ক্ষিদে
ক্যাথেরীনা রোজারিও কেয়া
আমি জানি না দুঃখের কী মাতৃভাষা
ভালবাসার কী মাতৃভাষা
বেদনার কী মাতৃভাষা
যুদ্ধের কী মাতৃভাষা
শুধু আমি জানি আমি একটা মানুষ
আর পৃথিবীতে এখনো আমার মাতৃভাষা ক্ষুধা।
– আবুল হাসান
ক’দিন ধরে বিভিন্ন পত্রিকায় আমাদের দেশে দারিদ্র বিমোচন নিয়ে লেখা পড়তে পড়তে কিছু খন্ড চিত্র মনে এলো।
আমার দেশে এখনো ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার একজন মহিলা, যিনি এক থালা ভাতের জন্যে কামলা খাটেন তিনি দিনের শেষে ভাতের থালার সামনে বসে চিন্তা করেন, ভাত কটা কে খাবে আজ? তার অসুস্থ শ্বশুর, যাকে তিনি রোজ ভিক্ষে করার জন্যে রাস্তার মোড়ে শুইয়ে দিয়ে আসেন? নাকি তার ১২/১৩ বছরের ছেলে, যে ক্ষিদের কষ্টে তাড়স্বরে চেঁচাচ্ছে, নাকি নিজে খাবেন যাতে আগামী কাল কাজে যেতে পারেন?
একবার জয়পুরহাটের, পাঁচবিবি উপজেলার আতাপুরের ভেতরে উঁচাই গ্রামে দেখেছি বাচ্চারা নিজেদের চেয়ে ভারী বই নিয়ে লাইন করে হেঁটে স্কুলে যাচ্ছে। লাইনে পিছিয়ে পড়া এক জন বাচ্চাকে আমার সাথের জন বল্লো” ওই হাটস না? বাত খাস নাই?” বাচ্চাটা অবলীলায় বলেছিলো “ উহু-” চাউল নাই”। বুঝেছিলাম ওর ওই ধামার মত পেট জুড়ে শুধু কৃমিই নয়, পেট ভরা ক্ষিদেও আছে।
কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুরে কার্তিকের অনটনে মানুষকে মাটি খেতে দেখেছি আমি।
কুদুবদিয়ায় ঝড়ের চার দিন পরে মা ছেলেকে বানের জলে ভেসে আসা এক হাড়ি পঁচা বাসী ভাতের জন্যে পরষ্পরের সঙ্গে কাড়াকাড়ি করতে দেখেছি।
শোনা যায় পদ্মার মাঝি নৌকোতে বসে যে ইলিশ রাঁধেন তার স্বাদ নাকি অপুর্ব। একবার পদ্মার বুকে মাঝির ছেলেটাকে আধ ঘন্টা ধরে কাদঁতে দেখে জানতে চেয়েছিলাম “ কাঁদে কেন?’ মাঝি বললেন “চাউল চায়”। আমার অনুরোধে বাচ্চাটাকে সোনার কুচির মত মুল্যবান এক মুঠো চাল দেয়া হল। বাচ্চাটাকে স্বর্গীয় আনন্দে চোখ বুজে সেই শুকনো চাল চিবোতে দেখেছি অনেকক্ষণ ধরে। ভাত আর ইলিশের আশা তো দূরাশা!
