এক চিলতে মেঘ
কেশব অধিকারী
মেঘের আনাগোনায় যখন আমার ভাবনা গুলো মনের মাঝে ভর করে তখন যে সমস্ত বিষয় গুলো বেশী বেশী করে আমাকে জ্বালায় তার মধ্যে এই পশ্চাদ্পদতা, বিশেষ করে শিক্ষায় বিজ্ঞানে, হলো অন্যতম। একটু পর্যালোচনা করলেই দেখা যাবে, কিভাবে পর্যায়ক্রমে আমরা আমাদের ঋজু পথ থেকে সরে এলাম এবং এর জন্যে দায়ী কারা বা কেনো এগুলোও ভাবতে হবে আমাদের। স্বাধীনতা উত্তর ৩৭ বছরেও আমরা আমাদের কাংখিত লক্ষ্যে পৌঁছুতে পারিনি। এটি আমাদের অনেক বড় একটি দৈন্যতা বৈ কিছুই নয়। আমি বুঝতে পারি তখনই যখন আমার ছোট ছেলেটিকে নিয়ে স্কুলে যাই কিংবা ওর সাথে পড়তে বসি। সব চেয়ে অবাক হই, যখন দেখি আমাদের অভিভাবকদের সেকি প্রানান্তকর চেষ্টা, কেন? তাঁর সন্তানকে নামকরা বিদ্যালয়ে পাঠাবেন। সে জন্যে এমন কোন পথ তাঁরা অবশিষ্ট রাখেননা যা থেকে বুঝা যায় যে তিনি তাঁর সন্তানের মঙ্গলের জন্যে, তার উপযুক্ত ভবিষ্যতের জন্যে আন্তরিক ভাবে তৎপর। বরং আমার কাছে মনে হয় ব্যাপারটা অন্যরকম, নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে শিশুদের উপর। কারন শৈশব থেকেই শিশুরা দেখছে কিভাবে তার বাবা কিংবা মা সমাজের বিভিন্নস্তরে অবৈধ প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন কিংবা কিভাবে অর্থ-বিত্তের ও বৈভবের দ্বারা অনৈতিক ভাবে সম্মান, সম্ভ্রম এবং সম্পত্তি ক্রয় করছেন। এর ফলে এই শিশু মনেই ধীরে ধীরে বিকশিত হতে থাকে মনুষত্বহীনতা, স্বার্থপরতা, একটি ভয়ংকর নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী এই সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি। আইন এবং মনুষত্বের প্রতি অবহেলা, অমানবিক হয়ে উঠা প্রকারন্তরে কি তারই প্রতি অঙ্গুলী নির্দেশ করেনা? আর সেকারনেই আমার আজকের প্রসঙ্গের অবতরণা।
আমাদের দেশের প্রাথমিক শিক্ষায়তন গুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে, বিভিন্ন শ্রেণী, ধরণ আর পদ্ধতির প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছড়িয়ে আছে চতুর্দিকে। নিজে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত বলে কম বেশী এতদ্সংক্রান্ত ধারনা আমার আছে। আমি মতিঝিল মডেল, ভিকারুন্নেছা নুন, হলিক্রস, সোডা যেমন দেখেছি তেমনি দিনাজপুরের খানসামা উপজেলাস্থ আমার গুলিয়াড়া গ্রামে মাটির ভিত্তির উপড়ে চার খুঁটিতে দাঁড়িয়ে থাকা দেয়াল বিহীন খড়ের চালের প্রাথমিক বিদ্যালয়ও দেখেছি। সেখানে বেন্চ-টেবিলের কোন বালাই নেই। এই একবিংশ শতাব্দিতেও ছালার উপরে বসে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সমেত ধারাপাত পড়ছেন! কি বৈপরীত্য তাইনা? আমার ছোটবেলাকার সেই সব স্মৃতি আমাকে তাড়িত করে, যখন দেখি আজকাল ছেলে-মেয়েদের মাঝে একাডেমিক কমপিটিশন তেমন আর একটা দেখা যায়না। দেখা যায়না নিজেকে নায়কোচিত ভাবে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন, তখন স্বভাবতঃই মনে হয় কোথায় যেন ভুল হচ্ছে আমাদের।
সম্প্রতি আমরা কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা মূল্যায়নের চিরাচরিত পদ্ধতির পরিবর্তে পাশ্চাত্যের গ্রেডিং পদ্ধতিকে বেছে নিয়েছি। সম্ভবতঃ এই কারনে যে, অধুনা প্রতাপশালী পাশ্চাত্য বিশ্ব, শিক্ষাকেও যারা ব্যবসার একটি অন্যতম ক্ষেত্র হিসেবে দাঁড় করিয়েছে ঊনবিংশ শতকের শেষ ভাগে এসে। সঙ্গত কারনেই ‘ছাত্র’ এখানে অন্যতম পণ্য। বিশ্ববাজারে আন্তর্জাতিক মানের ছাত্র-পণ্য বিপননই এখানে নিগুঢ়তম প্রনোদনা হিসেবে কাজ করেছে, রাষ্ট্রকে উৎসাহিত করেছে এতদ্সংক্রান্ত ব্যবসায়ী হিসেবে বিশ্ববাজারে আত্মপ্রকাশের। এতে উপকার হয়েছে এই যে, বিশ্ববাজারে আমাদের ছাত্র-পণ্যটির মান যাচাইয়ে আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ীদের সুবিধে হয়েছে! সুবিধে হয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরও যাদের হাত দিয়ে এ পণ্য বিশ্ববাজারে স্থানান্তরিত হচ্ছে! আরও একটি বিষয় এখানে কারণ হিসেবে উল্লেখযোগ্য, তাহলো, গ্রেডিং এর বিভিন্ন গ্রেড আসলে পণ্যের মডেল আর ব্যাচ হল প্রডাকশনের সময় নির্দ্দেশক! গ্লোবালাইজেশনের কারনে বিশ্ববাজারে একই ধরনের প্রোডাক্টের চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে এই ছাত্র-পণ্যের মডেল নির্ধারনও জরুরী হয়ে পরে। আর তাই গ্রেডিং পদ্ধতি আমাদের জন্যে অতীব জরুরী একটি বিষয় হয়ে দেখা দিয়েছিলো। পদ্ধতির সমালোচনা আসলে এ-লেখার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় নয়, বরং এতোকিছুর পরেও আমরা পিছিয়ে পড়ছি, এই সত্যটিকে সামনে ধরে করণীয় কিছু আছে কিনা তা বিবেচনায় নেয়া। আমার মনে হয়, গ্রেডিং পদ্ধতির অনেক বড় বড় মেরিটের মধ্যে একটি অন্যতম ডি-মেরিট হলো ব্যক্তিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রে যে প্রতিযোগিতা হওয়ার কথা, এর বোধ হয় এক ধরনের সামাজিক ডাইল্যুশন ঘটে। ফলে ব্যক্তি পর্যায়ের উদ্দীপনা হ্রাস পায়। ঠিক এই ধরনের ডি-মেরিটস্ গুলোকে অপসারনের লক্ষ্যে উন্নত বিশ্বের দেশ গুলোতে প্রতিটি সেমেস্টারে এক্সট্রাকারিকুলার আ্যক্টিভিটির পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের মেধার পরিপূর্ণ প্রকাশে ২০ টিরও বেশী কৌশলী-প্রকৌশলী বিষয়ে প্রতিযোগীতার ব্যবস্থা করে থাকে, যেগুলো সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের মাঝে যেমন উদ্দীপনা সঞ্চারী তেমনি আহরিত তত্ত্বীয় বিষয়ের বাস্তব প্রায়োগিক কৌশল আয়ত্তের সোপান হিসেবেও বিবেচিত। আমাদের ব্যবস্থায় এসব প্রায় অনুপস্থিত। কাজেই বেশ বড়সড় সীমাবদ্ধতা নিয়েই আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে! কিন্তু দরকার এগুলোকে প্রশমিত করা।
