কাহনঃ বাংলা আবৃত্তি আর বাক শৈলী
ক্যাথেরীনা রোজারিও কেয়া
পর্ব ১
যে বয়সে নারী ভালবাসে কোন পুরুষকে সেই বয়সে আমি ভালবেসেছিলাম একটি আবৃত্তি সংগঠনকে। প্রথম প্রেমের স্মৃতি কথা বলতে যে পুলক অনুভব হয় (বোধ করি মেয়েদের মুখে এই কথাটা শোভা পায়না ) আমার আজো তা হয়। প্রথম প্রেম যেমন আশা নিরাশা ক্রোধ বিড়ম্বনার জন্ম দেয়, সংগঠনটি আমাকে তাই-ই দিয়েছে। আবৃত্তির কারনে আজো বোধের এইসব অনুভব আমার হয়, হচ্ছে। তবু আবৃত্তি আমার সত্তার একটি বিরাট অংশ।
যখন এই লেখাটি শেষ করে আমার কঠোর সমালোচক বাবা, যার স্নেহময় শাসন আর প্রশ্রয়ে আমার বেড়ে ওঠা তাকে দেখালাম -তিনি বললেন তুমি দুদিন ধরে আবৃত্তি করছো বলেই কি অধিকার রাখো এই প্রায়োগিক শিল্পটা নিয়ে লেখবার? আমি বিড়ম্বিত কাতর কণ্ঠে বললাম ‘যেহেতু বাংলা দেশে আবৃত্তির প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বিকাশ তেমন একটা ঘটেনি, আমার ঠেকে শেখা অভিজ্ঞতা নিয়ে আর আমার গবেষণার ফল নিয়ে যদি কিছু লিখেই ফেলি তাতে তো ক্ষতি বৃদ্ধি হচ্ছে না কারো। বরং তাতে যদি কারো শ্রম কিছু লাঘব হয়, আবৃত্তির প্রতি অথবা বাক শৈলীর প্রতি আগ্রহ জন্মে , ক্ষতি কি?
আমরা তো সব কিছু আগ্রহ ভরে আলিঙ্গন করি, লালন করি তার কতটুকু? সেই তরুন বয়সের যে ভাল লাগাকে আমি আলিঙ্গন করেছি তাকে তো লালন করেছি এই পরিনত বয়সেও। তাই তার প্রকাশের জন্যে এটুকু দাবীতো করতেই পারি।
আমার বাবা মেনে নিয়েছেন আমার যুক্তি। জানি না পাঠক মেনে নেবেন কিনা আমার হাতে কলমে শেখা জ্ঞান মুক্তমনায় প্রকাশের বিষয়টি।
আবৃত্তিঃ সর্ব শাসত্রানাং বোধাদপি গরীয়সী। যারা আবৃত্তি করবেন তারা এই কথাটি বেশির ভাগ লেখায় দেখে থাকবেন। আবৃত্তি বিষয়ে গবেষক রামচন্দ্র পাল দাবী করছেন ইদানিং এ কথাটি দিয়ে আবৃত্তিকাররা বোঝাতে চাইছেন যে শাস্ত্রের মধ্যে আবৃত্তি শাস্ত্র প্রধান। ধারনাটি বর্মের মত আবৃত্তিকারকে বাঁচাচ্ছে। এতে আত্মতৃপ্তি রয়েছে তবু এটি অনুসন্ধান যোগ্য। প্রবচন টি বাংলা করলে দাঁড়ায় সকল শাস্ত্রের মধ্যে বোধ অপেক্ষা আবৃত্তি শ্রেষ্ঠতর। এবারে দেখুন অধ্যাপক অসিত বন্দোপাধ্যায় কি বলছেন। তিনি বলছেন, সর্ব শাস্ত্রের মধ্যে একটা জিনিষ কে বোঝবার আগে আবৃত্তি করা দরকার, আবৃত্তিতে এর রূপ মূর্ত হবে। আবার এই কথাটিকে ব্যাখ্যা করলেন শ্রী গোবিন্দ গোপাল এই ভাবে যে প্রাচীণ কালে বেধ পাঠের ব্যাপার ছিল। অর্থে দিকে ততটা দৃষ্টি দেয়া হতো না। তাদের মত ছিল যথাযথ ভাবে উচ্চারণ করে আবৃত্তি বা পাঠ করলেই মন্ত্রের ফল পাওয়া যায়।