আমার কর্মস্থল সিলেটের আখালিয়ায় ছুটির দিনে জানালা খুলে দূরে তিনটে ঝর্না দেখতে দেখতে লেখাপড়া করতাম। একবার চারতলার ওপর থেকে দেখলাম একজন রিক্সচালক সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কোন যাত্রী পেলেন না। বিকেলে বাড়ী যাবার আগে সামনের জলা থেকে কিছু কচু তুলে নিলেন। আমার অপরিপক্ক বোধ বলেছিল -যার হাতে শ্রমের হাতিয়ার থাকে সে কেনো কুড়িয়ে খাবে? পরে বুঝেছি ক্ষিদে কোনো আবেগ, কোন যুক্তি মানে না।
যারা দেশ পরিচালনায় থাকেন তারা কখনো ক্ষিদের কষ্ট বোধ করি দেখেননি। তাই দারিদ্র বিমোচন শুধু প্রজেক্ট থেকে প্রজেক্টেই সীমাবদ্ধ থাকে। আমার মতো মধ্যবিত্তের কষ্ট এখানেই -উপলব্ধি করি কিন্তু পরিবর্তন করতে পারি না কিছুই। আর যারা পরিবর্তন করতে পারেন তারা ক্ষিদের অস্তিত্বই স্বীকার করেন না। মুষ্টি ভিক্ষেয় দারিদ্র দূর হবার কথা নয়। দুই নেত্রী এক মঞ্চে এলেই বাংলাদেশের মানুষের ক্ষিদের যন্ত্রণা উবে যাবে এটা মানতে কষ্ট হচ্ছে।
১৯৯৬ সালে বেলজিয়ামের ইইসি ভবনে বাংলাদেশের দারিদ্র আর খাদ্য বন্টনের ওপর একটা সেমিনারে গিয়েছিলাম। বিশাল সব বক্তার মাঝে আমার কাঙ্গাল উপস্থিতি নিয়ে বিব্রত বোধ না করেই বলেছিলাম আমার দেখা ক্ষিদের গল্প। দেশে ফিরেছিলাম আশা আর স্বপ্ন নিয়ে। গাদা খানেক সই করেছিলাম এ কাগজে সে কাগজে। বলা হয়েছিল জনমত তৈরী করার সময় এটা। তার পর কত অমাবস্যা পুর্নিমা চলে গেল -সেই আয়োজকদের থেকে কোন পরিকল্পনা পেলো না বাংলাদেশ। এরকম হাজারো সেমিনার হয় তাতে আমার মত হাজারো মানুষ উপস্থিত হয়। পথই মুখ্য হয়ে ওঠে আর মোক্ষ হয়ে যায় গৌণ।
ইদানীং তেলের মুল্য বৃদ্ধি খাদ্যের মুল্যবৃদ্ধির কারণে সব মিলিয়ে ৭.৫ মিলিয়ন নতুন মানুষ যোগ দিয়েছে ক্ষুধাতুর মানুষের কাতারে। আমাদের দেশে পাঁচ বছরের শিশুদের মধ্যে অর্ধেক ভুগছে চরম পুষ্টিহীনতায়। স্বাধীনতার পর থেকে কত না কর্মসুচী নেয়া হয়েছে “সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা ” বাংলাদেশে মানুষের মুখে দুবেলা সেই শস্য তুলে দিতে।
জানি আমার দেশের মানুষের ভাগ্য ই শুধু নয় পেটের ভাত ও নিয়ন্ত্রণ করে আন্তর্জাতিক রাজনীতি, কিন্তু ক্ষিদে তো রাজনীতি বোঝে না। মানতে কষ্ট হয় আমাদের নেতা–নেত্রীরা রাজনীতি বোঝেন, ক্ষিদে বোঝেন না। সেই আন্তর্জাতিক খাদ্য রাজনীতির ধামা না ধরে একটা কোন সরকার এলো না বাংলাদেশে যে কিনা বলতে পারে, আগে দেশের মানুষকে পেট ভরে খেতে দেই তার পর অন্য কথা।
ফরিদ তথ্য সূত্র কি?
পরিবেশের ক্ষতি না করে যদি চাষ আবাদ করা হয় ্বা যাকে আমরা সাসটেনেবল কৃষি বলি-সেটা হলে কিন্ত আড়াই বিলিয়ানের বেশী লোক খেতে পাবে না। পৃথিবী যত খাওয়াতে পারে ( উচ্চ ফলন বীজ দিয়ে পরিবেশকে ধ্বংশ করে না, সাসতটেনেবল কৃষিতে), তার দ্বিগুন লোক এখন পৃথিবীর বাসিন্দা। তাদের অ্ধিকাংশই এখন সাউথ এশিয়াতে।
@বিপ্লব পাল,
আগে প্রায়ই শুনতাম পশ্চীমা বিশ্বের পুজিবাদীরা গরীব দেশে খাদ্য দেবে না, কিন্তু দাম চড়া রাখার জন্য জাহাজ ভর্তি করে খাদ্য শস্য মাঝ সাগরে ফেলে দিয়ে আসে।
এলকোহল গ্যাসোলিনের সাথে মিশানো শুরু করার পর অনেকে কড়াভাবে বিরোধীতা করছেন এই বলে যেখানে কোটি কোটি মানুষ খেতে পায় না সেখানে খাদ্যশস্য দিয়ে এলকোহল বানিয়ে গাড়ি চালাবার যৌক্তিকতা কতটুকু?
