জিন্নার ভূত ভারতের ঘারে চিরকুমার। কায়েদ-ই-আজমকে ধর্ম নিরেপেক্ষ বলে দাবী করে ভারতের প্রাত্তন বিদেশমন্ত্রী যশোবন্ত সিং বিজেপি থেকে বিতাড়িত হলেন। যশোবন্ত বিজেপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রাণপুরুষ। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং থেকে নির্বাচিত সাংসদ। এর আগে আদবানী জিন্নাকে ধর্ম নিরেপেক্ষ বলায় বিপাকে ছিলেন কিছুদিন। এসব কথা যাক। ভারতে বিজেপি এবং সিপিএম-সাংঘাতিক ভাবেই ফ্যাসিস্ট পার্টি। পার্টি মেম্বারদের আদর্শগত ভিন্নমত প্রকাশের অনুমতি নেই। এর আগে সিপিএম স্পীকার সোমনাথ মুখার্জিকে একই ভাবে তাড়িয়েছে। উদার গণতন্ত্রের শত্রু এইসব পার্টিগুলি এমনিতেই এখন ডুবন্ত নৌকা। ভারতীয় ভোটারদের কাছে প্রত্যাখ্যাত। তাই সাক্ষাত সলিলে ডুবন্ত ফ্যাসিস্ট পার্টিগুলির হারিকিরির ওপর টর্চলাইট ফেলার জন্যে এই লেখা নয়। মহম্মদ আলি জিন্না এবং ভারতভাগ-সেটা নিয়ে নিজের মত প্রকাশ করতে চাইছি মাত্র।
কায়েদি আজম জিন্না দক্ষিন এশিয়ার সম্ভবত সব থেকে জটিল রাজনৈতিক চরিত্র। আর ধর্ম নিরেপেক্ষতা, আমাদের অভিধানের সর্বাধিক বিতর্কিত শব্দ। সুতরাং এই দুটি ককটেলকে একত্রিত করলে যে জটিল বিশ্লেষন পাওয়া যাবে-সেটা ব্যাক্তিনিরেপেক্ষ হওয়া অসম্ভব। তাই এই ব্যাপারে ভিন্নমত থাকবেই-এবং সেটা ধরে নিয়েই আমি নিজের দৃষ্টিভংগীতে জিন্নার রাজনৈতিক দর্শনের ওপর আলোকপাত করব।
কোন মানুষের জীবনেই তার রাজনৈতিক দর্শন স্থিতিশীল না। ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে তা বিবর্তিত হতে থাকে। এই বিবর্তনের মূলে থাকে অর্জিত জ্ঞানের সাথে বাস্তবতার পার্থক্য। জিন্নার জীবনে এটা হয়েছে সব থেকে বেশী। এবং সেই দৃষ্টিতে জিন্নাকে না বুঝলে কোন সত্যে উপনীত হওয়া খুব কঠিন।
প্রথমেই যে প্রশ্নটি আমাদের গভীর ভাবে বিশ্লেষন করতে হবে সেটা হচ্ছে ১৯০৬ সালে যখন মুসলীম লীগের জন্ম হল-জিন্না সেখানে যোগদানের বদলে-তাদের খুব অবজ্ঞার চোখে দেখেছিলেন।লীগের নেতাদের সম্মন্ধে তার উক্তি ” ওরা অত্যন্ত বেশী মুসলমান”। অর্থাৎ ১৯০৬ সালে জিন্না নিজেই বলেছিলেন, তার মতন আধুনিক লিব্যারাল ডেমোক্রাটদের জন্যে লীগের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বেমানান। প্রশ্ন হচ্ছে পরবর্তী দশকে কি এমন ঘটল তার জীবনে এবং ভারতের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে যে তিনি লীগে যোগ দিলেন (১৯১৩) এবং তার প্রেসিডেন্ট ও হলেন লখনো অধিবেশনে (১৯১৬)। পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে তিনি ১৮৯৬ সালে কংগ্রেসে যোগ দেন। কংগ্রেসে ফিরোজ শা মেহেতা, সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি এবং গোপাল কৃষ্ণ গোখলে -এরাই ছিলেন জিন্নার ঘনিষ্ট রাজনৈতিক সহচর। বৃটেনের তার ছাত্র জীবন থেকে তিনি মূলত হিন্দু এবং পার্শী জাতিয়তাবাদি নেতাদের সাথেই ওঠাবসা করেছেন। ব্যারিষ্টার হিসাবে তার ক্লায়েন্ট বেস ছিল মুম্বাই এর পার্শীরা। জিন্নার সামাজিক জীবনে কোন মুসলিম বন্ধুর পর্যন্ত দেখা পাওয়া যাচ্ছে না এই সময়। পোষাকে এবং খাদ্যে ১০০% সাহেব ছিলেন জিন্না। ইসলামে নিশিদ্ধ শুয়োরের মাংস এবং দৈনিক মদ্যপান-কোন কিছুতেই অরুচি ছিল না জিন্নার। এই সময় মুসলিমদের জন্যে একটি কাজই করেছেন। ওয়াকফ বা ধর্মীয় কারনে মুসলিমরা যে জমিদান করে-সেটাকে আইনসিদ্ধ করিয়েছেন। কিন্ত তার থেকেও তিনি বেশী সক্রিয় ছিলেন বাল্যবিবাহ নিরোধক আইন আনতে। মনে রাখতে হবে এটা সেই সময়- যখন রবীন্দ্রনাথ অক্লেশে তার কন্যাদের বাল্যবিবাহ দিয়েছেন। জিন্নার হিন্দু মক্কেলরা যথা গোখলে বা তিলক, আধুনিকতার প্রশ্নে তার থেকে অনেক পিছিয়ে-এরা বাল্যবিবাহের সমর্থক ছিলেন। তাহলে কি এমন ঘটল জিন্নার মতন একজন আধুনিক এবং ইসলাম থেকে শত যোজনদূরে অবস্থান করা সাংঘাতিক বুদ্ধিমান ব্যাক্তিত্ব লীগের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির পাঁকে ডুবলেন?
দ্বিতীয় যে প্রশ্নটি আমরা কোনদিন করি নি-সেটা হচ্ছে আবুল কালাম আজাদের সাথে জিন্নার রাজনৈতিক দর্শনের পার্থক্যের উৎস কি? এটাত আমার কাছে বিরাট ধাঁধা। জিন্না ছিলেন ১০০% বৃটিশ। মনে, প্রানে এবং দর্শনে। সেখানে আবুল কালাম আজাদ ছিলেন ১০০% ধর্মভীরু মুসলমান। আজাদের পরিবার ছিল কলকাতার বিখ্যাত ইসলামিক শিক্ষকদের পরিবার। বলতে গেলে একরকম মসজিদেই মানুষ হয়েছেন তিনি। সুতরাং আজাদের মতন মুসলীমরা লীগের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করবে এবং জিন্নার মতন বৃটিশ শিক্ষিত মুসলিমরা কংগ্রেসের ধর্ম নিরেপেক্ষতাকে গ্রহন করবে, এটাই স্বাভাবিক প্রত্যাশা। কিন্ত হল উলটো। মৌলনা আজাদ হয়ে উঠলেন হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের কান্ডারী। আর জিন্না হিন্দু-মুসলমানে ভারত ভাগের ভগীরথ। এই ধাঁধার সমাধান কি? এদের দুজনেরই ব্যাক্তিগত জীবনের অলিগলিতে না ঢুকলে, আমরা বুঝবো না জিন্না কেন লীগ রাজনীতিতে ঢুকলেন। যাদের সম্মন্ধে প্রথমদিকে তার একছত্র অবজ্ঞা ছাড়া আর কিছুই ছিল না।
প্রথম প্রশ্নের উত্তরে পাকিস্থান বা বাংলাদেশের ইতিহাস যেভাবে লেখা হয় সেটা হচ্ছে, জিন্না কংগ্রেসকে হিন্দুদের সংগঠন বলে মনে করতেন। হিন্দুদের কাছ থেকে তিনি প্রাপ্য মর্যাদা পান নি। এটাও একধরনের সরলীকরন। তিলকের মতন হিন্দুজাতিয়তাবাদি নেতা জিন্নাকেই বৃটিশদের বিরুদ্ধে তার উকিল হিসাবে নিয়োগ করেছেন। মুসলীম লীগ এবং কংগ্রেস যাতে একসাথে বৃটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার সংগ্রাম করতে পারে তার জন্যে জিন্না ১৯৩০ সাল পর্যন্ত চেষ্টা করেছেন অক্লান্ত।
কিন্ত আসল ফাটলটা এসেছে কংগ্রেসের হিন্দু নেতাদের কীর্তিকলাপে। কংগ্রেস নিয়ে জিন্নার মোহভঙ্গের প্রথম এবং প্রধান কারন অবশ্যই গান্ধী। এবং এর সুত্রপাত গান্ধীর খিলাফত আন্দোলনের সমর্থনের মধ্যে দিয়ে।
