আশির দশকে মরিস বুকাইলি নামে এক সাদা চামড়া আমেরিকান আরবের তৈল-ডলারের মোহে অন্ধ হইয়া ‘বাইবেল কোরান এন্ড সায়েন্স’ নামে এক বই লিখা ম্যালা পয়সা কামাইছিলেন। হের পর থেইক্যা আমরা মুসলিমেরা পৃথিবীর যাবতীয় আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞান কোরানে খুইজ্যা পাইতেছি – সেইটা বিগ ব্যাংই হোক, আর মিশরের পিরামিডই হোক। ইহুদী নাসারা খ্রীস্টান বিজ্ঞানীরা অনেক কষ্ট কইরা – পাটিগণিত, বীজগনিত, জ্যামিতি সমাধান কইরা বিজ্ঞানের যেইগুলা জিনিস বাইর করেন, এর পরের দিনই আমরা ওইগুলা কোরানে পাইয়া যাই। কেমনে কোরানে বিজ্ঞান পাইতে হইব – বুকাইলী গুরু পথ দেখাইয়া গেছেন আমাগো। কোরানের কোন আয়াতে হয়ত কইছে – ‘আসমান আর জমিন এক লগে ছিলো’ – ব্যাস আমরা ওইটারে বিগব্যাং বানায়া ‘কোরান কত মিরাকেল’ কইয়া লাফালাফি লাগায় দেই। কোনো আয়াতে হয়তো ‘দুখান’ শব্দটা আছে – আমরা ওইটারে প্লাজমা বানায়া দেই, আর বলি – আল্লাহ কত আগে বইলা দিছে – ‘প্লাজমা থেইকাই মহাবিশ্ব আইছে’। আমগো কোরান কত অলৌকিক। এই হইতেছে আমাদের রিসার্চ।
কিন্তু নব্বইয়ের দশক থেইকা বুকাইলী গুরুর আর খুব একটা ভাত নাই। কারণ ময়দানে হাজির হইছেন আরো দুই পীর বাবা – হারুন ইয়াহিয়া আর জোকার নায়েক। ইসলামী বিশ্বে হোগো দারুন প্রভাব। বিজ্ঞান না বুইঝাও বিজ্ঞানের উপরে ঢাউস ঢাউস সব বই লিখা ফালান। আর সেই সব বই আবার তারা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচা কইরা পৃথিবীর সবগুলা দেশের লাইব্রেরিতে ফ্রি বিলান (এত টেকা তারা কইত্থেইকা পান কে জানে?)। আমি লক্ষ্য করতাছি এই দুই পীর বাবারই জানি শত্রু হইতাছে ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব। কোন দিন কোন ফসিলের চেহারা না দেইখাও, কোন দিন বিবর্তনের উপর ভাল কোন বই না পইড়াও তারা বিবর্তনের মহা পন্ডিত। পন্ডিত হওয়া হেগো জন্য সোজা। ইন্টারনেটে ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন আর খেরেস্তান ক্রিয়েশনিস্ট গো ম্যালা হাবি জাবি সাইট আছে। ওইগুলা থেইকা তারা টুক্লিফাই করে আর ‘যীশু’র বদলে ‘আল্লাহ’ বসায় দেয় আর বাইবেলের বদলে ‘কোরান’। আজকের দুনিয়ায় পন্ডিত হওন কত সোজা। বায়োলজিস্ট আর প্যালিন্টিওলজিস্টরা কত কষ্ট কইরা রিসার্চ কইরা বিবর্তনের নানা সাক্ষ্য প্রমাণ পাইতাছেন – আর জোকার নায়েক আর ইয়াহিয়া সাবে কোরানের ‘প্রমাণ’ হাজির কইরা সব কিছু এক ফুঁ দিয়ে উড়ায় দিতাছে। তবে, যারা বিবর্তন লইয়া একটু পড়ছেন তারা বহুবার এই দুই পীর বাবার জারিজুরি বহুবার ফাঁস করছেন। মুক্তমনায় শিক্ষানবিস একবার লিখছিলেন – ‘জাকির নায়েকের মিথ্যাচার: প্রসঙ্গ ‘বিবর্তন’। ওই পোস্টে শিক্ষানবিস জোকার নায়েকের ২৮ টা মিথ্যার কাহিনী ফাঁস করছেন। এক্কেরে ভালামত বুঝায় দিছেন বিবর্তন সম্বন্ধে জাকির নায়েকের জ্ঞান কতটা তলানিতে।
