অসম্ভবের বিজ্ঞান
(৪র্থ পর্ব)
৩য় পর্বের পর…
বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী কিংবা ফ্যান্টাসিকে বিজ্ঞানের নিক্তি পাথরে বিশ্লেষণ করার প্রচেষ্টা কিন্তু নতুন নয়। বিজ্ঞানী লরেন্স ক্রাউস ১৯৯৫ সালে লিখেছিলেন ‘The Physics of Star Trek’। বইটিতে পদার্থবিদ অধ্যাপক ক্রাউস স্টারট্রেক সিরিজটিতে দেখানো বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ধ্যান-ধারনা যেমন – সময় পরিভ্রমণ, ওয়ার্ম হোল, আলোর গতিতে স্পেসশিপের চলাচল এবং টেলিপোর্টেশনের ভবিষ্যত বাস্তবতা নিয়ে একজন পদার্থবিজ্ঞানীর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বস্তুনিষ্ঠ আলোচনা করেন, সম্ভবত প্রথম বারের মত। এর পরপরই ‘দি ফিজিক্স অব …’ বা ‘দ্য সায়েন্স অব …’ প্রজাতির বই লেখার জোয়ার শুরু হয়ে যায় জনপ্রিয় বিজ্ঞান লেখকদের মাঝে। আমি এ বইগুলোর নাম দিয়েছি ‘বিজ্ঞানের মাসুদ রানা সিরিজ’! আমি আটলান্টায় যেখানে থাকি তার পাশেই আছে বার্নস এন্ড নোবেল – বিখ্যাত বইয়ের দোকান। সেখানে ঢু মারলে প্রায়ই এ ধরনের মাসুদ রানা সিরিজের অনেক বই দেখি। কয়েকটি বইয়ের নাম তো আমি বলতেই পারি চোখ বন্ধ করে। তালিকায় থাকবে ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটার পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক জেমস কাকালিওসের লেখা ‘The Physics of Superheroes’ বইটি, কিংবা জীন ক্যাভেলসের ২০০০ সালে লিখা ‘The Science of Star Wars’। হ্যারি পটার সিরিজের অসামান্য সাফল্যের পর ২০০২ সালে রজার হাইফিল্ডের লিখা ‘The Science of Harry Potter’-এর কথা না বললে তালিকা অসম্পূর্ণই থাকবে তা বলাই বাহুল্য। তবে এ ‘অসম্ভবের বিজ্ঞান’ সিরিজটির পেছনে আমাকে যে বইটি সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করেছে, তা হচ্ছে অধ্যাপক মিচিও কাকুর সাম্প্রতিক বই ‘Physics of the Impossible’ (২০০৮)।
আমি পদার্থবিদ মিচিও কাকুর লেখার ভক্ত অনেকদিন ধরেই। তার ‘হাইপারস্পেস’ পড়ে স্ট্রিং-তত্ত্বের প্রতি যে মুগ্ধতা তৈরি হয়েছিলো তা আজ অব্দি তা কাটেনি। হাইপারস্পেস বইটা বেরিয়েছিলো সেই নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি। আমার হাতে বইটা আসে ২০০১ বা ২০০২ সালের দিকে। বইটা প্রার পর অনেক দিন ধরেই ভেবেছিলাম – স্ট্রিং তত্ত্ব নিয়ে একখান জবরজং সায়েন্স-ফিকশান লিখে ফেললে কেমন হয়! তখন স্ট্রিং তত্ত্বের প্রস্তাবিত দশ-এগারো মাত্রার জগৎটা কেমনতর হতে পারে, তা কল্পণা করতে চেষ্টা করতাম। কল্পণার পাখা মেলে দিয়ে চিন্তা করতাম ত্রিমাত্রিক জগতের মানুষেরা চতুর্মাত্রিক জগতের বাসিন্দাদের মুখোমুখি হলে কি ভয়ঙ্কর দশা হতে পারে! না সায়েন্স-ফিকশান আর এই অধমের শেষ পর্যন্ত লেখা হয়নি – তবে আমার ‘আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী’ বইটা লেখার সময় স্ট্রিং থিওরী নিয়ে একটি অধ্যায় বইয়ে ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম – ‘নাচছে সবাই সুতোর টানে’! এই লেখাটা স্বতন্ত্র প্রবন্ধ হিসেবে মুক্তমনায় প্রকাশিত হবার পর আমি অনেকের কাছ থেকে চমৎকার কিছু ইমেল পেয়েছিলাম। আমার স্ত্রী বন্যা তো আছেই, আমার বইয়ের পাঠকদের অনেকেই এখনো মনে করেন- এ অধ্যায়টিই নাকি আমার ওই ‘নিরস’ বইটার সেরা অংশ! কিন্তু কাকেই বা বলি – মিচিও কাকুর বইটা না পড়া থাকলে সাহস করে আমি কি স্ট্রিং তত্ত্বের উপর লিখতে পারতাম? সুমনের গানের মতই বলতে হয় –
‘আমি নাগরিক কবিয়াল, করি গানের ধর্ম পালন
সকলে ভাবছে লিখছে সুমন, আসলে লিখছে লালন…’
হাইপারস্পেস বইটা পড়ার বছর কয়েকের মধ্যেই আমার হাতে আসে মুহম্মদ জাফর ইকবালের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী –‘ইরন’। গল্পটা পড়ে আমার কেবলই মনে হচ্ছিল – এর পেছনে মিচো কাকুর হাইপারস্পেসের ছায়া আছে কোথাও। থাকতেই হবে। ইরন বইটির ভুমিকায় যদিও সে ধরনের কিছুই বলা ছিলো না। ব্যাপারটা পরিস্কার হল বেশ ক’ বছর পর জাফর ইকবালের সায়েন্স ফিকশন রচনাসমগ্র (প্রতীক, ২০০২) হাতে আসার পর। বইয়ের ভুমিকায় মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্পষ্ট করেই বললেন, তার ‘ইরন’ নামের অসামান্য উপন্যাসটির পেছনে ছিলো আসলে মিচিও কাকুর ‘হাইপারস্পেস’-এর অনুপ্রেরণা।
কিন্তু পাঠকেরা মনে মনে ভাবতে পারেন – মিচিও কাকুকে নিয়ে হঠাৎ কেন এত ত্যানা প্যাচানি? ত্যানা প্যাচাতেই হচ্ছে কারণ, আমার এই ‘অসম্ভবের বিজ্ঞান’ সিরিজটার দার্শনিক ভিত্তি বলা যায় অধ্যাপক কাকুর ‘Physics of the Impossible’ নামের সাম্প্রতিক বইটি। বইটিতে মিচো কাকু কল্পবিজ্ঞান লেখকদের মত কেবলমাত্র অসম্ভব ব্যাপার-স্যাপারের কতকগুলো সফল ভবিষ্যদ্বানী করেই ক্ষান্ত হননি, এদেরকে কাটা ছেড়া করে একেবারে ফার্দা ফাই করে ছেড়েছেন। এদেরকে তিনি ভাগ করেছেন তিনটি ভাগে – প্রথম শ্রেনীর অসম্ভব্যতা, দ্বিতীয় শ্রেণীর অসম্ভব্যতা, তৃতীয় শ্রেনীর অসম্ভব্যতা। আমিও কাকুর ভাগ গুলো ধরেই এগোই।
প্রথম ভাগে আছে সে সমস্ত ‘অসম্ভব’ ধারনাগুলো – যে গুলো আজকের দিনে অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে কিন্তু পদার্থ বিজ্ঞানের কোন জানা নীতি বা নিয়ম ভঙ্গ করছে না। কাজেই এই ভাগের অসম্ভব ধারণাগুলো মূলতঃ আমাদের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে উদ্ভুত। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে এই তালিকার অনেকগুলোই ধীরে ধীরে বাস্তবতা পেয়ে যাবে। এদের কোন কোনটির সফল মঞ্চায়ন হতে পারে কয়েক দশকের মধ্যে, কিংবা কপাল মন্দ হলে লেগে যেতে পারে কয়েক শতকও। এই শ্রেনীতে অন্তর্ভুক্ত অসম্ভবের তালিকায় আছে উড়ন্ত গাড়ি, টেলিপোর্টেশন, লেজার ঢাল, প্রতিপদার্থ ইঞ্জিন, রে-গান এবং লেজার সমরাস্ত্র, অদৃশ্যতা, আন্তঃ নাক্ষত্রিক যোগাযোগ, স্টারশিপ, মস্তিস্ক এবং কম্পিউটারের মধ্যে যোগাযোগ এবং নিয়ন্ত্রণ, সাইবর্গ, বুদ্ধিদীপ্ত রবোট ইত্যাদি।
