আমি এই ব্লগে আজ যা লিখব-যাদের জন্যে লিখব, তাদের অনেকেই এখন হয়ত বুঝবে না। হয়ত তাদের সারাটা ব্যার্থজীবনে ও বুঝে উঠবে না। তবুও যদি, এই লেখা তাদের মনে নতুন দিশার জন্ম দিতে পারে-মানসিক অন্ধকারে একটুও ফুটে ওঠে আলো-আমি বাধিত হব।
A.
বাঙালী কবে থেকে বামপন্থী? আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের দুটো পর্ব। প্রথমে জাতিয়তবাদি বিপ্লবী যেমন ক্ষুদিরামরা ছিলেন ধর্মীয় জাতিয়তাবাদি। গীতা হাতে দেশ স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতেন। সেটা ছিল এক অর্থে ধর্মীয় প্রতিবাদি আন্দোলন। তবে আল-কায়দার পরিচালিত ইসলামিক প্রতিবাদি আন্দোলনের সাথে
আমাদের ধর্মীয় প্রতিবাদি আন্দোলনের সব থেকে বড় পার্থক্য হচ্ছে-আন্দোলনটা বৃটিশদের তাড়াবার জন্যে হলেও, বিপ্লবীরা বৃটিশ ধর্ম নিরপেক্ষ রাজনৈতিক ব্যাবস্থা এবং সমাজেই আ রাখতেন বেশী। সনাতন হিন্দু সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্যে, তারা বিপ্লবী হন নি। আল-কায়দা পুরো উলটো। তারা পাশ্চাত্যের বিরুদ্ধেই শুধু যুদ্ধ করে না-পাশ্চাত্য সমাজব্যাবস্থার বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করে।
এটা চলেছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত। ১৯২০ সাল থেকেই মানবেন্দ্র রায় বা চাচা মুজফরের চেষ্টায়, বলশেভিক বিপ্লবের ঢেউ এবং আদর্শ ভারতেও এল। এরা প্রথম জীবনে সবাই ধর্মীয় প্রতিবাদি আন্দোলনেরই শরিক ছিলেন। মূলত জমিদারদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলন হিসাবে কৃষক-প্রজা পার্টি এবং ভারতীয় কমিনিউস্ট পার্টির জন্মের মধ্যে দিয়ে বাঙালীর বামপন্থী হওয়া শুরু।
এর পরে ১৯৭০-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত র্যাডিক্যাল কমিনিউস্টরা দুই বাংলা দাপিয়ে বেড়িয়েছে। পেটের তীব্র ক্ষুদায় পশ্চিম বঙ্গে যেমন নক্সল পন্থীরা তেমনই বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের দাবিদার কর্নেল তাহেরের দলবল রাষ্ট্র যন্ত্রকে ভীষন ভাবেই চ্যালেঞ্জের সামনে ফেলে। কিন্ত পেটের ক্ষিদের সাথে রোম্যান্টিসিজম মেশানো এই অর্ধ-বিপ্লবীদের সব চেষ্টা ব্যার্থ হয়। মিলিটারি শাসনে বাংলাদেশ থেকে কমিনিউজম প্রায় নিশ্চিহ্ন হতে থাকে এবং ৯১ সালে সোভিয়েত পতনের পর ১৯৯৩ সালে কমিনিউস্ট পার্টি অব বাংলাদেশে সব থেকে বড় ভাঙন আসে। এবং বাংলাদেশের বিগত নির্বাচনে সিপিবি ( কমিনিউস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ ) একটিও আসন পায় নি।
পশ্চিম বঙ্গের ইতিহাস একটু উলটো। এখানে গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে সিপিএম লোককে সমাজতান্ত্রিক রিলিফ দেওয়ার কথা ঘোষনা করে। ১৯৭৭-১৯৮২ সালে প্রথম বামফ্রন্ট সরকারের রাজত্বকালে ব্যাপক ভাবে পশ্চিম বঙ্গে ভূমি সংস্কার আন্দোলন হয়। রায়তরা জমির ওপর নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে। কিন্ত একই সাথে দ্বায়িত্বজ্ঞানহীন শ্রমিক আন্দোলনের ফলে পশ্চিম বঙ্গ থেকে সব শিল্প গোটাতে থাকে। ১৯৮৫ সালের মধ্যেই পশ্চিম বঙ্গে অবস্থিত ভারতের সর্বাধিক সমৃদ্ধ শিল্পাঞ্চল গুলি-যেমন হাওড়া বা দুর্গাপূর শিল্প নগরীর পরিবর্ত্তে শিল্প-শ্বশান নগরীতে পরিণত। হাওড়া-ব্যন্ডেল এবং কৃষ্ণনগর শিয়ালদহ-দুই লাইনেই আমার ছোটবেলা থেকে যাতায়াত- ট্রেন লাইনের দুধারে শুধু কারখানার কঙ্কাল ছাড়া আর কিছু চোখে পড়ত না। ফলে ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলি যেমন সাংঘাতিক ভাবে এগিয়ে যায়, পশ্চিম বঙ্গ বামফ্রন্ট শাসনে ঠিক ততটাই পিছিয়ে পড়ে। ১৯৭৭ সালে গুজরাতিদের গড় ইনকাম ছিল বঙ্গবাসীদের মোটে ৩০% বেশী-মহারাষ্ট্র এবং গোয়া বাদ দিয়ে তখন বাকী রাজ্যগুলি মাথাপিছু ইনকামে পশ্চিম বঙ্গের পেছনেই ছিল। বর্তমানে গুজরাতিদের মাথাপিছু গড় উপায় বাঙালীদের থেকে ২৫০% বেশী। গুরগাঁও বা হায়দ্রাবাদে গেলে মনে হয়, কোলকাতা তৃতীয় বিশ্বের আর দিল্লী বা হায়দ্রাবাদ প্রথম বিশ্বের শহর।
B.
যাইহোক বামফ্রন্ট সরকারের ব্যার্থতা নিয়ে লিখতে বসি নি। এসব তথ্য বা বিতর্ক সবই সবার জানা। মূল ব্যাপার হল, দীর্ঘ ৩২ বছর রাজত্বের পর, সিপিম সরকার নিশ্চিত ভাবেই পশ্চিম বঙ্গ থেকে বিদায়ের মূখে। বিগত লোকসভা নির্বাচন এবং তার পরবর্ত্তী সমস্ত স্থানীয় নির্বাচনে তারা গোহারা হারছে। সাথে সাথে পশ্চিম বঙ্গের কমিনিউস্ট আন্দোলনের একটি দীর্ঘ অধ্যায় ও শেষ হতে চলেছে। আমার ধারনা ২০১১ সালের পর পশ্চিম বঙ্গে সিপিমকে মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজতে হবে-সেমন করে এখন নক্সাল দলগুলিকে খুঁজতে হয়। সিপিএমের অত্যাচারের বিরুদ্ধে মানুষের জনবিক্ষোভ এতই তীব্র, ২০১১ সালের হারে পর যখন পুলিশ বাহিনী নিজেদের অধিকারে থাকবে না, তখন পার্টিটা আদৌ টিকবে কি না আমার সন্দেহ আছে। রুমানিয়াতে চেসেস্কুর পতনের পর, সাধারন মানুষ যেমন স্থানীয় অত্যাচারী কমিনিউস্ট নেতাদের ধরে ধরে পিটিয়েছিল-পশ্চিম বঙ্গের পরিস্থিতি ঠিক একই ধরনের অগ্নিগর্ভ।
যাকগে স্পেকুলেশন আমার কাজ না। সেটা নিয়ে লিখছিও না। মূল কথাটা হল, বাঙালীরা ছিল দক্ষিন এশিয়াতে সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারার সব থেকে বড় ধারক এবং বাহক। সেই ইতিহাস আজ সমাপ্তির পথে। নক্সাল দলগুলির অজস্র দল-উপদল। সিপিএম শেষ। কমিনিউস্টদের আজ সম্পূর্ন ভাবেই সাধারন বাঙালী বর্জন করেছে।
এর মানেত এই নয়-মুক্তবাজার অর্থনীতিই আমাদের আলো দেখাবে? এনরন, ওয়ার্ল্ড কম, সত্যম কেলেঙ্কারীর পরে, আমরা সবাই জানি-মুক্তবাজার অর্থনীতি আসলেই চোর-ডাকাতদের আখরা যাদের মুখে সি ই ওর মুখোশ। ধনতন্ত্রের কলে মানুষের যন্ত্রনা আগেও যা ছিল-আজও তাই আছে। পৃথিবীর সব দেশেই গণতন্ত্রটা ঠিকাদারতন্ত্র। কিছু ব্যাবসায়ী আসল রাজনৈতিক ক্ষমতা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে দখল করে সাধারন মানুষকে ঠকাচ্ছে। পশ্চিম বঙ্গের অবস্থা এমনই করুন, সেই ঠকানোকে জনগন মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে কারন, উলটো দিকের অত্যাচারি সিপিএম দানবকুলের হাতে করা আর হাজতবাস করা সমার্থক হয়ে উঠেছিল। সিপিএম জেলরদের কাছে হাজতবাস করার থেকে ব্যাবসায়ীদের হাতে ঠকা ভাল, এই বাস্তব বাঙালী আজকে মানছে। না মেনে উপায় নেই। আমাদের আজ এতটাই দুর্দিন।
C.
তাহলে সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারায় ভুলটা কোথায় যদি ধনতন্ত্রে মানুষের সমস্যাগুলোর সমাধানের বদলে, সেগুলো বেড়েই চলে?
আসলে সমস্যা হচ্ছে-সভ্যতার আদি থেকেই সমাজতান্ত্রিক চিন্তা চলে আসছে ( এটি পড়তে পারেন)। কার্ল মাক্স সেগুলোকে আদর্শবাদি ভাবধারা বললেন- কিন্ত বাস্তব হচ্ছে, তিনি নিজেও যে ঐতিহাসিক বস্তুবাদের ওপর ভিত্তি করে সমাজতান্ত্রিক বিবর্তনের ছবি আঁকলেন, তাও সেই আদর্শবাদই হইল। বস্তুবাদ কথাটি মার্ক্সীয় তত্ত্বে হাজার বার আসে বটে-কিন্ত বস্তবাদের দর্শন আরেকটু গভীরে পড়লে বোঝা যাবে, মার্ক্সীয় দর্শন-যা অভিজ্ঞতাবাদের ওপর প্রতিষ্ঠিত-তা বাস্তববাদের ( রিয়ালিজম) সাথে সীমা রেখাটানার কাজে নিতান্তই দুর্বল। তাও দান্দিকতা বা ডায়ালেক্টিজম দিয়ে, বাস্তবতার অনেক কাছাকাছি আসা যায়। সেটাই দ্বান্দিকতার কাজ-কিন্ত পরবর্ত্তী কালে বৈপ্লবিক মার্ক্সিস্ট ই হোন ( যেমন লেনিন) বা গনতান্ত্রিক মার্ক্সবাদিই হোন ( বার্নস্টাইন বা কাউটস্কি) , বিশ্লেষনের ক্ষেত্রে দ্বান্দিকতাকে বর্জন করে ঐতিহাসিক বস্তুবাদের ফ্রেম ওয়ার্কের ওপর সমস্ত ফোকাস ঘুরিয়ে দেন। ব্যাস এই লেনিনজমে এসে মার্ক্সীয় সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধার সম্পূর্ণ ভাবেই বৈদিক সমাজতন্ত্র বা ইসলামিক সমাজতন্ত্রের মতন আরেকটি ধর্মীয় প্রতিবাদি আন্দোলনের রূপ নেয়। ফলে বিংশ শতাব্দির শুরু থেকেই মার্ক্সীয় সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারা সম্পূর্ন ভাবে সমাজবিজ্ঞান বা নৃতত্ব বিজ্ঞান থেকে দূরে সরে যেতে থাকে। আমি মার্ক্সীয় তত্ত্বের কতগুলি মূল ধারনার বিশ্লেষন করে উদাহরন দিচ্ছিঃ
D.
(1) শোষন এবং উৎপাদন ব্যাবস্থাঃ
শোষন কথাটি উদবৃত্ত মূল্য এবং উদবৃত্ত শ্রমের সাথে সংযুক্ত। ধরা যাখ খগেন বাবু মালিক। উনার শ্রমিক ক টাকা শ্রম নিয়ে একটি বস্ত্র উৎপাদন করল। উনি খ টাকায় বেচে দিলেন। গ টাকা লাভ হল। এটা উদবৃত্ত মূল্য এবং এই লাভটা শ্রমিককে শোষন করা টাকা।
প্রশ্ন হচ্ছে চায়ের দোকানের দীপুকে ত এই ভাবেই শোষন করা হয়। কিন্ত তাও, ওপরের মডেলটা অতি সরলীকরন। কারন
১) খগেন বাবু নিজেই শ্রমিক এবং মালিক হতে পারেন। সম্পূর্ণ পারিবারিক উৎপাদন ব্যাবস্থা হতে পারে। এদের মার্ক্স পেটি বুর্জোয়া বলতেন-এবং এদের অবলুপ্তি হবে-এমন ঘোষনাও দিয়েছিলেন। বাস্তবে হয়েছে উলটো।
২) লোকসান ও করতে পারেন। রিস্ক নিচ্ছেন-তার জন্যে একটা গ্যাম্বলিং মূল্যও তার পাওনা।
৩) মার্কেটিং সেলস করতে তাকেও পরিশ্রম করতে হয়। এই গ টাকা লাভটা, তার পারিশ্রমিক হিসাবেও ভাবা যেতে পারে।
৪) গ লাভের টাকাটা শ্রমিকদের মধ্যে বিতরন করা হয় পাবলিক কোম্পানীতে বোনাস হিসাবে
(৫) বর্তমানের পাবলিক কোম্পানীগুলিয়ে মালিক ব শেয়ার হোল্ডার মোটেও প্রফিট থেকে লাভ করে না। প্রফিট সেখানে কর্মীরাই পায়। শেয়ার হোল্ডাররা লাভ করে স্পেকুলেটিভ ভ্যালুয়েশন থেকে। যেমন জেনেনটেকের মতন কোম্পানীগুলি কোন কোয়াটারে কত লাভ করছে, তার থেকেও বেশী গুরত্ব দিচ্ছে, নতুন কি ওষুধ আবিস্কার করল তার ঊপরে। কোম্পানীর ভবিষ্যত ভ্যালুয়েশন সেখানেই।
আরো অনেক কিছুই এই মডেলের বিরুদ্ধে যেতে পারে। সেটা বড় কথা না-যেটা এখানে দ্রষ্টব্য সেটা হচ্ছে কি মার্ক্সীয় শোষন মডেল বা ১-৫ , তার এন্টি থিসিস যা যা বল্লাম, এর কোনটাই সার্বজনীন না। কখনো খাটবে, কখনো খাটবে না।
তাহলে কি ‘শোষনের’ সামাজিক সুত্র ( Social Law) বার করা সম্ভব? বিজ্ঞানে সুত্র কি করে বার করে?
