বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন তুলে রাফি একটি পোস্ট দিয়েছেন সচলায়তনে। প্রথমে ভেবেছিলাম এ প্রসঙ্গে রাফির পোস্টেই কিছু মন্তব্য জানাই। সেটা করতে গিয়ে দেখি মন্তব্যের আকার বিশাল হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি প্রসঙ্গান্তরে অনেক কথা বলা হয়ে যায়। যে কারণে রাফির মূল প্রসঙ্গগুলোকে কেন্দ্র করে এই পোস্টের অবতারণা।

×××××
এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বাংলাদেশের শিক্ষা সেক্টরে যে যে কর্মকাণ্ড হচ্ছে, হোক সেটা বিতর্কিত বা প্রশংসিত, তার পুরোটাই হচ্ছে নির্বাহী আদেশের বলে। যেহেতু দেশে এখনও পূর্ণাঙ্গ কোনো শিক্ষানীতি নেই বা শিক্ষা-সম্পর্কিত কোনো গাইডলাইন নেই, তাই যখন যার কাছে যেটা ভালো বা সুবিধার মনে হচ্ছে, তিনি সেটাই তখন চাপিয়ে দিতে চাইছেন। শিক্ষার কার্যক্রমগুলো inter-related, বিশেষ করে এক স্তরের শিক্ষার যাবতীয় কার্যক্রম পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উভয় স্তরেই প্রভাব ফেলে। দেশে আবার একাধিক স্তরের জন্য একাধিক শিক্ষা-কর্তৃপক্ষ রয়েছে। প্রাথমিক স্তরের জন্য সিদ্ধান্তগ্রহণ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এদের আবার ডিরেক্টরেট অব প্রাইমারি এডুকেশন, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা অধিদপ্তর ইত্যাদি বিভিন্ন ভাগ আছে। ফলে এই প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে একাধিক কর্তৃপক্ষ দ্বারা। একটি জেলা বা উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষার আনুষ্ঠানিক দিক নিয়ন্ত্রণ করছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী কর্মকর্তারা। সেখানেও ভাগ আছে। এই কর্মকর্তারা শুধু প্রশাসনিক দিক নিয়ন্ত্রণ করেন। ট্রেনিং বা অ্যাকাডেমিক দিকগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইনস্ট্রাক্টর। অন্যদিকে উপানুষ্ঠানিক বিদ্যালয়গুলোর নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকেন সংশ্লিষ্ট এনজিও কর্মকর্তা ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা অধিদপ্তর। মাধ্যমিক স্তরের জন্য শিক্ষা-নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে দায়িত্বে আছেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং কলেজ পর্যায়ের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন তো রয়েছেই। তো, প্রতিটি কর্তৃপক্ষই নিজ নিজ সেক্টরের জন্য কাজ করে এবং একজনের কাজ অন্য সেক্টর বা স্তরের উপর কতোটা প্রভাববিস্তার করে সে বিষয়ে কারও কোনো চিন্তা বা মাথাব্যথা নেই। ফলে প্রতিটি পর্যায়ের শীর্ষ কর্তৃপক্ষ যখন যে বিষয়টি চালু করতে চান, সেটি অন্য পর্যায় বা স্তরে কী প্রভাব ফেলবে, আদৌ কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা বা শিক্ষার বর্তমান বাস্তবতায় সেটি চালু করা উচিত না, সেগুলো নিয়ে ভাববার অবকাশ পান না বা ভাবার প্রয়োজন বোধ করেন না। কেউ যদি প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তরের কোনো ধরনের (হোক সেটা কারিকুলাম, ম্যানেজমেন্ট, ট্রেনিঙ বা যে কোনো কিছু) ধারাবাহিকতা খুঁজতে যান, তাহলে তাকে হতাশ হতেই হবে।