দ্বিতীয় শ্রেনীর অসম্ভব্যতা হচ্ছে বিজ্ঞানের খুব অগ্রসর ধ্যান ধারণাগুলো – যেগুলোর প্রকৃতি সম্বন্ধে বুঝতে পারার মত জায়গায় আমরা সবেমাত্র যেতে শুরু করেছি। আমরা এখনো নিশ্চিত নই – এ ধারণাগুলো একেবারেই অসম্ভব, নাকি ‘বাস্তবতা’ পেয়েও যেতে পারে কখনো। যদি বাস্তবতা কখনো বা পায়ও, তার পূর্ণ মঞ্চায়ন ঘটতে হয়ত লেগে যাবে লক্ষাধিক বছর। টাইম মেশিন, হাইপার ডাইভ, ভিন্ন মাত্রায় পরিভ্রমণ, ওয়ার্ম হোল তৈরি করে সমান্তরাল মহাবিশ্বের অধিবাসীদের সাথে যোগাযোগ – এইগুলো থাকবে এই তালিকায়।
তৃতীয় শ্রেনীর অসম্ভব্যতা হচ্ছে সেগুলো যেগুলো আমাদের জানা পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্র লংঘন করে; অন্ততঃ আপাতঃ দৃষ্টিতে এখন তাই মনে হচ্ছে। অবিরাম গতিযন্ত্র তৈরি, ভবিষ্যৎ দর্শন (প্রিকগনিশন), আলোর চেয়ে বেশি বেগে চলাচল ইত্যাদি আছে এই শ্রেনীতে। এগুলো কখনো বাস্তবতা পেলে পদার্থবিজ্ঞানের চিরচেনা ছবিটাই বদলে যাবে।
আমি মূলতঃ মিচিও কাকুর ভাগ গুলোকে সামনে রেখে এই সিরিজটিকে বিন্যস্ত করতে সচেষ্ট হয়েছি। তবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে আমি অধ্যাপক কাকুর সাথে দ্বিমত পোষণ করে পার্থক্য করার প্রয়াস পেয়েছি; কিছু কিছু ক্ষেত্রে করেছি সংযোজন কিংবা বিয়োজন। যেমন, অধ্যাপক মিচিও কাকু প্রথম শ্রেনীর অসম্ভব্যতার তালিকায় ‘টেলিপ্যাথি’ অন্তর্ভুক্ত করেছেন। প্রচলিত অর্থে টেলিপ্যাথি ব্যাপারটা কিন্তু বিজ্ঞানের এখতিয়ারে নয়, বরং এটা সোজা সাপ্টা – অপবিজ্ঞান। বিভিন্ন সাইকিকেরা টেলিপ্যাথি ক্ষমতার দাবী করে বিভিন্ন চিটিংবাজির মাধ্যমে মোটা অর্থ কামিয়ে নেন। ইউরি গেলার, সিলভিয়া সহ বহু বুজরুক সাইকিকদের টেলিপ্যাথি ক্ষমতার কথা মিডিয়া জুড়ে যে ফলাও করে প্রচার করা হয় তা আমরা জানি। বিজ্ঞান কিন্তু এ ধরণের টেলিপ্যাথির অস্তিত্ব স্বীকার করে না। এহেন টেলিপ্যাথিকে মিচিও কাকুর বিজ্ঞানের বইয়ে অসম্ভব্যতার তালিকায় দেখে প্রথমে খুব অবাকই হয়েছিলাম। কিন্তু পরে বইটি পড়তে গিয়ে বুঝলাম, টেলিপ্যাথি বলতে মিচিও কাকু যা বুঝিয়েছেন তা হচ্ছে কম্পিউটার-ব্রেন ম্যাপিং এবং ক্ষেত্র বিশেষে এর নিয়ন্ত্রণ। ব্যাপারটাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে সাইবর্গ।
ছবিঃ কম্পিউটার-ব্রেন ইন্টারফেস – মডার্ন টেলিপ্যাথি?