জাকির নায়েক তো ধরাশায়ী হইলেন। বাকি আছে আরেক পীর হারুন ইয়াহিয়া (আসল নাম হইলো আদনান ওকতার)। আমি আজকে একজনের ইমেইল থেকে পাইলাম হারুন ইয়াহিয়ার ‘আটলাস অব ক্রিয়েশন’ নামের একটা বইয়ের আলোচনা করছেন রিচার্ড ডকিন্স। আলোচনা উনি করছিলেন ব্রিটেনের একটা ‘এক্স মুসলিম’ কনফারেন্সে কয়েক বছর আগে। ভিডিওটা দেইখ্যা ব্যাপক মজা পাইলাম। পাঠকদের সাথে চার পর্বের ভিডিওগুলা শেয়ার করতাছি।
httpv://www.youtube.com/watch?v=FPxGDXSJZfc
[1]
httpv://www.youtube.com/watch?v=uyzPpJazwY8
[2]
httpv://www.youtube.com/watch?v=rFZJsz8aJq0
[3]
httpv://www.youtube.com/watch?v=uxT8qhP1v7Q
[4]
একই ভিডিও আরেকটা সাইটেও আছে। সেইটারও লিঙ্ক দিলাম। যদি ইউ টিউব কারো স্লো লাগে এইটা দেখতে পারেন।
হারুন সাহেবের বইটা লইয়া রিচার্ড ডকিন্স আলোচনাও করছেন তার সাইটে (Venomous Snakes, Slippery Eels and Harun Yahya) । হেইটা পইড়াও দারুন মজা পাইলাম। ইয়াহিয়া সাবে নাকি ‘ইল’ মাছের ছবি কইয়া সাপের ছবি তার বইয়ে ছাপায় দিছেন। বইটাতে আরো আছ হাজারখানেক ভুল ভাল। আমি যেহেতু বিবর্তন সম্বন্ধে এত বেশি কিছু জানিনা, তাই নিজের কোন মন্তব্য দিলাম না। মুক্তমনায় অনেকেই বিবর্তন লইয়া লেখালেখি করেন – তারা ভাল কইতে পারবেন।
আমি শুনছি হারুন ইয়াহিয়া ডকিন্স সাবের উপ্রে মহা ক্ষেপছেন। মামলাও নাকি করছেন। টুর্কি তে ডকিন্সের সাইট বন্ধ কইরা দিছেন। তামসার কোন সেষ নাই। এইখানে ওই লইয়া আলোচনা আছে।
হারুন ইয়াহিইয়া কোকেইন রাখন, শিশু নির্যাতন আর নানা ক্রিমিনাল এক্টিভিটির কারণে আগে তিন বছর জেল খাটছেন। আর সেই ড্রাগ খাওয়া, পেডোফাইল, জেলখাটা আসামী এখন হইছেন মুসলিমদের ক্রিয়েশনিস্ট পীর, বিবর্তনের পন্ডিত। আর হেই পীরের বই লইয়া কত ফালাফালি! দেখলেও লজ্জা লাগে।
@আকাশ মালিক ভাইয়া
আসলে ভাইয়া আমি মুহম্মদ কে মানসিক রোগী বলতে রাজি না। তিনি ছিলেন চরম বুদ্ধিমান ,আর চরম সুবিধাবাদি। তিনি সহজ পন্থায় পরিস্থিতি থেকে পাওয়া সুবিধা গ্রহন করে নিইয়েছিলেন, এবং নিজের সুবিধামত আয়াত পয়দা করেছিলেন।
@অভিজিত ভাইয়া,
এই কদিন আগ পর্যন্ত আমি নিজেও ডারউইন ও ল্যমার্কিয় তত্ত্ব কে গুলিয়ে ফেলতাম, সাথে তো স্পেন্সারের বিখ্যাত উক্তি ছিলোই। আসলে আমরা বিবর্তন সম্পর্কে আমাদের চোখের সামনে বেড়ে ওঠা সহজ ব্যপারটাকেই নিয়ে বসে থাকি।