অভিজ্ঞতাবাদ বা এম্পিরিসিজম কিছু সামাজিক সুত্র গঠনের ওপর নির্ভর করে। মার্ক্সিজিম ও যেহেতু এম্পিরিসিজম সেহেতু মার্ক্সিয় তত্ত্বের বিরুদ্ধে প্রথমেই যে প্রশ্ন উঠবে-আমাদের এই জটিল সমাজ ব্যাবস্থার মধ্যে সামাজিক সুত্র বার করা সম্ভব কি না? এর বাস্তব তাৎপর্য্য পশ্চিম বঙ্গে যা দেখেছি তা সাংঘাতিক।
একটা চেনা ঘটনা বলি। মেদিনীপুরের পাঁশকুড়াতে একটি চালকল ছিল। ১৫ জন শ্রমিক কাজ করত। মালিক এক স্কুল মাস্টার। এমনিতেই চালকলে লাভ খুব কম। বাপের তৈরী কল বলে উক্ত মাস্টারমশাই টি অনেক কষ্ট করে চালাতেন। কখনো সখনো নিজের পকেট থেকেই চালাতেন। হ ঠাৎ করে পুজোর মাসে বোনাসের দাবীতে সেই চালকল বন্ধ হল। পেছনে ছিল সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু। এই ঘটনা পশ্চিম বঙ্গে হাজারে হাজারে ঘটেছে আর আমাদের রাজ্যে শক্ত সামর্থ ছেলেরা ভারতের অন্য রাজ্যে গিয়ে করে খাচ্ছে। আমি এই বছরই কিছু গ্রামে ঘুরলাম। যেখানে ঘরের পর ঘরে পুরুষ নেই। সবাই অন্যরাজ্যে চলে গেছে। পুজ়ো বা ঈদের সময় বছরে একবার আসবে।
শোষনের তত্ত্ব কি এখানে খাটে না? শোষনকে সামাজিক সূত্র হিসাবে ধরলে নিশ্চয় খাটে। কিন্ত বাস্তবতা কি তাই? সামাজিক সুত্র দিয়ে কি এখানে বাস্তবতা (রিয়ালিটি) কে ধরা গেল?
আসলেই অভিজ্ঞতা বা ইতিহাসের ভিত্তিতে সামাজিক সুত্র তৈরী করা খুবই কঠিন কাজ। এবং ইতিহাস বা সামাজিক ঘটনাবলীর মধ্যে আদৌ কোন সূত্র লুকিয়ে আছে কি না ( স্ট্রাকচারালিজম) – বা যদিও বা থাকে, তা বর্তমান বা ভাবীকালে, বা সব দেশের সব সমাজে প্রযোজ্য হবে কি না তা আরো শক্ত ঠাঁই।
আমি পেশাদারি জীবনে নানান রকমের গণিতিক এম্পিরিক্যাল মডেলিং করি। আমার কাজ তাও প্রকৃতি বিজ্ঞানের ওপর যেখানে ফোটন ইলেক্ট্রনরা প্রাকৃতিক সুত্র মেনে চলে। তা সত্ত্বেও, অধিকাংশ জটিল সিস্টেমের ক্ষেত্রে কখনো সখনো ২০-৩০টা গণিতিক মডেল ফিট করার পরে, শেষ মেশ কোনক্রমে একটি মডেল দাড়ায় যা একটি নির্দিষ্ট লিমিটের মধ্যে খাটে। এমন নয় যে ওই ২০-৩০ মডেল যা বাতিল করতে হল, তার কোন বেসিস নেই। প্রতিটি মডেলই অতীতের পর্যবেক্ষন এবং যুক্তির ওপরে দাঁড় করিয়ে বানানো হয়। তাতেও দেখেছি সিস্টেমে যখন র্যান্ডমনেস বা বিশৃঙ্খলা আসে, যা মানব সমাজের ক্ষেত্রে ইলেক্ট্রেন বা ফোটনের চেয়ে আরো বেশী প্রযোজ্য, তখন সাংঘাতিক যুক্তি এবং সঠিক পর্যবেক্ষনের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা মডেলও কাজ করে না। কারন, যেখানে স্ট্রাকচার নেই, সেখানোত জোর করে স্ট্রাকচার বা প্যাটার্ন ঢোকানো যায় না। যেখানে সামাজিক সুত্র তৈরী করা যায় না-সেখানে জোর করে সামাজিক সূত্র তৈরী করতে গেলে বাস্তবতাকে অস্বীকার করতে হয়। অথচ যাবতীয় মার্ক্সিস্ট তত্ত্বই এই অনুমানের ওপর দাঁড়িয়ে যে মার্ক্সের তৈরী সামাজিক সুত্রগুলি ইতিহাসের ধারায় বা সমাজে প্রতিভাত হয়। কিন্ত বাস্তব হচ্ছে, তা কখনো হয়, কখনো হয় না। আসলেই কোন সার্বজনীন সামাজিক সূত্রের অস্তিত্ব নেই। মানব সমাজের মতন বিশৃঙ্খল সিস্টেম সূত্র মেনে চলতেই পারে-কিন্ত সেখানে সার্বজনীনতা বা ইন্ডাকশনিজম চলে না। মার্ক্সীয় তত্ত্বের বাকী পিলারগুলি কেও আমরা এই রিয়ালিজম বনাম এম্পিরিসিজমের সমস্যা থেকেই বিশ্লেষন করতে পারি।
E
বেস এন্ড সুপার স্ট্রাকচারঃ
রাজনৈতিক এবং সামাজিক সিস্টেম কিভাবে তৈরী হয়? মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্কই বা কি ভাবে গঠিত হয়? মার্ক্সীয় তত্ত্বে তা সম্পূর্ণ ভাবেই উৎপাদন ব্যাবস্থার সাথে মানুষের সম্পর্কের ওপর নির্ভরশীল। বেস মানে হল উৎপাদন ব্যাবস্থার সাথে মানুষের সম্পর্ক। এবং এই বেসের ওপর ভিত্তি করেই সামাজিক বা রাজনৈতিক (রাষ্ট্রীয়) গঠনের সুত্রপাত।
“In the social production of their existence, men inevitably enter Into definite relations, which are independent of their will, namely [the] relations of production appropriate to a given stage in the development of their material forces of production. The totality of these relations of production constitutes the economic structure of society, the real foundation, on which arises a legal and political superstructure, and to which correspond definite forms of consciousness. The mode of production of material life conditions the general process of social, political, and intellectual life. It is not the consciousness of men that determines their existence, but their social existence that determines their consciousness. At a certain stage of development, the material productive forces of society come into conflict with the existing relations of production or — this merely expresses the same thing in legal terms — with the property relations within the framework of which they have operated hitherto. From forms of development of the productive forces, these relations turn into their fetters. Then begins an era of social revolution. The changes in the economic foundation lead, sooner or later, to the transformation of the whole, immense, superstructure. In studying such transformations, it is always necessary to distinguish between the material transformation of the economic conditions of production, which can be determined with the precision of natural science, and the legal, political, religious, artistic, or philosophic — in short, ideological forms in which men become conscious of this conflict and fight it out. Just as one does not judge an individual by what he thinks about himself, so one cannot judge such a period of transformation by its consciousness, but, on the contrary, this consciousness must be explained from the contradictions of material life, from the conflict existing between the social forces of production and the relations of production”-A Contribution to the Critique of Political Economy (1859):
অর্থাৎ মার্ক্স ধরেই নিলেন, উৎপাদনের সাথে মানুষের সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে সামাজিক সূত্রবালি তৈরী করা যায়। উৎপাদন ব্যাবস্থার সাথে মানুষের সম্পর্কর ওপর সামাজিক সিস্টেম নির্নিত হয় এটা কিছুটা সত্য ত বটেই-কিন্ত সমস্যা হচ্ছে সেই সত্য সার্বজনীন কি না! একজন বিকলাঙ্গ সন্তানের জন্ম হলেত মা তাকে ফেলে দেয় না-বরং বেশী ভালোবাসা দিয়ে থাকে! অথবা মাতৃভাষার প্রতি অবুঝ ভালোবাসা কি এই সুপার স্ট্রাকচার দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়?
আসলে সংস্কৃতি এবং সামাজিক আইনগুলি -তথা মানুষের মধ্যে পারিস্পারিক সম্পর্কের উৎপত্তি নিয়ে সমাজবিজ্ঞান, গণিত, বায়োলজি এবং নৃতত্ত্ব বিজ্ঞানে গত পাঁচ দশক ধরে ব্যাপক গবেষনা হয়েছে। একটা বিশৃঙ্খালিত মানব সম্পর্ক থেকে কিভাবে সামাজিক আইনের জন্ম হতে পারে না নিয়ে ব্যাপক গণিতিক এবং জেনেটিক্সের গবেষনা মানব ও প্রকৃতি ও সংস্কৃতির উদ্ভব নিয়ে আমাদের ধারনাকে আমূল বদলে দিয়েছে। এর কোন কিছুই মার্ক্সীয় তত্ত্বে ঢোকে নি বা মার্ক্সীস্টরা বোঝার চেষ্টাও করেন নি কি দ্রুতহারে মানব প্রকৃতি এবং সমাজবিজ্ঞান জেনেটিক্স নির্ভর হয়ে উঠেছে-তা আর আর কোনভাবেই শুধু উৎপাদনের সুত্র বা বেস দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না।
বেস এবং সুপার স্ট্রাকচারের মূল অনুমান ভিত্তি হচ্ছে মানুষের ব্যাবহারিক প্রকৃতির ওপর কোন জন্মনির্ধারিত রেস্ট্রিকশন নেই। অর্থাৎ জীনের ফেনোটাইপ না, পরিবেশই মানুষকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রন করে । বেস এবং সুপারস্ট্রাকচারের ভিত্তিভুমি হচ্ছে এই পরিবেশ নির্ভর মানুষের ধারনা।
কিন্ত এই ধারনা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক। তাই বার্নাড থিয়েরী মানুষের সামাজিক প্রকৃতির জ়ৈব কারন অনুসন্ধান করতে গিয়ে বলেছেনঃ
(Adaptation and self-organization in primate societies.(Genes and Humanity’s Past: A Renewed Dialogue)
” Even if we admit that behavior is more sensible to environmental variations than morphology, it is a phenotype and, as such, subject to internal constraints” . Behavior is not infinitely flexible; we must admit that the epigenetic systems of transformation confine it to a limited number of possible solutions.”
কিন্ত হাস্যকর ব্যাপার হচ্ছে মার্ক্সিস্টরা সেই গত একশো বছর ধরেই বিজ্ঞান থেকে সরে গিয়ে বেস-সুপারস্ট্রাকচারের ন্যায় অপবিজ্ঞান এবং অপদর্শনের চর্চা করে চলেছেন। লুই পিয়েরী আলথুজার নামে এক ফরাসী মার্ক্সিস্ট দার্শনিক নিয়ে অনেক মার্ক্সিস্টরা মাতামাতি করেন-তিনি মার্ক্সিজমে স্ট্রাকচারালিজম নিয়ে ‘অনেক’ কাজ করেছেন। কিন্ত তার লেখা বা চিন্তায় আধুনিক বিশৃঙ্খল বিজ্ঞান বা জেনেটিক্স বিজ্ঞান কিভাবে মানব ও সামাজিক প্রকৃতিগুলিকে বোঝার চেষ্টা করেছে-তার কোনকিছুই পাওয়া যাবে না। ফলে মার্ক্সিস্ট মহলে তিনি কেঊকেটা হলেও, বাস্তবে তার চিন্তাধারাও সম্পূর্নভাবে আধুনিক বিজ্ঞান বিরোধি অপদর্শনের জন্ম দিয়েছে। এরা হচ্ছে মার্ক্সিজমের জাকির নায়েক। জাকির নায়েককে নিয়ে যেমন ধর্মপ্রান মুসলিমরা নাচানাচি করে, ঠিক তেমনই আলথুজারের ন্যায় অপদার্শনিকদের নিয়ে মার্ক্সিস্টরা লাফা-লাফি করে। উভয় ক্ষেত্রেই কারন আধুনিক সমাজ এবং জ়ৈববিজ্ঞানে এদের নিদারুন অন্ধত্ব। হিন্দুত্ববাদি, ইসলামিস্ট বা মার্ক্সিস্টদের মধ্যে আমি বর্তমানে কোন পার্থক্যই দেখতে পাই না। কারন এই শ্রেনীর লোক হওয়ার একটাই যোগ্যতা-বিজ্ঞান এবং দর্শনে সম্পূর্ণ অজ্ঞতা।
F.