তাহলে জিন্নাকি ভারতীয় মুসলিমদের খিলাফত আন্দোলন (১৯২১) সমর্থন করতেন না? প্রশ্নই ওঠে না। জিন্না খুব পরিষ্কার ভাবেই বুঝেছিলেন এ আসলে ইসলামিক মৌলবাদিদের বৃটিশ বিরোধিতা যা হবে ইসলামিক সমাজের আধুনিকরনের অন্তরায়। গান্ধী এসব কিছু না বুঝেই কুখ্যাত আলি ভাতৃদ্বয়কে ( মৌলনা মহম্মদ আলি এবং সৈকত আলি) সমর্থন জানালেন। জিন্নার অমত স্বত্ত্বেও তিলক স্বরাজ ফান্ড থেকে গান্ধী এই আলি ভাতৃদ্বয়কে টাকা জোগালেন আন্দোলন শুরু করার জন্যে।
যে খিলাফত আন্দোলন ছিল বৃটিশদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের আন্দোলন, তা অচিরেই হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গার রূপ নিল মালাবারে এবং নোয়াখালিতে। আসলে খিলাফত আন্দোলন হয়ে উঠল মুসলমান প্রজাবিদ্রোহ। হিন্দু জমিদারদের বিরুদ্ধে। আলি ভাতৃদ্বয় হিন্দু নিধনের ডাক দিলেন এবং গান্ধীকেও হিন্দুনেতা বলে অবজ্ঞা করার উপদেশ দিলেন। গান্ধীকে ত এবার গিলতে হয়। ফলে গান্ধী তার মহান সত্যবাদি ঢ্যামনামো অব্যাহত রাখলেন–” আলি ভাতৃদ্বয়ের কীর্তি জিহাদের অপব্যাখ্যা” বলে দুবাটি কেঁদে নিলেন।
খিলাফত আন্দোলন যে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গার রুপ নেবে, তা নিয়ে জিন্না আগেই গান্ধীকে সাবধান করেছিলেন। কারন জিন্নার ঘটে বুদ্ধিসুদ্ধি ছিল গান্ধীর চেয়ে কিছু বেশী। যাইহোক জিন্না বুঝলেন গান্ধী এবং কংগ্রেস ইসলামিক মৌলবাদকে নিজের সন্তানের মতন করে লালন করতে চাইছে। মৌলবাদিদের ইসলামিক সমাজের নেতা বানাতে চাইছে কংগ্রেস যা মুসলিমদের হিন্দুদের থেকে পিছিয়ে দেবে। কংগ্রেসের ইসলামিক মৌলবাদি তোষনের সেই ট্রাডিশন আজও চলছে। এবং কি আশ্চর্য্য কংগ্রেসের এই মৌলবাদি তোষন যে মুসলমান সমাজের জন্য ভয়ংকর এবং ক্ষতিকর তা প্রথম বলেন জিন্না-কোন হিন্দু নেতা না। এবং ধর্মনিরেপেক্ষতার প্রতীক মৌলনা আবুল কালাম আজাদও কংগ্রেসের মৌলবাদি তোষনের বিরুদ্ধে কিছু বলেন নি। কারন মৌলনা আজাদ ছিলেন ভারতীয় মুসলমানদের রক্ষনশীল অংশেরই প্রতিনিধি। আহা করি ধাঁধাটি পাঠকদের কাছে কিছুটা পরিষ্কার হচ্ছে।
সংখ্যালঘুদের জন্যে আলাদা আইন-একমাত্র সংখ্যালঘু মৌলবাদিদের মুসলীম সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে গণ্য করার দীর্ঘ ভারতীয় ট্রাডিশন গান্ধীই শুরু করেন। ভারতীয় বল্লাম এই কারনে, ভারতের প্রতিটি পার্টি-সিপিএম থেকে কংগ্রেস-এই দোষে দুষ্ট। জিন্না স্বাধীনত্তোর ভারতে কংগ্রেসের এই ধরনের সংখ্যালঘু নীতির জন্যে মুসলীমদের কি সাংঘাতিক ক্ষতি হবে সেই নিয়ে নিশ্চিত ভাবেই চিন্তিত ছিলেন।
তবে ১৯২৯ সালেও জিন্না মোটেও পাকিস্থানের কথা ভাবছেন না। বরং ঐক্যবদ্ধ ভারতে মুসলীমদের স্বার্থরক্ষার জন্যে ১৪ দফা দাবী জানালেন। কংগ্রেস সেই দাবীগুলি প্রত্যাখ্যাত করলে, পাকিস্থানের দাবী করা ব্যাতীত জিন্নার হাতে আর কোন উপায় থাকল না।
কিন্ত কংগ্রেস কেন মানল না সেই ১৪ দফা দাবী? ১৪ টি দাবীর মধ্যে ১১ টি দাবী ছিল সাম্প্রদায়িক। কিন্ত সেগুলি সবই স্বাধীনত্তোর ভারত বর্ষে মুসলমানদের জন্যে মানা হয়েছে। তাহলে মুসলিমদের স্বার্থ রক্ষার জন্যে স্পেসিফিক দাবীগুলিতে কংগ্রেসের আপত্তি ছিল না। ছিল প্রথম তিনটি দাবী নিয়ে যা মূলত ভারতে কেন্দ্র বনাম রাজ্যের ভূমিকা কি হবে তাই নিয়ে। সেখানে জিন্না খুব পরিষ্কার ভাবেই রাজ্যগুলির হাতে অধিক ক্ষমতা দাবী করলেন। যা ভারতের মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য পার্টি বহুদিন থেকে করে এসেছে এবং ১৯৯০ সালের আগেও কংগ্রেস শক্তিশালী যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর দোহাই দিয়ে বিকেন্দ্রীকরনের দাবী মানে নি। ১৯৯০ সালের পরে কংগ্রেস দুর্বল হতে থাকে। ফলত আস্তে আস্তে রাজ্যের হাতে অধিক ক্ষমতা আসতে থাকে। অবশ্য আমেরিকার কাঠামোর সাথে তুলনা করলে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে, আরো অনেক বেশী বিকেন্দ্রীকরন হওয়া উচিত।
প্রশ্ন হচ্ছে কেন কংগ্রেস বিকেন্দ্রীকরনের দাবীগুলি মানল না? এর পেছনে নেহেরুর ভূমিকা কি?
আসল গল্পটা হল নেহেরু ১৯২৮ সালে ডমিনিয়ান স্ট্যাটাসের জন্যে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো কি হবে তার একটা খসরা পেশ করেছিলেন। সেখানে রাজ্যগুলির হাতে সীমিত ক্ষমতা দেওয়ার কথা ছিল যা পরবর্ত্তীকালে ভারতের সংবিধান স্বীকৃত হয়। ভারতে ক্ষমতা এবং প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরন হলে কংগ্রেসের নেতাদের ক্ষমতা নিশ্চিত ভাবেই হ্রাস পেত। একালেও যেমন-সেকালেও কংগ্রেসের অনেক বড় নেতারই কোন প্রদেশিক ভিত্তি ছিল না। তারা ছিল দিল্লীকেন্দ্রীক রাজনীতি করে গোটা ভারতের ওপর ছড়ি ঘোরানোর লোক। সুতরাং সম্পূর্ণ ভাবে নিজেদের স্বার্থের জন্যেই নেহেরু এবং তার অনুগামীরা জিন্নার দাবীগুলি প্রত্যাখ্যান করলেন ও জিন্নাকে পাকিস্থানের দাবী তুলতে বাধ্য করালেন। যশোবন্ত সিং এর বইটিতে নেহেরু বনাম জিন্নার এই দ্বৈরথকেই পাকিস্থান সৃষ্টির ভিত্তিভূমি বলে দাবী করা হয়েছে। এবং এই দৃষ্টি ভংগী মেনে নিলে, দেখা যাচ্ছে পাকিস্থান সৃষ্টির জন্যে নেহেরুর ক্ষমতার লোভই মূলত দায়ী।
জিন্না পাকিস্থান চান নি। নেহেরু তাকে বাধ্য করেছিলেন। ঠিক এই কথাটাই যশোবন্ত সিং লিখেছেন।আমি যতটুকু ইতিহাস পড়েছি, তাতে এই দাবীর কোন ত্রুটি দেখছি না। কারন ১৯৩০ সালের পর লীগ বা জিন্নার ইতিহাস থেকে বোঝা যাবে না, জিন্না কেন পাকিস্থান চাইতে বাধ্য হলেন। তার ডিরেক্ট একশন বা ডেলিভারেন্স ডে ছিল কংগ্রেসের কেন্দ্রীকতা রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই। যা হয়ে উঠলো হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা। হতে পারে দাঙ্গায় অনেক হিন্দু প্রান হারিয়েছিলেন-এবং সেই দায়ভার জিন্না কখনোই এড়াতে পারেন না। কিন্ত যে নেহেরু-কংগ্রেস তাকে এই কাজে বাধ্য করেছিল, তাদের কি কোন দায় নেই??