খাদ্যের বিকল্প সোর্সের দিকে তেমন মনোযোগ এখনো দেওয়া হচ্ছে বলে মনে হয় না। যেমনঃ সাগর হতে পারে ভাল বিকল্প সোর্স, তারও তেমন ইউটিলাইজেশন হচ্ছে না।
@আদিল মাহমুদ,
আপনি আমার আগের এই লেখাটা পড়তে পারেন।
খুবই কষ্ট লাগল।বাংলাদেশের অবস্থা যে একটু হলেও ভালোর দিকে এটাই সান্ত্বনা।ভেবে ভেবে কষ্ট বাড়িয়ে লাভ নেই।কারণ যারা বদলাতে পারে ,তারা ভাবে না।তিন বেলা পেট পুরে খেতে পাচ্ছি এই অনেক ভাগ্য।ক্ষুধামুক্ত বিশ্বও বোধহয় কোনদিনই আসবে না।রক্তাশ্রু বিসর্জন দিয়েও সবার জন্য অন্ন আসবে না।তবে যতটুকু ভালো করা যায়,সেটুকুই জীবনের লক্ষ্য।আজকাল কেন যেন আল্ব্যের কামুর কথাগুলো সত্য বলে মনে হয়।
@ফরিদ আহমেদ,
সহমত। তবে কি জানেন, আপনার মত আমিও আশান্বিত হতে চাই কিন্তু আশংকিত হই এই দেখে যে গ্লোবাল হাঙ্গার ইন্ডেক্সও কিন্তু গ্লোবাল রাজনীতির উর্ধ্বে নয়। এরা যে নিয়ামকগুলোকে বেছে নিয়েছে উপাত্ত সংগ্রহের জন্যে তা’ হলো শিশু অপুষ্টি, শিশু মৃত্যুর হার, ক্যালোরি গ্রহনের অনুপাত। ক্ষিদে কি উপাত্ত, সমীক্ষা দিয়ে মাপা সম্ভব? এরা খাদ্য ঘাটতিকে তুলনায় এনেছে কিন্তু অর্থনৈতিক ঘাটতিকে তুলনা করেনি। আইএমএফ আবার তাদের সমীক্ষায় অন্য কিছুকে নিয়ামক হিসেবে ব্যবহার করেছে।
ক্ষিদের বিষয়ে আপাত, তুলনামূলক শব্দগুলো ব্যবহার করা যায় কিনা জানি না, তাই বোধ হয় কোন দেশের সঙ্গে তুলনা চলে না। আমার মনে হয় এটা একক অনুভূতি, এর সমষ্টিগত রূপ দিয়ে এর বিচার চলবে না। দুটো গাছ মরে গেলো কিন্ত অরণ্য ভাল আছে, এটা কি যুক্তিসঙ্গত কথা? যেদিন অরণ্য ভালো থাকবে তখনই হবে আসল জয়।
ক্ষিদে নিয়ে ছোট ছোট কিছু খন্ড চিত্র আঁকার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ক্ষুধা, দারিদ্র এবং তাতে আন্তর্জাতিক রাজনীতির ভুমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে চমৎকার একটি আলোচনার দরজা খুলে দেবার প্রচেষ্টা নিয়েছে ক্যাথেরীনা।
গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় চালের দাম যখন আকাশচুম্বী, চারিদিকে শুধু হাহাকার আর হাহাকার, বিডিআরের ন্যায্যমূল্যের চালের দোকানের সামনে অগুণতি মানুষের ভীড়, তখন আমি আকালের শব্দ শুনি নামে এই লেখাটি লিখেছিলাম।
উপোসী মানুষের সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান পৃথিবীতে তৃতীয়। আমাদের চেয়ে বেশি উপোসী মানুষ আছে শুধু ভারত আর চীনে।