ব্রহ্মা কে বেদের উচ্চারক বলা হয়। তিনি চার মুখে আবৃত্তি করতেন ঋিক সাম অথর্ব আর জযু। বৈদিক ধারায় বেদের ছয়টি অঙ্গ আছে বলে জানা যায়- শিক্ষা, কল্প, ব্যাকরন, নিরুক্ত, ছন্দ, জ্যোতিশ। শিক্ষাত্রীরা অনুসরণ করত গুরুকে। তাদের জানতে হত সবরের তিনটি স্তর, উদ্দাত্ত, অনুদাত্ত, এবং সবরিত। stress accent; বা pitch accent। এখনো acute or raised accent grave accent circumflex accent ব্যাবহার হয় আবৃত্তিতে. শিক্ষাত্রীদের জেনে নিতে হতো কোথায় আরহ কোথায় অবোরহ হবে বা ঝোঁক পড়বে। ভরত মুনি আবৃত্তি তে চার প্রকার স্তরের কথা বলেছেন উদ্দাত্ত, অনদাত্ত, সবরিত, কম্পিত। বলেছেন ছয়টি অলংকারের কথা উচ্চ, দিপ্ত, মন্ত্র, নিচ, দ্রুত এবং বিলম্বিত। এবিষয়টি যারা আরো জানতে চান তার শ্রীঅযোধ্যা নাথ সান্ন্যালের বৈদিক শব্দ রহস্য বইটি দেখতে পারেন।
বেদে উচ্চারণ রীতি দুটো। শস্ত্র আর স্ত্রোত্র। শস্ত্র হোল পাঠ আর স্ত্রোত্র হল সংগীত। সে হিসেবে শস্ত্র প্রথম আবৃত্তির ধারা। বেদের পুরোহিত আবৃত্তি করতেন আর যজ্ঞের স্থানে উপস্থিত থাকতেন শিক্ষিত লোকেরা মানে হোতারা আর শিষ্যরা দলবদ্ধ ভাবেও আবৃত্তি করতেন।
পাঠক এতটুকু জেনেই নিশ্চিত হবেন না, লক্ষ্য করুন শ্রীপ্রবোধ চন্দ্র সেন বলছেন মন্ত্র গুলো সুর দিয়ে গান করলেই সাম আর ছন্দ বাঁচিয়ে পড়লেই আবৃত্তি। এখানে কিন্তু স্ত্রোত্র আর স্ত্রোত্র নিয়ম খাটচ্ছে না। যাজ্ঞবল্ক শিক্ষা বলছে যার বদন করাল ওষ্ঠ লম্বা, সব অনুনাসিক, কণ্ঠস্বর গদ গদ, জিহভা জড়, সে পাঠে অনাধিকারি। পাঠক এর কোনটি নিজের মধ্যে খুঁজে পেয়ে এই লেখা ফেলে রেখে উঠে যাবেন না। কেননা দেখুন সেই একি শিক্ষা বলছে তারাই পাঠে অধিকারী যাদের প্রকৃতি শান্ত, দাঁত সুগঠিত, উচ্চারণ স্পষ্ট বিনীত সংযমী। এর মধ্যে আপনি নিশ্চয় আছেন । রমা চন্দ্র রায় বলছেন অক্ষর সম্পর্কে যাদের শংকা আছে, সাধারণ ভয় আছে, যাদের উচ্চস্বর, অব্যক্ত অস্ষ্ট কণ্ঠস্বর, আনুনাসিক স্বর, কর্কশ স্বর, স্থান ভ্রষ্ট উচ্চারণ, বিরষ কণ্ঠ, ব্যাকুল; হয়ে পাঠ তাললয়হীন করেন তাদের আবৃত্তি করা উচিত নয়।
হ্যাঁ, সে জন্যেই তো অনুশীলন । কিন্তু অনুশী্লন যে করবেন তার ত নিশ্চয় নিয়ম আছে। আর নিয়মের আগে চলুন জেনে নেই আপনার শব্দ উচ্চারণের পেছনের ঘটনায়। ঘটনাটা হলো আপনার শারীরিক কিছু অংশ। আপনি প্রথমে শোনেন, শোনার অনুভূতি কথা বলানোর পর্যায় যায় আর শেষে কিছু অঙ্গ আপনাকে সাহায্য করে কথা বলতে। ছকের সাহায্যে দেখালে এমন হয়ঃ auditory area+ visual area+ psychic area______ area of speech_uppor motor nerve-lower motor nerve-motor activity- initiation of the movement of the muscles helping in speech.