ভাগ্যের কি পরিহাস। আজ ২০০৯ সালে দেখতে পাচ্ছি জিন্নার ১৪ দফা দাবীর সব কিছুই স্বাধীন ভারতে মানা হচ্ছে, কারন ভারতে কেন্দ্রীয় পার্টিগুলি এখন অনেক দুর্বল। আঞ্চলিক দলগুলির ওপর নির্ভরশীল। অথচ ১৯২৯ সালে নেহেরু মানলেন না জিন্নার দাবী। নিজের ক্ষমতার লোভকে সরিয়ে যদি ভারত বর্ষের ভবিষ্যতের কথা ভাবতেন নেহেরু, তাহলে পাকিস্থানের জন্মই হয় না আজ।
এই কঠোর সত্যটি ভারতবাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্যে যশোবন্ত সিং কে জানাই অশেষ ধন্যবাদ। দেশভাগের জন্যে গান্ধী এবং নেহেরুকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ঐতিহাসিক বিচার করা উচিত আপামর ভারতীয়দের।
এতদিন পরে জানলাম ভারত ভাগ হইছে নেহেরু,জিন্নাহর ক্ষমতার লোভের কারনে,দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে না।
ঐকমত্য আছি
মন্তব্য… আমার কাছে লেখাটি যতটা যৌক্তিক মনে হয়েছে তার উল্টোটা মনে হয়েছে মন্তব্য গুলো পড়ে। আমরা বাঙ্গালি জাতি বড়ই উজবুক টাইপের। আমরা না ধর্মভীরু না সংস্কৃতিমনা। আর কেউ যদি এ দুটোর একটিও হয়ে থাকি তবে, অপরপক্ষকে সহ্য করার ক্ষমতা রাখি না। আপনারা জাতিতে বাঙ্গালি, দেশভাগ হবার কথা ছিল জাতিসত্তার ভিত্তিতে। সেটার দাবীও উঠেছিল, কিন্তু বৃটিশদের কুট চালে ১৯০৬ সালে বঙ্গভঙ্গ রোধ আইন করে ভাগাভাগি বন্ধ হয়। অবিভক্ত বাংলায় কোন বিশেষ ধর্মের প্রচ্ছন্ন ছায়া বহন করতো না। বরং বাঙ্গালি জাতিসত্তাকে এবং বাংলাভাষাককে লালন করতো। কিস্তু অভাগা এ জাতি উজবুকই থেকে গেলে। দুই রাজনীতিবীদ নেহেরু- জিন্নার কুটকৌশলের কাছে পরাস্ত হয়ে আজ দেশ ভাগ নিয়ে হায় হায় করছে। আমার ব্যক্তিমতে ভারতবর্ষ রাজনীতি ও ক্ষমতার কাছে হেরে গেছে। নেহেরু ও জিন্না নামক দুটি মানুষ কি করে ভারতবর্ষকে ভেঙ্গে খান খান করলো তা আমার বোধগম্য নয়। বৃটিশরা আমাদের ভেতরে যে ধর্মীয় বিভেদ তৈরী করে দিয়ে গেছে তা আজও ভাঙ্গা ৩ টি রাষ্ট্র লালন করে চলছি।
আপনার লেখাটিতে জিন্নাহ যেন সব ভালো চেয়েছেন ।গান্ধী ক্ষমতাচাননি,ভারতবর্ষের ঐক্য চেয়েছেন,জিন্নাহ ও নেহেরু দুজনেই ছিলেন ক্ষমতালিস্পু ,প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খায়েস।কেবিনেট মিশন এর প্রস্তাব মেনে নিলে United state of India টিকে যেত।এখন যা হয়েছে তা স্বাধীনতা নয়,বাংলা ও পান্জাবকে ধ্বংস করা হয়েছে।নেহেরু ও জিন্নাহ এবং মাউন্টব্যটেন দায়ী।তাদের মরণোওর বিচার একদিন,হবেই।
বিরাট তত্তিয় বিসয়ক পোস্ট কিন্তু কোন রেফারেন্স নেই দুতভাগ্য। অনেক কিছু জানলাম।কিন্তু মন্তব্যে এসে পুরা অলটারনেটিভ ব্যাপার ঘটে গেল। হিন্দু মুসলমান এখন যেভাবে সহাবস্থান করতে পারছে সেটা কিন্তু আগে সম্ভব ছিল না যেটা আমার নিজের অভিজ্ঞা থেকেই বুঝেছি।
(N) (N)
আপনাকে অনেক ধন্নবাদ অশাধারণ একটি লেখার জন্ন।
Absolutely correct assessment..This is what Muslims need to understand and rest will be simple.
@বিপ্লব পাল,
ধর্ম বিষয়ে আপনাদের মত পড়াশুনা আমার নেই, আমার তাত্ত্বিক জ্ঞান খুবই দূর্বল। আমি নিজের অভিজ্ঞতায় যা সত্য বলে জেনেছি তাই প্রকাশ করি।
এই রোগের সহজ সমাধান কি আমার জানা নেই। হতে পারে অশিক্ষার দূর করা, সেটাও কোন সহজসাধ্য বিষয় নয়। তারপর ও মনে হয় সুফল পেতে কয়েক জেনারেশ্ন লাগবে। শিক্ষার প্রকৃত সুফল মনে হয় এক জেনারেশনে পাওয়া যায় না। এক জেনারেশনে যা পাওয়া যায় তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রী যা হয়ত জীবিকার প্রয়োযনে ব্যাবহার করা যায়, কিন্তু শিক্ষিত মানুষের যা সবচেয়ে বড় অলংকার হতে পারে; সংস্কারমুক্ত বা নিরপেক্ষ মন তা পাওয়া মনে হয় অত সহজ নয়।
দায়িত্ব আমাদের নিজেদের হাতেই, যত তাড়াতাড়ি চেতনার উন্মেষ ঘটে ততই মংগল, নয়ত বিলুপ্তির হুমকি থাকবে ষোল আনা।
@আদিল মাহমুদ,
অভিজ্ঞতাবাদ বা এম্পিরিসিজমই জ্ঞানের আসল উৎস্য-পড়াশোনা সেই অভিজ্ঞতাকে বিশ্লেষন করতে সাহায্য করে মাত্র। সত্যের দ্বান্দিক রূপ অভিজ্ঞতা থেকে যত অর্জন করবেন, তত বিশ্লেষন করা সহজ হয়। এটা করলেই ইসলাম, কম্যুনিজম, হিন্দুত্ব থাকে না-এরা দশভুতে বিলীন হয়।
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর বলা একটি উদ্ধৃতি তুলে ধরা হলো। নিচে refernece দেয়া আছে, কোথায় এটার উল্লেখ আছে।
Daily Inqalaab, Lahore 8th Feb. 1942. (Husn-e-Kirdaar ka Naqsh-e-Tabinda by Allama Pervaiz)
ধন্যবাদ।
আইভি
@আইভি,
Jinnah was hardcore communalist by then…
বিপ্লব পালকে আনেক ধন্যবাদ তার নির্মোহ ও নিরপেক্ষ বিশ্লেষনের জন্য। তবে জিন্নার ব্যাপারে যা সত্য তা হলো তার পাকিস্তান ব্যার্থ হতে চলেছে। তার অবস্থান যে ভ্রান্ত ছিলো তার প্রমান আজকের পাকিস্থান।
আসলে মুসল্মানদের জন্য সংখ্যাগুরু হিন্দুদের সাথে সহাবস্থানের ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতা ও হিনমন্যতায় ভোগার কারন তাদের অতীত কৃ্তকর্ম। ভারতে মুসলিম আভিজানের বিভিন্ন পর্যায়ে মুসল্মানরা হিন্দুদের প্রতি যে ব্যাবহার করেছে তাতে পালটা প্রতিহিংসার স্বীকারে পরিনত হওয়ার আশংকা উড়িয়ে দেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠেনি। যে জন্য পাকিস্থান সৃষ্টি করার তাগিদ মুসল্মান নেতারা বয়ে বেড়িয়েছে তাদের চেতনে ও অবচেতনে।
