে যা ঘটছে তা আমি আগেও দেখেছি। তবে ডাক্তারের কাছে যাবার মত মারাত্মক মনে হয়নি কখনো। ভবিষ্যতবানী করার মত শক্তিশালী অনুভুতি হত না। এর সাথে মনে হয় না জাতিস্মর এর কোন সম্পর্ক আছে।
এরপ্র বহু বছর আর এমন হচ্ছে না।
ভাবতাম আমি মনে হয় একা, এখন মনে হচ্ছে অনেকেরই এমন হতে পারে। হয়ত মনোবিজ্ঞানে এর কোন টার্ম আছে।
লঙ্গরখানর রুটি ও একজন হারিজন এর মূল আকর্ষণ কারো কাছে ভুত, কারো কাছে ‘৭৪ এর হাহকার হতেই পারে।তবে নির্মোহ দৃষ্টিতে উহার কি কোন মূল্যায়ন নেই? ম্যাকবেথ বা হেমলেটে জীবনশিল্পী শেক্সপিয়র মানুষের কথা বলতে গিয়ে ভুত পেতনি ডাইনি শয়তান ইশ্বর ফেরেস্তা বেহেস্ত দোযক সবই টেনে এনেছেন সেই মানব মনের অন্তরলীন রহস্য উৎঘাটনে।কারণ বাস্তবের ভুত নয়,মাথর ভিতরের ভুতটাই সত্য, এর প্রধান কারণওতো আমরা মানুষ স্রষ্টা।যাহোক বাঙলাদেশের সেই কঠিন সময়ের অসহায় মানুষের বেদনায় ছবি আকঁতে যেয়ে যে ভুতজনার কথা পরিমল মজুমদার উল্লখ করেছেন তাকে অস্বীকার করার কি কোন উপায় আছে? লাখে লাখে ক্ষুদায় মরে যাওয়া সেই অসুখী হারিজনেরাতো প্রতিজ্ঞাবদ্ধ শিক্ষক বাবন ব্রক্ষর চার পাশের অতীব চেনা জানা মানুষ যাদের মরনোত্তর আহাযারি ও আর্তনাদ বিবেকী শিক্ষকের মাথায় ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হচ্ছে এবং তারঁ ছাত্র পরিমলও আবেশিত হচ্ছে -লঙ্গরখানা থেকে আমারে একখানা রুটি এনে দাওনা।গল্পের শুরু,মাঝ খুবই স্বার্থক,কিন্তু শেষের অংশে গল্পের বর্ণনাকারী নিজ থেকে প্রশ্ন করে,এবং আরেক লেখকের মাঝে সম্ভাব্য উত্তর খুজেঁ, লাগে লাঠি দিয়ে গল্পের মাথায় একটা বারি মেরে দিয়েছেন!এতে যা হবার তাই হয়েছে-মাথা ঘোরিয়ে পড়ে যেতে যেতে দেখে দেখছি ভুত, সবই ভুত। এই রহস্যের সমাধান ধর্মী উপসংহার,কাজেই মন আর বলে না: শেষ হইয়াও হইল না শেষ।অন্যতায় হয়তো কাউকে এগিয়ে এসে বলতে হতো না লেখক ভুতের গল্প এখানে বলছেন না বরং তিনি মানুষের গল্পই বলে যাচ্ছেন।সুখ সকলের জন্য স্হায়ী হোক। ধন্যবাদ।
এবার বলব আমার ভুত দেখার কাহিনী। ৮ম শ্রেণীতে যখন পড়তাম তখন রাতে এশার নামাজ পড়ে বাসায় ফিরছিলাম। পথিমধ্যে অন্ধকারে হটাৎ বিরাট লম্বা একটা ভুত দেখে প্রাণ একেবারেই ওষ্টাগত হয়ে পড়ল।আমাকে হাতের ইশারায় ডাকছে। কিন্তু ভবিষ্যতে নাস্তিক হব তো এজন্যই বোধ হয় সিদ্ধান্ত নিলাম ভুতটার সাথে দেখা করার। পাশে গিয়ে ভয়ে ভয়ে দাড়ালাম। না কিছু বলছে না। পরিশেষে ওকে হাত দিয়ে ছুয়ে চমকে উটলাম। একটু পরেই বুঝলাম ওটা একটা খুটি। দুদিকে একটা কিছু থাকায় হাতের মত লাগছে আর ওগুলো বাতাসে নড়ায় ‘ইশারা’ বলে মনে হয়। আরেকবার দেখেছিলাম সেটা অন্যদিন বলব।