ডারউইনিয় তত্ত্ব যথেষ্ট জটিল, আর ল্যামার্কিয় তত্তের পাজল অনেকসহজে মিলে যায়। তাই আমরা যোগ্যতমের টিকে থাকার তত্ত্ব কেই বিবর্তন হিসাবে নেই। আমার মনে হয় আমাদের মুক্তমনার অনেক পাঠকও এখনো বিবর্তনের ভুল ধারনাকে ঠিক মনে করে বসে আছেন। তাদের জন্য কি সহজ কোন প্রোযেক্ট হাতে নেয়া যায়না?
আমি বলছিনা বন্যা আপুর লেখার ভাষা কঠিন,কিন্তু তার লেখা শুধু মাত্র যাদের জীববিজ্ঞানের মূলজ্ঞান আছে তাদের জন্যই সহজ।
একথা বলছি কারন আমার কমার্স থেকে পাস করা বড় ভাই,ওই বই ১০ পৃষ্ঠা পরে ধৈর্য হারিয়ে ফেলে,আর আমি সহজেই পূরো বই শেষ করি। কারন জীববিজ্ঞানিয় টার্মগুলো আমি ওর থেকে অনেক ভালো বুঝি।
তাই আমার প্রস্তাব শুধু মুল ভাবনাটাকে সহজ ভাষায় তুলে ধরা হোক।
@tanvy,
ভাই একদম খাঁটি কথা।অ,আ,ক,খ না শিখলে কিছুই শেখা যায় না।
হারুন ইয়াহিয়ার ‘আটলাস অব ক্রিয়েশন’ বইটি আমি পড়িনি কিন্তু তার কিছু ভিডিও দেখার দুর্ভাগ্য আমার হয়েছিলো। আমি যা বুঝেছি – তিনি বিবর্তন সম্বন্ধে একেবারেই অজ্ঞ। তিনি ডারউইনিজমের সাথে ল্যামার্কিজমের পার্থক্যই বোঝেন না। ক্যালিফোর্ণিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী কেভিন পাদিয়ান তো পরিস্কার করেই বলেছেন – ‘Oktar has no understanding of the basic evidence for evolution’, এবং হারুন ইয়াহিয়ার বইটিকে ননসেন্স বলে আখ্যায়িত করেছেন।
তবে হারুন ইয়াহিয়া সবচেয়ে বিপজ্জনক কাজটি যেটি করেছেন তা হল – ঢালাও ভাবে দাবী করেছেন কোন ধরণের ট্রাঞ্জিশনাল ফসিল নাকি নেই। অথচ বিজ্ঞানের সাইটগুলোতে তে বটেই এমনকি উইকিপেডিয়াতেও ট্রাঞ্জিশনাল ফসিলের একটি তালিকা আছে। অথচ সেগুলো জেনেও হারুন সাহেব বিশ্বের তাবৎ বাঘা বাঘা বিজ্ঞানীদের ট্রিলিয়ন ডলারের চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন – কোন ধরণের ট্রাঞ্জিশনাল ফসিল নাকি নেই। এ প্রসঙ্গে জীববিজ্ঞানী পি এস মায়ার এক মজার কথা বলেছেন তার ব্লগে–
“The US government should immediately send a plane to pick up Mr Oktar, bring him to our country, and take him on a guided tour of the Smithsonian and the American Museum of Natural History, accompanied by Niles Eldredge, Kevin Padian, Jerry Coyne, Sean Carroll, and the entire scientific staff of those museums. Afterwards, they can accept the check from Mr Oktar, run down to the local bank and cash it, and use one trillion dollars to resolve the current financial crisis, seven trillion can be sunk immediately into the American educational system, and they can send the change left over to me as a reward for coming up with this brilliant plan.”