@আতিক রাঢ়ী,
এ এনালাইসিস মনে হয় বাস্তব সম্মত না। মনে হয় এটা হয়েছিল মোসলমানদের আর্থিক দুরবস্থা থেকে। ব্রিটিশ আমলে আমলে মোসলমানরা দিনে দিনে কেবল পিছাতেই থাকে। যেখানে হিন্দুরা ব্রিটিশদের থেকে আধুনিক শিক্ষায় বেশী মনোনিবেশ করেছিল সেখানে মুসলিমরা তা করতে চরমভাবে ব্যার্থ হয়েছিল। তাতে তারা দিন দিন পিছিয়েছে এবং হিন্দুদের প্রতি ক্ষোব বেড়েছে। এই ক্ষোভ থেকেই তাদের মনে আলাদা ইসলামী রাষ্ট্রের প্রয়োযনীয়তা দেখা তিতে থাকে। তার সাথে সনাতনী হিন্দু ধর্মের জাত প্রথার ভয়াল আচরন ও কাজ করেছে।
বিপ্লব আরো ভাল বলতে পারবেন।
@আদিল মাহমুদ,
অধিকাংশ হিন্দুই ততকালে মুসলমানদের কে শুদ্র বা তার থেকেও নীচু জাতীয় মানুষ ভাবত। এখনো অনেকেই তাই ভাবে। মুসলিমরা হিন্দুদের ঘৃণা করে ধর্মথেকে, আর হিন্দু রা মুসলমানদের ঘৃণা এবং অবজ্ঞা করত জাতিভেদ থেকে। এটা এখনো চলছে-এর জন্যেই ধর্মকে আমি জঞ্জাল বলি।
@বিপ্লব পাল,
একমত।
কুটিল মাথাওয়ালা ব্রিটিশদের পক্ষেও তাই সম্ভব হয়েছে খুব চমতকারভাবে এদের মাথায় কাঠাল ভেংগে খাবার, এমনকি যাবার বেলাতেও খুব নিখুতভাবে এদের চিরজীবনের জন্যই ভাগ করে দিয়ে গেছে।
যদিও আমি তাদের থেকে বেশী দায়ী করব আমাদের পুর্ব পুরুষদের।
@আদিল মাহমুদ,
আপনার বলা বিষয় গুলোর সাথে কেউ দ্বিমত করবেনা।এগুলো সর্বজন স্বিকৃ্ত বিষয়।
তবে সুলতান মাহমুদ, তৈ্মুর লং এমনকি বাবর যেভাবে মানুষের কাটা মাথাদিয়ে পিরামিড বানাতে পছন্দ করতেন- ইতিহাসের ঐ আধ্যায় জানার পর আমার মনে হয়েছে
এটাও একটা বিষয় যা আরো অন্যান্ন বিষয়ের মত প্রভাবকের কাজ করেছে।
মুসলমানরা বদরের যুদ্ধজয় উদযাপন করেছিলো মদিনার সব নিরস্ত্র ইহুদি পুরুষেকে গনহত্যার মাধ্যমে। সেই ঘটনার প্রভাব কিন্তু আজও বিদ্যমান।
@আতিক রাঢ়ী,
ধর্মের আফিমে গণহত্যার নেশা মনে হয় না কোন পার্টিকুলার ধর্মের একচেটিয়া। এই আধুনিক যুগেও যেভাবে মানুষ মেতে উঠতে পারে আর সেই আমলে কি হতে পারে তা আচ করা এমন কিছু কঠিন না।
তৈমুর লং অত্যন্ত নিষ্ঠুর ছিলেন জানি, কিন্তু তিনি শুধু ধর্মীয় বিদ্বেষে বিধর্মীদের মাথা কাটতেন তেমন শুনিনি। বাবর ও একই জাতের ছিলেন এটা আমার জানা ছিল না। নিষ্ঠুরতার আরেক প্রতীক ছিলেন নাদির শাহ, তিনি দিল্লীতে অভিযান চালিয়ে আক্ষরিক অর্থ রক্তের হোলি খেলা খেলেছিলেন। তবে সে নিধন যজ্ঞেও কোন ভেদাভেদ ছিল না। এগুলি সবই প্রমানিত সত্য।
এও সত্য যে ইতিহাসে হিন্দু বা অন্য ধর্মের রাহা মহারাজাদের নিষ্ঠুরতার বিস্তর পাওয়া যাবে।
একটা বেশ কমন থিয়োরী আছে যে তলোয়ারের জোরেই ইসলাম উপমহাদেশে কায়েম করা হয়েছে। এর কিছু সত্যতা অবশ্যই আছে, তবে এটা মনে হয় সত্য যে সনাতন হিন্দু ধর্মের যাতাকলে পিষ্ঠ নিম্ন বর্ণের হিন্দুরা ইসলামকে তাদের মুক্তির পথ হিসেবে সাদরেঈ গ্রহন করে নিয়েছিল।
@আতিক রাঢ়ী,
এখানে অন্য ধর্মের সাথে মৌ্লিক পার্থক্য হলো, মদিনার গনহত্যাটি হয়েছিলো ইসলাম ধর্মের প্রবর্তকের নির্দেশে ও উপস্থিতীতে।
সব ধর্মেকে এক কাতারে ফেলি কি করে? বৌ্দ্ধ ধর্মের কোথায় বা বুদ্ধের জীবনের কোথায় স্বহিংসতার প্রশ্রয় আছে বলে আমার জানা নেই।
আর সে জন্য হীনজান ও মহাজান দের মধ্যে আজ পর্যন্ত একটিও রক্তপাতের ঘটনা ঘটেনি।আর শিয়া, সুন্নি বিরোধ মানেই রক্তপাত।কারন এর সুত্রপাততো রক্তপাতের মাধ্যমেই।দুধ থেকে ঘি হয় কিন্তু মধু হয়না।
কার্য, কারনেই নিহিত থাকে।
যুদ্ধ বহু কারনেই হতে পারে কিন্তু ধর্ম যুদ্ধের তাগিদ ইসলাম ছাড়া আর কোন ধর্ম এভাবে দিয়েছে বলে আমার জানা নেই।
@আতিক রাঢ়ী,
আমি কোনরকম সাফাই গাইছি না, তবে সেই বানু কুরাইজা ইহুদী গোত্রের গণহত্যা এই আমলে খুব নিষ্ঠুর অমানবিক মনে হলেও সেই আমলের বিচারে ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। এটা নিয়ে অবশ্য ঐতিহাসিকদের মধ্য নানারকম মতভেদ আছে, আমার বা আপনার আজ নিশ্চিতভাবে মনে হয় কিছুই বলার নেই। আর যেহেতু এটা ধর্ম বিষয়ক, তাই এতে ইসলাম লাভার বা হেটার দুই তরফের পক্ষ থেকেই অতিরঞ্জন বা সত্য গোপ্নের সম্ভাবনা আছে। ধরে নিলাম এই ঘটনা সত্য, তাহলে এতে বুঝতে পারি যে নবী মোহাম্মদ তার কালের উর্ধ্বে উঠতে পারেননি।
মূসা নবীর নির্দেশেও শত শত যুদ্ধবন্দী হত্যার নজির ইতিহাসে আছে। জানেন নিশ্চয়ই।
বৌদ্ধ ধর্ম ইসলাম, খ্রীষ্টিয়ান, ও হিন্দু ধর্মের তূলনায় মনে হয় খুব বেশী লোকে পালন করে না। আর বাকি তিন মূল ধর্ম অনু্যায়ী যেভাবে জীবন বিধান নির্ধারণ করা যায় (ভুল ঠিক তা এখানে বিবেচ্য নয়) বৌদ্ধ ধর্ম অনুযায়ী মনে হয় তা সম্ভব না, তাই একে পূর্নাংগ ধর্ম বলে অনেকেই মানেন না। বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীরাও কিন্তু নৃশংস কার্যকলাপে খুব একটা পিছ পা হন না, আশা করি উদাহরন আপনিও জানেন। তর্ক হতে পারে যে সেটা র জন্য তারা ধর্ম ব্যাবহার করে না। কিন্তু অন্যভাবে বলা যায় যে অহিংসা পরম ধর্ম যারা বিশ্বাস করেন তারা কিভাবেই বা নৃশংস কাজ কারবার করেন?