যাই হোক, আমরা কিন্তু অনেকে ধরে নিয়েছি পরিমল দা আমাদের ভুতের গল্প শুনিয়েছেন। আসলে কিন্তু মোটেও তা না।
@সৈকত চৌধুরী,
আমি কিন্তু আর নেহায়েত জীন ভুত দেখা বা ভর করা এ জাতীয় ঘটনা বলছি না। আমি মোটা দাগে বলছি এমন কিছু ঘটনা যেগুলির কোন যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা এখনো পাওয়া যায় না। প্রবীর ঘোষের সেই অপুর্ব সিরিজ আমি ৪ নং পর্যন্ত অনেক আগেই পড়েছি।
সেগুলির কোন্টইর মধ্যেই এই সাইকিক ডিটেক্টিভ ব্যাপারটি আসেনি।
আপনি হয়ত ব্যাপারটি ধরতে পারেননি তাই আরো খুলে ব্যখ্যা করছি কিছু রেফারেন্স সহ।
ধরা যাক ১০ বছর আগের কোন অমিমাংসিত হত্যা রহস্য। পুলিশ সুরাহা করতে পারেনি। পরে দেখা গেল কোন সাইকিক ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তি পুলিশকে খুনী সম্পর্কে অনেক তথ্য দিয়ে অই হত্যাকারী ধরায় সাহায্য করেছে। পুলিশের ডিটেক্টিভরাও স্বীকার করছে যে অমন সাহায্য না পেলে তারা কোনদিন ধরতে পারতেন না। সাইকিকরা যে নামধাম ঠিকানাসহ খুনী ধরইয়ে দিচ্ছেন তা না। তারা অনেক খুনী সম্পর্কে অনেক ছাড়া ছাড়া তথ্য দেন। যেমন, সে যেই রাস্থায় থাকে তার নাম রিচমন্ড, বাড়ির নম্বরের শেষ দুটো হয়ত ডিজ়িট ৭৬, সে লাল গাড়ি চালায়, ঘাড়ের উপর উল্কি আছে, পেশায় মেকানিক, খুনটা হয়েছিল একটা নির্জন পাহাড়ি লেকের ধারে এ জাতীয় বেশ কিছু তথ্য। এর ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত করে ঠিক ধরে ফেলে, পরে দেখা যায় অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেছে। একটা দুটো ঘটনা হলে বুঝতাম যে ডাল ম্যা কুচ কালা হ্যয়। হয়ত একজন পুলিশ অফিসার চাপা মারছে। একজন সাইকিক বাটপাড়। কিন্তু এমন ঘটনা অনেক ষ্টেটে অনেক আছে। বাঘা বাঘা অনেক ডিটেক্টিভ অফিশয়ালী এসব সাইকিকদের উপর নির্ভর করে। তারা প্রকাশ্যেও তা স্বীকার করে। তাদের কথা খুবই পরিষ্কার। কিভাবে সাইকিকরা বলে তা তারা জানে না, কিন্তু বলতে পারে এটাই তাদের কাছে বড় কথা। তদন্ত করে প্রমান করতে হয় পুলিশকেই, তবে সাইকিকরা তাতে সক্রিয়ভাবে সাহায্য করে যার কোন যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না।
একজন পুলিশ ডিটেক্টিভের কথা শুনুতে পারেনঃ
“Dave Heater, who retired as chief of detectives, sums it up this way: “I look at psychics as tools, the same as I would a polygraph examiner. Psychics can only provide pieces of the puzzle. It’s still up to the detective to put all of those pieces together.”