ধরা যাক অনুরূপ পদক্ষেপ এবং প্রমিত ব্যবস্থার মাধ্যমে উপরোক্ত ত্রুটি গুলোকে আমরা সারিয়ে নিয়েছি। তাহলেই কি আশা করা যাবে যে আমরা এবার এগিয়ে যাবো, সামনে কোন বাধা নেই? এ প্রশ্নের উত্তর হল ‘না’। কারণ শিক্ষক সমাজ প্রকৃতপক্ষেই অবহেলিত আমাদের এখানে। ফলে দুটি বিপরীত শ্রেণীর কর্মকান্ড চোখে পড়বে একটু খেয়াল করলেই। প্রথমতঃ এই শ্রেণীর অন্তর্ভূক্ত যাঁরা, তাঁরা বেশ সিরিয়াস ধরনের এবং আদর্শবান আলোকিতজন। বিভিন্ন সামাজিক কারনে বৈরী সমাজে এঁরা অবহেলিত থাকেন। আর্থিক জোর কম থাকায় সামাজিক এবং সাংসারিক জীবনে থাকেন বিপর্যস্ত। অথচ কঠোর আদর্শিক অবস্থান আর শক্তিশালী চারিত্রিক বৈশিষ্ট তাকে আত্মমর্যাদাশীল সমাজের অংশ হতে সহযোগীতা করলেও বৈরী পরিবেশ তাকে আবদ্ধ করে ফেলে সহজেই, তাই বাধ্য হয়ে নিজেকে গুটিয়ে রাখেন অতি যত্নে! পরিবেশ তাড়িত হয়ে সম্ভাবনাময় মেধাটি অচিরেই সমাজের অন্ধ গলিতে হারিয়ে যায়। তাঁর সন্তানেরা আদর্শবান এবং কঠোর চরিত্রের অধিকারী হওয়া সত্যেও সমাজে অবহেলিত এবং নিঃগৃহীত হন। তাঁরা অন্যের সন্তান মানুষ করার দায়িত্ত্ব পালনে সর্ব্বাংশে নিজেকে বিলিয়ে দিতে এতোটুকুও কার্পন্য করেন না ঠিকই কিন্তু কখনো কখনো নিজ সন্তানকে আলোকিত করতে ব্যর্থ হন। অথবা কোন কোন ক্ষেত্রে তাঁর সন্তানেরা আর্থিক দৈন্যতার কারনে হয়ে উঠতে পারেন না স্বাবলম্বী অথবা সমাজের আলোকিত জন। সংখ্যায় নগন্য হলেও যুগের সন্ধিক্ষণে এঁরাই সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়েছেন নিরন্তর। হয়েছেন আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর।
শিক্খক শ্রেণীর যে অংশটা দ্বিতীয় পর্যায়ে পড়বে তারা সংখ্যায় অনেক বড়। এরা শিক্ষকতা পেশাকে একমাত্র পেশা হিসেবে কখনোই গ্রহন করেন না। মেধাবী ছাত্রদের একটি অংশ যে কারনে পুলিশবাহিনীর প্রতি দুর্বল আমার মনে হয় শিক্ষকশ্রেণীর এই অংশটিও একই কারনে শিক্ষকতা পেশার প্রতি দুর্বল। সুতরাং শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত বৃহত্তর অংশটিই আসলে শিক্ষানুরাগী নয়। প্রকৃতপক্ষে যখন থেকে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ শুরু হল, তখন থেকেই পেশাটিরও বাণিজ্যিকীকরণ শুরু হয়েছে। ফলে ছেঁটে ফেলা হয়েছে পেশার দায়িত্ত্ব, আদর্শ, দার্শনিক ও নান্দনিক রূপটিও। এর ফলে এই পেশার অন্তর্ভুক্তদের প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গীরও পরিবর্তন হয়েছে ব্যপক হারে। গত শতকের শেষার্ধ অব্দিও শিক্ষকতা পেশাটি ছিলো শ্রদ্ধা, সমীহ আর পরম সন্মানীয়! অথচ আজ? আজ পরম করুণাশ্রয়ী, নুব্জ ও নতজানু পেশা যেনো অনেকটা। একই কারনে অনেকে আজকাল ডাক্তারদের বলেন কসাই! পুলিশকে বলেন ঠোলা! প্রতিটি পেশারই একটি এথিক্স আছে, আছে নান্দনিকতা, আছে দর্শন। সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই আজকাল তা মেনে চলেন না!
আমি যখন স্কুলে পড়ি তখন আমার প্রধান শিক্ষক ছিলেন জনাব রুস্তম আলী খান। আমার ধারনা, আমার ব্যক্তিগত জীবনে যাঁদের প্রভাব অতি উচ্চ, ইনি তাঁদেরই একজন। খুব ভালবাসতেন আমাকে। এস. এস. সি পরীক্খার খাতার ভীড় যখন বাড়তো, আমার ডাক পড়তো তখন। ক্লাশ সিক্স কাংবা সেভেন-এ বোধ হয় পড়ি। মাঝে মাঝে বলতেন তাঁর শিক্ষকতা জীবনের গল্প। একদিন দেখি, তাঁর টেবিলের উপরে কাঠের রেহেলে লাল, সাদা ও কালো কাপড়ে মুড়ানো ৩/৪ খানা বই। জানতে চাইলাম এগুলো কি বই? বললেন, এটি কোরান শরীফ, এইটা গীতা আর ঐপাশেরটা বাইবেল। আমি অবাক হইনি। স্যর বললেন, গীতার প্রথম শ্লোকটা জানিস? নেতিবাচক মাথা নাড়লে উনি বলতে শুরু করলেন, “ওম্ ভুবুর্বর্ষ………”। তারপরে বললেন মানে জানিস? আমার মৌনতার অর্থ টেরপেয়ে বলতে শুরু করলেন, “এই বিশ্ব-ভূমন্ডলের সর্বত্রই আমি বিরাজমান …..” আর বই গুলো দেখিয়ে বলছিলেন, “সবেরই ভাষ্য এক, হয়তো আচার প্রকৃয়ায় খানিকটা তারতম্য আছে”। এরপর একে একে সব গুলো মোড়ক খুলে ধর্মীয় বই গুলো দেখালেন, দেখেছিলাম, আরবীতে লেখা কোরান, সংস্কৃততে লেখা গীতা আর ইংলিশে বাইবেল! আমাকে বলেছিলেন ৮টি ভাষায় তিনি বলতে, লিখতে এবং পড়তে পারেন। আমার খুব গর্ব হয়েছিলো তখন। একদিন গল্প করেছিলাম বন্ধুদের কাছে স্যরের এই ঘটনা। আমার অবাক হবার পালা এর পর থেকে। বন্ধুদের কয়েকজন সাথে সাথেই রিআ্যক্ট করেছিলো এই বলে যে, স্যর নাকি খুব অন্যায় করেছিলেন বিধর্মীদের(!) বই কোরানের সাথে একই সঙ্গে রেখে! আমি স্যরকে জানিয়েছিলাম ব্যাপারখানা, কোন গুরুত্ত্ব দিলেন বলে মনে হলোনা। শুধু বললেন, “ওদের এবিষয়ে অনেক কিছুই জানা নেই তাই না বুঝেই বলেছে।” যাইহোক একটু বড় হয়ে দেখেছি, তিনি সেকুলার মনোবৃত্তির মানুষ ছিলেন। সবচেয়ে যেটি আমার ভাবনার জগতে আলোড়িত হয়েছিল তা হলো, তাঁর স্কুল সপ্তাহের স্বারম্বরতা! প্রতি বছর ফেব্রুয়ারী-মার্চ নাগাদ আমাদের স্কুলে স্বারম্বরে সপ্তাহ জুড়ে অনুষ্ঠিত হতো এক বিশাল কর্মযজ্ঞ! শিশুশ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত যেকোন ছাত্র কিংবা ছাত্রী যতগুলো ইভেন্টে ইচ্ছে অংশগ্রহন করতে পারতো। এমনকি কোন ইভেন্টে যদি মাত্র একজন প্রতিযোগী থাকতো তবুও। এর কারন বোধহয় এই যে, এখনতো ওর আত্মপ্রকাশের সময় নয়, লক্ষ্য স্থিরের প্রয়াস মাত্র! প্রক্রিয়াটি হয়তো এর অনুঘটক! ফলে গোটা এলাকায় সারা পড়ে যেতো। আর সারাটা বছর ধরেই প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর মাঝেই চলতে থাকতো একধরনের প্রতিযোগীতা। আর এর ফলাফল? এককথায় চমৎকার! আমাদের ব্যাচের ১৭ জনই নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত! এমনকি আমাদের আগে-পরের ব্যচ গুলোরও একই সু-কীর্তি! তখন কি দৈন্যতা ছিলোনা? এখনকার চেয়ে অনেক বেশী ছিলো। চলুন পেছনে ফিরে দেখুন, ঊনিশ শতকে এই বাংলায়, কি সাহিত্যে, কি বিঙ্গানে, বিশ্বরাজনীতিতে, সামাজিক আন্দোলনে যে রেঁনেসার জন্ম হয়েছিলো তা আজ কোথায়? ইতিহাসে পড়েছি, তখন বাংলা তথা ভারতবর্ষকে এই তামাম বিশ্ব চিনত! অথচ দেখুন গোটা বিশ্ব যখন সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে, আমরা তখন পশ্চাদপদতার অতলান্ত অন্ধকারে ডুবতে বসেছি!