যা হোক, হারুন ইয়াহিইয়াকে রিফিউট করা বেশ কিছু লেখা আগে মুক্তমনায় ছিলো। প্রাসঙ্গিক বিধায় এখানে দিয়ে দিচ্ছি-
Evolution and Miracle of Design in the cell issues By T.H.Huxley
Harun Yahya disses “Islamic Scientists” By T.H.Huxley (Part 1, Part 2)
On Harun Yahya and his Book by T H Huxley
Harun Yahya: An Invitation to Dogmatism By Francois Tremblay
A World Designed by God : Science and Creationism in Contemporary Islam by Taner Edis
Harun Yahya and Islamic Creationism by Taner Edis
7 Layers of Heaven: Rebuttal to Harun Yahya
Who is Harun Yahya?
More on this genious Harun….from wiki..
A 2008 indictment from the prosecutor’s office, cited by the daily Cumhuriyet, said Oktar’s organisation used its female members to attract young scholars from rich families with the promise of sex in exchange for attending events.[70] The sexual activities were videotaped with the purpose of blackmail, and the group record thousands of people in compromising positions.[19] According to the indictment, one of the victims had to sleep with 16 men, which was recorded with hidden cameras and the tapes were given to Oktar.[70] The girls who want to leave the group are threatened that the tapes will be made public.[70]
Vow..what a defender of faith! So he needs to draw Muslim girls into prostitution to defend Islam–!!
রফিক মিয়ার ল্যাখাটা পইড়া খুব মজা পাইলাম।
নায়েক, ইয়াহিয়া আর তাদের কাফির দোসরদের নাম সারা বাংলাদেশেও ছাইয়া গেছে।
এইতো সেদিন বাংলাদেশে আমার বনধুরা আমারে নাস্তিকতার পথ থিকা ইসলামের পথে ফিরার নিবার জন্যি এইসব আন-পড় বিজ্ঞানিগো দোহাই দিতেছিল।
হারুন ইয়াহিয়ার মত লোকরা যে এতোটাই অজ্ঞ ও মুর্খ তা আগে ভাবতেও পারতাম না। জাকির নায়েক সম্পর্কে জানার পর এখন আন্দাজ করতে পারি। তবে চিন্তার কোনই কারণ নেই। এইসব আবর্জনা ধুয়ে মুছে যায়। ২০ বছরের যুদ্ধেও এরা টিকে থাকতে পারবে বলে মনে হয় না। ইতিহাস এদের মনে রাখবে না।
ভিডিও একটা ডাউনলোড হয়েছে। বাকিগুলো ডাউনলোড করে দেখব।
A letter from Edip about Harun Yahya:
http://bekirlyildirim.wordpress.com/2007/08/23/adnan-oktar-harun-yahya-%E2%80%93edip-yuksel-bout-round-ii-a-letter-from-edip/