http://www.lawofficer.com/news-and-articles/articles/lom/0408/psychic_detectives.html
http://www.victorzammit.com/articles/psychicdetectives.html
http://www.tvguide.com/news/andrea-thompson-psychic-41074.aspx
@আদিল মাহমুদ,
আমি সাইকিক পাওয়ার নিয়ে সংশয়বাদী। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে কিছু কথা বলি। মিডিয়ায় অনেক সময় অতিরঞ্জিত করে এগুলো লেখা হয়। সাইকিক পাওয়ারে যদি কিছু জানা যেত কিংবা ভবিষ্যদ্বানী দেখা যেত, তবে ৯/১১ এর মত বর বড় ঘটনা সহজেই এড়ানো যেত। এই সাইকিকের দল প্রায়শই ‘ভবিষ্যদ্বানী’ করেন ঘটনা ঘতে যাওয়ার পরে। ভারতেও ওইরকম বহু জ্যোতিষী আছেন যারা ভবিষ্যদ্বানী করেন ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে রঙ চড়াতে।
একটি কথা বলি এ প্রসঙ্গে। ভাল ভাল ম্যাজিশিয়ানরা কিন্তু স্টেজে বিভিন্ন সাইকিক শক্তির খেলা বহু আগে থেকেই দেখিয়ে আসছেন, আর মানুষদের আনন্দ দিচ্ছেন। তাদের সাথে সাইকিক বাবাদের একটাই পার্থক্য – ম্যাজিশিয়ানেরা বলেন তাদের ম্যাজিকের পেছনে আছে লৌকিক কিছু কৌশল, কোন অতীন্দ্রিয় ক্ষমতা নয়।
বহু স্বনামধন্য সাইকিকেরা কিন্তু এই ম্যাজিশিয়ানদের হাতে পড়ে ধরাশায়ী হয়েছেন অতীতে। এমনি একটি যুগান্তকারী ঘটনা হচ্ছে বিখ্যাত সাইকিক ইউরি গেলারের প্রতারণা ফাঁস হওয়া। আর সেটা ফাঁস করেছিলেন জেমস র্যান্ডি। ভিডিওটা দিলাম-
httpv://www.youtube.com/watch?v=vJQBljC5RIo
আরো একটা ঘটনা বলি এ প্রসঙ্গে। জেমস রান্ডির এক মিলিয়ন ডলারের একটি চ্যালেঞ্জ আছে কেউ যদি তার সামনে সাইকিক ক্ষমতা প্রদর্শন করে দেখাতে পারে, তিনি সেই অর্থ দিয়ে দেবেন। এ পর্যন্ত বহু সাইকিক এই অর্থের লোভে এসে ধরাশয়ী হয়েছেন। র্যান্ডি যেহেতু সাইকিকদের প্রতারনার কৌশলগুলো ভাল জানেন, তিনি সহজেই ধরে ফেলতে পারেন তাদের প্রতারণা। আমরা সাধারণ মানুষদের চোখে যেটা ধরা পড়ে না, সেটা ধরা পরে র্যান্ডির মত ম্যাজিশিয়ানের চোখে সহজেই। মনে রাখবেন ইউরি গেলারের প্রতারনা ধরা পড়ার আগ পর্যন্ত বহু বিজ্ঞানীও গেলারকে অতীন্দিয় ক্ষমতার সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন।
র্যান্ডির মত অস্ট্রেলিয়ান স্কেপ্টিক, প্রবীর ঘোষ কিংবা প্রেমানন্দেরও এরকম বড় অঙ্কের চ্যালেঞ্জ আছে। কোনটাই সাইকিকেরা পূর্ণ করতে পারেনি, বলাই বাহুল্য।