আসলে যদি একটু খেয়াল করা যায় তাহলে দেখা যাবে, স্কুল জীবনের শিক্খাটা আসলে প্রতিটি মানুষের মানবিক গঠনের ভিত্তিমূল। এসময় মূলতঃ তার আদর্শিক ভিত্তি এবং সৃষ্টিশীলতার অঙ্কুরোদ্গম ঘটে। স্বপ্ন দেখতে শেখে মানুষ এসময়ে। আর শিক্খকেরা স্বপ্ন দেখতে শেখায়। আর তাই এসময় ছাত্রকে লিখানো হয় তার Aim in Life. কারন সেতো স্বপ্ন দেখছে, আর তার পরিপক্কতার জন্যে ভাবনা দরকার, দরকার তার চতুর্দিকে তাকিয়ে দেখবার। আর শিশু তার চার দিকে তাকিয়ে দেখেতো তার শিক্খকেরই চোখ দিয়ে! জগৎটাকে চিনতে শেখায়তো সে! আর সেই শিক্খকের চোখ যদি হয় অন্ধ! ভাবুনতো সেই শিশুর ভবিষ্যৎ!
এতো গেলো স্কুল আর শিক্ষক প্রসংগ। এবার দেখা যাক আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক রকমফের। দেশে পর্যাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই একথা সত্যি। সেজন্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক এবং উপযুক্ত মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা খুউবই জরুরী। বিগত দিনে সরকারী ভাবে অনুমতিও দেওয়া হয়েছিলো ব্যক্তিগত পর্যায়ে পূঁজি বিনিয়োগের। আমার মনে হয়েছিলো, সারা দেশে যেনো স্কুল কলেজের বন্যা বয়ে যাবে! এইতো আশির দশকের শেষ দিকের কথা! অধিকাংশ মাধ্যমিক স্কুল গুলো ঊচ্চমাধ্যমিক পর্যায় খুলে বসলো! আর ঊচ্চমাধ্যমিক কলেজ গুলো রূপান্তরিত হতে লাগলো বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে! যেগুলো ছিলো তথাকথিত কোচিং সেন্টার সেগুলোও রূপান্তরিত হলো স্কুল কিংবা কলেজে! এমনকি কোন কোনটি বিশ্ববিদ্যালয়ও হয়ে গেলো! দেশে এতো এতো শিক্ষার্থী এইচ. এস. সি পাশ করে বের হবে, এরা যাবে কোথায়? এদেরতো ডিগ্রি দিতে হবে, তাই বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে হবে! তাই গড়ে উঠলো। আর এতো এতো বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করতে হবে, শিক্ষক কোথায়, কুচপরোয়া নেহি! আমি দেখলাম, লেদার কারখানার ইন্জিনীয়ার, হাইকোর্টের উকিল, হসপিটালের ডাক্তার, কোম্পানীর অফিসার, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানীর মার্কেটিং কর্মকর্তা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক, পত্রিকার সম্পাদক, সাংবাদিক, আলোকচিত্রী, গায়ক, নায়ক সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের স্বনামধন্য অধ্যপক এস. এন নবী তাঁর অফিসে একদিন আমাকে কথাপ্রসঙ্গে বললেন, “এই দেশেতো আর কিছু দেখতে পারবানা, দেখ, তামাশা দেখো!” সত্যি তামাশাই দেখছি। সমাজে এমনি একটা পরিস্থিতি, চতুর্দিকে হুলুস্থূল! টাকা উড়ে বেড়াচ্ছে! তাই ধরার জন্যে এহেনো কান্ড! এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও বসে নেই! গোটা সমাজ জুড়ে যে হরির লুট চলছে তাতে সামিল হতে কারোরই বাধলোনা! আমার মনে আছে আমি রাত ১১টা ১২টার আগে হলে ফিরতে পারতামনা যখন মাস্টারস-এ রিসার্স ল্যবে কাজ করি, অথচ এই সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খন্দকার মোকাররম হোসেন বিজ্ঞান ভবনে দুপুরের পরে স্যরদের সাথে দেখা করতে গিয়ে কাউকেই পেলামনা। চতুর্দিক খাঁ খাঁ করছে। নাই ছাত্রকূলের খোঁজ, নাই স্যারেরা! গুটিকয় পিয়ন আশপাশের চেয়ারে বসে ঝিমুচ্ছেন আর হাই তুলছেন! এই হলো গিয়ে আমাদের গোটা শিক্ষাব্যবস্থার এক খন্ডচিত্র! আর এর পাশাপাশি দেখুন চলছে ধুমধুমার ইংলিশ মিডিয়ামের রমরমা ব্যবসা! নাহ্, এখানেই শেষ নয়, সেকেলে ধরনের মাদ্রাসা শিক্ষার সাথে সাথে ধর্মীয় উগ্রতা ও জঙ্গীবাদের উত্থানও লাফিয়ে লাফিয়ে ঘটছে।
একটা বিষয় বুঝে পাইনে, এইযে ছোট্ট আমাদের একটা দেশ, এতো মানুষ! সবাই এক হয়ে কতোগুলো কমন নীতিমালার ভিত্তিতেইতো গোটা শিক্ষাব্যবস্থাটাকে সাজিয়ে নেয়া যেতো। কই হলো না তো। এখানেও লাল সুতোর দৌড়াত্ব্য, এখানেও অদৃশ্য সুতোর টান, এখানেও স্বার্থান্বেষি মহলের হরির লুট! আর কর্মকান্ডের ভেতর দিয়েই কিন্তু সরকারের চরিত্র ফুটে উঠে। এইযে এতোগুলো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলো, সরকারের তহবিলে কোটি টাকার সিকিউরিটি মানি জমা দেয়া ছাড়াতো নিয়মের কোন বালাই দেখা গেলোনা। আর সেই সব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকেরা কেউ ব্যবসায়ী, কেউ মন্ত্রী, কেউ আমলা কিংবা জেনারেল অথবা রাজনীতিবিদ। কই? আমাদের দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদেরা কোথায়? গুটিকয়েক কে দেখা যায় কোন কোন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের চোখে ঠুলিপরা, হাত পেছনে পিছমোড়া করে বাঁধা, কোমড় ও পায়ে দড়ি পেঁচানো V.C. হিসেবে। ক্ষমতা বিহীন ঠুটো জগন্নাথ! মেধা, বিদ্যা-বৈভবের জন্যে নয়, নিয়ম রক্ষার খাতিরে! তার মানে হল, উচ্চবিত্তের কালো টাকা সাদা করার আরেকটি উপায়। আর সেই জোয়ারে সমাজের অবশিষ্ট নৈতিকতার সচেতন বিসর্জন। এই জন্যে যে, নইলে এক্ষেত্রে আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের মতোই এখানে এইসব ইনস্টিটিউশন গড়ে তোলার সচেতন মানসিকতা দেখা যেত। যা আসলেই নেই। কেন, ভারত ও অপরাপর দেশের মতই এক্ষেত্রে সরকার আমাদের যশস্বী, অভিজ্ঞ এবং আগ্রহী শিক্ষাবিদদের অনুদান কিংবা দীর্ঘমেয়াদী সহজ ঋন সুবিধার ব্যবস্থা করে অনুপ্রাণিত করতে পারতো না? বাড়ানো যেতোনা সরকারের সহযোগীতার হাত খাস জমি থেকে বরাদ্দ দিয়ে গড়তে ইনফ্রাস্ট্রাকচার? একারনেই সরকারি তরফের উদ্যোগ প্রায়ই হয় প্রশ্নবিদ্ধ! আসলে অন্যসব সেক্টরের মতো এটিকেও সন্দেহাতীত ভাবে কলুষিত করা বাকী ছিলো খানিকটা, যা সম্পন্ন হয়েছে। কারণ কালিমা লিপ্ত মুখে প্রতিবাদ ও চেতনার ভাষা হারিয়ে যায়। যেটা শাসক শ্রেণীর লক্ষ্য!