শ্রেনীতত্ত্ব-আরেকটি ধাপ্পাবাজি-
উৎপাদন ব্যাবস্থার ভিত্তিতে মানব সমাজকে ভাঙতে গিয়ে এখানেও মার্ক্স সামাজিক সূত্রের জন্ম দিয়েছেন-যা বাকী মার্ক্সিস্ট তত্ত্বের ন্যায় অর্ধসত্য-যা কোথাও খাটে, কোথাও খাটে না। প্রলেতারিয়েত, বুর্জোয়া, পেটি বুর্জোয়া ইত্যাদি শব্দগুলির সবই সেই ধোঁয়াশা মার্কা ডায়ালোগ। মার্ক্সীয় সূত্র এবং সংজ্ঞা ধরে এগোতে গেলে চায়ের দোকানের দিন আনা দিন খাওয়া মালিক হচ্ছে বুর্জোয়া আর বছরে কুড়ি লাখ টাকা মাইনে পাওয়া সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার হচ্ছে প্রলেতারিয়েত! এমন নয় এসব সীমাবদ্ধতা মার্ক্সিস্টরা জানেন না। এর জন্যেও তারা তত্ত্ব্বের অনেক পরিবর্ত্তন ও করেছেন। কিন্ত তা বাস্তবে কুকুরের লেজ সোজা করা। কারন যেখানে ওই ধরনের শ্রেনীর অস্তিত্ব বা বিভাজন সম্ভব না, সেখানে হাজার হাজার তত্ত্ব এবং লেজুর তত্ত্বের প্রদুর্ভাব ঘটিয়েও বাস্তবকে ছোঁয়া যায় না। সবথেকে বড় কথা বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে, উন্নতদেশগুলিতে প্রলেতারিয়েত বলে কেও থাকছে না ( রোবটদের যদি প্রলেতারিয়েত বলা যায় সে হবে অন্য কথা)। ২০০১ সালে ওয়ালমার্ট দেখতাম ৩০টা কাউন্টারে একটি বা দুটিতে অটোচেকআউট থাকত। শ্রমিক অনেক বেশী থাকত। এখন প্রায় সব কাউন্টারই অটোমেটিক হয়ে যাচ্ছে। জমি-বাড়ি-ম্যানুফাকচারিং-ট্রাভেল ইত্যাদিতে দালালির ব্যাবসা আমেরিকাতে আর হচ্ছে না-কারন এখন ইন্টারনেট ক্রেতার সাথে বিক্রেতার সরাসরি মেলবন্ধন ঘটাচ্ছে। ক্ল্যারিকাল কাজও উঠে গেছে। ফলে চাকরি পেতে গেলে আজকাল স্কিলড লেবার হতেই হবে-হিউমান রিসোর্সে যে কাজ করে তাকেও স্যাপ বা ওরাকলের এইচ আর প্যাকেজ চালানো জানতে হয়।
প্রশ্ন উঠতেই পারে ভারতে মত দেশে যেখানে ৩০% লোক খেতে পাচ্ছে না-মেশিনের বদলে টি বয় চা দিচ্ছে-সেখানে এর রেলিভ্যান্স কি? সেখানেও কিন্ত আমরা দেখছি স্কিলড লেবার ছাড়া ভদ্র চাকরি বাকীরা পাচ্ছে না। কিন্ত আনস্কিল্ড লেবার বাড়লেও, আনস্কিলডদের জন্যে মার্কেট তাই বলে বাড়ছে না-কমছে। করণিকের চাকরি ভারতেও অবলুপ্তির মুখে। সোনা বা শাড়ির ডিজাইন একদম প্রত্যন্ত গ্রামীন শহরেও ইন্টারনেট থেকে কপি করেই হচ্ছে। এসব আমি ডকুমেন্টারী করতে গিয়েই দেখেছি। গ্রামীন কৃষিতে আনস্কিলড লেবারদের যে মার্কেটছিল, যন্ত্রায়নের ফলে, সেখানেও কাজ অনেক কমেছে। ১৯৭৭ সালে একজন আনস্কিল্ড লেবার পশ্চিম বঙ্গে বছরে ৭০-৯০ দিন কাজ পেত। আজকে তা ২০-৪০ দিনে এসে দাঁড়িয়েছে। ফলে বাঙালী আনস্কিলড শ্রমিকদের সামনে পাঁচটি পথ-ভিক্ষুক হওয়া, আত্মহত্যা করা, অন্যরাজ্যে চাকরীর সন্ধানে গিয়ে স্কিলড লেবার হওয়া, চুরি-ডাকাতি-স্মাগলিং (লুম্পেন প্রলেতারিয়েত) বা মেয়েকে মুম্বাই এ বেশ্যাবৃত্তি করতে পাঠানো। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এই পাঁচটি ঘটনাই সমান্তরাল ভাবে ঘটে চলেছে। মুম্বাইযে গোটা ভারত থেকে যে মেয়ে সাপ্লাই হয় তার ৪৫% বঙ্গবাসী বা বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া ভাগ্যহীনা নারী। অত্থচ বাঙালী মধ্যবিত্ত নিজেদের ব্যার্থতা বিশ্লেষন না করে, হয় সাংস্কৃতি গর্বে মশগুল বা মাক্সীয় তত্ত্বের স্বেমহনে বিপ্লবের স্বপ্ন দেখছে।
G.
যাইহোক যেটা আমার বক্তব্য সেটা হল, যন্ত্রের ফলে উদ্ভুত সামাজিক বিবর্তন থেকে প্রলেতারিয়েতদের ভারতেও বাঁচানো যাচ্ছে না। উন্নততর উৎপাদন ব্যাবস্থার বিবর্তনের সাথে মানিয়ে নিতে না পারলে, তারাও হারিয়ে যাচ্ছে-বিপ্লব হচ্ছে না। কারন শ্রেনী তত্ত্ব তাদের কাছে যতই সত্য লাগুক, পেটের আগুন না মেটালে তারাও বাধ্য হয় পশ্চিম বঙ্গ ছাড়তে। দিল্লীতে আমি এবার সপ্তাহ দুই ছিলাম। আমাদের অফিসে একটি কফি বয় ছিল বাঙালী। কফি খেতে গিয়ে একদিন দেখি সে কমরেড হিরেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের লেখা কিছু পড়ছে। আমি অবশ্য বেশী কিছু উৎসাহ দেখাই নি কথা বলার জন্যে। যাইহোক একদিন সে আমাকে বলে-আপনি ত বাঙালী? আমি বল্লাম হ্যাঁ। আমার খুব বেশী কথা বলার ইচ্ছা ছিল না-কারন এর আগেও দিল্লীর এশিয়াড ভিলেজে ওয়েটারের কাজ করা এস এফ আই এর প্রাত্তন নেতা দেখেছি যে শেষমেশ বাপের আশ্রয়টুকু যাওয়ার পর পশ্চিম বঙ্গে কিছু না করতে পেরে ওয়েটারের কাজ নিয়েছে। পশ্চিম বঙ্গে চাকরী না পাওয়ার পরে, মাস্টার ডিগ্রী নিয়ে ওয়েটার বা কফি বয়ের কাজ করতে করতে ও এরা বামপন্থার সীমাবদ্ধতা বুঝবে না। যাইহোক-ছেলেটি হঠাৎ করে বলে আপনি কোলকাতার লোক। আমি আবার সংক্ষিপ্ত উত্তর দিলাম-না, তবে পশ্চিম বঙ্গের লোক। সে এবার আগ বাড়িয়ে বললো , দেখুন আমি এম এ পাশ করেছি সি ইউ থেকে-আপনার চেনাশোনা কেও থাকলে একটু ভাল কাজ দিতে বলুন না। আমরাত আপনার কোম্পানীর কর্মী না-কনট্রাক্টে আসি-খুবই কম মাইনা পাই।
আমি বল্লাম- কেন পশ্চিম বঙ্গ ছাড়লে-তুমি ত মনে হচ্ছে বেশ উচ্চশিক্ষিত।
ও বললো আপনি ত সবই জানেন। আপনিও বিদেশে আছেন।
আমি বললাম, সেত বুঝলাম-কিন্ত যেটা বুঝলাম না সেটা হচ্ছে, পশ্চিম বঙ্গের এই দুরাবস্থার পরেও কি করে কমিনিউজমে তোমার আস্থা অটুট আছে?
ও বললো -দেখুন আমাদের মালিক, ঘন্টা প্রতি আমাদের ১০ টাকা দেয়, আর আপনার কোম্পানীকে চার্জ করে ঘন্টায় ২৭ টাকা। আমাদের ২১ জন এখানে কাজ করছে। এটাকে শোষন বলবেন না?
আমি বল্লাম নিশ্চয় এটা শোষন। কিন্ত তাহলে পশ্চিম বঙ্গে শোষন হীন সাম্যাবস্থা আনার চেষ্টা ছাড়লে কেন?
এবার ছেলেটা ছল ছল করে উঠল। বললো-স্যার ঠাট্টা করছেন? বাড়িতে দুই বোন। বিয়ে দেওয়া হয় নি। স্কুল সার্ভিস কমিশনে বসা ছাড়াত কোন চাকরি নেই রাজ্যে। গ্রামে মাত্র দুবিঘা জমি। এবার আপনিই বলুন আমার কি করা উচিত ছিল? নেতাদের পেছনে ঘুরে ত আর পেট ভরে না।
আমি বল্লাম, তুমি কি একবার ও নিজেকে প্রশ্ন করেছ-কেন দিল্লীতে তোমার মতন উচ্চ শিক্ষিতরা নানান ভাবে করে খাচ্ছে-আর রাজ্যে তোমার বেকার থাকা ছাড়া উপায় নেই? এর পেছনে তোমার পার্টির কোন ভূমিকা নেই? একটা জিনিস ভেবে দেখলেও পার-শোষনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার পরেও, শুধু বেঁচে থাকার জন্যে তোমাকে শোষনক্লিষ্টতাকে ভীষন ভাবে মেনে নিয়ে দিল্লীতে আসতে হচ্ছে। তাহলে এটা বুঝছ-বেঁচে থাকার বাস্তবতা সমাজে সাম্য বা শোষনহীনতার চেয়েও বেশী গুরুত্বপূর্ণ?
শেষের গল্পটা বলার একটা বিশেষ কারন আছে। পৃথিবীর প্রতিটা দেশেই কমিনিউজমের যাবতীয় পরীক্ষা ব্যার্থ হয়েছে-কারন উৎপাদন ব্যাবস্থার ওপর জোর দেওয়া হয় নি। ক্ষমতাই আসার পর বামফ্রন্ট সরকার একগাদা সরকারী ব্যাবসা খুলেছিল-তার একটিও চলে নি। ভূমি সংস্কারে ফলে গ্রামের কারুর হাতে পুঁজি ছিল না, গ্রামীন শিল্পের বিকাশের জন্যে। মুখে বড় বড় কথা বলেছে-কিন্ত এদিকে কোন গুরুত্ব দেওয়া হয় নি। ফলে গ্রামে জীবিকার সুযোগ বাড়ে নি-বরং আরো অনেক কমে গেছে। ফলে গোটা রাজ্যটাই একটি অচলায়াতনে পরিণত হয়েছে। আর কমিনিউস্ট পার্টির অর্ধশিক্ষিত নেতারা তত্ত্ব আউড়ে গেছেন। যা ছিল সম্পূর্ণ বাস্তব বর্জিত স্বমৈথুন।
তাহলে কমিনিউস্টদের সারাটা জীবন কি ব্যার্থ? তা আমি বলবো না। যারা মানুষকে প্রকৃত ভালোবেসেছেন, তিনি, হিন্দুত্ববাদি বা ইসলামিস্ট বা কমিনিউস্ট যাই হোন না কেন-তার জীবন সার্থক। কারন মানুষকে ভালবাসার ওপরে কোন তত্ত্ব হতে পারে না। সমস্যা হচ্ছে বাঙালী কমিনিউস্টরা আসলে সেই প্রকৃতির ও নন-এদের অধিকাংশই অজ্ঞতা, অহংকার, অভদ্রততা, দ্বিচারিতা, সুবিধাবাদি এবং মূর্খতার পাঁচ মেশালি চচ্চড়ি।
ফলে কেও ই নতুন সমাজতান্ত্রিক পথের সন্ধান দিতে পারছে না। ধনতান্ত্রিক সমাজের সমস্যাগুলি চলে যায় নি-শোষন ক্রমবর্ধমান-আর মুক্তবাজারের নামে চুরি-ডাকাতিও আমরা দেখছি। গণতন্ত্রে সাধারন মানুষকে নিয়ে আসা যাচ্ছে না। সেই ঠিকাদারতন্ত্র রয়েছে। কিন্ত তাই বলে ত মানুষ স্ট্যালিনিজমের মতন খুনী স্বৈরাচারী শাসন চাইবে না। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব উৎপাদনও চাইবে না-কারন সেসব কিছুই প্রমানিত ভাবে ব্যার্থ। ফলত, ভারতীয় অর্থনীতিতে দক্ষিন পন্থী প্রভাব ক্রম বর্ধমান-কারন বামপন্থীদের দেওয়া অর্থনীতিতে পশ্চিম বঙ্গের হাল হবে। লোকজন গরীব থেকে ভিখিরী হবে।
ফলে যে বিকল্প অর্থনীতি বা রাজনীতির সন্ধান করা উচিত ছিল-তা বাঙালী বামপন্থীরা করে নি। এম্পিরিসিজমের মূল মন্ত্রই হচ্ছে, যা কাজ করছে না, তা ফেলে দিয়ে উন্নততর মডেল আনতে হয়। মার্ক্সিজমের সূত্রগুলি অর্ধ সত্য এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যার্থ-এটাকে মেনেই বিজ্ঞানের দিকে চোখ রেখে নতুন পথের সন্ধান করতে হবে। মার্ক্সিজমের ব্যার্থতাগুলি না মানলে, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন আরো ডুবে যাবে। ব্যার্থতাই নতুন সত্যের জন্ম দেয়। নতুন তত্ত্বের জন্ম দিয়ে থাকে। কিন্ত মার্ক্সীয় তাত্ত্বিক ব্যার্থতাকে অপবিজ্ঞান বা অর্ধবিজ্ঞান বলে না মানলে বাঙালীর সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন চোরাবালিতে আরো ডুবতেই থাকবে। জনগন আমাদের বুঝতে ভুল করছে বা টাইম নিচ্ছে বা একদিন ঠিকই চিনবে-এই টাইপের আত্মপ্রবঞ্চনা ছাড়া এদের ভাগ্যে আর কিছুই জুটবে না।
পশ্চিম বঙ্গে মার্ক্সবাদি লেনিনবাদিদের আরেকবার গোহারা হারার পরেও, সেই বিশ্লেষন করতে পারলেন কোথায়?