বিজ্ঞানীদের মত পুলিশেরাও সাধারণ মানুষ। তারা ম্যাজিশিয়ান নন। সাইকিকিদের রকমারী কথায় তারা প্রতারিত হন। দু চারটি ক্ষেত্রে সাইকিকদের ‘ভিবিষ্যদ্বানী’ কিছুটা মিল্লে, কিংবা মিলবার কাছাকাছি পৌছালেই মিডিয়া জুড়ে হৈ চৈ শুরু হয়, কিন্তু আর হাজারো ঘটনার ব্যর্থতার কাহিনী প্রকাশিত হয় না। সেজন্যই র্যাণ্ডি একবার মুক্তমনাতেও লিখেছিলেন, সি আই এ এই সমস্ত ভন্ড সাইকিকদের পেছনে দশ বছর ধরে প্রায় ২০ মিলিয়ন ডলার খরচ করেও কোন ফল পায়নি। ফলাফল এবসলুটলি জিরো।
আপনাকে সংশয়বাদী দৃষ্টিকোন থেকে কিছু প্রয়োজনীয় লিংক দেই
psychic
psychic detective
remote viewing
নিজেই যাচাই করে নিন। আর বাংলায় প্রবীর ঘোষের ‘অলৌকিক নয়, লৌকিক’ ( ১-৫) বইগুলো দিয়ে শুরু করতে পারেন। সেখানে অনেক সাইকিকের প্রতারণার কৌশল ফাঁস করা হয়েছে।
আমিও চুয়াওর সালে দিনের আলোতেই না খেতে পাওয়া একটা
জীবন্ত কঙ্কাল দেখেছিলাম ! চোখ গুলো কোটরে ঢোকা ।
তার হেটে চলার মত অবস্থা ছিলনা । লোকটা ছিল মধ্যবয়সী।
হামাগুড়ি দিয়ে বারান্দায় উঠেছিলো ।
বাসা থেকে কিছু খাবার পেয়েছিলো হয়ত!
কিন্তু সে খাবার কি তাকে বাচাতে পেরেছিলো জানিনা!
হয়ত তার পরিণতি হাজিরনের মতই হয়েছিলো!
এখানের লাইব্রেরীত পড়েছি চুয়াওরের দূরভিক্ষে রংপুরে
আড়াইলক্ষ লোক না খেয়ে মারাগেছে ।
তাদের অতৃপ্ত অভূক্ত আততার শান্তি হোক!
বাবনদা তার নিস্তেজ ব্যাটারির নিভু নিভু টর্চের আলোয় মহিলার মুখ দেখে বললেন, কে রে হাজিরন ? তারপর হাজিরনের কান্না জড়িত ক্ষীন কণ্ঠ- বাবা দুই দিন হাতে (থেকে) না খায়া আছোঁ (আছি)কাইল নঙ্গরখানা (লঙ্গরখানা) হাতে কয়টা উটি (রুটি)আনি মোক(আমাকে)দ্যান। :devil:
এখানেই মনে হয় গল্পের রহস্য নিহিত। বাবনদার প্রশ্নের কিন্তু হাজিরন উত্তর দেয় নাই, সে কি হাজিরন না অন্য কেউ ? না দিয়ে শুধু বলেছে সে দুদিনের চরম ভূবুক্ষু।যেখানেই অন্ধকার সেখানেই ভূত-পেতের সন্ধান মেলে বেশি।আর আমাদের দেশে জন্মের পর থেকেই তো বাচ্চারা ভূত-পেতের গাল গ ল্প শুনে ই বড় হয়।৩৫ বছর পর এখন কিন্তু সে র ক ম ভূত-পেত গ্রামে-গুঞ্জে তেমন দেখতে পাওয়া যায় না,কারন এখন প্রায় সর্বত্ত বিদুৎত চলে গেছে।৭৪ এর বন্যা,দূর্ভিক্ষ,মহামারীতে ঐ রকম লক্ষ লক্ষ হাজিরনরা না খেয়ে মারা গিয়েছে এ কথা এ প্রজন্ম না জানলেও বাংলার কোটি কোটি মানুষ জানে।
সব কিছুর পর গল্পটি ভাল লেগেছে এবং ৭৪ কে আর একবার মনে করিয়ে দিয়েছে। লেখক কে ধন্যবাদ।
@মামুন ভাই,