একটা দেশ, এতো ধরনের পদ্ধতির তো দরকার নেই। মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড এর সাথে একীভূত করে দেয়া হোক। এই বোর্ড নির্ধারন করবে প্রমিত ব্যবস্থা, আমাদের কোমলমতিদের জন্যে। বোর্ডের কর্ণধার করা হোক কোন প্রথিত যশা শিক্ষাবিদকে যিনি ইতোমধ্যে অবসরে গিয়েছেন। কারণ, তাঁদের সারা জীবনের অর্জিত অভিজ্ঞতা আমাদের কোমলমতিদের দিক নির্দ্দেশনা দেবে, জাতি অগ্রসর হবে সুনির্দ্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে। এই বোর্ড নির্ধারন করবে সিলেবাস এবং মূল ৭টি বিষয়ের টেক্স্ট। যেমন, বাংলা সাহিত্য, ইংলিশ লিটারেচার, সমাজ বিজ্ঞান, ইতিহাস, অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি এবং পৌরনীতি। বাকি বিষয় গুলো থাকবে উন্মুক্ত। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একাডেমিক কমিটির মাধ্যমে বাকি বিষয়াবলীর টেক্স্ট নির্ধারন করে নেবে। এস. এস. সি এবং এইচ. এস. সি. পরীক্ষা বরাবরের মতোই বোর্ডের অধীনেই হবে। মাদ্রাসা শিক্ষায় যারা আগ্রহী তাদের জন্যে ধর্মীয় বিষয় সংশ্লিষ্ট সিলেবাস প্রনয়ন করা হোক, মূল ধারার সিলেবাস হতে অগুরুত্ত্বপূর্ণ ১/২টির পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট সিলেবাস তারা পড়বে, ঠিক যেমন প্রি ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট যারা পড়ে বায়োলজীর পরিবর্তে।
‘এ’ এবং ও-লেভেল সহ অন্যান্য বিদেশী পদ্ধতি, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সহ বাতিল করা হোক। কারন স্থানীয় পদ্ধতিরই ইংলিশ মিডিয়াম প্রচলিত আছে, যাকে ইংলিশ ভার্সন নামে অভিহিত করা হয়েছে। তবে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল গুলো স্থানীয় ইংলিশ ভার্সনের জন্যে প্রযোজ্য হতে পারে। এদেশে ‘ও’ এবং এ-লেভেল মূলতঃ পরিচালিত হয় বৃটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে। যারা এ মধ্যমে আগ্রহী (বস্তুতঃ অনাগ্রহ সৃষ্টি করা প্রয়োজন) তাদের সেটা সংশ্লিষ্ট দেশে গিয়ে ব্যবস্থা নেয়া এবং ডিগ্রী অর্জন করা শ্রেয়ঃ। অথবা বিষয়টিকে বৃটিশ কাউন্সিলের নিজস্ব ব্যপ্তিতে পরিচালিত করা যেতে পারে বা সীমাবদ্ধ রাখা যেতে পারে, যেমনটি TOEFL বা GRE ইত্যাদির ক্ষেত্রে আমেরিকান কালচারাল সেন্টারের মাধ্যমে হয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে‘এ’ বা ও-লেভেলের জন্যে কোন নির্ধারিত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান স্থাপন সাময়িক ভাবে হলেও অনুমোদন যোগ্য করা যাবেনা। এতে করে অন্ততঃ আভ্যন্তরীন ইংলিশ ভার্সন ক্ষতিগ্রস্থ হবে না। বরং একটা বড় অংশ এতে আগ্রহী হবে এবং এব্যবস্থার নিশ্চিত ক্রমবিকাশ ঘটবে। দেশে যে ক্যডেট পদ্ধতি চালু আছে সেটিকে পরিপূর্ণ ভাবে বোর্ডের আওতাভূক্ত করতে হবে, করতে হবে সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রন মুক্ত। শুধুমাত্র সামরিক প্রশিক্ষনের অংশটুকু ছাড়া। পাশাপাশি দেশের প্রতিটি ছাত্রের জন্যে স্বল্পকালীন সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে এই ক্যডেট কলেজ গুলোর মাধ্যমেই। সেই সাথে ছাত্রীদের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য হতে পারে কিংবা হতে পারে বাধ্যতামূলক স্বল্পকালীন নার্সিং ট্রেনিং এর ব্যবস্থা। গ্রাজুয়েশনের আগে এই ট্রেনিং অবশ্যই বাধ্যতা মূলক হওয়া বাঞ্ছনীয়, বাধ্যতামূলক আরো একটি বিষয় হওয়া উচিৎ, আর তা হলো লেকচারার বা তদূর্ধ পদের জন্যে আবেদন পত্রের সাথে ইংলিশ প্রফিসিয়েন্সি সার্টিফিকেট (TOEFL or IELTS) জমা দিতে হবে। এর ফলে বড় উপকার হবে এইযে, শিক্ষা ক্ষেত্রে যে বৈষম্য তা বহুলাংশে হ্রাস পাবে। আমার মতে বি এস সি (পাশ কোর্স) বাতিল করা প্রয়োজন, কারন এটি এখন আর সময়োপযোগী নয়। তার পরিবর্তে ভকেশনাল ট্রেনিং এবং নিয়মিত অনার্সকোর্স-ই যথেষ্ট। এতে করে ওপেন ইউনিভর্সিটির গুরুত্ত্ব ও পরিধি বাড়বে। আর ন্যশনাল ইউনিভার্সিটিকে পরিনত করা হোক পরিপূর্ণ ন্যশনাল ইউনিভার্সিটিতেই। জনবহুল দেশে দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির অন্ততঃ একটি অন্তরায় দূর হবে।
শিক্ষা ক্ষেত্রের প্রত্যেক স্তরেই শিক্ষক নিয়োগে কম-বেশী অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনার অভিযোগ রয়েছে। এম পি ও ভূক্ত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারী ভাবে পরীক্ষার মাধ্যমে নিবন্ধনের ব্যবস্থা যদিও আছে। কিন্তু আমার কাছে তা যথেষ্ট বলে প্রতিভাত নয়। এক্ষেত্রে ঢাকার ধানমন্ডিস্থ কোডার (কলেজ অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ-র) শিক্ষক নির্বাচন পদ্ধতি প্রনিধান যোগ্য। এই পদ্ধতিটি আমার বিবেচনায় অত্যন্ত গ্রহনযোগ্য, আদর্শ, সুবিবেচনা প্রসূত এবং যুক্তিগ্রাহ্য বলে প্রতীয়মান হয় (পদ্ধতি সম্পর্কে আমার সম্যক ধারনা থাকলেও নীতিগত কারনে আগ্রহীদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগের অনুরোধ রইলো)। এক মাত্র শিক্ষাগত যোগ্যতাই শিক্ষক নির্বাচনের মাপকাঠি হওয়া উচিৎ নয়। আমার জানামতে সারাদেশেই শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে একই প্রচলিত রীতি প্রয়োগ করা হয়। অথচ প্রকৃত সম্ভাবনাময় এবং প্রতিশ্রুতিশীল শিক্ষক নিয়োগ-ই লক্ষ্য হওয়া উচিৎ। বিশেষ করে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পর্য্যায়ে এটি অতিশয় গুরুত্ত্বপূর্ণ বলে আমার ধারনা। শিক্ষক হয়ে আসলে কেউ জন্মায় না। এর জন্যে যেমন দরকার প্ররম্ভিক জীবন থেকেই নিরবিচ্ছিন্ন অধ্যাবসায়, তেমনি দরকার ধৈর্য্য এবং কঠোর চারিত্রিক দৃঢ়তা। বিষয় এবং সম্পর্কের কমপ্লেক্স কম্বিনেশনকে মাধুর্য্যময় উপস্থাপনের সক্ষমতাই একজন মানুষকে দিতে পারে সফল শিক্ষকতার অত্যুজ্জ্বল গৌরব। একজন প্রকৃত শিক্ষক আসলে আমৃত্যু শেখেন, শেখাননা। তাঁর জ্ঞ্যান আহরনের তৃষ্ণা এবং অনুসন্ধিৎসা অনুপ্রাণিত করে তাঁর অনুগামীদের। এই অনুসন্ধিৎসু শিক্ষানুরাগীর সংস্পর্শে ক্রমবিকাশমান অনুসন্ধিৎসু চক্রের মিথষ্কৃয়াই আসলে গড়ে তোলে এক শিক্ষানুরাগী ক্যম্পাস। ‘কোডা’র শিক্ষক নির্বাচন পদ্ধতিই হোক কিংবা অনুরূপ কোন যথার্থ পদ্ধতি নিরূপন সাপেক্ষে হোক, তা অবশ্যই সরকারী বা বেসরকারী সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই অনুসরনের জন্যে প্রেরণা যোগানো কিংবা বাধ্য করা যেতে পারে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে। এতে অন্ততঃপক্ষে যথাযথ ব্যক্তিকে শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত করার যে প্রয়াস তার সূচনা হবে। আর এই বিষয়টিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথেষ্ট কঠোরতা অবলম্বনের দাবী রইলো এই জন্যে যে, এঁদের হাত দিয়েই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নির্মলভাবে গড়ে উঠা নির্ভর করবে। নির্ভর করবে জাতীয় ভবিষ্যৎ।
আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের সফলতার জন্যে, নির্মলতার জন্যে, তাদের বাসযোগ্য পৃথিবীর জন্যে আসুন ভেবে দেখি এই ক্ষেত্রে আর কি কি আশু পদক্ষেপ গ্রহন জরুরী।
Ms. Kakoli Adhikary,
I’m really very sorry for taking time. Yes, it is really rare, especially ones name and surname and profession all same to another individual! But may be not impossible, example is your comment! At the beginning I also was going to make a mistake like Mr. Prodip Dev. I couldn’t remember that I wrote a comment in English in this article! But the say was alarming me. Anyway with in a short I understood the real picture.
Ms. Kakoli, you are specially not interested in the article rather it was boring to you. But what you expressed about yourself later with the reply to Mr. Prodip Dev, showed your capability and aptitude. Your capability, self confidence and self respect mainly the indicator of your scholar nature. You have some personal bitter experiences (who is responsible and who is behind it, is immaterial) that just flashes in your reply that was made for Mr. Prodip Dev. At the very beginning I understood the reality and expecting a story behind your respond. Today I came to know it and now it is very clear to me. Anyway, I like to cite an example that was similar what you have told and I was directly involved into the story. Around 5 years back a Bangladeshi student came to my department and started works Ph.D. 1st month he spent very nicely. Very frequently he visited me and took several suggestions and tips, mainly in academic area.
I found his major problem in handling instruments. There were two reasons, (1) Language (Korean) and (2) Lack of appropriate ideas on the machine. Here in laboratory each and every machine is usually operated by the students or respective researchers. So initially he took help from me. Naturally I was not always available for him. By the way his inability was noticed to his supervisor. But the supervisor professor was very gentle and never interfere his style of works and progress. He gave him chance to achieve his adequate experiences. I spent a lot of time behind him to give him services to make him usual and capable. But shortly I found him very different in nature! He is discussing about his student allowance and savings etc with the other members. Naturally it brings some effect on him mentally and physically. Physical reason can be omitted due the traditional Korean food habit although it can be manageable easily by any means. But he mainly affected mentally in different ways, (1) tremendous academic pressure during semester, (2) Poor understanding in subject (3) lacking in instrumental handling (4) incapability in designing experimental procedure and (5) lack of interest and little homesickness, probably due to his last job and improper connection with his subject. With in short time I found him very nerves and too much distracted to get back his job what he left for earning higher degree in abroad. I tried to keep him here in different ways with enormous suggestions to continue his studies, his professor also requested him, but failed. After his leaving it was same situation for other Bangladeshi existing students what you expressed as your experience. But soon they recovered the problem with their attention and performances.
Interesting is, after long time recently he sent an email to his professor requesting for higher studies again. The respective professor came to me with that letter and asked me to send him an email with the following message, “He shouldn’t try for Korea, and probably he will be regretted from each and every corners of Korea from the supervisors those who are working in the same field. Better he can try for other specific field or other countries like Japan, China, Malaysia, Singapore, UK and United states”. I do not know what he is actually doing now, but he should obey his professor’s suggestion and try for it. There is some other more worst things already have done by the community and naturally I do not want to express the story here. The reality is specially Bangladeshis are suffering for the incidents. And these are very natural and unavoidable. One can only overcome it by one’s personal credibility, capacity and will. In your case, in my case and every-bodies cases these are true. You may know, there are some personal and monetary efforts are involved for each and every foreign student even for native students. Some times it brings some sorts of trouble for the respective professor or group researchers. Due to these reasons some times they might be annoyed on some individual, or community people. What you already have been facing in Japan. But it is very hopeful that you already defeated the situation and earned a stable and dependable image of personality. That will be the true image of your country and always you will be in focus during the continuation of your work in the future.