চলবে…
—————————————————————-
গবেষণা এবং পরবর্তীতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন ডঃ ক্যাথেরীনা রোজারিও। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি শেষে বর্তমানে ফ্লোরিডা সরকারের শিক্ষা বিভাগে কর্মরত রয়েছেন। আশির দশকের বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম সাহসী সংগঠক ও কর্মী ছিলেন। টিএসসি কেন্দ্রিক আবৃত্তির সংগঠন স্বরশ্রুতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি। তার একক আবৃত্তির সিডি ‘একজন অনিমেষ আজো জেগে আছে’ প্রকাশিত হয়েছে ঢাকা থেকে ২০০৭ সালে।
অসম্ভব ভালো লেখেন, অসাধারন উচ্চতায় ভাবতে পারেন,তেমনি আবৃত্তি।অভিভুত।
মনে হল, আমার মনের সাথে আপনার মনের মিল আছে,
ভাল লাগলো !
‘এখনো acute or raised accent grave accent circumflex accent ব্যাবহার হয় আবৃত্তিতে’
লাইনটা একটু ব্যাখ্যা করবেন?
@সৈয়দ ফয়সল আহমেদ,
ধন্যবাদ। আমার সুখময় সময় কাটিয়েছি সিলেটে। সব ই মনে আছে এখনও।
আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবার চেষ্টা করছি।
acute accent যেমন ধরুন ” মিছিলে মিলেছি কেননা বুকের কলজের সাথে হাড় পাজরেরা মিছিলে গিয়েছে কবে একদিন জীবনের সন্ধানে” এটা আবৃত্তির সময়ে কন্ঠের উচুঁ পর্দায় ধরলে কবিতার সুর ব্যাক্ত হবে সঠিক । আবার যদি আবৃত্তি করি ” এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে সবচেয়ে সুন্দর , করুন, সেখানে ভোরের মেঘে নাটার রঙের মত জাগিছে অরুন ” এখানে circumflex বা কন্ঠের স্বাভাবিক স্তর ব্যাবহার করে শুরু করলে শুনতে বড় মিষ্টি লাগবে। grave accent অর্থাৎ গম্ভীর স্বর দিয়ে ” যদিও সন্ধ্যা আসিছে মৃদু মন্থরে ” কবিতা র আবৃত্তি শুরু করলে সন্ধ্যার ভাবটাও যেমন ফুটবে আবার কবিতার ভাবের সঙ্গে মিলিয়ে উচুঁতে বা নীচুতে স্বর নিয়ে আরো খেলা করার সম্ভাবনাও থাকবে। নিশ্চয় খেয়াল করেছেন যে বিশেষ করে এই কবিতাটিতে স্বরের বিভিন্ন স্তর ব্যাবহারের সুযোগ রয়েছে আবৃত্তিকারের।
জানি না বোঝাতে পারলাম কিনা। লেখাটা পড়েছেন বলে আমি কৃতজ্ঞ ।
আমার কিছুদিন সৌভাগ্য হয়ে ছিল আপার সাথে কাজ করার।
সিলেটে যাওয়ার পর উনি খবর পরতেন সিলেট বেতারে।
তখন আমিও খবর পরি। সিলেটে আমাদের সংগঠন ‘কথাকলি’ -তে আপা অসতেন। কথাকলিতে আমি সামনা সামনি বসে উনার আবৃত্তি শুনেছি। কৃষ্ণা কবিতা শুনেছি।
আমার এখনও কানে লেগে আছে।
[…] পর্ব – ১ […]