গ্রামে বিদ্যুৎ চলে আসায় ভুতেরা পালাচ্ছে 🙂 । হ্যা, অন্ধকারের সাথে এসব ভুত কুসংস্কার এগুলোর বেশ সম্পর্ক রয়েছে। আর সবচেয়ে বড় ভুতের নাম হলো ইশ্বর ভুত। এটা বিদ্যুতের আলো দিয়ে তাড়ানো যাবে না, প্রয়োজন আলোকিত মানসিকতার। আপনাকে দেখে ভাল লাগলো। ধন্যবাদ।
@সৈকত চৌধুরী,
প্রয়োজন আলোকিত মানসিকতার 😀
আসলে আলোকিত মানসিকতার জন্য তো সাংস্কৃতিক আন্দোলন দরকার যা মুক্ত-মনা করছে।কিন্তু সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্রগামী শিক্ষিত শ্রেনীটি তো এখন শুধু একদিকে ধর্মের আফিম খেয়ে নেশায় বুদ্ বুদ্ হয়ে আছে আর অন্য দিকে বিজ্ঞান ও প্রযক্তি্র সকল মিষ্টি রসের ফল প্রতিনিয়ত ভোগ করে যাচ্ছে।এরা এমনই মধ্য যুগীয় ধ্যান-ধারনায় বসবাস করছে একবারের জন্যও চোখ-কান খুলে জীবন ও জগতকে দেখতে বা চিন্তা করতে রাজী হয় না।এমনই মোটা লোহা তারের বেড়া দিয়ে তাদের চিন্তায় ও দেখায় সব কিছুকে বদ্ধ করে রেখেছে।আর সব কিছুর পরে তো রাষ্ট্র নামক নারকীয় যন্ত্রটি তাদের পিছনে সব সময় বসে আছেই।তাই মনে হয় ধর্মের অপবিশ্বাসটি আরো অনেক অনেক বছর মানুষের মাথা ও জীবন থেকে সহজে চলে যাবে না।ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের দ্বন্ধ মনে হয় আরো অনেক অনেক বছর এমন কি শত শত bchor রয়ে যাবে।দেখো না গত ৫/৭ হাজার বছর কেমন করে ধর্ম এখনো টিকে আছে।তাই বিজ্ঞান ও ধর্মের সংঘাত মনে হয় চিরকাল অনিবার্য।
তোমাকে ফেস বুকে মেইল এর উত্তর দিয়েছিলাম।আশা করি ভালো আছো।
@সৈকত চৌধুরী,
খুবই সত্য কথা। আজকাল আর গ্রামদেশেও জ্বীন ভুতে ভর করার কাহিনী শোনা যায় না। বিজলী বাতিকে তারা ভয় পায় এ ধরনের কথাবার্তা আলেম শ্রেনীর লোকদের থেকেও শুনেছি।
তবে আগেও বলেছি, এ জাতীয় অবনেক প্যারানর্মাল ব্যাপার স্যাপার আছে যেগুলির সলিড বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এখনো নেই, মিথ্যা বলে সহজে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
সাইকিক ডিটেক্টিভ সম্পর্কে আপনাদের ধারনা কি? পুরোপুরি ভাওতা বলা কি যায়? বলা যেত, কিন্তু আমেরিকার মত দেশের পুলিশ বিভাগ যদি অপারাধী বের করতে সাইকিকদের সাহায্য নেয় এবং সার্টিফাই করে যে তাদের বলে দেওয়া সূত্র থেকেই অপরাধী ধরা হয়েছে তাহলে কি বলা যায়?
এখানে কোর্ট টিভিতে একটা সিরিজই হয় সাইকিক ডিটেক্টিভ নামে, তাতে দেখানো হয় কিভাবে আলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন সাইকিক রা পুলিশকে অনেক দিনের অমিমাংসিত খুনের ব্যাপারে নির্ভুল তথ্য দিয়ে সাহায্য করছে। একে আপাতত অলৌকিক না বলে আর কি বলা যায়?