So the conclusion is that, in average, what we are facing is the effect of the darken part of our education policy, we are suffering. But we also at the same time have that ability to uphold the reliability and dependency too. That actually comes from your personal intuition, cultured family atmosphere and the teacher having enlightened personality. That I actually like to present in the above article and it is drastically disappearing due to the westernization and its boundless effects on the traditional values and logical ethics. Thank you very much for your kind discussion and participation.
– Keshab K. Adhikary
To respectable Mr. Adhikary, K./
I am extremely sorry that due to my heavy schedule of projected research I didn’t able to visit your page and didn’t notice your response to my worthless talking. You must think what an arrogant person am I. I am apologizing for destroying your valuable time. Moreover I have to beg your pardon that my words hurt you, may be so deeply. If possible please accept my apology for my rough words. I didn’t have any intention to hurt you and I did never attack anyone personally in my life. It’s really miracle that your name, surname as well as profession are similar to my dad and only for this reason I wrote. And I am sorry again that I hurt you.
You are enough experienced, so you could able to realize that there were some happenings behind my writing. Moreover, I have some explanations why I told it was boring. You know the problems lies in the root of our system. You, me, no one could ever able to change it a bit, and I think it’s just spoil of time, energy and intellect. And we don’t have that enough power or ability that we could able to fight against the corruption which is the main factor in our social or educational system. Due to enough experience you can properly understand better than me.
I have read about your experience which you have faced. Yea! My opinion is almost same as yours. But I feel there is another problem in the way of our learning. My grand Pa taught me one thing, if I would take one step to move forward in life then I have to shut down that door which I left behind me and should never think about that. May be this new step is wrong, but now way, I have to face it and learn new lesson for further step. And to him this was the life. He was a powerful person but at home always led a very simple life. Moreover always my parents have told me that I need my own identity. I am whose child, whose grandchild that doesn’t factor (and moreover whose “wife” which almost every women of our country love to use as their identity, but it was a great problem for me). It is necessary that who I am. One of my previous writing I wrote that as usually I don’t use my surname. I hope it’s clear now. And I think their lessons help me to be determined in the way of my life. And this determination is very much necessary because only by it we can able to overcome all obstacles in life. I don’t know will you agree with my opinion or not. Moreover we have the lack of honesty, transparency and truthfulness and you know it better than me.
I am apologizing again about my words which hurt you. I am extremely sorry for that.
Regards/
Kakali
———————————————
Adhikary, Kakali
D. – 1.
Dept of European and American Culture and Information Studies;
Graduate School of Humanities and Science
Nara women’s University
Nara-630-8506
Japan.
To respectable Mr. Pradip Dev/
I am sorry I didn’t notice you due to my tremendous busyness with my projected research. I am apologizing to you may be I was too rough to defense me.
After my arrival here in Nara, I could realized that what a dishonor was waiting for me due to my previous scholar from Bangladesh who escaped after 2 and half months after her arrival because of her too much knowledge in her study area. Among 63 international students the committee gave her selection For the Monbusho scholarship because she possessed the best category educational certificate from a very famous university of Bangladesh. And you know, my professor also thought that maybe I would be like her and he told me after 3 days of my arrival that if I wanted to return back and he would help be in proper way but not to escape like her. Could you imagine what a dishonor it was for me? To achieve their belief I needed to struggle too hard that I am not like her. My background is not so weak like the so called brilliant students. And in my Ph.D. entrance examination I possessed 3rd position among 286 students and in my university I am the only one south Asian student. Humbly I want to know from you what she did was it right or wrong? If it is wrong then why she did it? Previously I told to achieve their recommendation is very difficult. One should always know about oneself better than other, isn’t it? Why had I suffered due to her misdeeds? What was my fault? (Also I want to know the honest opinion from Mr. Keshab K. Adhikary).
Yes, now everyone here loves me very much and unimaginable. I have enough freedom for my work and research. And my professors they are excellent not only for my academic line but also my personal and private matter, if I needed. Moreover when I think about my early days still now I feel shame that I am from the same society from where she came and left a lot of dishonor for another one whom she did never know. And it was possible only for the educational system of Bangladesh which should never be changed until the end of the universe. You are experienced enough and I hope you can better understand than me.
One more thing T. S. Eliot says in his traditional and Individual Talent that “Honest criticism and sensitive appreciation is directed not upon the writer but upon the writings.”
Once again I am apologizing for my rough words.
Regards/
Adhikary, Kakali.
———————————————————————-
D. – 1.
Dept of European and American Culture and Information Studies;
Graduate School of Humanities and Science
Nara women’s University
Nara-630-8506
Japan.
জনাব প্রদীপ দেব,
আমি আমার পরিচয় মুক্তমনায় একাধিকবার মন্তব্য লিখতে গিয়ে তুলে ধরেছিলাম।এমন কোন যশস্বী কিংবা কেউকেটা আমি নই।কতটুকু মুক্তমনা, আমার নিজেরও তাতে খানিকটা সন্দেহ আছে।ভাবের জগতে নিজেকে মুক্তমনা ভাবাটা যত সহজ, ব্যবহারিক জীবনে মুক্তমনা হয়ে উঠা বোধহয় অত সহজ নয়, অন্ততঃ আমার কাছেতো নয়ই।তবুও যাকিছু ভাল, যুক্তিগ্রাহ্য মঙ্গলময়, রুচিশীল, চেষ্টাকরি আয়ত্তেনিতে।