সনাতন হিন্দু ধর্মে অন্য মানুষকে ঘৃণা করার যেসব উপাদান আছে সেগুলি যেকোন হিন্দু ধর্মে গোড়া বিশ্বাসীকে অন্য ধর্মাবলম্বীকে বিনাশে প্ররোচনা দিতেই পারে। পার্থক্য হল, মোসলমানরা যা এখনো কোনভাবেই মানতে চান না তা হিন্দুরা মোটামুটি তা বুঝতে পেরেছেন, তা হল; ধর্ম কোন ধ্রুবক নয়, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ধর্মীয় মূল্যবোধের পরিবর্তন ঘটাতে হয়। তাই হিন্দুরা যেভাবে তাদের ধর্মের গোড়ামী জঞ্জাল সহজেই দূর করতে পেরেছেন তা মোসলমানরা পারছেন না। আসলে আমার মতে মোসলমানদের সমস্যার এটাই মূল কারন।
খ্রীষ্টান ধর্মের নামেও কি বিশ্বে রক্তপার খুব কম হয়েছে? হতে পারে তাতে যীশু উপস্থিত ছিলেন না, তেমন শিয়া সুন্নীদের কাটাকাটিতেও নবী মোহাম্মদ নিশ্চয়ই নেই।
@আতিক রাঢ়ী,
ঐতিহাসিক ব্যাপারে সত্য-মিথ্যা নিরুপনের ক্ষেত্রে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লষনে আবেগ তাড়িত না হয়ে যুক্তি প্রয়গ করতে পারলে সত্যের কাছাকাছি যাওয়া যায়। আন্যথায় ইতিহাসের গুরুত্ব শূন্য।
আপনি যদি ধরেও নেন যে বানু কুরাইজার ঘটনা মিথ্যা- তার পরও নবী মোহাম্মদ কাল উত্তীর্ন নন। কারন কোন মানূষের পক্ষে কাল উত্তীর্ন হওয়া সম্ভব না। ১৪০০ বছর আগে কোন মানুষ জ্ঞনের সর্বোচ্চ চূড়া ছুয়েছে আর তার পরবর্তি্দের কাজ শুধু ঐ চুড়ার যাতটা কাছাকাছি সম্ভব যাওয়া, এটা মানা আর সম্পূর্ন মানব জাতিকে, তার সমস্ত সম্ভাবনাকে অপমান করা।
বানু কুরাইজার ইহুদিরা যুদ্ধ বন্ধী ছিলোনা। তাদের আপরাধ ছিলো তারা মোহাম্মদের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নেয়নি।
আপনার মতে পুর্নাঙ্গ ধর্ম হওয়ার জন্য কি কি শর্ত পূরন হওয়া দরকার ?
[তর্ক হতে পারে যে সেটা র জন্য তারা ধর্ম ব্যাবহার করে না। কিন্তু অন্যভাবে বলা যায় যে অহিংসা পরম ধর্ম যারা বিশ্বাস করেন তারা কিভাবেই বা নৃশংস কাজ কারবার করেন?]
তর্ক হতে পারে, বলছেন কেন? মূল তর্কতো এটাই। অহিংসা পরম ধর্ম যারা বিশ্বাস করেন তারা যখন এই কাজ করেন তখন তারা তাদের ধর্মীয় অনুশাষনের লংঘন করেন।
[ধর্ম কোন ধ্রুবক নয়, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ধর্মীয় মূল্যবোধের পরিবর্তন ঘটাতে হয়। তাই হিন্দুরা যেভাবে তাদের ধর্মের গোড়ামী জঞ্জাল সহজেই দূর করতে পেরেছেন তা মোসলমানরা পারছেন না। আসলে আমার মতে মোসলমানদের সমস্যার এটাই মূল কারন।]
আপনার এই বক্তব্যের সাথে সম্পূর্ন একমত। তবে দেখতে হবে, কেন মোসল্মান রা পারছে না। এই না পারার কারন গুলো কি?
হিনদুরা কি কি গুড়ামি ত্যাগ করেছে? উচচ বরনের হিনদুরা আজো নিমনো বরনের হিনদুদের মানুষ মনে করেনা। গরু কে দেবতা মনে করে। মুসলমানদের কি কি গোড়ামি ত্যাগ করতে হবে যানাবেন আসাকরি
বিপ্লব ভাই, ইতিহাস নিয়ে লেখায় তথ্য-সুত্র দিলে কি ভাল হতো না ? তাহলে এই লেখাটি রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যেতো ।
@নুরুজ্জামান মানিক,
হ্যা-অবশ্যই তা হত। আমি রেফারেন্স দিয়ে আমার ব্লগ আপডেট করে দেব। তবে আমি যেসব তথ্য দিয়েছি, তার কোনকিছুই বিতর্কিত না-সর্বজন স্বীকৃত।
মানুষ সাধারণত সত্যকে ভয় পায়।তাই সে সত্যের মুখোমুখী হতে চায় না।ধর্মের কারণে দেশ ভাগ? না দেশের কারণেই দেশভাগ? পৃথিবীর কোথাও কি কখনো ধর্মের কারণে দেশ ভাঙে? বা, দুই দেশ একদেশ হয়ে যায়? রাজনীতি আর রাস্ট্রের গায়ে ধর্মের পোষাক, মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ হত্যা ও
ধর্মের মধুরবিষের যারাঁ রাজনৈতিক জনক তারাঁ সকলই সমান দায়ী।
ভারত উপমহাদের রাজনীতির শুরূটাইতো তিলক আর টুপি, মানুষ নয়।
বিপ্লব পালকে অনেক ধন্যবাদ, কঠিন সত্যটা পাঠকের আয়নায় ধরার জন্য।
অন্যকথায়, ভারতীয়রা কি ৪৭ এর দেশভাগের জন্য দূঃখিত? আমি জানি পাকিস্তানীরা মোটেও নয়, তারা অত্যন্ত আনন্দিত। ভারতীয়দের সাধারন দৃষ্টীভংগী কি আলাদা? যদি তাই হয়, তবে কেন?
দেশভাগ ভারতের ইতিহাসের সব চেয়ে বড় কলঙ্ক ময় অধ্যায়। বাঙালীর জাতির ওপর দুর্ভাগ্যতম আক্রমন।
পাকিস্থানে যেসব ভারতীয় মুসলিম দেশভাগে ফলে যেতে বাধ্য হন-তাদের কাছে কি দেশভাগের ঘটনা আনন্দদায়ক? আমি ত উলটোটাই জানি।
ছেলেবেলা থেকেই হিন্দু-মোসলমানের যেই টেনশন দেখেছি তাতে মনে হয়েছে যে এই দুই জাতির আলাদা থাকাই শ্রেয়। যে বিয়েতে নিত্য ঝগড়া ঝাটি লেগেই থাকে সে বিয়ে টিকানো থেকে আলাদা হয়ে যাওয়াটাই তো উত্তম।
একজন মুসলমান বাপ কি হিন্দু বাপে থেকে আলাদা? না তাদের জীবনের উদ্দেশ্য আলাদা? সবাইত নিজেদের ছেলেপুলেদের দুধেভাতে রাখতে চাই। এটাই ত মানুষের একমাত্র জ়ৈবিক ধর্ম-সেখানে হিন্দু মুসলমান কি আলাদা?