@আদিল ভাই ,
এসব ব্যাপার নিয়ে ভালো কাজ করেছেন কলকাতার প্রবীর ঘোষ। তাঁর ‘অলৌকিক নয় লৌকিক'(১ম খণ্ড-৫ম খণ্ড) এ খুব সুন্দর ভাবে এগুলোর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কষ্ট করে যদি পড়তেন।
আর অলৌকিকতার কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অনেকে কেনো এ ধরণের ঘটনার সম্মুখিন হচ্ছেন তা বোঝার জন্য আমাদেরকে সাইকোলজি বোঝতে হবে তার সাথে হতে হবে যুক্তিবাদী। একটা বিষয় আমাদের খেয়াল রাখা উচিত-এই যে আমি দেখছি বা শোনছি তা কিন্তু মস্তিষ্কের দ্বারাই। এজন্যই আমরা চোখ দিয়ে না দেখেও স্বপ্ন দেখতে পাই। আমাদের মস্তিষ্ক দেখা বা শোনার অনুভূতি গ্রহণ না করলে আমরা কিন্তু দেখতে বা শোনতে পাব না। অপরদিকে বিভিন্ন কারণে আমাদের ভুল স্মৃতি ও ভুল পর্যবেক্ষণের ঘটনাও ঘটে।
মাঝে মাঝে শোনা যায় অনেকের মধ্যে মাত্র একজন অলৌকিক কিছু দেখেছেন।কোনো কিছু দেখার সময় আলো ঐ বস্তুতে প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখ দিয়ে এ অনুভূতি মস্তিষ্কে পৌছায়।তাই তিনি যদি তা দেখে তাকেন তবে সকলেই তা দেখতে পারার কথা । নইলে আমরা ধরে লোকটা প্রতারক অথবা ওর মানসিক সমস্যা রয়েছে।
আপনি একটু খেয়াল করলে দেখবেন যারা কুসংস্কারাচ্ছন্ন বা দুর্বল মানসিকতার অধিকারী তারাই সাধারণত এধরণের ঘটণার শিকার হন।
মানুষ মরে গেলে কেনো ভুত হবে আর কোন দুঃখেই বা মানুষের অনিষ্ট করবে। গাছগাছড়া বা স্যাতস্যাতে অন্ধকার জায়গা ছাড়া কি জ্বীন-ভুতদের যাবার মত আর কোনো জায়গা নেই? আলোতে ভুত আসলে সমস্যা কোথায়?
পরিমল,
মুক্তমনায় স্বাগতম। আশা করি আমাদের এখানে লিখতে পেরে আপনার ভাল লাগছে।
এডমিনের পক্ষ থেকে কয়েকটি অনুরোধ-
একদিনে একটির বেশি লেখা ব্লগে পোস্ট করবেন না। এমনিতে কোন রেস্ট্রিকশন নেই, কিন্তু ব্লগের বৈচিত্র আনতে ব্লগারদের আমরা এটি মেনে চলতে অনুরোধ করি। আর তা ছাড়া একটি লেখা লিখলে সেটা নিয়ে আলোচনা জমতেও একটু সময় লাগে, এর মাঝে একই লেখকের আরেকটি পোস্ট এসে পড়লে হয়ত আপনার আগের লেখাটি অন্তরালেই চলে যাবে, সেটা হয়ত আপনার কাম্য হবে না। কাজেই ধৈর্য্য ধরে একদিন অপেক্ষা করুন দ্বিতীয় লেখাটি পোস্ট করা আগে।
আর দ্বিতীয়তঃ, লেখা পোস্ট করার সময় সঠিক ক্যাটাগরি (বা বিভাগ) নির্বাচন করুন। আপনি এই লেখাটি পোস্ট করার সময়, আবৃত্তি, কবিতা, সঙ্গীত, মুক্তমনা সহ সব কিছুই নির্বাচন করেছিলেন। আপনার এ লেখাটি যেহেতু গল্প, সেহেতু ‘গল্প’ নির্বাচন করাই বোধ হয় সঠিক। এটা এখন ঠিক করে দেয়া হয়েছে।
আবারো, মুক্তমনায় আপনাকে স্বাগতম। লিখতে থাকুন উচ্ছ্বাসের সাথে।