আসলে বিগত কিছুদিন Conference সংক্রান্ত কাজে ব্যাস্ত ছিলাম, তাই নিয়মিত ‘মুক্তমনা’য় আসতে পারিনি। আপনার কৌতুহল নিবৃত্ত করতে হলো তাই একটু দেরীতে। আর সেজন্যে দুঃখ প্রকাশই আমার জন্যে একমাত্র অবশিষ্ট কর্তব্য। সেজন্যে দুঃখিত আমি।
দেখুন, আমি আমার রচনাটিতে কোন তত্ত্ব সন্নিবেশের চেষ্টা করিনি। খুবই মামুলী ধরনের লেখা, আমার দৃষ্টিতে যেখানে খট্কা বেধেছে, সৌজন্য বজায়রেখে বলতে চেষ্টা করেছি।ক্ষেত্রবিশেষে গুটিকয় আপাতঃ বিকল্প ব্যবস্থার কথাও বলেছি। অমি জানি যে অনেক প্রথিত যশা মহাঞ্জ্যনী ব্যক্তিবর্গ আমাদের শিক্ষানীতি, শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছেন। এব্যাপারে ডঃ কুদ্রাত ই খুদার চাইতে নমস্যঃ আমার সামনে আপাততঃ তো কেউ নেই। সেই কবে একটি নীতিমালা দিয়ে তিনি গত হয়েছেন, অথচ আজও আমরা তা বহালতো করিইনাই বরং অনভিপ্রেত বিতর্ক আমরা চালিয়েই যাচ্ছি!হয়তো আরো ভালো কিছু আসবে এই আশায়!অথচ এই সময়ের মধ্যে আমি আমার শৈশব পেরিয়ে, কৈশোর পেরিয়ে, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠ ডিঙ্গিয়ে খেটে নেয়ে একটি ছেলের বাবাও হয়ে গিয়েছি। স্বাধীনতার পরে ৩৮ বছরের মামলা! এখনো বিতর্ক! ভয়টি আমার এখানেই। আমার ছেলেটির জন্যে।বিশ্বাস করবেন যে সে বাংলা পড়তে লিখতে ভয় পায়? রবীন্দ্রসঙ্গীত পছন্দ করেনা?মাটির সাথে আমাদের যে যোগ ছিল, আজ তা আর নেই। আমাদের স্কুল জীবনে শিক্ষকবৃন্দের যে অনুপ্রেরণা আর উৎসাহ ব্যঞ্জক সাহচর্য়্য পেয়েছি আজ আর তেমনটি খুব একটা দেখা যায়না। আমাদের ত্রুটিপূর্ণ, বৈষম্যমুলক শিক্ষানীতি অনাদি কাল থেকেই। আপনি, আমি, আমরা সবাই ওকে ধারন করেই পার হয়ে এসেছি। এখন আমার ছেলের পালা। তাই এতো চিৎকার! আমার বিশ্বাস বড়ই কম, যে সহসা ভাল কিছু আমরা পেতে যাচ্ছি। তাই বলতে চেষ্টা করেছি যে স্থূলভাবে হলেও ওতে আপাততঃ গুনগত কোন পরিবর্তন আনা যায় কিনা। আমি কোন নীতিতে যেতে চাই আশাকরি খানিকটা উপলব্ধি করতে পেরেছেন।
আপনার দ্বিতীয় ঔৎসুক্যের ব্যাপারে নিজের পরিচয়টা আবার দিতে হচ্ছে, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে ১৯৯১ সালে (প্রকৃতপক্ষে মাস্টার্স ১৯৮৭ সালে শেষ হওয়ার কথা) মাস্টার্স শেষ করে বেরিয়েছি। আমার মাতৃভাষার অবস্থা বিলক্ষন খুব ভাল নয়, নইলে সাহিত্যিকের পেশাটা খাম্চে ধরা যেত কিনা! বিশেষ করে বাংলা টাইপিং তো আরোও!মুক্তমনার ডঃ অভিজিৎ এর একটি উৎসাহ ব্যঞ্জক সাড়া, আর এই মন্তব্য সিরিজের শুরুতে ডঃ ফরিদের টাইপিং সংক্রান্ত পরামর্শই আমার আপাততঃ সম্বল। আর তাই এতো কথা, যা আপনি উপরে দেখেছেন।দেখুন আমার ভীতির একটা উদাহরণ দিয়ে আপাততঃ আমি বিদায় নেব। আমি দক্ষিন কোরিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাময়িক ভাবে কাজ করছি। স্থানীয় কয়েকজন অধ্যাপক তাঁদের গবেষনাগারে বাংলাদেশের ছেলে চেয়েছিলেন উচ্চতর গবেষনা কাজের জন্যে, মূলতঃ আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগই পেছনে কাজ করেছে।আমি যাদের সাথে যোগাযোগ করেছি, তারা আমাকে মেইল করে কি জানতে চেয়েছে জানেন? মাসে কতো ডলার করে তাদের দেওয়া হবে! তাদের আদৌ সুযোগ হবে কিনা, অথবা কোন বিষয়ে কাজ করতে হবে, তার কোন পূর্ব প্রস্তুতি প্রয়োজন কিনা সেবিষয়ে তাদের কোন আগ্রহই নেই! তাই আমার ব্যক্তিগত হতাশা অনেক প্রবল।মিস কাকলী তাঁর মন্তব্যের এক জায়গায় বলেছেন, আজকাল অনেক ভালো রেজাল্ট করেও অনেকে পূর্ব কিংবা পাশ্চাত্যের দেশে এসে খাবি খাচ্ছেন।নিজের অপারগতা ঢেকে রাখতে আনেকেই সুপারভাইজারের অজ্ঞ্যানতার দোহাই দেন। আমার নিজেরও এরকম বেশ কিছু ঘটনা দেখা এবং জানা আছে। এসবই আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সন্দেহ নেই, তবুও বোধহয় পেশার মাহত্ত্বের গুণে আমরা উৎরে আসতে পেরেছিলাম। তাই আমার এই বিষয়বস্তুর অবতরণা। দেখুন আরো ভাল কোন প্রস্তাব হয়তো আপনার কাছ থেকেও পাওয়া যেতে পারে। তবে কাল ক্ষেপনের সুযোগ বোধ হয় আমাদের নেই। ধন্যবাদ।
To Respectable Mr. Prodip Deb/
For your very kind concern I want to inform you that I am sorry to say you didn’t read my writing properly and I am not Keshab Adhikary and I have not written any reply to Mr. Porosh. I just my express my opinion to Mr. Adhikary and surprisingly our surname is same. But this is the first time I used my family name which I usually didn’t do and due to that this misunderstanding if happened. I am sorry for that. And I didn’t read his article properly because I felt it’s really boring, which I have written.
One can easily week in her or his mother language that doesn’t mean that he or she is ignorant about own culture or not educated. For your very kind concern, I was educated in convened school, and took my honours and master degree in English literature from University of Dhaka and now doing my Ph.D. dealing with Shakespeare in Nara Women’s University, Japan. And I am a gonerenment scholar here. You may don’t know it’s really tough to get entrance into Dept of European and American Culture and Information Studies of NWU with Monbusho Scholarship (Ministry of Education, Culture, Sports, Science and Technology (Japan Government Scholarship)) because they only take those students who have the ability to compete with native students and fortunately I am one of them.
Do you know what you did? You did the same which other people do to beat their own drum to come into the lime light and just heat other’s weak point. I wrote everything but you did not read or concentrate or realize a bit because you were so excited. I don’t know who are you but my humble request to you please don’t heat people’s weakest point. That’s shameful upon ownself.
Yes, I am so weak in my mother language and can’t express myself properly due to lack of language but I sang Tagore song, I love Nazurul Geeti. Like so called intellectual people I did never tried to bring any partition between them and maybe I hold my own culture more than all of you. Because to me, my identity I am Bengali neither Hindu nor Muslim, neither a male nor a female. I don’t never ware so called modern Shellawer-Kamiz instead of Sharee, which my mom wares, my granny wore. Yes I protest against your so called modern social custom full of communality, suppressing mentality which is hindered for becoming a prosperous nation. But no one cares about that instead of searching the weak point of other. Because everyone feels that it’s the creditable way to become an intellectual in society.
Do you need any information about me, if you need please write me directly to me: [email protected]
You wanted to justify my educational background. I am inviting you please visit NWU this 2nd of May, 2009 then you can easily get all of your answers about me.
Regards/
Adhikary, Kakali
———————————————–
D. – 1.
Dept of European and American Culture and Information Studies;
Graduate School of Humanities and Science
Nara women’s University
Nara-630-8506
Japan.
I am sorry that I thought k Adhikary and Keshob Adhikary are the same person. It was very unscientific thought from my side. I apologize. And hence – my commnets and inquiry about Mr Keshob Adhikary does not apply to K Adhikary. Thanks.