পৃথিবীর সাড়ে ছয় বিলিওন লোকের মধ্যে চার বিলিয়নই বসবাস করে দারিদ্রসীমার নীচে বা এর আশেপাশে। প্রায় এক বিলিয়ন লোক অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটায়। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে পৃথিবী ব্যাপী যে পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয় তা দিয়ে বারো বিলিয়ন লোককেও বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। কী আশচর্য! তাই না? খাদ্য প্রাচুর্যের এই পৃথিবীতে প্রচুর সংখ্যক মানুষকে পরিবার পরিজন নিয়ে উপোস থাকতে হয়। উপোসের অন্যতম কারণ তাই খাদ্যাভাব নয়, বরং খাদ্য কিনতে না পারার অসামর্থ অর্থাৎ দারিদ্র।
সারা পৃথিবী জুড়ে যেখানে প্রতিদিন নয় মিলিওনের চেয়েও বেশি লোক ক্ষিদের জ্বালায় বা অপুষ্টিতে ভুগে মারা যাচ্ছে সেখানে উন্নত বিশ্বের এক বিলিওনেরও বেশি লোক অতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণের ফলে মেদ বাহুল্যতায় (Obesity) ভুগছে। ব্রিটেনের লোকজন প্রতিবছর খাদ্য নষ্ট করে সাড়ে ছয় মিলিওন টন। লোকজন যে পরিমাণ খাবার কেনে তার তিনভাগের একভাগই ডাস্টবীনে ফেলে দেয়। এ তথ্য শুধু ব্রিটেনের জন্যই প্রযোজ্য নয়। সমস্ত উন্নত বিশ্বেই একই চিত্র বিরাজমান।
আমেরিকার প্রতিটি পরিবার তাদের গ্রোসারির ১৪ শতাংশ নিক্ষেপ করে ডাস্টবীনে। ফাস্ট ফুডের দোকানগুলোতে খাবার ফেলে দেবার হার ৩০-৪০ শতাংশ। প্রতি বছর ৭৫ বিলিওন ডলার মূল্যের খাবার অপচয় করে আমেরিকানরা।
উন্নত বিশ্ব না হয় তাদের বিপুল প্রাচুর্যের কারণে খাদ্য অপচয় করে থাকে। যাদের নেই তারাও কিন্তু কম যায় না এই ধরনের অপচয়ে। ভারতে প্রতি বছর পাঁচশো আশি মিলিওন রুপী সমমূল্যের খাবার নষ্ট হয়। এই অকারণ বিলাসিতার ফলে ভারতে তৈরি হচ্ছে খাদ্যের কৃত্রিম সংকট, বর্ধিত চাহিদা এবং এর অতি উচ্চ মূল্য। সুইটজারল্যান্ডের আশিভাগ গম রপ্তানিকারক এই দেশটির দুইশো মিলিওন লোক ভোগে অপুষ্টিতে। ক্ষুধার্ত আর দরিদ্র মানুষের ভারে ভারাক্রান্ত দেশের সারিতে চার নম্বরে গিয়ে দাঁড়ায় ভারত তার নিজের দোষেই।
খাদ্যের আকাল সত্ত্বেও খাদ্য অপচয়ে কি আমরাও কম যাই? আমার কাছে এই মুহুর্তে সঠিক তথ্য নেই। কাজেই দিতে পারছি না তবে খালি চোখেই যে অপচয় দেখেছি সরকারী লোকজন এবং ধনী মানুষদের, তাতে আমরাও যে খুব একটা পিছিয়ে নেই সেকথা বলে দেয়া যায় নিঃসন্দেহেই। খালি রমজান মাসেই খাবারের যে পরিমাণ অপচয় হয় সেটা বন্ধ করতে পারলেই অর্ধেক অপচয় বন্ধ হয়ে যাবার কথা।
চ্যালেঞ্জ অব হাংগার রিপোর্টে তেত্রিশটা দেশের দারিদ্রকে ‘এলার্মিং’ (গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (GHI) স্কোর ২০ থেকে ২৯.৯ পর্যন্ত) এবং ‘ এক্সট্রিমলি এলার্মিং’ (হাঙ্গার ইনডেক্স স্কোর ৩০ এর নীচে), হিসাবে চিহ্নিত করেছে। আরো বত্রিশটা দেশের দারিদ্রকে ‘সিরিয়াস’ পরিস্থিতি হিসাবে ব্রাকেটবন্দী করেছে। বাংলাদেশের অবস্থান এলার্মিং কাতারে।