ডকিন্সের ভিডিওগুলার আসলে চারটা পার্ট ছিলো ইউটিউবে। প্রথমবার যখন পোস্ট করছিলাম তখন ভুলে শুধু একপার্ট দিছিলাম। এখন ঠিক কইরা দিছি। চার পার্টই দিলাম। ঠিক মত দেখা যায় কিনা বইলেন। এইখানে আমার নেট লাইন খুব স্লো।
বেদম মজা পেলাম লেখাটা পড়ে। ভিডু ডাউনলোড দিলাম। দেখে আরেকটু মজা নেই। 😀
বেড়ে,খাসা,উমদা,জম্পেশ!!!পড়ে মনে হলো আমার দাদুর গলায় ‘ছক্কু মিয়া’র কথা শুনছি।
বুকাইলির এই উদ্ভট বইটি আমি মেডিকেলের প্রথম বর্ষে থাকতে পড়েছি।বলা ভালো পড়ার দুর্ভাগ্য হয়েছে!এবং এই উর্বর ঢাকাই ছবি মার্কা বইটিই মূলত দায়ি ,আমাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে আকরাম হোসেন আর টি,আলমের এনাটমি ,ফিজিওলজির নাম করে কোরানের ব্যাখ্যা পড়ানোর জন্য।
তখন বয়েস খুব কম ছিল বলে লোকটাকে ভণ্ড ভাবিনি।কিন্তু যুক্তিবিদ্যার প্রাথমিক শিক্ষা থেকে জানতাম যে,ঈশ্বর আছে – এই পূর্ব ধারনাই তার এই উর্বর চিন্তার জন্য দায়ি।এটাও মনে হয়েছিল যে বাইবেলে উপযুক্ত ব্যখ্যা খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়ে তিনি বাইবেলকে ‘মানুষ কর্ত্রৃক বিকৃত’ -উপাধি দিয়ে কোরানকে আঁকড়ে ধরলেন।অথচ কুরানের ও এমন অনেক বিকৃতিই আছে!
যাই হোক ইউটিউবে বিপ্লবদার ভিডিওটি দেখে আমি নিশ্চিত হই যে এগুলো বিশুদ্ধ ভণ্ডামি।তবে মুহাম্মদকে ভণ্ড বলা যায় কিনা তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।আমার মনে হয় মুহাম্মদ বা রামকৃষ্ণের কোন জটিল মানসিক রোগ ছিল।
এই জাতীয় প্রাণীগুলারে বাঘার মত গাধার পিঠে চড়াইয়া ঘুরানো উচিত এবং হিংসা ছড়ানোর বীজ বুনার লাইগা আজীবন জেল দেওয়া উচিত। 😉
@আগন্তুক,
তারা উভয়েই একাধারে মানসিক রোগী ও ভন্ড ছিলেন, তবে সাধারণ নয় অসাধারণ ভন্ড। এখানেই তাদের বিশেষত্ত সাধারণ মানুষের পক্ষে এমন সফল প্রতারণা সম্ভব নয়।
@Akash Malik,
কিন্তু ওখানেই তো গেরো।রামকৃষ্ণ বেচারাকে আসলেই ভণ্ড বলাটা ঠিক কিনা তা জানিনা।কারণ এই আলাভোলা মানুষটা জাগতিক কোন সুখই ভোগ করেননি,আর এর পেছনে তাঁর আদৌ কোন স্বার্থবুদ্ধি কাজ করে নি।তিনি সরল ও অসুস্থ মনে যেটা বিশ্বাস করতেন সেটাই প্রচার করে গেছেন বিবেকানন্দের মাধ্যমে।আর এটাও ঠিক যে পৃথিবীতে চৈতন্য,জালালউদ্দীন রুমি আর রামকৃষ্ণের মতো সত্যিকারের সহিষ্ণু বাণী আর কোন ধর্মপ্রচারকই রেখে যান নি।