হিন্দু মুসলমানদের টেনশনের কারন রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের লড়াই। একজন মুসলিম ব্যাবসায়ী হিন্দু ব্যাবসায়ীর ক্ষতি চাইতে পারে-কিন্ত হিন্দু কাস্টমারের ক্ষতি মোটেও চাইবে না। প্রতিটা টেনশনের মূলেই আছে কোন না কোন ব্যাবসায়িক বা বৈশইয়িক বা রাজনৈতিক কারন। সেটাতে ধর্মের প্রলেপ লাগিয়ে লোকে নিজের কাজ সিদ্ধ করে।
হিন্দু-মুসলমানদের জেনেটিক গঠন যেহেতু এক-সেহেতু তারা আলাদা হতে পারে না। আলাদা করে সমাজ আর রাজনীতি। ১০০,০০০০ বার কোরান পড়ার পরেও একজন মুসলমান বাপ তার ছেলের প্রান বাঁচাতে কোরান বিরোধি কাজ করবে-হিন্দু বাপও তাই করবে। কারন সেটাই তাদের আসল ধর্ম।
@বিপ্লব পাল,
কে নিশ্চয়তা দিবে যে এমনটি হত । এমন ও তো হতে পারতো, বাংলাদেশের মসুলমান গুলো সব হিন্দু জমিদার দের গুলাম হয়ে থাকতো । ভারত তো আর মসুলমানদের না, আবার চীন ও না কিংবা রাশিয়া । তাহলে কোনো লাভ হইতো না । আর, আমেরিকা ভারত, চীন অথবা রাশিয়া থেকে অনেক ভাল দেশ, আপনারা যাইবলেন । নিরোপেক্ষভাবে বিচার করলে আমেরিকা অন্যদের থেকে অনেক ভাল । ভারত হইলে আরো অনেক দুরভাগ্য হইতো ।
কিন্তু, মসুলমান্রা জীবনের অনেক চাওয়া পাওয়া কেই অসীকার করে । আপনারা যেভাবে চলেন , মসুলমান রাও কি সেই রখম চলতে চায় না ? চায় । কিন্তু সবকিছুঈ কুরবানি করে । তাই উপরের কথা ও তঠিক না ।
এ বিষয়ে আপনার কি মতামত ? এ রকম জাতিকে নেহরু ভারত থেকে বাদ দিয়ে ভারতের ঊপকার ই করেছেন, বলে আমি মনে করি ।
@ফুয়াদ,
(১) পশ্চিম বঙ্গে কি মুসলমানরা হিন্দু জমিদারদের গোলাম হয়ে আছে? ভারত ১৯৫১ সালে জমিদারি প্রথা তুলে দেয়। ভূমি সংস্কার পশ্চিম বঙ্গে হওয়ার জন্যে অনেক ভূমিহীন মুসলমান প্রজা আজ জমির মালিক। আপনি একটু তথ্য ঘাঁটলে দেখবেন মুসলমান কৃষকদের অবস্থা বাংলাদেশের থেকে অনেক ভাল ভূমি সংস্কার হওয়ার কারনে। তারাই জমির মালিক। বাংলাদেশে হিন্দুদের বিতাড়ন করে মুসলিমরা জমি কেড়ে নিয়েছে। এদিকেও জমি হিন্দুদের হাত থেকে মুসলমানদের হাতে গেছে। তবে সেটা কেড়ে না-ওপারেশন বর্গার মাধ্যমে। অর্থাৎ লাঙল যার জমি তার নীতিতে আস্তে আস্তে ভাগচাষীদের হাতে জমি দিতে হয়েছে। আমাদের নিজেদের জমিই মুসলমান ভাগচাষিদের হাতে গেছে। এবং সেটা ভালোই হয়েছে কারন, তারাই যখন চাষ করছিল, জমি তাদেরই হওয়া উচিত।
(২) কোন ভারতীয় মুসলমান, তারা ভারত বর্ষের সেবাদাস-এমন মনে করে বলে ত আমার জানা নেই। দেশ ত তাদের ও। আমির খান যত দেশেপ্রেম এবং ভারতীয়ত্বর সিনেমা বানান, আর কেও ত অত বানায় না! এপিজে কালাম ভারতের সামরিক গবেষনার জন্যে বিয়ে করারই সময় পেলেন না! উনার উইংস অব ফায়ার পড়ুন। উনিত ভারতের সামারিক এবং নিউক্লিয়ার গবেষনার হেড ছিলেন। দেখবেন এক জন সাচ্চা দেশপ্রেমী কাকে বলে। যাজ্ঞে এর জন্যে ভারতীয় মুসলমানদের সাথে আপনাকে কথা বলতে হবে।
(৩) আপনার তৃতীয় প্রশ্নটা খুব অবাক করল। আপনি মনে করেন মুসলমানরা যতটা জীবনে আত্মত্যাগ করে, হিন্দুরা করে না। আমি ঠিক বুঝলাম না। বাংলাদেশটাকে ত লুঠে পুটে কয়েকটি কোরাপ্ট ফ্যামিলি মিলে লাট করে দিয়েছে। পাকিস্থান ও তাই। ইহা কোরবানির নমুনা?
বিশুদ্ধ আত্মত্যাগ বলে জৈব জগতে কিছু নাই। ধর্মের কারনে যে দান করে, সেও সামাজিক মর্যাদা পাওয়ার জন্যেই সেটা করে-যা তার ব্যাবসায় কাজে আসে। এটা হিন্দু-মুসলমান সবার মধ্যেই আছে। আমেরিকাতে দেখি বাংলাদেশী মুসলমানরা মসজিদের জন্যে অনেক টাকা দিচ্ছে (কুরবানি?) আর হিন্দুরা টাকা ঢালে মন্দিরের পেছনে। এগুলো আত্মত্যাগ না কি?
আর পরিবারে জন্যে আত্মত্যাগটাত ভারতীয় ঐতিহ্য। ভারতীয় বাবা মারা এটা করে বলেই আমেরিকার সেরা বিশ্ববিদ্যলয় গুলিতে আজ ২০-৩০% ভারতীয়-যেখানে জন সংখ্যার বিচারে তারা ১% এর ও কম। বাংলাদেশী দ্বিতীয় প্রজন্মও পড়াশোয়া খুব ভাল করে এদেশে। আপনি এর মধ্যে মুসলমানদের কি স্পেশাল পেলেন বুঝলাম না। আমার ত মনে হচ্ছে এটা একটা ভুল ধারনা নিয়ে আপনি বড় হয়েছেন। চোখ কান খুললেই দেখবেন, সব ধরনের মানুষ সব ধর্মেই আছে।
@বিপ্লব পাল,
তাহলে আপনি বলছেন যে ভারতীয়রা সাধারণভাবে দেশভাগ সাপোর্ট করে না? আমি পাকিস্তানে যাওয়া ভারতীয় মোসলমানদের কথা পার্টিকুলারলি জানি না তবে সাধারণভাবে পাকিস্তানীদের মনোভাব জানি যে তারা খুবই আনন্দিত। তারা এমনকি এমনো প্রায়ই দাবী করে যে ভারতে থেকে যাওয়া মোসলমানরা এখন ভারতে থাকার জনইয় আফসোস করে, সত্য মিথ্যা জানি না। আমাদের পূর্ববাংলার মোসলমানরাও অত্যন্ত আনন্দিত ছিল। বোধকরি পশ্চীমাদের থেকেও বেশী খুশী ছিল, তাই তো তখন শ্লোগান ছিল “মু মে বিড়ি হাত মে পান লড়কে লেংগে পাকিস্তান”। কয় লাখ মানুষের চৌদ্দ পুরুষের ভিটা হারানোর বেদনা এই বিড়িওয়ালাদের আনন্দ বিন্দুমাত্র আহত করতে পারেনি।
মানুষ গঠনে সবই এক, কেউ হিন্দু মোসলমান খ্রীষ্টান আস্তিক নাস্তিক না। সিনেমাতেও প্রায়ই দেখা যায় আবেগময় কন্ঠে এসব কথাবার্তা, হাত কেটে দেখানো যে হিন্দু মোসলমানের রক্ত একই, কিন্তু তারপরেও মানুষ জেনেশুনে ধর্মের ভিত্তিতেই অনেক কিছুই করে।
আমিও জানি যে ব্যাবসায়ীরা কখনো চায় না দাঙ্গা হাঙ্গামা হয়ে তাদের ব্যাবসার ক্ষতি হোক।
আমাদের অঞ্চলের হিন্দু-মোসলমান টেনশনের জন্য শুধু রাজনৈতিক নেতাদের উপর একচেটিয়া দায় চাপানো মনে হয় অনেকটা সত্য অস্বীকার করা। নেতারা অবশ্যই টেনশন উষ্কান নিজ স্বার্থে, আমরা সবাই জানি। কিন্তু তারা এই কাজ কেন বা কিভাবে এত সফলভাবে করতে পারেন? কারন জনতার একটা বড় অংশ আসলে তাদের এই মনোভাব সমর্থন করে। দূঃখজনক হলেও সত্য। নেতাদের যা করতে হয় তা হয় শুধু জ্বলন্ত বারুদে অগ্নিসংযোগ। বারুদ আসলে তৈরীই থাকে।