যাঁরা অনুগ্রহ করে লেখাটি ছাপিয়েছেন, পড়েছেন, আবৃত্তি শুনেছেন এবং মতামত জানিয়েছেন, আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমার এই অপরিপক্ক প্রয়াসে অনুপ্রেরণা জানিয়ে আপনারা আমার জীবন যাপনের তৃষ্ণা আর উচ্ছ্বাসকে বাড়িয়ে দিলেন।
ফরিদ ভাইয়ের রিপ্লাই পড়ে হাসছিলাম, কি কারণে সেটা তিনি ভালো করেই জানেন। কিন্তু হাসতে হাসতে লিঙ্কটায় গিয়ে স্তব্ধ হয়ে গেলাম। অসাধারণ লাগলো, অপূর্ব কণ্ঠস্বর।
লেখাটার ব্যাপারে আসি। কিছুটা কঠিন মনে হচ্ছিলো। নির্দিষ্ট কোন কিছু নয়, পুরো লেখার স্টাইল এর কথা বলছি। আরেকটু সহজভাবে বা বিস্তারিতভাবে বললে হয়তো অধিক সুখপাঠ্য হতো। ধারাবাহিক লেখা, অতএব, বিস্তারিত হলে আমাদের মত সাধারণরা হয়তো আরো একটু ভালো বুঝবো।
লেখিকাকে অভিনন্দন এ-রকম একটি বিষয় নিয়ে লিখবার জন্য।
আপনার এতো সুন্দর লেখার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন।অনেক আশা ছিলো কবিতা আবৃত্তি শেখার কিন্তু শেখা হয়নি।আপনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে এবার ঠিকই শিখে নিব।যদি তাও না পারি তবে আশা করছি কবিতাকে গদ্যের মতো করে পড়ার পথ থেকে সরিয়ে আনতে পারবো।
এতো রিস্ক নিয়ে কবিতাটির লিঙ্ক পোষ্ট করার জন্য ফরিদ সাহেবকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ।
অসাধারণ আবৃত্তি। ফরিদ ভাইয়ের লিঙ্কটা আমি মুল লেখাতেও দিয়ে দিলাম। মুল লেখা থেকে ক্লিক করে কি শোনা যাচ্ছে?
প্রতিটি পর্বে এরকম একটি করে অডিও লিঙ্ক চাই।
আমি কবিতা এবং আবৃতি বুঝতে পারিনা। কিন্তু এটা বুঝতে পেরেছি, ডঃ রোজারিও অত্যন্ত উচু মাপের আবৃতিকার। ধন্যবাদ ফরিদ সাহেবকে লিংকটি লিংক করার জন্য।
বছর দশেক বা তারও আগে, ডঃ প্রবোধ সেনের (আমার মনে হয় আপনার শ্রী প্রবোধ সেন আর শান্তিনিকেতনের প্রাক্তন অধ্যাপক ডঃ সেন একই ব্যক্তি) ছেলের বাসায় শাওলি মিত্রের কন্ঠে “নাথবতী অনাথবত” শুনেছিলাম। আপনার কবিতা খানি একই কবিতার অংশবিশেষ মনে হচ্ছে। দুটোই অন্তর দিয়ে অনুভব করার মত। আমার অজ্ঞতার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।
ধন্যবাদ ফরিদকে চমৎকার একটা আবৃত্তির লিংক দেয়ার জন্য।
ক্যাথেরীনা রোজারিও কেয়ার আবৃত্তি মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনলাম। ‘ আমি দ্রৌপদী নই, নই পাঞ্চালী, নই ভরত কূলবধূ, আমি কৃষ্ণা — যজ্ঞাগ্নিসম্ভূধা শুধু এক নারী’ শুনতে শুনতে কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম।
ক্যাথেরীনাকে অনুরোধ আবৃত্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেবেন না।