তাই প্রবীর ঘোষ মশাইও শুধু পাগল বলেই রামকৃষ্ণকে ছেড়ে দিয়েছেন।এমন যে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়,যে কিনা ‘কালী মা’কে পর্যন্ত কালিমালিপ্ত করে ছেড়েছেন-রামকৃষ্ণের প্রসঙ্গে কিন্তু তিনিও সহানুভূতি নিয়েই লিখেছেন!ভণ্ডামি তিনি করেন নি।স্বামী বিবেকানন্দও ভণ্ড ছিলেন না।যুগের সীমাবদ্ধতা বিবেচনা করে বলা যায় অনেক ব্যাপারেই তিনি ভ্রান্ত ছিলেন ,কিন্তু ভন্ড ছিলেন না।খ্যাতির জন্য তিনি এমন করেছেন ভাবাও ভুল।তাঁর যে মেধা ও প্রতিভা ছিল তাতে তিনি অনেক বিষয়েই বরেণ্য হবার ক্ষমতা রাখতেন।তারপরও আঙুল তোলা যায় তার অসীম খাদ্যপ্রীতি ও অন্যান্য বিলাসব্যসনের প্রতি।বিবেকানন্দ যৌনতাকে দমন করে অন্য সব সুখ অর্জন করেছিলেন।তবে এগুলো তো তিনি এমনিও পেতে পারতেন।প্রাণ হাতে করে আমেরিকা যাবার কোন দরকার ছিল না।আর প্রচলিত অর্থে ধর্ম-প্রচারকও তাঁকে বলা যায় না।
অপরদিকে ৩০জন পুরুষের সমান ক্ষমতাধর ও দিনে কমপক্ষে ১১ বার সঙ্গম-সুখে অভ্যস্থ মহানবীও কি খুব বিলাসী জীবন যাপন করেছেন?অবশ্য রাহুল সাংকৃত্যায়নের মতানুসারে বলা চলে যে ধর্মের ধ্বজাধারীরা ইচ্ছে করেই কৃচ্ছ সাধন করত যাতে লোকেরা তাদের মানে।এদের উদ্দেশ্য ছিল আড়ালে জীবনের মজা লোটা।যেমনটা করতেন আর্য ঋষিরা।কিন্তু রামকৃষ্ণের জীবনে কোন ভোগেরই সন্ধান পাই না।বিবেকানন্দ যৌনতা বাদে জীবনের অন্যান্য আনন্দগুলো ভোগ করতেন।মুহাম্মদ আনন্দ পেতেন উদ্দাম সম্ভোগে।
আমি তো এতে ভণ্ডামি পাচ্ছি না।বরং আধুনিক পলিগ্যামাস সমাজে যেকোন পুরুষের আদর্শ হতে পারেন মুহাম্মদ।ভেবে দেখুন কী রোমান্টিক লোক ছিলেন…রোজার মধ্যেও… 😉 ।যাই হোক আমি বলব,
রামকৃষ্ণ বদ্ধ পাগল।
বিবেকানন্দ প্যারাডক্সের শিকার।তাঁর চেলাদের প্রায় সবাইই ভণ্ড।
মুহাম্মদ রহস্যজনক।আমার ধারনা তিনি নিঃসন্দেহে সাম্রাজ্যবাদী ছিলেন।কিন্তু তিনি যা প্রচার করেছেন তা তিনি বিশ্বাস করতেন।
ভালো থাকবেন। :-))
হারুন ইয়াহিয়া সাহেবের নাম মাঝে মাঝে শুনি; সাক্ষাত পরিচয় তেমন ছিল না। ধণ্যবাদ তার সাথে পরিচয় করানোর জন্য। খুব একটা মধুর পরিচয় হল না এই যা দূঃখ।
কিছু মানুষ আছেন যারা সেধে সেধে অপমানিত হতে চান, হতে পারে তারা নিজেকে অতি চালাক ভাবেন। তাই বলে এহেন শস্তা ধাপ্পাবাজি?
@আদিল মাহমুদ, সেটাই ত দুঃখ জনক ব্যাপার। এইসব জোকার নায়েক আর হারুনদের জন্য ইসলামের সদর্থক বিবর্তনের ক্ষতি হচ্ছে। ধর্মকে ওই ভাবে ধাপ্পা মেরে বাঁচানো যায় না। সৎ পথেই তারা বাঁচাতে পারত। জালালুদ্দিন রুমির ইসলামক ্প্রচার করলে কেও কিছু কি বলত? বরং পাশ্চাত্যে ইসলামের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হত। রুমি কে প্রমোট করছন কে? দীপক চোপড়া!!!!!