বিজ্ঞানের দর্শনত একটাই-পর্যবেক্ষন এবং সুত্রের মধ্যে ত্রুটির কমানো-এবং তার জন্যে ফলসিফিকেশনের ব্যাবহার। কোন একটি তত্ত্বের ত্রুটিগুলো আলোচনা এবং গবেষনা করতে করতে উন্নততর তত্ত্বের জন্ম হয় বিজ্ঞানে। কিন্ত মার্ক্সবাদের গত এক শতকের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এটাই বেড়িয়ে আসে, রাজনীতির সাথে মার্ক্সবাদের মেলবন্ধনের ফলে, পার্টি যে লাইনে মার্ক্সবাদের ব্যাখ্যা দিয়েছে, সেই লাইনেই এর ফলোয়াররা বোঝার চেষ্টা করেছে বা মানার চেষ্টা করছে। পার্টি লাইনের ব্যাখ্যার বাইরে গেলে তাকে প্রতিবিপ্লবী ইত্যাদি আখ্যা দেওয়া হয়েছে। যার জন্যে গত একশতকে মার্ক্সবাদ সমাজবিজ্ঞান এবং নৃতত্ত্ব বিজ্ঞানের মূল শ্রোত থেকে অনেকটাই দূরে সরে গেছে। মার্ক্স কমিনিউস্ট ম্যানিফেস্টো বাজারে না ছাড়লে, আজকে তার তত্ত্বর সত্যই অনেক উন্নত তর রূপে আমরা পেতাম-কিন্ত রাজনীতি গভীর ভাবে এর মধ্যে ঢোকায়, সবটাই এখন জল-দুধ নেই।
কমিনিউস্টরা যেমন নিজেদের বৈজ্ঞানিক ভাবে, হিন্দুত্ববাদি বা ইসলামিস্টরাও ঠিক একই ভাবে তাদের হিন্দু দর্শন বা ইসলামিক দর্শনকে বিজ্ঞান ভিত্তিক ভাবে। কিন্ত এর কোনটাই বিজ্ঞান ভিত্তিক চেতনা নয়। বৈজ্ঞানিক চেতনার মূলেই আছে, ” ফলসিফায়েবিলিটি”-অর্থাৎ প্রতিটি তত্ত্বের মধ্যে ত্রুটির সন্ধান করা। ঐতিহাসিক বস্তবাদত খুবই জলো তত্ত্ব-কিন্ত তার ত্রুটির সন্ধান ত মার্ক্সাবাদিরা করে নি-করেছে সোশ্যাল থার্মোডাইনামিক্সের লোকেরা। বিজ্ঞানদের দৃষ্টিতে দেখলে সেই সমাজ বিজ্ঞানীরাই মার্ক্সবাদকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন আর যারা মার্ক্সবাদের নামাবলী জপ করে সারা জীবন কাটালেন, তারা মার্ক্সবাদের ক্ষতিই করে গেছেন।
বিজ্ঞান মানেই কোন তত্ত্বের প্রতি লয়ালিটির কোন জায়গা নেই। বিজ্ঞান চেতনা একটি আবেগহীন নির্মোহ নিরেপেক্ষ অবস্থান-যা প্রতিটা মুহুর্তে আমাদের প্রতিটা বিষয়ে ক্রিটিক্যাল থাকতে সাহায্য করে।
আসলে আপনার সমস্যা হচ্ছে, আপনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মধ্যে পার্থক্য করতে পারছেন না। আপনি প্রযুক্তিকেই বিজ্ঞান ভাবছেন। বিজ্ঞান হচ্ছে একটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সঠিক ( আপেক্ষিক ) সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার প্রক্রিয়া আর প্রযুক্তি তার ফলাফল। মার্কসবাদ বিজ্ঞান, কারণ এটা সমাজ বিকাশের সঠিক বিশ্লেষণ প্রদান করতে সক্ষম। আর বিজ্ঞানের মতই তা পরিবর্তনশীল।
আপনার কি ধারনা যে আমি না পড়েই বলছি? হতে পারে। আপনার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হবে। তার আগে আর একটি লেখা পড়তে বলব http://www.ganadabi.in/works1/marxism_b.pdf
এটা একটু পড়বেন।
@Ranajn,
@Rana
বিজ্ঞানের দর্শন এবং মার্কসবাদের ইতিহাস নিয়ে লেখক বেশ কিছু ভুল বলেছেন এবং বুঝেছেন। আমি এই লেখাটাতে সেটা আগেই জানিয়েছিলাম।
http://biplabpal2000.googlepages.com/MarxistScience.pdf
মন নিয়েও মার্কসবাদি মডেল আধুনিক বিজ্ঞান সমর্থিত না। যাইহোক, মার্কসবাদের কিছুটা ঠিক দিক ত আছেই। কিন্ত বিজ্ঞানের আধুনিক গবেশনা মার্কসবাদে গত ১০০ বছর ধরেই আসে নি। সেটা অন্য প্রসঙ্গ। জ্ঞান বিজ্ঞানের এই উন্নত যুগে, মার্কসবাদ কিছুটা অপ্রসাঙ্গিকই। সমাজ বিজ্ঞানের গবেশনায় মার্কসবাদের প্রাসঙ্গিকতা সেটুকুই-যাতে বিজ্ঞানের গবেশনা থেকে নতুন সমাজতান্ত্রিক চিন্তার জন্ম হতে পারে।
কি ভয়ংকর, ভাল লাগলে, খারাপ লাগতেও হবে না কি দ্বান্দিক বস্তবাদ মেনে? আমার ত একটিও মেয়েকেও খারাপ লাগে না! কি করব! আমি ঐশ্বরিয়াকে পছন্দ করি এটি থিসিস আর সুস্মিতা সেন কে অপছন্দ করি-এটা এন্টিথিসিস এমন হয় না কি!
আমার ভালো লাগার পেছনে সূত্র ত আছেই-সেটা জেনেটিক্সে আছে। কিন্ত আমার ঐশ্বরিয়াকে ভাল লাগবে, না সুস্মিতাকে ভাল লাগবে, তার পেছনে কোন সূত্র নেই-তাই দ্বন্দও নেই।
আতিক, তুমি খুব ভাল করে বিজ্ঞানে হাইপোথিসিস, নাল হাইপোথিসিস টেস্টিং টা দেখ।
ভাই নেগেশন একে বলে না।
আমি ঐশ্বরিয়াকে পছন্দ করি
এর নেগেশন
আমি ঐশ্বরিয়াকে পছন্দ করি না।
দ্বিতীয়টির অস্তিত্ব নেই, কারন দুটি বাক্য একসাথে সত্য হতে পারে না-কারন এই ক্ষেত্রে সত্যটি রিয়ালিস্ট। তবে হ্যা আমি ১৯৯৯ সালে ঐশ্বরিয়াকে পছন্দ করতাম, এখন করি না, এটা সত্য হতে পারে-কিন্ত সেক্ষেত্রে ‘এখন’ শব্দটার জন্যে, এটি প্রথম বাক্য টার নেগেশন না। অর্থাৎ
আমি ঐশ্বরিয়াকে পছন্দ করতাম ১৯৯৯ সালে।
এর নেগেশন মোটেও এটা না
আমি এখন ঐশ্বরিয়াকে পছন্দ করি না।
এর নেগেশনঃ
আমি ঐশ্বরিয়াকে পছন্দ করতাম না ১৯৯৯ সালে।
যা একই সাতে সত্য হতে পারে না।
কিন্ত এম্পিরিকাল বা অভিজ্ঞতাবাদি সত্য হলে কি হয়?
পুরুষ মাত্রই ঐশ্বরিয়াকে পছন্দ করে
এর নেগেশন;
পুরুশ মাত্রই ঐশ্বরিয়াকে পছন্দ করে না
এখান সাম্পল সার্ভে করলে দেখা যাবে, ৯০% পুরুষ ঐশ্বরিয়াকে পছন্দ করে, ১০% করে না। অর্থাৎ দন্দটি ৯-১ য়ে সহাবস্থান করে-কারন অভিজ্ঞতাবাদি সত্য মাত্রই দ্বান্দিক সত্য।
@বিপ্লব পাল,
ভাইয়া হুদাই দন্দ্ব নিয়া দ্বন্দ্ব না কইরা মার্কস বাদ নিয়া একটা লেখা দেন।আমি মার্কস সম্পর্কে খুব বেশি জানিনা। যেটুকু জানি তার কিছুটা আমার মেঝ ভাই থেকে, কিছুটা অন্য কিছু আত্নিয় থেকে, এবং প্রধান অংশটুকু জেনেছি কমিউনিস্ট পার্টির ইশতেহার পরে।
কমিউনিস্ট পার্টির ইশতেহার তো আমার কাছে যথেস্ট ভালোই মনে হল।
যদিও আমি নিযেই আমার স্বল্প জ্ঞান নিয়ে মার্কস বাদে অনেক সমস্যা খুজে পাই।
তবে মার্কস বাদের যেটুকু সমস্যা,আমার মনে হয় তা মার্কসের সৃস্টি না। যুগের পরিবর্তনের সাথেই এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।
কারন আগে যাদেরকে মার্কস বুর্জোয়া বলে গেছেন তারা আগে দমন নীতি চালাতেন আর এখন তারা দমন নীতি ছেড়ে কূটনীতি চালান, যা মার্কসের মারমার কাটকাট নীতি দিয়ে ধোয়া যাবেনা।
অবশ্য এটা আমার নিজস্ব মতামত।
আমার সীমাবদ্ধ জ্ঞানকে বাড়াতে তাই আমি মার্কস বাদের সুবিধা ও সমস্যা নিয়ে আপ্নার লেখা চাই।
@বিপ্লব পাল,
আমি আছি, আবার আমি নাই। একাধারে মানে একই কালে এ দুটিই সত্য হতে পারে।
স্থান-কালের বাইরে কোন বস্তুর অবস্থান সম্ভব না। সুতরাং কোন একটা দ্বন্দ অনন্ত টাইম ফ্রেমে হতে পারেনা। নিদৃষ্ট দ্বন্দ, নিদৃষ্ট সময়ের জন্য ক্রিয়াশীল থাকতে পারে।
কলি—–ফুল——-ফল——–বীজ।
একটা অবস্থা কে নেগেট করে অন্য অবস্থায় যাচ্ছে। দ্বন্দের শক্তিশালী দিক আর দূর্বল দিকের ব্যাপারটা অত্যন্ত গুরুত্ত্বপূর্ন। রাজা-বাদসাদের আমলেও বনিকরা ছিলো। কিন্তু দূর্বল অবস্থানে ছিলো। ফরাসি বিল্পবের পর থেকে শক্তির ভারসাম্ আস্তে আস্তে বনিকদের দিকে হেলতে থাকে। পরিমান গত পরিবর্তনের একটা বিশেষ মাত্রা অর্যনের পরেই তার মধ্যে বর্তমান উৎপাদন পদ্ধতির লক্ষঙ্গুলো মূর্ত হতে থাকে। এটা একটা সময় নিয়ে ঘটে। এর মধ্যে বহু ক্ষুদ্র দ্বন্দ এই প্রক্রিয়াকে কখনো দ্রুততর করে কখনো মন্থর করে।
মাও সেতং তার দ্বন্দতত্ত্ব বিকাশে দেখিয়েছেন যে কোন ঘটনায় একাধারে একাধিক দ্বন্দ ক্রিয়াশিল থাকে। এই দ্বন্দ গুলোর মধ্যে একটা থাকবে মূখ্য দ্বন্দ অপর গুলি গৌ্ন দ্বন্দ। তবে মুখ্য দ্বন্দকে চিন্হীত করা সব সময় সহজ না। এর থেকে উত্তরনের উপায় হচ্ছে তত্ত্ব থেক অনুশীলন, পুনরায় তত্ত্বায়ন, পুনরায় অনুশীলন।
এখন আশি ঐশ্বরিয়ার রূপ মূগ্ধতায়।
কেন আপনি ঐশ্বরিয়ার রুপে মুগ্ধ ?
সম্ভাব্য ইতিবাচক কারন ঃ
১) ঐশ্বরিয়া যুবতী
২) ঐশ্বরিয়া বিশ্ব সুন্দরী
৩) ঐশ্বরিয়া আবেদনময়ী
৪) ঐশ্বরিয়া স্বাস্থবতী
৫) হাসিটা ভাল লাগে
ইত্যাদি, ইত্যাদি………
সম্ভাব্য নেতিবাচক কারন ঃ
১) ঐশ্বরিয়ার গায়ের রং কালো না।
২) ঐশ্বরিয়া খাটো না।
৩) ঐশ্বরিয়ার চুল সোনালী না।
৪) ঐশ্বরিয়া অন্য বিশ্ব সুন্দরীদের থেকে কম সুন্দরী না।
ইত্যাদি…………
এই গেল একটি দিক, অন্য দিকে আপনি……………।
সম্ভাব্য ইতিবাচক উত্তর………।
১) আপনি একজন যুবক।
২) আপনি একজন পুরুষ।
৩) আপনি একজন ভারতীয়
সম্ভাব্য নেতিবাচক উত্তর………।
১) আপনি শিশু নন।
২) সমকামী নন।
৩) খোজা নন।
৪) সন্যাসি নন।
এখন এই উপরস্থ শর্তগুলির উপস্থিতী এবং অনউপস্থিতী নির্ধারন করে -কেন আপনি ঐশ্বরিয়ার রূপে মূগ্ধ এবং এই মুগ্ধতা কতদিন থাকবে। নাকি সম্পূর্ন ভিন্ন জিনিশ ঈশ্ব্র প্রেম এসে ঐশ্বরিয়ার প্রতি এই মুগ্ধতাকে আপনি অর্থহীন মনে করবেন। নাকি বাচ্চা হবার পরে ঐশ্বরিয়াকে আর আগের মত ভাল লাগবেনা।
এই মুগ্ধতার পেছনে নানামুখি দ্বন্দ ক্রিয়াশীল আছে। এই মুহুর্তে আপনি কমলা সুন্দরী রুপে মূগ্ধ না হয়ে ঐশ্ব্রীয়ার রূপে মুগ্ধ হচ্ছেন। মানে আন্যদের চাইতে ঈশ্বরিয়া বর্তমানে আপনাকে বেশি মুগ্ধ করতে পারছে। মানে আপনার বর্তমান রূচি, ব্যাক্তিত্ত্ব, বয়সের অভিজ্ঞতার মান দন্ডে ঐশ্ব্রিয়া অন্যদের থেকে এগিয়ে।
তাহলে দাড়াচ্ছে………আমি ঐশ্ব্রিয়ার রুপে এখন মূগ্ধ…এর নেগেসন…আমি এখন কমলা সুন্দরীদের রুপে মূগ্ধ না।
আমি বলতে চাইছি——–নেতির নেতি করন——-এই সুত্রে সময়/কাল ফ্যাক্টরটা
অতি আবশ্যক। কাল/সময় কে বাদ দিলে এই সূত্রের আর কোন মানে দাঁড়ায় না।
@আতিক,
এই গুলোত সুস্মিতা সেনের জন্যে ও সত্য। তাহলে যদি সামাজিক সূত্রের কারনেই এটি হয় তুমি যা দাবি করছে, তাহলে আমার ও সুস্মিতা সেনকে ১০০% একই রকম ভাল লাগার কথা। কারন, সূত্র মানেই ইনপুট সমান হলে, আউটপুট বা প্রেডিকশন ও এক হবে।
তা হয় কি??? এই জন্যেই এখানে স্ট্রাকচার নেই-কিন্ত তুমি জোর করে সেটা কে আনছ। মার্কসবাদিরা এই ভুলটাই করে গেল চিরকাল। দন্দ একটা এবস্ট্রাকশন এম্পিরিক্যাল সত্যকে জানার জন্যে। এবং ইনডাকশন জনিত সত্যের ভেজাল কমানোর জন্যে। এর বেশী কিছুই না।
আর একই কালে আমি ঐশ্বরিয়াকে পছন্দ করি আবার করি না-এই দুই যদি সত্য হয়, তাহলে এনালাইটিক দর্শনই তুলে দিয়ে ভারতীয় ধোঁয়াশা দর্শনের চর্চা করতে হয়। কারন, বাক্যের অবজেক্টিভ মিনিং না পাওয়া পর্যন্ত সেই বাক্যকে ‘ভালিড’ দার্শনিক বাক্য বলে ধরাই উচিত না।
@বিপ্লব পাল,
দুঃখিত বিল্পব দা। আ্পনি বলার পরে খেয়াল করলাম -না- শব্দটা বাদ গেছে। আমি বলতে চেয়েছিলাম – একাধারে মানে একই কালে এ দুটিই সত্য হতে পারে না।
আমি সমাজ বিজ্ঞান আর পদর্থ বিজ্ঞাকে এক মনে করি না। এদের মধ্যে মাত্রাগত পার্থক্য আছে। শূন্য ডিগ্রি তাপমাত্রায় পানি বরফে পরিনত হবে, ১০০ ডিগ্রী তাপ মাত্রায় পানি বাস্পে পরিনত হবে। সমাজ বিজ্ঞানে এরকম নিশ্চয়াত্তক ভবে কিছু বলা যায় না। তাই সমাজের গতি প্রকৃ্তি বিশ্লেষনের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাবাদই সম্বল।
অপনি যদি সমজের গতি প্রকৃ্তি বিশ্লেষন করে একে পরিবর্তন করতে চান তবে আপনাকেও ঐ অভিজ্ঞতাবাদকে
সম্বল করেই আগাতে হবে। তাহলে মার্ক্সিষ্টদের থেকে আপনার পার্থক্য কি হবে ?