×××××
Communicative English-এর ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। ধারণাগতভাবে Communicative English একটি বেটার অ্যাপ্রোচ। কিন্তু কোন পর্যায় থেকে সেটি শুরু করা উচিত, কখন শেষ করা উচিত, এই অ্যাপ্রোচের সাথে গ্রামারের পার্থক্য কোথায়, কোন পর্যায়ে সেগুলোকে reduce করা উচিত- তা নিয়ে কোনো গবেষণা হয় নি। নীতিনির্ধারণী মহলে যারা আছেন, তারা যে পর্যায়ে চালু করলে ভালো হবে বলে মনে করেছেন, হুট করে সেই পর্যায়েই চালু করে ফেলেছেন। ফলাফল ইতোমধ্যেই প্রদর্শিত। গ্রামারের বিষয়টিকে তারা মুখ্য মনে করেন নি কারণ এর আগে বহু বছর ধরে গ্রামারভিত্তিক ইংরেজি-বাংলা চালু ছিলো, কিন্তু সেখান থেকেও বলার মতো আহামরি কোনো ফল আসে নি। Communicative English দিয়ে অন্তত যোগাযোগ দক্ষতাটা বাড়বে বলে মনে করা হয়েছিলো, কিন্তু দেখা যাচ্ছে আদপে পূর্বের-পরের দুটো পদ্ধতির কোনোটাতেই কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আসে নি। মাঝখান দিয়ে সমস্যাটা পোহাতে হলো শিক্ষার্থীদের। বিশেষ করে প্রথম দুটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মারাত্মক সমস্যা পোহাতে হয়েছে।

কেন এই ব্যর্থতা? গবেষণা-টবেষণা করলে হয়তো নানা ফলাফল পাওয়া যাবে, কিন্তু সাদা চোখে দেখলে একটি সিস্টেম চালুর সময় সিস্টেম-রিলেটেড প্রতিটি বিষয় বা ব্যক্তিকেই আপডেটে করতে হয়। Communicative English তো বটেই, বাংলাদেশে কোনো পর্যায়েই সিস্টেম চালু করার সময় এই অবশ্য-পালনীয় কাজটা করা হয় না। এই যেমন গ্রেড পয়েন্ট চালুর বিষয়টি। সেখানে মার্কিং সিস্টেম বদলানো হলো, কিন্তু অ্যাসেসমেন্ট সিস্টেম বদলানো হলো না। অবাক হলেও সত্য, বোর্ড থেকে পরীক্ষকদের যখন খাতা দেওয়া হয়, তখন এ সম্পর্কিত কিছুই বলা হয় নি বলে শোনা গেছে। খাতা দেখার জন্য বোর্ডের একটি নির্দিষ্ট গাইডলাইন আছে, বছরের পর বছর ধরে একই গাইডলাইন ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সেখানে স্বামী/স্ত্রীর সাথে রাগারাগি করলে খাতা না দেখার পরামর্শ দেওয়া আছে সত্যি কিন্তু অংকের তিন ভাগের দুই ভাগ হলেও যে নম্বর দিতে হয়, সে বিষয়ে কোনো পরামর্শ বা নির্দেশনা নেই।

×××××
গ্রেড পয়েন্ট নিয়ে আমাদের মতো আম-পাবলিকেরও কিছু দোষ আছে। বলতে দ্বিধা নেই যে, সবাই সবকিছু বুঝে না, বোঝার দরকারও হয়তো নেই। আজকে যদি এসএসসি বা এইচএসসিতে কিউমুলেটিভ গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ ব্যবহার করা হতো, তাহলে কি অধিকাংশ মানুষ সেটা বুঝতো? আমার মনে হয় না। এই পদ্ধতিতে মিন নম্বর থেকে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত স্কোরকে বাদ দিয়ে স্ট্যান্ডার্ড ডিভিশন দিয়ে ভাগ করে তারপর গ্রেড পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়। ফলে প্রত্যেকের রেজাল্ট সম্মিলিতভাবে সবার উপর নির্ভর করে। সবাই যদি ভালো রেজাল্ট করে তাহলে ৮০ পেয়েও সি পাওয়া সম্ভব, তেমনি সবাই খারাপ করলে ৪৫ পেয়েও এ পাওয়া সম্ভব। বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষায় আইবিএতে একসময় এই সিস্টেম চালু ছিলো, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে চালু ছিলো, কিন্তু এখন বোধহয় দেশের আর কোথাও এটা চালু নেই। বর্তমান পদ্ধতির সাথে এই পদ্ধতির পার্থক্য হচ্ছে, বর্তমান পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী টু শিক্ষার্থীর পার্থক্যটা বৈজ্ঞানিক না, এই পদ্ধতিতে ইউনিট হিসেবে বিদ্যালয় টু বিদ্যালয়ের পারফরম্যান্স ভালোভাবে মাপা যায়। কিন্তু কিউমুলেটিভে শিক্ষার্থীর সাথে শিক্ষার্থীর পারফরম্যান্সটা অনেকটাই যথাযথভাবে মাপা যায়। সেক্ষেত্রেও অবশ্য কিছু সমস্যা থাকে। এক বিষয়ের সাথে অন্য বিষয়ের পারফরম্যান্স তুলনা করা যায় না। তুলনা করতে হলে সার্বিকভাবে একটি মিন নম্বর ধরে নিতে হয় এবং তার সাথে স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশনটা কতো হবে, সেটি প্রি-ডিটারমাইন্ড থাকতে হয়। না হলে বাংলার অ্যাসেসমেন্টের সাথে অংকের অ্যাসেসমেন্টে ভ্যারিয়েশন চলে আসতে পারে।