কিন্ত তাহলে তাদের ব্যাবসা মার খাবে। আসলে ত সবই ব্যাবসা।
@বিপ্লব পাল,
আমি পুরো একমত। এসব জাকির নায়েক হারুন ইয়াহিয়ারা যে আসলে ধর্মের লায়াবিলিটি, এয়্যসেট নয় এটা বোঝার মত বিবেচনাও আমাদের হারিয়ে গেছে। এর থেকে দূঃখের আর বিপদের কি হতে পারে?
@বিপ্লব পাল,
দাদা এই মোদ্দা কথাটা কেন কেউ বোঝে না এটাই বুঝি না।
বিবর্তন নিয়া কে কতদূর জানেন তা নিয়া সন্ধহে আছি । কারো কথা শুনলে মনে হয় এ বড় পন্দিত, একটু পড়েই মনে হয় ধূর ছাই । হারুন ইয়াহিয়া আর ডাঃ জাকির নায়েক কতদূর জানেন কি জানি । তয় এইটা বুঝতাছি না , হারুন ইয়াহিয়ার লেখা নিয়া, ডকিন্সের মত জ্ঞানী ব্যক্তি কেন লিখতে বা বলতে যান ।
কিন্তু হারুন ইয়াহিয়ার অনেক লেখা ইউরূপে কিভাবে পাবলিষ্ঠ হইতাছে বুঝতেছি না । মনে হয় ঘুষ খাইছে । কোরটে কেইছ করল ক্যমনে ? মনে হয় মিথ্যা সাজানো কেইছ । বিচারক ও ক্যম্নে কেইছ টা নিলো । দুরনিতিবাজ বিচারক মনে হয় ।
আবার, মাতাপিতার অবাধ্য সন্তান, যে পিতামাতাকে রেখে দূরদেশে ভাগল দিছিল, সে কিভাবে ইভোলুশ্নের আবিষ্কার করল তাও বুঝতাছি না ।
@ফুয়াদ,
বিবর্তনের মত জটিল বিষয় নিয়ে আমি আপনি তো নস্যি, অভিজিত এমনকি বন্যা আহমেদ ও মনে হয় না বিশেষজ্ঞের পর্যায়ে জানেন বলে। আমি নিজে থিয়োরী অফ রিলেটিভিটির কিছু জানি না, কিন্তু জানি যে ওই জটিল তত্ত্ব ও বিজ্ঞানের চোখে সত্য। একই কারনে আমি বিবর্তনের কিছুই জানি না তাও বিশ্বাস করি যে ওই তত্ত্ব সত্য। বিবর্তন যে হচ্ছে তাতে বিজ্ঞানের কোন তর্ক নেই, কিভাবে হচ্ছে তা নিয়ে বিতর্ক হতেই পারে।
এ লেখাতেই জাকির নায়েকের বিবর্তন বিষয়ক তত্ত্বের রিফিউটাল হিসেবে শিখানবীস যে লেখা লিখেছিলেন তার লিংক আছে, যদিও খুব সম্ভব আপনি আগেই ওটা পড়েছেন। ওটা আমি পড়েছি ও নায়েক সাহেবের মূল বক্তৃতাও শুনেছি। যেকোন সূস্থ মাথার মানুষের মত আমারো মনে হয়েছে যে হয় নায়েক সাহেব বিবর্তনের কিছুই জানেন না আর নয়ত তিনি অতি বড় মিথ্যুক। কোনটি বেশী বিপদজনক সে আপনার বিবেচনা। অবশ্য আজকাল মনে হয় যে ধর্মের নামে জ্বলজ্যান্ত মিথ্যাচার ও জায়েজ আছে বলে সহসা ফতোয়া আসবে। একজন প্রকৃত জ্ঞানীর সাথে প্রকৃত মূর্খের পার্থক্য কোথায় জানেন? জ্ঞানী জানে যে সে তেমন কিছু জানে না, কিন্তু মূর্খ ভাবে যে সে নিজে সব জানে।