যেমনঃ ২০০১ সালের জোট সরকারের সংখ্যালঘুদের উপর নির্মম নির্যাতনের বিরুদ্ধে কি বাংলাদেশে খুব বড় কোন নাড়া লেগেছিল? সংবাদপত্রে নিয়মিত রিপোর্ট এসেছে, সাধারণ মানুষ বেশীরভাগই উদাস চোখে তা দেখেছে, পড়েছে আবার বেশীরভাগ ভুলেও গেছে। এটা এমন কিছু বড় ব্যাপার বেশীরভাগ মানুশেরই মনে হয়নি। কিছু বুদ্ধিজীবি, মানবাধিকার কর্মী প্রতিবাদ করেছেন, তাদের আবার অনেকেই আওয়ামী ভারতের দালাল বলে গালাগাল করেছেন। এদের অনেকেই আসলে রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী শিবিরের। আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে বহু মানুষের সাথে সে সময় আলাপ করেছি। বিদেশে, যারা অতি উচ্চশিক্ষিত তাদের সাথে। বেশীরভাগেরই মতামত ছিল যে আসলে তত বাড়াবাড়ি কিছু হতে পারে না, সবই দলীয় পত্রিকার কারসাজি। কেউ কেউ এমনো বলতেন যে ভারতের তূলনায় তো কিছুই হয়নি। এমনকি যারা আওয়ামী সমর্থক তারাও অনেকে এড়াতে চাইতেন, বা বলতেন যে দেশের ভাবমূর্তির স্বার্থে আমাদের চেপে যাওয়া উচিত। মানুষের এই মনোভাব কি রাজনৈতিক নেতারা তৈরী করেছিল? মানুষ কেন এভাবে এড়াতে চায়? একই কারনে আমার মনে হয় গুজরাটে ভয়াবহ মোসলমান নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও ভারতবাসীর অন্তর ঠিক সেভাবে কাদেনি। হাজার হোক নিজের ধর্মের লোকেরাই তো দায়ী, নাহয় একটু বেশীই করে ফেলেছে আর কি! সে আর এমন কি।
মানুষের এই মনোভাব হঠাত করে বা শুধু রাজনৈতিক নেতারাই বানায় না। এর বীজ খুব ছোট থাকতে বপন করা হয়, করে পরিবার, বিদ্যালয় থেকে পুরো সমাজ ব্যাবস্থা, কখনো সূক্ষ্মভাবে, কখনো খুব স্থূলভাবে। আমার মনে পড়ে আমরা ক্লাস ১ থাকতে আল পিপড়ে মারতাম, কারন সেগুলি হিন্দু পিপড়ে তাই কামড় দেয়, আর কাল পিপড়ে হল মোসলমান পিপড়ে তাই কামড় দেয় না। খুব ছোট একটা উদাহরন দিলাম।
তাই আমার মনে হয় ৪৭ র দেশভাগ সূস্থ বিবেক বর্জিত হলেও আমাদের অঞ্চলের বাস্তবিকতায় মনে হয় ঠিক ই ছিল।
@আদিল মাহমুদ,
(১) এই দক্ষিন এশিয়ায় হিন্দু এবং মুসলমান যে খুবী সাম্প্রদায়িক, সেটাকে মেনে নিয়েও বলা যায়-হিন্দু, মুসললাম ঐক্যের যে সংস্কৃতি আউল-বাউলরা লালন করেছে-সেটাই বাংলার আসল সংস্কৃতি। আসলে নানান কারনে মানুষ সত্য কথাটা [ [হিন্দুত্ব এবং ইসলামিয়ৎ] বলতে ভয় পেয়েছে। এই প্রজন্ম পাবে না। এই জন্যেই এটা হবে, যে বাণিজ্যের কারনে, কোন মুসলমানের সম্ভব না তার সংস্কৃতিকে আকরে থাকা। কেও টুপি পড়ে লম্বা দাড়ি নিয়ে গেলে বাংলাদেশের সফটওয়ার কোম্পানী গুলিও তাকে চাকরি দেওয়ার আগে দুবার ভাববে।
(২) দাঙ্গার সময় কেন সংখ্যাগরিষ্ট মানুষরা চুপচাপ থাকে-তার একটা বিশ্লেষন আমি করেছিলাম। দেখতে পারেন।
http://biplabpal2000.googlepages.com/Gujrat_religion.pdf
ভাই আপনারা আজো কেন কান না কাটি করেন। আর 47 এর আগেও ভারত কখোন এক দেশ ছিলো না 800 বছর মুসলিম শাসনেও বিভিন্ন শাসক আলাদা রায্য সাধিন ভাবে শাসন করেছে। আর মুসলিম হিনদু কখনো এক জাতি ছিলো না। আর আমরা মুসলমান রা চায়না হিনদুরা চেয়ারে একাই বসুক আর আমাদের বলুক গফুর চট টা পেড়ে বৈঠক খানার বাহিরে বস
নিরপেক্ষ এনালাইসিসে বিপ্লবের জুড়ি মেলা ভার। যদিও ৪৭ এর দেশভাগের জন্য আসলেই কার কতটা দায় তা বোঝা আজ খুব কঠিন। এক একজন তার পছন্দের নেতাকে হীরো, অন্যকে করেছেন ভিলেন।
সে বিতর্কে যাচ্ছি না, কারন আমার মতে দেশভাগ বা পাকিস্তান বিভক্তিকরন ছিল অবশ্যম্ভাবী, যা একদিন না একদিন হতই, সে ৪৭ না হয়ে হয়ত বা ৬৭। বর্তমান পাকিস্তানই বা কয়দিন টিকে তাই অনেকে শংকা করছেন। শুনতে খারাপ বা অমানবিক লাগলেও আমিও মনে করি তাই মনে হয় ঠিক। ছেলেবেলা থেকেই হিন্দু-মোসলমানের যেই টেনশন দেখেছি তাতে মনে হয়েছে যে এই দুই জাতির আলাদা থাকাই শ্রেয়। যে বিয়েতে নিত্য ঝগড়া ঝাটি লেগেই থাকে সে বিয়ে টিকানো থেকে আলাদা হয়ে যাওয়াটাই তো উত্তম।
“দেশভাগের জন্যে গান্ধী এবং নেহেরুকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ঐতিহাসিক বিচার করা উচিত আপামর ভারতীয়দের।”- ভারতীয়দের কি সাধারণভাবে এ বিষয়ে তেমন কোন আগ্রহ আছে? অন্যকথায়, ভারতীয়রা কি ৪৭ এর দেশভাগের জন্য দূঃখিত? আমি জানি পাকিস্তানীরা মোটেও নয়, তারা অত্যন্ত আনন্দিত। ভারতীয়দের সাধারন দৃষ্টীভংগী কি আলাদা? যদি তাই হয়, তবে কেন?
@আদিল মাহমুদ,
আসলে দু এক জন কোনো উদাহারন না । আর মসুলমান রা ভারি অদ্ভুত জাতি , কোনো সুত্রতে ফালাইতে পারবেন না । কারন জীবনের অনেক চাওয়া পাওয়া কেই অসীকার করা হয় ।
হা সত্য বলেছেন ।
বরতমান ভারত ও তো কয়দিন টিকবে, তা আপনি বলতে পারেন না। কারন সবকিছুই প্রবরতনশীল ।
বিপ্লব দা,
সুন্দর লিখেছেন । আমার দাদা (পিতামহ) আমাকে এই রকম ই বলতেন । ভারত ছাড়তে দাদর কোনো ইচ্ছাই ছিল না । যতেষ্ঠ, কষ্ঠ পেয়েছেন ও।
কিছু করার ছিল না ।
আমার দাদ কিন্তু আরেক টি জিনিস এড করেছেন , “তা হচ্ছে নেহরু নাকি গান্দি কে বলেছিলেন যদি তা(জিন্নার কথা) করা হয়, তাহলে তারা আর ও আনেক জমি নিয়ে স্বাধিন হয়ে যাবে” ।
এই কথা কিন্তু সত্য । কারন মসুল্মান রা কারো অধিনে থাকতে চায় না । তাই দাদয়া বলেন ঐ যুক্তিতে নেহরু জী ঠিক ই ছিলেন । নেহরু ভারত প্রেমী বুদ্ধীমান রাজনীতি বিদ ছিলেন ।
বিপ্লব দা, এ বিষয়ে আপনার কি মতামত ?
নোয়াখালি র রায়েট এর বিষয়ে আমার দাদ আমাকে যা বলছিলেন তা এ রকম ”কলকাতা বা কোথাও মসুলমান কে মারায়, নোয়াখালি তে রিএকশন হঈছিল । গান্দি জ়ী এসে সমাধান করছেন, কিন্তু নোয়াখালীর রিএকশনে বিহারে অনেক মসুলমান মারা হইছে, গান্দি জি ঐ খানে যান অ নি ।
এবিষয়ে ও আপনার মতামত জানতে চাই ?
@ফুয়াদ,
একটি সঠিক গণতন্ত্রে কেও কারুর অধীনে থাকে না। ভারতে মুসলমানরা হিন্দুদের অধীনে আছে? সেরকম হলে কি ভারতের তিনজন প্রেসিডেন্ট মুসললান হতেন? না শারুখ খান জন্মাত? না ভারতে আদম প্রেমজী জন্মাত?