ভ্রান্ত প্রত্যক্ষন, ভ্রান্ত শ্রবন এগুলি মনোবিজ্ঞানের নিয়মিত পাঠ। এধরনের অভিজ্ঞতা কম-বেশী সবার জীবনেই হয়ে থাকে। বিজ্ঞানমনস্ক ব্যাক্তি আর কুসংস্কারাচ্ছন্ন ব্যাক্তির ক্ষেত্রে একই ঘটনার প্রভাব ভিন্ন হয়ে থাকে এই যা।
তবে গল্প ভাল লেগেছে। লেখনি, বুনন, নাটকিয়তা সব চমৎকার হয়েছে।
@আতিক ভাই ,
আপনাকে জ্ঞান দিতে গিয়ে আকাশ ভাইয়ের কাছে বকুনি খেলাম। পূর্বের লেখায় ‘জবাব’ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখানে দিতে বাধ্য হলাম।
আপনি বলেছেন- মানবতাবাদের বিরুদ্ধে যাবার মত উপাদান আস্তিকতার মধ্যে যেমন আছে তেমন আছে নাস্তিকতার মধ্যেও।
নাস্তিকতা বলে- ইশ্বরের অস্তিত্বের স্বপক্ষে কোনো গ্রহণযোগ্য যুক্তি নেই। ইশ্বরে বিশ্বাসহীনতা হলো নাস্তিকতা।
তাই নাস্তিকতার মধ্যে মানবতার বিরুদ্ধে যাবার মত উপাদান খোঁজা কি হাস্যকর নয়? হ্যা, আপনি কমিউনিজম এমনকি হিউম্যানিজমের মধ্যেও হয়তো মানবতার বিরুদ্ধে যাবার মত উপাদান খুঁজে পেতে পারেন তবে কোনো অবস্থাতেই নাস্তিকতার মধ্যে নয়।
নাস্তিকতার কোথায় আছে এরকম করতে হবে? একজন নাস্তিক একটি অপরাধ করলে তার জন্য নাস্তিকতাকে দায়ী করবেন কেন? এর সটিক উৎস আপনাকে খোঁজে বের করতে হবে। আপনি বোধহয় এবার আমার সাথে একমত হবেন। আমি নাস্তিকতাকে দায়ী করতে এজন্যই ইতস্তত করছি কারণ নাস্তিকতা তো ইশ্বর ও ধর্মে বিশ্বাসীনতা যার সাথে কোনো অপরাধ প্রবণতার সম্পর্ক খোঁজা অবান্তর।
নাস্তিকরা কি করলো আর আস্তিকরা কি করলো তা নিয়ে বিতর্ক না করে বরং কোনটি গ্রহণযোগ্য এবং মানুষের জন্য ইতিবাচক তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে।
@সৈকত চৌধুরী,
আমার কিন্তু এখন সত্যি সত্যি মনে হচ্ছে, আমার নাস্তিকতা সম্পর্কে প্রাথমিক বা মাধ্যমিক কোন ধারনাই নেই। যা আছে এর পুরোটাই হাস্যকর। আপনি যদি দয়া করে, নাস্তিকতা,মানবতা, নৈ্তিকতা ও নাস্তিকদের নৈ্তিকতার উৎস সম্পর্কে একটা পোষ্ট দেন তবে আমার মত আরো যারা আছেন তাদের খুব উপকার হতো।
এই পোষ্ট এনিয়ে আমি আর কোন আলোচনা করতে চাই না। ধন্যবাদ।।
ভুত প্রেতে বিশ্বাস সূস্থ মাথায় করি বলাও তো লজ্জার ব্যাপার। মুশকিল হল মাঝে মাঝে ভয় পাই ঠিকই।
তবে এ জাতীয় ব্যক্তিগত বাস্তব অভিজ্ঞতা এত বেশী যে মনে হয় কিছু একটা ব্যাপার থাকতে পারে যা হয়ত ভবিষ্যতে কোনদিন জানা যেতে পারে।
@আদিল মাহমুদ,
ভূত-প্রেতে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য আমার এই পোস্ট নয়।
আমার এই লেখায় মুক্তমনার কোনো সদস্য নৈতিকভাবে আহত হয়ে থাকলে আমি ক্ষমা প্রার্থী।
সেদিন আমি আষাঢ়ে গল্পের একটা প্লটের মুখোমুখি হয়েছিলাম মাত্র। কারন, আমি নিজেও হাজিরনকে চিনতাম না। চিনতো আমার সেদিনের সঙ্গী বাবন ব্রহ্ম। কাজেই ওই হাজিরন অনাহারে থেকে মরেছিলো কিনা তাও আমার জানাছিলো না।