বিবর্তনের মত প্রতিষ্ঠীর বৈজ্ঞাঙ্ক তত্ত্বকে ভুল প্রমান করতে দরকার পালটা শক্ত বৈজ্ঞানিক সাক্ষ্য প্রমান। আজগুবী চটকদার গাজাখুরি দিয়ে হয়ত অতি ভক্তদের কিছুদিনের জন্য বোকা বানানো যায়, তার বেশী কিছু না।
তবে এটা আপনি ভাল পয়েন্ট তুলেছেন যে ডকিন্সের মত জ্ঞানী কেনই বা এই জাতীয় লেখা নিয়ে মেতে উঠতে গেলেন। আসলেই তো, এ যুগে কি কেউ ফ্ল্যাট আর্থ সমিতির বিরুদ্ধে লেখালেখি করে? তবে এটাও আমাদের বুঝতে হবে যে আজো এই বিশ্বেরই কোটি কোটি মানুষ বিশ্বাস করে যে নীল আর্মষ্ট্রং নাকি চাদে নেমে কোরান শুনে মোসলমান বনে গেছিলেন (আমার নিজেরো মাত্র বছর কয়েক আগেও এ বিশ্বাস ছিল), চন্দ্রপৃষ্ঠের প্রাকৃতিক লম্বালম্বি দাগের নাসার তোলা ছবি দিয়ে নবী মোহাম্মদের চাদ ভাগ করার নিখুত প্রমান হিসেবে কত ইসলামী সাঈটে আলোড়ন তোলা হচ্ছে একটু দেখেন। গনেশের মূর্তি দুধ খাচ্ছে বা মসজিদের সিসিটিভিতে নামাজরত জ্বীনের ভীডিও ধারন করা হয়েছে এ জাতীয় কেচ্ছা কাহিনী আজকাল উচ্চশিক্ষিত লোকেও বিশ্বাস করে। তাই বিজ্ঞানের নামে এভাবে অপবিজ্ঞান প্রচার শুরু করলে তার প্রতিবাদ তো কাউকে না কাউকে মাঝে মাঝে করতেই হবে। নয়ত সভ্যতার চাকা উলটো দিকে ঘোরানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।
হারুন ইয়াহিয়ার কোন লেখা ভাল বা বিজ্ঞানসম্মত হলে তা অবশ্যই ছাপা হবে, তাই উচিত (নিশ্চিত নই যদিও কি ছাপা হয়) । তেমনি উচিত তিনি কিছু গার্বেজ লিখে থাকলে তা আস্তাকুড়ে ছুড়ে ফেলা। যেকোন সভ্য দেশেই যে কারো বিরুদ্ধেই মামলা করা যায়, তাতে কি প্রমান হয় ঠিক বোঝা গেল না। আমাদের দেশের সংবিধান মতেও আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। বিচারক তদন্তের পর বা সাক্ষ্য প্রমান না পেলে মামলা বাতিল করতে পারেন, তবে কাউকে বলতে পারেন না যে মামলা করা যাবে না। আমাদের দেশে বছর কয়েক আগে এক মার্কশীট জালকারি বিচারকের কিচ্ছা প্রমানসহ পত্রিকায় উঠেছিল, তাতে তার বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে উলটা পত্রিকার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দিয়েছিলেন। এতে কি প্রমান হয়েছিল? তবে এই ইয়াহিয়া বা যেটাই আসল নাম হোক দেখা যাচ্ছে আসলেই ৩ বছর শ্রীঘর খেটেছেন, তবে কি অপরাধ তা আবার লিখে এখানে আর দূর্গন্ধ ছড়াতে চাই না। এমন কামেল লোককে পীর না মানলে কি আর আমাদের উপায় আছে?