যা হোক, শুনেছিলাম, দেশে গ্রেডিং পদ্ধতি চালুর সময় এই পদ্ধতি নিয়ে ভাবা হয়েছিলো কিন্তু আমজনতাকে বুঝাতে ধকল পোহাতে হবে বলে তারা আর এটার দিকে আগান নি। এমনিতেই যে সমালোচনা হয়, এরকম কিছু করতে গেলে তো আন্দোলন হয়ে যাবে। আমজনতার আর দোষ কি, আইবিএ বা আইইআরে যখন এ পদ্ধতি চালু ছিলো, তখন নাকি অনেক শিক্ষকও এটা সম্পর্কে ভালো জানতেন না।

×××××
সরকার পদ্ধতি বদলের সাথে অ্যাসেসমেন্ট সিস্টেম বা কারিকুলাম বদলেরও সম্পর্ক আছে। থাকতেই হবে। সরকার ব্যবস্থার সাথে যদি আদর্শের পরিবর্তন ঘটে তাহলে তো এমনিতেই বদলাবে, না হলে নতুন প্রজেক্ট গ্রহণ করার জন্য হলেও বদলাতে হবে। পূবর্বতী সরকারের সব বই-কারিকুলাম রাখা হলে নতুন প্রজেক্ট আসবে না, নতুন প্রজেক্ট না আসলে ব্যক্তিগতভাবে উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে না। সরকার পদ্ধতির সাথে শিক্ষাপদ্ধতির পরিবর্তনটা আরেক দিক থেকে রিলেটেড। বিএনপি সরকার আসলে সবসময়ই ধর্মব্যবস্থা-সম্বলিত শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়নের হিড়িক পড়ে যায়, বিশেষ করে জামায়াতী চাপে এটা করতেই হয়। আওয়ামী লীগ এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করলেও কাটছাট করতে চায় না। এছাড়া বঙ্গবন্ধু-জিয়ার চেতনা বাস্তবায়নের নামে আদেখলাপনা তো আছেই!

খুবই অবাক লেগেছিলো যখন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়স-সিস্টেমের প্রবর্তন করা হয়েছিলো। যে কথাটা শুরুতে বলেছিলাম, এক স্তরের শিক্ষার প্রভাব অন্য স্তরে পড়ে, সেটা ভেবে দেখা হয় নি বলেই এখানেও সমস্যা তৈরি হয়েছিলো। প্রত্যেকটি সরকারেরই উদ্দেশ্য থাকে তার সময়ে ভালো পড়ালেখা হয়েছে সেটা দেখানো। এর জন্য পাঁঠা হিসেবে বেছে নেওয়া হয় এসএসসি ও এইচএসসির শিক্ষার্থীদের। সারা দেশে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য যে পরিমাণ সিট আছে, গণহারে জিপিএ ৫ দিয়ে সবাইকে প্রমোশন (শব্দটা ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যবহৃত, মূল্যায়ন লিখতে পারলে খুশি হতাম) দেওয়া হলে অরাজকতা যে সৃষ্টি হবে, সেটা বলাই বাহুল্য।

×××××
তবে এ বছর থেকে সরকার প্রাথমিক স্তরে যে সমাপনী পরীক্ষা চালু করতে যাচ্ছে, আমি সেটার পক্ষে। কারণ একাধিক। তার আগে বলে নেওয়া ভালো যে, সরকার মোটামুটি ভেবেচিন্তে বেশ কয়েক বছর পাইলটিং করে তবেই এটা চালু করা হয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরে সরকার দেশের বিভিন্ন জেলায় এই সমাপনী পরীক্ষা নিয়ে আসছে। আগে যেটা বৃত্তি পরীক্ষা ছিলো, এবার থেকে সমাপনী পরীক্ষার ফলে সেটা আর থাকছে না।