বিশেষ ধরনের কিছু রোগীর ক্ষেত্রে – বিশেষতঃ যাদের অনেকেই মারাত্মক কোন দুর্ঘটনায় পড়ে বাকশক্তি হারিয়েছেন, কিংবা নড়া চড়া করার শক্তি হারিয়েছেন – এদের মস্তিষ্কে মাইক্রো-চীপ প্রবেশ করিয়ে এবং কম্পিউটারের সাথে সংযোগ ঘটিয়ে উৎসাহব্যাঞ্জক সাফল্য পাওয়া গেছে। যে মানুষটি এতদিন নিস্পৃহ বা নিস্পন্দিতভাবে হাসপাতালের বিছানায় মৃতবৎ পড়ে ছিলো, কম্পিউটারের সংযোগ পেয়ে তার মস্তিস্ক বাইরের জগতের সাথে পুনরায় যোগাযোগ শুরু করেছে। পুরো ব্যাপারটা চিকিৎসাবিজ্ঞানের জগতে ঘটাতে চলেছে নিরব বিপ্লব। আর বিজ্ঞানীরাও মানব মস্তিস্কে মাইক্রোচিপ বসিয়ে প্রযুক্তিকে নিয়ে গেছেন হাইব্রিড মানব তৈরির ভবিষ্যৎ সম্ভাব্যতার দিকে – যেগুলোকে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে এতদিন নামাঙ্কিত করা হত ‘বায়োবট’ (বায়োলজিকাল রবোট) হিসেবে। কিন্তু পুরো ব্যাপারটিকে মিচিও কাকুর মত ‘টেলিপ্যাথি’ বলতে আমার আপত্তি আছে। বিভিন্ন সাইকিকদের দেখানো টেলিপ্যাথির ভেল্কি যে কেবল বুজরুকি এবং অপবিজ্ঞান – তা তো আগেই বলেছি। এগুলোর অস্তিত্ব বিজ্ঞান স্বীকার করে না। এগুলোকে সাইবর্গ নিয়ে বিজ্ঞানের আধুনিক গবেষণার সাথে মিলিয়ে ফেলা অন্যায়ই হবে।
ছবিঃ টার্মিনেটরের সাইবর্গ কি অচীরেই বাস্তবতা পেতে চলেছে?
আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব অনুযায়ী, কোন জড় কণার সাধ্য নেই আলোর সমান বা তার চেয়ে বেশী বেগে চলাচলের। কিন্তু পদার্থবিজ্ঞানীরা কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে টেকিয়ন কণার অস্তিত্ব তাত্ত্বিকভাবে হলেও গণ্য করেন, যার বেগ আলোর গতির চেয়ে বেশি। যদিও পরীক্ষাগারে এই টেকিয়ন কণার কোন পরীক্ষালব্ধ প্রমাণ পাওয়া যায়নি, কিন্তু ধারনা করা হয় মহাবিশ্বের উদ্ভবের সময় এই সমস্ত কণাগুলোর প্রভাব ছিলো ব্যাপক। মিচিও কাকু ‘আলোর চেয়ে বেশি’ বেগে চলাচলের সম্ভাব্যতাকে দ্বিতীয় শ্রেনীর সম্ভাব্যতার তালিকায় রাখলেও আমি রেখেছি তৃতীয় শ্রেনীতে। কারণ আমি মনে করি, এটি কোনদিন বাস্তবতা পেলে আমাদের চিরচেনা পদার্থবিজ্ঞানকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে।
অমরত্ব নিয়ে গবেষণা নতুন কিছু নয়। মৃত্যুকে জয় করার চেষ্টা মানুষের বরাবরের। দীর্ঘজীবন প্রাপ্তি নিয়ে গবেষণা উন্নত বিশ্বে ইতোমধ্যেই বেশ অগ্রসর হয়েছে; কিন্তু মৃত্যুকে জয় করা এখনো সম্ভব হয়নি। কিন্তু বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই কোয়ান্টাম অমরত্বের কথা বলছেন, কৃত্রিমভাবে ‘এন্টি এজিং কম্পোনেন্ট’ বানাতে পেরেছেন করছেন যা দেহের অপচিতি প্রক্রিয়াকে বাধা দেয়, এমনকি ক্রাইয়োনিক প্রক্রিয়ায় দেহকে সংরক্ষণ করে এর বিপাক ক্রিয়া মন্থর করে দেবার গবেষণাও ইদানিং অনেক ফলপ্রসু হয়েছে। তাহলে অদূর-ভবিষ্যতে সত্যই কি কখনো মৃত্যুকে জয় করা সম্ভব হবে? হলফ করে এখনো বলা যায় না। কিন্তু এটি বলা যায়, মৃত্যুকে জয় করা গেলে কবির অলংঘ্য বাণী – ‘জন্মিলে মরিতে হবে’ – নামক ‘সার্বজনীন সত্য’ মিথ্যে হয়ে যাবে – বদলে যাবে পৃথিবীর ইতিহাস পরিক্রমা। আমি সঙ্গত কারণেই অমরত্বকে রেখেছি তৃতীয় শ্রেনীর অসম্ভব্যতার তালিকায়।
ছবিঃ মানুষ কি মৃত্যুকে জয় করবে শেষ পর্যন্ত?
কাজেই আমার করা তালিকাটি ছকের মত সাজালে দেখাবে অনেকটা এরকমঃ
প্রথম শ্রেনীর অসম্ভব্যতা * টেলিপোর্টেশন
দ্বিতীয় শ্রেনীর অসম্ভব্যতা * টাইম মেশিন
তৃতীয় শ্রেনীর অসম্ভব্যতা * অবিরাম গতিযন্ত্র তৈরি অসম্ভব্যতার ভবিষ্যৎ |
আপাতত উপভোগ করুন আল জাজিরায় অধ্যাপক মিচিও কাকুর ‘ফিজিক্স অব ইমপসিবল’ নিয়ে একটি মজার সাক্ষাৎকার –
(১)
(২)
আমি আগামী পর্ব থেকে একে একে তালিকাভুক্ত বিষয়গুলোর কারিগরী ব্যাপার নিয়ে আলোচনা শুরু করব। প্রিয় পাঠক আপনি কি প্রস্তুত? ফ্যাসেন ইয়োর সিটবেল্ট!
নভেম্বর ১০, ২০০৮
চলবে…
ড. অভিজিৎ রায়, মুক্তমনার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক; ‘আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী’ ও ‘মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে‘ গ্রন্থের লেখক। সাম্প্রতিক প্রকাশিত সম্পাদিত গ্রন্থ – ‘স্বতন্ত্র ভাবনা’। সম্প্রতি ‘বিজ্ঞান ও ধর্ম : সংঘাত নাকি সমন্বয়?‘ শীর্ষক গ্রন্থ সম্পাদনার কাজে নিয়োজিত। ইমেইল : [email protected]
বিজ্ঞান আজকে যাই বলুকনা কেন আমি মনে করি মানুষের আকাক্ষার সমান্তরাল সূত্রসমুহ একদিন আবিষ্কৃত হবেই,যার মাধ্যমে মানুষ তার সকল অপ্রাপ্তিকে দূর করবে,তার সকল কল্পনাকে বাস্তবায়ন করবে। অসম্ভব বলে কোন ব্যাপার নেই, সময়ের ব্যাপার মাত্র ।
প্রচলিত অর্থে টেলিপ্যাথি ব্যাপারটা কিন্তু বিজ্ঞানের এখতিয়ারে নয়, বরং এটা সোজা সাপ্টা – অপবিজ্ঞান। এ কথাটির আমি বিরোধিতা করছি। এটা অপবিজ্ঞান নয় বরং এটা একটি অপরিচিত অবহেলিত বিজ্ঞান।
psi-wheel এ জিনিষটার কথা অনেকেই হয়তো শুনেছেন! এটা হলো মনের জোড় দিয়ে, একখন্ড ভাঁজ করা কাগজ কে সূচের উপর রেখে, কোন রকম স্পর্শ বা সংযোগ ছাড়াই দূর থেকে ঘুরানো। google এ সার্চ করলেই এক দেড়শত কেজি ডকুমেন্ট আর ভিডিও পাবেন। তাহলে এটা (Tele-kinetic) কি বুজুর্গী? ভোজবাজী আর চোখে ধূলো দেয়া চালাকি না স্রেফ গুলতাপ্পী?
Url গুলো দেখুন
http://en.wikipedia.org/wiki/Psi_wheel
http://en.wikipedia.org/wiki/Talk:Psi_wheel
ব্যাপারটা আমি নিজে পরীক্ষা শুরু করি। এবং সূঁচের উপর ব্যালেন্স করা চাকতি টিকে দুই তিন দিন চেষ্টা করার পর বেশ দুর থেকেই ঘুরাতে সক্ষম হই। এটা কিভাবে ঘুরছে? অনুসন্ধান শুরু করি। আসলে বিজ্ঞান আমরা খুব অল্পই জানি। এটোমিক/সাব-এটোমিক Spin যে একটা পদার্থের এনার্জীর মূল -তাতো কোয়ান্টাম ফিজিক্স বলেই দিয়েছে।
অতি সম্প্রতিক থিওরিটিক্যাল ফিজিক্সে গ্রাভিটেশন যে সাব-এটোমিক Spin এর কারনে হয় তাও অঙ্কবদ্ধ করা হয়েছে। google দেখুন।
যা হওক, এতো কথা বাদ দেই। চাকতি টি ঘুরে কেন? আমাদের চিন্তা শক্তি নার্ভাস সিসটেমে spin angular Momentum তৈরী করে। আমরা তো এটাও জানি যে আমাদের স্নায়ু কোষ polarazition torque তৈরী করে বার্তাবহন করে। আর এসব spin wave চাকতিটির মধ্যে Resonance (অনুনাদ) তৈরী করে বলেই ঘুর্ননের সৃষ্টি হয়। এধরনের ঘুর্ননের কারন না জানার কারনে ভৌতিক হলেও পুরোপুরি scientific এবং They obey Law of Physics.
টেলিপ্যাথি ব্যাপারটা ও Spin Angular Momentum Wave.কাউকে কোন বার্তা পাঠানো হয় বিশেষ codec করে – এক্ষেত্রে Sender Reciver এর হয়তো Hand shaking (জেনেটিক ভাবে) এর মাধ্যমে হয়। সবই ব্রেইনের খেলা। যেমন মা আর ছোট শিশুদের মধ্যে টেলিপ্যাথির ব্যাপারটা প্রায়ই দেখা যায়। ক্রস কানেকশনের কোন ভয় নেই জেনেটিক কোডিং… হা হা ।
মোঃ জাফর আল মাসুদ
মিজান সাহেব,
এখন প্রবন্ধের নীচে আর উপরে আমাদের মেইন পেজের লিঙ্ক দেয়া হয়েছে। Mukto-mona লেখা নামের বাটনে ক্লিক করলেই মেইন পেজে যাওয়া যাবে। এছাড়া ব্যাক বাটন তো প্রেস করতেই পারেন।
ও হ্যাঁ, মূল পৃষ্ঠায় ফিরে যাব কিভাবে? কোন লিংক নেই। ব্রাউজারের ব্যাক বাটন টিপতে হবে নাকি?
লেখাটি ভাল লাগল। চিন্তা করার মত অনেক উপাদান আছে।
মুক্তমনা তাহলে শেষ পর্যন্ত ব্লগিং করা শুরু করল। ঠিকানা banga_blog না লিখে একেবারে bangla_blog কিংবা bn_blog লেখা যেত।
আমি মোটামুটি সর্বভুক পাঠক। সবার লেখাই কমবেশি পড়ে ফেলি টুপটুপ করে। ভালো মন্দ নানান ধরণের অনুভূতি হয় সেগলো পড়ে। ব্যাস এটুকুই, এর বেশি কিছু নয়। তবে একজনের লেখা পড়ার সময় বুকের মধ্যে ঈর্ষা নামের আদিমতম রিপুটার নাচানাচি টের পাই তুমুলভাবে। দ্রিম দ্রিম করে হিংসার দামামা বেজে উঠে মগজের কোষে কোষে। সেই একজন হচ্ছে অভিজিত রায়। বাংলা ভাষায় জনপ্রিয় বিজ্ঞানের উপর এরকম কাব্যময় লেখালেখি আর কেউ করেছে কিনা আমার জানা নেই। এই ছোকরা এত সময় পায় কী করে কে জানে? বারুদের মত এই সব লেখা এত দ্রুত লিখেই বা কীভাবে? টাইম ডাইলেশন করে সময়ের ক্ষেত্রকে স্থির করে নেয় হয়তো।
এবারের লেখাটাও ব্যতিক্রম কিছু নয়। অসাধারণ একটা লেখা। বুকের মধ্যে সেই বিপুল ঈর্ষা জাগানিয়া মুগ্ধতা নিয়েই পড়লাম। আমি বিজ্ঞানের লোক না। কাজেই বিজ্ঞানের চেয়ে কল্পবিজ্ঞানেই আমার আনন্দ বেশি। লেখাটাতে মূল বইগুলোর নাম দেওয়াতেও খুব ভাল লাগলো। দেখি মিচিও চাচ্চুর বইটা কোথাও খুঁজে টুজে পাই কিনা। ইচ্ছে আছে পড়ে ফেলার।
ঈর্ষা, ক্রোধ এবং হিংসা সংমিশ্রিত অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা রইলো অভিজিতের প্রতি।
dear
yes, i am ready but make it easy . pls describe details about time machine.
thanks
Rafsan anowar er shathe ami akmot. asole uni khati bastob kothai bolechen. sara world e jotoi science & technologyr tsunamy boye jak na kano, bangladeshe remains the same. bangladesher kono change hoi nai, hobe boleo mone hoi na . ontoto amar 20yrs er life e ja deksi. world e ki holo na holo ta bangladesher manusher life ke nara dae na. karon still they r fighting for food nd employment. barche manush, jaiga barche na, 50yrs pore je bangladesher ki obostha hobe vablei ga shiure uthee.. family planning programe to totally mukh thubre porche…
anondomelar shathe ami shompirno akmot. Avijitdar lakha shotti oshadharon, ki vasha, ki tottho shomagom , ki bachon vongi, upoma- shobkisu miliey tini tar lekha manusher kache ottonto attractive kore tule dhorte paren. tar knowledge er govirota shotti amake bissito kore. amio obak hoi Avijida ato time pan kivabe? eshob bishoy likhte hole oneeeeeeeeek porashuna korte hoi which needs time. americae thaka manushera khub busy hoi ja shunechi. how do u manage time Avijitda living in a country like US whr life is very busy??
অভিজিত,
ণতুন এই বিগ্জান বিষয়ক লেখাটা পরে আনেক নতুন তথ্য জানতে পারছি, যদিও সবটা বোধগম্য হচ্ছেনা। আরো একটু সহক করে লিখলে আমাদের মোত জানতে আগ্রহী কিন্তু ওই ব্যাপারে শিক্ষা কম মানুষদের বুঝতে সহজ হবে। পরবর্তী প্রকাসের অপেক্ষাথ রইলাম।
বেনু
Avijit
Ami apnar kotha jani o sunesi, chotto prithibi — net er kollane personal jibon bolte temon kisu thake na jodio bapar take ami khub shohoj vabe dekhte pari na–ami kisuta pisiea thaka manush ,pison thake adunik manush der dour dekhte valo lage. Apnar eakta boy eakbar hate peasilma, bujte pari apni onek janen, bishesh kore science. Amar lekhate comment dekhlam ,amar lekha poren jene vision valo laglo .Darona korte pari apni kisuta nivritochari manush— manush er mon ke scintifically reach korbar je moulik khomota apnar ase sejonno apnake ovinondon.
suvokamona.
luna shirin
Avijit-er lekha mane-i she ki biggan na-ki dorshon, na shahitto shob jaygate jar soman soman bichoron khettro.jokhon onar khono lekha ashe jiboner protidiner shob kaaj pele rekhe protome-i she-i lekha pora chai.Amar mathey konobhabe-i ekta bishoy duke na ta holo ghor,songshar,kaaj kore kokhon ooni etoo shob boi poren?????? sobar dara shob kisu hoy na emon probad bakko antoto Avijit – er belay chole na. Bangalee-der ei rokom ekjon guni lok-i koti koti manush-ke sudu samne jabar,nije ke,jibon-ke , jogot-ke ebong mooha-jogot-ke janar dike niye cholen. Bangalee-der jonne aapnar anek din beche thaka joriri.
From a scientific point of view, a scientist would get tremendous pleasure seeing all the above things happening in reality but the reality is these things will never happen in Bangladesh
What makes me angry is when I see country after country, nation after nation is becoming economically free and powerful (according to Goldman Sachs, by 2050 India will be one of the most powerful country, can you believe that?) and Bangladesh is still a “3rd world country”. If you look at India, students are more interested in studying science and technology; most of the technology built in Microsoft, Intel, Oracle, IBM and Google are designed and programmed by Indian, 50% of US doctors are Indian, more 35% Indian people work in NASA, most of the western world IT markets are captured by Indian, whereas in Bangladesh people (so called university graduate students) use computer to “chat” and watch pornographic web sites.
Every nation in the world organize Technology Fair, where kids will ne interested in knowing low level computing, writing advanced algorithm, understanding game theory, writing software in more advanced way, whereas in Bangladesh we have “Computer Mela” where people sell “Modem and Keyboard”, now how on earth a kid would be interested in technology? Most of the Bangladeshi journalists comes to the US and asks Bill Gates or Dell “when you are going to open an office in Bangladesh?” Hey you stupid, useless journalists, have you ever thought about the technical infrastructure in Bangladesh? Do you know the FATCS that, BD can’t offer enough electricity to run a data centre, BD can’t offer more than 10 world class programmer because everyone is studding BBA or Shomaj Biggan? Why don’t ask these questions to the stupid politicians, why don’t you write about these things on news paper, you can make a great deal out of valentines day or “Maa dibosh”?
এটা খুবই মজার একটা সিরিজ। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী গুলো কিভাবে চোখের সামনে বাস্তবতা পেতে চলেছে – এ সিরিজটা না পড়লে বুঝা যাবে না।