@পরিমল মজুমদার,
আমার মনে হয় না কেউ এই গল্পে আহত হবেন বলে। তবে আশা করছি কেউ হয়ত তাদের মতামত জানাবেন। এ বিষয়ে এখানে কখনো কথা হয়নি। এ জাতীয় ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিভংগী জানতে আগ্রহী।
আমি মনে করি আমাদের জানা শোনার বাইরে এখনো অনেক কিছু আছে যা আমরা বা বিজ্ঞান সবসময় ব্যাখ্যা করতে পারি না, করতে পারলে তো বিজ্ঞান সেখানেই থেমে যেত।
আপনার বা আর কারো এই জাতীয় অভিজ্ঞতা আর থাকলে লিখে ফেলুন। ভিন্ন স্বাদের লেখা সবসময়ই আকর্ষনীয়।
@আদিল মাহমুদ,
সুন্দর বলেছেন 🙂 । আসলে আমরা চোখ দিয়ে নয় মস্তিষ্ক দিয়ে দেখে থাকি তাই এত বিভ্রাট।
@সৈকত চৌধুরী,
ভুত প্রেত বলে আমরা যাকে সাদা চোখে দেখে থাকি আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস একদিন তারও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নিশ্চিতভাবেই জানা যাবে।
কিছু হাইপোথিসিস প্যারা সাইকোলজিষ্টরা দেন; মূল ভিত্তি হল কোন বিশেষ বিশেষ অবস্থায় মস্তিষ্ক আমাদের অস্বাভাবিক কিছি জিনিস দেখায়। যেমনঃ, জিয়োলজিক্যাল ফল্ট এলাকায় ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফীল্ডের ফ্লাকচুয়েশন। তবে বলাই বাহুল্য, কোনটি নিশ্চিত নয়। বিপক্ষেও যুক্তি আছে।
আমি নিজেও ভূত-প্রেত কিংবা অন্য কিছুতে বিশ্বাস করি না। এমনকি ঈশ্বরেও না।
শুধু অন্ধকারে নয়, দিবালোকেও সব ক্ষুধার্ত মানুষের চেহারা একই রকম দেখা য়ায়। হয়তো মনের কোনো অপরাধ বোধ সেদিন আমাদের সামনে হাজিরন হয়ে দেখা দিয়েছিলো।
@ আদিল মাহমুদ
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে..
@পরিমল মজুমদার,
ভালো লাগলো লেখাটা। আমার পুরোন একটা অভিজ্ঞতা , মুক্ত মনা কতৃপক্ষ অনুগ্রহ করে ছাপিয়েছিলেন , সেটা সহভাগীতা করতে ইচ্ছে হোল।
http://blog.mukto-mona.com/?p=569
রাত বিরেতে ভুতের প্রেত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা ভালই লাগল। এ ধরনের গল্পের মজাই আলাদা। লেখককে ধণ্যবাদ।
তবে অন্ধকারে নিস্তেজ টর্চের আলোয় অন্য কোন ক্ষুদার্তকেও হাজিরন ভেবে ভুল হতে পারে। সেসময় ক্ষুদার্ত লোকের তো অভাব ছিল না।
মুক্তমণার নিয়মিত সদস্যরা ভুত আত্মায় বিশ্বাস করবেন এটা কোনদিন মনে হয় সম্ভব নয়। তবে এই জাতীয় গল্প এত শোনা যায় যে সবাই ভুল দেখেছে, বানিয়ে বলেছে, হ্যালুসিনশেন হয়েছে শুনতে জানি কেমন লাগে। এ জাতীয় অভিজ্ঞতা অতি বিখ্যাত লোকদেরও আছে। আমি এমন দুয়েকজনকে জানি যারা কোনদিন বানিয়ে মিথ্যা গল্প ফাদবেন না।
দেখি অন্যরা কি বলেন।