@আতিক রাঢ়ী,
এই মেরেছে। এসব কি বলছ? বিজ্ঞান অভিজ্ঞতাবাদের অংশ না? তুমি ত অভিজ্ঞতাবাদটা ঠিক, সেটা আগে বুঝবে ত!
তুমি যা বলছ, সেটাই আমি বলছি। শুধু, অভিজ্ঞতাবাদের যায়গাটা বাস্তববাদ (রিয়ালিজম হবে)।
বিজ্ঞান=অভিজ্ঞতাবাদ বা সূত্রের উতপত্তি।
যা সমাজে খাটে না ( কারন তুমি যা বললে-মানুশ অনু ্পরমানু না)।
তাই সমাজ বিশ্লেশনে অভিজ্ঞতাবাদ এবং বাস্তববাদ দুটোই লাগে। এটাই ছিল আমার আর্টিকল।
তুমি সব বিতর্কের শেশে সীতাকে ্রামের মাসী বানিয়ে দিলে। এটা কি ঠিক হল?
@আতিক রাঢ়ী,
মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমি বাস্তদবাদকে অভিজ্ঞতাবাদের একটা অংশই মনে করি। আর আপনি এদুটিকে পৃথক মনে করেন। আপনার বোঝায় ভুল হচ্ছে বা আমি ঠিকমত বোঝাতে পারিনি। বিজ্ঞান অভিজ্ঞতাবাদের অংশ না এটা মনে করার কোন কারন নাই।
আমি বলেছি পার্থক্যটা মাত্রাগত।
বাস্তববাদ বলতে আপনি বোঝাতে চাইছেন, দ্বান্দিক সত্যবিহীন সত্য। যা ঈশ্ব্ররের বানী
ছাড়া আর কোথাও আছে বলে আমি মনে করি না। আশাকরি ধৈর্য্য হারাবেন না। লোকে নানা কথা বলবে।
@আতিক রাঢ়ী,
তুমি ছাড়া আর কোন কোন দার্শনিক ্মনে করে রিয়ালিজম এম্পিরিসিজমের অন্র্ভুক্ত?
দু একটা নাম বলবে? রিয়ালিজম শাখাটার জন্মই হয়েছে এম্পিরিসিজমের দর্শনের বিপরীতে। কারন এখানে মূল উপপাদ্য ” নিরেপেক্ষ সত্যর অস্তিত্ব”-যা পর্যবেক্ষন নিরপেক্ষ। আর অভিজ্ঞতাবাদ হল পর্যবেক্ষন সাপেক্ষ সত্য-কারন মানুশের পর্যবেক্ষন থেকেই এই সত্যের জন্ম।
বাস্তববাদের শখানে্ক শাখা আছে। এটি দর্শন শাস্ত্রএর সব থেকে বেশী চর্চিত শাখা বর্তমানে ( স্টানফোরড এনক্লোসাইপেডিয়া)-সব থেকে বিতর্কিত ও।
বৈজ্ঞানিজ বাস্তবতাবাদ ও যেমন আছে, তেমন ধর্মীয় বাস্তবতাবাদ ও আছে। চাদ স্পেরিকাল বা একটি গোলক। এটি বাস্তববাদ এবং অভিজ্ঞতাবাদ দুটি সত্যেরই অংশ হতে পারে-কারন মানুশ দেখার আগেও চাঁদ গোলক ই ছিল। কিন্ত তার জন্যে বাস্তবতাবাদ অভিজ্ঞতাবাদের অংশ হয় না।
বাস্তববাদ অভিজ্ঞতাবাদের অংশ হলে পোস্ট মডার্ণ দর্শন হাওয়া হয়ে যাবে।
@আতিক রাঢ়ী,
নীলস বোরের সাথে আইনস্টাইনের বির্তকতো এই বিষয় নিয়েই ছিলো।
মার্ক্স যে বলেছিলেন এযাবৎ দর্শনের কাজ সীমাবদ্ধ ছিল বাস্তবতাকে কেবল ব্যাখ্যা করা, সময় এসেছে বাস্তবতাকে পরিবর্তনের। পর্যবেক্ষন নিরেপেক্ষ সত্যকে আপনি ততখন কাজে লাগাতে পারবেন না যতক্ষন না তা অভিজ্ঞতার আওতায় আসবে। তাই আমি কিছুতেই বুঝতে পারিনা দ্বান্দিক বস্তুবাদ ঐতিহাসিক ভিত্তি ছাড়া কিভাবে কাজ করবে।
ভাল, তবে এটা একটু পড়েবন।
http://www.ganadabi.in/works1/whysuci_b.pdf
@Ranajn,
আপনি নিজে আপনার দেওয়া প্রবন্ধটি পড়েছেন কি?
দেখুন আপনার প্রবন্ধ বিশ্বাস করে লেনিন দ্বান্দিক বস্তুবাদ মেনে কাজ করেছেন-লেনিন বাদ মার্কসবাদের এক্সটেনশন। এটাই ত একটা বিশাল ভুল-যা আমি আতিকের একটা মন্তব্যে লিখলাম। ঐতিহাসিক বস্তুবাদ আদ দ্বান্দিক বস্তুবাদ একই জিনিস-এই ভুলটা আপনার প্রবন্ধে ইম্পিসিট ভাবে রয়ে গেছে।
ঐতিহাসিক বস্তুবাদ-একটি সামাজিক সুত্র, যা ইতিহাসের গতিকে বিশ্লেশHন করে। দ্বান্দিক বস্তুবাদ কোন সূত্র না-তা বিশ্লেশHনের সার্বিক পদ্ধতি যা যেকোন বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেই খাটে। দ্বান্দিক বস্তুবাদ থেকে ঐতিহাসিক বস্তবাদের উত্তরন নিয়ে এঙ্গেলেসএর যে প্রথম রচনাটি ছিল, তাতে উনি কতগুলি বেসিক ভুল করেছেন। প্রথ্ম ভুল হচ্ছে, ইতিহাসে স্ট্রাকচার আছে ধরে নেওয়া। যাইহোক, এই নিয়ে স্যার কার্ল পপারের অনেক লেখা আছে-আমি নিজের লেখারই কিছু জিস্ট দিচ্ছিঃ
http://biplabpal2000.googlepages.com/MarxistScience.pdf
আমি কোথাও লিখেছি এটা বাতিল? দ্বান্দিক বস্তুবাদ বিজ্ঞানে হাইপোথেসিস এবং নাল হাইপোথেসিস টেস্টিং এর মাধ্যমে আসে। দ্বান্দিক বস্তুবাদ বাতিল বললে বিজ্ঞানের সার্বিক পদ্ধতিই বাতিল বলে দাবি করতে হয়। কিন্ত এখানে দুটো জিনিস আপনি মিস করলেন
(১) লেনিন বা কাউটস্কি বা মাw-কেw ই দ্বান্দিক বস্তুবাদের ধার ধারেন নি। তারা ঐতিহাসিক বস্তুবাদকে দ্বান্দিক বস্তুবাদের প্রতিস্থাপক বলে, সমস্ত কাজ করেছেন।ফলে তাদের কাজের সবটাই ছিল ইনডাকশনিজম। সেখানে দ্বান্দিক বস্তুবাদ আসে নি। লেনিনের ওই বিখ্যাত ( বা আমার মতে বিশুদ্ধ ভুল) সাম্রাজ্যবাদের তত্ত্বে যে ৫ টি থিসিস আছে-তার এন্টি থিসিস বা নেগেশন নিয়ে লেনিন কটা লাইন লিখেছেন আমাকে একটু দেখাবেন ত- এই এক্সারসাইজটা করলেই দ্বান্দিক এবং ঐতিহাসিক বস্তুবাদের মধ্যে পার্থক্যটা যে এপল এবং অরেঞ্জের সেটা বুঝবেন
(২) দ্বিতীয় ভুলটা আপনি যেটা বুঝতে পারেন নি-সেটা হল রিয়ালিজম বনাম এম্পিরিসিজমের পার্থক্য। এম্পিরিল্যাল ট্রুথ ছাড়া দ্বান্দিক বিশ্লেশHন অচল।
উদাহরন দিচ্ছিঃ
আমি ঐশ্বরিয়ার সৌন্দ্র্রয্যে মু্গ্ধ|
এটি একটি রিয়ালিস্ট ট্রুথ বা বাস্তববাদি সত্য। এখানে দ্বন্দ কোথায়? বাস্তব বাদি সত্যে দ্বন্দ হয় না। দন্দ হয় অভিজ্ঞতাবাদি সত্যে-যেমনঃ
অধিকাংশলোক ঐশ্বরিয়াকে সুন্দরী বলে মনে করে।
এই বাক্যে দ্বন্দ আছে। কারন এর নাল হাইপোথিসিস টেস্ট করা যায়।
মুশকিল হচ্ছে সমাজ বিশ্লেশHনের বা ইতিহাস বিশ্লেশHনের পুরোটা কখনোই অভিজ্ঞতা বাদি দর্শন হতে পারে না।
উদাহরন।
বিম্বিসার জৈন ধর্ম গ্রহন করে রাজ্যত্যাগ করেন।
উক্ত ঘটনা টি মৌর্য্য সাম্রাজ্যের জন্যে গুরুত্ব পূর্ণ ছিল-কিন্ত তা এই সামাজিক সুত্রের ছকে পড়ে না।
আর বাস্তব বর্তমান উদাহরন? আমার আলোচনাটা পুরো এটা নিয়েই। যে সামাজিক বাস্তবতা সামাজিক সূত্রর থেকেw গুরুত্বপূর্ণ। কারন সমাজ একটা বিশৃঙ্খল সিস্টেম।
@বিপ্লব পাল,
আমর কিন্তু উদাহরনটা ঠিক মনে হচ্ছে না।
আমি ঐশ্বরিয়ার রূপে মূগ্ধ——–এখানে আমি কিন্তু শিশু না। এই মূগ্ধতার পেছনে
যা ইন্ধন দেয় সেই অভিজ্ঞতাই কিন্তু আমাকে চালিত করে। এটা আকর্ষিক কোন ব্যাপার না। নারী এবং পুরুষের পরস্পরের প্রতি অকৃ্ষট হবার নজিরে ইতিহাস ভরপুর।
আমরা যারা বস্তুবাদী তারাতো মনে করি বস্তু থেকেই ভাবের উৎপত্তি। তাহলে যখন বলা হয় পরিবেশ আমাদের আচরনকে নিয়ন্ত্রন করে তখন ভুলটা কোথায় হোচ্ছে ?
জেনেটিক কোড, যা এক পুরুষ থেকে অন্য পুরুষে প্রবাহিত হয়, সেই কোডিংটাকি পরিবেশের সাথে সংগ্রামের ফলেই পূর্ব পুরুষে সন্নিবেশিত হয়ে থাকে না ? জেনেটিক কোড
পরিবেশের সাথে সংশ্লেষনের ফলে উদ্ভূত হবে অথবা স্রষ্টা দ্বারা উদ্ভূত হবে। এ দুয়ের মাঝে আর কি ভাবে জেনেটিক কোডের উদ্ভব সম্ভব হতে পারে ?
@আতিক রাঢ়ী,
এখানে দ্বন্দটা কোথায় সেটা আমি দেখাতে বলেছি? যে বাক্যের নেগেশন হয় না, যা একান্তই সাবজেক্টিভ-সেই রিয়ালিটিকে দ্বন্দ ধরে কি করে?