কেশব অধিকারী যে বিষয়ে লিখেছেন – মূলত বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে অনেক লেখা হয়েছে – অনেক বিশেষজ্ঞ কমিটিও গঠন করা হয়েছে এবং তারা কাজ করে যাচ্ছেন অনেকদিন ধরে। বিশ্বব্যাংক এবং এডিপি সহ আরো অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা অনেক টাকাপয়সা ঢালছে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার গোড়ায়। মুক্তমনার পাতায় এ নিয়ে বিস্তারিত মুক্ত-আলোচনা সময়োপযোগী। সে বিষয়ে বিস্তারিত মতামত জানানোর আগে আমি কৌতূহল বশত কেশব অধিকারীর ব্যক্তিগত অবস্থানটা একটু জানতে চাচ্ছি। কারণ সত্যি বলতে কি – তাঁর লেখা পড়ে মনে হচ্ছে তিনি নিজেও স্থির করতে পারছেন না তিনি আসলে বাংলাদেশের জন্য ঠিক কী ধরণের শিক্ষাব্যবস্থা চাচ্ছেন – যা কাজ করবে। মিঃ কেশব অধিকারী, আপনি বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিভাগ থেকে পাশ করেছেন একটু জানাবেন কি? এবং যদি কিছু মনে না করেন – কোন সালে পাশ করেছেন জানাবেন কি? আমি এ তথ্যটুকু জানতে চাচ্ছি একটা বিষয়ে পরিষ্কার হওয়ার জন্য। সেটা হলো – আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তখন কেমন ছিল – আর আপনার দৃষ্টিতে এখন যেমন হয়েছে – এ দুই অবস্থার মধ্যে পার্হক্যটা নিজের মত করে বোঝার জন্য। আর আপনার সাবজেক্ট জানতে চাচ্ছি দুটো কারণে – এক কারিগরী দিক এবং দুই – ভাষাগত দিকটা ঝালিয়ে নেয়ার জন্য। আপনি বাংলা সফ্টঅয়ারের আয়ত্বে না আসার ব্যাপারটা বলেছেন কয়েকবার – বলেছেন ওটা আপনার কম্মো নয়। আবার পরশ’ এর মন্তব্যের জবাবে ইংরেজিতে লিখেছেন যে আপনি আপনার মাতৃভাষায় খুব দুর্বল। তাই জানতে ইচ্ছে করছে – এই দুর্বলতা আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থার কারণে তৈরি হয়েছে কিনা। অনেক ধন্যবাদ।
I am extremely sorry to write in English due to software problem as well as I am so poor in my mother language. It’s a great shame which I always feel. I didn’t control my interest to write you because your name is the same as my dad’s and it’s really a miracle the profession is also same. I am sorry that I didn’t read your article because I feel it’s really boring. But just I want to know that by writing in this way can you able to change a bit of that society from where we always try to escape isn’t it? And it’s the educational systems, who cares there? If you have money you must have the best class educational certificate. For this reason after getting the top level scholarship, they didn’t able to continue their research and blamed the instructor and supervisor is not cooperative. We have to bear their dishonor. I am sorry that I don’t know how to pretend and flatter.
I am apologizing if I have told anything impolitely and roughly.
Regards/ KA
অনেক ধন্যবাদ আপনার সুচিন্তিত মতামতসম্পন্ন লেখাটির জন্য।
যদিও আপনার দেয়া অনেক প্রস্তাবনার-ই বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা বা জটিলতা আছে, কিন্তু সেটা বড় কথা নয়, এ-সমস্ত জিনিসগুলো নিয়ে আমাদের সবার চিন্তাভাবনা করা উচিৎ, সেটাই বড় কথা। আর সবাই মিলে চিন্তা-ভাবনা করলে নিশ্চয়ই আমরা ভালো কিছু করতে পারব।
ভালো থাকবেন।
অসম্ভব সুন্দর ও চিন্তাশীল লিখা। (কেউ কি বানানগুলো এডিট করে দিতে পারবেন? এডমিন?)
লেখককে সাধুবাদ । ভাই, আপনি কি করেন?
দু্ঃখজনক হল শিক্ষার মাধ্যমে কি চাই সে বিষয়েই আমরা বিভক্ত । বিভিন্ন প্রবর্তিত বা প্রস্তাবিত শিক্ষাদর্শন আমাদের সমাজব্যবস্থার সাথে কিভাবে সংগতিপূর্ণ বা পরিপূরক হতে পারে এ নিয়ে আমার মনে হয় না আমরা যথেষ্ট চিন্তা করছি । আমাদের মত কলনি্য়াল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বা শিক্ষাব্যবস্থায় বড় হওয়া মানুষদের মধ্যে একটি ধারা ক্রমশ প্রবল হয়ে উঠছে, তা হল পশ্চিমকে “catch up” করা এবং পশ্চিমদ্বারা প্রশংশিত হবার প্রবল আগ্রহ, স্বভাবতই বিভিন্ন প্রবর্তিত বা প্রস্তাবিত শিক্ষাব্যবস্থায় এটিই প্রাধাণ্য পায় । কিন্তু মনে রাখতে হবে দেশের অনেক মানুষ অন্য রকম ভাবতে পারেন । আমাদের কাছে যা গুরুত্বপূর্ণ অনেকের কাছে তা অর্থপূর্ণ নাও হতে পারে ।
আমাদের দরকার একটি ধারা যা সবাইকে সন্ন্তুষ্ট করবে।
@Ahmed Rana,
আপনার উদ্দীপনাময় বিশ্লেষন ধর্মী মতামতের জন্যে আসংখ্য ধন্যবাদ! আপনার এবং আপনাদের সবার মতামত নিশ্চই সবাইকে (আমাকে সহ যারা এব্যপারে ভাবছেন) উৎসাহিত করবে। আপনার প্রশ্নের উত্তরে, আমি বাংলাদেশে একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত। বর্তমানে দক্ষিন কোরিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি শিক্ষক হিসেবে কাজ করছি দুবছর মেয়াদে। আপনার সুন্দর মতামতের জন্যে আবারও আন্তরিক ধন্যবাদ! ভালো থাকুন।
-কেশব অধিকারী
@Ahmed Rana,
যতদূর সম্ভব বানানগুলো ঠিক করে দেয়া হলো।
@ফরিদ,ধন্যবাদ ।
@ফরিদ,
Ahmed Rana-র চমৎকার মন্তব্যটি পড়ার সময় নিজেকে দারুন অপরাধী মনে হচ্ছিল বানান গুলোর ছিরি (!) দেখে। তড়িত একটা উদ্যোগও নিয়েছিলাম মুক্তমনা আ্যডমিনকে কষ্ট না দেবার জন্যে। কিন্তু কিছুক্ষন পরেই টের পেলাম এটি আমার কম্মোনয়! কি থেকে কিসে ঘোট পাকিয়ে যায় সেই ভয়ে চুপ্সে গেলাম! ঠিক তখনই একটা স্পেশাল ধন্যবাদ মুক্তমনা আ্যডমিনের জন্যে বরাদ্দ রেখেছিলাম! আর প্রথম সুযোগেই তা আমি জনাব ফরিদ তথা মুক্তমনার সংশ্লিষ্টদের বিনায়বনত চিত্তে প্রত্যার্পণ করতে চাই। আপনারা আমার বাংলা টাইপের অপারদর্শিতা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, সেই সাথে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা নেবেন।
-কেশব অধিকারী
কিছু কিছু যুক্তাক্ষর লেখার ক্ষেত্রে আপনার সমস্যা রয়েছে দেখতে পেলাম। প্রথম প্রথম বাংলা টাইপের ক্ষেত্রে প্রায় সকলেরই এই সমস্যা হয়। অভ্র হেল্প থেকে Bangla Typing with Avro Phonetic ইউজার ম্যানুয়াল দেখতে পারেন। এই ম্যানুয়াল অনুযায়ী দিন কতক প্রাকটিস করলেই দেখবেন সব আয়ত্ত্বে এসে যাবে। এমন কোন কঠিন নয় কাজটা।
@ফরিদ,
অসংখ্য ধন্যবাদ জনাব ফরিদ। এই পরামর্শটিই আমি আশা করছিলাম। খুউবই অসুবিধায় ছিলাম ব্যপারটা নিয়ে। আশা করি সুধরে নেব নিজেকে। আবারও ধন্যবাদ এই জন্যে!
-কেশব অধিকারী