বৈদেশিক নীতির প্রভাব ক্রিকেটে কেন?
বিপ্লব পাল
পাকিস্থান ক্রিকেট বোর্ড এবারে তাদের ক্রিকেটারদের ভারতের আই পি এল লীগে খেলার অনুমতি দিচ্ছে না। ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের জন্য খুব খারাপ খবর। আগের বারের মতন ইডেনে শোয়েব আখতার বা ওমর গুলকে দেখা যাবে না। রাজস্থান রয়্যাল ও বঞ্চিত হবে তনভীর সোয়েলের মতন বোলারের অভাবে। পাকিস্থানের বোর্ডের সিদ্ধান্ত টিট ফর ট্যাট-ভারত পাকিস্থান সফর বাতিল করেছে। তার প্রতিক্রিয়া।সফর বাতিল কি সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল? পাকিস্থান সরকার যেভাবে সন্ত্রাসবাদ প্রশ্নে পরোক্ষে ঢিলেমি দিয়েছে-তাতে ভারতের প্রায় সব মিডিয়া এবং জনগণ একে ঠিক সিদ্ধান্ত বলেই মনে করে। আমি করি না-আমার মনে হচ্ছে খুব ভুল করছি আমরা। পাকিস্থানের জনগণ এবং সরকারকে এক করে দেখে সিদ্ধান্ত নিলে মারাত্মক ভুল হবে।
পাকিস্থানের প্রায় ৬০% লোক এখন একবেলা খেয়ে আছে। মুষ্টিমেয় কিছু ফ্যামিলি পাকিস্থান চালাচ্ছে এই অদ্ভুত দেশটির জন্মলগ্ন থেকে। পাকিস্থানের ৬০% অভুক্ত লোক যাতে বিদ্রোহ না করে-তার জন্যে এদের ধর্মান্ধ বানানোর চেয়ে ভাল মগজ ধোলাই এর ঔষধ আর কি আছে? এই শ্রেণী দ্বন্দটা পাকিস্থান বহুদিন ধরেই তাদের দেশের লোকের মধ্যে কাষ্মীর নিয়ে ভারতের আগ্রাসনের কথা শুনিয়ে জেহাদি তৈরী করে ধামা চাপা দিয়ে এসেছে। কাশ্মীরের লোকজন এবার ব্যাপক হারে ভোট দিয়েছে-বিচ্ছিন্নবাদি গোষ্ঠি গুলি নিজেরাই স্বীকার করেছে-কাষ্মীরের লোকেরা এখন আরো ভাল থাকতে চাই-তারা সমৃদ্ধি চাইছে স্বাধীনতার চেয়ে বেশী। এমন অবস্থায় মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ বেশী বলে পাকিস্থানের কাষ্মীর পলিশির একটাই লক্ষ্য-এই ধরনের ঘৃণা ছড়িয়ে যাতে গরীব লোকেদের রাগটাকে ভারত বা আমেরিকা বা কখনো ইরাণের বিরুদ্ধে চালনা করা যায়। তাতে জাদ্দারী কিয়ানীদের ক্ষমতাই থাকার সুবিধা-দেশটাকে চেটেপুটে খাওয়ার সুবিধা বেশী।তাহলে এই ক্রিকেট বন্ধ করে কার সুবিধা করা হল? পাকিস্থানের সেই ক্ষমতাসীন গোষ্ঠিকেই আমরা হাতে মোয়া ধরিয়ে দিলাম। ওদের এখন ভারত বিরোধী ঘৃণা ছড়াতে আরো সুবিধা!
১৯৯৯ সালে ইডেনে যখন শোয়েব আখতার প্রথম বলে শচীনকে বোল্ড করে-আমি তখন মাঠে। ঠিক ফেন্সের ধারে বসে ছিলাম। ওভার শেষ হতেই শোয়েব যখন ফেন্সের কাছে আসে-তার উদ্দেশ্যে গালাগাল শুরু হয়-আবার কিছু লোক তার প্রতিবাদ ও করছিল গ্যালারী থেকে। ২০০৮ সালে আমরা কি দেখেছি? শোয়েব দিল্লীর বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক ম্যাচে গম্ভীর আর শেহভাগকে আউট করতেই ইডেন শোয়েব শোয়েব চিৎকারে ভেঙে পড়েছে। একই রকম সাপোর্ট পেয়েছে ওমর গুল এবং সোয়েল তনবীর। ২০০৮ সালে পাকিস্থানী ক্রিকেটারা ভারতে যত জনপ্রিয় হয়েছেন তেমনটা আগে দেখি নি। এটা কি পাকিস্থানে কোন সংবাদ দিচ্ছিল না? এত এত পাকিস্থানি আই পি এল দেখছিলেন-কারন তাদের সব তারকাই এই লীগে ছিলেন। পাকিস্থানের একটা বড় অংশই কোলকাতার নাইট রাইডার্সের সমর্থক ছিল। এগুলোই ত ভারত বিরোধি পাকি মনোবৃত্তি আস্তে আস্তে কমাচ্ছিল। আই পি এল ছাড়া এটা হত না।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের এটা খুব ভুল সিদ্ধান্ত-আমরা চক্রান্তকারী ক্ষমতালোভি পাক শাসক গোষ্ঠীর হাত শক্ত করলাম মাত্র।
উপমহাদেশে আমাদের ক্রিকেট সবসময় দলাদলিতে উন্নতির মুখ দেখছে না। এর থেকে বের হওয়া দরকার।
Excellent your feature. Thank you.