আর ব্যাখ্যাটা ঠিক না। ঐশ্বরিয়াকে অনেকের ভাল লাগে, অনেকের লাগে না। দুই জমজ ভাই এর একজনের ভাল লাগতে পারে, একজনের নাও লাগতে পারে। তাই অভিজ্ঞতাবাদ দিয়ে এর ব্যাখ্যা হয় না। কারন, সাবজেক্ট এখানে ‘আমি’-একটি সিঙ্গল পুরুষ। তোমার ওই ব্যাখ্যা চলবে আমি দ্বিতীয়যে ব্যাক্যটা দিলাম “অধকাংশ পুরুষ ঐশ্বরিয়াকে পছন্দ করে”-এটার ওপর। তাই ওটা অভিজ্ঞতাবাদ। প্রথমটা রিয়ালিজম।
এই দুটো বাক্যের মধ্যে পার্থক্য এখনো বুঝে উঠতে পার নি।
@বিপ্লব পাল,
না এখনও বুঝিনি। আমার প্রশ্নটা ছিলো অভিজ্ঞতাবাদের বাইরে জ্ঞানের কোন শাখা আছে কিনা ? শতাংশের বিচারে ১% ও যদি ঐশ্ব্রিয়াকে পছন্দ করে তবে তার পিছনেও কাজ করবে ঐ অভিজ্ঞতাবাদ।
@আতিক
তোমার ওপরের বাক্যটা অভিজ্ঞতাবাদ। কিন্ত “আমি গোলাপ পছন্দ করি” “খাসির মাংস খেতে ভালবাসি” ” ঐশ্বরিয়াকে পছন্দ” এগুলোর ফলসিফিকেশন হয় না-তাই এগুলো রিয়ালিজমের অন্ত্র্রভুক্ত।
৯৯% পুরুশ ঐশ্বরিয়া প্রেমী-এটা অভিজ্ঞতাবাদ। কারন, এটার ফলসিফিকেশন হয়। আমরা স্যাম্পল নিয়ে দেখতে পারি-কত % পুরুশ ঐশ্বরিয়াকে পছন্দ করে।
কিন্ত “আমি ঐশ্বরিয়াপ্রেমী” এটার ফলসিফিকেশন হয় না। সাবজেক্টিভ স্টেটমেন্ট-তাই রিয়ালিজমের অন্ত্র্রভুক্ত।
@আতিক
তোমার প্রশ্ন শুনে আমার মনে হচ্ছে অভিজ্ঞতাবাদ বনাম বাস্তববাদ নিয়ে আমাকে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রবন্ধ নামাতে হবে। নইলে মার্কসবাদের অনেক কিছুই পরিস্কার হবে না। সমস্যা হচ্ছে এসব নিয়ে মুক্তমনার পাঠকদের উতসাহ কম। সবাই আস্তিক নাস্তিক বিতর্কে বেশী অংশ নিচ্ছে। অথচ বস্তুবাদের মূল দুটি শাখা-এই অভিজ্ঞতাবাদ এবং বাস্তবতাবাদ ঠিক ঠাক না বুঝলে, রাজনীতি থেকে ধর্ম সবকিছুই লোকে অর্ধেক বুঝবে।
@বিপ্লব পাল,
অভিজ্ঞতাবাদ ও বাস্তববাদ নিয়ে আপনার পূর্নাঙ্গ লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
আশাকরি আচরনের উপর পরিবেশের প্রভাব, জীনকোডের গঠনে অভিজ্ঞতার ছাপের বিষয় গুলো পরিষ্কার হবে।
@বিপ্লব পাল,
দন্দ্বতো একটা বহমান প্রক্রিয়া। এটা কোন বস্তুর বিকাশের পূর্বশর্ত হিসাবে কাজ করে। এই বাক্যে – আমি ঐশ্বরিয়ার রূপে মূগ্ধ- প্রথমত এই মূগ্ধতায় পৌছানোর পূর্বে
নারীর আদর্শ রূপ সম্পর্কে আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতার সাথে অন্যান্ন নারী মূর্তির দ্বন্দ থেকে, সিন্থেসিস হচ্ছে বর্তমান মূগ্ধতা।
নারীর রূপ সম্পর্কে আপনার অভিজ্ঞতার পরিবর্তন ও নতুন নারী মূর্তির সাথে ঐ অভিজ্ঞতার দ্বন্দ থেকে আপনার ঐশ্বরিয়ার প্রতি মূগ্ধতা কমে গিয়ে অন্য নারীর প্রতি বেড়ে যেতে পারে। নতুন কোন নারীর রূপে মূগ্ধতাই হচ্ছে এই বাক্যের নেগেসন।
আমি আসলেই সমাজতন্ত্র বা মার্ক্সবাদের জটিল তত্ত্ব জানি না, তবে খুব সাধারনভাবে মনে হয় যে অন্তত বাংলাদেশে এগুলির প্রতি মানুষ সহজাতভাবেই আকৃষ্ট হয় না বা হবেও না ধর্মের কারনেই।
সমাজতন্ত্র বা মার্ক্সবাদ আসলে এখনো বেচে আছে কিনা তাও প্রশ্নাতীত নয়।
দ্বান্দিক বস্তুবাদ আর ঐতিহাসিক বস্তুবাদের মধ্যে মূল বিরোধটা কোথায় ? আরেকটু বিস্তারিত ভাবে বললে বাধিত হব।
অভিজ্ঞতাবাদের বাইরে জ্ঞানের কোন শাখা আছে কি ? আশাকরি দু-একটা উদাহরন দিবেন।
দ্বন্দিক বস্তুবাদ যতটুকু অধ্যায়ন করার সুযোগ হয়েছে তাতে দেখেছিঃ
# বৈপরিত্যের ঐক্য
# পরিমানগত পরিবর্তন গুনগত পরিবর্তন ঘটায়।
# নেতির নেতি করন।
উপরের সুত্র তিনটা মার্ক্স এর দ্বন্দ তত্ত্বের মূল তিনটা সূত্র।
এছাড়া প্রতিটি দ্বন্দে দুটি দিক থাকে। একটা শক্তিশালি দিক অন্যটা দূর্বল দিক।
প্রয়জনীয় শর্তের উপস্থিতীতে শক্তিশালীদিক দূ্র্বল দিকে পরিবর্তিত হতে থাকে।
আরো বলা হয়েছে এই শর্ত গুলো দুই ধরনের এক আভ্যন্তরিন শর্ত, দুই বাজ্যিক শর্ত। তবে দ্বন্দকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে আভ্যন্তরিন শর্তই মূখ্য। যেমন ডিম ও পাথরের ক্ষেত্রে যদি বাজ্যিক শর্ত হিসাবে উভয়কে তা দেয়া হয় দেখাযাবে
আভ্যন্তরিন শর্তের কারনে কেবল ডিম ফুটেই বাচ্চা বের হছে।
এর কোন সুত্রকেই আমর এখনো বাতিল বলে মনে হচ্ছে না। অর্থনিতীকে সর্ব অবস্থায় ভিত্তি কাঠামো বলা হয়েছে বলে আমার মনে হয়না। আমর এই মুহূর্তে ঠিক মনে পরছে না কোথায় , তবে এঙ্গেলস মার্ক্স এর মৃত্যুর পরে এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন – আমি বা মার্ক্স কোথাও বলিনি অর্থনিতী হচ্ছে ভিত্তি কাঠামো- তবে এটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নির্ধারক হয়ে থাকে।
উদাহরন হচ্ছে ধূমপান একটা সংস্কৃতি যা অর্থনিতীকে অনেক সময় নিয়ন্ত্রন করে। আবার প্রথম অবস্থায় বিড়ি বা চা কিন্তু ফ্রি বিতরন করা হয়েছিলো বাজার সৃষ্টির জন্য।
সমাজ বিকাশের স্থীর সুত্র ধরে যারাই আগাতে চাইবেন তারা কোন তন্ত্রেই সফল হতে পারবেন না। তবে মার্ক্সকে আমার এখনো প্রবল ভাবেই প্রাসঙ্গিক মনে হয়।
বাস্তব অবস্থাকে বিশ্লেষন করতে দ্বন্দিক বস্তুবাদের চাইতে অধিকতর কার্যকর কিছুর সন্ধান যেহেতু এখনো পাওয়া যায়নি তাই এটাকে ফেলে দেবার সময় এখনো আসেনি।
আপনি বলেছেন ভূমি সংস্কারের জন্য কারো হাতে গ্রামীন শিল্পের বিকাশের জন্য পুঁজি ছিলোনা। আমদের এপারে বাংলাদেশে কিন্তু কোন প্রকার ভূমি সংস্কার অদ্যাবধি হয়নি, তার পরেও কিন্তু গ্রামীন শিল্পের বিকাশ হয়নি বরং তা কেবল হারিয়েই গেছে।
মার্ক্সবাদী লিটারেচারের কোথায় সার্বজনীন সামাজিক সুত্রের দাবি করা হয়েছে – দয়াকরে বললে বাধিত হব। আমার জানা মতে মাও, মার্ক্সের দ্বন্দ তত্ত্বের তৃ্তীয় সুত্রটির সাথে দ্বীমত করতেন। তিনি বলেছিলেন আসলে প্রত্যেক নেতি করনি আবার একাধারে একটা ইতি করনও বটে। সুতরাং কোরানের সাথে এর বিস্তর পার্থক্য আছে। মার্ক্সতো বলেছিলেন ইংল্যান্ডেই প্রথম সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব হবে। কিন্তু তাতো হয়নি। দ্বন্দতত্ত্ব যে বাস্তবকে বিশ্লষনের ক্ষেত্রে একেবারে অভ্রান্ত না তার প্রমানতো মার্ক্স নিজেই রেখে গেছেন। সুতারং এটা কোনমতেই কোরানের দাবির সম গোত্রীয় না।
বিকলাঙ্গ শিশু ও মা এর যে উদাহরন আপনি দিয়েছেন সেটা এদের ক্ষেত্রে ইচ্ছা নিরপেক্ষ ঘটনা। আর যে সব বাবা-মা মেয়ে সন্তান কে বেশ্যাবৃত্তিতে যেতে দিতে বাধ্য হচ্ছে সেটা মার্ক্সের বলা সেই ভিত্তি কাঠামো, আর উপরি কাঠামোগত সম্পর্কের ফলে।
প্রলেতারিয়েতের যে ব্যাখ্যা আপনি দিলেন তা কি খন্ডিত ব্যাখ্যা। যে কিনা একান্ত ভাবে শ্রম বিক্রির উপরে জীবন ধারন করতে বাধ্যা হয় তাকেই প্রলেতারিয়েত বলা হয়। সফটওয়্যার ইনজিনিয়ারের যে বেতনের কথা আপনি বললেন তাতে একমাসের আয় দিয়ে সারা বছর সে আয়েসে চলতে পারবে। এবং তার অতিরিক্ত আয় সে লগ্নি করে মুনাফা আহরন করতে পারে। সুতরং সে কিন্তু আর প্রলেতারিয়েত থাকেনা।
অন্ধকার দূর করার মত আলো কিন্তু আপনার লেখাতে পাওয়া গেল না। বিশেষত আশ্বস্ত হবার মত কোন উপায় কিন্তু এখনো পাইনি। যন্ত্রের অধিকতর প্রয়োগের মাধ্যমে উৎপাদন না হয় বাড়িয়ে নেয়া গেল। কিন্তু ভোগের অধিকার থেকে জনগনের যে বঞ্চনা তা থেকে উত্তরনের কোন অধিকতর যুক্তিগ্রাহ্য উপায় আপনি দেখাতে পেরেছেন বলে আমার এখনো মনে হচ্ছেনা।
উন্নতবিশ্ব যন্ত্রের প্রয়োগের মাধ্যমে প্রলেতারিয়েত মুক্ত হয়ে গেছে- এটা হচ্ছে অভিঞ্জতাবাদের অভাবজাত দেখা। আংশকে সমগ্র আর বৃক্ষকে অরন্য মনে করার কারন এই অভিঞ্জতাবাদকে উপেক্ষা করা। ওয়াল মার্টের আপনি যা দেখেছেন তাই সব না। আমাদের বাংলাদেশে পোষাক শিল্পে ওয়াল মার্টের কাজ যে সব শ্রমিকরা করে তাদের অবস্থা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। সকাল ৮ টা থেকে রাত ১১ টা আর আছে একদিন বিরতিতে সারা রাত ডিউটি। ফ্যাক্টরি গুলোর গেটে তালা মারা থাকে। ফলে আগুল লাগলে অকাতরে মারা পরে তারা। দুপুরে মেয়েরা খেতে পায় কেবল শাক আর ভাত। উন্নত বিশ্ব এভাবেই তৃ্তীয় বিশ্বকে প্রলেতারিয়েতে ভরে দিয়ে নীজেরা প্রলেতারিয়েত শূ্ন্য হচ্ছে। বেকার ভাতাটা আসে কোথা থেকে এটাও ভাবা জরুরী। লেলিন বলেছিলেন – পুঁজি আজকে আর কোন দেশের সীমার মধ্যে আবধ্য নেই। পুঁজিবাদের সর্বোচ্চরূপ হচ্ছে সাম্রায়াজ্যবাদ । আমরা বাস করছি সাম্রাজ্যবাদের যুগে। এই সাম্রাজ্যবাদ ব্যাপারটাকে উপেক্ষা করলে উন্নত বিশ্বকে প্রলেতারিয়েত শূন্য মনে হবে। দেখুন মেক্সিকান শ্রমিকদের কথা বললেন। কেন তাদেরকে পালিয়ে আসতে হচ্ছে আমেরিকাতে ?