বাংলাদেশ বা পাকিস্থানে গনতন্ত্র দীর্ঘদীন না থাকার কারনে সংখ্যালঘুরা মুসলমানদের অধীনস্থ হয়। গনতন্ত্র থাকলে এমনটা হত না।
ঐক্যবদ্ধ ভারতের জন্যে দরকার ছিল ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরন। যা নেহেরু চান নি। সেই সময় মুসলমানদের চালাত ধনী মুসলমানরা। যাদের ব্যাবসা ছিল ভারত ব্যাপী। তারাই বা চাইবে কেন তাদের মার্কেট ছোট করতে? বাংলাদেশে কোন ভারতীয় মুসলমান কি শখ করে এসেছিল?? বিকেন্দ্রীকরনের দাবী মানলে মুসলমানদের নেতৃত্ব শ্রেনী সংযুক্ত ভারত চাইত-কারন তাতেই তাদের ব্যাবসার মঙ্গল।
নোয়াখালির রায়োটের ইতিহাস অনেক বেশী জটিল। ১৮৪০ সাল থেকেই নোয়াখালিতে রায়োট হয়ে আসছে। ১৯৪০ সাল থেকেই লীগ নোয়াখালিতে বৃহত্তর রায়োটের জন্যে প্রস্তুতি নিচ্ছিল কারন নোয়াখালিতে হিন্দুরা ছিল সব থেকে বেশী সংখ্যালঘু। আর সুদখোর হিন্দু মহাজন দের বিরুদ্ধে মুসলমান প্রজাদের রাগকে দাঙ্গায় পরিনত করা ছিল সব থেকে সহজ কাজ। কোলকাতাতেও দাঙ্গা লীগ শুরু করেছিল। প্রথম দিন হিন্দুরাই বেশী মারা যায়। দ্বিতীয় দিন হিন্দুরা সংগঠিত হয়ে অনেক বেশী মুসলমান মারে। কোলকাতার দাঙ্গার পরিকল্পনা লীগ প্রায় দুই বছর ধরে করেছে। আবার তার পালটা মার দেওয়ার জন্যে বৌবাজারের ব্যাবসায়ীরা আমেরিকান অস্ত্র কিনে রেখেছিল অনেক দিন থেকে।
এই দাঙ্গার ইতিহাস খুবী কুখ্যাত। এবং এর মূলের ধর্মের ভুমিকা হচ্ছে বস্তুবাদি কারনকে প্রজ্জলিত করা।
@বিপ্লব পাল,
নাহ তা বলতে পারেন না । গনতন্ত্র তে সবসময় সংখ্যা গরিষ্ঠের কথা বলে । আর আপনি যে উদাহারন টানলেন এরকম তো বাংলাদেশ ও আছে । যেমন ঃ স্কয়ার । এরকম তো আরো আছে। তাছাড়া টিভি অভিনেতা, গায়ক কত কেউ আছে । এটা কোন বিষয় না ।
আর শারুখ খান কে তো মানুষ মুরতাদ ঈ বলে । তাইলে তো সে আর মসুলমান রইলো না । যাইহোক ,
মানলাম, কিন্তু জিন্নাহ যে কেমন ছিলেন তা মনেহয় কেঊ বলতে পারবে না । খুব অদ্ভুত । কিন্তু, নেহরু যে ভারত এর অনেক উপকার করছেন তা আপনি না করতে পারবেন না। আমার ছোখে, ভারতের দিক থেকে উনি ভাল রাজনিতীবিদ এবং যা সম্ভব তাই করছেন । আপনি এইটা না বলতে পারবেন না যে, বাংলাদেশের মানুষ বা পাকিস্থানের মানুষ দিল্লির অধীনে থাকতে চাইত । অতএব, নেহরু ঠিক কাজটি ই করেছিলেন ।
@ফুয়াদ,
আপনি এইটা না বলতে পারবেন না যে, বাংলাদেশের মানুষ বা পাকিস্থানের মানুষ দিল্লির অধীনে থাকতে চাইত । অতএব, নেহরু ঠিক কাজটি ই করেছিলেন ।
[১] বিকেন্দ্রীকরন রাজনীতিতে এই প্রশ্নটাই উঠত না।
[২] দেশ ভাগ না হলে ত বাংলাদেশ বা পাকিস্থানের অস্তিত্বই থাকত না। থাকত ভারতীয় মুসলমান। যাদের কেও কোন দিন বাংলাদেশ বা পাকিস্থানের প্রশংসা করেছে বা সেই দেশে গিয়ে থাকতে চেয়েছে বলে জ়ানা নেই। যেকোন ভারতীয় মুসললানকে জিজ্ঞেস করুন, তারা আপনাকে বলবে এই দুটি দেশই ফেইল্ড স্টেট। দেশভাগ ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।
[৩] ভারতের কোন রাজ্য দিল্লীর অধীনে-এটাও ঠিক ধারনা না। ১৭০ টি ফাংশনের মধ্যে রাজ্য এবং কেন্দ্রের দ্বায়িত্ব ভাগাভাগি আছে। বাংলাদেশের কথা আন্তর্জাতিক মঞ্চে কেও শোনে? কেও শোনে না। কেন? কারন, তার স্ট্রাটেজিক গুরুত্ব নেই। সুতরাং স্বয়ত্ব শাসনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রীয় মিলিটারী ্যে কোন জাতির পক্ষে ভাল সমাধান। ভারতে কোন দিন মিলিটারী জুন্টা আসবে না। কারন, বহুজাতিক দেশের মিলিটারিতে ডিক্টেটরশিপ সম্ভব না। একজাতীয় দেশে সেটা খুব সম্ভব। বাংলাদেশে অতীতেও মিলিটারী শাসন এসেছে-ভবিষ্যতেও আসতে পারে একজাতীয় দেশের জন্যেই।আবার এটাও ঠিক বাংলাদেশের জন্ম হওয়াতে বাংলা চর্চার লাভ হয়েছে। বাংলা ভাষার কথা বাদদিলে দেশ ভাগের ফলে, ভারতীয় মুসলমানদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। আজকে মুসলিমদের মিলিটারী শক্তি বলতে কিছু নেই। পাকিস্থান আমেরিকার পুতুল রাজ্য। অখন্ড ভারত থাকলে আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদকে আরো ভাল ভাবে ঠেকাতে পারা যেত। সেটা যাচ্ছে না পাকিস্থানের জন্যে। প্রায় সমগ্র মুসলিম সমাজই ( বাংলাদেশ বাদ না-আপনাদের প্রধানমন্ত্রীরাও আমেরিকার কাছেই কান্নাকাটি করেন) আমেরিকার সেবাদাসে পরিনত হয়েছে-কারন তাদের রাষ্ট্র প্রধানদের কিনে নিয়েছে আমেরিকা। অখন্ড ভারত থাকলে মুসলিম সমাজের এমন ুরর্ভাগ্য হত না।
আপনারা ভারতের বরতোমান অবস্থার দিকে নজরদেন । অযথা অতিত নিয়ে কান্না কাটি করে সময় ব্যায় না করাই ভালো।
সঠিক বিশ্লেষণ। দেশভাগের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মুসলমানরা। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের জন্ম না হলে মুসলমানদের মধ্যে ইসলামিক মৌলবাদী রাজনীতি থাকত না যদি অখণ্ড ভারতবর্ষ থাকত।
@ফুয়াদ,
“বাংলাদেশ বা পাকিস্থানে গনতন্ত্র দীর্ঘদীন না থাকার কারনে সংখ্যালঘুরা মুসলমানদের অধীনস্থ হয়। গনতন্ত্র থাকলে এমনটা হত না।”
এটা মনে হয় তত্ত্বীয়ভাবে সত্য হলেও বাংলাদেশেই এই তত্ত্বের সত্যতা ও ত্রুটি দুটোই প্রমান হয়েছে।
সত্যতাঃ ৭৫ এর পরে সামরিক শাসকদের আমলে সংখ্যালঘুদের অবস্থা খারাপ হয়েছে।
ত্রূটিঃ ২০০১ সালের নির্বাচনে গণতান্ত্রিকভাবে জোট সরকার নির্বাচিত হয়েছিল, তারপর সংখ্যালঘুদের কপালে নেমে এসেছিল চরম দুর্ভোগ। হতে পারে এর বীজ বপন করা হয়েছিল অগন্তান্ত্রিক আমলে।
দুয়েকটি ব্যক্তি সাফল্যের উদাহরন আসলেই সামগ্রীকভাবে খুব বেশী কিছু বোঝায় না। যেমন, বিজেপির সেক্রেটারী ছিলেন সিকান্দার বখত না কে এক মোসলমান। তবে এটাও মানতে হবে যে বাংলাদশে হিন্দু রাষ্ট্রপতি মেনে নিতে আমাদের মনে হয় অনেক দেরী আছে।
শাররুখ খান ঘোষিত মুরদাতে অবাক হবার কিছু নেই। জাকির নায়েক সাহেব তো ইউটিইউবে সানিয়া মির্জাকেও অনেক গালাগাল করেছেন।
মুসলমান আর ইসলাম নিয়ে মনতব্য ও সমালোচনা করতে হলে ইসলাম নিয়ে অনেক যানতহবে। সেইটা আগে করুন
:yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: :yes: