মুক্তিযুদ্ধের বীরসেনানী খালেদ -হায়দার -হুদা হত্যার বিচার চাই
নুরুজ্জামান মানিক
‘৭৫ সালের ৭ নভেম্বর রাত ১২ টায় বঙ্গভবনে সিপাহী বিপ্লবের খবর পেয়ে জেনারেল খালেদ কর্নেল হুদা ও হায়দারকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে ব্রিগেডিয়ার নুরুজ্জামানের বাসায় যান । সেখান থেকে শেরে বাংলা নগরে অবস্থিত ১০ম বেঙ্গল রেজিমেন্টে যেতে সিদ্ধান্ত নেন । উল্লেখ্য ১০ ম বেঙ্গলকে বগুরা থেকে খালেদই আনিয়েছিলেন তার নিরাপত্তার জন্য । পথে ফাতেমা নার্সিং হোমের কাচে তার গাড়ি খারাপ হয়ে গেলে তিনি হুদা ও হায়দারসহ পায়ে হেটেই ১০ম বেঙ্গলে গিয়ে পৌছেন । উক্ত ইউনিটের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন কর্নেল নওয়াজিস । খালেদের আগমনের খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ তিনি টেলিফোনে টু ফিলডে সদ্যমুক্ত জেনারেল জিয়াউর রহমান কে তার ইউনিটে খালেদের উপস্থিতির কথা জানান । তখন ভোর প্রায় চারটা । জিয়ার সাথে ফোনে তার কিছু কথা হয় । এরপর তিনি মেজর জলিলকে ফোন দিতে বলেন । জিয়ার সাথে মেজর জলিলের কথা হয় ।
ভোরবেলা দেখতে দেখতে সিপাহী বিদ্রোহের প্রবল ঢেউ ১০ম বেঙ্গলে এসে পড়ে । পরিস্থিতি কর্নেল নওয়াজিসের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায় ।
আফিসার মেসে বসে খালেদ-হায়দার -হুদা সকালের নাস্তা করছিলেন । হুদা ভীত হয়ে পড়লেও খালেদ ছিলেন ধীর , স্থির , শান্ত । হায়দার নির্ভীক নির্বিকারভাবে পরটা মাংস খাচ্ছিলেন । এমন সময় মেজর জলিল কয়েকজন উত্তেজিত সৈনিক নিয়ে মেসের ভিতর প্রবেশ করে । তার সাথে একজন বিপ্লবী হাবিলদারও ছিল ।
সে চিৎকার দিয়ে জেনারেল খালেদকে বলল-“আমরা তোমার বিচার চাই “!
খালেদ শান্তকণ্ঠে জবাব দিলেন ,” ঠিক আছে , তোমরা আমার বিচার করো । আমাকে জিয়ার কাছে নিয়ে চলো ।”
স্বয়ংক্রিয় রাইফেল বাগিয়ে হাবিলদার চিৎকার করে বললো-“আমরা এখানেই তোমার বিচার করবো ।”
খালেদ ধীর স্থির । বললেন, “ঠিক আছে , তোমরা আমার বিচার করো ।” খালেদ দু’হাত দিয়ে তার মুখ ঢাকলেন ।
ট্যারর-র-র-র ! একটি ব্রাস ফায়ার । মেঝেতে লুটিয়ে পড়লেন সেনাবাহিনীর চৌকস অফিসার জেনারেল খালেদ মোশাররফ যার ললাটে ছিল বীরযোদ্ধার জয়টিকা , মাথায় ছিল মুক্তিযুদ্ধের বীর উত্তমের শিরোপা আর মাথার বাম পাশে ছিলো পাকিস্তানী গোলন্দাজ বাহিনীর কামানের গোলার গভীর ক্ষতচিহ¡ ।
কামরার ভেতরেই গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণত্যাগ করলেন আগরতলা ষড়যন্ত্রমামলার অন্যতম আসামী মুক্তিযুদ্ধে ৮নং সেক্টরের সাবসেক্টর কমান্ডার বীর বিক্রম কর্নেল নাজমুল হুদা ।
কর্নেল হায়দার ছুটে বেরিয়ে যান কিন্তু সৈনিকদের হাতে বারান্দায় ধরা পড়েন । উত্তেজিত সৈনিকদের হাতে তিনি নির্দয়ভাবে লাঞ্চিত হন । তাকে সেপাহীরা কিল ঘুষি লাথি মারতে মারতে দোতলা থেকে নিচে নামিয়ে এনে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করা হয় ।
কি মর্মান্তিক ! আজ পর্যন্ত এই হত্যার বিচারের কোন উদ্যোগই নেয়া হয়নি ।
বর্তমান নবনির্বাচিত সরকারের নিকট দাবী-
খালেদ -হায়দার –হুদা হত্যার বিচার চাই ।
খুনি যে হোন না কেন –
বিনা বিচারে এই হত্যাকান্ড সমর্থন করা যায় না
তাই এর বিচার চাই
বিচার চাই
বিচার চাই
বিচার চাই
Manik Bhai,
Thanks for the clarification. Though I still can’t recall the Major Jalil incident in coln. Hamid book, and unfortunately that book is out of my reach. I recall about the unnamed “Habildar” as the killer. May be you are correct. I also recall Coln. Hamid reffereing some source saying that It was Zia’s strict order not to kill Khaled.