আবৃত্তির উপর আরো লেখা চাই। জানতে চাই তখনকার টিএসসি’র আবৃত্তি সংগঠ্নগুলোর কাযর্ক্রম। আমি টিএসসি’র একটি সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলাম। দেখেছি প্রেমের টানেই আবৃত্তি কর্মীরা সংগঠন গুলোর জন্যে শ্রম দেয়। আমার সংগঠনটির নাম ছিল ” স্বরশীলন”। মাসুদ সেজান, ফ্লোরা আরো আরো অনেকেই ছিল্। আমি ছিলাম প্রথম ব্যাচ এর কর্মী । একট স্মৃতি আছে যা কখনোই ভুলবো না জীবনে।
একজন মানুষ তার নিজ প্রতিভাকে কীভাবে ধ্বংস করতে পারে তার জ্বলন্ত উদাহরণ হচ্ছে ক্যাথেরীনা। শুধুমাত্র সামান্য একটু সিরিয়াস হলেই আজ তিনি হতে পারতেন বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একজন আবৃত্তিকার। সেজন্যে যে ধরনের মাধুর্যময় কণ্ঠ সৌন্দর্য থাকা দরকার, যে ধরনের প্রথাগত শিক্ষা থাকা দরকার, যে ধরনের কবিতাকে হৃদয়ঙ্গম করার সক্ষমতা থাকা দরকার এবং আবৃত্তির প্রতি যে ধরনের অসম্ভব দরদ থাকা দরকার তার সবই ছিল তার মধ্যে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের যে শুধুমাত্র তার সিরিয়াসনেসের অভাবের কারণে আমরা হারিয়েছি একজন অসাধারণ প্রতিভাময়ী আবৃত্তি শিল্পীকে।
আমি পাঠকদের জন্য ক্যাথেরীনার অনুমতি ছাড়াই তার একমাত্র আবৃত্তির সিডি ‘একজন অনিমেষ আজো জেগে আছে’-র প্রথম কবিতা কৃষ্ণার এমপিথ্রি লিংক দিয়ে দিচ্ছি এখানে। এজন্যে অবশ্য লাঠি হাতে ক্যাথেরীনার তেড়ে আসার সমূহ সম্ভাবনা আছে। তাই আপাতত হয়তো কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকতে হতে পারে আমাকে।
এই আবৃত্তিটি আমার অসম্ভব পছন্দের একটি আবৃত্তি। শিল্প সাহিত্য থেকে কয়েক শত আলোকবর্ষ দূরত্বে অবস্থানকারী এই আমি, আমার এই বিবর্ণ জীবনে যে সামান্য কতকগুলো আবৃত্তি শুনেছি তার মধ্যে কৃষ্ণা নিঃসন্দেহে শ্রেষ্ঠতম। এরকম সুগভীর দরদ দিয়ে, এত সূক্ষ্ণতম আবেগের সুনিয়ন্ত্রিত, সুষম এবং সুবিন্যস্ত উপস্থাপনা দিয়ে, কণ্ঠের এমন মায়াময় কারুকার্যের পসরা সাজিয়ে এবং তার সর্বোত্তম ব্যবহার করে এর আগে আর কেউ কোন কবিতা আবৃত্তি করেছে কিনা আমি জানি না। তবে আমি যে সেরকম শুনিনি সেটা আমি খুব ভাল করেই জানি।
আপনারাও শুনে দেখুন কেমন লাগে।
http://www.mukto-mona.com/Articles/keya/krishna.mp3
@ফরিদ,
ফরিদ ভাইর স্তুতির বন্যা দেখে ভেবেছিলাম, উনি হয়ত স্বভাববশঃত(বিপরীত লিংগের প্রতি বিশেষ প্রীতি) প্রশংসার পঞ্চবান পাঠাচ্ছেন। কিন্তু আবৃত্তিটা শোনার পর মনে হল এক্ষেত্রে উনি একটুও বাড়িয়ে বলেননি। অসাধারণ কন্ঠশৈলী। আমরা আসলেই বঞ্চিত হচ্ছি।