এর ফলে প্রথম যে উপকার হবে সেটা হচ্ছে আমাদের শিক্ষার্থীদের পারফরম্যান্স সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে। দেশে গুণগত শিক্ষা সম্পর্কে অনেক কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু গুণগত শিক্ষা যে কী বস্তু, সেটা এখনও আইডেন্টিফাইড হয় নি। ফলে পরীক্ষার ফলাফলকেই গুণগত শিক্ষার একমাত্র সূচক বলে অনেকে ধরে নেন। এতোদিন পর্যন্ত মাধ্যমিক পরীক্ষায় এই সূচক থাকলেও প্রাথমিকে ছিলো না। ফলে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার মান নিয়ে কোনো কংক্রিট কথা বলা যেতো না। এডুকেশন ওয়াচ প্রজেক্টের আওতায় এ সম্পর্কিত কিছু কাজকর্ম হলেও সেগুলো যেহেতু কনটেন্ট বেজড না হয়ে টার্মিনাল কম্পিটেনসি বেজড, সুতরাং সাধারণের কাছে সেগুলোর ফলাফল বা প্রভাব ততোটা পড়ে নি।

দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, বৃত্তি পরীক্ষাটা উঠিয়ে দেওয়া। এর ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রচুর লাভ হবে। বৃত্তি পরীক্ষায় একটি বিদ্যালয় থেকে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হতো। এতে বাকি ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থীর প্রতি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও অবহেলা ছিলো, সেটা অন্তত দূর হবে। তাছাড়া চতুর্থ থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে উঠার সময় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনেক সময় খুব দুর্বল শিক্ষার্থীদের উঠতে দেয় না, পঞ্চম শ্রেণীর দুর্বল শিক্ষার্থীদের প্রতি নজর দেওয়া হয় না ইত্যাদি অনেক অভিযোগ ছিলো। সেগুলো দূর হবে। পাশাপাশি বৃত্তি পরীক্ষার নামে ভালো শিক্ষার্থী-খারাপ শিক্ষার্থী ইত্যাদি বিভাজন তৈরি করে তাদের মধ্যে হীনমন্যতা সৃষ্টি করার অভিযোগটি তো পুরনো।

সমাপনী পরীক্ষায় সবাই পরীক্ষা দেওয়ার ফলে বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর প্রতিই সমান নজর দিতে হবে। সমাপনী পরীক্ষা কীভাবে হবে, খাতা দেখা কীভাবে হবে, কীভাবে ফলাফল ডিস্ট্রিবিউশন করা হবে ইত্যাদি খুঁটিনাটি বিষয়গুলো কিন্তু একটা দীর্ঘ সময় ধরে পাইলটিং করা হয়েছে। বলা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষা নিয়ে এটাই একমাত্র উদ্যোগ যেখানে নানা পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর একটি মূল্যায়ন পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে যেখানে নতুন শিক্ষানীতি চালু হচ্ছে, বলা হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ হবে আট বছর, সেখানে বোধহয় আরও এক-দুটো বছর অপেক্ষা করে এই পরীক্ষাটা নেওয়া যেতো। অবশ্য এটাও ঠিক যে, বাংলাদেশে পরিকল্পনা তো কতোই হয়, কিন্তু বাস্তবায়ন হতে হতে অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়। সে হিসেবে ধরলে এটা ঠিকই আছে।

অনেক বড় লেখা হয়ে গেলো। শেষ করা দরকার। রাফি যে গিনিপিগের কথা বলছিলেন, আমার মনে হয়, বাংলাদেশে শুধু শিক্ষার্থীকেই গিনিপগ করা হয় না, পুরো শিক্ষাব্যবস্থাটাই আসলে একটা গিনিপিগ। যে যখন যেটা শুনে আসছে, দেখে আসছে, সেটাই প্রয়োগ করার চেষ্টা করছে। উন্নত দেশের শিক্ষার প্রতি আমাদের একটা মোহ আসছে, পারিপার্শ্বিকতা না মিললেও সেটা প্রয়োগ করার যে প্রচেষ্টা, সেটাই আসলে আমাদের অজান্তে আমাদের গিনিপিগ বানিয়ে রেখেছে।