মুক্তবাজার কেন শুধু পন্য ও পুঁজির জন্য মুক্ত ? কেন শ্রমের চলাচল অবাধ না ? কারন সাম্রাজ্যবাদ। কারন জোর যার মুলুক তার। আপনি যদি জোর পয়দা করতে পারেন, দর-কষাকষি করতে পারবেন নচেত না।
পুঁজিবাদের হাত থেকে বাঁচার উপায় এখনো মার্ক্সবাদ। হ্যা স্বীকার করি সীমা- বদ্ধতা আছে। কিন্তু আপনি যে ভাবে সেই সীমাবদ্ধতা থেকে উত্তরনের কথা বলছেন তা কিন্তু আসলে মেনে নেয়া। বলেছেন – বেঁচে থাকার বাস্তবতা সমাজে সাম্য ও শোষনহীনতার চাইতে বেশী গুরুত্বপূর্ন। এই সিদ্ধান্ত ও সার্বজনীন না। আমরা ত্রিশ লক্ষ প্রানের বিনীময়ে স্বাধীন রাষ্ট্র পেতে চেয়েছিলাম ঐ স্পেকুলেটিভ প্রাপ্তির আশায়।
আমিও মনে করি মার্ক্সবাদের সমস্যা উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার আবহ সৃষ্ট করতে না পারা। আমলা তন্ত্রকে নিয়ন্ত্রনে করার ক্ষেরে ব্যার্থতা। আন্তর্জাতিকতাবাদ ও জাতীয়তাবাদের মধ্যে সমোঝতা করতে না পারা। জনগনের সতস্ফুর্ততাকে
উৎসাহিত করতে না পারা।
অরূন্ধুতী রায় এর সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে দেখলাম উনি বলেছেন- “অবস্থা এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে আমরা যদি ভোগ কমিয়ে দেই তবে অর্থনিতী বাঁচবেনা, আবার ভোগ চালিয়ে গেলে প্রতিবেশ বাঁচবে না।”
আসলেই সময় এসেছে নতুন পথের সন্ধান করার। কিন্তু সেটা মার্ক্সবাদের সিমাবদ্ধতার জন্য একে ছুড়ে ফেলে দিয়ে নাকি এই সীমাবদ্ধতা গুলোকে কাটিয়ে উঠার মধ্যদিয়ে ঘটবে সেটার উত্তর লুকিয়ে আছে অনাগত কালের মধ্যে। এখনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলার জন্য সময়টা একটু আগে হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।
@আতিক রাঢ়ী,
সার্বজনীনতা এবং ইন্ডাকশনিজম বা মনিজম, অভিজ্ঞতাবাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ। উদাহরন দিচ্ছি-উদবৃত্ত শ্রম বা উদবৃত্ত মূল্যের সাথে শোশHনের যে সম্পর্ক, ্
্মার্কস কি কোথাw লিখেছেন, যে এই এই ক্ষেত্রে এটাকে শোশHন বলা যাবে, এই এই ক্ষেত্রে এটা শোশHন না? আমি যে উদাহরনটা দিয়েছি, সেখানে শোশH নের সূত্র খাটবে না-এমন কিছু মার্কসবাদে আছে?
এরকম কিছু উনি লেখেন নি।
আমরা যখন কিছু এম্পিরিক্যাল সূত্র তৈরী করি-সব সময় তার সীমাবদ্ধতা আগে লিখি, কারন সেটা না করলে ধরে নেওয়া হবে, তা সার্বজনীন।
@বিপ্লব পাল,
বিপ্লব দা, তুমি করে বলছেন, ভাল লাগছে। এই সম্পর্কটা আলোচনা চালিয়ে যাবার জন্য ও ভাল। আমি খুব খারাপ রকম ব্যাস্ততার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি ফলে খুব ভাল ভাবে আপনার এই লেখাটা পড়তে পেরেছি সেটা বলা যাবেনা। উত্তর ও লিখেছি অফিসের কাজের ফাঁকে। তার পরো কিছু মৌ্লিক প্রশ্নে বিতর্ক থেকেই যাচ্ছে। আর হতাশ হচ্ছি এমন একটা গুরুত্ত্বপূর্ন প্রশ্নে পাঠকদের অংশগ্রহনের অনীহা দেখে। এখানে ভুতের (ধর্মের) সাথে লড়াইএ সবাই যতটা উৎসাহী, ভবিষ্যতের সাথে লড়াই এ ততটা না।
যাই হোক, আলোচনায় ফিরে আশি। নিউটনের মধ্যাকর্ষন সুত্র গুলোর কথাই ধরি। এগুলোর সীমাবদ্ধতার ব্যাপারে নিউটন কি লিখেছিলেন আমি জানিনা। তবে আমি মনেকরি, সীমাবদ্ধতা গুলো নিউটনকেই বলে যেতে হবে, এমন হওয়া বোধহয় জরুরী না।
একাজটা পরবর্তি্রাও করলে ক্ষতি নেই।
পন্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে উদবৃত্ত মূল্য কিন্তু সার্বজনীন। কিন্তু এটা কখন শোষন হবে বা হবে না সেটা অবশ্যই আপেক্ষিক।
@আতিক রাঢ়ী,
আবার সেই একই ভুল হল
(১) দ্বান্দিক বস্তবাদ তখনই চলে যখন সামাজিক সূত্রটা বা স্ট্রাকচার বাস্তবে আছে। সমাজ বিশৃঙ্খল সিস্টেম হওয়ার জন্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই, এটা সত্য না।
(২) সমাজ বিজ্ঞান বা যেকোন বিজ্ঞানের পদ্ধতিতেই নাল হাইপোথিসিস আছে। বৈজ্ঞানিক সূত্রকে কেও ফেলে দিচ্ছে না কি? মার্কসবাদকে ফেলা হচ্ছে কারন মার্কসবাদ ই পরবর্তী কালে দ্বান্দিক বস্তুবাদ অনুসরন করে নি। আমার লেখাটা আরেকটু ভাল করে বোঝঃ
@আতিক রাঢ়ী,
আমার প্রবন্ধ তুমি বেশী টাইম দিয়ে পড় নি। ফলে বোঝা ভুল হচ্ছে। আমি কি লিখেছি আগে সেটা ভাল করে বোঝঃ
একজন শ্রমিকে উৎবৃত্ত ্মূল্য দেওয়ার কথা মার্কসের কোন রচনায় এসেছে? এগুলো পরবর্তী কালে মার্কসবাদে ঢুকেছে -কিন্ত এসব ত কুকুরের লেজ সোজা করা। চায়ের দোকানের গরীব মালিক মার্কসবাদি তত্ত্বে আজও মালি্ক! এররকম হাজারটা উদাহরন আমি দিতে পারি।
আসলে তুমি রিয়ালিজম বা বাস্তববাদ নিয়ে কিছু পড়াশোনা কর আগে। তাহলে আমার প্রবন্ধটা আরো ভাল বুঝতে পারবে।
@আতিক রাঢ়ী,
তাই? যারা আমেরিকাতে থাকে, তাদের কজনের বাড়িতে কাজের মাসি আছে? আমরা সবকিছু নিজেরাই করে নি-কারন এখানে পরিস্কার করা বা রান্না করা সহজ।
এটাত ধনতন্ত্রে শ্রমিকদের দুরাবস্থার কথা লি্খলে। এই দুরাবস্থা এখন নেই-এমন কিছু কি লিখেছি না কি আমি? সেরকম লিখলে ত দাবী করতাম ধণধন্ত্রই আমাদের সুখী করে দিয়েছে। সমাজতন্ত্রের দরকার নেই। আসলেই তুমি প্রবন্ধটা মনযোগ দিয়ে পড় নি।
লেনিনের ওই তত্ত্বটার জনক হবসন, লেনিন না। হবসন
১৯৩০ সালে, তার নিজের তত্ত্ব বাতিল করেন। কারন
দেখা গেচ্ছে উন্নত বিশ্বের লোকে ৯০% উন্নত বিশ্বেই বিনিয়োগ করে-১-৫%
অনুন্নত দেশ -যাকে কলোনী বলছ তাতে যায়। ঐ তত্ত্ব সংখ্যাতত্ত্বের বিচারে
সম্পূর্ণ ্ভুল।
কারন মেক্সিকো তে ক্রীশ্টান দের প্রদুর্ভাবে প্রবল জন সংখ্যা বৃদ্ধি। সেই অনুপাতে তারা উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারে নি। বাংলাদেশ থেকে লোকে কেন অন্য দেশে পালায়? তার জন্যে আমেরিকা দায়ী না কি? এটা হাস্যকর যুক্তি হচ্ছে না?
তাই? আমি ত স্পেশালিস্ট লেবার বা এইচ ওয়ান বিতেই আমেরিকাতে ্পেশাদার জীবন শুরু করি-স্পেশালিস্ট লেবার আমেরিকা সব সময় নিচ্ছে। ইদানিং চাষের জন্যে আনস্কিল্ড লেবার ও নিচ্ছ। সুতরাং তোমার এই বক্তব্য ঠিক না।
@বিপ্লব পাল,
আপনার কিছু উদাহরনে মনে হয় একটু ফাক আছে, নিজে আমেরিকায় থেকেছি সে অভিজ্ঞতায় একটু বলি।
“যারা আমেরিকাতে থাকে, তাদের কজনের বাড়িতে কাজের মাসি আছে? আমরা সবকিছু নিজেরাই করে নি-কারন এখানে পরিস্কার করা বা রান্না করা সহজ।”
– এটা আংশিক সত্য। তবে সাথে সাথে এও যোগ করতে হবে যে কাজের মাসীর বেতন দেবার মতন ক্ষমতা কম লোকেরই থাকে। আমাদের দেশের মত ব্যাপক শ্রেনী বৈষম্য থাকলে সেটা মনে হয় না সম্ভব হত। আমি আজ বাড়িতে একটা কাজের লোক রাখলে তাকে অন্তত আমার বেতনের প্রায় আধা বেতন দিতে হত। পার্ট টাইম করালেও দেখা যেত মাসে আমার বেতনের বড় একটা অংশ্ চলে গেছে। আমিএ সেটা দেব নাকি কোনদিন? দেশে থাকলে অনুপাতটা হত হয়ত ৩০ ভাগের ১ ভাগ।
“আমি ত স্পেশালিস্ট লেবার বা এইচ ওয়ান বিতেই আমেরিকাতে ্পেশাদার জীবন শুরু করি-স্পেশালিস্ট লেবার আমেরিকা সব সময় নিচ্ছে। ”
– এর অন্য দিক ও আছে। এইচ ওয়ান বি বাংলাদেশে বসে আমি পাওয়ার আশা করতে পারি শুধুমাত্র ব্যাতিক্রম ক্ষেত্রে যা মোটেও স্বাভাবিক না। যেমন নব্বই এর শেষে আইটি ফীল্ডে খলামকুচির মত লোকে ভারত/চীন থেকে গেছে। একে মোটেও স্বাভাবিক বলা চলে না।
আমেরিকায় অর্থনীতির ঘোর সুদিনেও অতি অল্প দুয়েকটি ফীল্ড ছাড়া (যেমন নার্সিং) এমন কোন লেবার শর্টেজ হয় না যাতে তাদের বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান…। থেকে স্কীল্ড লেবার নিতে হয়। তাই আমি তাদের দোষও দেই না। নিজের লোককে চাকরি না দিয়ে বিদেশী আনবে কোন আক্কেলে?
এইচ ওয়ান মানেই স্থায়ীবাহবে থাকার ব্যাবস্থা নয়। যাদের এইচ ওয়ান টু গ্রীন কার্ডের অভিজ্ঞতা আছে তারা জানেন ব্যাপারটা আসলে তত সোজা না। এমনকি আমেরিকাতে পড়াশুনা করেও এইচ ওয়ান পাওয়া অনেক সময় ভাগ্যের ব্যাপার হয় কোটায় না পড়ার জন্য। যাহোক, সে নাহয় হল, এরপর গ্রীন কার্ড পাওয়া মানে হল এক বিশাল ধৈর্য্য পরীক্ষা। অত্যন্ত সময় সাপেক্ষ ব্যাপার (আমার ধারনা ইচ্ছাকৃতভাবেই এটা করা হয় যাতে অনেকে এই সময়ে ঝরে যায়)। একজন ভারতীয় বা চৈনিকের ৬/৭ বছর লেগে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক। আর এই সময়ের মধ্যে অর্থনীতি এখনকার মতন টালমাতাল হলে তো কথাই নেই। আরেকটি চাকরী যোগাড় না করতে পারলে বাড়ি ফেরত যাও। আমি গত একবছরেই কয়েকজন ভারতীয়/বাংলাদেশী/পাকি কে দেখেছি বাধ্য হয়ে দেশে ফেরত যেতে। যারা একটু বেশী সতর্ক তারা কানাডায় আগে ব্যাবস্থা করে রাখায় রক্ষা। কানাডায় এই শ্রেনীর একটা বড় প্রতিনিধি আছেন যারা বিরক্ত হয়ে চলে এসেছেন। অনিশ্চয়তা অনেকেই পছন্দ করেন না।
তাই এই এইচ ওয়ান কে অনেকেই বলেন একটা প্রলোভন। জীবনের সবচেয়ে উজ্জ্বল সময়টাকে কায়দা করে ডাকাতি করে নেওয়া। হ্যা, তারা কাউকে জোর করছে না থাকতে। তবে নিজে তো থেকেছি, একবার এদেশে পদধুলি দিলে নরম কাদায় পা আটকাবার সম্ভাবনা অত্যন্ত প্রবল।
@আদিল মাহমুদ,
সেটাই ত আমি প্রবন্ধে লিখেছি যে একটা দেশ উন্নত হওয়ার সাথে সাথে প্রলেতারিয়েত কমে। আরেকটা কথা ভাবুন। এখানে ক্লীন করার জন্যে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার, ওয়াশিং, ড্রাইয়ার-এই যন্ত্রগুলোর ও অনেক অবদান আছে প্রলেতারিয়েত দের নিশ্চিহ্ন করার জন্যে।
@আদিল মাহমুদ,
দেশে থাকলেও সেই চুরি করত।
বিপ্লব দা, আমার মনে হয়, প্রলেতারিয়েত মানে ঘর মোছা বা ঝাড়ু দেয়া জাতীয় কাজ যারা করে সেরকম কিছু না বরং পুনরউৎপাদনে নিয়োগ করার মত একমাত্র শ্রম ছাড়া আর কিছু যাদের অবশিষ্ট থাকেনা তাদের কেই প্রলেতারিয়েত বলা হয়েছে। কোন সমাজে সেটা ঝাড়ু দেয়ার কাজ হতে পারে আবার কোন সমাজে সেটা গাড়ী চালনার কাজ হতে পারে। এটা ঐ নিদৃষ্ট সমাজের জীবন যাত্রার ব্যায়ের উপরে নির্ভর করে।
@বিপ্লব পাল,
হবসনের কথা সাথে আপনি যেহেতু একমত পোষন করছেন তবে ১ম ও ২য় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে আপনার মূ্ল্যায়ন কি ? হালের ইরাক যুদ্ধকে আপনি কি ভাবে দেখেন ? সংখ্যা তত্ত্বমতে এইসব যুদ্ধের প্রানহানির পরিনাম কি সমাজতন্ত্রীদের কতৃক হত্যার চেয়ে বেশী না কম ?
আমরা কৃ্ষি ভর্তুকি দিতে চাইলে সমস্ত সাহায্য প্রত্যাহারের হুমকি দেয়া হয় কেন ? কারন কৃ্ষি প্রধান দেশে কৃ্ষি উদবৃত্ত থেকে শিল্পের জন্য মূলধন আসে। শিল্প প্রধান দেশগুলো চায়না আমরা শিল্পে উন্নতি করি। তাহলে তাদের পন্যের বাজারই সংকুচিত হবে। আমাদের নিয়ে বিশ্বব্যাংক ও আই এম এফ ও এ,ডি, বির নানা মুখি উন্নয়ন পরিকল্পনা আছে। পাঁচ পাঁচটা পঞ্চ বার্ষিকী পরিকল্পনা শেষে ফলাফল হচ্ছে আমাদের রাজস্ব ব্যায়ের ২য় বড় ক্ষাত হছে এখন লোন পরিষোধ করা। কোন সরকারের মধ্যে দেশ প্রমের বাতিক দেখা গেলে উন্নয়ন সহযোগীদের ভালবাসা আর্মি জেনারেলদের প্রতি বাড়তে থাকে। এটা পরিষ্কার হুমকি। শেখ হাসিনা একবার পরিষ্কার ভাবে বলেছিলেন
যে আগামী ৫০ বছরের মজুদ নিশ্চিৎ করার পরেই কেবল তার দল গ্যাস রপ্তানির কথা ভাববে। বেয়াদবির পরিনতিটা তাকে সাথে সাথে পেতে হয়েছে। এবার অবশ্য একই ভুল তার সরকার আর কোরতে চায়না। ক্ষমতায় আসার সাথে সাথে অবিশ্বাস্য দ্রুততায় গ্যাস রপ্তানির পাটটা এবার তারা চুকিয়ে ফেলতে চাচ্ছে। এইসব প্রতিক্রিয়াশীল সরকার গুলোকে সাম্রাজ্যবাদিরা লালন করে, তাদের নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য। বেকারত্ত
বাড়ার সাথে সাথে শ্রমের মজুরি কমতে থাকে। আর সে জন্যই ওয়াল মার্ট অবিশ্বস্য কমমূল্য আমদের কাছ থেকে মাল কিনতে পারে। তাই আমাদের শ্রমিকরা কেন উন্নতবিশ্বে পালাতে চায় তা হয়ত ততটা হাস্যকর নয় যতটা আপনি ভাবছেন।
@বিপ্লব পাল,
হবসনের কথা সাথে আপনি যেহেতু একমত পোষন করছেন তবে ১ম ও ২য় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে আপনার মূ্ল্যায়ন কি ? হালের ইরাক যুদ্ধকে আপনি কি ভাবে দেখেন ? সংখ্যা তত্ত্বমতে এইসব যুদ্ধের প্রানহানির পরিনাম কি সমাজতন্ত্রীদের কতৃক হত্যার চেয়ে বেশী না কম ?
আমরা কৃ্ষি ভর্তুকি দিতে চাইলে সমস্ত সাহায্য প্রত্যাহারের হুমকি দেয়া হয় কেন ? কারন কৃ্ষি প্রধান দেশে কৃ্ষি উদবৃত্ত থেকে শিল্পের জন্য মূলধন আসে। শিল্প প্রধান দেশগুলো চায়না আমরা শিল্পে উন্নতি করি। তাহলে তাদের পন্যের বাজারই সংকুচিত হবে। আমাদের নিয়ে বিশ্বব্যাংক ও আই এম এফ ও এ,ডি, বির নানা মুখি উন্নয়ন পরিকল্পনা আছে। পাঁচ পাঁচটা পঞ্চ বার্ষিকী পরিকল্পনা শেষে ফলাফল হচ্ছে আমাদের রাজস্ব ব্যায়ের ২য় বড় ক্ষাত হছে এখন লোন পরিষোধ করা। কোন সরকারের মধ্যে দেশ প্রমের বাতিক দেখা গেলে উন্নয়ন সহযোগীদের ভালবাসা আর্মি জেনারেলদের প্রতি বাড়তে থাকে। এটা পরিষ্কার হুমকি। শেখ হাসিনা একবার পরিষ্কার ভাবে বলেছিলেন
যে আগামী ৫০ বছরের মজুদ নিশ্চিৎ করার পরেই কেবল তার দল গ্যাস রপ্তানির কথা ভাববে। বেয়াদবির পরিনতিটা তাকে সাথে সাথে পেতে হয়েছে। এবার অবশ্য একই ভুল তার সরকার আর কোরতে চায়না। ক্ষমতায় আসার সাথে সাথে অবিশ্বাস্য দ্রুততায় গ্যাস রপ্তানির পাটটা এবার তারা চুকিয়ে ফেলতে চাচ্ছে। এইসব প্রতিক্রিয়াশীল সরকার গুলোকে সাম্রাজ্যবাদিরা লালন করে, তাদের নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য। বেকারত্ত বাড়ার সাথে সাথে শ্রমের মজুরি কমতে থাকে। আর সে জন্যই ওয়াল মার্ট অবিশ্বস্য কমমূল্য আমদের কাছ থেকে মাল কিনতে পারে। তাই আমাদের শ্রমিকরা কেন উন্নতবিশ্বে পালাতে চায় তা হয়ত ততটা হাস্যকর নয় যতটা আপনি ভাবছেন।
@আতিক রাঢ়ী,
প্রথম বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে কলোনির জন্যে বা মার্কেটের যুদ্ধ বলাটা অতিসরলিকরন। কারন সেটা হলে বল্কান সমস্যাটা আজও টিকে থাকত না। বা পরবর্ত্তী কালে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ানের ও জন্ম হত না।
লেনিন-হবসনের তত্ত্ব ছিল, পুজির এক্সপোর্ট বা বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে। ইরাকে তা খাটে না। ইরাকের আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদ অবশ্য আছে তবে লেনিনের তত্ত্ব ধরে নেই। আমেরিকার কিছু কনট্রাক্টর যারা রিপাবলিকান পার্টিকে টাকা দেয়, তাদের এই যুদ্ধ দরকার ছিল, যাতে তারা কিছু কনট্রাক্ট পায়। পুরোটাই নোংরা ব্যাবসা-ওয়াশিংটনের নোংরা এক শ্রেনীর ব্যাবসায়ীদের। কিন্ত এর মধ্যে ত গুগল বা ইহাহু বা কোন ওশুধ কোম্পানী বর্ধিত পুজি জড়িত না। লেনিনের তত্ত্ব অনুযায়ী যা হওয়া উচিত ছিল। কোন পুজির এক্সপোর্ট জড়িত না এখানে (লেনিনের তত্ত্ব)-শ্রেফ যুদ্ধ লাগিয়ে নিজেদের পকেট ভরা কনট্রাক্ট পাওয়ার জন্যে। এটা লেনিনের কোন সাম্রাজ্যবাদের তত্ত্বে আছে?
ঠিক। এই ধরনের সাম্রাজ্যবাদ অবশ্যই আছে। কিন্ত এটার সাথে লেনিনের সাম্রাজ্যবাদের থিসিসের সম্পর্কটা কি? সেটা কি একবারও পড়ে দেখেছ????
তোমার বক্তব্য কিন্ত লেনিনের থিসিসের বিরুদ্ধে যায়। লেনিনের থিসিস অনুযায়ী আই এম ফ বা বিদেশী ফান্ডগ্যলো বাংলাদেশেই পুজি বিনিয়োগ করে, সেখানেই বেশী লাভ করবে-কারন বাংলাদেশের মার্কেট উন্নত দেশের মার্কেটের মতন সংপৃক্ত নয়। তুমি আগে লেনিনের থিসিসটা পড় ভাল করে। আন্দাজে ঢিল ছুঁড় না। সাম্রাজ্যবাদ অবশ্যই আছে-কিন্ত লেনিনের থিসিস ধরে নেই-একেবারেই প্রায় নেই।।…
হ্যা-এটাও সত্য। কিন্ত ভারতে ত মজুরী বেড়েছে বিদেশী বিনিয়োগের সাথে সাথে। বিশ্বে সব দেশের মধ্যে গত দশকে ভারতে মাইনে বেড়েছে বছরে ১৪% হারে। স্কিলড লেবাররা সব থেকে বেশী মজুরী বৃদ্ধি পেয়েছে ভারতেই-পৃথিবীর সব দেশের মধ্যেই।
এবং তা হয়েছে বিদেশী বিনিয়োগের জন্যে। ভারত যেহেতু বাংলাদেশের থেকে অনেক বড়, তাহলে আমার উদারনটাই শক্তি বেশী? কি বল? তাছাড়া, বিদেশে যদি এক্সপোর্ট না হত-ঐ শ্রমিকরা ত ভিক্ষা করত। সেই দান্দিকতাটা তোমার লেখায় কোথায় গেল?
আসলে তাও ঠিক না। অভিজ্ঞতাবাদের ইন্ডাকশনিজম হয় না কারন
তার মধ্যে কতটা বাস্তব সেটা দেখতে হয় আগে। ভারতে আনস্কিলড লেবারদের অবস্থা একই সময়ে দারুন খারাপ হয়েছে। তাহলে বিশ্লেষন করবে কি ভাবে? ঐ ভাবে কোন সুত্র ধরে বিশ্লেষন করা ভুল। বাস্তবের ফ্যাক্ট ধরে বিশ্লেষন করতে হয়। সুত্র ধরে এগলে আমি দশটা কাউন্টার উদাহরন সব সময় দিতে পারি।
বিপ্লবদা,
বিশ্লেষণগুলো মোটামুটি বুঝতে পেরেছি।ভালো করে বোঝার মত বিদ্যেবুদ্ধি এখনো অর্জন করতে পারিনি।জীবনে বাঁচার মত বাঁচা আর জানার অদম্য আকাংক্ষাই আমাদের সামনে নিয়ে চলে।
সমাজতত্বের জেনেটিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ,অথচ অধিকাংশ সমাজবিজ্ঞানীই এ ব্যাপারে উদাসীন।
ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্য দিয়েও কিভাবে সম্পদের বণ্টনে বৈষম্য কমিয়ে আনা সম্ভব -এটা একটু বুঝিয়ে বলুন।মার্ক্সীয় তত্বের অনেক কিছুই নিছক ইউটোপীয় স্বপ্ন।উত্তরণের কিছু পথ বাতলান। 🙂
@আগন্তুক, ধণতন্ত বা সমাজতন্ত্র না-গণতন্ত্রই সব থেকে মৌলিক ভিত্তি। কারন গণতন্ত্রই একমাত্র সামাজিক বিবর্তন নিশ্চিত করে। তাই উন্নত বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি দিয়ে গনতন্ত্র আনাই কাম্য।
বিপ্লব’দা
চমৎকার বিশ্লেষন হয়েছে। আমরা আসলে একটি ক্লাসিকাল প্যারাডক্স এর মাঝে দিয়ে যাচ্ছি। পুরোপুরি ব্যক্তিকেন্দ্রীক ব্যাবস্থায় কিছু অসৎ মুনাফাকারী একজোট হয়ে অর্থনীতিকে নিজেদের লাভের জন্য ব্যবহার করে। আবার পুরোপুরি সমবায় ব্যবস্থায় অর্থনীতি স্থবির হয়ে পরে। এর মাঝামাঝি ঠিক কোন অবস্থানটি অর্থনীতির জন্য ভাল হবে সেটা বের করাই আমাদের সত্যিকারের কাজ।
গতকাল আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভার, বিল্ডারবার্গ গ্রুপ, ট্রাইল্যাটারাল কমিশন, কাউন্সিল অফ ফরেইন রিলেশন্স এদের নিয়ে একটি ডকুমেন্টারী দেখলাম। কিছু চিন্তার খোরাক পেলাম।
আপনার মার্ক্সবাদের উপরে আগের লেখাটিতে এবং এখানেও সেই কথাটি এসেছে যে গণতন্ত্রের বয়স সভ্যতার বয়সের তুলনায় খুব বেশি নয় এবং তাই বর্তমান গণতন্ত্র এখনো ত্রুটিপূর্ণ নয়। এ কারণে এখন আমরা যে গণতন্ত্র বা রিপাব্লিক দেখছি সেটা আসলে প্রকৃত জনগণের জন্য নয়। কিছু অসৎ ব্যবসায়ীর হাতে পুরো ব্যবস্থাটি জিম্মি হয়ে আছে। সেটা উন্নত এবং উন্নয়নশীল সব দেশের জন্যই সত্য। এই চক্রটিকে ভাঙ্গতে হবে।
@স্বাধীন, নতুন সমাজতান্ত্রিক পথের সন্ধানে প্রথম কাজ শুরু করেন সিপিএমের
বহিস্কৃত এম পি সইফুদ্দিন চৌধুরী। উনি গত সাত বছর ধরে, এই ব্যাপারে প্রচার চালাচ্ছেন যে বিজ্ঞান ভিত্তিক এনলাইটমেন্টের ভিত্তিতে, গণতন্ত্রের আমূল সংস্কার করে নতুন সমাজতান্ত্রিক চিন্তার প্রতিশHট সম্ভব-যখানে প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে আমরা আরো স্বচ্ছ গনতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাব।
উনার পার্টির ওয়েব সাইট হ ল
http://www.pdsindia.org
এই সাইটে নতুন গণতান্ত্রিক পথের সন্ধানে আমার কিছু লেখা আছ। সফিদার লেখাগুলো পড়লে তোমার এই মানসিক দ্বন্দের অনেক অবসান হবে-কারন উনি নিজে ( আমি ও ) এই দ্বন্দের মধ্যে দিয়ে গেছেন ( তিনি বর্ধমান থেকে নির্বাচিত তিনবারের এম পি ছিলেন)। আমি সফিদার সাথে এই নিয়ে অনেক আলোচনা করেছি-উনার কাছ থেকে রাজনী্তি বিজ্ঞানে অনেক শিক্ষা পেয়েছি।
তবে পশ্চিম বঙ্গে তীব্র মেরুকরের জন্যে, পিডিএস কিছু করে উঠতে পারেনি। ২০১১ সালে সিপিএম সরে যাবার পরে আশা করছি পিডিএসের গাঙে জল আসবে।
@বিপ্লব পাল,
ধন্যবাদ বিপ্লব’দা লিঙ্কটির জন্য। আমি পড়ে দেখবো লেখাগুলো।