তবে দারিদ্রের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য সুখবর নিয়ে এসেছে ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি ইন্সটিট্যুট (IFPRI)। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (GHI) ১৯৯০ সালে যা ছিল তার থেকে অনেক উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশের GHI স্কোর ছিল ৩৫.৯। অর্থাৎ বাংলাদেশের অবস্থান ছিল এক্সট্রিমলি এলার্মিং ক্যাটাগরিতে। বর্তমানে বাংলাদেশের GHI স্কোর হচ্ছে ২৪.৭। এক্সট্রিমলি এলার্মিং ক্যাটাগরি থেকে উঠে এসেছে এলার্মিং ক্যাটাগরিতে। ক্ষুধার সাথে লড়াইয়ে বাংলাদেশের সাফল্যের হার ভারত এবং নেপালের চেয়েও বেশি।
তারপরও ক্ষুধামুক্ত দেশ হবার পথে দূর দিগন্তের আড়ালেই রয়ে গেছে বাংলাদেশ।
ছোট পরিসরের লেখায় একটা বিশাল সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন কেয়া, হৃদয়-নিংড়ানো আবেগ দিয়ে। এ সমস্যার সাথে আমার মতো বাংলাদেশীদের পরিচয় আজন্ম। তবু কেয়ার লেখা পড়ে আবারো মন খারাপ হলো।
কিন্তু রাজনীতি ঠিকই ক্ষিদেকে বোঝে এবং কাজে লাগায় নির্মমতার সাথে।
:yes: খুবই খাঁটি কথা ইরতিশাদ ভাই।
@ইরতিশাদ, ধর্মও আসলেই ক্ষিদেকেই কাজে লাগায়। আবার ক্ষিদেই পারে ধর্মের কফিনে পেরেক পুঁততে।
ধন্যবাদ। আচ্ছা, বিষয়টি নিয়ে ভেবে আমি কোনো সমাধানে পৌছতে পারি নি। কিছু মানুষকি সবসময়ই ক্ষিদের জ্বালা নিয়ে বেচে থাকবে অথবা ক্ষিদের জ্বালায় প্রাণ বিসর্জন দিবে?
@সৈকত চৌধুরী,
গত সপ্তায় বিগত তত্ত্বাবধায় সরকারের এক সাবেক উপদেষ্টা বলছিলেন, ‘ দরিদ্র মানুষ আছে বাংলাদেশে, অস্বীকার করে লাভ নেই কিন্তু যে নীরব পরিবর্তন হয়েছে যা নিয়ে আমরা কেউ কথা বলছি না তা হলো দরিদ্রদের মধ্যে পার্সোনালিটি গ্রো করেছে, তাদের এখন একটা আলাদা ব্যক্তিত্ব আছে’। যার পাতে ভাত নেই সে ব্যক্তিত্ব ধুয়ে জল খেতে রাজী কিনা কে জানে। ব্যক্তিত্ব চিবিয়ে খেলে পেটের ক্ষিদে দূর হয় কিনা তাও জানা নেই। নজরুল সেই কবে ‘হে দারিদ্র তুমি মোরে করেছো মহান’ বলেছিলেন আর আজকের অর্থনীতিবিদরা নজরুলের আই এম এফ ওয়ার্ল্ড ব্যাংকীয় ভার্সনে এ কথা বলছেন।
“সুধার দেশের মানুষ কেন ক্ষুধায় মরে রে
রাণীর ছেলে মিথ্যে কেন ভিক্ষে করে রে।”
আমরা সেই রাণীর সন্তান , কারণ সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি। তারপরও আমারা না খেয়ে থাকি আমাদের মাথামোটা, স্বার্থপর নীতি নির্ধারক ও আমলাতন্ত্রের কূট কৌশলের জন্য। ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিক্ষের থালাটা হয়তো প্রযুক্তিতে বানানো হবে। আর মানুষগুলো ( মানুষ বলতে আমি আপামর জনগোষ্ঠিকে বুঝাচ্ছি) সেই নুন আনতে পান্তা ফুরায় এর অবস্থানেই থেকে যাবে।