Coln. Hamid clarified a great confusion. He clearly identified Zia, Taher, Khaled all were as power hungry. Incidentally Zia finally won. But like many others believe that Khaled was a great patriot and could be the savior was not 100% true. He was also motivated more to get the chair. Also the idea of depicting him as pre-Awami or India is just laughable. He was in total control, just did the great mistake. In power game and conspiracy there is no room for kindness. Had he killed Zia at the first chance instead of home arrest then the history of Bd. Would’ve written totally differently. We even may not see any party named BNP. Anyway, all are speculation.
7th Nov’m is BNP’s celebration. They celebrate this as the “Biplob O Shonghoti Dibos”. Their official version is in this day “Jonota & Army” had freed Zia & broke all roots of conspiracy. That’s it. Nothing more. Natural question comes; what were the conspiracy? Who were the conspirator? Who were the hero who had foiled the great conspiracy? Certainly that wasn’t Zia as he was home arrest at that time. Then who? Why not mentioning the hero at all? Probably becasue, Taher was the hero of 7th Nov. biplob if there is any. How would the say that when Zia had killed Taher by a mock trial? That was the begining of our history distortion.
Anyway, thanks again, I read your well written articles about our obscure history like this with great interest. As I always found those factual without any biasness. Hope to see something about Gen. Manzoor killing. Just a friendly advice, please provide the list of reference, that makes the articles solid.
দেশ স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই উচ্চাভিলাসী সেনাবাহিনীর কতিপয় লোকের জন্য অনেক নিরাপরাধ সেনাবাহিনীর সদস্যকে জীবন বিসজন দিতে হয়েছে। এসব হত্যকান্ডের বিচার আশু প্রয়োজন।
অবশ্যই প্রতিটি সেনা অভ্যথানের তদন্ত ও বিচার হওয়া উচিত
আদিল মাহমুদ ভাই
যতদুর জানি-
খালেদ-হায়দার -হুদার হত্যাকারী মেজর জলিল ও আসাদ এখনও জীবিত ।
জলিল -আসাদ কিংবা বিপ্লবী হাবিলদার বা বিদ্রোহি সিপাহি যারাই হত্যাকারি হন না কেন
এই হত্যার দায় বর্তায় জিয়া বা তাহেরর উপর ।
এম এ হামিদের বই আরেকবার দেখুন সেখানেই আছে হত্যার আগে মেজর জলিলের সাথে জিয়ার আলাপের কথা ?কি কথা হয়েছিল ?
মেজর আসাদ নাকি তাহেরের নির্দেশ সম্বলিত চিরকুট নিয়ে এসেছিলেন ?
খুনি যে হোন না কেন –
বিনা বিচারে এই হত্যাকান্ড সমর্থন করা যায় না
তাই এর বিচার চাই
বিচার চাই
বিচার চাই
বিচার চাই
References :
1. তিনটি সেনা অভ্যুথান ও কিছু না বলা কথা, লে ক.এম এ হামিদ
2.মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বরূপ , মেজর রফিকুল ইসলাম পি এস সি
3. লে ক গাফফার বীরউত্তমের ইন্টারভিউ , ভোরের কাগজ ৬ নভে ২০০৬
মানিকের মুক্তিযুদ্ধের উপর ইতিহাসভিত্তিক লেখা গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ লেখাগুলো সংরক্ষন করে রাখা জরুরী।
আমাদের দেশের অনেক কিছুর মত ইতিহাস ও ইঊনিক। যার যা খুশী তাই বলতে পারেন, সরকার পরিবর্তনের সাথে ইতিহাস ও বদলাতে পারে।
৭৫ এর রক্তঝরা দিনগুলিতে আসলে কি হয়েছিল, কে হিরো কে ভিলেন এর রহস্যের কোনদিন ই মনে হয় সমাধান হবে না। ৭ই নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস। জনতা ও সামরিক বাহিনী নাকি মিলিত ভাবে ষড়যন্ত্র রুখে দাড়িয়েছিল। সরকারী ভাবে এর বেশী তেমন কিছু জানা যায় না। কি সেই ষড়যন্ত্র, কার বিরুদ্দধে?
আমি এর ঊপর এ পর্যন্ত যত লেখা/বই পড়েছি তার মধ্যে সব চেয়ে নিরপেক্ষ আর বস্তুনিষ্ঠ বলে মনে হয়েছে কর্ণেল হামিদের লেখা “তিনটি অভুথান ও কিছু না বলা কথা”। খালেদ হায়দার হুদা পর্ব হত্যা পর্ব অই বইতে প্রায় একই রকম ভাবে বর্ণিত আছে। শুধু মেজর জলিল এর অংশটুকু ছাড়া। নুরুজ্জামান মানিক লেখায় মনে হতে পারে খালেদ হত্যায় জিয়ার সায় ছিল। অভিযোগটা বেশ গুরুতর।
মানিক ভাই যদি এ বিষয়ে রেফারেনস দেন তো ভাল হয়।
পরিশেষে লেখককে ধণ্যবাদ, আমিও একই সুরে বলি, ৭১, ৭৫, ৮১ এর সব রাজনৈতিক হত্যার ই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। কোন জাতি ধোয়াটে ইতিহাস বহন করতে পারে না।
সত্যি ৭৫ পরবর্তীতে কত হত্যাকান্ডযে ঘটেছে, তার কোনো মা বাপ নেই। মানিক সাহেবের সাথে আসুন আমরাও স্লোগান ধরি, বিচার চাই, বিচার চাই, সকল হত্যাকান্ডের বিচার চাই, করতে হবে।